আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

শ্রীঘর - পর্ব ০৫ - আতিয়া আদিবা - ধারাবাহিক গল্প

শ্রীঘর 
পর্ব ০৫ 
আতিয়া আদিবা 
.
.
.
"নিজের ঘরে বউ রেখে বাসার কাজের মেয়ের প্রতি দেখি আপনার আগ্রহ বেশি! শরীর বেশি কামড়ায়?"
" ভদ্র ভাষায় কথা বলুন, অফিসার।"
সাহিলের কথা শুনে অফিসার হাসতে হাসতে কুটোপুটি। পাশে থাকা আরেকজন কর্মকর্তাকে ডেকে বললো,
" এর সাথে নাকি ঠিক মতো কথা বলতে হবে। যার চরিত্রের ঠিক নাই! তার সাথে নাকি ঠিক মতো কথা বলতে হবে। "
সাহিল মাথা নিচু করে কথাগুলো হজম করে নিলো। তাকে শ্রীঘরে আটকে রাখা হয়েছে। কিছুক্ষণ পরপরই এই অফিসার সাহিলকে উদ্দেশ্য করে নোংরা নোংরা কথা ছুঁড়ে দিচ্ছে। আর সাহিলের সেগুলো সহ্য করে যেতে হচ্ছে। কোনো উত্তর দিলেই তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সাহিল মেঝেতে বসে বসে ভাবতে লাগলো দিবাও কি তাকে ভুল বুঝছে? নাকি ওকে নতুন করে কানপড়া দেওয়া হচ্ছে? দিবার বাবা মা কি ওকে সাপোর্ট করছে নাকি সাহিলের বিরুদ্ধে কথা বলছে? সাহিল আর দিবার বিয়ের শুরুতে দিবার মা কিছুটা অখুশি ছিলেন। তিনি তার মেয়েকে একজন মেজরের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তার মেয়েকে সাহিলের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিলেও নিতে পারে। এসব ভাবতে ভাবত্ব সাহিলের প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হলো। দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো সে। 

দিবা একটি রুমে বসে আছে। সুন্দর সাজানো গোছানো অফিস রুম। এই শীতের মধ্যেও এসি চলছে। বিজবিজ রকমের বিচ্ছিরী শব্দ বের হচ্ছে। টেবিলের অপর নেইমপ্লেটে লিখা "এডভোকেট তিয়াস আহমেদ"। নামটি পড়ে দিবা মনের অজান্তেই মুচকি হেসে উঠলো। 

(৭ বছর আগে)
দিবা ক্যাম্পাসের গ্রাউন্ডে হাতে এসাইনমেন্ট এর পেপার নিয়ে উন্মাদের মতো ছুটে চলছে। হঠাৎ কারো সাথে সজোরে ধাক্কা লাগলো। মুখ তুলে তাঁকাতেই দেখলো একটি হ্যাংলা পাতলা ছেলে। চোখে চশমা। দিবার দিকে চোখ গরম করে তাঁকিয়ে আছে। চশমার নিচ দিয়েও তার অগ্নিদৃষ্টি স্পষ্ট। 
" দেখে চলতে পারেন না? কানা নাকি?"
দিবা অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। 
" আমি কানা? চশমা তো আপনি পড়ে আছেন।"
" আমি তো কাউকে ধাক্কা মারতে যাই নি!"
" আপনি কি বোঝাতে চাইছেন আমি ইচ্ছে করে ধাক্কা মেরেছি?"
" তা নয় তো কি?"
দিবা ক্রুদ্ধ কন্ঠে বললো,
" বেশ করেছি। তা আপনারো তো ধাক্কা খাওয়ার ইচ্ছা ছিলো। ছিলো না?"
" আমার কেনো ধাক্কা খাওয়ার ইচ্ছা থাকবে?"
" আজব! চার চোখ দিয়ে দেখলেন আমি আসছি। আপনি সাইড দিতে পারতেন না? আমাকে ব্লেম দিচ্ছেন। সাইকো জানি কোথাকার। "
" এই মেয়ে এই! সাইকো বলবা না।"
" তো কি বলবো আপনাকে? হ্যাংলা চাশমিশ কোথাকার।"
" চিনো তুমি আমাকে? আমি তিয়াস আহমেদ। ফিউচার এডভোকেট।"
একথা শুনে দিবা আবার অট্টহাসিতে ভেঙ্গে পড়লো। গ্রাউন্ডে অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট এর স্টুডেন্টস রাও জড়ো হতে লাগলো। ঝগড়া তখনো থামে নি! এক পর্যায়ে দিবার এবং তিয়াসের ফ্রেন্ডরা চলে আসলো। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিষয়টা কোনোভাবে মিটমাট গ্রাউন্ড প্রস্থান করা হয়। কি একটা অবস্থা হয়েছিলো সেদিন!

