ভাইয়ের বন্ধু যখন বর - পর্ব ০৪ - ইয়াসমিন তানিয়া - ধারাবাহিক গল্প


-এভাবে অনেকদিন চলে গেলো।তিশার সিলেবাসও অনেকটা কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে।জিসান এর ভয়ে তিশা পড়াচুরি করতে পারেনি।
"
"
-জিসান পড়ানোর সময় তেমন কোন কথা বলে না তিশার সাথে, জিসানের মনে তিশার জন্য সপ্ট কিছু আছে তা ভালোবাসা কিনা তা বুজতে পারছে না,তবে তিশার প্রতি ও দূর্বল তা জিসান এ কয়েকদিনে তিশাকে পড়াতে গিয়ে বুজতে পেড়েছে,কিন্তু জিসান তিশার সামনে এমন কোন কিছু প্রকাশ করতে চায় না।কারন রাহয়ান আর জিসানের বন্ধুত্বের ফাটল ধরুক এমন কিছু জিসান চায় না।অনেক বিশ্বাস করে জিসানকে এই দায়িত্ব দিয়েছে,আর তাই জিসান নিজের ভালো লাগাটা প্রকাশ করে না কখনো।
"
"
-জিসান রাগী হলেও ও খুব গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ।ও কি চিন্তা করে তা কখনো কেউ বলতে পারেনা।আর নিজের আবেগকে কখনো প্রকাশ করেনা।জিসান এর চরিত্র টিক নারিকেলের মতো,উপর দিয়ে খুব শক্ত, কিন্তু ভেতরে নরম।।
"
"
এভাবে বেশ কিছু দিন চলে গেলো।।
"
"
-রাতে তিশার মা ড্রয়িংরুম এ বসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিশার বাবাকে বললো।জানো আজ কে ফোন দিয়েছে।
"
"
-তিশার বাবা একটু নেড়ে চেড়ে বললো কে?
"
"
-রফিক ভাই,সিমার নাকি বিয়ে টিক হয়ে গিয়েছে,দাওয়াত দেবার জন্য ফোন দিয়েছে,কাল সকালে তোমাকেও ফোন দিবে।বেশিদিন বাকি নাই।এই শুক্রবারেই নাকি বিয়ে।
"
"
-মামাতো বোনের বিয়ের কথা শুনে তিশাতো মহা খুশি।অনেকদিন পর একটু আনন্দ করতে পারবে।
"
"
-এতো তাড়াহুড়া কেনো বিয়ের জন্য।আর এমন সময় বললো, আমিতো কিছুতেই ছুটি নিতে পারবো না অফিস থেকে।তোমাকে তো আগেই বললাম,এই মাসে অফিসের কাজ অনেক বেশি।কি করা যায় বলতো।(তিশার বাবা)
"
"
- আমি ভাইজানকে বলেছি সব, আমি বলে দিয়েছি আমরা আসতে পারবো না,কিন্তুু রায়হান আর তিশাকে পাঠিয়েয়ে দেবো।
"
"
-মা আমার তো তোমাদের গ্রামে যেতে মন চায় না,এই আধুনিক যুগেও ওখানকার মানুষ বিভিন্ন কুসংস্কার নিয়ে আছে।
"
"
-দেখ বাবা,যেতেতো হবে।আমরা ছাড়া তোর মামার কে আছে।গ্রামের মানুষকে কুসংস্কার থেকে মুক্ত করার জন্য তোর মামা এতো লিখাপড়া করার পরও গ্রামে থেকে গেছে।ওখান কার বাচ্চাদের জন্য একটা স্কুলও খুলেছে।এর জন্য ভাইজানকে অনেক কিছু সহ্য করতে হইছে।এখনো অনেকে আছে, যারা চায় তোর মামা যেনো গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।কিন্তু গ্রামের মানুষ যারা তোর মামাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসে তাদের জন্য পারেনা।
"
"
-টিক আছে বাবা।কবে যেতে হবে।(রায়হান)
"
"
-তিশা ওর মাকে বললো,আমাকে আগে মার্কেটিং করে দিতে হবে।তার পর যাওয়া।
"
"
-দেখছোস রায়হান।তোর বনের এখন আবার সোপিং করতে হবে।আচ্ছা টিক আছে সকাল সকাল সোপিং এর জামেলা সারিয়ে ফেলবো।তোরা বিকেলে রওনা দিস।(তিশার মা)
"
"
-ওকে। সব গুছিয়ে নে। সময় কম।আর রাতও অনেক হইছে তিশা গিয়ে ঘুমা, কাল অনেক জার্নি কারতে হবে।(তিশার বাবা)
"
"
-রায়হান রুমে গিয়ে ভাবলো জিসান কে সাথে নিলে কেমন হয়।একা একা আর বোর ও হবো না।জিসান কে কল দিলো,অনেক বলার পর জিসান রাজি হলো যেতে ওদের সাথে।ওকে কাল দেখা হবে বিকেলে।
"
"
-সকাল সকাল সোপিং শেষ করে, খাওয়াদাওয়া করে তিশা রেডি হয়ে গেলো।বাহিরে বের হতে দেখলো জিসান হুন্ডা থেকে নামছে।আরে জিসান ভাই, ভাইয়ার সাথে দেখা করতে আসছেন। কিন্তু আমরা তো এখন বের হবে।ভাইয়া আপনাকে কিছু বলনি।
"
"
-যা তকে ধরে রাখছে কে।জিসান তিশাদের বাড়ির ভেতর হুন্ডাটা রাখলো।
"
"
-আরে জিসান আসছোস।দাড়া আমি ব্যাগ নিয়ে আসছি।তুই সব কিছু আনছোস তো।(রায়হান)
"
"
-আরে হো সব কিছু নিছি,তুই তারাতারি কর।লেট হলে বাস পাবো না।।
"
"
-তিশা হা করে আছে।এটা কি হলো জিসান ভাই ও আমাদের সাথে যাবে।কেউ আমাকে কিছু বললো না কেন।এই লোকটা আমার জীবন তেজপাতা বানিয়ে দিচ্ছে।
"
"
-কি রে হা করে আছস কেনো,মুখটা বন্ধ কর।

