বারোটা মিসড কল,চারটা মেসেজ।সব কয়টা রুশানের। রুশান একবার ফোন দেয়া শুরু করলে রিসিভ না করা পর্যন্ত থামবে না।এসব ভাবতে ভাবতেই আবার ফোন আসলো ভিনার মোবাইলে।অগত্যা মোবাইল এ্যরোপ্লেন মোডে দিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।আগামী দুই সপ্তাহ সেমিস্টার ব্রেক,আহ কী শান্তি!মানুষের মুখোমুখি হতে হবে না এই কয়দিন,বিশেষ করে রুশানের।ফেসবুকে দেখলো রুশান বড়সড় স্ট্যাটাস দিয়েছে,মানুষের কাছে পাত্তা না পাওয়া বিষয় নিয়ে।অসংখ্য কমেন্ট আসছে সেই পোস্টে।ভিনা আয়েশি ভঙ্গি নিয়ে সেগুলো পড়ছে।তিনটা মেয়ে অতি আবেগি হয়ে আহ্লাদি কমেন্ট করেছে।কতিপয় কিছু চ্যালা টাইপের ছেলেরাও পিছিয়ে নেই।তাদের কমেন্টের সারমর্ম হলো কত মানুষ ওকে কোলে নিয়ে থাকতে চায়,তবুও এই ছোট কোমল হৃদয়ে এত কেন হতাশার ভার।
ওদের কথা যে পুরোপুরি মিথ্যা,তা না।বরং অনেকাংশে সত্যি।যারা রুশান সম্পর্কে ভালোমত জানে না,তারা ঠিক এর মর্মার্থ বুঝতে পারবে না।
রুশানের পুরো নাম রুশান বিন মাহমুদ।নামের আদিখ্যেতা দেখেই ভিনা আন্দাজ করেছিলো ফ্যামিলিয়াল ব্যাক গ্রাউন্ড কেমন হবে।সিক্সথ সেন্স বিফলে যায়নি।রুশানের বাবা ফারুক মাহমুদ সফল রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী,মা জেবা হক নামকরা এক ভার্সিটির ইংলিশ এর প্রফেসর।দুই ভাইয়ের মাঝে রুশান ছোট।রুশানের বড় ভাই রেহান বিন মাহমুদ ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে জার্মানিতে বেশ ভালো জায়গায় চাকরি করছে।শুধু যে এ্যসেটের দিক দিয়ে এরা বড়লোক তা না,শিক্ষাগত যোগ্যতাও দাপিয়ে বেড়ানোর মত।এতকিছু দিয়েও সৃষ্টিকর্তা ক্ষান্ত হননি,রুশান ও তার ভাই রেহান,দুইজনই এককথায় দারুণ হ্যান্ডসাম।বিশেষ করে রুশানের ব্রাউন আইরিশ আর হালকা কোকড়া চুল যেকোনো ষোড়শীর ঘুম কেড়ে নিতে সক্ষম।
এতকিছু থাকা সত্ত্বেও রুশানকে ভিনার ভীষণ বিরক্ত লাগে।কেন যেন মনে হয় এই ছেলে এরকম ফ্যামিলি থেকে বিলং করার কথা না।এত শিক্ষিত ফ্যামিলির ছেলের পার্সোনালিটি ও ভারি হবে এটাই কাঙ্ক্ষিত । তবে রেগুলার বেসিসে রুশান ভিনার এই সমীকরণ ভুল প্রমাণ করে আসছে গত এক বছর ধরে।হুটহাট ভিনার সামনে এসে বসে পরবে,ঘন্টা পার হয়ে গেলেও উঠবে না।ঘন্টাখানেকের এই কথোপকথনের বিষয় বস্তু হয় কোন ভিডিও গেমে কী হলো,কোন খেলোয়ার কী করলো,কোন সেলিব্রেটির ঘর ভাঙলো,কোন টিচার কাকে বিনা কারণে বাঁশ দিলো ইত্যাদি ইত্যাদি।তবে একটা বিষয় অস্বীকার করার উপায় নেই,রুশান বরাবরই ভালো ছাত্র।আগেও ভিনা শুনেছে এই কথা,এখনো খেয়াল করছে ওর উঠতি সিজি।এরকম টোটো করে বেড়ানো ছেলে কীভাবে সব ম্যানেজ করে কেই বা জানে।আর সবচেয়ে বড় কথা হলো,এত ভালো ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও ও কেন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে পড়ছে?একদিন অবশ্য এটা নিয়ে প্রশ্ন ও করেছিলো,সন্তোষজনক উত্তর পায়নি,পরে আর আগায়নি কথা।
প্রথমদিন দেখা হওয়ার পর ভিনা ভেবেছিলো রুশান শুধু নীল সাদার জগতে কখনো কখনো ওকে টোকা দিবে। ভিনার সেই ধারণা কে ভুল প্রমাণ করে পরেরদিন ভার্সিটিতে ঢোকার সময়ই রুশানের সাথে দেখা হয় ভিনার। হাবভাব দেখে বোঝা গেলো রুশান অপেক্ষা করছিলো। পাকা অভিনেতা না হওয়ায় রুশানের অতি অভিনয় সব প্রমাণ করে দিলো সহজেই।
-আরে ভিনা?ভার্সিটিতে আসলা মনে হয়?
ভিনা রুশানের দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো। এই দৃষ্টির অর্থ কেউ আইডিকার্ড গলায় ব্যাগ নিয়ে ভার্সিটিতে ঢোকার গেট দিয়ে ঢুকে যে সেন্টামার্টিন যাওয়া যায়,সেটা জানতো না।রুশান নিজের করা প্রশ্নে নিজেই অপ্রস্তুত হয়ে গেলো।
-না মানে,ক্লাস কখন?
-দুই টায়
-এখন তো বারোটা বাজে। এত আগে আসলা যে?
-লাইব্রেরিতে পড়বো।
-ওয়াও!চলো আমিও যাই।
-কোথায়?
-লাইব্রেরিতে।
-লাইব্রেরিতে আমি পড়তে যাচ্ছি।
- আমিও তো পড়তে যাবো।
ভিনা ছোট করে নিঃশ্বাস ফেলে কথা না বাড়িয়ে হাঁটা দিলো।রুশান অনেকটা বাধ্য ছেলের মতই পিছু পিছু গেলো।ব্যাগ লকারে রাখা থেকে বই নিয়ে বসা পর্যন্ত মাঝখানে ভিনা কোনো কথা বললো না।রুশান কিছু না পেয়ে ইংলিশ নিউজপেপার নিয়ে বসলো। ভিনা বই খোলা মাত্র রুশান কথা শুরু করলো-
-ভিনা?তুমি রাগ করেছো?
-না
-আমি বিশ্বাস করলাম না।তুমি রাগ করেছো,তাইনা?
-বুঝে থাকলে কথা বাড়াচ্ছো কেন?
-তার মানে তুমি সত্যিই রাগ করেছো!
ভিনার মাথায় রক্ত উঠে গেছে।এতদিন পর পরিচিত মানুষ পাওয়ার বিড়াম্বনা যে এত হবে ভাবা যাচ্ছে না।লাইব্রেরিতে চিৎকার ও করতে পারছে না।অন্তত ভার্সিটিতে উঠে কোনো ধরনের গসিপের টপিক হতে চায় না ভিনা।বরং নিজেকে যতটা পারে,বাঁচিয়েই চলে।
-ভিনা আমি কি বেশি বিরক্ত করছি?
-না রুশান,তুমি একটু ও বিরক্ত করছো না।কিন্তু কথা এভাবে চালিয়ে গেলে আমি বিরক্ত হয়ে যাবো কিছুক্ষণের মধ্যেই।
-স্যরি! এই যে চুপ হলাম,আর একটা শব্দ ও বের হবে না,কথা দিলাম।
ভিনা বইয়ে মনোযোগ দিলো।পাশে রাখা খাতায় কী পয়েন্ট গুলো লিখে নিচ্ছে দ্রুত।এভাবে রুশানের সাথে বসে থাকতে ভীষণ আনইজি লাগছে।রুশান গভীর মনোযোগ দিয়ে পেপার পড়ছে,দেখে মনে হচ্ছে আর কিছুক্ষণ পরেই এর উপর পরীক্ষা আছে।অভ্যাসবশতই হোক আর যাই হোক,কিছুক্ষণ পরই রুশান ভিনার পেন্সিল ব্যাগ থেকে হাইলাইটার নিয়ে পেপারের কিছু লাইন হাইলাইট করে পড়া শুরু করলো। ভিনা নিজের লেখা বাদ দিয়ে রুশানের কাজ কারবার দেখতে লাগলো।কোন সালে কোন জেলায় কী হয়েছে এসব হাইলাইটার দিয়ে দাগিয়ে রুশান রীতিমতো মুখস্ত করছে।এরকম আজব মানুষের মুখোমুখি ভিনা কখনো হয়নি।অবশ্য ও মিশেছেই কম মানুষের সাথে।রুশান কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে গিয়েও ভিনা করলো না।কথা যত কম বলা যাবে,ততই ভালো।এভাবে ঘন্টা দেড়েক পার হওয়ার পর ভিনা লাইব্রেরিতে বের হওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই রুশানও উঠে দাঁড়ালো।
-পড়া শেষ?
-হ্যাঁ
-চলো কফি খাই।
-আমি কফি খাই না।
-ও আচ্ছা!আমিও চা ই পছন্দ করি বুঝলা।কিন্তু মাঝে মাঝে কফিও ভাল্লাগে।
-ক্লাস আছে তোমার?
-হ্যাঁ?
-ক্লাস আর আছে তোমার?
-না মানে আর নেই।দশটায় শেষ হয়ে গেছে।
-তাহলে এতক্ষণ থাকলে যে?
রুশান কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো।মাথা চুলকে বললো-
-শুধু পড়াশোনাই করলে হবে বলো?এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিতেও থাকতে হয়।একটু পরে ডিবেট ক্লাবের মিটিং আছে।সেখানে যাবো।
-ইম্প্রেসিভ।এভাবেই চালিয়ে যাও।বেস্ট অফ লাক
-তুমিও চলো। খারাপ লাগবে না।
-ক্লাব এক্টিভিটিতে আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই।আর এখন আমার ক্লাস আছে।
-এক্সট্রিমলি স্যরি।আমি একদমই ভুলে গেছি।
-এখানে স্যরি হওয়ার কিছু নেই রুশান।আমি আসি এখন।
-ঠিকাছে।সি ইউ সুন।
ভিনা ক্লাসে চলে গেলো।পুরো ক্লাসই ফাঁকা,একজন ছাড়া কেউ আসে নি এখনো।ভিনা যেয়ে ঐ একজনের পাশেই বসলো,কারণ,সে জায়গা রেখেছে ভিনার জন্য।
-এসাইনমেন্ট করেছিস?
-হ্যাঁ
-গুড,ভেরি গুড।কিছু পোলাপান আমার মাথা খেয়ে ফেলছে এসাইনমেন্টের ছবির জন্য।এত কেয়ারলেস কেন হয় এরা?
-নতুন নতুন ভার্সিটি তো,তাই এমন।
-নেভার!এরা আজীবন ই লাফাবে।সবকিছুতেই লাফাবে। বুড়া হোক,তখন বাচ্চাকাচ্চার ছবি ফেসবুকে দিয়ে লাফাবে।
-কী ব্যাপার? মাথা এত গরম কেন?
