অন্তর্দ্বন্দ্ব - পর্ব ৪৫ - সাবরিনা ইমরান - ধারাবাহিক গল্প


ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে রুশান নিজেকে দেখছে ভালোমতো।অনেকদিন পর নিজেকে আয়নায় দেখে পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করে নিজেই অবাক হয়েছে।কোথায় যেন সুক্ষ্ম আত্মতৃপ্তি কাজ করছে সবমিলিয়ে।সুখের সময়ে যেমন মন খুলে আনন্দ করা উচিৎ, দুঃখের সময়েও উজার করে শোক করা উচিৎ।দুই ক্ষেত্রেই কোনো ত্রুটি রাখতে হয়না।রুশানের নিজেকে দেখে আজকে যোগ্য দুঃখবিলাসী মনে হচ্ছে,কারণ দুঃখের ছাপ পরেছে চেহারায়।বড় হয়ে যাওয়া দাঁড়ি কে ট্রিম করে ফেলেছে,আজকে কোনোভাবেই আগের মতো ক্লিন শেভ করতে মন সায় দেয়নি।বড় হয়ে যাওয়া চুল সকালেই কেটে জাতে এনেছে।কারণ?

ভিনা আসবে বিকেলে।

কোনো ভালোবাসা কাজ করছে না যদিও,আগের মতো মোহও নেই।এতসব আয়োজন শুধুমাত্র নিজেকে দেখানোর জন্য যে এত অল্পতে ভেঙে পরার মানুষ সে না।নিজের এই দূর্বলতাকে কোনোভাবেই দেখাতে চাচ্ছে না রুশান।যদিও ক্রূর সত্যি হলো,এত মাস 'ঘরবাস' এ নিজের মানসিক শান্তি হারিয়ে লক্ষাধিক টুকরো হয়ে যাওয়ার পরে সেগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে আজকের এই মানুষ। যিনি এই কাচের মানবের লক্ষাধিক টুকরার কারিগর,তিনি এসবের ধার ধারেন না।অনুভূতি শব্দটা তার হৃদয়ে ভোতা ছুড়ির মতো হয়ে গেছে,কিঞ্চিৎ ব্যথা দিতে পারে,কিন্তু দাগ কাটতে পারেনা।

গত তিনদিন ধরে জেবা নিজের বিছানায় পরে আছেন।বাথরুম থেকে বিছানা,এই দুই ব এ তার জীবন আটকে গেছে।খাবার রান্নার জন্য নতুন লোক রাখা হয়েছে,সে খাবার অবশ্য তার মুখে রোচে না।তীক্ষ্ণ ব্যক্তিত্বের জেবা যতক্ষণ জেগে থাকেন,ফ্যাচ ফ্যাচ করে কান্না করতে থাকেন।আগে ফারুক সাহেবের মায়া লাগলেও এখন কান্নার ধরণ বদলেছে। সশব্দে খুবই বিশ্রী সুর করে কাঁদেন জেবা।ফারুক সাহেব নিজের সহধর্মিণীর প্রতি বিরক্ত হলেও কিছু বলতে পারছেন না।শুধু ডাক্তারের প্রেস্কাইব করা ডোজের চেয়ে খানিক বেশি ঘুমের ঔষধ দেন,এই আরকি।ফলস্বরূপ এই অবেলায় ও জেবা ঘুমাচ্ছেন।ফারুক সাহেব জামা বদলে নিচের ড্রয়িং রুমে বসে আছেন,কেন যেন তার অগাধ বিশ্বাস,ভিনা নামের মেয়েটা জাদু জানে,সেই জাদু দিয়ে এই মেয়ে তার ডুবন্ত ছেলে পাড়ে টেনে তুলবে।দুপুর থেকেই এর প্রভাব দেখা গেছে,রুশান নিজেকে একটু সভ্য করেছে কেঁটে ছেটে।

ভিনা বিকেল পাঁচটায় আসলো একদম ভাবলেশহীনভাবে।প্রিতিকে অতিরিক্ত উৎসুক দেখাচ্ছিলো,রেহান নিজেও খুশি ছিলো ভেতরে।বাড়িতে ঢুকেই সবার আগে ফারুক সাহেবকে সালাম দিয়ে কিছুক্ষণ কথা বলে জেবার খোঁজখবর নিলো ভিনা।এর মধ্যে কাজের লোক এসে খাবার দিয়ে গেলো।রুশান যাবে না যাবে না করেও উপর থেকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রেখেছে ভিনার উপর।এত মাস পরে ভিনাকে দেখে ভেতরে ক্ষণিকের দাম্ভিকতা ভেঙে যেতে লাগলো।সেই কলেজে ওঠার সময় থেকে এই মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন সাজিয়ে এসেছিলো।অনেকের সাথে প্রেম হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কীভাবে যেন কৈশোরের সেই টালমাটাল সময় ভিনাকে ভেবে সামলে গিয়েছিলো।এত বছর পর যখন সুযোগ পেলো ভিনাকে,তখন সত্যিটা কাল বৈশাখীর ঝড়ের মতো লণ্ডভণ্ড করে দিলো সব।মাহভিন!আর কখনো কোলে নিবে না সেই মেয়েকে।থু!

ভিনা কথার মাঝখানেই উপরে তাকালো।থমকে গেলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য।রুশান এটা?চোখ নামিয়ে ফেললো সাথে সাথেই।অস্বস্তিকর অনুভূতি জড়িয়ে ধরলো পুরো শরীর।সেইদিন দেখলো বাচ্চা ছেলেটা,আজকে মনে হচ্ছে মধ্যবিত্তের চাকরি না পেয়ে সদ্য প্রেমিকা হারানো যুবক।মুখ ভর্তি দাড়ি,কালি পরা চোখ এবং মূর্তির মতো চাহনিতে রুশানকে চিনতে কষ্ট হচ্ছে।কবে হলো এসব?কবে এই ছেলেটা এত ভালোবেসেছিলো?

রুশান নিজের ঘরে চলে এসে বিছানায় ধপ করে বসে পরলো।ভিনাকে এত মাস পরে দেখেও নিশ্চিত হয়ে গেছে,এই অনুভূতি ভোলা সম্ভব না।কিন্তু যাবিরের বাচ্চাসহ ভিনাকে মেনে নেয়াও অসম্ভব। নিজে কী মানবে,মাহভিনের দিকে তাকিয়ে ভিনাই আগাবে না নিশ্চিত!জীবনে সবকিছু পেয়েও এখন একটামাত্র অনিশ্চিত সম্পর্কের জন্য নিজেকে কাঙাল মনে হচ্ছে।

-- রুশান,দেখো কে এসেছে।

রুশান তাকিয়ে দেখলো প্রিতি হাসিমুখে ভিনাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ভিনা সরাসরি তাকিয়ে আছে রুশানের দিকে। রুশান অন্যদিকে চোখ সড়িয়ে ফেললো।প্রিতি কিছু বুঝতে না পেরে ভিনাকে বিছানার সামনে রাখা ওডেনজেনে বসিয়ে চলে যেতে নিলো,তখনি দেখা হলো ফারুক সাহেবের সাথে।দুইজন মিলে কী বললো বোঝা গেলো না,কিন্তু প্রিতি একবার ভিনার দিকে তাকিয়ে চলে গেলো দরজা চাপিয়ে।

নীরবতায় ভারি হয়ে আছে ঘর।দুইজনের মাঝে যুগের দূরত্ব। কেউ কারো প্রশ্নের উত্তর জানে না।অনেক্ষণ বসে থাকার পর ভিনা আর পারলো না।উঠে চলে যেতে নিলে রুশান শান্তভাবে জিজ্ঞেস করলো-

-- কেন?

ভিনাও জিজ্ঞেস করলো-

-- কেন?
-- তুমি কি জানতে না?তুমি তো বুঝতে পেরেছিলে আমি তোমাকে ভালোবাসি,কোচিং এ পড়ার সময় থেকেই জানতে আমার ফিলিংস এর কথা।এর জন্যই তো এভয়েড করতে।তাইনা?
-- এভয়েড ই তো করেছি।কখনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কি দিয়েছি?তোমার...হ্যাঁ, তোমার ভালোবাসার অনেক দাম,আমারটা কি সস্তা ছিলো?
-- এটা কেমন ভালোবাসা যেখানে তোমাকেই সব দায়ভার নিতে হলো?কেন নিতে গেলে।
-- এটা মাতৃত্ব।এর সাথে যাবিরের কোনো সম্পর্ক নেই।আমি 'আমার' বাচ্চাকে মারিনি।ভালোবাসার জন্যই মারিনি,সন্তানের ভালোবাসার জন্য।মাকে হারিয়ে বড় হয়েছি,সন্তানকে মেরে ফেলে শূণ্যতার বোঝা কেন নিবো আমি?মাহভিনের কী দোষ এখানে?
-- মাহভিন ও তো মা ছাড়া বড় হচ্ছে।মুনা আন্টি তোমার সাথে যা করেছে,তুমি কীভাবে ভাবলে মাহভিনকে সে ভালোভাবে ট্রিট করবে?মাহভিনের সাথে অন্যায় হয়ে গেলো না?
-- মানুষ কে সুযোগ দিতে হয়।মানুষ মানসিকতা দিয়ে তৈরি।মানসিকতার পরিবর্তনের মাধ্যমে এক দেহেই মানুষের পুনর্জন্ম সম্ভব।আমি জানি,মা আমার চাইতে ভালোভাবে মাহভিনকে রাখবে।
-- এটা তোমার অন্ধবিশ্বাস।কজ ইউ হ্যাভ নো অপশন লেফট!
-- আমি মা হারিয়েছি,তাই মায়ের মূল্য জানি।আমি নিজেকে দিয়েই মানুষকে বিচার করি।মা নিজের সন্তান হারিয়েছে,সে জানে সন্তানের মূল্য কী।আমার চাইতে ভালো জানে।
-- কিন্তু নিজের সম্মান হারিয়ে কীভাবে যাবিরের কাছে গেলে তুমি?তোমার মতো পার্সোনালিটির মানুষ কীভাবে...

ভিনা মেরুদণ্ড সোজা করে ঠান্ডা চোখে তাকালো রুশানের দিকে।

-- আমার সম্মান আমি গায়ে লেপ্টে রাখিনি তখন।আবেগ ছিলো তখন শরীরে। আর আবেগ আমি তাকেই দিয়েছি,যাকে ভালোবেসেছিলাম,ভুল করেছি।কিন্তু দশজনের মধ্যে আমার আবেগ বিলিয়ে বেড়াই নি।মাহভিনকে না রেখে আমি ঠিকি নিজের আবেগকে পুঁজি করে যেকোনো ছেলের সাথে প্রেম করতে পারতাম,নিজের একাকীত্ব থেকে মুক্তি নিতে পারতাম।এখনো সুযোগ আছে আমার কাছে,কে জানে মাহভিন আমার মেয়ে?
কিন্তু আমার শরীরে সম্মান এসেছে মাহভিনের জন্য।ভুল করতে পারি আমি,কিন্তু ভীতু না।আমার সম্মান আমার মনুষ্যত্বে।একজন ভালো মা হওয়ার জন্য আমি অন্য কাউকে আমার জীবনে আনিনি।সম্মান এটাকেই বলে।আজকে এইযে আমাদের দুইজনকে এক ঘরে রেখে গেছে দরজা চাপিয়ে,বিশ্বাসের পরিমাণ কত বেশি হলে এটা করা যায়,সেটা তুমি জানো না রুশান।এটা সম্মান,অনেক কষ্ট করে অর্জন করা সম্মান।শরীরে পারফিউমের মতো সম্মান মেখে বেড়াই না যে দিনশেষে কারো সাথে মাখামাখি করে সেটাকে দুর্গন্ধ বানিয়ে ফেলবো।আর যে এই কথার অর্থ বুঝে না,তার নিজের ভালোবাসা নিয়ে সুপিরিয়র ফিল করা উচিৎ না।

রুশান স্তব্ধ হয়ে গেলো।মাথা নিচু করে শুনে গেলো সবকিছু।

-- ভিনা...
-- আগেই বলেছিলাম,মোহ থেকে বেরিয়ে আসো।বাস্তবতা ভীষণ কঠিন।তুমি একদিন আমাকে বলেছিলে,আমিই তোমার বাস্তবতা। সত্যি কী জানো?মানুষ বাস্তবতাকে ঘৃণা করে।কেউ স্বেচ্ছায় বাস্তববাদী হতে চায় না।বিং রিয়েলস্টিক ইজ নট দ্যাট মাচ ইজি।এখন তুমি জানো আমি এক বাচ্চার মা,প্রাক্তন প্রেমিকের ছেড়ে যাওয়া সম্মানহীন উচ্ছিষ্ট,আর একাডেমিকালি তোমার থেকে বড়।কোনোকিছুর সম্ভাবনা এখন নেই।আমাকে এখানে ডাকা হয়েছে তোমাকে প্যাসিফাই করতে।শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বলে যাচ্ছি,স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসো।অযথা যে পাপ করিনি,সে পাপের ভার আমি নিবো না।

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ভিনা চলে গেলো ঘর থেকে,আবারো,আবারো রুশানকে অন্তর্দ্বন্দ্বের মাঝে রেখে। রুশান অসহায় ভাবে বাইরে তাকালো।জীবনে একবারই ভালোবেসেছিলো এবং ভাগ্যের সবচেয়ে নির্মম পরিহাস ও এখানেই পেয়েছে।কী হতো সৃষ্টিকর্তা একটু দয়া দেখিয়ে সৌভাগ্য আরেকটু বাড়িয়ে দিলে?

ভিনা বেরিয়ে আসার পর কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠে গেলো।প্রিতি দৌড়ে ভিনার সাথে বাইরে এসে পরেছে।

-- এই এই!কোথায় যাচ্ছিস?
-- বাসায়।বাসায় গিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে দিবো আমি,রাতে এসে পরো।
-- কিছু বলেছে রুশান?
-- তুমি তো জানবেই।ওকে জিজ্ঞেস করলেই উত্তর পেয়ে যাবে।

প্রিতির ভয় করছে,না জানি কী কথা হয়েছে দুইজনের মাঝে।ভিনা কঠিন কিছু বলে ফেললো না তো আবার?

ভিনা পুরো রাস্তায় উদ্ভ্রান্ত হয়ে থাকলো।আজকে সত্যিই অনেক কঠিন কথা বলে এসেছে।নিজের কাছে নিজেরি অবাক লাগছে কবে এত বড় হলো।

সারারাত এপাশ ওপাশ করেই কাটলো রুশানের।কোনোভাবেই নিজের সাথে পেরে উঠছে না।সকাল হতেই গোসল করে রেডি হয়ে নিচে নামলো নাস্তার জন্য।ফারুক সাহেব সেখানেই ছিলেন।ছেলেকে অনেক মাস পর সকালে নাস্তার টেবিলে দেখে যারপরনাই অবাক হলেন।

-- কী রে,কোথাও যাবি?
-- হ্যাঁ, ভার্সিটি যাবো।নেক্সট সেমিস্টারের রেজিস্ট্রেশন করবো,পারলে একটু ক্যাশ দিও।

ফারুক সাহেব জানতেন ভিনাতেই কাজ হবে,কিন্তু এত দ্রুত কাজ হবে,এটা জানতেন না।

-- ম্যাজিক,শি ইন এ ম্যাজিশিয়ান! 
-- কিছু বললে বাবা?
-- না না....মানে তোকে দেখে ভালো লাগছে।কত লাগবে বললি না তো,ড্রাইভারকে আগে থেকে বলেছিস তো?
-- না,জানাতে ভুলে গেছি।কেন গাড়ি নেই?
-- আধা ঘন্টা আগেই রেহানের জন্য গেছে একটা গাড়ি।
-- সমস্যা নেই,আমি রিকশা করে যেতে পারবো।
-- এতগুলো টাকা নিয়ে রিকশা করে যাবি?
-- উহু,তুমিও চলো আমার সাথে,কতদিন হয়ে গেছে ঘর থেকে বের হওনা।

ফারুক সাহেবের চোখ খুশিতে চকচক করে উঠলো।আসলেই উনি বের হতে চাচ্ছিলেন।রুশান কীভাবে যেন বুঝে গেছে।তার দুইটা ছেলেই বড় হয়ে গেছে!

••••••••••••

খুরশিদ দুই মাসে এই প্রথম আসলেন জেরিনের ঘরে।দুইমাস বারো দিন আগে তার মেয়ে জেরিন আত্মহত্যা করেছে।চতুর্থ এটেম্পট ছিলো,তার থেকেও বড়,লেথাল ইঞ্জুরি। তার ভীতু মেয়েটা কীভাবে এত সাহস করে এত বড় পদক্ষেপ নিলো ভেবে পাচ্ছেন না।তিনি শেষ দুই বছরে জেরিনের সাথে একদিন ও ভালো ব্যবহার করেননি,মেয়ের কৃতকর্মই ছিলো এমন।তার মানে এই না যে নিজ সন্তানের মৃত্যু চেয়েছেন।আজকে প্রথমবার তিনি উপলব্ধি করছেন,জেরিনের এমন করার পেছনে শেকড়টা উনিই তৈরি করেছিলেন।একমাত্র সন্তান হিসেবে জীবনে প্রথম একুশ বছর মাথায় করে রেখে পরে অন্যায় করার জন্য মাটিতে ছুড়ে ফেলেছিলেন।দুই সময়ই মধ্যমপন্থা অবলম্বন করলে,আজকে এই করুণ পরিণতি জেরিনের হতো না।বিশেষ করে জেরিনের সামনেই যখন নিজের ছোট মেয়েকে অসম্ভব ভালোবাসায় ভরিয়ে তুলছিলেন,তখন নিশ্চয়ই তার কলিজার টুকরা শেষ হয়ে যাচ্ছিলো।এমন পাপের শাস্তি মেয়েকে তিনি দিলেন,যার প্রভাবক উনি নিজেই।জেরিন মেধাবী প্রাণোচ্ছল মেয়ে ছিলো,উজার করে ভালোবাসার ক্ষমতা থাকলেও,সেটার সীমা জানা ছিলো না।নিজের ক্যারিয়ার স্বপ্ন সব বিসর্জন দিয়েই যাবিরের পিছে ছুটছিলো,কিন্তু শেষে এসে ধৈর্য্য রাখতে পারলো না।যাবিরের উপর ভীষণ রাগ হয় তার,কিন্তু এ রাগ করেও বা লাভ কী।ভুল যাবিরের চেয়ে তার বেশি।খুরশিদের জীবনের তেইশ বছর এক নিমিষেই নষ্ট হয়ে গেছে জেরিনের মৃত্যতে।একজন মানুষের,একটামাত্র জীবনের তেইশ বছর বিফলে যাওয়া কতখানি কষ্টের,এটা শুধু সেই মানুষই জানে।মধ্যবয়সের এই দ্বিতীয় সন্তানের যৌবনকালে তিনি থাকবেন না,বার্ধ্যকের ভারে সন্তানকে আগলে রাখা সম্ভব হবে না।এখন থেকেই তার ছোট মেয়ে জয়ী কে এমনভাবে বড় করতে হবে,যেন জেরিনের মতো ভুল জয়ী না করে।আজকে এই ঘরে খুরশিদের আসার মূল কারণ জেরিনের ব্যবহার্য সব জিনিস ফেলে দেয়া।কষ্ট হলেও,তিনি চাননা জয়ী বড় হয়ে নিজের বড় বোনের ব্যর্থ জীবন এবং আত্মঘাতী সমাপ্তির কথা জানুক।জয়ীকে অনেক বড় হতে হবে,নিজেকে ভালোবাসতে হবে।
.
.
.
চলবে.........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp