আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

শ্রীঘর - পর্ব ০৬ - আতিয়া আদিবা - ধারাবাহিক গল্প

শ্রীঘর 
পর্ব ০৬ 
আতিয়া আদিবা 
.
.
.
সাহিল শ্রীঘরের ওপাশে হাটাহাটি করছে। আগামীকাল তাকে কোর্টে নেওয়া হবে। আচ্ছা, সে যে নির্দোষ তা কি দিবা বিশ্বাস করেছে? তার মনে সাহিলকে নিয়ে কোনো সংশয় নেই তো? কারাগারের ছোট্ট জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো সে। আকাশে জমিয়ে তারার মেলা। কি সুন্দর দৃশ্য! আজ যদি সে কারাগারে বন্দি না থেকে নিজের বাসায় থাকতো, এই রাতের আকাশ কি তার কাছে এতটাই অপরূপ লাগতো? সাহিল যখন গভীর চিন্তার মগ্ন তখন তার মৌনতায় ব্যাঘাত ঘটালো পুলিশ স্টাফ।
" এই যে। আপনার সাথে একজন দেখা করতে আসছে। "
সাহিল কপাল কুঁচকালো। দিবা বিকালে এসে তার সাথে দেখা করে গেছে। সাহিলের উকিল হিসেবে কাকে ঠিক করা হয়েছে তাও জানিয়ে গিয়েছে। এত রাতে কে দেখা করতে আসবে?
সাহিল স্টাফকে জিজ্ঞেস করলো,
" কে এসেছে?"
" আপনার সাথে দেখা করতে আসছে আপনি জানবেন! সময় পাঁচ মিনিট। আমি তারে পাঠায়ে দিতেছি। "
সাহিল অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলো। কে তার সাথে দেখা করতে আসছে? কিছুক্ষণের মধ্যেই হাই হিলের ঠক ঠক শব্দ শোনা যেতে লাগলো। ধীরে ধীরে শব্দের মাত্রা বাড়ছে। সাহিলের কপালে ভাঁজ পড়লো। এই শব্দটা তার কাছে পরিচিত। খুব পরিচিত!
" কেমন আছো, সাহিল? "
নারীকন্ঠ শুনে চমকে উঠলো সাহিল। বড় বড় চোখ করে সামনে তাকালো। সে যেনো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলো না। পড়নে সালোয়ার কামিজ, সেই আগের মতো একপাশে ওড়না ঝুলিয়ে রাখা, পায়ে হাই হিল। মুখের আদলটাও বদলায় নি! ঠিক তেমনই আছে যেমনটা ৭ থেকে ৮ বছর আগে ছিলো। 
" কি ভাবছো সাহিল? নাকি চিনতেই পারো নি!"
সাহিল হেসে বললো,
" কেনো চিনবো না পিয়া?"
পিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো,
" বাহ! বেশ চিনে ফেলেছো দেখা যায়।"
" তুমি এখানে কি করছো?"
" ভাবলাম যার বিরুদ্ধে উইটনেস দিবো, তাকে একবার দেখে যাই!"
" উইটনেস! কিসের উইটনেস?"
" কেনো সেক্সচুয়াল হ্যারাজমেন্টের উইটনেস!"
" আমার বিরুদ্ধে? "
পিয়া হাসিতে ফেটে পড়লো।
" হ্যাঁ! আর কার বিরুদ্ধে দিবো? "
" এসব কি আবোল তাবোল বলছো, পিয়া? আমি এরকম কিচ্ছু করি নি তাও তোমার সাথে!"
" ওওও... তবে কি জমিলার সাথে করেছো?"
" আমি কারো সাথে কিচ্ছু করি নি।"
" সেটা না হয় কোর্টে প্রমাণ করবে!"
একথা বলে পিয়া তার হাতঘড়ির দিকে তাঁকালো। 
" আর মাত্র ত্রিশ সেকেন্ড সময় আছে। তোমায় কি বলে যাই বলোতো? অল দ্যা বেস্ট নাকি গড ব্লেস ইউ?"
সাহিল হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। সে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না। কি হচ্ছে তার সাথে। কে কি করছে, কেনো করছে! একের পর এক মিথ্যা অপবাদ কেনো তার ওপর চাপানো হচ্ছে? পিয়ার হাই হিলের ঠক ঠক শব্দ আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে গেলো। সাহিল বুঝলো পিয়া চলে গিয়েছে। সে শ্রীঘরের এক কোণায় গিয়ে বসলো। জানালা দিয়ে পুনরায় বাইরে তাকালো। আকাশের গভীরতার দিকে তাঁকিয়ে সে নিজের অতীতে ফিরে গেলো।

(নয় বছর আগে)
সাহিল তখন ভার্সিটির প্রথম বর্ষ শেষ করে দ্বিতীয় বর্ষে পা রেখেছে। অর্থাৎ তিনটি সেমিস্টার শেষ। ক্যাম্পাসে ফ্রেশারদের আনাগোনা। গ্রাউন্ডের এক কোণায় তারা আজ বসেছে র‍্যাগ দেওয়ার জন্য। হঠাৎ একটা মেয়ে গ্রাউন্ডের মাঝখান দিয়ে হেঁটে এগিয়ে আসতে লাগলো। সাহিল সানগ্লাস পড়া। সে আস্তে আস্তে সানগ্লাস খুললো। মুখে সবে চাপদাড়ি উঠতে শুরু করেছে। মেয়েটা কাছাকাছি চলে আসলো। সাহিল কিছু বলার আগেই আরেকজন বন্ধু মেয়েটাকে ডাক দিলো।
" কি ফ্রেশার?"
মেয়েটা কিছুটা মিইয়ে গিয়ে বললো,
" জ্বি ভাইয়া। ফ্রেশার।"
" নাম কি?"
" পিয়া।"
" সিনিয়র দেখলে সালাম দিতে হয় জানো না?"
" আসলে ভাইয়া বুঝতে পারি নি, সর‍্যি।"
আরেকজন জিজ্ঞেস করলো,
"গান গাইতে পারো?"
" না।"
" নাচতে পারো? "
" জ্বি না, ভাইয়া।"
" কিছু একটা তো করতে হবে!"
এরপর সাহিলের দিকে ইশারা করে বললো,
" এই ভাইয়া আর আমার মধ্যে কে বেশি সুন্দর?"
পিয়া আঁড়চোখে একবার সাহিলের দিকে তাঁকালো। তারপর আবার মাথা নিচু করে ফেললো। 
" কি হলো বলো?"
পিয়ার এবার চোখ ছলছল করে উঠলো। ওর অবস্থা দেখে সাহিল বললো,
" আচ্ছা, বাদ দে না! 
আপু আপনি ক্লাসে যান। এসব কিছুই না। এমনি একটু মজা করা হচ্ছিলো।"
পিয়া মাথা নাড়লো। তারপর সবাইকে সালাম দিয়ে আবার ঠক ঠক করে হেঁটে ক্লাসের দিকে যেতে লাগলো। সাহিলের কেনো যেনো মন বলছে মেয়েটা আরেকবার পেছোন ফিরে দেখবে। সে সানগ্লাস খুলে পিয়ার যাওয়ার পথ দেখতে লাগলো। অর্ধেক পথ যেয়ে পিয়া থেমে গেলো। আস্তে আস্তে মাথা ঘুরিয়ে পেছোন ফিরে তাঁকালো। সাহিল হেসে ফেললো। পিয়া লজ্জা পেয়ে সামনে ঘুরে দ্বিগুণ গতিতে ক্লাসে চলে গেলো। সাহিল তার সানগ্লাস আবার পড়ে নিলো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষের প্রেডিকশন খুব কম ভুল হয়। আর এই প্রেডিকশনের বিষয়টা আসে অভিজ্ঞতা থেকে। 
.
.
.
চলবে...........................
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।