আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

পরিণয়ে পরিপূরক - পর্ব ৩৮ - স্পৃহা নূর - ধারাবাহিক গল্প


 ''সব কিছুতেই কেন এই অন্যের জিনিসের ভাগিদার আমি? আমি সত্যিই এবার ছুটি চাই ।অবন্তী তুমি একদিন বলেছিলে না এই মৃত্যুর মিছিল আমি সৃষ্টি করেছি ঠিক আছে আমি যখন সৃষ্টি করেছি এর বিনাশ আমিই করব ।''
'
'
অবন্তী হাত থেকে ডায়েরি ফেলে দেয়। অজানা ভয়ে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে নিজের মাথা ওর বুকে গুজে দেয়। অভ্র একবারও হাত দিয়ে আকড়ে ধরে না । রেণু খালার জবান দেয়া গত কয়েক মিনিট যেন কয়েকশত যুগ মনে হয় অভ্রর কাছে। আর এ কয়েক শত যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে সে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে। অবন্তী হঠাৎ লক্ষ্য করে অভ্র ধীরে ধীরে সমস্ত শরীরের ভার অবন্তীর ওপর ছেড়ে দিতে শুরু করেছে । সুদীর্ঘ শ্বাস নিতে শুরু করেছে, হৃৎপিণ্ড যেন দ্বিগুণ গতিতে বিট করছে। সিস্টোল ডায়াস্টল এর সময়কাল ০.৮ সেকেন্ড এর চেয়ে কমে গেছে । অবন্তী অভ্রর বুক থেকে মাথা তুলতেই দেখতে পায় ওর ঘাড় ঢুলে পড়ছে। 
'
অবন্তী ইদানিং সাইকোলজিকাল ব্যাপারগুলো সম্পর্কে বেশ জ্ঞান রাখার চেষ্টা করে ,অভ্রর জন্যই মূলত । যার সাথে সারাজীবনের বসবাস সে ই যখন সাইকো প্যাশেন্ট তখন তো পরিপূরক হিসেবে তারও কিছুটা জ্ঞান রাখতেই হয় । তাছাড়া কখন কি করে বসে। এমনিতেই অনেক কিছুই করে ফেলছে অভ্র। যার আদৌ কোন দরকার ছিল বলে মনে করে না অবন্তী। সাইকোলজি বলে, যে জীবনে একবার হলেও সুইসাইড এটেম্পট করে সে পরবর্তীতে বার বার তা করতে চায়। খুব ছোটখাট ব্যাপারে সমস্যা হলেও তখন তার কাছে একমাত্র মুক্তির উপায় হয়ে দাড়ায় নিজের প্রাণনাশ তথা আত্নহত্যা। অভ্র এর আগেও আত্নহত্যা করতে চেয়েছিল। শেষ মূহুর্তে অবন্তী ফিরে না আসলে সে কিছু একটা ঘটিয়েই ফেলতো । আর তা সে নিজে মুখেই অবন্তীর কাছে স্বীকার করেছিল। অভ্রর আজকের এমন অবস্থা দেখেও অবন্তীর আর বুঝতে বাকি রইল না যে অভ্র কিছু একটা স্টেপ নিয়ে ফেলেছে । ততক্ষণে ওর মুখ দিয়েও ফেনা বেরোতে শুরু করেছে ।  
'
রেণু খালা দৌড়ে এসে অবন্তীর কাছ থেকে ওকে ছাড়িয়ে নেয় । অবন্তী জোরও করে না সে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে এম্বুলেন্স ডাকতে । এতকিছু শুনে অবন্তী এটা বুঝতে পেরে গেছে রেণু খালা আর যাই করুক তার অভ্রনীলের কোন ক্ষতি করবে না । নিজের কোলে শুইয়ে দিয়ে শাড়ির আচল দিয়ে ফেনা মুছে দেয়। ঠান্ডা হতে শুরু করা হাত পা মালিশ করে দেয় । কানে কানে বলে,
'' অভ্রনীল বাবা আমার ওঠ। আমার খুনের দায় কখনোই আমি তোমাকে দিতে চাই নি।আমি তো ভাইজান এর ওপর দোষ চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হুট করে অর্নি চলে এসেই তো ভেজাল পাকিয়ে বসল। জানোই তো ওর মাথা মোটা আর তাছাড়া ও তিল কে তাল বানাতে ওস্তাদ। ও কি বুঝতে কি বুঝল আর সব দোষ তোমাকে চাপিয়ে দিল। শেষ পর্যন্ত তুমি আমাকে ভুল বুঝো না । তোমার ভাই শুভ্রনীল ও আমাকে ভুল বুঝতো । এখন তুমিও ভুল বুঝতে শুরু করলে! এই অবন্তীর জন্য তুমি আমাকে ভুল বুঝছ তাই তোহ! তনু আপা তোমাকে আমার থেকে দূরে সরাতে চেয়েছিল পেরেছে কি? আর এই দু দিনের বাচ্চা মেয়ে অবন্তী, ব্যাপার নাহ ! ''
'
'
হসপিটালে স্টোমাক ওয়াশ করার বেশ ক্ষানিক্ষণ পর অভ্রর জ্ঞান ফিরেছে । ইচ্ছে মতো স্লিপিং পিল খেয়ে নিয়েছিল। জ্ঞান ফেরার পর থেকে কারোর সাথেই কথা বলে নি। স্টোমাক ওয়াশে একজন রোগীর ওপর কি পরিমান ধকল যায় তা একমাত্র সে ই জানে । এক্ষেত্রে সুইসাইড এটেম্পট করা রোগীকে ডাক্তারা ইচ্ছে করেই একটু বেশি কষ্ট দিয়ে থাকে যেন পরের বার এমন স্টেপ নেয়ার আগে দশ বার অন্তত ভাবে এই কস্টের কথা ।
'
 অবন্তী বেশ অনেক্ষন অভ্র'র পাশে বসে আছে। দু একটা কথাও বলছে । অভ্র'র উত্তর দেবার কোন নাম নেই। 
'' আমার সাথে না হয় কথা না ই বললেন। ওর সাথে কথা বলবেন না? ওর ও তো ওর বাবাকে নিয়ে টেনশন হয় নাকি! আমি বুঝতে পেরে গেছি আপনাকে ঠিক করা আমার সাধ্যে নেই। এখন ও যদি কিছু করতে পারে ''
মৌণতা কাটিয়ে অভ্র বলে,'' খরগোশ এর বাচ্চা যেমন খরগোশ হয়, ছাগল এর বাচ্চা যেমন ছাগল হয় , পাগলের বাচ্চা তেমন পাগলই হয়।''
'' এসব কেমন কথা নিজের বাচ্চাকে পাগল ছাগল এর সাথে তুলনা করছেন !''
'' কেন খরগোশ, বেড়াল , ময়না পাখি ,তোতা পাখির সাথে তুলনা করলে তো খুব খুশি হতে। তাহলে পাগল আর ছাগলের সাথে তুলনা করলে কি ক্ষতি? ওরা ওদের বাচ্চাকে ভালোবাসে না?আর পাগলরা কি মানুষ না? আমি মানুষ না?''
'' অভ্র কি সব আবল তাবল বকতে শুরু করলেন আপনি বলুন তো । আপনি পাগল কেন হতে যাবেন? পাগল যদি বুঝতো সে পাগল তবে আর সে পাগল থাকত না।আপনি স্বীকার করছেন আপনি পাগল তার মানে আপনি পাগল না ।''
'' আমি পাগল না তো আমাকে পাগলের ডক্টর কেন দেখাও তোমরা?"

