" আমি শুভ্রকে মেরে ফেলিনি। ঐ এক্সিডেন্টে আমিও মারা যেতে পারতাম। সবাই মারা গেল আর বেচে রইলাম শুধু আমি। সত্যিই কৈ মাছের প্রাণ আমার।"
অবন্তী উচ্চস্বরে বলে,
"কার কৈ মাছের প্রাণ আর কার পুটি মাছের প্রাণ অতশত বুঝতে চাই না আমি। আপনি একটা রাক্ষুসে। আপনার জন্মের আগ থেকেই এই মৃত্যুর মিছিল তৈরি হয়েছে আপনারই জন্য ।"
.
"জন্মের আগে কাকে মেরেছি আমি?তবে হ্যা এটা সম্ভবত সত্য আমি রাক্ষুসে।"
.
" কিছু না । ভুল করে বলেছি। জন্মের পর থেকে। কিছু মনে করবেন না আমি আসলে এভাবে বলতে চাইনি। হঠাৎ ..."
.
" ভুল করে তুমি যে বলোনি তা আমি বেশ বুঝতে পারছি ।"
.
" কিন্তু আপনি শুভ্রকে কেন মারলেন সেটাই আমি বুঝতে পারছি না ।"
.
" যেটা আমি করিইনি সেটা আমি বোঝাবো কি করে?"
.
" হ্যা আপনি তো শুধু মদ খেয়ে মাতলামো ছাড়া কিছুই পারেন না ।"
.
" বললাম তো ভুল ছিল।সব কিছু ।"
.
"বাহ সব কিছু ভুল বলে চালিয়ে দিলেন তাই না?"
.
" না । আমি মানছি আমি অপরাধী। আমার দোষ ছিল। অবশ্যই আমার দোষ ছিল। কিন্তু ইচ্ছে করে কিছু করিনি বিশ্বাস করো । কিভাবে কি হয়ে গেলো তা আমি নিজেও জানি না । একটা বার আমাকে মাফ করা যায় না? আমি তো নতুন করে শুরু করেছিলাম সবটা। নিজেকে পাল্টে নিয়েছিলাম আমি। আমি আর আগের অভ্রনীল নেই বিশ্বাস করো ।"
.
" হ্যা জানি তো । আপনি তো এখন শুভ্রনীল হয়ে গেছেন তাই না? শুভ্রনীল আর অভ্রনীল এই দুই সত্ত্বার অধিকারী করে নিয়েছেন নিজেকে।"
.
" সে সব তো তোমারই জন্য অবন্তী।"
.
" শুভ্রর ডায়েরি কোথায় পেলেন?"
.
" ওর কাছেই। আমি তোমাদের বাড়ি থেকে এসব ঝামেলা মিটিয়েই হসপিটালে যাই শুভ্রকে দেখতে। ততক্ষণে শুভ্রর অবস্থা আরো খারাপ। সেন্স একদম ছিল না ।কোমায় ছিল। আমি প্রায় সারাদিন শুভ্রর পাশে, শুভ্রর আইসিইউ এর সামনে বসে রইতাম। খুব খারাপ লাগত আমার ওকে দেখলে। আমার জন্য আমার ভালোর জন্য, আমাকে সাহায্য করতে এসে নিজেই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিল। বাবা খোজ নিয়ে জানতে পারে শুভ্রর তেমন আপন কেউ নেই। ডক্টর বলেই দিয়েছিল ওর বাচার আশা খুবই কম। তাই বাবা চায় নি আবার শুভ্রকে নিয়ে কোন জটিলতার সৃষ্টি হোক। এমনিতেই তোমার ফ্যামিলির কেসটা সবে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। তাই শুভ্র নামে যে আরো একজন এই এক্সিডেন্ট এ অসুস্থ তা বাবা সবাইকে গোপন রাখতে বলে। তাই ওর ব্যাপারটা বাবা আর আমি ছাড়া তেমন কেউ জানত না ।বাড়িতে অন্য কাউকে বলা হয় নি কারন কোন ভাবে অর্নি জেনে গেলে কিছু একটা গন্ডগোল বাধাতো ।আর বলতে গেলে শুভ্রই ছিল একমাত্র সাক্ষী। শুভ্রর দুকুলে তেমন আপন কেউ নেই খোজ নেবার মতো ।ও মারা গেল কি বেচে থাকল সে বিষয়ে কেউ খোজ নেবার মতো ছিল না । তবুও আমরাই ওর ট্রিটমেন্ট করাতে থাকি। ওর দেখভাল মোটামুটি আমিই করতাম। তো ওর ব্যাগপ্যাক ও আমার কাছেই ছিল সেই সুত্রে। কিন্তু ঐ যে বলে না, দেয়ালের ও কান থাকে । তোমার চাচারা জানতে পারল শুভ্র'র ব্যাপারটা । তারপর আরো বেশি ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করল। আবার তখনই আমরা এটাও জানতে পারি যে, শুভ্র'ই সে যার সাথে তোমার বিয়ে ঠিক করা আছে। আর তারা শুভ্রর ফুফুকেও খোজ দেয় ।তবে উনার নাম তো আর আমি জানতাম না শুধু মুখে চিনি। এই জন্য নাম শুনে চিনতে পারি নি তোমার কাছ থেকে ।যাই হোক, ঘটনা তখনই আরো বেশি জটিল হয় যখন ওর ফুফুরা জানতে পারে । এদিকে শুভ্রও ধীরে ধীরে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনদিন পর ও মারা যায় ।"
.
" মারা যায় নাকি মেরে ফেলেছিলেন? "
.
" যে ছেলেটা আমাকে সাহায্য করার জন্য নিজে থেকে এগিয়ে এসে নিজেই এত বড় বিপদে পড়েছিল আমি তাকে মেরে ফেলব? এতটুকু চিনেছ আমার? তুমি জানো, আমি কোন এক অচেনা আকর্ষনে ওর পাশেই বসে রইতাম । ভিজিটিং আওয়ার শেষেও রুমের সামনেই বসে রইতাম। সেদিন আমি ওর জন্য মেডিসিন আনতে যাই । ডক্টর প্রেসক্রিপশন দিয়ে মেডিসিন গুলো আনতে বলে । ফেরার পর দেখি আইসিইউ এর সামনে বেশ বড় ধরনের জটলা পেকে গেছে । ভেতরে গিয়ে জানতে পারি, শুভ্র আর নেই। ও মারা গেছে । এই ঘটনা বেলী ফুফু আর তোমার চাচারা অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। হআমি নাকি মেরে ফেলেছি শুভ্রকে । সাক্ষী সরানোর জন্য । সারাদিন ভাতিজার খোজ খবর পর্যন্ত নিতে আসতেন না অথচ মারা যাবার পর তাদের দরদ যেন উথলে উঠল। কিছু না দেখে শুনেই পুরো দোষ চাপিয়ে দিল আমার ওপর । এদিকে পুলিশেও ইনফর্ম করতে দেয়া হচ্ছিল না কারণ আগের কেসের সাথে শুভ্রর কেসটাও ইনভলভ । আমি এটাতে না ফাসলেও আগেরটা তে ফেসে যাব। আর আমাদের ফ্যামিলিতে তো পুলিশ কেস এড়িয়ে চলা হয় ফ্যামিলি রেপুটেশন ঠিক রাখার জন্য । শুভ্রর ও নর্মাল একটা ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করা হলো ।বেলী ফুফু এটার ক্ষতিপুরণ চাইলেন।তাকে তা প্রতি মাসে মাসে দিতে হবে। কিন্তু আবার বিপত্তি বাধল তোমাকে নিয়ে । তোমার কি হবে? তোমার চাচারা তোমার ঝামেলা নিতে চাইলেন না আর। অথচ তোমার ভবিষ্যতের কথা বলেই এতগুলো টাকা ক্ষতিপুরণ হিসেবে নিলেন। আমাদের ডিলেও এই শর্ত ছিল আমরা টাকা দেব কিন্তু আমাদের বাহিরে যেন আর কেউ এসব ব্যাপারে জানতে না পারে ।তুমিও না । কারণ তুমি জানলে অবশ্যই তুমি স্টেপ নিতে। যাই হোক, শেষে বাবা বলল আমার বিয়ে তোমার সাথেই হবে অবনীর সাথে না । আমি তোমার লাইফের সব কিছু যখন শেষ করেছি তখন আমাকেই তোমার দায়িত্ব নিতে হবে । তোমার সব শেষ থেকে আমিই যেন নতুন সূচনা হই। অবনীর সাথে বিয়ে ভাঙার জন্যও তারা টাকা নিলেন। এসব বিষয় না জানত অবনী না জানতে তুমি। পরের দিনই তোমার সাথে আমার বিয়েটা জোর করেই দেয়া হয়। আর অবনী কিভাবে যেন টাকার বিষয়টা জানতে পারে । ও সেটাই তোমাকে বলে অথচ ও নিজেও আসল ব্যাপার জানে না । আর তুমি ভেবে নাও তোমাকে কেনা বেচা করা হয়েছে । তারপর তো আমাদের বিয়ে। তারপর তো জানোই সব কিছু ।"
.
" না, তারপরও অনেক কথা রয়ে গেছে । তারপরও রয়েছে অনেক প্রশ্ন।"
.
" বলো তোমার আর কি কি প্রশ্ন আছে?আমি আজ সব উত্তর দেবো বললাম তো । সব শুদ্ধ উত্তর।"
.
" যেই আপনি আমাকে সহ্যই করতে পারতেন না সেই আপনি হুট করে কি করে এত ভালোবেসে ফেললেন আমায়? কই আমি তো হুট করে ভালোবাসতে পারি নি। যথেষ্ট সময় লেগেছে আমার । আপনি হুট করেই একদিন বললেন ভালোবেসে ফেলেছেন আমায়। আর কেন বেসেছেন তা পরে বলবেন। সেই পরে বলা আজও হয়ে উঠল না আপনার? "
.
" সেই উত্তর তো আমি প্রথমেই দিয়ে দিয়েছি তোমাকে ।"
" মানে?"
"ঐ যে শুভ্রর ডায়েরি । হাতে তুলে দিয়েছি তো তোমার।"
" ডায়েরির সাথে ভালোবাসার কি সম্পর্ক?"
"আছে। "
"কি সম্পর্ক?"
.
" তোমার মনে আছে আমি ঠিক কবে থেকে তোমার প্রতি একটু করে দুর্বল হই?"
.
" হুম।আমি যদি খুব বেশী ভুল না করি তবে সেদিন রাত থেকে । যেদিন আপনি জোর করে আপনার হার্ট বিট আমাকে ফিল করিয়েছিলেন। আমার কাধে হাত রাখতে চেয়েছিলেন ।"
.
" হুম। অর্থ্যাৎ কোন দিন বলতো?"
.
" ঐ যে আমাদের রিসেপশন পার্টিতে আপনি ওমন একটা বিহেভ করার পর বাবা আপনাকে রুমে আটকে রেখেছিল তিনদিন। তারপর আমি প্রথম যেদিন আপনার রুমে যাই । আপনার সাথে থাকতে শুরু করি সেদিন।"
" হুম । তোমার স্মৃতিশক্তি তো বেশ তুখোড় ।"
" আপনার আরো বেশী ।"
" তাই নাকি?"
" হুম।"
.
