-কে ছেলেটা?
-আমার ক্লাসমেট,রুশান নাম।
-মন খারাপ কেন?কিছু হয়েছে?
-না,তেমন কিছু না।কিন্তু তুমি দেখলে কীভাবে রুশানকে?
-আমি বারান্দায় অপেক্ষা করছিলাম তোর জন্য।আজকে আসতে বেশ দেরি হয়েছে,তাই চিন্তা হচ্ছিলো।
-ফোন দিতে?
-তুই ধরতি না।
-বুঝলে কীভাবে ধরতাম না?
-কারণ তোর বাবার ফোনই ধরিস নাই...আঙ্কেল ফোন দিয়েছিলো একটু আগে।
ভিনা জুতা খুলে শেলফে রেখে সোফায় বসলো।এখন সোহেলকে ফোন দিবে,বাসা থেকে দূরে থাকার প্রথম দিকেই এমন সন্ধ্যা করে ফিরেছে,ব্যাপারটা সোহেল সহজভাবে নাও নিতে পারে।
-আমি এখনি ফোন দিবো।ক্লাস চলার সময় ফোন সাইলেন্ট করে রাখি,পরে আর লাউডে দিতে মনে থাকে না।
-বলিস মাত্র ঘুম থেকে উঠেছিস।আমি আঙ্কেলকে বলেছি তুই বাসায় এসেছিস বিকেলে,পরে ঘুমিয়ে গিয়েছিস ক্লান্ত হয়ে।
ভিনা অবাক হলো।কয়দিনেরই বা পরিচয় প্রিতির সাথে,কিন্তু বড় বোন যেমন ছোটদের শাসনের হাত দিয়ে বাঁচিয়ে দেয়,ঠিক সেইভাবে আজকে প্রিতি ভিনাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।ক্ষণিকের জন্য ভিনার মনে হলো,মায়ের সাথে একজন বড় বোনের ও অভাব ছিলো জীবনে।আজকে একটা বড় বোন থাকলেও জীবন এত কঠিন আর অস্বাভাবিক হতো না।অবশ্য দুঃখের সেই অনুভূতি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না প্রিতির দিকে তাকিয়ে।
ভিনা ড্রেস চেঞ্জ করে না খেয়ে শুয়ে পরলো।প্রিতি এক গ্লাস ট্যাং বানিয়ে ভিনার মাথার কাছে বসলো।
-কিছু খাবি না?
-না আপু,শরীর ভালো লাগছে না।
-শরীর ভালো নেই নাকি মন?
-দুটোই।
-কিছু হয়েছে?
-তেমন কিছু না।
-কাউকে মনে পরছে?
ভিনা চুপ করে আছে।সত্যি বলতে যাবিরের কথা খুব মনে পরছে।
-এমন কাউকে মনে পরছে যাকে মনে করতে চাস না?
-হুমম...
প্রিতি ভিনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
-মন খারাপ করিস না।মাঝে মাঝে কষ্ট পাওয়া ভালো।যত কষ্ট পাবি,তত পাপ কাটবে।
-এটা সত্যি?
-আমার বাবা বলতো।যখন ছোটবেলায় ভীষণ কষ্ট পেতাম,বাবা এই কথা বলে আমার মন ভোলাতো।
-তাহলে কষ্ট পাওয়া ভালো?
-হ্যাঁ ভালো।কিন্তু অহেতুক কষ্ট পাওয়া বোকামি।
-কষ্ট তো কষ্টই আপু,এটার আবার ঠিক বেঠিক আছে?
-তা না অবশ্য।আচ্ছা,একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
-অবশ্যই!প্রশ্ন করতে হয় আবার?
-যাবিরের সাথে কতদিন হলো তোর ছাড়াছাড়ি হয়েছে?
-প্রায় দুই বছর।
-অনেকদিন হয়ে গেছে তো।মন খারাপ করিস কেন তাহলে?
-তুমি বুঝলে কীভাবে আমি এই কারণেই মন খারাপ করেছি?
-ধরন দেখে।বলেছি না একা থেকে থেকে এখন বেশ কিছু অদ্ভুত ব্যাপার আয়ত্ত্বে এসেছে?আমি এখন মন খারাপের ধরণ বুঝতে পারি।
-কীভাবে বুঝো?
-ব্যাখ্যা তো দিতে পারবো না।এটা কোনো ফ্যাক্ট না।এটা এক ধরনের অনুভূতি।
-শুধু একা থাকার জন্যই এই বিশেষ গুণ তুমি আয়ত্ত্বে এনেছো?
-না,একা তো তুইও অনেক থেকেছিস।এটা আসলে গুণ না।এটা এক ধরনের অভিশাপ।
-অভিশাপ!কীভাবে?
-হ্যাঁ অভিশাপ।কারণ অনেক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাওয়া লাগে।সুখী মানুষের এই বৈশিষ্ট্য থাকে না।
-এটা ফ্যাক্ট?
-না,এটাও উপলব্ধি।
-ধরো কেউ যদি খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেয়ে সুখী হয়?সেও কি অন্যের মন খারাপ ধরতে পারবে না?
-জানি না...আমি কোনোদিন সুখী হলে অবশ্যই বলতে পারবো।
-তুমি সুখী হবে একদিন।
প্রিতি অমায়িক হাসি দিয়ে জুস সাইড টেবিলে রেখে চলে গেলো।যাওয়ার আগে দরজা লক করে গেলো,ভিনার মনে হলো প্রিতি যেন দুঃখবিলাসের পরিবেশ করে দিয়ে গেছে।
ভিনা পাশ ফিরে শুয়ে পরলো।আজকে রুশানের সাথে কথা বলতে গিয়ে যাবিরের প্রসঙ্গ এসে পরেছে।
যাবির.....
যতদিন ভিনা বেঁচে থাকবে ততদিন এই নামে ওর জীবনে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকবে।হোক ভালোবাসায়,হোক ঘৃণায়,যাবিরের অস্তিত্ব ভিনার জীবনে ধ্রুব থাকবে।যাবিরের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত ভিনার মনে আছে,ভুলেনি কিছুই।
যাবিরের সাথে কাটানো সেই দুই বছরে ঘটা কিছু কিছু ব্যাপার আজও ভাবায় ভিনাকে। জেরিন যেদিন প্রথম ফোন দিয়েছিলো,সেদিন বলেছিলো,
'যাবির তোমাকে ইউজ করে ছুড়ে ফেলে দিবে।আবেগ এমনই জিনিস,কখন ভুল হয়ে যাবে বুঝবে না।'
জেরিনকে ঘৃণা করলেও ভিনা আজকে টের পাচ্ছে,এই মেয়ে ভুল কিছু বলেনি।আবেগের বশে ঠিকি ভুল করেছে ভিনা,আর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হিসেবে যাবির ছেড়ে চলেও গেছে।কিন্তু জেরিনকেও তো ব্যবহার করেছিলো,তাহলে কেন জেরিনের কাছেই ফিরে গেলো?ছেলেরা কি নীরব ভালোবাসা বুঝে না?নাকি তারা আত্মসম্মানহীন না হওয়া পর্যন্ত সেই মানুষকে গোণায় ধরেনা?
কিন্তু যাবিরকে কখনোই এমন মনে হয়নি।দুই বছরের সংক্ষিপ্ত এই পথচলায় ভিনার চেয়ে যাবিরের প্রচেষ্টা ছিলো বেশি।যাবিরই এগিয়ে এসে গুছিয়ে দিয়েছিলো সব,তবু কেন এমন করলো?এটা কী কোনো বিকৃত মানুষের নোংরা মনোজাগতিক খেলার নমুনা ছিলো মাত্র?
ভিনা কথা বলত কম,দেখাও করত কম।সব আবেগ, সব কথা জমিয়ে রেখেছিলো 'ভবিষ্যৎ' নামের এক অনিশ্চিত কালের জন্য।কত রাত অসমাপ্ত রেখেই কথা শেষ করেছিলো।বাকী জীবনের জন্য কথা জমিয়ে রেখে এখন দেখলো বলার মত মানুষই নেই।কী যে অদ্ভুত এই জীবন,কী যে অদ্ভুত!
যাবির একদিন কথা দিয়েছিলো,ভিনার কাছ থেকে প্রাপ্য অধিকার আদায় করে নিবে সময়মত।সেই সময় কি পেরিয়ে এসেছে?নাকি.....সেই সময় আসেই নি?
নিজের অবাস্তব চিন্তাভাবনায় নিজেই আশ্চর্য হলো ভিনা।ভালোবাসার কত রূপ থাকে।ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে সবচেয়ে নির্মম রূপটাই দেখতে হয়েছে।
কাছের মানুষ গুলো বলছে নতুন জীবন শুরু করতে। কিন্তু জীবন তো একটাই,প্রতিটা ঘটনা জীবনের একেকটা পর্ব।সব পর্ব মিলিয়ে পুরো জীবন।নতুন জীবন শুরু করা না গেলেও,নতুন পর্ব শুরু করা যেতে পারে।সেই পর্বগুলোয় কে থাকবে,কীভাবে থাকবে সেটা কিছুটা নিজের হাতে,কিছুটা ভাগ্যের।সামনের এই পর্বগুলো কত সুন্দর হবে,জানে না ভিনা।জানতে চায় ও না।ঐত,কেউ একজন বলেছিলো,অজানার আলাদা সৌন্দর্য্য থাকে।
অন্ধকারে আলো জ্বলে উঠলো ফোনের।রুশান ফোন দিয়েছে।রুশানের সামনেই ভিনা বিল্ডিং এ ঢুকেছে,তার মানে এখন অযথাই ফোন দিয়েছে কথা বলতে।ফোন পাশে রেখে আবার স্মৃতিচারণে ডুবে গেলো,হটাৎ মনে পরলো,যাবির একদিন বলেছিলো রুশান ওকে পছন্দ করে।সেটা কয়েক বছর আগের ঘটনা।যাবির এটা কিসের ভিত্তিতে বলেছিলো,এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না।স্কুল,কলেজ ভার্সিটি, সব জায়গাতেই ভিনা আত্মকেন্দ্রিক স্বল্পভাষী হিসেবে পরিচিত ছিলো।পোষাকি ভাষায় এর নাম মুডি।সারাজীবনে বন্ধুর সংখ্যা ছিলো একদমই সীমিত। আবার যারা ছিলো,তারা নেই এখন।ভিনা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলো,মানুষ হিসেবে ওর সাথে মিশা সহজ না,তাই ওকে সবাই এড়িয়ে চলে।কিন্তু রুশান এত রুক্ষতার মধ্যেও ভিনাকে খুঁজে ফিরছে।পৃথিবীতে সব ঘটনার পেছনে কোনো কারণ থাকে।রুশান.....সামনের পর্বগুলোয় কী ভূমিকায় থাকছে তাহলে?
••••••••••
ভিনাকে পৌঁছে দিয়ে রুশান চলে আসলো সায়বার বাসায়।গেট খুলেই সায়বাকে দেখে মনে হলো,মেজাজ ভালোই গরম হয়ে আছে।
-কিছু হয়েছে খাম্মি?
-তুই কী করছিস বলবি আমাকে?তোর মা আমার মাথা পাগল করে ফেলতেসে।আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামায পরা মানুষ,মিথ্যা বলতে জান বের যায় আমার।কিন্তু তোর কারণে এখন আমার জেবার কাছে মিথ্যা বলা লাগতেসে।কেন ফেলিস আমাকে বিপদে?তোর মাকে তুই চিনিস না?
একসাথে কথাগুলো বলে সায়বা দম নিলেন।তার ফর্সা চেহারা লাল হয়ে গেছে।
-মা আবার কী করেছে?
-কী করে নাই বল,প্রতিদিন একশবার ফোন দিবে তোর কথা জানার জন্য।তোর খালু বিরক্ত হয়ে গেছে এসব দেখে।
-কী বলে মা?
-তুই নাকি কোন এক ফ্রেন্ডের জন্য দুইদিন ঘরে ফিরিস নাই,কথা কি সত্যি?
-ঘরে ফিরি নাই কথা সত্যি,ঐযে একদিন তোমার কাছে আসলাম,তখন ও ঐ ফ্রেন্ডের প্রয়োজনেই বাইরে ছিলাম।হস্পিটালে ছিলো ও।
-কে এই ফ্রেন্ড?ছেলে না মেয়ে?
-জানি না।এত প্রশ্ন করো না,প্লিজ।সময় হলে জানাবো আমি।
-তার মানে মেয়ে।ঐ মেয়ের সাথে কয়দিনের সম্পর্ক?
-কিসের সম্পর্ক? কী বলো এসব?
-একদম চালাকি করবি না।ভার্সিটিতে উঠে নিজেরে অনেক বড় মনে হয়?
-দেখো এসব কিছুই না।মেয়েটাকে আমি জাস্ট চিনি।
-শুধু চিনিস?চেনার লেজ ধরে হস্পিটালে থাকতে হবে তাই?
-অনেকদিন ধরে চিনি।
-কতদিন?
-চার বছর....
-হায় আল্লাহ!চার বছর ধরে চিনিস আর আমি জানি না?তোর মা টের পায় নাই কিছু?
-আজব তো।কিছু ছিলো নাকি আমাদের মধ্যে যে টের পাবে?একটা ইংলিশ কোচিং এ একসাথে পড়তাম।এরপর আর দেখাই হয় নাই মাঝখানে তিন বছর।
-নাম কী মেয়ের?
-বলবো না।
-চড় মেরে দাঁত ফেলে দিবো।চুপচাপ বল,মেয়ের নাম কী?
-তুমি মা কে জানায়ে দিবা।দেখো,আমি রিস্ক নিবো না।সময় হলে নিজেই জানবা।
-তুই ঐ মেয়েকে বিয়ে করবি?
-হ্যাঁ। বিয়ে করবো।
-খুব সুন্দর!লাটসাহেব বউ পছন্দ করে রেখে দিসে আর উনার মা মনে করে ছেলে এখনো এত ছোট যে দুনিয়া চেনে না।
-খাম্মি,আর এই টপিকে কথা না।খাবার দাও।
-একটু পরে তোর খালু বসবে।উনার সাথে বস,খুশি হয়ে যাবে।
-ঠিকাছে।আরেকটা কথা....
-বল....
-হাতে একদম টাকা নেই।মা টাকা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
-কী মনে করিস তোর মা টের পায় নাই যে আমি টাকা দেই?ফোন করে মানা করে দিয়েছে তোকে টাকা দিতে।আমি কথা দিয়েছি ওকে।
রুশান মলিন চেহারা নিয়ে বসে রইলো।জেবা যেইভাবে রশি টেনে ধরছে,এই রশি ছিড়তে বেশিদিন লাগবে না।
পাশের রুম থেকে কাইফ এসে বসলো পাশে।
-কী অবস্থা ব্রো?চেহারা দেখে মনে হচ্ছে খালামণি টাইট দিচ্ছে।
রুশান ভ্রু কুচকে তাকালো।ইচ্ছা করছে থাপ্পড় মেরে নাক মুখ সমান করে দিতে।স্ট্রিক্ট প্যারেন্ট থাকার কষ্ট এই ছেলে জীবনেও বুঝবে না।সায়বা আর জেবা সম্পূর্ণ বিপরীত স্বভাবের মানুষ।সায়বা কোনোদিন কাইফের প্রেমের কথা শুনলে ঐ মেয়েকে নিজের মেয়ে ভেবে কোলে তুলে রাখবে।উল্টো রেহান রুশানের প্রেম নিয়ে উনার মাথায় চিন্তা থাকে বেশি।
এই ছেলের কপাল ও বলতে হবে।
-তোর কী এত?
-আই ক্যান ফিল ইউ ব্রাদার।
রুশান অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলো।ঠিক তখনি যাবিরের কথা মনে পরলো।এই কাইফের টিউশনিই যাবির করত।
-কাইফ,একটা কথা বল তো
-বলো ব্রাদার।
-তুই যে পড়তি না?যাবির নামের এক টিউটরের কাছে।
-হ্যাঁ, তুমিই তো কাহিনী করে টিউশন ঠিক করে দিয়েছিলে।তোমার ও নাকি টিচার ছিলো?
-হ্যাঁ,ওর ব্যাপারেই কথা ছিলো
-যেই কাহিনী করেছিলা!আই স্টিল রিমেম্বার।কিন্তু যত যাই হোক,উনি অনেক ভালো পড়াতো।ইচ্ছা ছিলো ও লেভেলস-এও পড়বো,পারলাম না।
-উনি টিউশনি ছেড়েছিলো কেন জানিস?
-রিলেশনশিপ নিয়ে প্রবলেম হয়েছিলো।
-কী প্রবলেম?
-আমি এক্সাক্টলি জানি না।উনি প্রায় ফোনে কথা বলতো,অনেকদিন পরে যেয়ে যখন জিজ্ঞেস করেছি,তখন বলেছে সম্পর্কে আছে।
-তুই না একদিন বলেছিলি কান্না করেছিলো শেষদিন,না এরকম কিছু?
-হ্যাঁ, লাস্ট দিন অনেক বেশি আপসেট ছিলো।হাতে ব্যান্ডেজ ছিলো।চোখ ফোলা ছিলো।আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কী হয়েছে,তখন বলেছিলো উনার রিলেশন নাকি ভেঙ্গে গেছে।সেদিন একটা মেয়েও এসেছিলো আমাদের বাসায়।
-মেয়ে?কোন মেয়ে?
-চিনি না তো।
রুশান ভয় পেলো।মেয়েটা কি ভিনা?যদি ভিনা এসে থাকে,তাহলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যা হবে এটা নিয়ে।সায়বাও এটা ভালোমতো নিবে না।
রুশান মোবাইল বের করে mon ange veena নামের একটা ফোল্ডার থেকে ভিনার ছবি বের করে দেখালো-
-দেখ তো,এই মেয়ে নাকি?
-আরে না না।ঐটা অন্য মেয়ে ছিলো।
রুশান হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
-বাই দা ওয়ে,এটা কে?
-তোর ভাবি।
-রিয়েলি?এটা কি সেইই যার কথা যাবির ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করতে বলতা?
-তোর এত কী রে?
-ব্রো,যাবির ভাইয়ার এক্সের নাম কিন্তু ভিনা ছিলো।
-ভিনা নামের চৌদ্দজন আছে দুনিয়ায়।আর তুই আমার ফোনে তাকাস কেন?
-সত্যি করে বলো না,দুইজন কী এক?
-হ্যাঁ।ডোন্ট বি সো মিন এন্ড জাজমেন্টাল।মুখ বন্ধ রাখবি।
রুশান কথাটা বলে উঠে চলে গেলো খেতে।খাওয়া শেষে যখন বের হবে সায়বা দরজার পাশে ডেকে নিয়ে হাতে দুই হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললো-
'তোর কারণে জাহান্নামি হবো আমি'
রুশান প্রশস্ত এক হাসি দিয়ে বের হয়ে গেলো।সেই হাসি দেখে সায়বার রাগ উবে গেলো মুহূর্তেই।রুশানকে বিদায় দিয়ে সায়বা কাইফের রুমে গেলেন
-কাইফ,রুশান তোকে কী বলেছে এতক্ষণ বল তো বাচ্চা।
-রুশান ইজ ইন লাভ নাও মা।
-হ্যাঁ?মেয়ে কে?
-রিমেম্বার যাবির ভাইয়া?উনার এক্স গার্লফ্রেন্ডের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
-এক্স মানে কী?
-মানে প্রাক্তন প্রেমিকা।
-তুই জানলি কীভাবে?
-আমি নিজে আজকে গ্যালারি দেখলাম।ভিনা নামে ছবি সেভ করা ছিলো।যাবির ভাইয়ার প্রেমিকার নাম ও ভিনা ছিলো।আমার শিওর যে দুইজনই এক মানুষ কারণ এই রুশান ভাই যাবির ভাইয়ার থেকে ভিনার খোঁজ নেয়ার জন্য আমাকে বেশ কয়বার বলেছিলো।সো,দেয়ার ইজ নো ডাউট,ভিনা যে সেম পার্সন।
-এত ইংলিশ বলা বন্ধ কর।যা পড়।
সায়বা দুশ্চিন্তায় পরে গেলো।কারণ জেবা এ সম্পর্ক কখনো মানবে না,কখনো না।
.
.
.
চলবে...................................................................