জিসানের ঘুম আগে ভেঙ্গে গেলো,হঠাৎ খেয়াল করলো কেউ পেছন দিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে আছে।।জিসাম বুজতে পারলো তার বুকের সামনের হাতটা কার।আস্তে করে হাতটা সরিয়ে পেছনে ফিরলো, আজকের সকালটা জেনো জিসানের কাছে স্বপ্ন মনে হচ্ছে। ঘুমন্ত তিশাকে দেখে যেনো আবার প্রেমে পড়ে গেলো।
তিশার শাড়ীর খোলা অংশ ভেদ করে সাদা পেটটা দেখা যাচ্ছে,পায়ের থেকে শাড়ীটা সরে গেছে।
চুল দিয়ে মুখটাও ঢেকে গেছে।জিসান কিছুক্ষন তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চাদর দিয়ে তিশাকে ঢেকে দিলো।এর পর চুল গুলো সরিয়ে একটা গভীর কিস করলো গালে।
এই মেয়েটার থেকে যতো দূরে থাকতে চাই ততোই ও আমাকো চুম্বকের মতো কাছে টানে।কেনো বুজছ না আমি এখন তোর কাছে আসলে তোর কস্টই বেশি হবে,যা আমি চাইনা।আর এভাবে আমাকে লোভ দেখালে আমিও দূরে থাকতে পারবো না।
জিসান কথা গুলো মনে মনে বলে.......।
জিসান ফ্রেস হতে চলে যায়।ফ্রেস হয়ে দেখে তিশা এখনো উঠেনি।জিসান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবে একটু দুষ্টুমি করা যাক,কতো রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছি তোর জন্য,আর তুই কিনা আরামে ঘুমাস,দেখ তোর সাথে কি করি।
এই কথা বলতেই এক গ্লাস পানি তিশার শরীলে ঢেলে দেয়।
তিশা ভয়ে লাফ দিয়ে উঠে যায়।এ কি হলো,,,আমাকে পানি মারলেন কেনো।কি সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম,আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলেন,একটু ন্যাকামি করে।
জিসান তিশার একদম কাছে এসে,আমার স্বপ্ন যে তুৃই কাল রাতে ভেঙ্গে দিলি সেটার কি হবে,আর এখন নিজেই স্বপ্ন দেখছোস।অনেক স্বপ্ন হইছে,এখন বাস্তবে ফিরে আসেন,কয়টা বাজে,সবাই নিচে অপেক্ষা করছে,১০মিনিট সময় দিলাম তারাতারি রেডি হয়ে নিচে আস,তা না হলে,এখন তো এক গ্লাস পানি মারছি,লেট করলে আমাদের বাসায় একটা সুইমিংপুল আছে সেখানে তকে ফেলে দেবো।
তিশা ভয়ে ঢোক গিল্লো,তারাতারি নেমে ফ্রেস হতে চলে গেলো।
তিশা পানি খুব ভয় পায়,মানে নদী,পুকুর,সুইমিংপুল এ ও কখনো নামেনা ভয়ে আর তাই জিসানও সুযোগটা কাজে লাগালো।
জিসান নিচে গিয়ে নিশিকে পাঠিয়ে দিলো,তিশাকে সাহায্য করার জন্য।
তিশা বের হয়ে নিশিকে দেখে খুব খুশি হলো,তিশা ও নিশি বয়সে তেমন বড় ছোটনা তাই নিশির সাথে কথা বলতে ভালোই লাগে তিশার।
ভাবী তুমিতো দেখতে খুব সুন্দর,তাইতো বলি ভাইয়া তোমার জন্য এতো পাগল কেনো।
নিশি তোমার ভাই আমার জন্য পাগল না,উনার এমনেও মাথায় সমস্যা আছে বলে মনে হয়।তোমরা কখনো ডাক্তার দেখাওনি তাকে মনে হয়,তাই বুজতে পারছো না।মুখ দিয়ে সারাক্ষন তিতাকথা ছারা মিস্টি কথা বেরই হয় না।তোমার ভাইকি আমার সাথেই এমন করে, নাকি তোমাদের সাথেও করে,সত্যি বলতো।
ভাবী কি বলছো,ভাইতো কতো ভালো জানো।এখন চুপ থাকো,তা না হলে কপালে খারাপি আছে।
আসলে ওদের দেরি হচ্ছে বলে জিসান দেখতে আসছে,আর এসেই তিশার সব কথা দরজার সামনে দাড়িয়ে শুনছে।আর রাগে কটকট কটছে।
আরে রাখোতো আর কি খারাপি হবে।
পিছনে তাকিয়ে দেখো সব বুঝতে পারবে।
তিশা হাসতে হাসতে পেছনে ফিরে তাকায়,আর সাথে সাথে মুখটা মলিন হয়ে যায়।বাঁচার জন্য নিশিকে বলে, নিশি চলো সবাই বসে আছে।
নিশি বুঝতে পারে তাই নিশিও বলে,
ভাবী চলো সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।আবার আজতো বৌ ভাত তাই তোমাকে রেডিও হতে হবে।
জিসান নিশি সামনে বলে নিজের রাগটা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে আর কিছুই বলে না তিশাকে।।
তিশা, নিশি ও জিসান তিনজনেই একত্রে নেমে এসে নাস্তা করতে বসে।টেবিলে এতো খাবার কিন্তু লজ্জায় তিশা কিছুই নিতে পারছে না,তাই জিসান নিজেই তিশার প্লেটএ ওর পছন্দের খাবার গুলো নিয়ে দেয়।তিশা কিছুক্ষন জিসানের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আমাকে দেখলে পেট ভরবে না।তাই চুপচাপ খেয়ে নে।আর কি কি যেনো বলছিস,মনে রাখিস সময় হলে সুদে আসলে সব তুলবো।
তিশা জিসানের কথায় একটু ভয় পেলো।
কিরে মা খাস না কেনো,এখানে কেউ পরনা,সবাই তোর আপন,তাই লজ্জা করার কিছুই নেই।জিসানের মা।
তিশা মাথা নাড়িয়ে কিছু খেয়ে, রুমে চলে গেলো,কারন আজ আর ওর কোন কাজ নেই।
অনেকটা সময় নিশির সাথে গল্প করে কেটে গেলো,এরপর তিশাকে সাজাতে আসলো কিছু মেয়ে। কারন আজ জিসান ও তিশার বৌ-ভাত, অনেকেই বিয়েতে আসতে পারেনি,তারা আজ এসে জিসান ও তিশাকে আশির্বাদ করবে।
বৌ-ভাত এর জন্যও বিশাল বড় হল ভাড়া করা হলো,জিসান আগেই সেখানে চলো গেলো,আর সবার শেষে তিশাকে নিয়ে আসতে বললো।তিশা সারা দিন জিসানকে আর দেখেনি।
তিশা হল রুমে পৌঁছানোর পর পরই লাইটটা অফ হয়ে গেলো,শুধু তিশার উপর একটা লাইট পরলো।তিশাকে সবাই দেখে কিছুটা অবাক,আজ তিশাকে লাল বেনারসি শাড়ি পড়ানো হলো,লাল কালারটা যে তিশাকে এতোটা মানাবে তিশা নিজেও কল্পনাও করেনি কারন তিশা কোনদিন লাল কালারের কিছুই পরেনি।
কিন্তু আজ তিশাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।তিশাকে সবাই দেখতে পাচ্ছে কিন্তুু তিশা কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না।তিশাকে নিয়ে স্টেজ এর সামনে বসিয়ে দিলো।আর সাথে সাথে আরো একটা লাইট পুরো স্টেজ এর উপর পড়লো,তিশা তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে পিছ ঘুরে আসে।তার পিঠ তিশার দিকে,তাই দেখতে পাচ্ছে না।আর রায়হান ভাইয়ের হাতে গিটার, বুজতে বাকি রইলো না তারা গান গাইবে।আমি শুনেছি তারা কলেজে থাকতে অনেক শো করেছে কিন্তু সামনা সামনি কখনো দেখিনি।কিন্তু আজ...
হঠাৎ মাইক দিয়ে কেউ কিছু বলছে,গান গাওয়া হয়না অনেক দিন ধরে,কিন্তু আজকের দিনটা আমার জীবনের অনেক বড় একটা দিন, তাই না গেয়ে পারলাম না,কথাটা বলেই জিসান সামনের দিকে ঘুরে তিশার দিকে তাকালো,আমার গানটা তোরই জন্য......
জিসান গান ধরলো,,,,,,।
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Naam Niklega Tera Hi Lab Se
Jaan Jab Iss Dil-E-Nakam Se Ruksat Hogi
Mere Mehboob.............
Mera Sajam Ke Dar Se Agar
Baad-E-Saba Ho Tera Guzar
Kehna Sitamgar Kush Hai Khabar
Tera Naam Liya Jab Tak Bhi Jiya
Aye Shama Tera Parvana
Jise Ab Tak Tujhe Nafrat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob Qayamat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob.............
Mere Mehboob Qayamat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Meri Nazarein Toh Gila Karti Hai
Tere Dil Ko Bhi Sanam Tujhse Shikayat Hogi
Mere Mehboob.............
Teri Gali Mein Aata Sanam
Nagma Wafa Ka Gaata Sanam
Tujhse Suna Na Jata Sanam
Phir Aaj Idhar Aaya Hoon Magar
Yeh Kehne Mein Deewana
Khatm Aaj Yeh Dehshat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob.............
Meri Tarah Tu Aahein Bhare
Tu Bhi Kisi Se Pyar Kare
Aur Rahe Woh Tujhse Pare
Tune O Sanam Dhaye Hai Sitam
Toh Yeh Tu Bhool Na Jana
Ke Na Tujhpe Bhi Inaaya Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob Qayamat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Meri Nazarein Toh Gila Karti Hai
Tere Dil Ko Bhi Sanam Tujhse Shikayat Hogi
Mere Mehboob.............
এটা তিশার পছন্দের একটা গান,যখনি তিশা উদাশিন থাকে তখনি গানটা শুনে,এটা জিসান অনেক বার খেয়াল করেছিলো।গানটা শুনার পর তিশার মনটা ভালো হয়ে যেতো।
আর আজ জিসান যেভাবে গানটা গাইছে,গানের প্রতিটা কলি যেনো তিশার জন্যই,তা আর কেউ বুজতে না পারলেও তিশা বুঝে গেছে।তিশার চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি তিশার হাতে পরলো।
এই পানিটা ছিলো তিশার প্রতি জিসানের ভালোবাসার গভীরতার কারনে।কেউ কাউকে এতোটা ভালোবাসতে পারে,তা তো তিশার জানাই ছিলোনা।
তিশা দিন দিন যতোই জিসানের ভালোবাসার গভীরতা মাপার চেস্টা করছে তা যেনো আরো গভীর হয়ে পরছে।আর তিশাও জিসানের পাগলামো গুলো খুব উপভোগ করছে।
আর সেই জল কেউনা দেখলেও জিসান টিকই দেখতে পেলো,কারন পুরোটা সময় জিসান তিশার দিকেই তাকিয়েই গানটা গেলো।
গানটা শেষ হবার সাথে সাথে পুরো হল রুমের লাইট জ্বলে উঠলো,জিসানকে আরো গান গাইতে বললো,কিন্তু জিসান স্টেজ থেকে নেমে তিশার হাতটা ধরলো,যে হাতে চোখের জলটা পড়েছিলো।জলটা নিজের একহাত দিয়ে মুছে বললো,তোর চোখের জলটাও আমার তাই আমার সাথে মিশিয়ে নিলাম।
তিশা খুব অবাক হয়ে জিসানের দিকে তাকালো।
অবাক হবার কিছুই নেই,তুই সামনে থাকস বা না থাকস কিন্তু আমার চোখ তোর উপরি থাকে।
তিশাকে নিয়ে স্টেজ এ চলে গেলো।একে একে অনেকেই এসে তিশা ও জিসানকে বিয়ের শুভেচ্ছা জানালো,তিশার বাবা মা ও আত্মীয়রাও এসে পরছে।সবাইকে দেখে খুব খুশি হলো।সবাইকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো।
এতোক্ষন পর রায়হান এলো,কি রে এতো কান্না করলে তোর মেকআপ নস্ট হয়ে যাবে,এর পরতো তোকে পেত্নীর মতো লাগবে।মানসম্মান সব শেষ হয়ে যাবে আমাদের।
তিশা কান্নার শব্দ আরো একটু বাড়িয়ে রায়হানকে দুহাত দিয়ে মারতে লাগলো,একসময় শান্ত হয়ে ভাইকে জরিয়ে ধরলো।
হইছে এবার চুপ হো।সবাই দেখছে।রায়হান চোখের পানিটা মুছে দিয়ে।
এবার এলো জিসান ও রায়হানের ফ্রেন্ডস সার্কেল, তাদের অনেকেই বিয়ের দিনে ছিলোনা,তার মধ্যে রনি ছিলো।জিসান ও রায়হানের ফ্রেন্ডেদের মধ্যে কেউ আগে তিশাকে দেখেনি।তিশাকে কখনো এদের সামনে আসতে দিতো না।এমনকি ফ্রেন্ডেদের কোন অনুষ্ঠানে রায়হান তিশাকে আনতে চাইলেও জিসান আনতে দিতো না,এর কারন সবাই আজ বুজতে পারলো।
রনি তো তিশাকে দেখে পাগল হয়ে গেছে।তাই জিসানকো বলো উঠলো,ভাই তোরেতো খুব ভদ্রমনে করেছিলাম,কিন্তু তুইতো দেখি চুপারোস্তম।
তলে তলে জল ডুব দিলি বুজতেও পারলাম না।
আরে না তেমন কিছু না,তুই ভুল বুঝছোস,পরে বলবো নি সব সময় করে।জিসান একটু বিরক্ত হয়ে।
তো তিশার সাথে পরিচয়তো করো দে আমাদের।
ওওও আস।তিশা এরা আমার ফ্রেন্ডস, শুধু আমার না রায়হানের ও।
তিশা সবাইকে সালাম দিলো।কিন্তু,,,,
রনি হাতটা বাড়ালো তিশার সাথে মিলানোর জন্য।আর তখনিই রায়হান এসে রনির হাতটা ধরে,,
আরে কি তিশা তিশা করছিস,ও আমার বোন তাই তোদেরও ছোট বোন এখন থেকে।
আরে এখন তো ভাবী আমাদের, আর আমরা তার দেবর।তাইতো একটু দুষ্টুমি করাই যায়।জিসানের বাকি ফ্রেন্ডেরাও বুঝতে পারলো রনির কথা, তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওরা রনিকে নিয়ে চলো গেলো অন্য সাইডে।
এদিক দিয়ে জিসান একটি টেনস হয়ে পরলো,রনির মতিগতি জিসানের ভালো লাগলো না।
অন্যদিক দিয়ে,,,, রনি এখনো তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।আর বলছে,রায়হান কাজটা ভালো করেনি জানোস।এই কলিটাকে এতো দিন সবার থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে।তাইতো বলি রায়হান কেনো তিশা কে আমাদের সামনে আনতো না।যদি আগে দেখতাম তাহলে আজ জিসানের জায়গায় আমি থাকতাম।
ওদের আরেক ফ্রেন্ড সাকিব বলে উঠলো,তুই শালা পাগল হয়ে গেছোস মনে হয়,চুপ তাক।রায়হান আর জিসান জানতে পারলে।তোর খবর আছে।রায়হান একবার মাপ করলেও জিসান তোকো মেরে ফেলবে।
জিসান তিশা বলতে পাগল,তিশাকে খুব ভালোবাসে।তাই এসব নোংরা চিন্তাবাদ দে।
কিন্তু্ু রনির নজর পরে গেছে তিশার উপর,,,,আর ওর চাই তিশাকে এক রাতের জন্য হলেও।রনি কথাগুলো মনে মনে ভাবছে।
.
.
.
চলবে.......................................................