-ঠান্ডা হওয়ার মত কীই বা আছে।কিচ্ছু নাই।যতসব কেয়ারলেসদের মাঝখানে আমার পরতে হলো।
ভিনা মুচকি হাসি দিয়ে ব্যাগ সাইডে রেখে বসলো।যে মানুষটার সাথে এতক্ষণ কথা হলো,সে হলো ফারজানা।ভার্সিটিতে ভিনার প্রথম এবং বলা যেতে পারে একমাত্র বন্ধু।একদম প্রথম ক্লাস থেকে এই মেয়ে সবকিছু নিয়ে ভীষণ ডিজাপয়েন্টেড।পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পছন্দমত সাব্জেট না পাওয়ায় মনে যে হতাশার সৃষ্টি করেছে,সেটার প্রতিফলন ওর সব কথাতেই টের পাওয়া যায়।ভার্সিটির প্রথম ক্লাস চলাকালীন সময়ে একদম হুট করে ফারজানা এসে বসেছিলো ভিনার পাশে।
-যাক!এ্যটলিস্ট তুমি খাতা তো এনেছো।কেউ কিছু আনে নাই,এনেও আবার লিখে নাই। আজব!
ভিনা প্রথমে বেশ অবাক হলেও পরে কথা বার্তা বলে জানতে পারলো,জীবন নিয়ে ওর বিরক্ত হওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক না।ফারজানা ঢাকার বাইরে থেকে এসেছে।ওর বাবা চাকরিজীবী,মা হাউজওয়াইফ।দুই ভাইবোনের মাঝে ও বড়।ছোটভাই ক্লাস ফোরে পরে।ওর বাবা বেশ চাপিয়ে চলে,ছোট থেকেই কমের মধ্যে কীভাবে সব গুছিয়ে নিতে হয়,সেটা শিখেই বড় হয়েছে।ওর মা সবসময়ই পড়াশোনার বাইরে যে পৃথিবী রয়েছে,সেটা থেকে দূরেই রেখেছে।স্কুল কলেজে বরাবরই ভালো রেজাল্ট ফারজানার।ধাক্কা খায় ভর্তি পরীক্ষায়,সামান্য কিছু নাম্বারের জন্য পছন্দের সাব্জেক্ট পায় না।এদিকে মেয়েকে নিয়ে উচ্চাকাঙ্খী বাবাও জেদী,যেভাবেই হোক,ভালো জায়গায়ই পড়াবেন।ফারজানা নিজেকে নিয়ে এতটাই কনফিডেন্ট ছিলো যে এক পাব্লিক ইউনিভার্সিটি ছাড়া কোথাও ফর্ম তুলেনি।ধাক্কা খাওয়ার পর প্রথম কয়মাস হতাশা আর তিরস্কারেই কেটে যায়।এরপর ফারজানার বাবা সিদ্ধান্ত নেন,মেয়েকে বিয়ে দেন।এবার ওর মা বেশ শক্ত হয়েই জানান যে মেয়েকে তিনি ঢাকায় নিজের ভাইয়ের কাছে রেখে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে পড়াবেন।সীমিত আয়ের সংসারে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে পড়ানো,তাও আবার মেয়েকে,এ নিয়ে নানা কথা শুনতে হয়েছে ফারজানার মা কে।কিন্তু তিনি অটল থেকে মেয়েকে পাঠান ঢাকায়,তার বিশ্বাস,মেয়ে ঠিকভাবে পড়াশোনা করলে এত ও খরচ হবে না তার।ঢাকায় আসার পর নতুন সমস্যায় পরে ফারজানা।অতি আধুনিক মামি আবার এই মেয়েকে ঘরে রাখতে চান না।এদিকে ফারজানার বাবা কথা বন্ধ রেখেছেন অনেকদিন হয়েছে,হাত খরচ ও পাঠান না ঠিকমত।টিউশনি করে যা চলার চলছে।প্রতিটা সেমিস্টারে ভালো সিজিপিএ ওর একান্ত প্রয়োজন।এইযে আলাদা চাপ মাথায় নিয়ে চলছে ও,এটাই জীবন সম্পর্কে ওর তীব্র বিরক্তির কারণ।
কিছুক্ষণের মাঝেই ক্লাস ভরে গেলো মানুষ দিয়ে।ক্লাসে সেজান নামের একটা ছেলে আছে,এই ছেলের ফারজানার সাথে ভিনার বন্ধুত্ব নিয়ে ভীষণ সমস্যা।যখনি একসাথে দেখবে,কমেন্ট করবে।শুরু থেকেই সেজান ভিনার সাথে একটা আদিখ্যেতা টাইপ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাচ্ছিলো,ফেসবুকের ইনবক্সে 'প্রায়' মাখোমাখো ধরনের মেসেজ পাঠায়।ভিনার ধারণা এই মেসেজ গুলো ছেলের নোটস এ সেভ করা থাকে,খালি কপি পেস্ট করে পাঠায় যখন যাকে ভালো লাগে।কারণ একেক টা বিশাল মেসেজ পরপর পাঠায় কোনো বিরতি ছাড়া।মানুষের এত ধৈর্য্য কীভাবে থাকে কে জানে!আরেকটা ছেলে আছে,রিদওয়ান। এই ছেলে অত্যন্ত মনোযোগী ছাত্র,সবকিছু নোট করবে,এমনকি টিচার একটা হাঁচি দিলেও তুলে রাখবে।এসাইনমেন্টের ফ্রন্ট পেজ সবসময় প্রিন্ট করে দেয় যেখানে অন্যরা এসাইনমেন্ট ই করে না।যেহেতু রিদওয়ানের সাথে ভিনার কথা শুধুমাত্র কোনো ইনফরমেশন জানতে,তাই ওর ব্যাপারে বেশিকিছু জানে না।তবে ভিনার ধারণা এই ছেলেও অনেকটা ফারজানার মত ভর্তি পরীক্ষায় ছ্যাকা খেয়ে এসেছে।তাই এত টাকা দিয়ে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে পড়া প্রতিটা অক্ষরে অক্ষরে উসুল করে নিচ্ছে।ভিনা ওর চারপাশের প্রতিটা মানুষকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে,ওদের জীবনের গল্প গুলো জানার চেষ্টা করে,কিছুটা ধারণাও পায়।প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে বেশির ভাগ মানুষ তীব্র হতাশা নিয়ে ঢুকে।এদের কেউ পাব্লিকে চান্স পায় না,কেউ চান্স পেলেও ভালো সাব্জেক্ট পায় না,কারো আবার ঢাকার বাইরে পড়ার পার্মিশন নেই।বাবা মায়ের কষ্টের কাড়ি কাড়ি টাকা নিয়ে যখন এরা ভর্তি হয়,তখন বেশিরভাগের মনে তীব্র আত্মদহন হয়।খুব কম মানুষই আছে,যারা কোনো আত্মগ্লানি ছাড়া এখানে পড়ে।দুঃখজনক হলেও সত্যি,অনেকের বাবা মার টাকা থাকা সত্ত্বেও ছেলে মেয়ের প্রাইভেটে পড়াকে অভিশাপ মনে করে।যে দেশে ইন্সটিটিউশন দিয়ে মেধা যাচাই করা হয়,সেদেশের ইয়াং জেনারেশনের ডিপ্রেশনে পরা খুব স্বাভাবিক।
ডিপার্টমেন্টাল কোর্সের জ্ঞানের সাথে নিজের ফিলোসফি নিয়ে যখন ভিনা ক্লাস শেষে বের হলো,দেখলো রুশান দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।ভিনা দেখেও কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে চলে গেলো,এমনকি কথা বলার সুযোগ ও দিলো না।
রুশান চোখে গভীর আবেগ নিয়ে নিজের কৈশোরের ভালোবাসাকে চলে যেতে দেখছে।কৈশোরে পার করে যৌবনে পা রাখলেও আবেগ বদলায়নি একটুও। কিন্তু বদলে গেছে ভিনা।এই ভিনাকেই একদিন নিজের করে নিবে,রুশান সেটা ভালোমত জানে।দীর্ঘশ্বাস ফেলে রেহানকে ফোন দিলো রুশান।
-কী রে,খবর কী?
-ভিনা আরো বড় হয়ে গেছে রে ভাইয়া,আমার চেয়ে ভীষণ আলাদা।
.
.
.
চলবে...........................................................