আমি বিছানায় বসে বসে ভাবছি কি করা যায়।বাসায় তো যাবো।কিন্তু কে সাহায্য করবে।ঈশান বসে বসে খেলছে।আর আমার সাহেব আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে।আজ কেনো জানি একটু বেশি সুন্দর লাগছে।রহস্য কি,প্রেমেটেমে পরেছে নি নতুন কারো।আজকাল একটু বেশিই সময় নিয়ে রেডি হয়।দিন দিন মনে হয় আরো বেশি হ্যান্ডসাম হয়ে যাচ্ছে।আমাকে তো ঘরে বন্দি করে রাখে অথচ নিজে কতো সেজেগুজে অফিসে যায়।কেন রে....অফিসে যাওয়ার জন্য এতো রেডি হতে হয় কেনো।কোনও ঘাপলা আছে মনে হয়।
"
"
"
আমি রেডি হচ্ছিলাম,আয়নায় দিয়ে তিশাকে দেখতে পেলাম।ম্যাডাম গভীর চিন্তায় মগ্ন।নিশ্চই কোনও শয়তানি বুদ্ধি চলছে মনে।জাই করোনা তিশাপাখি আমার থেকে পালাতে পারবে না।একবার সুযোগ পেয়েছো বলে যে বার বার পাবে ভুলে যাও।তুমি যদি থাকো ডালে ডালে,আমি থাকি পাতায় পাতায়।আমাকে জ্বালানোর জন্যই তুই বার বার বাসায় যেতে চাইছোস,তা কি আমি বুঝি না।তোর মন মস্তিকে কখন কি চলে সবই বুঝি।জিসান কথাগুলো মনে মনে বলছে।
কিরে আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো। নজর লেগে যাবে তো।অন্যদিকে তাকা।
"
"
আমি উনার দিকে তাকিয়ে,,, নতুন কারো প্রেমে পরেছেন।~তিশা।
"
"
কিসব বাজে বখছিস, তোর মাথায় কি ভালো কিছু আসে না।আগেতো ভাবতাম একটা তাড়ছিড়া এখনতো মনে হয় পুরা মাথাটাই গেছে।
"
"
আমি বসা থেকে উঠে সোজা উনার সামনে গেলাম।তাহলে দিন দিন এতো সুন্দর হয়ে যাচ্ছেন কেনো।আর অফিসে এতো সাজগোজ করে যাওয়ার মানেটা কি।কি মনে করেন আমি কিছু বুঝি না।
"
"
তিশা আমার মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করেদিলো।এর আমার শার্টটা খুলতে লাগলো।
"
"
একি করছিস কি।আমার শার্ট কেনো খুলছিস। দেখ তিশা আমার সম্মান কেড়ে নিস না।আমি কিন্তু চিৎকার দিবো।
"
"
অসভ্য কোথাকার,শুধু বাজে চিন্তা।একদম চুপ।তা না হলে মাথা ফাটিয়ে দেবো কিন্তু।
"
"
তিশা আমার শার্টটা খুলে আমাকে অন্য একটা শার্ট ধরিয়ে দিলো।এটা কি??? এই রং এর কাপড় আমাকে একদম শুট করে না।কেমন দেখা যায়।
"
"
তাই তো এটা দিলাম।আজ এটাই পরেই যাবেন।উনাকে অন্য একটা শার্ট দিয়ে ঈশানকে নিয়ে নিচে চলে গেলাম।রাগে গজগজ করতে করতে।
"
"
তিশার এমন বিহেভ দেখে কেনো জানি রাগ হলো না। বরং অনেকটা ভালো লাগলো।আজ অনেকদিন পর ওর এমন রুপ দেখতে পারলাম।ম্যাডাম যে আমাকে হারানোর ভয় পাচ্ছেন তা বুঝার বাকি নাই।আমিও ওর দেওয়া শার্টটা পরে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলাম।নিচে গিয়ে নাস্তা করে ঈশানকে একটু কোলে নিলাম।ঈশান সোনা, বাবা অফিসে যাচ্ছি, বাবাকে একটা গুডবাই কিসসি দেওতো।আর শুনো বেশি দুষ্টুমি করবে না।ঠিক আছে।আর তোমার মা কে বলো উল্টাপাল্টা সব চিন্তা বাদ দিয়ে দিতে। কোন লাভ হবেনা।
"
"
"
উনার কথাগুলো শুনে রাগ জেনো আরো বেরে গেলো,কি মনে করে আমাকে....আমি একটা মুখ ভেঙ্গছি দিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে ফেললাম।
"
"
