ভাইয়ের বন্ধু যখন বর - পর্ব ০৬ - ইয়াসমিন তানিয়া - ধারাবাহিক গল্প


আজ রুপকদার গায়ে হলুদ। সকাল থেকেই সবাই ব্যস্ত। বাড়ির উঠানে বিশাল জায়গা নিয়ে গায়ে হলুদের সব আয়োজন করা হয়েছে। তাজাফুল,কাগজ আর ছোটো ছোটো বাল্ব ব্যবহার করা হয়ছে ডেকোরেশনে।

এর পুরো ক্রেডিট রায়হান ভাইয়ের। খুবই অল্প সময় পুরো বাড়ির নকশা পাল্টিয়ে ফেলেছে। তাইতো আজ সবার মুখে মুখে রায়হান ভাইয়ের সুনামের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আহা!

'হলুদের জন্য আমরা মেয়েরা সবাই কলাপাতা কালারের শাড়ি পরেছি। এর সাথে খোপায় বেলি ফুলের মালা। শাড়ির লাল পাড়ের সাথে মেচিং করে চুড়ি, ব্লাউজ আর কপালে লাল টিপ পড়েছি তার সাথে সাজসজ্জা তো আছেই।
সবাইকেই খুব সুন্দর লাগছে। আর ছেলেরা কাঁচা হলুদ কালারের পান্জাবী পড়েছে।

'এর মধ্যে জিসানের চোখ আটকে গেল একজন রমণীর দিকে।'
শাড়িতে কাউকে এত সুন্দর লাগে তা তো জিসানের জানাই ছিল না। আজ প্রথম তিশাকে শাড়িতে দেখল জিসান। তিশার থেকে আজ চোখই সরাতে পারছে না ও। বুকের ভেতর মনে হয় চিন চিন ব্যথা করছে, অজান্তেই হাতটা বুকের বাপাশে চলে গেল। জিসানের চোখে আজ তিশাকে ভয়ংকর সুন্দর লাগছে। এতটাই সুন্দর যে, এই সৌন্দর্যের বর্ণনা করতে গেলে, জিসানকে হয়তো আজ কবি হতে হবে।
তাই মনের অজান্তেই বিরবির করে বলে ফেলল-- 'সুন্দরী তোর ভয়ংকর সৌন্দর্যে আমি ধ্বংস হয়ে যাব একদিন। দেখিস!'

তিশা নিচে আসতেই চায়নি আজ। সকালের ঘটনায় ভীষন ভাবে ভয় পেয়ে গিয়েছে। কিছুতেই ভুলতে পারছে না, মনে পড়লে এখন হাত পা কাপে। ভাগ্য ভালো ছিল বলে, এই যাত্রায় বেঁচে গিয়েছে।

---------সকালে

                   নিশির চিত্কারে জিসান সহ বাড়ির সবাই পুকুর পাড়ে দৌঁড়ে আসে। জিসানকে আসতে দেখে নিশি কান্না গলায় হাত দিয়ে ইশারা করে বলে__

ভাইয়া তিশা পুকুরে পড়ে গিয়েছে, এ কথা শুনে জিসান এক সেকেন্ড ও অপেক্ষা করেনি সাথেসাথে পুকুরে ঝাপ দেয়।
পুকুর গভীর ছিল, পড়ার সাথে সাথে হাত পা চালিয়ে ও কিছুই করতে পারছিলাম না। নিশ্বাস ঠিক মত নিতে না পাড়ার কারনে চোখে যেন অন্ধকার নেমে আসছিল। মনে হলো কোনও এক অদৃশ্য শক্তি আমাকে নিচের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি হারিয়ে ফেলছি আমার সব আপন মানুষদের। চোখের সামনে ভেসে আসছে, মায়ের কান্না মাখা মুখ খানি, বাবার মলিন চেয়ারা, রায়হান ভাই, নিশি, নিলু আর সবশেষে জিসান। আমার চোখ বুঝে গেল।'

'জ্ঞান ফিরার পর জানতে পারলাম__'