" যাই হোক, এক্সিডেন্টএর সময় শুভ্র'র হাতেই ডায়েরিটা ছিল। এজন্য কিছুটা রক্তের ছিটে পড়েছিল ওতে। ওকে হসপিটালে এডমিট এর পর ওর জিনিসপত্র সব আমার কাছেই ছিল। ডায়েরির কভারটা আমার হুট করে খুব ভালো লেগে যায় । কৌতূহল জাগে। কিন্তু এত শত ঝামেলার জন্যে ওটা খোলাই হয়ে উঠছিল না । বিয়ের দিন ও ভেবেছিলাম ওটা পড়ব । কিন্তু তুমি এমন সব কথা বলে মেজাজ খারাপ করে দিচ্ছিলে! তারপর আমাকে যখন রুমে লক করে রাখল বাবা তখন ঐ তিনদিনে আমি মোটে চার বার পড়েছি ঐ ডায়েরি। কেউ এত সুন্দর করে তাদের গল্পগুলো লিখতে পারে আমার জানা ছিল না । শুভ্র'র লেখাগুলো আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে নিয়েছিল। ওতে তোমাদের দুজনের গল্প গুলো ছিল। তোমাদের একে অপরকে দিনের পর দিন বিশ্বাসের গল্পগুলো লিপিবদ্ধ ছিল। তোমাদের দুজনের প্রতি দুজনের এতটা বিশ্বাসই আমাকে আকৃষ্ট করেছিল। দুজনের এত দূরত্ব, এত যোগাযোগহীনতা থাকা সত্ত্বেও এতটা বিশ্বাস আর ভরসা একে ওপরের প্রতি। অথচ আমার জীবনে এই বিশ্বাস আর ভরসার বড়ই অভাব ছিল। আমার সব চেয়ে আপনজনরা আমাকে কখনো বিশ্বাস করত না । আমার ওপর সামান্যতম ভরসা করত না । ডায়েরি পড়েই আমি ভেবে নিয়েছিলাম আমি যদি একমাত্র কারো থেকে বিশ্বাস আর ভরসা পাই সে হচ্ছ তুমি। আর সত্যি বলতে আমি ডায়েরিতে তোমার স্বভাব চাল চলন কথা বার্তার ধরন তোমার কি পছন্দ না পছন্দ সে সব কিছুর বর্ণনা পড়েই তোমাকে ভালোবেসে ফেলি। তোমাকে মন থেকে মেনে নিই। কিন্তু আমি যখনই তোমাকে আপন করে নিতে চাইতাম, নিজের করে ভাবতে চাইতাম, তখনই তুমি শুভ্র'র দোহায় দিতে বারবার। বারবার বলতে তুমি শুভ্রর আমানত। এসব শুনে আমার নিজেকে আরো বেশি অপরাধী মনে হতো । আবার ভয়ও হতো এই সব কিছু শুনে যদি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও। কিন্তু আমি তো তোমাকে ছাড়তে পারতাম না । আমি যে তোমার নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলাম।আমি বার বার তোমাকে বলতে চেয়েছি সবটা কিন্তু কোন না কোন কারণে বলা হয়ে ওঠেনি আর। শুভ্রর অভাব মেটাতে আমি নিজেই ধীরে ধীরে শুভ্র হয়ে ওঠার চেষ্টা করি । আমি ঐ ডায়েরি বার বার পড়ি । শুভ্রর কি কি তুমি পছন্দ করতে সেসব আমি নিজের মাঝে নেয়ার চেষ্টা করি । যেমন হুট হাট কবিতা বলা, ইমোশনাল কথাবার্তা বলা, সুন্দর ভাবে গুছিয়ে কথা বলা। আমি এটাও বুঝতে পারি এসবে তুমিও আমার প্রতি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছ। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু তুমি হঠাৎই শুভ্রর সাথে যোগাযোগ করার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠলে। আমি কিচ্ছু ভেবে পাচ্ছিলাম না আমার কি করা উচিত এখন। সত্যি বলার সাহস ও করে উঠতে পারছিলাম না । আমি শুধু একটা ভয়ই পেতাম যদি আমাকে ছেড়ে তুমি চলে যাও। তাই তখন থেকে আমি বাকা পথ নেয়া শুরু করলাম । আমিই হয়ে উঠলাম শুভ্র আর আমিই অভ্র । কিন্তু চাইলেই তো আর হুট করে অন্য একজন হয়ে ওঠা যায় না । আমি ওর ডায়েরি আবার পড়লাম, আবার,বারবার। তারপর সাইকলজিক্যাল বই পড়তে শুরু করলাম । ওর সাইকলজি বোঝার চেষ্টা করলাম। ও কি ধরনের কথা বলতে পারে কোন কথার উত্তর কিভাবে দিতে পারে সব কিছু বোঝার চেষ্টা করলাম । ওর ফোনও আমার কাছেই ছিল। আমি তোমাদের সমস্ত কনভারসেশন পড়ে নিয়েছিলাম । তুমি আমার ফোন নিয়ে ওর সাথে কন্টাক্ট করতে চাইছিলে তাও আমি বুঝতে পেরে গেছিলাম।তাই আমি ইচ্ছে করেই ফোন ছেড়ে দিয়ে রাখতাম । কোন প্রটেকশন ইউজ করতাম না ফোনে। আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তুমি শুভ্রকে ঠিক কি কি জানাতে চাও। তারপর তুমি আমার টোপ গিললে। আর আমিও ইচ্ছে করেই তোমার আর শুভ্রর মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝির নাটক তৈরি করলাম। ভাবলাম এবার হয়ত তুমি থেমে যাবে। "
.
