আজ ৫ মাস চলছে,,
তিশা চলে গেছে জিসানকে ছেড়ে, জিসানের ভালোবাসাকে ত্যাগ করে,ঘর সংসার,মা-বাবা, এমনকি প্রিয় ভাইকেও ছেড়ে চলে গেছে।এই পাঁচ মাসে সবাই কিছুটা স্বাভাবিক হলেও একজন মানুষ এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। আর মনে হয় পারবেও না,সে হচ্ছে জিসান।
তিশা চলে যাবার প্রথম একমাস নিজেকে ঘরে বন্দি করে রেখেছিলো।রাতদিন ঘর থেকে বের হতো না,সারা দিন তিশার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতো।নাওয়া খাওয়া দাওয়ার কোন ঠিক ছিলো না।কেউ এসে জোর করে কিছু খাইয়ে দিলে খেয়ে নিতো।করো সাথে কোন কথাও বলতো না।দিনটা যেমন তেমন পার হতো কিন্তু রাতটা জেনো জিসানের পারই হতে চেতো না।প্রতিরাতেই জিসানের ঘর থেকে কান্নার শব্দ পাওয়া যেতো।যা শুনে পরিবারের সবাই কস্ট পেতো কিন্তু জিসানকে এই কস্ট থেকে মুক্তি করার কোন পথ জেনো খুঁজে পাচ্ছিলো না কেউ।
জিসান তিশার স্মৃতি গুলো বুকে নিয়েই যেনো পার করছে।বলতে গেলে বেঁচে আছে।
অতিত....
আজ ও মনে আছে সেই দিনের কথা, ঝুমুর আপুর গায়ে হলুদে তিশা নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিলো,আর তা দেখে ঝুমুর আপু কতো কথা বললো,তার সাথে কিছুক্ষন পর তাল মেলাতে আমার বাকি সব কাজিনরা ও চলে এলো।তারাতো হাসাহাসি করছে আমাদের ভালোবাসা দেখে।
কিগো ভাবী, মামীর কথার জবাব দিলানা।~দিশা।
কি কথা রে.....~জিসান।
ভাবীর চুন্নুমুন্নু কবে আসবে।~কাজিন দিশা।
ওওও এই কথা মামীকে বলে দিস প্রসেসিং চলছে।রেজাল্ট খুব শীঘ্রই পাবে।তিশার দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ মারে জিসান।
আর তখনিই সবাই হো হো করে হেসে দিলো।
আমি তো অবাক এই লোকটার কথা শুনে,এই লোকটার আসলেই লজ্জা শরম নেই।বড় ছোট কিছু মানে না, ভাইবোনদের সামনে কিসব বলছে।মনে মনে~তিশা।
আমি একটু রেগেই বললাম,এই আপনে চুপ থাকবেন।কিসব বলছেন।এখানে বড় আপু বসে আছে।
দেখ তিশা তুই মাইন্ড করলে করতে পারিস, কিন্তু এরা কেউ মাইন্ড করবে না।কারন এগুলো একেকটা বদের হাড্ডি একটু সুযোগ পেলে বাসর রাতে কি করেছি তা জানার জন্য উঠে পরে লেগে যাবে।~জিসান।
আমি জানতাম আপনেই একজন বেহায়া এখন তো দেখছি সব গুলো একি দলে আপনারা।~তিশা।
আহা ভাবী রাগ করো কেনো আমরা তো একটু মজা করি।এছাড়া আর কিছু না।আর আমাদের শখ নেই তোমার বাসর রাতের কাহিনী শোনার,তা আমরা আগেই জেনে গেছি।~জিসানের কাজিনারা।
আমিতো অগ্নি দৃষ্টিতে জিসানের দিকে তাকালাম,ব্যাচারা এই প্রথম আমাকে মনে হয় ভয় পেলো।~তিশা।
ভয়ে ব্যাচারা শুকনো একটা ঢোক গিললো।দেখ বউ আমি কিছু বলেনি।এসব কি বলার জিনিস।এই পিচ্ছি গুলো ঈদানিং বেশি পেকে গেছে।আপুর বিয়ের পর এগুলো সবাইকে এক এক করে বিদায় করতে হবে।~জিসান।
যে দলের বুইরার লাজ শরম কম থাকে,সে দলের পিচ্ছিরা তো পাকবেই।বলে চলে গেলাম এখান থেকে এখানে থাকলে আমিও পাগল হয়ে যাবো।~তিশা।
আরে কই যাস দাঁড়া,তোর বুইরাটাকে সাথে করে নিয়ে যা।আরে দেখলি তোদের করনে আমার বউটা রাগ করলো।~জিসান।
হইছে ভাইয়া আর বলতে হবে না,এবার যাও,তোমাকে ডাকছে বাহিরে।জিসানও চলে গেলো।
সন্ধ্যায় হলুদ আরম্ভ হলো,আজ তানজিলা তিশাকেও খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো।নরমালি তিশা এতো সাজে না,তাই তানজিলা একটু জোর করেই সাজিয়ে দিলো।আজ তো তিশার দিক থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।
দেখো আমি বলে দিলাম জিসান আজ তোমাকে দেখলে আবার প্রেমে পরবে।তিশাকে আয়নায় দাঁড় করিয়ে তানজিলা কথাগুলো বললো।
তানজিলা ভাবীর কথা শুনে আমার নিজেরি লজ্জা লাগছে।আমিও তাই জিসানের রিয়েকশন দেখার জন্য রুমে গেলাম যেখানে জিসান রেডি হচ্ছিলো।হলুদ কালার পান্জাবী, বুকের সামনে একটা ময়ূরী দেয়া স্টোনের, দেখতে আমার হিটলার টাকে কোনো হিরোর থেকে কম লাগছে না,তাই আমিও ঢেং ঢেং করতে করতে জিসানের সামনে দাঁড়ালাম।
রেডি হচ্ছিলাম,এমন সময় আয়নায় তিশাকে দেখতে পেলাম,ওকে দেখে আমার মেজাজটা বিগড়ে গেলো,এতো সাজগোজ কেনো,আরে নিজের বিয়েতেও এতো সাজতে দি নাই আর এখানে মহারাণী অন্যের বিয়েতে পরী সেজে ঘুরছে।ওকে দেখলে যে কোন ছেলের মাথা নস্ট হয়ে যাবে।তখন আমার হবে যন্ত্রণা।~জিসান।
বলেনতো আমাকে কেমন লাগছে।~তিশা।
এভাবে সং সেজেছোস কেনো,অনেকটা ধমক দিয়ে। চোখে মুখে এসব কি,এতো সাজগোজ কোন খুশিতে।আমাকে দিয়ে হয়না নাকি আশিক আরো লাগবে তোর।
কার জন্য সেজেছিস। আমি না তোকে এসব লাগাতে মানা করছি,বলেই একটা টিসু নিয়ে আমার ঠোঁটের লিপস্টিক টা নিজেই মুছতে লাগলো এতে লিপস্টিক ঠোঁটের চারপাশে আরো ছড়িয়ে গেলো।টিসুটা ছুড়ে ফেলে,এখনি মুখ ধুয়ে আস।আর এসব কিছু খোল।,,,,আমি কি বলছি কানে যায় না।
আমি সামনে দাঁড়াবার সাথে সাথে জিসান চিল্লিয়ে উঠলো।আমি ওর চিল্লানি তে বিষণ ভয় পেয়ে গেলাম,কারন এর আগে এমন কখনো করেনি।আমি কিছুই বোঝার আগে নিজেই লিপস্টিক মোছার চেস্টা করলো,না পেড়ে আমাকে মুখ ধুতে পাঠালো,আমার মন চাইছিলো উনার মাথাটা ফাটিয়ে ফেলি,শয়তান,বজ্জাত নিজে নায়ক সেজে যাবে,কিন্ত আমি সাজলে দোষ।
আমি তারাতারি মুখ ধুয়ে শাড়ীটা পাল্টিয়ে নিলাম।হালকা গহনা আর একদম সিম্পল সাজ দিলাম।আর এতোক্ষন উনি মুখ ফুলিয়ে বসে বসে দেখছিলেন আমি কি করি।আমি রেডি হয়ে বাহিরে চলে গেলাম,পুরো গায়ে হলুদে আমি আর কোন কথাই বলিনি উনার সাথে।তানজিলা ভাবী আমাকে দেখে ৪২০ ভোল্টেজ ঝটকা খেলো মনে হয়।
তিশা এসব কি কতো কস্ট করে সাজিয়ে ছিলাম তোমায়।আর তুমি....!!!!
ভাবী আপনিতো জানেন আমি বেশি সাজিনা,আমার খুব অস্বস্তি লাগছিলো তাই...ওসব খুলে ফেলেছি।
সত্যিই তাই, নাকি জিসান কিছু বলেছে।~তানজিলা।
আরে না ভাবী,চলুন আপুকে হলুদ দিয়ে আসি।
হুমমমম,চলো।~তানজিলা।
জিসান দূর থেকে তিশার কথা গুলো শুনেছে।তিশা কখনো ওদের স্বামী স্ত্রীর কথা কাউকে বলে না।তিশার এই দিকটা জিসানকে সব সময় মুগ্ধ করে। জিসানকে কেউ খারাপ ভাবুক তা ও চায়না।কারন জিসান কেমন আর কেনো করে তা তিশা দেরিতে হলেও বুঝে।
সেদিন জিসান চুপি চুপি কিছু পিক তুলে ছিলো, সে ছবি গুলো আজ দেখছে আর চোখ দিয়ে মনে অজান্তেই অশ্রু জরছে।
কেনো করলি তিশা আমার সাথে এমন,
কেনোওওওওও....।কিকিকিকিকি দোষ ছিলো আমার। কেনো এতো কস্ট দিলি আমায়।কেনো আমায় ছেড়ে গেলি,কি নিয়ে বাঁচবো আমি,কি নিয়ে থাকবো।বল তিশাশাশা।
হাতের ফোনটা আছাড় মেড়ে।আমি তোকে কোনদিন ক্ষমা করবো না তিশাশাশা। কোনদিনও না।
জিসান ওর মাথাটা ধরে চিৎকার করে বসে পড়লো, জিসানের চিৎকার শুনে বাড়ীর সবাই এসে পড়লো।জিসান ওর মাকে জরিয়ে কাঁদতে লাগলো।
মা আমার তিশাকে এনে দেও,প্লিস মা।আমি যে ঘুমাতে পারছি না মা,আমি যে শান্তি পাচ্ছি না।আমার নিশ্বাস জেনো বন্ধ হয়ে আসছে।মা আমার তিশা চাই।যেখান থেকে পারো এনো দেও।মাআআআআআ.....বলেই জিসান কাঁদতে লাগলো।ঠিক একটা ছোট বাচ্চার মতো।
সামনে দাঁড়িয়ে তানজিলা ও নিশিও কাঁদছে। আর তাওহিদ নিরবে সব দেখছে।কিন্ত তাওফিক সাহেব ছেলের এমন অবস্থা সইতে না পেড়ে সেখান থেকে চলো যায়।
জিসান কাঁদতে কাঁদতে এতোটাই ক্লান্ত হয়ে যায় যে,জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।।সবাই অনেক চেস্টা করেও যখন জ্ঞান ফিরাতে না পারে তখন তাড়াতাড়ি সবাই জিসানকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।রায়হান খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসে।
সবাই রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে,ডাক্তারে এর জন্য।ডাক্তার নাঈম জিসানকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।অবশেষে জিসানকে দেখে বাহিরে বের হয়ে আসে।
কি হলো নাঈম সব ঠিক আছে।জিসান কেমন আছে।~তাওহিদ।
ভাইয়া ও মনে হয় অনেক রাত না গুমিয়ে কাটিয়েছে,তার উপর শরীল অনেক দূর্বল, মনে হয় টিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না,আর এভাবে ও শারীরিক ও মানসিক সব ভাবে ভেঙ্গে পরছে।এখন তো ঠিক আছে,কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে বেশিদিন ঠিক থাকবে না।ওকে যতো তারাতারি পারেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনেন।আমি কি বলছি আপনে বুজতে পারছেন।
হুমমমম,তুমি চিন্তা করো না,আমি আমার ভাইকে এভাবে ভাঙ্গতে দেবো না।
আমি ওকে স্যালাইন আর ঘুমের ওষুধ দিয়ে দিয়েছি,তাই ও আজ রাত আর উঠবে না,একজন বাদে সবাই চলে জেতে পারেন।~নাঈম।
ঠিক আছে,,,,,,,তাওহিদ গিয়ে ওর মার পাশে বসলো,তাওহিদ এর মা এখনো কান্না করছে।মা প্লিস কান্না বন্ধ করো,জিসান ঠিক আছে।তোমরা চলে যাও, আমি আছি জিসানের সাথে।
তাওহিদ আমার জিসানকে বাঁচা বাবা।ও নিজেকে শেষ করে দেবে,মা হয়ে আমি আর দেখতে পারছি না।আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আন তাওহিদ। আমি যে আর পারছি
না....