তখন জিসানের সাথে সাথে রায়হান ভাই ও পুকুরে ঝাপ দেয়। পুকুরটা বড়ো আর গভীর ছিল। আমি পুকুরের নিচে তলিয়ে যাবার আগেই জিসান আকড়ে ধরে আমাকে। আস্তে আস্তে জিসান ও রায়হান ভাই মিলে আমাকে উপরে উঠায়। কিন্তু আমি তখনও নিস্তেজ হয়ে পরেছিলাম। পেট চেপে পানি বের করা হয়। কিন্তু নিশ্বাস তখনো আমার চলছিল না ঠিক মত।
জিসান মুখ দিয়ে নিশ্বাস দেওয়ার কিছুক্ষন পর আমি লম্বা একটা নিশ্বাস ছাড়ি। কিন্ত শরীর খুব ক্লান্ত আর ভয়ে আমি নিজের জ্ঞান আবার হারিয়ে ফেলি। আর যখন জ্ঞান ফিরে আসে, চোখ খুলে দেখি মা বসে কান্না করছে। বাবা মাথার সামনে বসে আছে। ঘর ভর্তি মানুষ। সবার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে কোনও ছোটোখাটো টর্নেডো এসেছিল বাড়িতে। যার কবল থেকে খুব কষ্টে বেঁচে ফিরেছে।


রুপকদাকে সবাই এক এক করে হলুদ ছোঁয়াচ্ছে। আমার সব কাজিনরা দুষ্টুমি করে রুপকদার পুরো মুখে হলুদ লাগিয়ে ভূত বানিয়ে দিয়েছে। সবাই এত পরিমান মিস্টি খাওয়ালো যে, এখন রুপকদা মিষ্টি দেখলেই নাক মুখ ছিটকে ফেলছে।
ব্যাচারা মনে হয় নিজের বিয়ের মিষ্টিটাও এখন আর খাবে না।
কখন ধরে রুপকদার ফোন বেজে চলছে। সুরভি ভাবি কল করছে। কিন্তু এত মানুষের মাঝে ফোন তুলতে পারছিল না। অবশেষে টিকতে না পেরে ফোনটা রিসিভ করেই ফেলল।
কী কথা হলো আল্লাহই জানে রুপকদার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল। কিছুক্ষন পর রায়হান ভাইকে ডেকে কানে কানে যেন কী বলল, রায়হান ভাই চোখমুখ কুঁচকে একটা বিরক্ত লুক নিয়ে রুপকদার দিকে তাকাল। আর রুপকদা হ্যাবলার মত একটা হাসি দিল।

আমি নিশি আর নিলু এক সাইডে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম। হলুদের আয়োজন মোটামোটি শেষ। ব্যাক গ্রাউন্ড এ গান চলছে----

'একটা সময় তোরে আমার সবই ভাবিতাম,
তোরে মন পিঞ্জরে যতন করে আগলাইয়া রাখতাম।
তোর হাসি মুখের ছবি দেইখা দুঃখ পুষাইতাম,
তুই কানলে পরে কেমন করে হারাইয়া যাইতাম।
ওরে মনের খাঁচায় যতন কইরা দিলাম তোরে ঠাঁই,
এখন তোর মনেতেই আমার জন্য কোনো জায়গা নাই।
ওরে আদর কইরা পিঞ্জরাতে পুষলাম পাখিরে,
তুই যারে যা উইড়া যারে অন্য খাঁচাতে।
ও মাইয়ারে,মাইয়ারে তুই, অপরাধী রে ,
আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা দে ফিরাইয়া দে।
আমার অনুভূতির সাথে খেলার অধিকার দিলো কে?
মাইয়া তুই বড় অপরাধী , তোর ক্ষমা নাই রে।"

আমি ভীষন অবাক গায়ে হলুদে এ গান কে ছাড়ল,অথচ নিশি ও নিলুকে দেখে মনে হচ্ছে গানটা বেশ ভালোই লাগছে তাদের। আমি এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলাম এক জোড়া চোখ শুধু আমাকেই দেখছে।
মাঝে মাঝে মনে হয়, এই চোখদুটোতে আমি যেন বিশাল এক সমুদ্র দেখতে পাই। যার ঢেউ এর মিষ্টি তরঙ্গ গুলো ক্ষনে ক্ষনে বেজে উঠে, আর আমি হারিয়ে যাই তার মাঝে। আমি বেশিক্ষণ সেই চোখদুটোর দিকে তাকাতে পারলাম। নামিয়ে ফেললাম সাথে সাথে। কেন বুঝে না এই লোকটি___

'আমি যে দেখতে পাই তার চোখে আমারি সর্বনাশ।'

নিলু তুই তিশার সাথে থাক আমি একটু গলা ভিজিয়ে আসি। আরে নিশি আমার জন্য ও একটা সপ্ট ড্রিংক নিয়ে আসিস।

'তুই ওকে কেন অর্ডার দিচ্ছিস। তুইও যা, যে টা পছন্দ সেটা নিয়ে আস। আর কখন ধরে দেখে আসছি তোরা দুজন কেমন চুইঙ্গাম এর মত লেগে আছিস আমার সাথে, বলত সমস্যা কী?'