" কিন্তু নাহ । আমি তারপরও ওর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলাম রেণু খালার ফোন দিয়ে। আর আপনিও ..."
.
" হ্যা । সেদিন সন্ধ্যায় আমি অন্যদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । আর তুমি সেই সুযোগটাই নিলে। কারন তুমি জানতে আমার সন্ধ্যাবেলা ঘুমানোর অভ্যেস।"
.
" হ্যা আমি এখন বুঝতে পারছি সেদিন কেন প্রথম কয়েকবার শুভ্র ফোন রিসিভ করে নি।"
.
" হুম । আমি ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ ই শুভ্রর ফোনে ইনকামিং কল দেখে আমি চমকে যাই। কে ফোন করতে পারে ভাবতে ভাবতেই খেয়াল করে দেখি রেণু খালার নম্বর থেকে ফোন । আমার বুঝতে বাকি থাকে না যে এটা রেণু খালা নয় তুমি। আমি বুঝতে পারি তুমি কোন ভাবে রেণু খালার ফোন জোগাড় করেছ। আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম এখন কি করা উচিত আমার । আমি ছোটবেলা থেকেই মিমিক্রি খুব ভালো করতে পারতাম।আমি সেটাই কাজে লাগালাম। আমি ওর সাথে যেহেতু কথা বলেছি তাই ও কিভাবে কথা বলে তাও আমি জানতাম। আয়নায় দাড়িয়ে কিছুক্ষণ প্র্যাক্টিস করে নিলাম ।এদিকে তখনো তুমি ফোন করেই যাচ্ছ তো যাচ্ছ। অতপর ফোন রিসিভ করলাম। তারপর ইচ্ছে মতো আবার ভুল বোঝার নাটক করলাম। শুভ্রর ডায়েরি পড়ে আমি এটুকু ও বুঝেছিলাম ও ওর মাকে পছন্দ করে না । তাই ঐ কাহিনিও টেনে আনলাম। অতপর যা ইচ্ছে বলে ফোন কেটে দিয়ে আমি আবার অভ্র হয়ে গেলাম। তোমার পেছনে এসে দাড়িয়ে গেলাম। তোমায় কোলে তুলে রুমে নিয়ে এলাম। শুভ্র তোমায় আর বিশ্বাস করে না, তোমাদের ভালোবাসা ঠুনকো হয়ে গেছে এসব বোঝাতে শুরু করলাম। প্রতিউত্তরে তুমি আমায় ইচ্ছে মতো মারলে। আমি তবুও চুপ করে রইলাম।"
.
" এতকিছু নাটকের কি কোন দরকার ছিল আপনিই বলুন?"
.
অভ্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বলতে শুরু করে,
" জানিনা। আমি শুধু মাত্র তোমাকে নিজের কাছে রাখার জন্য কি করেছি না করেছি তা আমি নিজেও জানি না। আর তাছাড়া আমি যে অন্য আর একটা গন্ডগোল ও পাকিয়ে বসেছিলাম।"
.
.
.
চলবে.........................