তুমি চিন্তা করোনা,আমার ভাই এতোটা দূর্বল না,ওকে আমি আবার আগের জিসান করে তুলবো,তুমি একটু ধৈর্য্য ধরো,আর আল্লাহ কে ডাকো।
সে রাতে তাওহিদ আর রায়হান বাদে সবাই চলে যায়।
ঠিক তিনদিন পর জিসানকে বাসায় নিয়ে আসা হয়,বাসায় আনার পর জিসানকে কেউ একলা থাকতে দেয়না,কেউনা কেউ সারাক্ষন ওর সাথে থাকে।
কিন্তু রাতে জিসান কাউকে সাথে থাকতে দেয় না।ও একলাই থাকবে,বলে সবাইকে জানিয়ে দেয়।
কিন্তুু রাতে তাওহিদ এসে ওর পাশে বসে।নিজে একটা সিগেরেট জ্বালিয়ে জিসানের দিকে এগিয়ে দেয়।
কেনো আসছো ভাইয়া,আমি এখন ঠিক আছি,আমাকে নিয়ে টেনশন করোনা।এতো তারাতারি মরবো না।
কিন্তু সবাইকে মারার প্লানিং করছিস।~তাওহিদ।
জিসান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
তুই কস্টে থাকলে আমরা কিভাবে সুখে থাকবো বল।তুই কি আমার ভাই বলতো,আমার ভাই কবে থেকে এতোটা দূর্বল হয়ে পরেছে।~তাওহিদ।
ভালোবাসার মানুষটা যখন পাশে না থাকে,তখন নিজেকে এমনেই দূর্বল মনে হয়,তুমি বুঝবে না, হারানোর বেদনাটা কি।
জানোস জিসান তোর ভাবীকে বিয়ে করার আগে এক মেয়ের সাথে আমার ৩ বছর রিলেশন ছিলো।অনেক ভালোবাসতাম তাকে।এতোটাই যে ওকে ছাড়া নিজেকে চিন্তাও করতে পারতাম না।কিন্তু একদিন ও নিজে থেকে সম্পর্কের ব্রেকআপ করে নিয়েছে,কারণ কি ছিলো জানিস।ও জয়েন ফ্যামিলিতে নিজেকে এডজাস্ট করতে পারবে না।তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়েছিলো।সব কিছু শেষ করে দিতে মন চাইছিলো।ঠিক তখনি আমার জীবনে আশার আলো হয়ে তানজিলা আসলো।তানজিলা আমার ব্রেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো ও আমার সম্পর্কে সব জানতো, তবুও আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছিলো।বাসর রাতে আমি ওকে বলেছিলাম আমি হয়তো আর ভালোবাসতে পারবো না।কিন্তু তোর ভাবী কি বলেছিলো জানিস, সমস্যা নেই,আমি শিখিয়ে দেবে।আজ দেখ তোর ভাবী আমাকে নতুন করে ভালোবাসতে শিখিয়ে দিয়েছে।আজ আমার মনে হচ্ছে তানজিলা ই আমার জন্য, বেস্ট তাইতো আল্লাহ ওকে আমার সাথে একই সুতায় বেধে দিলো।
জিসান কিছুক্ষন ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে,তুমি কি আমাকে তিশাকে ভুলে জেতে বলছো।তিশা আমার গার্লফ্রেন্ড না বউ ভাইয়া।
তাইতো ওকে ভুলতে বলছি না,ওকে খুঁজে বের করতে বলছি।ওকে খুঁজে বের কর,তার পর সামনে বসিয়ে জিঙ্গেস কর কেনো ও তোর সাথে এমন করলো।কি এমন হয়েছিলো,যার জন্য ও তোকে ছেড়ে যাওয়ার মতো এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলো।ও কোথায় গেছে, কোথায় আছে,এসব জানতে হলে তিশাকে আগে খুঁজে বের করতে হবে।আর আমি জানি তিশাকে তুই ছাড়া কেউ খুঁজে বের করতে পারবে না,তাই আগে তোকে আগের জিসান হতে হবে।এভাবে দেবদাশ হয়ে থাকলে তুই কখনো তিশাকে পাবিনা।তাই বলছি ভাই, ঘর থেকে বের হো।নিজেকে শক্ত কর।আর মাঠে নেমে আস।
জিসান অবাক হয়ে ভাইয়ের কথাগুলো শুনলো।ভাই আগে কেনো আসলে না,,,,
তুমি ঠিকই বলছো,আমি বেকুবের মতো শোক পালন করছি।আর না.... অনেক হয়েছে।জিসান এবার নিজেই একটা সিগেরেট ধরিয়ে তিশার একটা ছবি দেয়ালে লাগানো তার সামনে এসে দাঁড়ালো, তুই যেখানে থাকোস,তকে আমি খুঁজে বের করবো।দুনিয়ায় যেই প্রান্তেই থাকোস তোকে আমার থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।কেউ না।
.
.
.
চলবে.........................................................