দিবা এখনো হাসছে। দরকার লক ঘোরানোর আওয়াজে সে বাস্তবে ফিরে এলো। কালো রঙের স্যুট, ফরমাল প্যান্টস আর কালো শু পড়ে তিয়াস প্রবেশ করলো ঘরে। দিবা মাথা ঘুরিয়ে তাঁকিয়ে মিষ্টি করে হাসলো। তিয়াসও হাসছে। আগের মতো হ্যাংলা ভাবটা আর নেই। মুখে কালো চাপ দাড়ি। গা থেকে দামী সেন্টের গন্ধ বেরুচ্ছে। চেয়ারে বসতে বসতে দিবার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো তিয়াস।
" কি খবর বলো। কেমন আছো? ইটস বিন এ লং হোয়াইল, ইজেন্ট ইট?"
দিবা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
" ইয়াহ ইট ইজ। ভালো ছিলাম এতদিন। অনেক ভালো ছিলাম। কিন্তু.."
তিয়াসের মুখ থেকে হাসি হাসি ভাব বিলীন হয়ে গেলো,
"কেনো কি হয়েছে? আংকেল আন্টি ভালো আছেন?"
" আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছেন।"
এবার তিয়াস মুখে হাসি এনে মাথা নিচু করে জিজ্ঞেস করলো,
" আর সাহিল ভাই?"
দিবার মলিন মুখ আরো বেশি মলিন হয়ে গেলো। সে চোখ নামিয়ে বললো,
" ওর জন্যই তোমার এখানে আসা।"
তিয়াস দিবার চোখের দিকে অবাক হয়ে তাঁকিয়ে রইলো। দিবা ধীরে ধীরে জমিলার সব কথা বলা শুরু করলো। তিয়াস মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগলো। শুনতে শুনতে ওর কপালে ভাঁজ পড়লো। দিবা পুরো ঘটনার সারসংক্ষেপ বলার পর বললো,
" এখন বলো কিভাবে ভালো থাকি? আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।"
তিয়াস বললো,
" সত্যি কথা বলতে কি দিবা বিষয়টা এটা সেন্সেটিভ একটি ইস্যু। এক দিক দিয়ে সম্মান আরেকদিক দিয়ে কোর্টের কঠোরতা। বাংলাদেশে সেক্সচুয়াল হ্যারাজমেন্ট এতো বেশি বেড়ে গেছে যে জনগনকে খুশি করার জন্য হলেও বেশিরভাগ রায় ভিকটিমের পক্ষে দেওয়া হয়।"
" মানে কি বলতে চাইছো? কেউ অপরাধ না করলেও সে সাজা পাবে!"
" ঠিক তা নয় তবে প্রমাণ করার বিষয়টা এখানে মূখ্য। আমাদের যথেষ্ট প্রমাণ লাগবে।"
" সেজন্যই তো তোমার কাছে আসা। ভরসা করার মতো আর কাউকে তো পেলাম না। আমি জানি তুমি সাহিলকে বেকসুর প্রমাণ করতে পারবে তিয়াস। আমি জানি।"
তিয়াস আশ্বাসের হাসি হেসে বললো,
" আমি আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো।"
দিবার চোখ ছলছল করে উঠলো। সে চোখ মুছতে মুছতে বললো,
" থ্যাংক ইউ। এডভোকেট তিয়াস আহমেদ।"
তিয়াস নাক কুঁচকে বললো,
"এটা কি শোধ তুললে?"
দিবা লম্বা করে বললো, "হুমমমমমমম।"
এবার তিয়াস আর দিবা দুজনেই হেসে উঠলো। 
.
.
.
চলবে..............................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।