দুপুরে বেশ তাড়াতাড়ি করেই জেহের বাড়ি ফিরল। রুমে ঢুকে ইনশিতাকে সেই আগের মতোই পেল। তবে ঘুমন্ত অবস্থায়। সকাল থেকে দুপুর অবধি কিছুই খাওয়া হয়নি ইনশিতার। আর সেটা এতক্ষণে মনে পড়েছে জেহেরের, তাই তো তড়িঘড়ি করে ছুটে এলো। ফ্রেশ না হয়েই খাবার হাতে রুমে এসে হ্যান্ডক্যাফ খুলে দিলো। ইনশিতার গালে হাত দিয়ে আলতো স্বরে ডাকতে লাগল,
-“রোজ, উঠে পড়ো। রোজ।”
ইনশিতা পিটপিট করে চোখ মেলে। তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক কেঁদেছে সে। জেহের ইনশিতাকে ফ্রেশ হতে বলে। ফ্রেশ হলে ইনশিতাকে নিয়ে খেতে বসে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে খাওয়ার সময় ইনশিতা টু শব্দটিও করেনি। খাওয়া শেষ হলেও ইনশিতা সোফায় বসে থাকে। এছাড়া যে আর কিছুই করার নেই। বারান্দার দরজা লক, বাহিরে যেতে দেয় না, তাহলে সে কি করবে? বসে থাকা ছাড়া তো আর উপায় নেই। আর এটাই চায় জেহের। সবসময় তার চোখের সামনে বসে থাকা।
প্রায় একঘন্টা ইনশিতা বসেছিল সোফায়। জেহের খেয়াল করছিল রোজকে। অনেকটাই মনমরা হয়ে আছে রোজ। নিজের কাজ ফেলে ইনশিতাকে নিয়ে বের হয়। প্রায় তিনদিন পর ইনশিতা রুমের বাহিরে পা ফেলে। অচেনা অচেনা অনুভূতি হচ্ছে তার। জেহের ইনশিতার হাত শক্ত করে চেপে হাঁটতে লাগল। ড্রয়িংরুমে বসেছিল জিহাদ আর জেবা। ইনশিতাকে হঠাৎ দেখে জিহাদের মনটা হু হু করে কেঁদে উঠল। দুদিনেই কেমন শুকিয়ে গেছে মেয়েটা। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পড়তে শুরু করেছে। যে কেউ দেখলে বলবে, মেয়েটার মন ভালো নেই।
জিহাদকে এক ধ্যানে রোজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে জেহের রেগে গিয়ে টেবিলের উপর রাখা পানি ছুঁড়ে দেয় জিহাদের মুখে। আচমকা মুখে ঠান্ডা পানি লাগায় হকচকিয়ে যায় জিহাদ। মুখের পানিটুকু হাত দিয়ে মুছে দেখে জেহের অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। জেহেরের রাগী চোখের ভাষা বুঝতে সময় লাগেনি জিহাদের। মাথা নিচু করে ফেলে সে। জেহের বাঁকা হেসে ইনশিতাকে নিয়ে বের হয়ে যায়।
ইনশিতাকে নিয়ে আজ একটা নির্জন নদীর পাড়ে যায় জেহের। এটা সেটা বলে ইনশিতার সাথে কথা জমানোর চেষ্টা করে চলেছে। তবে ইনশিতা আগের মতোই চুপচাপ আছে। কোনো কথা বলছে না, এমনকি জেহেরের দিকে একবার চোখ তুলেও তাকায়নি সে।
.
.
রুমের জিনিস পত্র ভেঙে চুরমাচুর। ইনশিতা খাটের এক কোণায় কান চেপে ধরে বসে আছে। জেহেরের শার্টের বোতাম এলোমেলো করে খোলা। চুল অগোছালো। রেগে গিয়ে আরও জিনিস পত্র ভাঙতে শুরু করে জেহের। ইনশিতাকে বিছানা থেকে উঠিয়ে শক্ত করে হাত চেপে ধরে জেহের। তর্জনী দিয়ে চিবুক তুলে ফোঁস ফোঁস করতে করতে বলে,
-“কথা বলো আমার সাথে।”
ইনশিতা জেহেরের হাত ঝটকা মেরে সরিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলো। আজ পুরোটা দিন সে জেহেরের সাথে কথা বলেনি। নদীর পাড়ে গিয়েও জেহের কথা বলার চেষ্টা করেছিল। ইনশিতা মুখে কুলুপ এঁটে ছিল ততক্ষণ। আজ যেন সে পণ করে নিয়েছে জেহেরের সাথে কথা বলবে না। আর জেহের ইনশিতার সাথে কথা না বলতে পেরে পাগল হয়ে যাচ্ছে। কতরকম ভাবে কথা বলতে চেয়েছিল সে, কিন্তু ইনশিতা পাত্তাই দিচ্ছিল না।
ঘরে ফিরেও হাজারো কথা বলেছিল জেহের। ইনশিতা নিজের মতোই চুপ করে ছিল। জেহেরের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছিল না। রোজের এই ইগ্নোরেন্স সহ্য করতে পারছিল না জেহের। রোজ ইচ্ছে করে তাকে কোনোভাবে অবহেলা করুক এটা সে একদমই চায় না। তার দম আটকে যায় এতে। তাই পুরো রুম চুরমার করেছিল, ভেবেছিল হয়ত রোজ তাকে থামাবে আর সেই সুযোগে কথা বলতে পারবে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। উল্টো ইনশিতা খাটে কান চেপে বসেছিল।
রুমে কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় ইনশিতা খাট থেকে নামতে পারছিল না। ঘরে পরার জুতাও এখন পায়ে নেই। তাই উপায় না পেয়ে খাটের মধ্যিখানে উঠে বসে থাকে। জেহের রাগে মাথার চুল টেনে ধরে এপাশ ওপাশ হাঁটতে থাকে। জুতো থাকায় কোনো সমস্যাও হয় না। নিজে নিজে একা কতক্ষণ বিড়বিড় করে হঠাৎ করে জুতো পায়ে খাটে উঠে বসে। ইনশিতার কোলে থাকা হাতজোড়া নিজের গালে চেপে ধরে জেহের। কাতরস্বরে বলে,
-“এই রোজ, প্লিজ একটু কথা বলো না আমার সাথে। একটু। এভাবে ইগ্নোর করো না প্লিজ। আমা-আমার খুব কষ্ট হয় রোজ। এই যে, এইখানটায়, খুব খুব কষ্ট হয়।”
জেহের ইনশিতার এক হাত নিজের বুকের বাঁ পাশে চেপে ধরে। ইনশিতা এক পলক একটু দেখে জেহেরকে। তবে জেহেরের চোখে কাতরতা দেখতে পাচ্ছে না একদমই। যা দেখছে সব হিংস্রতা। দিনে দিনে জেহের আর আগের মতো কাতর হয় না। শুধু গম্ভীর আর হিংস্র হয়ে উঠছে। আর এখন কাতরতার ছাপ মিছিমিছি লেগে আছে মুখে। রাগ চেপে কাতর হবার ভণিতা করছে। আর এই রাগ নিয়েই যেন এখন ইনশিতার সাথে কথা বলাই তার একমাত্র উদ্দেশ্য।
ইনশিতার দয়া হলো না। আজ তারও তো খুব কষ্ট হয়েছে, যখন জেহের ও'কে কলেজ যেতে দিচ্ছিল না। আর সেই কষ্টটাই এখন বুকে পাথরের মতো চেপে বসেছে। ইনশিতা হাত ছাড়িয়ে নিলো জেহের হাত থেকে। চোখমুখ কুঁচকে বিরক্তিকর আওয়াজ তুলল সে। যেন জেহেরকে একদম দেখতেই পারে না।
বেড সাইড টেবিল থেকে একটা গল্পের বই বের করে তাতে দৃষ্টি স্থির করল। বইকে প্রাধান্য দেয়াতে জেহের রেগেমেগে বইটা টান মেরে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলল। ছিঁড়েও ক্ষান্ত হলো না। প্রতিটা পেজ টুকরো টুকরো করে কেটে ছুঁড়ে ফেলল নিচে। ইনশিতার বাহু টেনে নিজের কাছে এনে কটমট করে বলল,
-“কোনোকিছুকে আমার থেকে বেশি প্রায়োরিটি দিলে এভাবেই শেষ করে দেব আমি। তোমার ধ্যানজ্ঞান আমাতেই আবদ্ধ রাখবে। আদারওয়াইজ, তছনছ করে ফেলব সব।”
ইনশিতা কথা না বলে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ইনশিতার মুখ ফিরিয়ে নেয়াতে জেহেরের চোখ দপ করে জ্বলে উঠল। খাটের মধ্যেই হাত দিয়ে ঘুষি মারল কয়েকটা। চোখ বন্ধ করে কয়েকটা বড় বড় নিঃশ্বাস নিয়ে ইনশিতার দু'গাল দু'হাতে চেপে ধরে নিজের দিকে ফেরাল। দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
-“আমার রাগের পরীক্ষা করবে না। কখন কী করে ফেলতে পারি ঠিক নেই। এখন যদি কথা না বলো তাহলে আমি...”
আর কিছু বলল না জেহের। দু'গালে চাপ দেয়ার কারণে ইনশিতার ঠোঁট বেরিয়েছিল। সেই ঠোঁটেই ডুবে জেহের। তবুও ইনশিতার সাড়া পেল না। কামড়ে দিতেই ইনশিতা ব্যথাতুর আওয়াজ তুলে জেহেরকে ধাক্কা মারল। জেহের না সরে আরও শক্ত করে চেপে ধরল ইনশিতাকে। ইনশিতা ডুকরে কেঁদে উঠলে জেহের ছেড়ে দেয়। ঘাড় কাত করে বাঁকা হাসে। যেখানে হিংস্রতা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ইনশিতাকে কর্মের শাস্তি দিতে পেরে যেন সে মহা আনন্দ পেয়েছে। ইনশিতার কানের কাছে মুখ নিয়ে হিসহিসিয়ে বলে,
-“সবসময় যে ভালোবাসা দেখিয়ে রাগ ভাঙাবো—এটা ভেবো না রোজ। মাঝেমাঝে রাগের পরিবর্তে রাগ দেখিয়েও রাগ ভাঙানো যায়। আর সেটাই আমি করব।”
বলে ইনশিতাকে খাটে দুহাতে ধাক্কা দিয়ে উঠে পড়ে। বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট মুছে বাঁকা হেসে নীচে চলে যায়।
ইনশিতা ঠোঁটে হাত দিয়ে কাঁদতে বসে। জেহেরের হঠাৎ হঠাৎ হিংস্রতায় প্রচুর কষ্ট পায় ইনশিতা। আজকের এই ব্যবহারের পর অভিমানের পাল্লা আরও ভারী হয়ে গেল তার।
.
.
জিহাদকে জেহেরের রুমের দরজার কিছুটা দূরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে জেবা। জিহাদের মনের অবস্থা যেমন ভালো নেই তেমন জেবারও। জিহাদ তার ভালোবাসাকে পায়নি। আর জেবা চাইলেও তার ভালোবাসাকে পেতে পারে। কিছুটা হলেও চান্স আছে জেবার। আর জিহাদ! জিরো পারসেন্ট চান্স নিয়েই থাকতে হবে তাকে। তার ভাই কি এভাবেই নিজের ভালোবাসাকে অন্যের সাথে দেখে থাকতে পারবে? তাও আবার একই ঘরে।
জেহেরকে রুম থেকে বের হতে দেখে জিহাদ সরে যায়। জেহেরকে দেখে জেবার মনে রাগের আগুন দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। এই একটা মানুষের কারণে তার জিহাদ ভাই আর তার ভালোবাসা কষ্ট পাচ্ছে। তবুও কিছুই করতে পারছে না সে। কিছু করতে গেলেই জেসমিন চৌধুরী এসে বাঁধা দেয়। কান্নাকাটি করে মিনতি করে, জেহেরের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। জেবা ভেবে পায় না, যেই ভাই তার মাকে এতটা অবহেলা করে, সেই ভাইয়ের জন্য মায়ের এত দরদ কেন? আশ্চর্য!
রাত আটটা। রুমের দরজা অজান্তেই খুলে গিয়েছিল জেহের। ইনশিতা নিজেই তখন রুমের সব সাফ করেছিল। জেহের এতক্ষণেও একবারের জন্যও ঘরে আসেনি। কোথায় গেছে কে জানে? তবে ইনশিতা মনে মনে প্রার্থনা করে জেহের যাতে আজ ঘরে না আসে। জেহের কাছে না থাকলেই তার শান্তি লাগে। আবার এই ভেবেও মন খারাপ লাগে যে, জেহের তো তার স্বামী। আর এ'কে নিয়েই তার পুরোটা জীবন কাটবে। তাহলে সে কেন মানিয়ে নিতে পারছে না? মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে কি? না'কি না? দোটানায় ভুগছে ইনশিতা।
রুমের দরজা খোলা রাখায় ইনশিতা বের হয়ে নিচে যায়। দেখে জেবা সোফায় বসে মোবাইল দেখছে। আফজাল চৌধুরী চোখে চশমা লাগিয়ে মনোযোগ সহকারে টিভিতে খবর দেখছেন। আর একটু পর সকলে ডিনার করতে আসবে। ইনশিতার খুব ইচ্ছা হলো সকলের সাথে একসাথে বসে ডিনার করবে। বাড়িতেও তো তার বাবা মা সহ একসাথে ডিনার করত। একা একা খেতে তার ভালো লাগে না।
সোফার সামনে গিয়ে হালকা কাশি দিলে আফজাল আর জেবা চোখ তুলে তাকায়। আফজাল চৌধুরী হালকা হেসে ইনশিতাকে পাশে বসতে বলে। জেবা তাকিয়ে আছে ইনশিতার মনমরা মুখের দিকে। তার কষ্ট হচ্ছে ইনশিতাকে এভাবে দেখতে।
আফজাল চৌধুরী খবর থেকে চোখ সরিয়ে ইনশিতার দিকে মনোযোগ দেন। মেয়েটাকে নিজের মেয়ের মতো এখনো ভাবতে পারছেন না একমাত্র জেহেরের কারণে। জেহের এখানে ইনশিতাকে দেখলেই তো বিপদ। কারো সাথেই মেয়েটাকে মিশতে দিচ্ছে না সে। ফুলের মতো মেয়েটা দিন দিন নেতিয়ে যাচ্ছে।
ইনশিতার মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে কন্ঠে বলে,
-“মা'রে। তোমাকে এ বাড়ির বৌ করে আনতে পেরেছি ঠিকই। কিন্তু মেয়ে এখনো বানাতে পারিনি রে মা। কারণটা তোমারও জানা। এজন্য আমাদের ক্ষমা করো।”
ইনশিতা নীচু স্বরে বলে,
-“এভাবে বলবেন না আঙ্কেল। এখানে তো আপনাদের কোনো দোষ নেই। আর আপনারা যদি মন থেকে আমাকে মেয়ে হিসেবে মানেন তাহলেই হলো। এর চেয়ে বেশী আর কি চাই?”
আফজাল চৌধুরী মুখ গোমড়া করে বলেন,
-“মেয়ে তো ভাবি-ই সবসময়। তবে মেয়ে যে তার বাবাকে আঙ্কেল বলে ডাকবে এটা ভাবতে পারিনি কখনো।”
ইনশিতা জিভ কেটে বলে,
-“সরি বাবা। তবে বাবা, আপনি আমাকে তুমি তুমি করে বলবেন না, পর পর লাগে। তুই করে বলিয়েন।”
আফজাল চৌধুরী ঠোঁট প্রশস্ত করে হেসে বলেন,
-“ঠিকাছে মা। তোর কথাই রাখলাম।”
জেবাও এবার যোগ দিলো আড্ডায়। কিছুক্ষন পর জেসমিন চৌধুরীও আসলো। ইনশিতাকে হাসিখুশি দেখে তার মনটা খুশিতে ভরে গেল। কিছুটা হলেও তো মন খারাপ দুর হয়েছে মেয়েটার।
একটু পর হৈচৈ শুনে চলে আসল জিহাদ। ইনশিতাকে দেখে তার মনটা ধুকপুক করতে লাগল। মনটা নেচে উঠল আনন্দে। সে ইচ্ছা করেই এবার কাছে গিয়ে ইনশিতার সাথে কথা বলার চেষ্টা চালাল। ইনশিতার অস্বস্তি লাগছিল জিহাদের সাথে কথা বলতে। তবুও কাউকে বুঝতে দিলো না। জেবা দেখল জিহাদের শুকনো মুখে খুশির ঝিলিক দিচ্ছে। মনে মনে শান্তি পেল জেবা। সকলেই এবার আড্ডা দিলো, লুডু খেলল। ইনশিতার মনে দুঃখ যেন এক নিমিষে হারিয়ে গেল। হাসি ঠাট্টায় পার হলো এক ঘন্টা। এত সুন্দর একটা পরিবার থাকতে জেহের যে কেন একা থাকে?
জেসমিন চৌধুরী টেবিল সাজাচ্ছেন। ইনশিতা হেল্প করতে চাইলে তিনি বাঁধা দেন। বাপ বেটিরা মিলে আড্ডা দিক এখন। খাবার টেবিল সাজানো হলে সবাই এসে বসে। জেহেরের কথা মাথা থেকে পুরোই বেরিয়ে গিয়েছিল ইনশিতার। তবে জেসমিন চৌধুরী বারবার দরজায় ছেলের অপেক্ষা করছিলেন। এখনো আসছে না কেন ছেলেটা? সবার সাথে একসাথে খেলেও তো মনটা শান্তি লাগতো তার। ইনশিতা খেয়াল না করলেও আফজাল আর জেবা ঠিকই খেয়াল করল ছেলের জন্য অস্থির থাকা মা'কে।
খাওয়া প্রায় মধ্যিপথে। খাওয়ার টেবিলে পরিবার মিলে একসাথে না খেলে খাওয়ার মজা কেউই বুঝবে না। আফজাল চৌধুরী খাওয়ার মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছে আর সকলে হেসে উঠছে। এতক্ষণে জিহাদের সাথে ইনশিতাও কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। হাসি ঠাট্টা ছাড়া জিহাদ একটাও বাড়তি কথা বলেনি যাতে ইনশিতার অস্বস্তি হবে।
ঠিক সেই মুহূর্তে কলিংবেল বেজে উঠে। মেইড গিয়ে দরজা খুলে দিলে জেহের ভেতরে ঢুকে। ইনশিতাকে হঠাৎ খাওয়ার টেবিলে পেয়ে রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় তার। তাও আবার তাদের সাথে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠছে যাদের সে দুচোখেও সহ্য করতে পারে না।
বড় বড় পা ফেলে সাপের মতো ফণা তুলে হেঁটে যায় জেহের খাওয়ার টেবিলের দিকে।
.
.
.
চলবে.............................