নিলু ও নিশু দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে মুখটা মলিন করে ফেলল।
সাধে কী আমরা চিপকে আছি। আমাদের দুজনের জন্য ফরমান জাড়ি করেছে তোর ওই ম্যাডনেস হিরো।সকালের দূর্ঘটনাটার জন্য তোকে এক সেকেন্ড একা যাতে না করি।

'তুইতো বেহুশ ছিলি, আর এ দিক দিয়ে জিসান ভাই আমাদের এমন ধোয়া ধুইছে। কাপড় ধোয়াতে বসালে তখন ভাই মনে হয় সাবান ছাড়াই কাপড় পরিষ্কার করে ফেলত।'

এবার বুঝলাম_____আমাকে কেউ ধাক্কা দিয়েছে, এটা শুনেই জিসান টেনশনে পরে গিয়েছিল। তাই হয়তো এ দুটো পাবলিককে আজ আমার বিনা বেতনে বডিগার্ড বানিয়ে ফেলছে। আজব মানুষ।


'পুরো বাড়ি এখন ভূতরি বাড়ি মনে হচ্ছে।পানির জগ নিয়ে আমি বের হলাম, উদ্দেশ্য কিচেনের দিকে। কিছুক্ষন আগেও কত শোরগোল শোনা যাচ্ছিল। আর এখন সব নিরব, নিস্তব্ধ। ক্লান্তিতে সবাই ঘুমিয়ে ও পরেছে।'
পানি নিয়ে আসার সময় কিছু একটার ছায়া দেখতে পেলাম। আমি ভয়ে চিত্কার দিতে চাইলে কেউ একজন এসে আমার মুখটা চেপে ধরে।

'আমার সামনে তিন বান্দর দাঁড়িয়ে আছে, রায়হান ভাই, রুপকদা আর জিসান।
এত রাতে তোমরা কোথা থেকে আসলে।'

আমার কথা শুনে রুপকদা একটু লজ্জা পেল বলে মনে হলো। আ...মতা,আম...তা করে বলল, 'তোর ভাবির সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।'

'ওও....! তাই না-কী! তাহলে এই দুজন কার সাথে দেখা করতে গিয়েছে,তোমার শালিদের সাথে।
আমি হেসে উঠলাম।'

'রায়হান ভাই আমাকে একটা ধমক দিল, বেশি কথা বলিস তুই। আগে বোল এত রাতে এখানে কী করিস।তোকে না বলেছি একলা কোথাও যাবি না। কথা শুনিস না কেন তুই, যা রুমে যা এখন।'

'আমি তো পানি নিতে বের হয়েছিলাম।'

'একলা কেন আসলি। নিলু বা নিশিকে সাথে করে বের হতে পারলি না। আমরা না হয়ে অন্য কেউ হলে তখন কী করতি। আর এভাবে কখনো বের হবি না। ঠিক আছে। বলেই, রায়হান ভাই ও রুপকদা চলে গেল নিজেদের রুমের দিকে।'

'আমার মেজাজ গরম হয়ে গেল। আমিও চলে যেতে নিলে, জিসান আচানক সামনে এসে দাঁড়ায়। আমাকে হাত দিয়ে ইশারা করে বলে, পাঁচ মিনিট তোর কাছে আছে। রুমে জগটা রেখে ছাদে আস।'

আমি ভয়ে ভয়ে জিঙ্গেস করলাম, কে.....ন?'

'তোকে আসতে বলছি আসবি, এত প্রশ্ন করতে বলেনি।'

'ছাদে এতো রাতে,ভূ....ত আছে। আমি যাব না।'

'তোর লাইফের ভূততো আমি, তাই এখন ছাদে না আসলে ঘাড় মটকে ফেলব। বুঝলি! জিসান দাঁতেদাঁত চেপে বলে।'

ছাদের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছি। ভয়ে ভীষন ঘাম ছুটছে। উফ! কেন যে বের হলাম, আর এর সামনেই বা কেন পড়তে গেলাম।
ছাদের ভেতরে ডুকে দেখি কেউ নেই, যাক বাঁচলাম বলেই, চলে যেতে নিলে কেউ আমার হাতটা টান দেয়।এটা আর অন্য কেউ না জিসানই। আমি গিয়ে জিসানের বুকের উপর গিয়ে পড়লাম।
আমার কোমড়কে আকড়ে ধরে, তার বাহুডোর এ আবদ্ধ করে ফেলল। তার স্থির দৃষ্টি আমার মুখের দিকে। আর আমার চোখদুটো তার পান্জাবীর বোতাম খোলা উন্মুক্ত বুকের দিকে।"

"পৃথিবী ধ্বংস কার জন্য হবে জানি না। কিন্তু আমাকে ধ্বংস তুই করবি। মনে রাখিস। "জিসানে কন্ঠ ভেসে এল।

আমি অবাক নয়নে এবার তার দিকে তাকালাম। কী সব বলছে! পাগল হয়ে যায়নি তো। আমি তাকে কিভাবে ধ্বংস করব। মনে মনে ভাবে তিশা।

হঠাত আমাকে টেনে ছাদের গ্রিলের সাথে চেপে ধরল।জিসানের চোখ আজ যেন অন্য কথা বলছে। জিসান আজ আমার কাছে কেমন রহস্যময় লাগছে। কেমন এক গম্ভীরতা ভেসে উঠছে কথায়।

'আমার কাঁধের কাছে মুখটা এনে ফিসফিসিয়ে বলে,______প্রেমিকার কিছু কিছু জিনিস না-কী প্রেমিকের কাছে ভালো লাগে। আমার কাছে তোর সব কিছুই কেন এত ভালো লাগে বলত।'

'কাঁধে জিসানের গরম নিশ্বাস পড়ছে। আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে, আমি একটু নাড়াচাড়া করায়। হাত দুটো আরো শক্ত করে চেপে ধরল।'

'কাঁধ থেকে উঠে গলায় টুকরো টুকরো চুমু আঁকতে লাগল। আমি চোখদুটো বন্ধ করে ফেললাম।'

'তোর ভয়ার্ত মুখের প্রেমে আমি বার বার পড়ি, জানিস!ভয়ে যখন তুই চোখ দুটো বার বার বন্ধ করিস আর খুলিস, সেটা দেখে আমার তোর আরো কাছে আসতে মন চায়। কেন বলত!'

'নিজের গাল দিয়ে আমার গালের সাথে স্লাইড করে বলে,
'একটু ভালোবাসা দিবি আমায়, যে ভালোবাসা পেয়ে আমি ভুলে যাব তোকে না পাওয়ার বেদনায় কাটানো রাত গুলোর কথা। যে ভালোবাসায় থাকবে সীমাহীন ভালোবাসা, অনুভূতি। যা দিয়ে আমি পার করতে পারব সারাটা জীবন।'

আমার হাতদুটো ছেড়ে দিয়ে,আমার কোমড়টা ধরে নিজের সাথে চেপে ধরে। আমার চুলগুলো মুঠো করে মুখটা তুলে ধরে নিজের মুখের কাছে, ___কী নিষ্ঠুর তুই!
কেমন করে পাড়িস আমাকে ভুলে যেতে,আমি কেন পারি না। তাহলে তো এই দহনে এত বছর জ্বলতে হতো না।

আমার কপালে নিজের কপাল রেখে__কর নেশা আছে তোর মাঝে বোল না। মদের নেশাও এর কাছে কিছুই না। তোকে পাওয়ার নেশা যে এত তীব্র হবে জানা ছিল না। কিন্তু এই নেশায় আমি ডুব দিতে চাই। আর ভাসাতে চাই নিজেকে দূর থেকে দূরান্তে।

জিসানের ঠোঁট আমার ঠোঁটে ছুঁই ছুঁই করছে। তার এই মাতাল করা ছোঁয়ায় আমার শরীরের শিরায় শিরায় এক অদ্ভুত শিহরণ জেগে উঠছে।
জিসানের হাতের প্রতিটি স্পর্শে আমার শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। মনের মধ্যে সমুদ্রের ঠেউ এর মত তোলপাড় শুরু হয়ে গেল।
তার দিকে তাকাতেই আমার ঠোঁটদু'টো কেঁপে উঠল।'

'আর জিসান আমার দিকে নেশা ভরা চোখে একদৃষ্টিতে এখনো তাকিয়ে আছে।'

আমার আর সহ্য হচ্ছিলো না, মনে হলো, আমি মনে হয় আজ নিজেও জিসানের নেশায় পড়ে যাচ্ছি।
এখান থেকে না গেলে নিজ ইচ্ছায় বিষ খেয়ে ফেলব।আর এই বিষের তীব্রতা অনেক তুখোড়। আমাকে মারবে না,তবে বাঁচতেও দেবে না।
তাই নিজেকে জিসান থেকে ছুটানোর বৃথা চেষ্টা করতে লাগলাম। কাঁপা কাঁপা গলায় বলেই ফেললাম, 'আ.....মি নিচে যাব।'

জিসান আমার কানের কাছে নিজের মুখটা এনে ফিসফিসিয়ে বললো, 'চিন্তা করিস না, আমি এত তাড়াতাড়ি আমার বিষ তোকে দেব না।
কিন্তু যেদিন দেব, তুই নিজ ইচ্ছাই পান করবি। আজ তো তোকে নিয়ে শুধু জ্যোৎস্না স্নান করব।
আমি অবাক দৃষ্টিতে জিসানের দিকে তাকালাম। আর উনার ঠোঁটে ফুটে উঠল একটা বাঁকা হাসি।

'ছাদেই জিসানের হাতের উপর মাথা রেখে চাঁদ দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পরেছি। খুব ক্লান্ত লাগছিল। 
জিসান আগে থেকেই একটা মাদুর বিছিয়ে রেখেছিল আজ সারারাত ছাদেই কাটাবে বলে। অনেক চেষ্টা করেও আমি যেতে পারিনি।"

'জিসান ঘুমান্ত তিশার দিকে তাকিয়ে আছে __

'বার বার ফিরে আসি আমি তোকে পাওয়ার লোভে, কোনও এক জ্যোৎস্নাময় রাতে তুই আমার হবি এই আশ্বাস নিয়ে।
ঘুম আসে না আমার চোখে ঘোর লেগেছে মনে।তোর সুভাস ছড়িয়ে পরেছে এই যুবকের বনে।'

জিসান তিশার কপালে একটা চুম দিয়ে, খোলা আকাশের সেই চাঁদের দিকে তাকায়।
জিসানের মুখে এক রহস্যময় হাসি।

'আমার চাঁদটাও মেঘের আড়ালে লুকিয়ে ছিল,আস্তে আস্তে আমি মেঘগুলো সরিয়ে চাঁদকে আমার নিজের করে ফেলব। আমি বলছিলাম না এখন আর কোনও কিছু আমাকে আটকাতে পারবে না।'

চার বছর আগে আমার জেদের কারনে সবাই তোর কাছ থেকে আমাকে আলাদা করে ফেলছে, তখন আমি নিরুপায় ছিলাম, কিন্ত এখন না.....।
আমি আমার কোনও বোকামি কাজ দিয়ে তোকে হারাতে চাই না।

তোকে পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত ছিল, সেই শর্তের মধ্যে একটা শর্ত আমি কাল ভেঙ্গে দেব। যার শুরু আমি আজ সকাল থেকেই করে দিয়েছি।

হুম আজ সকালে তিশাকে জিসানেই ধাক্কা দিয়েছে।

আমি তোকে ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম, আরও একটা কারণ আছে যা কাল সকালে বুঝতে পারবি। কিন্তু একটু ক্যালকুলেশনে ভুল হয়ে গেছে জান। আমি জানতাম না পুকুরটা এতটা গভীর হবে। সরি জান, জানলে এতটা রিক্স নিতাম না। তিশার দিকে তাকিয়ে।'

কিন্তু আমি যা করছি তোর জন্য, তোকে পাওয়ার জন্য, এখন তুই আমার হওয়া শর্তেও আমার না। তাই তোকে পুরো পাওয়ার জন্য যা যা করতে হবে, তা আগেও করেছি এখনও করব।
তুই কী কখনো ভেবেছিস, আমি যাওয়ার পর থেকে কেন কোনও ছেলে তোকে আজ পর্যন্ত প্রপোজ করেনি।
বিস্ময়কর হাসি দিয়ে জিসান____তোর আশেপাশে আমি কোনও ছেলেকে কখনো এলাউড করেনি। আমি দূরে থাকলেও আমার জিনিস কিভাবে সুরক্ষিত করতে হয় আমি জানি জান।
আর এখন তোকে কিভাবে আমার করতে হবে তাও জানি।

জিসানের মুখে এখনও সেই রহস্যময় হাসি। জিসান গুন গুন করে গান করছে। আর ভাবছে এখন শুধু সকাল হবার পালা_______

Humme tumse pyaar kitna Yeh Hum Nahi Jaante Magar jee nahin sakte tumhare binaa

 Humein Tumse Pyaar Kitna, Yeh Hum Nahi Jaante, Magar jee nahin sakte, tumhare bina,
---------------------------------------------------------------------
----------------------------------------------------------------------
Tumhein Koi Aur Dekhe to jalta Hai dil, Badhi Mushkilon Se Phir, Sambhalta Hai dil Kya Kya Jatan Karte Hain, Tumhe Kya Pata, 

Yeh Dil Beqaraar Kitna, Yeh Hum Nahi Jaante, Magar Jee Nahi Sakte, Tumhare Bina, 

Hume Tumse Pyaar Kitna, Yeh Hum Nahi Jaante, Magar Jee Nahi Sakte, Tumhare Bina, Hume Tumse Pyaar...
.
.
.
চলবে………......................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp