পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ, বিয়ে বাড়ি শোক বাড়ির মত মনে হচ্ছে। ড্রয়িং রুমে ভিড় জমিয়েছে তিশা ও জিসানের বাবা মা সহ অনেকে। তিশা মাথা নিচু করে আড়ষ্ট ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা ভয়, আর কিছুটা লজ্জায় আসাড় হয়ে পড়ছে।
বাড়ির পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে কোন আদালত বসেছে এখানে। সাক্ষী, প্রমাণ সব বহাল দশায়। বিচারকও উপস্থিত। কাঠগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে অপরাধি তিশা।
বাড়ির মেহমানদের এক একটা কটুক্তি প্রশ্নে তিশার চোখ দিয়ে নিরবে পানি পড়ছে। কিন্তু মুখ ফুটে তিশা কিছুই বলতে পাড়ছে না। কী বা বলবে! যেখানে নিজের বাবা মা আর বাড়ির সকল বড়ো-রা উপস্থিত। আর তাদের সামনেই ওকে কাল রাতে ও কোথায় ছিল? কার সাথে ছিল? এসব বলে জেরা করা হচ্ছে।
কাল পুরো রাত তিশা জিসানের সাথে ছিল। হয়তো সবাই যা মনে করছে তেমন কিছুই হয়নি ওদের মধ্যে। তবু কেউ বিশ্বাস করতে নারাজ। তিশার কথার কোনও দামই দিল না কেউ। হয়তো দেওয়ার মত নয়।
কাল রাতে তিশা ও জিসান দুজন ছাদেই ছিল। তিশা ঘুমিয়ে পড়লেও জিসান ঘুমায়নি। সারা রাতই জেগে কাটিয়ে দিল প্রেয়সীর মুখের দিকে তাকিয়ে।
ভোর রাতে জিসান তিশাকে কোলে করে ওর রুমে রেখে আসে। আর এসবই স্বচক্ষে দেখেছে একজন, সে হলো মিসেস সেলিনা অর্থাৎ আশার মা। তাই সকাল হতে না হতেই তার আহাজারি শুনে সবাই ড্রয়িংরুম এ হাজির হলো।
'জিসানকে প্রথম দেখায় তারও ভালো লেগেছিল।একতো ছেলে হ্যান্ডসাম, তার উপর ধনী। এত সোনায় সোহাগা………।
তার উপর নিজের মেয়ের মতিগতি দেখে বুঝতে পেরেছিল, আশা যে জিসানকে পছন্দ করে। কিন্তু জিসানের তিশার সাথে এত মেলামেশা একদমই চোখে সহ্য হচ্ছিল না। একটা সুযোগ খুঁজছিল তিশাকে আপাদমস্তক ধুয়ে দিতে। আর আজ পেয়েও গেল।'
তাছাড়া মিসেস সেলিনা ছলে বলে কৌশলে অনেক ভাবে জিসানের মাকে আশা আর জিসানের রিলেশনের কথা বলতে চেয়েও বলতে পারেনি। তার উপর কালকের ঘটনা।
তিশাকে বাঁচাবার জন্য জিসানের এমন ছটফটানিতে তার খুব বিরক্ত লাগল। কিন্ত তিশা নিশ্বাস নিতে পারছিল না বলে জিসান নিজে-ই তিশার ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে নিশ্বাস দেওয়ার ঘটনায় উনি যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন আরো।
ওখানে ওর বাবা মা, ভাই, বন্ধুবী সবাই ছিল, তাদের থেকে বেশি এই ছেলের এত কিসের দরদ। তা বুঝে উঠতে পারছে না মিসেস সেলিনা। এখন কী তিশার পানিতে পড়ার ঘটনাও তার ঢং মনে হচ্ছে।
মিসেস সেলিনা রুপকের মাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, 'আপা তোকে বলছিলাম না, এই মেয়ের চালচলন আমার একদম ঠিক মনে হচ্ছে না। তুইতো তখন আমার কথা কানেই নিলি না। এখন দেখ!'
আগে যদি জানতাম, তোদের অনুষ্ঠানে এধরনের মেয়ে আসবে, তাহলে আমার মেয়েকে নিয়ে কখনও আসতাম-ই না এমন পরিবেশে।
জিসানের মা, উত্তেজিত স্বরে শুধাল, 'এসব কী বলছেন আপনি, কারো সম্পর্কে না জেনে কিছু বলা একদম ঠিক না।'
দেখুন আপা, আমি না জেনে কিছুই বলছি না। এই মেয়েকে আমি নিজে বহুবার আপনার ছেলের সাথে ইটিসপিটিস করতে দেখেছি। আপনি-ই বলুন বড়ো ভাইয়ের বন্ধুর সাথে কিসের এত মেলামেশা।
তার উপর একটা যুবক ছেলে আর একটা যুবতী মেয়ে সারারাত বাহিরে কাটিয়ে আসবে। আর এসে বলবে আমরা তো শুধু চন্দ্রবিলাস করতে গিয়েছি আর কিছু না। এসব কথা কী আধো বিশ্বাসের যোগ্য বলুন! কী সম্পর্ক এদের? দেখেতো ভাই বোনের সম্পর্ক মনে হচ্ছে না, তাহলে?
মিসেস সেলিনার কথা গুলো এতক্ষন তিশার বাবা-মা নিশ্চুপ করে শুনছিল, কিন্তু মুখে কিছু বলেনি। কিন্তু এখন আর চুপ থাকতে পাড়ল না। উঠে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে যাবে তখন-ই দরজার সামনে জিসানের কথা শুনে থেমে গেল।
'জিসান তিশাকে রুমে রেখেই ফ্রেস হয়ে রায়হান ও রুপককে নিয়ে বাহিরে গিয়েছিল। কালকের পর সবাই চলে যাবে। এখানে আসার পর গ্রামটা দেখা হয়নি জিসানের একবারও। তাই ওদের নিয়ে গ্রাম দেখার জন্য সকাল সকালই বের হয়ে গেল। কিন্তু নিশির ফোনে বাড়ির দিকে রওনা দিল আবার।'
নিশি জিসানকে ফোন দিয়ে ফোনটা ওন করে রেখে দিল। আর ফোনের ওপর পাশ থেকে জিসান এতক্ষন কী কী হলো সব শুনতে পাচ্ছিল।
•
"জিসান ও রায়হান সদর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভাইকে দেখে তিশা দৌঁড়ে জড়িয়ে ধরল।এতক্ষনের চাপা কান্নাটা এখন আর আটকে রাখতে পারল না। কান্না করতে করতে হিচকি উঠে গেল তিশার একেবারে।"
রায়হান বোনের মাথায় হাত রেখে সান্তনা দিতে লাগল। রাগে রায়হানের চোখমুখ লাল হয়ে গেল। কিন্তু জিসান! জিসান ভাবনাহীন।
'জিসান ডাইনিং টেবিলের সামনের বেসিনে গিয়ে মুখটাতে পানির ঝাপটা দিতে লাগল। কালরাত না ঘুমানোর কারনে, মাথাটা এখন ম্যাথা করছে। জিসান মনে মনে ভাবছে, তার ঘুমানো দরকার। মিনিমাম ২ ঘন্টা হলেও!'
মুখ ধুয়ে ভেজা মুখ নিয়ে তিশার সামনে এসে দাঁড়াল। তিশার গায়ে জড়ানো ওড়নাটার একঅংশ দিয়ে মুখটা মুছতে লাগল। এটা দেখে তিশা সহ উপস্থিত সবাই হা হয়ে তাকিয়ে থাকল।
'আর মিসেস সেলিনা, আবারও জোরে জোরে চেচামেচি করতে লাগল, দেখলেন দুলাভাই(রুপকের বাবা)। কত-টা বেহায়া এ ছেলে। বড়ো ছোটো কিছু মানে না।'
মুখ মুছতে মুছতে জিসান বলে উঠল, কেন আন্টি এখানে বেহায়ার কি দেখলেন? আমি তো জাস্ট মুখটাই মুছলাম। কিসটিস তো করেনি। না-কী জড়িয়ে ধরেছি।
'জিসান!.....জিসানের বাবা রাগান্বিত স্বর শোনা গেল। ছেলের কান্ডে তিনি অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন।'
'সরি বাবা!.......শুরু কিন্তু উনিই করছে।'
'আর তাওহিদ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। এর পর এখানে কি হবে তা ওর ভালো করে জানা আছে।ভাইয়ের রগে রগে চেনা ওর। তাই নিরব দর্শক হিসেবে বসে আছে নেক্সট সিন দেখার জন্য।'
জিসানের বাবা উঠে চলে যাওয়ার সময় মিসেস সেলিনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আপনার যা জানার আমার ছেলের থেকে যেনে নিন। ও আপনার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেবে আসা করি।
তার পিছনে পিছনে জিসানের মা,ও তিশার বাবা মা ও চলে গেলেন। মিসেস সেলিনা সহ ড্রয়িংরুম এ উপস্থিত সবাই খুব অবাক হলো। তারা ভাবছে এ কেমন পরিবার। তাদের ছেলে মেয়ে এমন একটা কাজ করল অথচ শাসন করা তো দূরে থাক কিছুই বলল না।
আর তারাই বা কি বলবে, এতদিন যেটা কাউকে জানতে দেয়া হয়নি, এখন সবাই যেনে যাবে। কিন্তু ভাবার বিষয়, জিসান কিভাবে এটা তুলে ধরবে, কারণ জিসানের স্বভাব সম্পর্কে ওর ফ্যামিলির ধারনা আছে, বরং এখানে তারা উপস্থিত থাকলে তাদেরই লজ্জা পেতে হবে।
কারন তাদের ছেলে যে____তিশার সময় অনেকটা বেহায়া হয়ে যায়। তাই যে যার যার কাজে চলে গেল।তাদের জানার কোনও ইচ্ছা নেই তাদের ছেলে মেয়ে রাতভর কি করেছে?
"এদিক দিয়ে জিসান তিশাকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি সুরে জিজ্ঞেস করে,...কি রে এত চোখের পানি কোথায় পাস বলতো! তোকে তো মরুভূমিতে ছেড়ে দিলে সেখানে ছোটোখাটো একটা সমুদ্র বানিয়ে ফেলতে পারবি।"
জিসান! জাস্ট শেট আপ। দেখতে পাচ্ছিস না ওর অবস্থা। রায়হান বিরক্ত সুরে বলল।
'আমি কি দেখব? তুই দেখ ও কিভাবে গঙ্গা, যমুনা ছাড়ছে। মনে হয় জামাই মারা গিয়েছে। আরে আমি মারা গেলেও ও এত কান্না করবে না তোর বোন।
যতটা এখন কাঁদছে।'
এই ছেলে এই......! তুমি মারা গেলে ও কেন কাঁদবে, কি সম্পর্ক তোমাদের? এমন ভনিতা না করে তাড়াতাড়ি বলো?
বন্ধুর বোনের সাথে এমন অবাধ্য চলাফেরা করতে লজ্জা করে না। তোমার বোনের সাথে রায়হান যদি এমন করতো তাহলে....!
"এবার জিসান একটু রেগে গেল। তিশার হাতটা ধরে মিসেস সেলিনার সামনে এসে দাঁড় করাল, কি বললেন আপনি রায়হান কেন আমার বোনের সাথে এমন করবে। আর আমারি বা কেন লজ্জা পাওয়া দরকার বলে মনে করছেন?
ও আমার বউ, আর আমার বিবাহিত স্ত্রীর সাথে আমি কি করব, না করব, এখন কি আপনাকেও বলতে হবে।না-কী লাইভ দেখাতে হবে।
তিশার কোমড়টা আকড়ে ধরে নিজের সাথে চেপে ধরে কথাটা বলল জিসান। আর তিশা সে'তো এখনো চুপ।তিশা খুব ভালো করেই বুঝে ফেলেছে, আজ আর জিসানকে সত্য বলতে কেউ আটকাতে পারবে না।"
জিসানের মুখে এ কথা শুনে মিসেস সেলিনা, রুপকের বাবা-মা সহ সবাই অবাক। কি বলছে এসব! রুপকের বাবা-মা রায়হানের দিকে তাকায়, রায়হান চোখের ইশারায় বুঝায়, কথাটা সত্য।
'কি যা তা বলছ? নিজের পাপ লুকাবার জন্য এখন বিয়ের ঢোল বাজাচ্ছ। তোমার সাথে ওর আবার কবে বিয়ে হলো, তুমিতো আসলেই ২দিন আগে, তাহলে বিয়ে কখন হলো?'
রায়হান গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলল, চার বছর আগে। মানে জিসান যেদিন প্যারিস যাবে, সেদিনই ওদের বিয়ে হয়।সম্পর্কে এখন ওরা হ্যাসবেন্ড ওয়াইফ।কি বুঝলেন আন্টি। আর কোনও প্রশ্ন আছে আপনার।
"মিসেস সেলিনা সহ সবার মুখ এখন বন্ধ হয়ে গেল।এখন বুঝতে পারল সবাই, কেন জিসান ও তিশার পরিবার ওদেরকে কিছু বলল না।"
তিশার চাচা রায়হানের কাছে এসে, তাহলে এ কথা আমাদের কেনো বলিস নি। আমরা কি এত'টাই পর তোদের।
" না চাচা,আসলে তখন পরিস্থিতিই এমন ছিল। আর তিশার শর্ত ছিল এই বিয়ের কথা আপাতত কাউকে না বলতে।
তাছাড়া তিশা তখন খুব ছোটো ছিল, আর আমরাও ভেবে দেখলাম এটাই ঠিক! তাই কাউকে কিছুই বলেনি।আমরা চেয়েছিলাম জিসান আসলে একেবারে ধুমধাম আয়োজন করে তোমাদের সবার আশির্বাদে আবার ওদের বিয়ে দেব। আর কিছুই না। আজও বলতে চাইনি, কিন্ত আজও পরিস্থিতি এমন হলো যে না বলে উপায় নেই। বিনা কারণে আমার বোনের সম্পর্কে আর কোনও আজেবাজে কথা আমি মোটেও টলেরেট করব না। এর পর কিছু হলে আমাকে দোষ দিতে পারবেন না চাচা। রায়হান পানিটা খেয়ে চলে গেল।"
•
জিসানকে তিশার সব কাজিনরা গিড়ে ধরেছে। আরে জিজু, আপনি এতদিন কই ছিলেন? আগে কেন বললেন না। আপনি আমাদের জিজু হোন।"
কেন বললে কি হতো! তিশার দিকে আর চোখে তাকিয়ে, ঠোঁটের কিনারায় বাঁকা হাসি নিয়ে জিজ্ঞেস করল।
' আবার জিগায়, এতদিন জামাই আদর থেকে বঞ্চিত হতে হতো না আপনার। আর এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেমও করতে হতো না নিজের বউয়ের সাথে, আমরাই সুযোগ করে দিতাম।'
"তিশার কাজিনদের কথা শুনে জিসান হেসে উঠল।কিন্তু তিশা! তিশার মাথাটা গরম হয়ে যাচ্ছে। এতক্ষন মিসেস সেলিনার কথায়ও এতো মেজাজ গরম হয়নি, যতটা জিসানের ঐ বাঁকা হাসির পেছনে কারণটার জন্য হচ্ছে এখন।
এতক্ষন ধরে এত কিছু সহ্য করে কি লাভ হলো। সত্যটা বলবে না বলেই'তো চুপ ছিলাম। কিন্তু এই জিসান এসে সব আশা আমার ভেনিস করে ফেললোল।"
জিসান থেকে বাঁচা এখন সহজ হবে না। আগে উনার আমার রিলেশনের কথা কেউ জানতো বলে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতো। কিন্ত এখন তো মনে হয় গ্রিনকার্ড পেয়ে গিয়েছে। সব বেহায়াপনার লিমিট ক্রশ করে দেবে। আর ভুগতে হবে আমাকে উনার অত্যাচারে।আল্লাহ বাঁচাও আমায়। কেন এই লোকটাকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিলে।
'জিসান ভালো করেই বুঝতে পারছে তিশা মনে মনে কি ভাবছে। তাই তিশার কাজিনদের উদ্দেশ্য করে বলে,
' সমস্যা নেই আমার কিউটি শালীরা। তখন দিতে পারনি তো কি হয়েছে এখন দিবে।'
জিসানের কথায় তিশার কাজিনরা মুখ চেপে একটা হাসি দিল, আর তিশা আবাক!
"শোনও এখন তোমরা আমার একটা উপকার কর, আমি ঘুমাব। মিনিমাম ২ ঘন্টা,তোমরা জাস্ট খেয়াল রেখ, এই দু'ঘন্টায় আমাকে যাতে কেউ ডিস্টার্ব না করে ওকে। তাহলে আমি প্রমেজ করছি কাল তোমাদের আইস্ক্রিম পার্টি দেবো।
সবাই একাধারে চিল্লিয়ে উঠল। ইয়া হুহুহু......বলে। বেষ্ট জিজু আমাদের।"
জিসান ওদের সবার সামনে থেকে তিশার হাতটা ধরে তিশার কাজিনদের চোখ টিপ মেরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে গেল। সবাই ওওওওও করে পিঞ্চ মাড়ল।
আর এদিক দিয়ে তিশা জিসানের কাছ থেকে নিজের হাতটা ছুটাতে ব্যস্ত।
'আরে আমাকে এমন আটার বস্তার মত কেন টানছেন।কেউ দেখলে কি মনে করবে?'
কেউ কিছুই ভাববে না, সবার মুখে সুপার গ্লু মেরে দেয়া হয়েছে। আর আমার বউকে আমি যেখানে খুশি সেখানে নিয়ে যাব কার বাপের কি যায়?আর কি বললি তুই!
জিসান তিশাকে রুমের ভেতর এনে দরজাটা লক করে দিল। পেছনে গুড়ে তাকাল তিশার পানে। বলল, 'সিরিয়াসলি! তুই আটার বস্তা। আয় তো দেখি, এটা বলেই তিশাকে কোলে তুলে নিল।'
'আ করছেন কি, নামান আমাকে।'
কেন? কী হয়েছে? একটা ভ্রু উঁচু করে এমন ভাবে জিজ্ঞেস করল, মনে হয় কিছু বুঝে না জিসান। নিরীহ প্রাণী সে।
কেন মানে কি! নামান আমাকে, এভাবে কোলে তুলার কারন কি?
'দেখতে হবে না আমি আমার বউটার ভার সামলাতে পারবনি। তাই চেক করছি।'
মানে কি? আমি কিন্তু একদমই মোটা না।
তাই তো দেখছি, না খেয়ে, না খেয়ে যে ফিগার বানিয়েছিস, উফ! এতে তো আমি আরো পাগল হয়ে যাব। জিসান তিশাকে এক চোখ টিপ মেরে।
জিসানের এমন পিঞ্চ মারা কথায় তিশার গা জ্বলে যাচ্ছে। তিশা জিসানের কোলেই ছটফটাতে লাগল নামার জন্য। তিশার এসব দেখে এবার জিসান রেগে গেল।
'আর একবার যদি এমন ব্যাঙ এর মত লাফালাফি করবি, তাহলে সোজা বারিন্দা দিয়ে নিচে ফেলে দেব।তখন কিন্তু হাত পা ভেঙে বিছানায় পরে থাকতে হবে, আমার অবশ্য সমস্যা নেই। আমি তখন কোলে করে তকে সব জায়গায় নিয়ে যাব। কি বলিস ফেলব?'
জিসানের কথা শুনে তিশা ভয়ে জিসানের গলাটা জরিয়ে ধরে মাথা নেড়ে না বলল।
-জিসান তিশাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলল, আমি একটু কনফিউজড এ আছি। জানিস!
'তিশা ভ্রুটা কুঁচকিয়ে, বিশাল এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন আনল মুখে।'
জিসান তিশার একদম মুখের সামনে এসে জিজ্ঞেস করল, তুই কি আমার ভার নিতে পারবি। আমি খুব চিন্তিতো এটা নিয়ে। জিসান তিশার দিকে একবার ভালো করে তাকিয়ে, তিশার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল। তোকে বেশি করে খেয়েদেয়ে আরো একটি গোলুমলু করে তুলব, তখন হয়তো সমস্যা হবে না, কি বলিস।
জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে দেখলো,তিশার মুখে এখনো সেই প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
জিসান দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে বলল, তোকে বুঝানো আর কলা গাছে দড়ি দিয়ে মরা একই কথা। বাদ দে!
শোন আমি ঘুমাব, আমার মাথাটা টিপতে থাক। আর একটা কথা (দাঁতেদাঁত চেপে)খবরদার এখান থেকে এক পাও নড়বি না। আর উঠে তোকে না পেলে, খুন করে ফেলব আমি। বুঝলি!
'জিসানের এধরনের কথায়। তিশার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়।'
'জিসান তিশার কলে মাথাটা রেখে কোমড়টা জড়িয়ে পেটের মধ্যে একটা কিস করে______এতে তিশা কিছুটা কেঁপে উঠে, জিসান আরো একটু টাইট করে ধরে জড়িয়ে ধরে।
জিসানকে নিজের কাছ থেকে একচুলও সরাতে না পেরে, মনে মনে ভাবে, শুরু হয়ে....গিয়েছে!'
আর এদিক দিয়ে তিশা জিসানের মাথা টিপতে টিপতে চার বছর আগের ভাবনায় ডুব দিল।
.
.
.
চলবে……….....................................................