ভাবীর সাথে সকালের সব কাজ গুলো সেড়ে ঈশানকে নিয়ে রুমে এসে রায়হান ভাইকে কল করলাম।
"
"
হ্যালো ভাইয়া।
"
"
আরে তিশা আজ সকাল সকাল ভাইয়ের কথা মনে পড়লো কেনো।সব ঠিক আছে তো।
"
"
কেনো ভাইয়া তুমি এমন কেনো বলছো,আমি কি তোমাকো ফোন দিতে পারিনা।
"
"
তাতো অবশ্যই, আমি সেটা বলি নাই।তুইতো সব সময় রাতে কল করিস,কখনো অফিস টাইমে ফোন দেস না, তাই আরকি।ওসব বাদ দে,তোর কথা বল, কি খবর,আর কিছু কি বলবি।
"
"
তুমি কি করে জানলে আমি কিছু বলবো।
"
"
ওটা তুই বুজবি না।এতো ছোট মাথায় এতো টেনশন নিয়ে লাভ নাই।
"
"
ভাইয়া তুমিও এসব বলো।তুমি আর জিসান দুজনে একদম এক।
"
"
হুমমমম,বন্ধু বলে কথা।তা আবার জিগারের।তুই বল কি বলবি।
"
"
ভাইয়া আমি বাসায় জেতে চাই।
"
"
তাহলে আমাকে কেনো বলছিস।তোর জামাইকে বল।ও তোকে নিয়ে আসবে।
"
"
ভাইয়া আমি কিছুদিন থাকবো তোমাদের সাথে।কিন্তু জিসান রাজি হচ্ছে না।তাই তুমি জিসানকে বুঝিয়ে কাল সকালে আমাকে নিতে আসবে,বলে দিলাম। তা না হলে আর কথা বলবো না তোমার সাথে,মনে রেখো।এ কথা বলে ফোনটা কেটে দিলাম।মনে মনে ভাবছি রায়হান ভাইকি রাজি করাতে পারবে।আমি এসব চিন্তা না করি দেখা যাবে পরে,ঈশান চলো দেখি ফুফু কি করে।সকাল থেকে তো দেখলাম না,তোমার নিশি ফুফুকে।আমি ঈশানকে নিয়ে নিশির রুমের দরজাটা হালকা খুলে দেখি নিশি কারো সাথে হেসে হেসে কথা বলছে" জান না ভালো"। ওর এসব কথা শুনে কিছুটা বুঝলাম নিশি কোনো ছেলের সাথে কথা বলছে।কিন্তু ছেলেটা কে।নিশি কারো সাথে সম্পর্কে জরিয়ে পরেছে নাতো।আর তা যদি সত্যি হয় তখন।সবাই জানলে,বিশেষ করে আমার হিটলার জানলে কি করবে কে জানে।তাই সবার আগে আমার নিশির সাথে কথা বলতে হবে।আমি রুমে আর না ডুকে চলে গেলাম।
সারাদিন এসব চিন্তা করেই কেটে গেলো।
"
"
"
রাতে রান্না ঘরে কিছু কাজ করছিলাম,ঠিক সে সময় জিসান বাসায় এসেই আমাকে সবার সামনে থেকে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।সবাই কিছুটা অবাক,তাদের অবাক করা ফেস দেখে আমিও বিষণ অবাক।আমাকে রুমে নেওয়ার আগ পর্যন্ত চিন্তা করলাম আজ আবার আমি কি করলাম।জিসান আমাকে বিছানায় ছুড়ে মারলো।আমি কিছুটা ব্যাথা পেলাম।আআআআ....কি করছেন কি।আমাকে এভাবে গরুর মতো টেনে আনছেন কেনো।
"
"
"
সমস্যা কি তোর।আগে এটা বল।~জিসান।
"
"
আমার আবার কি সমস্যা।আজ আবার আমি কি করেছি।কিছুটা ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে।উনার চেহারা রাগ এ ভরে আছে,তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
"
"
কোনো সমস্যা না থাকলে,তাহলে রায়হান কে ফোন করে কি সব বলছিস।
"
"
আমি আমার ভাইকে ফোন করে যা খুশি তাই বলবো,এতে আপনার সমস্যা কি।
"
"
তোকে কাল কি বলছিলাম আমি,বাসায় জেতে পারবি কিন্তু থাকার কথা বলবি না।তাহলে কেনো বার বার যাওয়ার জন্য জিদ করছিস।
"
"
আমার বাবা মার কথা খুব বেশি মনে পরছে, তাই কিছুদিন তাদের সাথে সময় কাটাতে চাই,তাতে সমস্যা কি।এ কথা বলার সাথে সাথে আমার গালটা চেপে ধরে উনি....
"
"
"
খুব বেশি বার বেড়েছিস, আজকাল মুখে মুখে তর্ক একটু বেশি করছিস।আর বাহ....! এখনদেখি বাবা মার কথা খুব বেশি মনে পরছে মনে হয়,যখন বাবা মাকে ছেড়ে চলে গেছিলি।তখন মনে পরেনি তাদের কথা একবার। তখন যেহেতু তাদের ছেড়ে থাকতে কস্ট হয়নি।তাহলে এখনো হবে না নিশ্চই।
"
"
আআআ,জিসান, ছাড়ুন আমার লাগছে।
"
"
আমারো খুব বেশী লেগেছিলো, এখানে....(জিসাম নিজের বুকের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে)।জানিস....নিশ্বাস নিতে পারতাম না,মনে হতো মরে যাবো।কিন্তু মরতাম ও না।শুধু ছটফট করতাম।জানিস কার জন্য তোর জন্য।কিন্তু তুই.....জিসানকে আর কিছু বলতে দিলো না তিশা,তার আগেই জিসানকে ধাক্কা দিয়ে হাতটা সরিয়ে জিসানের সামনে ধারালো।
"
"
কস্ট কি একা আপনে পেয়েছেন।আমি কি পাইনি।আর দোষ কি একা আমার ছিলো, আপনার ছিলো না।আপনে আমার থেকে সব লুকিয়েছিলেন।আমি বার বার আপনার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আপনে তো তখন রোজ কে নিয়ে ব্যস্ত।একবার কখনো চিন্তা করেছেন,আমার তখন কেমন লেগেছিলো।মরে জেতে মন চাইছিলো।মরেও জেতাম,যদি ঈশান আমার গর্ভে না থাকতো।কিন্তু এখন আফসোস হচ্ছে মরে গেলেই হয়তো ভালো হতো,কমপক্ষে আপনে মুক্তিতো পেয়ে জেতেন।তিশা আর কিছু বলতে চাইছিলো,কিন্তু তার আগেই ঠাসসসস করে একটা চড় পরে তিশার গালে।আর তিশা বিছানায় গিয়ে পরে।
"
"
"
জিসান তিশাকে টেনে তুলে,তিশার দুবাহু শক্ত করে ধরে,নিজের একদম কাছে টেনে আনে। তুই জানতে চাসনি কখনও।কারন তুই সেই ফেক ভিডিওটাকে বিশ্বাস করেছিস।আমাকে না।যদি আমাকে বিশ্বাস করতি তাহলে ছেড়ে চলে জেতে পারতি না।একবার ভাবতি,তোকে ছাড়া আমি কিভাবে থাকবো।কিন্তু তুই ভাবিস নি।তিশাকে ছেড়ে দু পা পেছনে চলে যায় তিশার থেকে।খুব শখ না আমার থেকে দূরে থাকা,তাহলে তাই হবে।কিন্তু এবার তুই না আমি যাবো।থাক তুই এখানে,তোর কোনও সমস্যা হবে না।সব পাবি,কিন্তু আজকের পর থেকে আর আমাকে পাবি না।তোর যা খুশি করতে পারিস।শুধু যাবার আগে একটা রিকুয়েস্ট করি এই বাড়ী ছেড়ে কোথাও যাস না।প্লিজ বলেই জিসান রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
"
"
"
এদিক দিয়ে তিশা এখনো শোকড এর মধ্যে কি বললো জিসান।উনি চলে যাবেন মানে,কোথায় যাবে।জিসান বলে তিশা চিল্লাতে থাকে।তিশা দৌড়ে নিচে নেমে বাহিরে চলে যায়,জিসানও গাড়ী নিয়ে বের হয়ে যায়,তিশা গাড়ীর পেছনে অনেক ডাক দেয় কিন্তু জিসান শুনে না।এতোক্ষনে জিসানের গাড়ী অনেক দূরে চলে যায়।তিশা ওখানেই বসে কাঁদতে থাকে।তিশার চিৎকার শুনে নিশি,তানজিলা,তিশার শ্বশুর ও তাওহিদ বের হয়ে আসে।তিশাকে এভাবে কাঁদতে দেখে তানজিলা গিয়ে ধরে।তিশা তানজিলালে দেখে জরিয়ে কাঁদতে থাকে।ভাবী উনি আমাকে ছেড়ে চলে গেছে রাগ করে।আর আসবে না বলে গেছে।প্লিজ ভাবী তুমি বলো ফিরে আসতে।আমি আর জিদ করবো না।আর কখনো কোনও অভিযোগ করবে না।সব কথা শুনবো। কিন্তু তবুও বলো ফিরে আসতে।প্লিজ ভাবী।তিশা কাঁদতেই থাকে।
"
"
তাওহিদ ফোন লাগা তোর ভাইকে,কি শুরু করছে ও।বিয়ে হয়ে গেছে এক বাচ্চার বাপ হয়ে গিয়েছে।অথচ এখনো নিজের জেদ ছাড়ছে না।এমন হলে সংসার করা যায় না।সংসারের জন্য অনেক ধৈর্য্য লাগে, যা তোর ভাইয়ের মধ্যে এক চিমটি নেই।আর কেমন বড়ভাই তুই, ছোট ভাইকে বুঝাতে পারোস না।নাকি তুইও ওই বদমেজাজ টাকে ভয় পাছ।
"
"
বাবা,কি সব বলছো। আর ও কি আমার কথা শুনে।তুমি ওর বাবা তুমি বোঝাতে পারোনা।নাকি তুমিও ভয় পাও।
"
"
তাওহিদের কথা শুনে তৌফিক সাহেবের মুখটা মলিন হয়ে গেলো,কারন কথাটা সত্য।চুপ থাক,তোরা সব কয়টা অপদার্থ। বড় বউ, তুৃমি তিশা মাকে ঘরে নিয়ে যাও।আর তিশা মা শুন,ওই অপদার্থ কোথাও যাবে না দেখিস।রাগ কমলে চলে আসবে।এবার আসুক তার পর দেখাবো আমিও ওর বাবা।
"
"
"
তানজিলা ও নিশু আমাককে রুমে নিয়ে বসালো।কিন্তু আমার এখনো কান্না পাচ্ছে ।আমি কিছুটা শান্ত হই কারন ঈশানও আমাকে দেখে কান্না করছে।কিছুক্ষন পর ঈশানকে শান্ত করে ফোনটা নিয়ে জিসানকে কল করি। প্রথম কয়েকবার রিং বাজলেও পরে ফোনটা বন্ধ পাই।আমার বুঝতে বাকি রইলো না জিসান ইচ্ছা করে ফোনটা বন্ধ করে রেখেছে।সেদিন সারা রাত আমি উনার অপেক্ষা করেছি।কিন্তু জিসান আসেনি।অপেক্ষা জিনিসটা যে এতোটা কস্টকর,আগে জানতাম না।আজ হারে হারে বুঝতে পারছি।যখন তাকে ছেড়ে গিয়েছিলাম,তখন সবাই উনার সাথে আছে বলে কখনো এতো টেনশন করিনি।কিন্তু আজ তো আমি জানিই না উনি কোথায় গেছে।কি করছে।ঠিক আছে তো।এসব চিন্তা করে বুকটা কেপে উঠছে। আজ আমি বুঝতে পারছি।এমন প্রতিটা রাত জিসান ও আমার কথা চিন্তা করে কাটিয়েছে।উনারও তখন এভাবে হারানোর ভয়টা বার বার নাড়া দিতো।যা আমি আজ অনুভব করতে পারছি।প্লিজ জিসান একবার চলে আসুন। আজকের পর থেকে আমাদের মাঝে কাউকে আসতে দেবো না।রাগ, অভিমানকেও না।আপনে আমাকে আপনার কস্টা অনুভব করাতে চেয়েছিলেন।দেখেন আমি আজ বুঝতে পারছি।আপনার কতোটা কস্ট তখন হয়েছে।প্লিজ চলে আসুন।আপনার তিশা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
ভোরে ফজর এর আযান শুনে তিশা নামায পরে নিলো।ঈশানের সাথে শুয়ে রইলো কিন্তু ঘুম আসছে না।
"
"
"
সকাল সকাল রায়হান এসে হাজির তিশাকে নিতে।কারণ তিশা কাল বলেছিলো আজ নিতে না আসলে আর কোনদিন তিশা রায়হান এর সাথে কথা বলবে না।তিশাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জিসানের সাথে কথা বললে,জিসানের সাথে অনেক তর্কবিতর্ক হয়। এই প্রথম জিসান ও রায়হানের মধ্যে মনোমালিন্য হয়,তাই জিসান অনেকটা রেগে বাসায় আসে।আর বাসায় এসেও তিশার সাথে এসব হয় যায়।যার কারনে রাগ করে জিসান বাড়ী থেকে চলে যায়।রায়হান এসে সব শুনতে পায়।রায়হান তিশার কাছে গেলে,তিশা ভাইকে দেখে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।রায়হান খুব ভালো করে জানে জিসান এসব কেনো করছে।কিন্তু রায়হানের মনে হলো জিসান এখন কিছুটা দিন একা থাকুক।এতে ওর ভিতরের রাগটা কমে যাবে।রায়হান তিশাকে বুঝিয়ে কিছুটা শান্ত করে।এর পর তিশাকে না নিয়েই চলে যা।এভাবে ২দিন কেটে যায়।জিসান না বাসায় এসেছে,না অফিসে গিয়েছে আর ফোনটাও বন্ধ।তিশার এখন আর সহ্য হচ্ছে না বসে থাকতে। তিশা চিন্তা করতে থাকে জিসান কোথায় জেতে পারে।আগেও নাকি এভাবে রাগ করে চলে জেতো।কোথায় যেতো।কাকে জিঙ্গেস করবো।তিশা চিন্তা করছে। হুমমম বুঝছি,আর কেউ জানুক বা না জানুক একজন মানুষ আছে যে জিসানের সব জানে।তিশা দেরি না করে ফোনটা হাতে নিলো।
"
"
"
হ্যালো,ভাইয়া।
_হুমমম,তিশা বল।~রায়হান।
ভাইয়া জিসান কোথায়।
_আমাকে কেনো জিঙ্গেস করছিস।
ভাইয়া আমি এতোদিনে এতোটুকু তো বুঝতে পেরেছিই,তুমি জিসানের সব জানো।তাই আমার কাছে লুকিয়ে লাভ নেই।এখন বলো ও রাগ করলে কোথায় গিয়ে লুকিয়ে থাকে।
_আসলে......ও জানলে খুব রাগ করবে।
আমি তোমার আপন বোন তোমার মনে আছে তো।
_উফফফ.... তোরা যে কেনো এতো ঝগড়া করিস।এবারি লাস্ট এর পর তোরা এমন করলে,দুজনকেই পাননায় পাঠিয়ে দেবো।কিন্তু তুই একা কিভাবে যাবি,তুইতো চিনবি না।তুই রেডি হো,আমি আসছি।
"
"
"
আমি রেডি হয়ে নিলাম,জিসানেরি দেওয়া একটা শাড়ী পড়লাম,হালকা সাজ দিলাম।ঈশানকে তানজিলা ভাবীর কাছে দিয়ে,সব খুলে বললাম।তানজিলা ভাবী ঈশানের চিন্তা করতে মানা করলেন।আমিও জানি ভাবী ঈশানকে অনেক ভালোবাসে,আর ঈশানও ভাবী কে পেলে সব ভুলে যায়।তাই আপাতোত ঈশানকে নিয়ে টেনশন নেই।আমি বের হয়ে দেখি নিলয় দাঁড়িয়ে আছে।আমি গিয়ে দাঁড়াতেই নিলয় গাড়ীর দরজা খুলে দিলো।আমি গাড়ীতে বসে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে,সারা রাস্তায় নিলয় আর আমি খুব কম কথাই বলছি।জিসান যে বাড়ীটায় আছে, বাড়ীটা শহর থেকে একটু দূরে।কিছুক্ষন পর পৌছে গেলাম।আমি নামতে নিলে নিলয় আমাকে ডাক দেয়,
জি ভাইয়া।
রাগ আর অভিমানটা কে দূরে রেখে দুজনে মিলে যাও।তোমরা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসো।তাহলে এতো ভালোবাসায় অভিমানটাকে কেনো আসতে দেও।জিসান কেমন আমরা সবাই জানি,তুমিও জানো।এবার হয়তো অর অভিমানটা একটু বেশি জমে গেছে,তাই এবার তোমাকেই ওর অভিমান ভাঙ্গাতে হবে।তুমি নিশ্চই বুঝছো।তিশা মাথা নেড়ে হ্যা বললো।তিশা নেমে বাড়ীর ভেতরে চলে গেলো।
আর নিলয় তিশার যাওয়ার পথে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো।এর পর চলে গেলো।
"
"
"
আমি দরজাটা নক করবো,ঠিক তখনি কেউ দরজাটা খুলে বের হলো।আপনে কে ম্যাডাম।
আমি তিশা।লোকটাকে আর কিছু বলতে হলো না।মধ্যবয়স্ক লোকটি আমাকে বললো।জিসান বাবা উপরের রুমে।আমি শুধু রান্না করতে আসি।আমি চলে যাবো এখন।আমি লোকটাকে জিঙ্গেস করলাম।চাচা আপনে আমাকে চিনেন।লোকটি হেসে মাথা নাড়ালো।
"
"
"
আমি উপরের রুমে ডুকে দেখি জিসান বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে।
জিসান বুঝতে পারে,তাই পিছে না ঘুড়েই আমাকে জিঙ্গেস, করে তুই এখানে কেনো এসেছিস।
আপনে কি করে জানলেন আমি এসেছি।আপনেতো দেখেনি আমাকে।
তোকে দেখার জন্য আমাকে চোখে দেখতে হয় না,তোর অস্তিত্ব আমি অনুভব করতে পারি।এখন বল কেনো এসেছিস।
যদি বলি আপনাকে আমার প্রয়োজন।
কেনো.....???~জিসান।
(তিশা জিসানের দিকে এক পা এক পা করে আগাচ্ছে)
রাতে শান্তির একটা ঘুম দেবার জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন।
সকালে আমার ভেজা চুলে তোমাকে ডুবানোর জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমার সারাবেলা সব কাজের মাঝে,তোমাকে স্মরন করার জন্য,তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমার রাতের জ্যোৎস্না দেখার জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমার সব ভুলগুলো শুধরাতে তোমাকে আমার প্রয়োজন।
জীবনে সামনে চলার জন্য একজন প্রিয়জন তো দরকার আর সেই প্রিয়জনকে কাছে পেতে তোমাকে আমার প্রয়োজন।
"
"
জিসান এতোক্ষন স্থির দৃষ্টিতে তিশাকে দেখছে,তিশা আজ প্রথম জিসানকে তুমি বলে ডাকলো,জিসানের জেনো বিশ্বাসই হচ্ছে না।তিশা বলতে বলতে জিসানের একদম সামনে এসে দাঁড়ালো। জিসান এখনো তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।জিসানের মনে হচ্ছে আজ ও অন্য একটা তিশাকে দেখছে।তিশা হঠাৎ জিসানের পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে জিসানের ঠোঁট দুটো নিজের ঠোঁটের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেললো।এতোক্ষন এ জিসানের ধ্যান ভাঙ্গলো।জিসানও আজ সব রাগ, অভিমান ফেলে দিয়ে তিশাকে নিজের কাছে টেনে নিলো।এক হয়ে গেলো দুজন পূণরায়।দুজনের ভালোবাসার সামনে অভিমানটা শেষ হয়ে গেলো।এতোদিন পর দুজনের মিলন আবার হলো।পরিপূর্ণ হলো দুজনে।শুরু হলো আবার দুজনের ভালোবাসার অধ্যায়।
.
.
.
চলবে......................................................