-- রুশানের ঐ মেয়ে বন্ধুর নাম যেন কী ছিলো?ঐযে সেদিন রাতে বাসায় এসেছিলো যে?
-- ভিনা খুব সম্ভবত। কেন?
-- ভিনাকে কোনোভাবে খবর দেয়া যায়?
-- ভালো বন্ধু হলে এমনিই আসতো,হয়ত সেরকম বন্ডিং নেই।
-- রুশানের কোনো বন্ধুই ওকে দেখতে আসেনি এ সময়ে।নট এ সিঙ্গেল ওয়ান।অথচ ফ্রেন্ডদের কত পার্টি থাকতো সময়ে-অসময়ে।
-- ইয়াং জেনারেশন এমনই। কিন্তু রুশান যেভাবে আলাদা হয়ে গেছে সবার থেকে,কে জানবে ওর খবর?তার চেয়েও বড় কথা তুমি কখনোই রুশানের কোনো বন্ধুকে বাড়ি পর্যন্ত আসতে দেওনি।কেইবা জানে ও কোথায় আছে?
জেবা চুপ হয়ে গেলেন।এতক্ষণ ফারুক সাহেবের সাথে যে আলোচনা হলো তার ইতি টানতে হলো নিরুত্তর ভাবেই।আসলেই ছোট থেকে রেহান রুশানের কোনো বন্ধুকেই বাড়ি পর্যন্ত আসার অনুমতি দেননি তিনি।এখন বুঝতে পারছেন বড় ভুল করেছেন।তার ছেলেগুলো একাকীত্বের বেড়াজালে বড় হয়েছে। এখন এই দুঃসময়ে একজন বন্ধুও খোঁজ নেয়নি রুশানের,হতে পারে এমন কোনো বন্ধুই নেই ওর।কত ভালো হতো যদি এমন কেউ থাকতো,অন্তত জানা যেত কী কারণে এই অবস্থা তার ছেলের।নিজেকে এত বড় অপরাধী মনে হচ্ছে যে ক্ষমা করতে পারছেন না।কিসের এত অহংকার?কিসের এত আত্মসম্মান?সবচেয়ে বড় প্রশ্ন,কাদের সাথে এগুলো দেখিয়েছেন?
নাহ্!সহ্য হচ্ছে না এসব কিছু।রেহান রুশান একি মায়ের পেটের দুই ভাই হলেও দুইজনের স্বভাব আচার আচরণ অভ্যাস সব ভিন্ন।একিভাবে ওদের সহ্যক্ষমতা এবং ম্যাচিওরিটিও এক না।রেহান ছোট থেকেই চুপচাপ,সহ্যশক্তি অনেক বেশি এবং চাপা স্বভাবের।এদিকে রুশান হই হল্লা পছন্দ করে,যা মনে আসবে তাই বলবে,কোনো লুকো ছাপা নেই এবং মাত্রাতিরিক্ত ইমোশনাল।রেহান জীবনে অনেক বড় ধাক্কা সামলে নিয়েছে,কিন্তু রুশান পারবে না।জেবা দুই ছেলের সাথে একি কাঠিন্য দেখাতে পারবেন না।এখনই রুশানকে সামলে না নিলে,রুশান জীবনে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।জেবা নিরুপায় হয়ে গেছেন,জীবনের এই সময়ে সন্তান ছাড়া আর কে আছে তার?জেবা নিজের তৈরি ইগোর দেয়ার ভেঙে প্রিতিকে ফোন দিলেন।ভেজা কন্ঠে জানালেন।
-- আজকে জলদিই এসো এ বাসায়।
প্রিতি বাসায় যখন আসলো,জেবা তখন অঘোরে ঘুমাচ্ছেন।ফারুক সাহেব বারান্দায় ছিলেন,প্রিতিকে দেখেই দ্রুত পায়ে হেঁটে আসলেন।
-- কেমন আছো মা?
-- এইতো ভালো বাবা।আপনি কেমন আছেন?
-- ভালো কীভাবে থাকবো?রুশানের অবস্থা তো ভালো হচ্ছেনা,হেল্পলেস লাগছে।
-- চিন্তা করবেন না বাবা।আপনারো কিন্তু শরীর ভালো নেই।এমনিই তো মার এই অবস্থা,এখন আপনিও যদি ভেঙে পরেন,কীভাবে চলবে।
-- তারপর....ভিনা কি রাজি হয়েছে আসার জন্য?
-- না বাবা।অনেকবার বলেছি।
-- আসলে....
-- কিছু বলতে চাচ্ছেন?বলে ফেলুন।
-- আমি যতদূর জানতাম রুশান ভিনাকে পছন্দ করতো।যদিও খোলাখুলি কথা হয়নি এ ব্যাপারে।অনেকদিন ধরে তোমাকে জিজ্ঞেস করবো ভেবেও আর করা হয়নি।কীভাবে বলবো বুঝতে পারছিলাম না।আফটার অল ভিনা তোমার বোন।
প্রিতি দুশ্চিন্তায় পরে গেলো।রেহান কখনো জানায়নি যে ফারুক সাহেব ভিনা এবং রুশানের ব্যাপারটা জানে।রুশান কি কোনোভাবে মাহভিনের ব্যাপারটা জেনে গেছে?নাকি ভিনা রুশানকে যাবিরের ব্যাপারে জানিয়েছে দেখে রুশান এমন ভেঙে পরেছে।সমস্যা হলো কেউই কোনো কথা বলছে না।কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে বিষয়টা জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।
-- প্রিতি?কিছু ভাবছো?
-- না মানে বাবা,আসলে রুশানের কথা ভাবছিলাম।আমি..আমি ভিনার সাথে কথা বলবো এ ব্যাপারে।
-- হ্যাঁ মা,দেখো কী করা যায়।ফারজানার সমস্যায় মেয়েটা যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলো,এখনো যদি ওভাবে সব ঠিক করে দিতে পারতো....
প্রিতি মাথা নিচু করে রাখলো,উত্তর দিলো না কোনো।ভিনার সাথে মাঝখানে অনেক রাগারাগি করেছে,কথা বন্ধ রেখেছে,এমনকি ভিনা নিজেই চলে গিয়েছিলো ওর বাসায়।কিন্তু কোনোভাবেই কথা বের করতে পারেনি প্রিতি।এটা নিশ্চিত যে ভিনা এবং রুশান দুইজনই কোনো কথা লুকাচ্ছে।রেহান নিজেও বিষয়টা আন্দাজ করতে পেরেছে,তবুও এসব বিষয়ে ইন্টারফেয়ার করেনি।সে নিজের চাকরি এবং সংসার নিয়েই ব্যস্ত,অবশ্য প্রিতিকে এ ব্যাপার থেকে দূরে থাকতে বলেনি।বরং রেহান নিজেই বিশ্বাস করে প্রিতিই রুশানকে ঠিক করতে পারবে।কিছু সমস্যার সমাধান মেয়েরাই করতে পারে,অনেক জ্ঞানী গুণী পুরুষের পক্ষেও সেটা সম্ভব না।
জেবা ঘুম থেকে উঠে খাটের কোণায় বসে আছেন।সন্ধ্যার হওয়ার আগের এই সময়ে অকারণেই বিষন্নতা জেঁকে বসে।হুট করেই এখন মনে হচ্ছে তার ভাই মেজবা একদিন ও ফোন দিয়ে রুশানের খোঁজ নেননি।এমনকি সায়বার কাছ থেকে রেহানের বিয়ের খবর পাওয়ার জেবাকেই উল্টো দুইটা কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন।কথা সারমর্ম হলো জেবা হাজার চেষ্টা করেও নিজের ছেলেদের মানুষ করতে পারেননি।তার আদরের মেয়ে সুরাইয়া জেবাকে মা বলে ডাকতো,কতো আশা ছিলো ঘরের মেয়েকে ঘরের মাঝেই রাখবেন,সেটা আর হলো না।এরপর রুশানের বিষয় জানানোর পর ও কোনো ভ্রুক্ষেপ করেননি মেজবা।শুধু বলেছিলেন-পুরো জীবনই বৃথা।
শুরুতে প্রচন্ড রাগ লাগলেও,এখন মনে হচ্ছে আসলেও পুরো জীবন বৃথা।ভাই বোনরা দূরে সড়ে গেছে।আগে সায়বা সারাদিন কথা বলতো ফোনে,এখন ফর্মাল হয়ে গেছে।দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের মতো সৌজন্যের খাতিরে ফোন দেয়।খুব একা হয়ে গেছেন এই জীবনে।কেউ নেই তার পাশে,দোষ অবশ্য জেবার নিজেরই।খাটের সাইড টেবিলে রাখা পানির গ্লাস থেকে পানি খেলেন বেশ সময় নিয়ে।শরীর দিয়ে ঘাম ছেড়েছে হটাৎ করেই।মাথাও ঘুরাচ্ছে।বসে থাকতে পারলেন না বেশিক্ষণ,শুয়ে পরলেন আবার।জেবার অসময়ে এত ঘুমানোর কারণে ফারুক সাহেব অবাক হলেন।
প্রিতি সন্ধ্যায় সবার জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করে রুশানের ঘরে গেলো।জুস,ব্রাউনি এবং চিকেন প্যাটিস ট্রেতে নিয়ে রুশানের ঘরের দরজায় নক করলো।ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পেলো না।আবার নক করলো।
-- দরজা খোলা যাবে রুশান?আমি তোমার ভাবি।একটু নাস্তা করে নাও।
বেশ কিছুক্ষণ পর রুশান দরজা খুললো।চুল বড় হয়ে গেছে,মুখ ভর্তি দাঁড়ি,চোখ লাল।ঘরে ঢুকেই গুমোট গন্ধ পেলো প্রিতি।অনেকদিন দরজা জানালা না খোলার কারণে কেমন যেন দমবন্ধ পরিবেশ পুরো ঘরে।ঘরের জিনিস অত্যাধিক এলোমেলো।প্রিতি বুঝতে পারছিলো কী করবে।কেমন আছে জিজ্ঞেস করাও বোকামি,সবই দৃশ্যমান।খাবারসহ ট্রে স্টাডি টেবিলে রেখে প্রিতি ঘরের জানালা খুলে দিয়ে পর্দা সড়িয়ে দিলো।জানালা খুলতে বেশ শক্তি লেগেছে,জ্যাম হয়ে গিয়েছিলো।জানার খোলার পরই হুহু করে বাতাস এসে ঘর ঠান্ডা হয়ে গেলো।প্রিতি এরপর ঘরের দরজা চাপিয়ে দিয়ে চেয়ার টেনে রুশানের সামনে বসলো।ট্রে থেকে আগেই প্যাটিস এবং পানি রুশানের হাতে দিয়েছে।খাবার হাতে নিয়ে রুশান বসেই ছিলো,যেন হারিয়ে গেছে গভীর ধাঁধায়।
-- রুশান...নাস্তা করে নাও ভাইয়া। এভাবে বসে থেকো না।একটু খেয়ে নাও,এরপর কথা বলি আমরা।
রুশান ধীরে অনিচ্ছাসত্ত্বেও প্যাটিস খেলো অর্ধেক।এরপর পানি খেয়ে মুখ মুছে প্রিতির দিকে তাকালো,পরক্ষণেই চোখ নামিয়ে ফেললো।
-- আমি জানি ভিনার সাথে কিছু হয়েছে তোমার।
রুশান কোনো উত্তর দিলো না,শুধু চোখ তুলে তাকালো।
-- আমি জানি না কী হয়েছে।জানতে চাইতাম ও না,কিন্তু এখন জানা খুব প্রয়োজন। এভাবে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করো না ভাইয়া আমার।যাই হয়ে থাক না কেন,খুলে বলো।একটা না একটা সমাধান পাবেই।
-- ভাবি...ভিনা তোমার কাছে তিনমাসের মতো ছিলো ওর এইচএসসি পরীক্ষার আগে।কেন?
প্রিতির হাত শক্ত হয়ে এসেছে।যেই ভয় কাজ করেছিলো সেটাই সত্যি মনে হচ্ছে।কীভাবে এত বড় সত্যির মুখোমুখি হবে? কীই বলে বুঝ দেবে।আর যদি রেহান অথবা জেবা জেনে যায় মাহভিনের ব্যাপারে,তখন ভিনার সম্মান আর কিছুই থাকবে না।
-- মুনা আন্টির সাথে সমস্যা হয়েছিলো।এর জন্য আমার এখানে এসে থেকেছিলো।
-- আপনাদের পরিচয় হয়েছিলো কীভাবে?যাবিরের মাধ্যমে?
-- হুম...
-- আপনি কি জানতেন মাহভিন ভিনার মেয়ে?
প্রিতির মেরুদণ্ড দিয়ে পুরো শরীরে শীতল প্রবাহ বয়ে গেলো।তাহলে ভয়টাই সত্যি হলো শেষ পর্যন্ত। রুশান জেনে গেছে মাহভিনের ব্যাপারে।ভিনাকে ওর বাবা প্রতিজ্ঞা করিয়েছিলো,তাও কীভাবে এমন করলো ভিনা?প্রিতি বুঝতে পারছে না কী করবে।
-- ভাবি?
-- হ্যাঁ আমি জানতাম।অনেক পরে জেনেছিলাম।দ্বিতীয় বার যখন ভিনা আমার কাছে থাকতে এসেছিলো,তখন জেনেছি।
-- তাহলে নিশ্চয়ই তুমি এটাও জানো যাবির আর ভিনার ছাড়াছাড়ি কেন হয়েছে?
-- যাবির বিট্রে করেছিলো জেরিন নামের এক মেয়ের জন্য।ভিনা তখন তিন মাসের প্রেগন্যান্ট ছিলো।
-- ওদের সম্পর্ক এতদূর আগানোর পরও যাবির কেন এমন করলো?
-- তুমি পুরোপুরি ঘটনা জানো না হয়ত।ভিনাকে বের করে দিয়েছিলো ওর দাদি আর মুনার মা মিলে।তখন কারো বাসায় যাওয়ার সুযোগ ছিলো না।
-- তখন নিশ্চয়ই যাবির নিজের সাথে নিয়ে গিয়েছিলো ভিনাকে?
-- হ্যাঁ....
-- বুঝলাম...কিন্তু যাবির প্রতারক জানার পরও ভিনা কীভাবে মাহভিনকে জন্ম দিলো?
-- কেন রুশান?আজকে যদি ভিনা মাহভিনকে এ্যবোর্ট করে দিতো,ভালো হয়ে যেতো ও তোমার চোখে?নিজের অতীত থেকে মুক্তির জন্য যদি একজন মানুষকে খুন করে নিজেকে ভালো প্রমাণ করতো,তাহলে ওকে ভালোবাসতে?
-- হ্যাঁ। আমি এখনো ওকে ভালোবাসি ভাবি। কিন্তু মাহভিন থাকার কারণে ভিনা কখনো আমাকে ভালোবাসবে না।মাহভিন যাবিরের স্মৃতি কখনোই ভিনাকে ভুলতে দিবে।ও মুভ অন করতে পারবে না।আমি যদি মারাও যাই,ভিনার মনে তাও জায়গা করে নিতে পারবো না আমি।তুমিও এটা বুঝো,তাই না?অস্বীকার করতে পারবা?
-- মানুষ হিসেবে ভিনাকে যাচাই করো রুশান,মাহভিনকে চাইলে ভিনা মেরে ফেলতে পারতো,কোনো দরকার ছিলো না নিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় রেখে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার।কিন্তু সত্যিই যদি তা করতো,ভিনাকে সম্মান করতে পারতে?
রুশান চুপ করে থেকে চোখ অন্যদিকে সড়িয়ে নিলো।প্রিতির দৃষ্টি এড়ালো না সেটা।
-- তোমার জীবন,তোমার সিদ্ধান্ত। আমি তোমাকে বলছিনা ভিনাকে মেনে নাও,কিন্তু নিজের জীবন থামিয়ে রেখো না।তবে এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি,মাহভিন এবং যাবির,দুইজনের কেউই ভিনার জীবনের অংশ হবে না কোনোদিন। মাহভিন মুনা আন্টির মেয়ে হিসেবেই বড় হবে এবং ভিনাই এটা চায়।আর যদি আসে যাবিরের কথা,যাবিরকে ভিনা কখনো ক্ষমা করবে না।
-- আমাকে ভালোও তো বাসবে না।
-- তুমিও তো ভিনাকে ভালোবাসতে পারছোনা এই মুহূর্তে। আমি জানি না তুমি কীভাবে জেনেছো এই ব্যাপারে।যদি ভিনাই জানিয়ে থাকে,তাহলে কিছুই করার নেই।তুমি ওকে ভুলে গিয়ে নিজের জীবন শুরু করো।
-- আমি ভিনার ল্যাপটপ থেকে জানতে পেরেছি।ভিনা আমাকে কিছু জানায়নি।ও তো এড়িয়েই চলতো আমাকে।
-- তোমার বয়স কম রুশান।এখনি এই মুহূর্তে তুমি পারবে না ভিনাকে মেনে নিতে।নিজের অন্তর্দ্বন্দ্বে ডুবে না থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসো।সময় সব বলে দিবে,তুমিই বুঝতে পারবে ভিনাকে ভালোবাসো নাকি না।যদি তখন উত্তর আসে ভালোবাসো,আমি বলে দিলাম,ভিনা তোমারই হবে।
-- হবে না ভাবি।আমি ওকে আজেবাজে কথা বলে ফেলেছি ওকে।অনেক ডিসরেস্পেক্ট করেছি ওকে।
-- ভিনাকে এখনো তুমি চিনতেই পারোনি। আগে ভিনাকে ভালোমতো জেনে নাও,এরপর এসব নিয়ে ভেবো।
-- আমার সময় লাগবে ভাবি।
-- ঠিকাছে।সেটা নাও।আরেকটা কথা....রেহান অথবা বাবা কি....
-- জানে না....কখনো জানবেও না।
প্রিতি স্মিত হাসি দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসলো। কী হলো এসব!ভিনার সাথেই কেন এমন হয় প্রতিবার?তাও স্বস্তি যে বাসায় কেউই জানে না এ ব্যাপারে।জানলে আরো সমস্যা হতো।
ভিনা রাত নয়টার দিকে নিজের বাসা থেকে প্রিতির বাসায় এসেছে।শরীর ক্লান্ত অনেক।পড়াশোনা এবং অনালাইন বিজনেস একসাথে চালানো সম্ভব না।আজকে বাসায় সব বিজেনেসের প্রোডাক্ট প্যাক করে রেখে এসেছে।এত প্রেশার নিতে পারবে না।সবকিছুর সীমা থাকে নির্দিষ্ট। সহ্য,পরিশ্রম এবং ধৈর্য্য,এই তিনটার সমন্বয় হলো সাফল্য।সাফল্যের ও নির্দিষ্ট সীমা থাকে।বর্তমানে ভিনার নিজের বেঁচে থাকাকেই সাফল্য মনে হয়।বাকীসব কিছুর পিছে ছুটতে ক্লান্ত লাগে।এটা নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ নেই।
প্রিতি মধ্যরাতে ভিনার ঘরে আসলো।অনেকদিন ধরে রাগ দেখিয়ে ঠিকভাবে কথা বলেনি ভিনার সাথে।ভিনা ঘুমায় নি এখনো,বিছানায় হেলাম দিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিতি ভূমিকা না করে সরাসরি প্রশ্নে চলে এলো।
-- জানাসনি কেন আমাকে রুশান যে মাহভিনের ব্যাপারে জেনে গেছে?
-- তুমি কষ্ট পেতে,হয়ত বিশ্বাস করতে না আমি নিজ থেকে বলিনি।
-- এসব ঢং রাখ ভিনা।মহান হওয়ার জন্য বাকী জীবন পরেই আছে।নিজের উপর রহম কর।
-- করছি।
-- কালকে আমার সাথে রুশানের বাসায় যাবি।ছেলেটা মরে যাবে।
-- এত সহজে কেউ মরে না আপু।আমি কি মরে গিয়েছি।
-- রুশান কষ্ট পেয়ে অভ্যস্ত না। এতবার মহান হয়েছিস,শেষবারের মতো হয়ে যা।
-- মাত্রই তো মানা করলে।
-- এখন কি নাকে খত দেয়া লাগবে কথা শোনানোর জন্য?
-- আমি গেলে কি সত্যিই কোনো লাভ আছে?
-- আমার বিশ্বাস আছে।
.
.
.
চলবে.......................................................................