-আপনেও আমাদের সাথে আসছেন।(তিশা)

-হুমমমম।

-আপনার কি অন্য কোন কাজ কর্ম নাই।(তিশা)

-আছে তো.... তোকে পাহাড়া দেয়া।

-মা.. মা...নে।

-তুই যাতে অন্য কারো নযরে না পরিস,সবার বদ নযর থেকে বাঁচিয়ে রাখা,এটা কি এতো সহজ বল।এটাই এখন আমার প্রধান কাজ।জিসান তিশার একদম সামনে এসে কথাটা বললো।
"
"
-জিসান এতো কাছাকাছি আসায় তিশা একটু ঘাবরে গেলো।ও ২ পা পেছনো নিয়ে বললো, মানে কি... আমাকে কেনো পাহাড়া দেবেন, আমি কি ছোট বাচ্চা। 
"
"
-বাচ্চা না, তাইতো আগলে রাখতে হয়।বাচ্চা হলেতো কোলে করে নিয়ে যেতাম।ভালো হতো তখন... টিক না।
"
"
(জিসান একটু বাকা হাসি দিয়ে কথাটা বললো)
"
"
-জিসানের মুখে এমন কথা শুনে তিশা তো শোকড।এমন ভাবে জিসান কখনো তিশার সাথে কথা বলেনি,তাই তিশা কিছুটা চিন্তায়মগ্ন।
"
"
-কিছুক্ষন পর তিশা, জিসান ও রায়হান রওনা দিলো ওদের গন্তব্যে।ওদের মামা বাস স্ট্যান্ড এ ওদের নেবার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলো।ওদের যেতে অনেক রাত হলো, তিশার মামা ওদেরকে নিয়ে বাসায় ডুকলো,সিমা দৌড় দিয়ে তিশা কে জরিয়ে ধরলো।
"
"
-ছাড়,,,এতো জরে জরিয়ে ধরলে তোর বিয়ের আগেই মারা যাবো।(তিশা)
"
"
-যা শয়তান,তুই তো আমায় ভুলে গেছস।তাইতো একবার দেখতেও আসিস না।(সিমা কিছুটা রাগ নিয়ে কথাটা বললো।)
"
"
-ওওওও......।নতুন বউ দেখি রাগ করছে।এতো রাগ জামাইরে গিয়া দেখাইও আমারে না।(তিশা)
"
"
-আমরাও আছি সিমা। আমাদের মনে হয় তুই দেখছ নাই।নাকি আমরা চলে যাবো।(রায়হান)
"
"
-ভাইয়া, কি বলো।এক তো কতো বছর পর
 আসছো,তার উপর এখন ঢং করছো,আমার সাথে।।
"
"
-হইছে কাল কথা বলিস,এখন ওদের ঘরে আসতে দে।কতো দূর থেকে আসছে।খেয়ে দেয়ে বিশ্রাম নিক।কাল আবার অনেক কাজ আছে বিয়ে বাড়ি বলে কথা।(তিশার মামী)
"
"
তিশার মামা-মামী ও সিমা জিসানকে ভালো করে চেনে।ঢাকায় তিশাদের বাসায় জিসানের সাথে দেখা হয়েছিলো অনেকবার। তাদের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে।।তাই জিসান কে দেখে তারা খুব খুশি হয়েছে।
"
"
-সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে, ঘুৃমাতে চলে গেলো।
.
.
.
চলবে....................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন