"ভাঙা থেকেই গড়ার শুরু।"
প্রথম বার তো সব কিছু ভাঙার পর ,বাবা মা হারানোর পর অভ্র এসেছিল কিছুটা হলেও সব কিছু দিতে। কিন্তু আবার কি কিছু ভাঙবে?
অজানা ভয়ে নিজেই কেপে ওঠে অবন্তী।
.
অভ্র চোখ খুলে ছোট বাচ্চাদের মতো পিটপিট করে চেয়ে আছে। রেণু খালা পাশে বসে বার বার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
ডক্টর বলেছে টেনশনের তেমন কিছু নেই । কিন্ত বাড়ির লোকেদের আরো যত্নশীল হওয়া উচিত । অভ্র দেশে ফেরার ক'দিন পর থেকে কোন মেডিসিন ই নেয় নি। বাড়ির কেউ তা খেয়াল ও করে নি। ডক্টর অনেকবার জিজ্ঞেস করার পর মেডিসিন না নেয়ার ব্যাপার স্বীকার করেছে অভ্র।
.
মানসিক পেশেন্ট দের ক্ষেত্রে ঘুমটাই আসল। তাদের ঘুম, ডিপ্রেশনের ওষুধ প্রায় সব সময় খেতে হয় । ঘুমে থাকলে জাগতিক চিন্তা ভাবনা থেকে কিছুটা সময় দূরে থাকা যায়। অভ্র যে মানসিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ তা ও নয়। পাগল কে চিকিতসা করে সুস্থ করা যায় হয়ত। কিন্ত মানসিক রোগীদের সমস্যা বেশি জটিল।এরা পুরোপুরি সুস্থ হয়েই উঠতে চায় না । এদের সব কিছু স্বাভাবিক মানুষের মতো হলেও মনে মনে নিজের দুনিয়ায় নিজে বিচরণ করতেই ভালোবাসে। মানসিক ভাবে যেটার জন্য আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়েছে সেটাই বার বার মনে করে কষ্ট পেয়ে নিজের সুখ খোজে এরা।
.
একজন স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘন্টা ঘুমানো উচিত। সেখানে অভ্রকে ডক্টর কমপক্ষে নয় দশ ঘণ্টা ঘুমোতে বলেছে। ঘুমোনোর ওষুধ ও সাজেস্ট করেছে। অর্পির কাছে থাকতে অর্পি এসব জোর করেই খাওয়াত। দেশে ফেরার পর ও কাউকে তেমন বলে ও নি নিজেও মেডিসিন নেয় নি। দিনে দু তিন ঘন্টার বেশি ঘুমোয় ও না ।আর মেন্টালি কোন ব্যপারে যে অতিরিক্ত চাপ নিয়েছে তা ও ডক্টর বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছে। এসব ই মূলত অতিরিক্ত মাথা ব্যাথার কারণ। আর মাথা ব্যাথা থেকেই বমি। তাছাড়া অভ্র কোন বিষয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে , বা কোন বিষয় নিয়ে ব্রেইন কে অতিরিক্ত চাপ দিলে বমি করে ফেলে ছোট থেকেই।
.
অবন্তীকে আজ এই প্রথম রেণু খালার কাছ থেকে যথেষ্ট গালি শুনতে হয়েছে । এমনিতেই দুপুর থেকে না খাওয়া ছেলেটা । তার ওপর অবন্তী আবার পাকনামো করে দু দুটো আপেল খাইয়েছে। এসিডিটির জন্যও হয়ত পরের বার আবার বমি করে ফেলেছে ।রেণু খালার গালি শুনে অবন্তী চুপটি করে অভ্রর পায়ের কাছে বসে আছে ।
.
ডক্টর নতুন করে আর কোন মেডিসিন প্রেসক্রাইব করলেন না শুধু পেইন কিলার দিলেন । উনি মেডিসিন ডক্টর কিন্ত অভ্রর এখন নতুন করে আবার সাইক্র্যাটীস্ট প্রয়োজন। ও কি নিয়ে আবার এতো ভাবছে পুরাতন ব্যাপার টাই নাকি নতুন আবার কিছু । ডক্টর ওর জন্য ড.রেহানা জামান কে সাজেস্ট করল। উনি এখনকার একজন নাম করা সাইক্র্যাটীস্ট।উনি ভালো বুঝবেন কি কি স্টেপ নেয়া উচিত এমন রোগীর ক্ষেত্রে।
.
এদিকে অভ্র বেকে বসেছে ও আর কোন সাইক্র্যাটীস্ট দেখাবে না । কিন্তু আজমির চৌধুরী এব্যাপারে দৃঢ় । ছেলেকে সুস্থ করতেই হবে যেভাবেই হোক । উনি আজ রাতেই বাড়িতেই ডেকে পাঠালেন ড.রেহানা কে।
উনি এসে অভ্রর কেস পুরোটা শুরু থেকে স্টাডি করছেন ড্রইং রুমে বসে ।
.
রেণু খালা নিচে খাবার আনতে গেলেন অভ্রর জন্য । ডক্টর স্টাডি করে আসতে আসতে একটু খাইয়ে দেবে।
.
রেণু খালা চলে যাবার পর অভ্র হাত দিয়ে ইশারা করে অবন্তী কে কাছে ডাকল। অবন্তীর অবচেতন মন যেন এটার ই অপেক্ষা করছিল। দৌড়ে গিয়ে ওর মাথার পাশে বসল।
অভ্র কোন মতো উঠে ওর কাধে মাথা রেখে একা একাই হাসতে হাসতে গাইতে শুরু করল,
.
"আমি ভাবতে পারিনি তুমি বুকের ভেতর ফাটছ
আমার শরীর জুড়ে তোমার প্রেমের বীজ
আমি থামতে পারি নি তোমার গালে নরম দুঃখ
আমায় দুহাত দিয়ে মুছতে দিও প্লিজ
এখন অনেক রাত
তোমার কাধে আমার নিশ্বাস
আমি বেচে আছি তোমার ভালোবাসায়।"
.
.
— এভাবে সবাইকে ভয় দেখাতে ভালো লাগে বুঝি?
— তুমি ভয় পাও আমাকে নিয়ে?
— বয়েই গেছে । রেণু খালা আর বাবা ভয় পেয়ে গেছিল।
— ও হ্যা । সেই জন্য কে যেন মুখ কাচুমাচু করে দূরে আমার পায়ের কাছে বসে ছিল। আবার এক ইশারায় দৌড়ে ও এসেছিল। আজ তার কাধে মাথা রাখলে সে নিষেধ ও করে নি । কেন করবে সে তো ভয় পায় নি।
.
— উফ্ফ অভ্র। বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে ।
— আমার জন্য কম কম একটা কাজ করে দিতে পারবে?
— কি?
— বাবাকে রাজি করাও আমি ডক্টর দেখাবো না । বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসে তুমি বললে শুনবে হয়ত।
.
— বাবা শুনবে না । কারণ বাবা আমার চেয়েও বেশি আপনাকে ভালবাসে। কি সমস্যা আপনার বলুন তো? সুস্থ হতে ইচ্ছে করে না?মেডিসিন ঠিক মতো নেন না, এখন আবার ডক্টর দেখাতে চাচ্ছেন না । ঐ একটা পুরনো ব্যাপার নিয়ে কতদিন পড়ে থাকবেন আর বলুন তো । আর নতুন করে আবার কিসের চিন্তা আপনার হ্যা? আপনার এখন থেকে শুধু দুটো কাজ খাওয়া আর ঘুমানো।
.
— ম্যাম আপনার লেকচার শেষ হলে আমাকে একটু ডেকে দিয়েন প্লিজ। আমি ঘুমোলাম।
— ঘুম আর আপনি??? ঘুমোলে কি ক্ষতি আপনার?
— আমি ঘুমোলে তোমাকে রাত জেগে জেগে পাহারা কে দেবে শুনি? আর আমি জানি তো ডক্টর আবার সেই বস্তা পচা ঘুমের ওষুধ দেবে।
— হয়েছে আবল তাবল কথা বলে আমাকে আর ভোলাতে হবে না । আপনার ভেতরে যে কি চলছে একমাত্র আল্লাহ আর আপনি ছাড়া কেউ জানে না ।
— সত্যিই আমার ঘুমোতে ভালো লাগে না ।
.
.
রাত প্রায় একটা পাচ বেজে গেছে । ড রেহানা অভ্র কে নিয়ে বসেছে। অভ্র নীচ দিক হয়ে শুধু নখ চিমটে যাচ্ছে সেই তখন থেকে।
.
— অভ্র ...অভ্রনীল তাকাও আমার দিকে একবার ।
.
অভ্র নখের দিকে আরো মনোযোগ দেয়।
.
— তোমার পুরো নাম বলো তো আমায়। আমি শুনেছিলাম কিন্তু ভুলে গেছি।
— আ...আহনাফ চৌধুরী অভ্রনীল।
— অভ্রনীল এত সুন্দর একটা নাম কে রেখেছে তুমি জানো?
— মা...মা..মাহ
— আমার দিকে তাকিয়ে বলো বাবা। তুমি কি আমকে ভয় পাচ্ছ?
— তাকাবো না । তাকালেই আপনি আমাকে হিপনোটাইস করবেন তাই না?
— উহু। আমি কেন অযথা তোমাকে হিপনটাইস করব শুনি? আমি তো এসেছি তোমার সাথে গল্প করতে । আমি না তোমার মার মতো । আমার সাথে ফ্রি হও বাবা। আজকে আমরা শুধু গল্প করব। শুধু আমি আর তুমি। আমাদের গল্পের কথা আমি কাউকে বলব না । তুমি বিশ্বাস করেই দেখো আমায়।
— এই মার মতো মানে? কিসের মার মতো? আপনার বয়স তো আমার অর্পি আপুর মতো মনে হয় । আর আপনার হঠাত করে আমাকে ছেলে বানানোর শখ হয়েছে কেন? আপনার কি বাচ্চা হয় না?
.
— অভ্রনীল শান্ত হও বাবা। রেগে যাচ্ছ কেন তুমি? বললাম না আজ আমরা শুধু গল্প করব। তুমি কি পুরনো ব্যাপার টা নিয়ে এখনো কস্ট পাও? ভুল ছিল তো বাবা ওটা। ভুল কে ভুলে যাও। এর সাথে নতুন কোন কিছু নিয়েও?
.
— এই তোর কিসের এত প্রশ্ন রে? তুই বেরোবি আমার রুম থেকে? যা ভালোয় ভালোয় বের হ বলছি। তুই আমার রাগের দেখেছিস কি?
.
— শান্ত হও বাবা শান্ত হও। এত রাগ করছ কেন তুমি? কার ওপর এত রাগ তোমার? আমার ওপর? বাবার ওপর? রেণু খালার ওপর? অর্নির বা অর্পির ওপর? অবন্তীর ওপর?? নাকি মায়ের ওপর? অথবা অন্য কেউ? কিংবা নিজের ওপর হয়ত তাই না?
.
অভ্র আরো রেগে উঠে দাড়িয়ে যায় ,
— তুই বড্ড বেশি প্রশ্ন করিস। তুই মেয়ে মানুষ না হলে এতক্ষণ নাক মুখ ফাটিয়ে দিতাম তোর । ভালোয় ভালোয় আবার বলছি বের হ আমার রুম থেকে । আমার সাথে কিসের এত গল্প তোর? তুই কি মনে করিস আমি বুঝি না? সেই দশ বারো বছর বয়স থেকে তোর মতো বহু সাইক্র্যাটীস্ট কে ফেস করতে হয়েছে আমার। তুই কি ভাবিস তোদের কথার এসব ফাদ আমি বুঝি না? আমি আর ধরা দেব না তোদের এসব জালে। আমি বলব না কাউকে কিছু । বাবা তোকে অনেক টাকা দিয়েছে এত রাতে এখানে আসার জন্য তাই না? যা সেসব নিয়ে বাড়ি চলে যা । তা না হলে...তা তা তা না হলে
.
অভ্র বেড সাইডে রাখা ম্যাচ বক্স থেকে ম্যাচের কাঠি ধরিয়ে দেয়,
— আগুন লাগিয়ে দেব একদম । ইচ্ছে মতো পুড়ব তোরে আমি বের হ এখনো সময় আছে ।
.
ড.রেহানা এবার ব্যাপার টা কিছুটা আন্দাজ করতে পারলেন।
.
— ওহ আচ্ছা তুমি এটা চাইছ তো? আচ্ছা ঠিক আছে তবে তাই হবে। তুমি শুধু শুধু এত কস্ট করবে কেন? দাও দিয়াশলাই টা আমাকে দাও ।আমি নিজেই...
— মা..মা..মানে?
.
অভ্র অবাক হয়ে তাকানোর ফাদে ফেলে উনি ওর হাত থেকে ম্যাচ নিয়ে নিল। তারপর নিজেই কাঠি জ্বালিয়ে শাড়ির আচলের এক কোনে আগুন ধরিয়ে দিল।
অভ্র একবার ভদ্র মহিলার আচলের দিকে একবার তার মুখের দিকে তাকাতে লাগল। আবার যে খুব ভয় পেয়ে গেছে বোঝাই যাচ্ছে । কয়েক মুহুর্ত পর নিজেই দৌড়ে গিয়ে হাত দিয়েই আচলের আগুন নেভিয়ে দিল । কয়েক সেকেন্ড এ তেমন মারাত্নক আগুন তখন ও ধরে ওঠে নি।
.
— এই আপনি কি পাগল ? কি করতে যাচ্ছিলেন এটা?
— তাহলে তুমি কি পাগল? তুমিও তো আমার সাথে এটাই করতে চাইছিলে।
— আমি তো ..আমি তো এমনি— এরকম ভয় পাচ্ছ কেন? কি এমন হতো আগুন যদি লেগেই যেত?
— আপনার আমার মায়ের মতো মরে যাবার খুব শখ তাই না?
— একটু আগেও তো বললে আমি তোমার মার মতো না । এখন আবার নিজেই স্বীকার করছ?
.
অভ্র শুধু মাথা নিচু করে তাকিয়ে থাকে। ড.রেহানা অভ্র কে বসিয়ে দিল। অভ্র ও চুপচাপ বসে পড়ল। সে ভয় পাওয়ার দরুন এখনো শ্বাস জোরে জোরে নিচ্ছে। ডক্টর বুঝলেন এখন আর এত চাপ দেয়া উচিত হবে না ।এমনিতেই সন্ধ্যায় ই এক বার সেন্সলেস হয়ে গেছিল। আবার এখন ও খুব বেশি হাইপার হয়ে যাচ্ছে অভ্র কিছু জিজ্ঞেস করলেই । সময় মতো আগুন লাগানোর নাটক করে তাও কিছুটা শান্ত করা গেছে ।
হাতে ফোস্কা পড়েছে কিছুটা । রেহানা জামান সেখানে অতি যত্নে বার্ণল ক্রিম লাগিয়ে দিচ্ছে।
.
— জ্বালা করছে খুব?
— হুম। মার ও নিশ্চই এমন জ্বালা করছিল। না না এর চেয়ে বেশী । সব আমার জন্য সব । আমি যদি সেদিন ঘুমিয়ে না পড়তাম তাহলে কে লক করেছে ঠিক দেখতে পেতাম। আর লক করতেও দিতাম না । কিন্তু আ..আমি কে...কেন সেদিন ঘুমিয়ে পড়লাম । সব দোষ আমার ।
— আচ্ছা দাড়াও আমি একটা ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি । ঠিক হয়ে যাবে।আর জ্বালা করবে না ।
.
এ ছাড়া আর ড.রেহানার কোন উপায় ছিল না এভাবে মিথ্যে বলেই ঘুমের ইনজেকশন ইনজেক্ট করে দিলেন।। অভ্র কান্নাকাটি করে আবার প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। আসল কথা কিছুই বলছে না । নতুন কিছু নিয়েও অতিরিক্ত কি চিন্তা করছে তা বলার ধারে কাছেও যাচ্ছে না ।আর এমনিতে বললে ঘুমের ইনজেকশন কিছুতেই ইনজেক্ট করতে দিত না । তাই এভাবেই ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন উনি।
.
.
ডক্টর আজমির চৌধুরীকে বুঝিয়ে বললেন,
অভ্র কিছুতেই আমার সাথে কো অপারেটিভ হচ্ছে না । এটা তো কোন শারীরিক প্রবলেম নয় যে আমি কি রোগ সেটা দেখেই জোর করে মেডিসিন খাইয়ে দেব। আর অসুখ সেরে যাবে। মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে রোগীকেও কোঅপারেটিভ হতে হবে । তার ভেতরে কি চলছে তা যদি না বলে আমাদের তো কিছু করার নেই । কি কাউন্সিলিং করাব? যদি বিষয় টাই না জানি। অভ্র অন্য সব প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে ঠিকঠাক রেসপন্স করে । কিন্তু আসল প্রশ্ন করে ওর ভেতর ঢুকতে চাইলেই ও চট করে বুঝে ফেলে। আর রেগে গিয়ে কথা ঘুরিয়ে ফেলে। ও ছোট থেকে এসবে এত বেশি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে যে, যেকোন সাইক্র্যাটীস্ট এর কথার ফাদ এখন চট করে ধরে ফেলতে পারে । আর হিপনোটাইস ও করা যাচ্ছে না । ও মনোযোগ ই স্থির করে না আমার দিকে। ও এসব বুঝে উঠেছে কিভাবে এসব এড়াতে হয়। আমি এতক্ষণ ধরে আপনার ছেলের থেকে নতুন কিছুই জানতে পারি নি। এত বছরের এ প্রফেশনে ও ই আমার প্রথম ব্যার্থ্তা। আমার মনে হয় ওকে আর একটু সময় দিন। আর আমি কিছু মেডিসিন প্রেস্ক্রাইব করে দিচ্ছি। আপাতত নিজে নিজেকে যেভাবে রাখতে চাইছে রাখুক। কিন্তু ঘুম টা ঠিক মতো ঘুমোক আর ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকুক মেডিসিন গুলো নিয়ে । একদিনে হবে না আসলে আমাকে ধীরে ধীরে ওর ভেতরে ঢুকতে হবে । তবুও যদি ও কো ওপারেশন করে তবেই সম্ভব।
.
.
এদিকে অবন্তী অভ্র'র পাশেই বসে আছে । এই প্রথম ওকে এত গভীর আর নিষ্পাপ ভাবে ঘুমোতে দেখছে। চাদর গায়ে দিয়ে,এলোমেলো চুল গুলো নিজেই ঠিক করে দিচ্ছে। অভ্রর কোন সাড়া ই নেই । অন্যদিন হলে ধপ করে উঠে বসত। অবন্তী অভ্রর সাথে একা একাই গল্প করে যাচ্ছে,
.
— কি?? কেমন লাগে ঘুমোতে? খুব আমাকে পাহাড়া দেয়া হতো তাই না জেগে জেগে আর কখনো মিথ্যা ঘুমের ভান করে ? এখন আমি আপনাকে পাহারা দিচ্ছি বুঝলেন? আমি কিন্তু এখন চাইলেই পালিয়ে যেতে পারি।ধরতেও পারবেন না আপনি।
ইশশ হাত গুলোতে কেমন ফোস্কা পড়েছে দেখো। খুব তো নিজের স্কিন নিয়ে সেন্সেটিভ থাকতেন।এখন ফর্সা হাতে যে এসব দাগ হয়ে থাকবে কিছুদিন ।
.
অবন্তী হাত গুলোতে স্পর্শ করতে করতে কৌতূহল বশত নিজের হাতের সাথে রেখা গুলো মিলিয়ে দেখতে শুরু করে ।
" ধুর এর হাতেও খালি কাটাকুটির দাগ। ছাতার মাথা কিছুই বুঝি না ।"
অবন্তী বিরক্ত হয়ে হাত রেখে দেয়।
.
.
কিছুক্ষণ পর অবন্তী খেয়াল করে অভ্র একদম ঘেমে উঠেছে ঠোট নাড়িয়ে নাড়িয়ে নিজে নিজে কি কি সব বিড় বিড় করে যাচ্ছে কিন্ত এত আস্তে আর অস্পষ্ট অবন্তী কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না । ঘুমের ভেতর ই চোখের কোন বেয়ে পানি পড়ছে অভ্র'র।
.
.
.
চলবে..............................