'
' এই মূহুর্তে অবন্তী আর কথা বাড়ায় না। ওর জন্য খাবার আনতে বাড়ি চলে যায় ।
'
'
'
বাবাকে হাত দিয়ে ইশারায় পাশে বসতে বলে। আজমির সাহেব ওর পাশে বসার সাথেই বাবার কোলে মাথা এলিয়ে দেয়। আজমির সাহেব ওর কপালে চুমু দিয়ে বলে,
'' আমার ছেলে যে এতটা স্বার্থপর তা তো আমার জানা ছিল না ।নিজে তো ঠিকই বাবার আদর খাচ্ছ। আর নিজের সন্তানকে বাবার আদর থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিলে তুমি! একবারও ওর কথা ভাবলে না । আমাদের কথা ভাবলে না । ঐ মেয়েটার কথা ভাবলে না । যার তুমি ছাড়া আর কেউই নেই।''
 অভ্র খুব নিচু স্বরে বলে,'' যার আমার জন্যই কেউ নেই তার জীবনে আমার কি দরকার! আমার জন্যই তো সবাই সব হারায়। আমি হারিয়ে গেলে কার কি আসে যায় ।''
''এসব তোমার ভুল ধারনা অভ্র।''
''আমার জন্য রেনু খালাকে শুভ্র ভুল বুঝেছে, রেণু খালা শুভ্রকে হারিয়েছে । আমার জন্য রেণু খালা মাকে মেরে ফেলেছে। আমরা সবাই মাকে হারিয়েছি। আমার জন্য অবন্তী সব হারিয়েছে । ''
'
'' আপনার জন্য আমি কিছুই হারাইনি অভ্রনীল।''
কথা শেষ না করতেই আজমির সাহেব অবন্তীকে ইশারায় চুপ করতে বলে।
.
.
.
চলবে..........................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।