: আনুষ্ঠান শেষ হতে এখনো বাকি,এখনো কিছু গেস্ট আছে যারা একটু দেরি করে আসবে, তাই জিসান তিশা,নিশিও ভাবীকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।আর ভাই,বাবা ও মার সাথে নিজেও পার্টিতে রয়ে গেলো গেস্ট এটেন্ড করার জন্য।তিশার মা বাবা কে ও পাঠিয়ে দিয়েছে,রাত বেশি বলে।কিন্তু রায়হান রয়ে গেছে।
:তিশা বাসা এসে ফ্রেস হয়ে বসলো।খুব ক্লান্তে ঘুম আসছে কিন্তু্ু ক্ষুধাও খুব লাগছে।বলা হয় না,যার বিয়ে সেই খেতে পারেনা কিন্তু বাকি সবাই আনন্দ করে পেট ভরে খায়।অনুষ্ঠানে সবার সামনে লজ্জায় কিছু খেতেই পারেনি।কিন্তু এখন টিকা যাচ্ছে না।আর এই বাসার কোন কিছু আমি জানিই না কোথায় কি আছে,তা না হলে রান্নাঘর থেকে কিছু নিয়ে খেয়ে নিতাম।তিশা ভাবছে,,,,। আর এমন সময় ফোন আসলো।স্ক্রিনে লিখা জিসান।
হ্যালো,,,, আসসালামালাইকুম।
জিসান সলামের জবাব দিয়ে,বাসায় পৌঁছিয়েছো।
হুমমমমম।
কখন????
এইতো কিছুক্ষন হলো।
ফোন কেনো দেও নাই।
না আসলে, ভাবলাম আপনে ব্যস্ত।
আমি যতোই ব্যস্ত থাকি,তোমার ফোনের অপেক্ষায় থাকি।
হঠাৎ জিসানের মুখে তুমি শুনে তিশাতো অবাক।
কি হলো কথা বলো না কেন।
না, আসলে সরিিিি।
ওকে বাদ দেও,শোনও
হুমমমম
আমার আলমারীর চাবী দেখো বালিশের নিচে আছে,ওখান থেকে চাবিটা নিয়ে আলমারীটা খোলও।
তিশা চাবী নিয়ে আলমারীরটা খুললো।
দেখও আলমারীর নিচের তাকে তোমার জন্য কিছু খাবার আছে,তুমি সারা দিন তেমন কিছুই খাওনি।এখানেও কম খেতে দেখলাম।আর এখন বাসায় তোমাকে খাবার দেয়ার মতো কেউ নেই।তুমি এখান থেকে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পরো।খালি পেটে তোমার ঘুম আসবে না।আমার আসতে লেট হবে,তাই তুমি ঘুমিয়ে পরো।
তিশা মনোযোগ দিয়ে জিসানের কথা শুনছে,আর ভাবছে।আলমারীর নিচর তাকে,বিস্কুট, কেক জুস,আরো কিছু খাবার আছে,এখানের সব খাবারি তিশার পছন্দের।কি করে সম্ভব, একটা মানুষ এমন কি করে হতে পারে।
তিশা হ্যালো, তিশা,শুনতে পাস।জিসান ফোনের অন্য পাশে।
হুমমমমম,আমি শুনছি।চিন্তা থেকে ফিরে,,।
তাহলে রাখি এখন।
আপনে খেয়েছেন।
না,এখন বসবো রায়হানের সাথে।
ওকে।
বায় বলে ফোন রেখে দিলো তিশা।কিছু হালকা খাবার খেয়ে তিশা বিছানায় পিঠ লাগাবার সাথে সাথেই।ঘুমিয়ে পরলো।
জিসানের আসতে আসতে রাত ১ টা বেজে গেলো।জিসান এসে দেখে তিশা ঘুম,তাই আর ডাক দেয়নি।ফ্রেস হয়ে তিশার পাশে শুয়ে,তিশাকে একটান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।তিশাকে জরিয়ে ধরে নিজেও ঘুমিয়ে পরলো।
আজ সকালে তিশার ঘুম আগে ভাঙ্গলো, তিশা দেখে জিসানের বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে।তিশার কিছুটা লজ্জা লাগলো।তিশার নাকে একটা মিস্টি ঘ্রান আসে,এই ঘ্রাণ টা জিসানের শরীল থেকেই আসছে।জিসানের শরীলের এই ঘ্রাণটা তিশার খুব ভালো লাগে।এর আগেও কয়েকবার পেয়েছে,যখনি জিসান ওর একদম কাছে ছিলো।জিসানের শরীলের ঘ্রনটা তিশাকে কিছুটা মাতাল করে তুলছে,তাই তিশার উঠতেই মন চাইছে না আজ।সারাদিন জিসানের বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে মন চাইছে।হঠাৎ মনে পরলো আজতো তিশার নিজেদের বাসায় যাওয়ার কথা....।না উঠতেই হবে।তিশা আস্তে করে উঠে চলে যেতে চাইলে কিছুতে টান অনুভব করে।পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে জিসানের হাতে তিশার শাড়ীর আচলটা।তিশা চলে যেতে চাইলে জিসান আচল ধরে টান মারে।তিশা সামলাতে না পেরে জিসানের বুকের উপর পরে যায়।
আমার তিশাপাখি যাচ্ছে কোথায় আমাকে ছেড়ে.....
আপনে জাগনা ছিলেন এতোক্ষন।
চুপিচুপি আমাকে দেখার কি আছে, আমিতো পুরাই তোর।আর এতোই শখ আমার বুকে ঘুমানোর তাহলে কোথায় যাস,সারাদিন তোকে আমি এই বুকের মধ্যে রাখতে পারবো।তিশাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কথাগুলো বলছে জিসান।
না না আমার এতো শখ নেই,প্লিস ছাড়ুন, তা না হলে আজ বাসায় গেলে আমি আর আসবো না।
এবার জিসান তিশাকে বিছানায় ফেলে, তিশার উপর উঠে দুহাত চেপে ধরে।
তিশা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
কি বললি,তুই।আসবি না,,,,,তুই আমার বাঁধনে বেধে আছোস। আর এই বাঁধন ছিড়ার সমর্থ কারো নেই।তিশার কপালে কপাল দিয়ে,নাকে নাক ঘসছে আর বলছে।তুই না আসলে তোকে বেধে নিয়ে আসবো।পালাতে চাইলে শিখল দিয়ে বেধে রাখবো। তাই আমাকে ছাড়ার স্বপ্ন ছেড়ে দেন ম্যাডাম বলই,তিশার ঠোটে একটা লিপ কিস করে।এর পর জিসান উঠে চলে যায় ফ্রেস হতে।
তিশার চোখ মনে হয় কপালে উঠে গেছে,জিসানের কিস করায়।তিশা এখনো ভাবছে কি হলো এটা।ওর জেনো বিশ্বাস হচ্ছে না।তিশা এতোটাই চিন্তায় মগ্ন ছিলো যে ও সব কিছু ভুলেই গেছে।
জিসান এসে দেখে তিশা এখনো ভাবছে, কি রে এতো কি ভাবছেন।আরো কিছু লাগবে টিক তিশার সামনে এসে।
না না,,,। আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।তিশা ফ্রেস হয়ে দেখে জিসান রেডি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য।
আপনে কোথাও যাবেন।
জিসান তিশাকে আয়নার সামনে এনে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরেছে,আর নিজের থুতনি তিশার কাধে রেখে,,,,,হুমমম।আমাকে অফিসে যেতেই হবে,ভাইয়ার সাথে।অনেক কাজ আছে,আমি না গেলে ভাইয়ার উপর সব চাপ পরে যাবে। রায়হান আসবে তোমাকে নিতে, তুমি চলে যেও ওর সাথে।আমি অফিস থেকে সরাসরি চলে আসবো তোমার কাছে।কথা গুলো বলছে আর তিশার গলায় কাধে কিস করছে।জিসানের এতো কাছে আসা,আর ওর একটা কিসে তিশা কেপে উঠছে।তাই জিসান তিশাকে আরো একটু শক্ত করে ধরে।জিসান তিশার কানের কাছে মুখটা নিয়ে,এখনি যদি এতো কাপতে থাকস তখন কি করবি,যখন আমি তোকে ভালোবাসার সাগরে ডুব দেওয়াবো।জিসানের কথায় তিশার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে কিন্তু কেনো জানি ভালোও লাগছে।
হইছে এখন ছাড়ুন।সবাই বসে আছে, আমাদের জন্য।
আচ্ছা চল,,,,জিসান একটু হেসে দিলো তিশার এ অবস্থা দেখে।তিশাকে নিয়ে নিচে নেমে এলো।
খাবার টেবিলে,
কি রে জিসান তুই অফিসে যাবি,আজ না তিশাদের বাসায় যাওয়ার কথা।একদিন না গেলে কি হয়।জিসানের মা।
না মা আজ যেতেই হবে,অনেক কাজ বাকি পরে গেছে।আর আমি রায়হান কে সব বুজিয়ে বলেদিছি।তাই চিন্তা করোনা,আমি অফিস শেষ করেই ওখানে চলে যাবো।
আমি বলি কি, আমি না হয় চলে যাই,তুই থাক।
না বাবা,তোমার বয়সের তুলনায় তুমি অনেক কাজ করেছো, আর না।এখন আমাদের ভাইদের উপর ছেড়ে দেও।আচ্ছা আমার শেষ,ভাইয়া তুমিও তারাতারি চলে আসো আমি বাহিরে আছি।
আচ্ছা চল আমারো হয়ে গেছে।
জিসান অফিসে চলে গেলো,আর তিশা নাস্তা করে ভাবীর সাথে টেবিল গুছাচ্ছে।
আরে তিশা মা তুমি কেনো করছো,তুমি যাও রেডি হয়ে নেও।রায়হান চলে আসবে।
এই কাজটা করেই আমি যাচ্ছি।
থাক তিশা আমি আর খালা মিলে করে ফেলবো, তুমি রেডি হতে যাও।
সমস্যা নেই ভাবী আমার রেডি হতে তেমন সময় লাগবে না,আমাকে সাহায্য করতে দেও এখন।
জিসান ঠিকই বলেছে,তুমি অনেক জিদিই।
তিশা ভাবীর সাথে কাজ গুলো করে রুমে চলে আসে রেডি হতে।
কিছুক্ষন পর নিশি এসে,মেঝো ভাবি তোমার ভাইয়া আর বাবা এসেছে নিচে,তোমাকে মা ডাকছে চলো।
তিশা নিশিকে নিয়ে নিচে এসে ভাইয়া আর বাবার সাথে দেখা করে।কিছুক্ষন সবাই কথাবলে,তিশা সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে যায়।
তিশার মা তিশার জন্য অপেক্ষা করছে,মাকে দেখে তিশা জরিয়ে ধরে।
তিশার মাতো কান্না করতে থাকো,এতোই যদি ভালবাসতে তাহলে আমাকে বিদায় করার জন্য এমন উঠে পরে লাগলে কেনো।এখন বিদায় করে, এতো কান্না করছো।
পাগল মেয়ে,তুই যেদিন মা হবি সেদিন বুঝতে পারবি,,, ভেতরে আস এখন।আজ আমি তোকে নিজের হাতে খাওয়াবো টিক আছে। ওকে মা জননি,,,,।
আর শোন তোর রুমে সীমা আর নিলা বসে আছে তোর জন্য।এই কথা আগে বলনি কেনো,তিশা দৌড় দিয়ে রুমে চলে আসে।
কি রে শাঁকচুন্নিরা তোরা আমার রুমে কি করোস।তিশশশশা।নিলা দৌড়ে এসে তিশাকে জড়িয়ে ধরে।হইছে ছাড়,,,,,। আমিও কিন্ত আছি।তিশা -তাই,আমিতো দেখিনি।তাইইই,,,,,শয়তান মাথারী,আমাকে বলে দেখেনি,সীমা আর তিশা রুমের চারপাশে দৌড়াচ্ছে, তিশাকে মারার জন্য।হইছে থাম এখন।
হে রে তিশা এবার বল।
কি বলবো।
এই তো তোর বাসররাতের কাহিনী।
মানেননন।
মানে মানে করছোস কেনো এতো,আমাদের একটু বল আমাদেরও ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।
এতোই যদি বাসর রাতের কাহিনী শুনতে মন চায় তোর, তাহলে সীমাকে জিঙ্গেস কর,ওরতো আমার চেয়ে বেশি আইডিয়া আছে,যা ওর থেকে শিখে নে।।
নিলা সীমার দিকে তাকিয়ে আছে,কি রে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছোস কেনো।দেখ আমি কিছু বলতে পারবো না,তোর জানার এতো ইচ্ছা থাকলে তুই বিয়ে করে নে।তোর জামাই তোরে সব শিখিয়ে দেবে।
এখন না না করছো কেন সীমাবেগম,এতোক্ষন আমার পিছে লেগেছিলে তখন মনে ছিলোনা।
আরে বাদদে,ও একটা ফাজিল মেয়ে,বিয়ের আগে বাসরঘর করার শখ বেশি দেখছ না।তাই,,,,নিলা সীমাকে মারার জন্য তেরে উঠে।
তিশা থামিয়ে দেয়, হইছে।আর না এবার বস তোরা।তিনজন বিছানায় শুয়ে উপরের পাখার উপর তাকিয়ে আছে।
তিশা,,,,, জিসান ভাই তোকে অনেক ভালোবাসে তাই না।
||হুমমমম।
বিয়ের আগে নাকি পরে।
||বিয়ের আগের থেকে।
তাইইই।দেখে কখনো মনেই হতো না।
||হুমমমম।
তুই ভাইয়াকে ভালোবাসিস।
||যদি তোকে কেউ বলে,সে তোকে ৫ বছর ধরে ভালোবাসছে,বিনিময় কিছুই তোর কাছে আসা না করে।তোর অপেক্ষায় নির্গুম রাত কাটিয়েছে কবে তুই একটু বড় হবি।আর তাকে একটু ভালোবাসার চাদর দিয়ে জরিয়ে ধরবি।কেউ যদি তোর জন্য নিজের ক্যারিয়ার স্বপ্ন বিসর্জন দেয় শুধু তোকে নিজের নজরে রাখতে আর অন্যের নযর থেকে বাঁচাতে। তোর বিপদে সবার আগে ঢাল হয়ে দাড়াতে।এমন অনেক কিছু যা বলে শেষ করা যাবে না।এমন মানুষটিকে, না ভালোবেসে থাকা যায় বল।
সত্যি বলছিস,৫বছর ধরে, মানে তুই যখন অষ্টম শ্রেণীতে পরস,তখন তেকে তোকে ভালোবাসে।
||হুমমমমমম।
জিসান ভাই সাঙ্গাতিক মানুষ,এতো কিছু মনে লুকিয়ে রাকছে কিভাবে।
||জানিনা,কিন্ত এখন উপলদ্ধি করে,,,তাকে নাকি আমি অনেক কস্ট দিছি।
ভালোই হলো তিশা, তোর বিয়েটা যেভাবে হইছে,আমিতো ভাবছিলাম অনেক সমস্যা হবে।কিন্ত জিসান ভাই যেহেতু তোকে ভালোবাসে দেখবি আর কোন সমস্যা হবে না।
||কিন্ত অর সীমাহীন ভালোবাসা দেখে আমারতো ভয় লাগে।
আরে ভয়ের কিছু নেই,আস্তে আস্তে দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে,ভাইয়ার রাগও অনেক কমে যাবে।
||তাই জেনো হয়।
.
.
.
চলবে....................................................