ভাইয়ের বন্ধু যখন বর - পর্ব ৩২ - ইয়াসমিন তানিয়া - ধারাবাহিক গল্প


জিসান অফিসে নিজের কেবিনের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে।জানালার দিয়ে ব্যস্ত শহরটা পুরো দেখা যাচ্ছে।চারদিকে কতো কোলাহল কিন্ত জিসানের কানে জেনো কিছুই আসছে না।সে দূরের আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে।আজ পাঁচ মাস হয়ে গেছে। কিন্ত এখনো তিশার খবর পায়নি।কিন্ত জিসান হার মানেনি।এখনো খুঁজছে। হঠাৎ কারো ফোন এলো

-হ্যালো..... হে বলো কি খবর।

স্যার এখনো কোন খবর পাইনি।

-তাহলে ফোন কোন সাহসে করেছো।আমি কোনো অজুহাত শুনতে চাই না।লোক দরকার পরলে আরো লাগাও,ঢাকার বাহিরের সব জায়গায় দেখো।ওর আত্মীয় স্বজন,বন্ধুবান্ধব সবার ওখানে খোঁজ নেও।দরকার পড়লে সবার ফোন টেপ করো।তবুও আমার চাই ওকে।যতো টাকা লাগে সমস্যা নেই।কিন্ত কোন খবর না জেনে দ্বিতীয় বার ফোন করবে না।আন্ডারস্ট্যান্ড।

ওকে স্যার...

-জিসান ফোনটা কেটে দিলো।

সেদিন রাতে তাওহিদ বুঝানোর পর জিসান সব বুজতে পারলো এভাবে বসে না থেকে তিশাকে খুঁজে বের করতে হবে।তাই পরের দিন থেকেই জিসান অফিসে আসা শুরু করলো।সারা দিন অফিসের কাজ নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেস্টা করে,এখনতো বাসাও খুব দেরি করে যায়।নিজেকে অনেকটা শক্ত করে ফেলেছে এ কয়েকমাস এ। নিজের কস্টটা এখন বুঝাতে দেয়না কাউকে।সবার সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলে,কারন ওর কস্টে ওর পরিবারও কস্ট পায়।তাই সবার সামনে ভালো থাকার অভিনয়টা ভালোই করে যাচ্ছে।কিন্ত সব শেষে রাতে নিরবে চোখের জলটাকে আর আটকাতে পারেনা,বেহায়ার মতো বের হয়ে যায়।

হঠাৎ অফিসের দরজা খুলে দুজন পুরুষ ভেতরে ঢুকলো।~রায়হান +নিলয়।

জিসান পেছনে ঘুরে,ভ্রু কুচকে জিঙ্গেস করলো,কিরে তোরা এসময়।এখানে কেনো।

তোকো দেখতে মন চাইছে তাই চলে এলাম।~রায়হান।

আমাকে নতুন করে দেখার কি আছে,দেখতে পাছ না তোর বোন আমাকে যেমন করে রেখে গেছে তেমনি আছি।শুধু ভেতর থেকে ভালোবাসার নামক ফিলিংস টা এখন আর নেই।

দেখ জিসান, তিশার কারনে কি তুই আমার সাথে এখন ঝগড়া করবি।

জিসান নিজের চেয়ারটাতে বসে, না ঝগড়া করবো না,তোকে সাবধান করছি,আমি কারো ঋন রাখি না তা তো জানিস।পরে আমাকে কিছু বলতে পারবি না।

রায়হান ভালো করে বুঝতে পরছে জিসান কি বুঝাতে চাইছে।

ভাই মাথা ঠাণ্ডা কর,এতো হাইপার হলে কিভাবে হবে।আমার চিন্তা হচ্ছে এটা ভেবে যে, তিশার মতো মেয়ে যে কোনদিন একলা কোথায়ও যায়নি,ঠিকমতো রাস্তা ঘাটও চিনে না,পাঁচটা মাস ধরে নিখোঁজ, ও ঠিক তো আছে,নাকি আবার....আর বলতে পারলো না নিলয়।

জিসান ও রায়হান দুজনি খুব চিন্তিত হয়ে নিলয়ের দিকে থাকালো।

জিসান আবার জানালার পাশে ধারিয়ে একটা সিগেরেট ধরালো।তুই কি মনে করেছিস আমি এসব নিয়ে ভাবি না,সবই ভাবি।কিন্তু আমার মন বলছে ও ঠিক আছে,শুধু আমার থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখছে।

কারণটা কি......~নিলয়।

কারণতো ওকে পেলে, ওর কাছ থেকেই জানা যাবে।~রায়হান।

পুরো রুমে নিরবতা বিরাজ করছে।হঠাৎ জিসানের ফোন বেজে উঠলো।

হ্যালো হে বলো,আবার কেনো কল করেছো।

স্যার ম্যাম ৩০ সেকেন্ড এর জন্য ফোনটা ওন
 করেছিলো,এবং কাউকে কলও দিয়েছে।

ওয়াট,সত্যি বলছো।(পাঁচ মাস পর এই প্রথম তিশা নিজের ফোন দিয়ে কাউকে কল করলো)

জি স্যার,এক মিনিট কথা বললে আমরা তার লোকেশন জেনে যেতাম কিন্তু উনি ৩০ সেকেন্ড কথা বলে ফোনটা বন্ধ করে দিয়েছে।

আচ্ছা কোন নাম্বারে কল দিয়েছে, নাম্বার টা আমাকে সেন্ড করো।~জিসান।

জি স্যার আমি এখনি দিয়ে দিচ্চি।এই নাম্বারটাতে ম্যাম যাবার আগেও অনেক কথা বলতো,হয়তো পরিচিতো কেউ উনার।

ওকে,আমি দেখছি, তুমি নাম্বারটা সেন্ড করো।~জিসান।

তিশার ফোন এতোদিন পর ওন হবার কথা শুনে সবাই একটু বিচলিত হয়ে পরলো।ফোনটা কি তিশা করেছে নাকি অন্য কেউ সেই চিন্তাই করছে সবাই।

কিছুক্ষন পর নাম্বারটা পেলো ওরা,নাম্বারটা দেখে রায়হান শোকড। আরে এটাতো নিলুর নাম্বার।
তিশার ফ্রেন্ড নিলু।

ওওওও,তাহলো এ ব্যাপার,তার মানে ফোনটা নিশ্চই তিশাই করেছে,আর আমার মনে হয় নিলু প্রথম থেকেই সব জানতো।আর ওর সাথে হয়তো অন্য কোন নাম্বার দিয়ে কথা বলে।~জিসান।

কিন্তু আমি আর মা বার বার ওকে জিঙ্গেস করেছি,কসম দিয়েছি, ও একই কথা বলে,ও জানে না।~রায়হান।

জিসান একটু বাকা হেসে,জানবে কি করে,তিশার ফ্রেন্ড না,ভালো করে বললে কখনো শিকার করবে না।ভালো মতো সাইজ দিতে হবে।এখন কোথায় পাওয়া যাবে ওকে।

ওর ক্যাম্পাস এ আছে হয়তো এখন।ওখানেই চল।~রায়হান।

হুমমম চল~জিসান।

তার পর তিনজনেই বের হয়ে গেলো।

নিলুর ক্যাম্পাসের সামনে তিনজন অপেক্ষা করছে।জিসান গাড়ীতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,হঠাৎ রাস্তার সামনের এক রেস্টুরেন্ট এর দিকে নযর পরলো, হয়তো কারো জন্মদিন তাই ফ্রেন্ডসরা মিলো তা পালন করছে।

তা দেখে জিসান আবার তার অতীতে ফিরে গেলো......

ঝুমুরের বিয়ের পরের দিনই জিসান, তাওহিদ, তিশা আর তানজিলা বাড়ীতে চলে আসছিলো।কিন্তু তিশার শ্বশুর শ্বাসুড়ী আর নিশা ওখানেই রয়ে গেলো।
জিসান বাড়ীতে এসেই প্রথমে বাড়ীর সিকিউরিটি বারিয়ে দিলো,বাড়ীর চারপাশে সি সি টিভি ক্যামেরা লাগিয়ে দিলো,বাড়ীতে গার্ড ও বাড়িয়েছে।হঠাৎ এতো কিছু দেখে তানজিলা তাওহিদ কে জিঙ্গেস করেই ফেললো,সমস্যা কি।এতো আয়োজন কেনো।কিছু হইছে।

তাওহিদ কথাটা কোন রকম সামলিয়ে নিলো,তানজিলা কে কোন রকম বুজ দিয়ে।

এর এক সপ্তাহ পরই তিশার জন্মদিন,কিন্তু জিসান এবার তিশার সাথে একলা নিজস্ব ভাবে এই দিনটা পালন করতে চায়।তাই এক সপ্তাহ ধরেই প্লান করছে জিসান,তিশাকে জানতেও দেয়নি ও কি প্লান করে আসছে।

অবশেষে সেই দিনটি এলো,তিশার নিজেরি খেয়াল নেই জন্মদিনের, হয়তো এরি নাম সংসার।তিশা সারাদিন সবার সাথে ব্যস্ততায় কেটে গেলো,রাতে তাওহিদ একাই বাসায় এলো কিন্তু জিসান আসে নি,

ভাইয়া জিসান কোথায়।

ওর নাকি বাহিরে কিছু কাজ আছে তাই আসেনি,আসতে নাকি লেট হবে,তোমাকে চিন্তা করতে মানা করছে।~তাওহিদ।

জিসানের জন্য অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করলো তিশা,এর পর ধৈর্য্য হারা হয়ে রুমে চলে গেলো।রুমে এসে দেখি একটা পেকেট রাখা,সাথে একটা চিঠি,,,

"এটা পড়ে ছাদে আস,আমি অপেক্ষা করছি।লাভ জিসান।"

তার মানেকি জিসান বাসায়,আর আমি কতোক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি।আর এতো রাতে এসব করার কারন কি।কিছুই বুঝি নাই,তবুও চুপচাপ পেকেট টা হাতে নিয়ে দেখি,ওয়াইট কালারের একটা গ্রাউন।আর খুব সুন্দর করে কাজ করা।ড্রেসটা পছন্দ হয়েছে তাই চুপচাপ পরে নিলাম।ছাদের দিকে পা বাড়ালাম।এ কি এতো সুন্দর করে কে সাজালো।পুরো ছাদ ডেকোরেশন করা,লাল,নীল সবুজ কিছু ঝাড়বাতি লাগানো,সামনে দূটো চেয়ার একটা টেবিল।তাতে কেকও রাখা।আর চারপাশে বেলুন দিয়ে ভরা।মনে হয় কারো জন্মদিন,কিন্তু কার জন্মদিন।
উপর থেকে হঠাৎ কিছু ফুলের পাপড়ি আমার উপর পড়া শুরু করলো।আমিতো শোকড, আর তখনি কেউ আমায় পেছন থেকে জরিয়ে ধরেছে।আমি প্রথমে একটু ভয় পেলেও পরে বুঝতে পারি,এটা আর কেউ না,আমার ভালোবাসার মানুষটি। 

কিরে ভয় পেলি...~জিসান।

নাতো.....ভয় পাবো কেনো।

তাহলে এতোক্ষন কোথায় ছিলেন ম্যাডাম, আপনার জন্য কতোক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি জানেন।

আমি কি করে জানবো, আপনে এতো রাতে ছাদে বসে আছেন,আর আমি আপনার জন্য নিচে বসে অপেক্ষা করছিলাম।

তাইইই....আমি তো জানতামই না আমার বউ আমাকে এতো ভালোবাসে।~জিসান

কে বলছে আমি আপনাকে ভালোবাসি,আমি কোন ভালোটালো বাসি না,ছাড়ুন বলে চলে জেতে চাইলে।জিসান আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
কোথায় যাস,আমাকে ছেড়ে যাওয়া এতো সহয না।

তাই আর যদি চলে যাই কখনো তখন কি করবেন।~জিসান।

বেধে নিয়ে আসবো,থাকতে না চাইলে জোর করে রাখবো,তুই ভালো না বাসলেও আমি বাসবো।কখনো যদি অন্যকরো হতে চাস,তাহলে নিজ হাতে খুন করবো, আর নিজেও মরে যাবো।কিন্তু তবুও তোকে ছাড়বো না।কারন তিশা শুধু জিসানের,তোর জন্মই হয়েছে আমার জন্য।তাইতো আজকের দিনটা আমি একা তোর সাথে কাটাতে চাই।চল আমার সাথে,জিসান তিশাকে ছাদের গ্রিলগুলোর সামনে নিয়ে এসে, নিচে তাকাতে বললো।নিচে মোমবাতি দিয়ে লিখা হাপি ব্রাথ ডে তিশা।

আজ আমার জন্মদিন, আমারতো মনে নেই।

জিসান তিশার গাল দুটো ধরে টেনে,কিন্তু আমার তো আছে।এখন চলেন কেকটাও কাটি।

এর পর দুজন কেক কাটলো।দুজন দুজনকে কেক খাওয়ালো।আরো একটা সুন্দর দিন কাটলো জিসানের সাথে তিশার,যা মনে রাখার মতো।

হঠাৎ রায়হানের ডাকে জিসানের ধ্যান ভাঙ্গলো।
সামনে তাকিয়ে দেখি নিলু দাঁড়িয়ে আছে।নিলু আমাকে দেখেই ভয় পেতে লাগলো।ওর ভয় পাওয়াই বলে দিচ্ছে ও কিছু একটা জানে,আমি নিলুর সামনে গিয়ে,

কেমন আছো নিলু।~জিসান

আমি ভালো আছি ভাইয়া।

আর তোমার বান্ধবী,সে কেমন আছে।~জিসান।

ও,,ও কেম,,ন আ,,,ছে আমি কি করে বলবো।আমি আগেই বলেছি আমি কিছু জানি না।

হুমমম,তাতো তোমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।চলো আমাদের সাথে, তোমার সাথে কথা আছে।~জিসান।

এখানেই বলুন ভাইয়া,আমি কোথায়ও জেতে পারবো না।আম্মু বকা দেবে।

তোর আম্মুকে আমি ফোন করে বলেদিছি তাই ওই টেনশন না করে গাড়ীতে উঠ।উঠ বলছি।ধমক দিয়ে।~রায়হান।

নিলুতো ভয়ে গিয়ে গাড়ীতে বসলো।জিসান ও রায়হান সামনে বসছে আর নিলয় ও নিলু পেছনে।নিলু বার বার নিলয়কে দেখছে। আর মনে মনে ভাবছে এটা আবার কে...

আর নিলয় বসে বসে আইচক্রিম খাচ্ছে আর মোবাইল টিপছে। কি হলো এমন বার বার তাকাচ্ছো কেনো,আইচক্রিম খাবে।

নিলু মাথা নেড়ে না বললো।

গাড়ী এসে দাড় করালো,জিসানের অফিসের সামনে।সবাই নামলেও নিলু নামতে চাইনি প্রথমে।কিন্ত জিসানের ধমকে গাড়ী থেকে নেমে পরলো।

নিলু বসে আছে জিসানের কেবিনে।আর তার পাশে তিনজন সুদর্শন ছেলে বসে তার দিকে চেয়ে আছে।নিলুর নিজেরি খুব আনইজি লাগছে এখন।
 
নিলুর হাতে এক গ্লাস পানি দিলো জিসান,নিলু পানিটা মুখে দিতে নিলেই,জিসান জিঙ্গেস করে।
নিলু তিশা কোথায়।

জিসানের কথায় নিলুর বিষম উঠে যায়।ভাইয়া আমি জানি না,সত্যি বলছি।

নিলু তিশা কোথায়,আর একটাও মিথ্যা কথা বলবে না।আজও তিশা তোমাকে কল করেছে, কি বলছে।আর ও এখন কোথায়।নিলু প্লিস বলো,তুমি আমার ছোট বোনের মতো,তাই আমি চাইনা তোমার সাথে জোর করতে।ভালো করে জিঙ্গেস করছি, তা না হলে আমি কি,আর কি করতে পারি।নিশ্চই তিশা বলছে।তাই বলছি ভালোয়ভালো বলে দেও।বললললললও........অনেকটা জরে।

নিলু ভয়ে কাঁপছে, তার সাথে কান্নাও করতে লাগলো।

প্লিস বলো নিলু......~রায়হান।

আমি জানি না ও কোথায় কিন্তু এতোটুকু জানি ও ঠিক আছে।আমাকে মাঝে মাঝে কল করে অন্য এক নাম্বার দিয়ে,আজ নিজের নাম্বার দিয়ে কল করেছে,কিন্তু আমি ক্লাসে ছিলাম তাই আর কথা হয়নি।

তুমি কি জানো ও কেনো গেছে।~রায়হান।

আমি শুধু জানি ও জিসান ভাইয়ের উপর বিষণ রাগ,কারন ভাইয়া নাকি ওকে ধোকা দিয়েছে।আর ভাইয়ার এই ধোকাটা ও মেনে নিতে পারছিলো না।খুব কস্টে ছিলো,এমনকি আত্মহত্যা ও করতে চাইছিলো। কিন্তু যখন ও জানলো.....

জিসান,নিলয় আর রায়হান বিস্ময় হয়ে তাকিয়ে আছে নিলুর দিকে,আর জিসান ভাবছে কোন ধোকার কথা বলছে তিশা।কবে ধোকা দিলাম।

কোন ধোকার কথা বলছো....~রায়হান

তিশা চলে যাবার কিছুদিন আগে আপনারা এক পার্টিতে গিয়ে ছিলেন তিশা বলেছিলো।সে দিন কিছু হয়ে ছিলো কিন্তু কি তা তিশাও জানতো না,জিসান ভাইকে খুব টেনশনে দেখা গিয়েছিলো সে দিন এর পর থেকে।এর পর নাকি অফিসের কাজেও খুব বেশি ব্যস্ত হয়ে পরেছিলো ভাইয়া।তাই নাকি তিশা আর কিছু জিঙ্গেস করেনি।পার্টিতে কি হইছিলো।কিন্তু এক রাতে তিশা ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলো,আর তখনি তিশার ফোনে একটা ভিডিও আসে।ভিডিওটা কয়েক সেকেন্ডের,কিন্ত ভিডিও তে স্পষ্ট ভাবে ভাইয়ার চেহারা দেখা যাচ্ছিলো।আর ভিডিওতে খুব ক্লোজ ভাবে একটা মেয়ের সাথে জিসান ভাইকে দেখা গেলো।ওটা দেখেই তিশার মাথা নষ্ট হয়ে গেলো।
তিশার দৃষ্টিতে________

ভিডিওটা দেখে জেনো শরীল কেমন নিস্তেজ হয়ে পরলো।নিজেকে সামলাতে পারলাম না তাই ধপাস করে ফ্লোরে বসে পড়লাম।বিশ্বাস হচ্ছে না,না না এটা জিসান হবে না,আমার জিসান আমাকে ধোঁকা দেবে না।এগুলো মিথ্যা,কেউ হয়তো ফাজলামী করছে আমার সাথে,অথবা এটা এডিটিং করা। হুমমমম এমোনি হবে।জিসান এমন আমার সাথে কোনদিনও করবে না।

এর পর আরো একটা ম্যাসেজ আসলো,

কি! বিশ্বাস হচ্ছে না মিসেস তিশা।ছবি এডিটিং করা জেতো কিন্তু ভিডিও না।আর যদি তবুও বিশ্বাস না হয় তাহলে হোটেলের নাম আর রুম নাম্বার দিয়ে দিলাম।ছেক করতে পারেন।আপনার জিসান আজ অন্যকে নিয়ে মগ্ন আছে।হা হা হা।

কি মনে করে জেনো আমি সাথে সাথে হোটেলের নাম্বারটায় কল করলাম, রিসিপশন একজন মেয়ে ছিলো। আমি মেয়েটার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম,জিসানই হোটেলে একটা রুম বুক করেছে।ওর নিজের কেডিট কার্ড দিয়ে।আমার বুজতে বাকি রইলো না।আমি মেয়েটাকে রিকোয়েস্ট করলাম,দেখুন মি: জিসানের ফোনটা বন্ধ, আপনে তার রুমে আমার লাইনটা কানেক্ট করে দিন।খুব জরুলী তার সাথে কথা বলা দরকার।

কিন্তু মেয়েটি ডাইরেক্ট মানা করে দিলো,সরি ম্যাম, তার মিসেস আমাদের ইস্ট্রিটলি বলে দিয়েছে,তাদের জাতে কেউ ডিস্টার্ব না করে।সরি বলে ফোনটা কেটে দিলো।

আমার কেনো জানি মাথা ঘুড়াচ্ছে, বমিও আসছে।সইতে না পেরে বাথরুমে গিয়ে বমি করে দিলাম।হঠাৎ মনে পরলো আমার তো ২ মাসের উপর হলো পিরিয়ড হয় না।আমি এতো কেয়ারলেস কিভাবে হলাম।তাহলে কি....
না না আমি এখন আর কিছু ভাবতে চাই না।আমার বিষন ক্লান্ত লাগছে। বিছানায় গিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লাম,নিজেকে আজ সব থেকে অসহায় মনে হচ্ছে।কি করবো আমি।এই ভিডিওটার সত্য কি না মিথ্যা কিভাবে জানবো।আল্লাহ আমাকে পথ দেখাও।

নিলু এই পর্যন্ত কথা গুলো বলে একবার রায়হান আরেকবার জিসানের দিকে তাকালো।
.
.
.
চলবে........................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন