- তিশা জিসানের বুকো মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।আর জিসানও তিশার কপালে একটা কিস করে ওকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।।
সকালে জিসান ঘুম থেকে উঠে আজ তিশাকে পায়নি।কারন তিশা আগে উঠেই নিচে চলে গিয়েছিলো জিসান ঘুমিয়ে আছে বলে।তানজিলার সাথে রান্নাঘর এ সবার জন্য নাস্তা রেডি করছে।
_জিসান ফ্রেস হয়ে রেডি হতে লাগলো,এমন সময় লাবনি ঘরে ডুকলো।লাবনিকে দেখে জিসানের মেঝাজ খারাপ হলেও কিছু বললো না।
তুমি এখানে,,,,, কি চাই।আর তোমাকে না বললাম এখন আমি এই রুমে একা থাকি না, তাই দরজা নক করে আসবে।তাহলে,,,,,
_হুমমম আমি জানি তুমি একা নও,কিন্তুু কি করবো বলো,এই রুমটাকে নিজের মনে করেছিলাম,সাথে রুমের মানুষটি কেও।কিন্তু তুমি!কেনো করলে আমার সাথে এমন।
_দেখো লাবনি, আমি আগেও বলেছি আমি তোমাকে সেই নজরে কখনো দেখিনি।তাই এসব বলে কোন লাভ নেই।
_লাবনি জিসানকে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরে,কেনো কেনো তুমি আমাকে সেই নজরে দেখতে পারো না,কি নেই আমার মাঝে বলো,আমি কি ওই তিশা থেকে কম সুন্দর বরং সব দিক থেকে অনেক এগিয়ে আছি।আর তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি।কেনো তুমি আমার ভালোবাসা বুঝতে চাও না।
_জিসান লাবনিকে ছাড়িয়ে কষে এক থাপ্পড় দিলো।তাল সামলাতে না পেরে লাবনি ফ্লোরে পরে গেলো।
নিজেকে আমার তিশার সাথে তুলনা করছিস।আমার নজরে তিশা সবথেকে সুন্দরী নারী।কারন জানোস তিশাকে আল্লাহ আমার জন্য সৃষ্টি করেছে,তাইতো তিশা আজ আমার অর্ধাঙ্গিনী। তিশাকে ওর রুপ দেখে আমি ভালোবাসিনি।ও তোর মতো গায়ে পরে কথা বলেনি,বরং দূরত্ব রেখে আমার হ্রদয়কে স্পর্শ করেছে।তাই ওর সাথে কারো তুলনা হয় না,,,কারো না।
_লাবনি এখনো ফ্লোরে বসে চোখের পানি ফেলছে আর জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।জিসানের কথা শেষে লাবনি উঠে দাঁড়ালো। ঠিক জিসামের সামনে এসে,তিশা কি তোমাকে ভালোবাসে।আমার তো মনে হয়না।একটু বাকা হেসে।
আর বাসবেও না,কারন ও মন থেকে তোমাকে মেনে নেয়নি এখনো।এক প্রকার বাধ্য হয়েই বিয়েটা করছে।আর এখন বাধ্য হয়ে সংসার চালাচ্ছে।কিন্তুু কতোদিন তুমি ওকে এভাবে বেধে রাখবে।এক দিন পাখি খাঁচা থেকে উড়ে যাবে..... মনে রেখো।
লাবনি রুম থেকে বের হতে নিলে তিশার সাথে দেখা হয়।তিশা জিসানকে ডাকতে এসেছিলো নাস্তার জন্য।
আপি আপনে,কোন কাজ ছিলো।
হুমমমম,কিন্তুু তোমার সাথে না,যার সাথে ছিলো হয়ে গেছে, জিসানের দিকে ইশারা করে।
_তিশার লাবনির উপর রাগ উঠলো,,, কারন যখন তখন লাবনির এই রুমে আসা ওর একদম পছন্দ না।
তবুও চুপ থাকলো কারন জিসানের কাজিন আর এই বাড়ীর মেহমান। তাই কিছু বলতে চায় না।
তাই চুপচাপ জিসানের কাছে এসে নাস্তা করবেন চলুন।
জিসানের এমনেই সকাল সকাল মেজাজ খারাপ, একতো তিশাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে না পারা আর তার উপর লাবনির এই ধরনের আচরণ আরো রাগটা বাড়িয়ে দেয়।
কোথায় ছিলি তুই। ~ধমক দিয়ে।
আমি তো রান্না ঘরে ছিলাম,নাস্তা রেডি করছিলাম ভাবীর সাথে।
বাড়ীতে অনেক মানুষ আছে কাজ করার জন্য, তোকে কি বলেছিলাম, আমি জেনো ঘুম থেকে উঠে তকে দেখতে পাই।বলেছিলাম কি না,,,,,।~আবারও ধমক দিয়ে।
জিজিজি.....।~তিশা একটু ভয় পেয়ে গেলো জিসানের এমন আচরনে।
আমারি ভুল, তোর কাছে কিছু আশা করা।তুই কখনো বুঝবি না,,,,,,আমাকে।
কথাগুলো বলেই কোটটা আর ব্যাগটা নিয়ে চলে গেলো।নাস্তা না করেই চলে গেলো আজ।
আর তিশা বসে বসে ভাবছে সামান্য একটা ব্যাপারে এমন রাগ করার কি আছে।আমিতো তাকে ডাকতেই এসেছিলাম,কিন্তুু উনিই আজ তারাতারি উঠে গেছে।
তিশার খুব কান্না পাচ্ছে কিন্তুু এখন নিচে যেতে হবে,তা না হলে সবাই প্রশ্ন করা শুরো করে দিবে।
নিচে গিয়ে দেখি সবাই নাস্তা করছে কিন্তুু জিসান নেই তার মানে নাস্তা না করেই চলে গেছে।রাগ করে।কিন্তুু লাবনি সবার সাথে দিব্বি নাস্তা করছে আর আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে হাসছে।ব্যাপারটা আমার মোটেও ভালো লাগেনি।কি যে চলছে এই মেয়েটার মনে আল্লাহই জানে।
দিনটা জেনো আজ কাটছে না,সব কিছুতে খুব বিরক্তি লাগছে,আজ সারাদিন জিসান একটা কলও করেনি।
কেনো রে ভাই এতো কিসের রাগ তোর বজ্জাত কোথাকার,আমাকে বকে আবার আমার সাথেই রাগ করোস।মনে তো চায় মাথার সব গুলো চুল টেনে ছিড়ে ফেলেদি ওর।না না টাক হলে কেমন লাগবে,সকলে তখন আবার আমাকে টাকলুর বউ বলবে।অন্য কিছু ভাবতে হবে।
_এদিকদিয়ে জিসান....
আমি আজ কল দিনাই বলে কি আমাকে একটা কল করবে না,মানলাম সকালে রাগ করেছি তাই বলে কি একটাবার ও ফোনদিয়ে খোঁজ নেয়া যায় না।
জিসান চোখ বন্ধ করে কথাগুলো ভাবছে।একটু ভালোবাসার জন্য তোর কাছে ছুটে যাই।আমাদের সারা জীবনের জন্য আমার ভালোবাসাই যথেষ্ট কিন্তুু সম্পর্ক টিকে রাখার জন্য তোকেও কিছু করতে হবে।তা না হলে আমাদের মাঝের দূরত্ব টা অনেক বেড়ে যাবে, যা আমি হতে দেবো না।তাই আমাকেই কিছু করতে হবে।
এদিকদিয়ে রাত ১১টা বেজে গেছে,কিন্তুু জিসান এখনো আসছে না।সবাই ডিনার করে যার যার রুমে চলে গেলো কিন্তু তিশা খাবার নিয়ে জিসানের জন্য অপেক্ষা করছে।কয়েকবার কলও করছে কিন্তুু জিসান ফোনটা সুইচ অফ করে রাখছে।তিশার খুব চিন্তা হচ্ছে।কখনোতো এমন করেনা।কি হলো আজ,,,,,
_রাত ১২ টায় জিসান বাড়ীতে আসলো।এসেই দেখে তিশা এখনো খাবার টেবিলে বসে আছে।
জিসান কিছু না বলেই রুমে গিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলো।
তিশা ২জনেরি খাবারগুলো আবার গরম করে রুমেই নিয়ে গেলো,তিশাও না খেয়ে ছিলো।জিসানের সাথে একসাথে খাবে বলে।
জিসান ফ্রেস হয়ে এসে দেখে তিশা খাবার নিয়ে এসেছে।
খাবার কার জন্য।
_আপনার জন্য খাবেন না।সকালেও না খেয়ে চলে গেলেন।এখন তো খেয়ে নিন।
_জিসান অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে,আমি খেয়ে আসছি,এগুলো নিয়ে যা।আর লাইট অফ করে দে,আমি ঘুমাবো।খুব টায়ার্ড আমি।
_তিশার মনটা খারাপ হয়ে গেলো,তবুও কিছু বললো না,কিন্তুু অনেক কিছু বলতে মন চাইছিলো আজ জিসানকে।কেনো জানি জিসানের অবহেলাটা সহ্য হচ্ছে না।
তিশা লাইটটা অফ করে খাবার গুলো রেখে আসলো।এসে দেখে জিসান আজ একলাই অন্য দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে আছে।তাই তিশাও না খেয়ে শুয়ে পরলো কিন্তুু তিশার চোখে আজ ঘুম নাই।সারা রাত নির্ঘুম কাটালো।
আর এসব রাতের অধারে শুধু একজন দেখলো,তা হলো লাবনি।লাবনি মনে মনে অনেক খুশি।লাবনি ভাবছে তিশা ও জিসানের মাঝের দূরত্ব যতো বাড়বে ততোই আমারি লাভ।
ভোর রাতে তিশার চোখ লেগে গিয়েছিলো, সারারাত ঘুম না হবার কারনে সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু লেট হলো।ঘুম থেকে উঠে দেখে জিসান নেই।ফ্রেস হয়ে নিচে গেলে,তানজিলা ভাবী বলে জিসান নাকি অনেক আগেই চলে গেছে।আজও নাস্তা করেনি।তিশা মনটা খারাপ হয়ে গেলো।ভাবী আর শ্বাসুড়ীর জোড়া জোড়িতে তিশা কোন রকম নাস্তাটা করে নিলো।
না এভাবে চলতে দেয়া যাবে না,আজ একটা ফেছালা করতেই হবে এই লোকটা কি চায় আমার কাছ থেকে কেনো এমন করছে।
তিশা সারাদিন অনেক ফোন দিলো কিন্তুু জিসান আজ খুবই ব্যস্ত থাকার কারনে ধরতে পারেনি।
এদিকদিয়ে তিশা প্রায় পাগল হয়ে যাবে,জিসানের এমন অবহেলা তিশা কখনো দেখেনি তাই হয়তো সহ্য হচ্ছে না।
জিসান কাজ শেষে ফোন চেক করে তিশার অনেকগুলো মিসকল পেলো।
জিসান মনে মনে ভাবছে,এবার লাইনে আসা শুরু করলো,তুই যেমন ত্যারা তোকে সোজা করতে ত্যারা রাস্তাই বেঁচে নিতে হলো।আমাকে কম জ্বালাস নাই দেখ ভালোবাসার মানুষ থেকে অবহেলা কেমন লাগে।
জিসানের মোবাইলের কভার ফোটোতে তিশার ছবি দেওয়া।সেটা দেখছে আর মনে মনে বলে যাচ্ছে।
এদিকদিয়ে তিশা অপেক্ষা করছে জিসানের ফোনের।
জিসান তিশাকে কল বেক করার সাথে সাথে তিশা কল ধরলো।
_হ্যালো,কোথায় ছিলেন আপনে, ফোন ধরছেন না কেনো।
_ব্যস্ত ছিলাম তাই খেয়াল করিনি।বল কি বলবি।
_বাসায় কখন আসবেন।
_কেনো,আমাকে দিয়ে তুই কি করবি।আজ আমার অনেক কাজ তাই কখন আসবো বলতে পারিনা।আমার অপেক্ষায় থাকার কোনো দরকার নাই।ঘুমিয়ে জাস।
রাখি আমি এখন।
_না না শুনেন,টুংটুং টুংটুং কেটে গেলো।
_হাধারাম কোথাকার,আমার কথা না শুনেই ফোনটা কেটে দিলো।আরও একটু কথা বললে তোর কি লেজ গজাতো।মনে মনে তিশা এমন হাজারো গালি দিচ্ছে।
তিশা মন খারাপ করে ঘরে বসে আছে।এমন সময়
লাবনি রুমে আসে।
আসতে পারি~লাবনি
আপু আসুন।জিঙ্গেস করার কি কাছে।
_না এখন তো এই রুমটা তোমার। একসময় আমার হওয়ার কথা ছিলো তাই ভুলে আগে অনুমিত না নিয়েই এসে পরেছিলাম তুমি কিছু মনে করো নিতো।
না আপু,আমি কিছুই মনে করেনি।
_জিসান কি রাগ করেছে তোমার উপর।
নাতো আপি,আপনার এমন কেনো মনে হলো।
_না তেমন কিছু না দুদিন ধরে নাস্তা না করে চলে যাচ্ছে,আবার রাতেও দেরি করে আসে।তাই আর কি।
ও তো কখনো এমন করেনা।যতোই রাগ করুক ও বাসায় টাইম মতো আসে।কিন্তু এমন কি হলো,ও এতো চেন্জ্ঞ হয়ে যাবে ভাবতেও অবাক লাগে।তোমরা কি একে অপরের সাথে সুখী নও।
_না আপু এমন কিছু না,আপনে হয়তো ভুল বুজছেন।সে একটু ব্যস্ত কাজের চাপটা বেশিতো।তিশা মুখটা অন্য দিকে ঘুড়িয়ে কথা গুলো বলছে।
_ওওও আসলে জিসান আর তুমি সম্পূর্ণ আলাদা তো তাই এমন মনে হলো। জিসান এর মতো ছেলে আরো ভালো সঙ্গী পাওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু তোমাদের বিয়েটাতো একটা এক্সিডেন্ট মাত্র। জিসান ভালো বলে বিয়েটা একচেপ্ট করে নিয়েছে।না হলে অন্য কেউ হলে,তোমার জন্যই অনেক মুশকিল হতো।
দেখোনা এই শহরের অনেক বড় বড় ঘর থেকে প্রস্তাব এসেছিলো জিসানের জন্য,প্রত্যেকটা ঘরের মেয়ে যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি উচ্চ শিক্ষিত, কারো থেকে কেউ কম ছিলো না।আমার কথাই ধরো আমার বাবার কোন কিছুর অভাব নেই,আমার বিয়ের কথাও হয়েছে জিসানের সাথে।এই বিয়ে নামক দূর্ঘটনাটা যদি না ঘটতো তাহলে হয়তো আমার আর জিসানএর বিয়েটা হয়েই জেতো।যাক এই নিয়ে আমার আফসোস নেই।
কিন্তু আমার চিন্তা হচ্ছে তোমাকে নিয়ে।
_তিশা লাবনির দিকে করুন চোখে তাকালো।আমায় নিয়ে,,?
হুমমমম,আমি ভাবছি জিসান আবার বিয়েটা নিয়ে আফসোস করেনি।তাই আর কি তোমার সাথে কথা বলতে আসলাম,যেভাবে তোমাকে এড়িয়ে চলছে মনে হচ্ছে জিসানের আফসোস হচ্ছে।আসলে ছেলে মানুষের মন বলে কথা।
লাবনি খেয়াল করলো তিশা কিছু একটা ভাবছে।লাবনি মনে মনে খুশি হলো যাক কাজ হচ্ছে মনে হয়।আজকের পর থেকে তিশা ও জিসানের মধ্যে দূরত্ব আরো বেড়ে যাবে।আমার কাজ শেষ।তিশা আমি এখন আসি।তুমি কোন চিন্তা করো না সব টিক হয়ে যাবে।
_এদিক দিয়ে তিশা গভীর চিন্তায় মগ্ন, আসলে কি সত্য জিসানের আফসোস হচ্ছে আমাকে বিয়ে করে।উনি তো আরো ভালোকিছু পেতো।কিন্তুু আমি তো কিছুই দিতে পারিনি।এমনকি ভালোবাসাটাও না।হয়তো এখন উনার আফসোস হচ্ছে আমাকে বিয়েটা করায়।কিন্তুু উনিতো বললেন আমাকে ভালোবাসে।তাহলে এখন.....না আমি কোন চিন্তা করতে পারছি না।
তিশা চোখ বন্ধকরে ফ্লোরে বসে পড়লো।
রাতে তিশা ডিনারের জন্য নিচে ও নামেনি।সবাই কিছু বুঝতে পারলো কিছু একটা হয়েছে কিন্তুু জিসান আর তিশাকে জিঙ্গেস করলে লাভ নেই,কেউ কিছুই বলবে না তাই ডিনার করে সবাই যার যার রুমে চলে গেলো।
_জিসান আজও লেট করে বাড়ী ফিরলো।এসে দেখে বাড়ী পুরো অন্ধকার তার মানে তিশা আজ আর আমার জন্য ওয়েট করেনি।জিসান সোজা নিজের রুমে চলে গেলো।
রুমের লাইট অফ,ভাবলাম তিশা ঘুমিয়ে আছে তাই লাইট ওন করলাম না।কিন্তু ড্রিম লাইট আর চাঁদের আলোয় ঘর আলোকিতো। তিশা বিছানায় নেই, ঘরের চারদিকে তাকিয়ে দেখি তিশা ঘরের এককোনায় ফ্লোরে মাথা নিচু করে বসে আছে।
শার্ট এর টাইটা খুলতে খুলতে তিশার কাছে গেলাম।
তিশা এই তিশা।তুই এখানে কি করছ।উঠ,,,বিছানায় চল।
তিশা মুখটা উচুকরে আমার দিকে তাকালো।
আমি ওকে দেখে কিছুটা হতোভম্ভ হয়ে গেলাম।কারন চোখ মুখ ফুলে গেছে।মনে হয় অনেকক্ষন ধরে কানছে।চোখের কাজল গুলো ছড়িয়ে গেছে।নাকটা লাল হয়ে গেছে।
এই তোর এই অবস্থা কেনো।আর তুই কান্না করছিস কেনো।উঠ আগে।
তিশাকে জোর করে উঠালাম।
_তিশা আমাকে ধাক্কা দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো।আমার ফোন কেনো ধরছেন না,আর কথা বলার আগেই ফোন কেনো কেটে দিলেন।
_তিশার এমন রুপ আমি আগে কখনোই দেখিনি।নিজে শান্ত হয়ে জবাব দিলাম।কারন আমিও যদি রেগে যাই তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
_আমি ব্যস্ত ছিলাম,তোকে তো ফোনে বলেছি।
মিথ্যা সব মিথ্যা,আপনে একটা মিথ্যাবাদী লোক।
এতো দিন ধরে শুধু মিথ্যা বলে এসেছেন।
_কি বলছিস এসব পাগল হয়ে গেছোস।
হে সত্য কথা বললে,আমি পাগল তাই না।
_কি সত্য বলছিস আর কোন সত্যকথা জেনেছিস তুই।
এই যে আপনার এখন আফসোস হচ্ছে আমাকে বিয়ে করায়।
_কিকিকিকিকিকি,,,,,কিসব বলছিস তুই।
সত্য বলছি,তাইতো দুদিন ধরে আমাকে এড়িয়ে চলছেন।আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলছেন না, রাতে আমাকে জরিয়ে এখন ঘুমান না।সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে জ্বালান না।ভালোবাসি ভালোবাসি বলে কান জ্বালাপুরা করে ফেলেছেন এতোদিন আর এখন যখন আপনাকে ভালোবাসতে শুরু করেদিয়েছি আর আপনে, এমন করছেন।জানেন আপনাকে ভালোবাসা কতোটা কস্টকর,আপনার ভয়ে আপনাকে ভালোবাসতে পারতাম না।মনে হতো এই বুজি এখন রাগ করবেন,ধমক দিবেন,আর টিকমতো ভালো না বাসতে পারলে থাপ্পড় সব আমার গালে পরবে।আর আপনার এখন আফসোস হচ্ছে।এতোদিন কোথায় ছিলো আপনার আফসোস।
তিশা একাধারে কথাগুলো বলছে।ও হয়তো জানেই না রাগের মাথায় কি কি বলছে।কিন্তু সত্য বলছে।
জিসান অপলক ভাবে তিশার দিকে তাকিয়ে আছে,কারন আজ সে নতুন এক তিশাকে দেখছে।
আমি চলে যাবো,আপনাকে আর ডিস্টার্ব করবো না।আপনে লাবনি আপুকে বিয়ে করে নিয়েন।
_কোথায় যাবি~জিসান হাত দুটো পকেটে রেখে।
যে দিকে দুচোখ যায় চলে যাবো,আর যাওয়ার জায়গা না থাকলে মরে যাবো।আপনার কি,,,,
ঠাসসসসসস।তিশার এমন কথায় জিসানের রাগ উঠে গেলো।
_কি বললি তুই,সাহস কি করে হলো তোর এমন বলার।
তিশা গালে হাত দিয়ে কান্না করতে লাগলো।
_জিসান তিশার হাত ধরে টেনে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো তিশার ঠোঁটকে নিজের ঠোঁটে আবদ্ধ করে ফেললো।ঘটনা আকস্মিক ঘটায় তিশা কি করবে কিছুই বুজতে পারছে না তাই রোবট এর মতো দাঁড়িয়ে আছে।
টিক ১০ মিনিট পর জিসান তিশাকে ছেড়ে দিলো।তিশার মুখটা দুহাতে আবদ্ধ করে কপালে কপাল রেখে, জানোস তিশা এই দুদিন মনে হয় আমি নরকে ছিলাম,তোর মুখ দিয়ে ভালোবাসি কথাটা বের করতে আমাকে কতো কাঠকয়লা পোড়াতে হয়েছে তুই কিছু জানোস না।আমি জানতাম তোর সাথে এমন না করলে তুই কখনো মুখ খুলে আমাকে কিছুই বলবি না।তাইতো এমন করতে হলো।কস্ট তোকে দিতে গিয়ে দ্বিগুণ কস্টে আমি ভুগেছি।তোকে ছারা আমি এই দুদিন কিভাবে কাটিয়েছি তুই ভাবতেও পারবি না।আর আফসোস, সেটা কি জানি না,আমি শুধু জানি আমি তোকে ভালোবাসি,অনেক ভালোবাসি,তোর থেকে দূরে থাকলে নিশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে আসে আমার। তুই আমার নেশা যার থেকে পরিত্রাণ হতে আমি চাই না।বরং এই নেশায় আমি আরো নেশাগ্রস্ত হতে চাই।দিবি আমায় তোর ভালোবাসায় নেশাগ্রস্থ হতে,,,, বল না।
জিসানের কথায় এবার তিশা কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেলো।
জিসান তিশার কানের সামনে গিয়ে বলে,আজ লজ্জা পাবার সময় না,লজ্জা ভাঙ্গাবার রাত।তোর মুখ থেকে ভালোবাসা কথাটা শুনার জন্য অনেক অপেক্ষা করছি।কিন্ত আজ আর পারছি না নিজেকে সামলাতে।আজ আমি তোকে ভালোবাসবো ঠিক আমার মন মতো,আর তুই শুধু অনুভব করবি আমার ভালোবাসাকে।
জিসান তিশাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিলো। জিসান তিশার উপর ভর দিয়ে আবারও তিশার ঠোঁটে ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলো।এক সময় তিশার ঘাড়ে, বুকে সব জায়গায় জিসানের ঠোঁট স্পর্স করছে।ভালোবাসার এ খেলায় দুজনেরি নিশ্বাস জেনো ভারী হয়ে গেলো।তিশা আজ সত্যি জিসানের ভালোবাসা অনুভব করছে।এই ভালোবাসায় কোনো পাপ নেই,আছে শুধু পবিত্রতা।যা একজন স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসায় আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে।
জিসানের ভালোবাসাটা সহ্য করার ক্ষমতা আসলেও অন্য কেউ পারবে না।কারন জিসান তিশার নেশায় এতোটাই মগ্ন যে ওর ভালোবাসা গুলো কামড়ে পরিনিত হয়েছে।কিন্ত তিশা ভালোবাসার মাঝে জিসানের দেয়া কস্টটাও আপন করে নিয়েছে।
আজ দুটি দেহ এক হয়ে গিয়েছে।আর তার সাক্ষী হয়েছে দূর আকাশের সেই চাঁদ।
.
.
.
চলবে.........................................................