অন্তর্দ্বন্দ্ব - পর্ব ৫০ - সাবরিনা ইমরান - ধারাবাহিক গল্প


বনানির এই বাসায় অন্যদিনের চেয়ে বেশি নীরবতা।আগে মানুষ না থাকার জন্য নীরব ছিলো,বর্তমানের নীরবতা মানুষের উপস্থিতিতে।

-- তোমাকে আমি অন্যরকম ভাবতাম ভিনা।

চশমা হাতে রুদমিলা সরাসরি ভিনার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললেন।টেবিলের সামনে ঠান্ডা কফির মগ, ইম্পোরটেড কুকিজ এবং রিডার্স ডাইজেস্টের পুরোনো কপি রাখা।ভিনার সেগুলোকে নিজের আপন কেউ মনে হচ্ছে এই ঘরে।নিষ্পলক তাকিয়ে আছে সেগুলোর দিকে।এরপর মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বললো-

-- আমার হাতে কিছু করার মতো ছিলো না।
-- প্যাথেটিক এক্সকিউজ।তোমার বাবার অসুস্থতার কথা বলবে এখন নিশ্চয়ই? 
-- হ্যাঁ,মানে...এটাই কি বড় না?

রুদমিলা শব্দ করে হাসলেন,তাচ্ছিল্যের হাসি।ভিনা পুরো শরীর কেঁপে উঠলো।পুরো ভার্সিটি রুদমিলার যে রূপে ভয়ে সোজা হয়ে থাকে,সে রূপের পূর্ণ প্রকাশ আজকে হবে।অবশ্য জানতো এমন কিছুই হবে।কিন্তু এই আগুনের দহন যে প্রারম্ভ কালেই অসহনীয় হয়ে উঠবে,সেটা ঠাওর করতে পারেনি।

-- নিজের বাবার অসুস্থতার এবং অন্য মানুষের সঙ্গে সেক্স করার কী সম্পর্ক?তাও আবার বিদেশ বিভুইয়ে যেয়ে? 

ভিনার কান লাল হয়ে গেলো।রুদমিলা বয়স্ক মানুষ,এমন লাগামহীন কথা অনায়াসে বলে দিচ্ছেন যে ভিনার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।

-- ম্যাম...আসলে বিষয়টা হলো সোশ্যাল সিকিউরিটি। 
-- বাসা থেকে আগে পালিয়েছিলে নাকি?
-- ন..না..
-- সেটাই তো।পালালে তো এখন ভার্সিটিতে পড়তে পারতে না,ধুম ধাম বের হতে পারতে না।তো হটাৎ তোমার বাবার মাথায় সিকিউরিটির কথা চারা দিয়ে উঠলো কেন?তুমি কি পঙ্গু হয়ে গেছো?
-- এটা তো স্টেরিওটাইপ...ভাঙ্গা কি এত সোজা?
-- রাবিশ!

রুদমিলা চাপা চিৎকার দিলেন।ভিনা শ্বাস আটকে বসে রইলো।পানির পিপাসায় গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে পাশে রাখা এ্যকুরিয়ামে ডুব দিতে। অনেক সাহস নিয়ে ভিনা মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলো রুদমিলা ওর দিকেই তাকিয়ে আছেন।সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে রাখলো।

-- কথা বলছো না কেন?কী হয়েছে?শুনাও...নিজের মাহাত্ম্য এবং জ্ঞানের বাণী শুনাও।এইযে আমি বসে আছি তীর্থের কাকের মতো।দয়ার জননী তার ত্যাগের কথা আমাকে শুনিয়ে ধন্য করুক।

ভিনা মিনমিন করে বললো-
-- একটু শান্ত হোন...
-- আপনি..এখন আপনিতে এসে পরেছে!বিয়ে ঠিক করে এনগেজমেন্ট করে এসে এখন আমাকে জানানোর দরকার কী?ফর্মালিটি? ওসব ফর্মালিটির ধার আমি ধারিনা।

ভিনা এবার মৌনতাকেই বেছে নেয়া ভালো মনে করলো।রুদমিলা চলে গেলেন নিজের ঘরে,ঠাশ করে দরজা বন্ধ করে দিলেন।নিজের মেয়ে সুহৃদা যখন মায়ের অসম্ভব কষ্টের দুই দশকের কথা বেমালুম ভুলে নিজের জীবন সাজিয়ে নিয়েছিলো,তখন তিনি এই ব্যস্ত পৃথিবীতে একদম একা হয়ে গিয়েছিলেন।ভিনার সাথে পরিচয় হওয়ার পর,তিনি অবচেতন মনেই ভিনার ক্ষেত্রে মাতৃত্বের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।তবে এবার ও তার মন ভাঙলো।এবারো তিনি জানতে পারলেন না তার মেয়েদের জীবনে কী হচ্ছে।এত এত বিদ্যা বৈভবের মাঝেও নিজেকে খুব ছোট এবং উপেক্ষিত মনে হচ্ছে।চোখের কোণে পানি মুছে তিনি চশমা পাশে রাখলেন,খানিক বাদে ঘুমিয়ে পরলেন নিজের অজান্তে।

রুদমিলা যখন জেগেছেন,তখন ঘড়িতে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা বাজে।ভিনা দুপুরে এসেছিলো,মেয়েটাকে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে চলে এসেছিলেন রাগের মাথায়।যখন দরজা খুলে বের হয়ে চমকে গেলেন রীতিমতো,ভিনা তখনো আছে ড্রয়িং রুমে।সোফায় হেলান দিয়ে বেকায়দায় ঘুমিয়ে পরেছে।রুদমিলা মিশ্র অনুভূতি নিয়ে বসে পরলেন পাশে।নিজের আগের আচরণের জন্য খারাপ লাগছে।কিন্তু করবেন কী?কত পরিকল্পনা ছিলো ভিনাকে নিয়ে।ব্রাইট একটা স্টুডেন্ট,অনায়াসে মেইনস্ট্রিম জবে নিজের ভালো ক্যারিয়ার করতে পারতো,তখনই ভালো দেখে বিয়েও করে ফেলতে পারতো।অথচ বাবার ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের কাছে সব তুচ্ছ হয়ে গেলো।হটাৎ ই রুদমিলার মনে হলো,নিজের মেয়েকেই অধিকারে আটকাতে পারেননি,সেখানে ভিনার সাথে সেই অর্থে তার কোনো সম্পর্ক নেই।কোন অধিকারে এসব করছেন তিনি?আর ভিনাই বা কেন স্বেচ্ছায় এসব সহ্য করে যাচ্ছে?
রুদমিলা আর রান্নাঘরে গেলেন না।খাবার অর্ডার দিয়ে ভিনাকে ডেকে তুললেন।

-- বাসায় যাবে না?রাত হয়ে গেছে।ডিনার করে চলে যেও।
-- আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি।
-- ছেলে কী করে?
-- আইটি সেক্টরে জব করে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার,অস্ট্রেলিয়ায় সেটেল।
-- হুমম....বাসায় যেয়ে ছেলের সব ডিটেইলস সহ বায়োডাটা পাঠাবে আমাকে।মনে থাকবে তো?
-- কালকে দিতে পারবো।আসলে বাবার পরিচিতর মধ্যে হচ্ছে তো,বায়োডাটা ওভাবে নেয়া হয়নি।
-- ইরেস্পন্সিবল!
-- স্যরি ম্যাম।
-- হয়েছে...যা বলেছি তাই করবে।আমি ছেলের ব্যাপারে সব ইনফরমেশন চাই।আর হ্যাঁ,পারলে বিয়ের তারিখ পিছানোর চেষ্টা করো।
-- বিয়ের তারিখ পেছানো সম্ভব হবে নাকি বলতে পারছি না,কারণ সে আবার অস্ট্রেলিয়া ফেরৎ যাবে।
-- আর তুমি?শ্বশুর শ্বাশুরির ঠ্যাং ধরে বসে থাকবে তাইতো?আর যদি বেশি ইমোশনাল হয়ে ভেসেই যাও,দুইদিন পর বাচ্চা কোলে দেখা যাবে।ব্যাস!এইটুকু জীবন?আমি বলছিনা সংসার করা ভালো না।কিন্তু হাজবেন্ড ওয়াইড আলাদা থেকে কোন জাতের সংসার হয় এটা আমার জানা নেই।শ্বশুরবাড়ির লোকজন তোমার সংসার জীবনের অংশ হবে,কিন্তু আসল সংসার হয় স্বামী স্ত্রীর মাঝে। বিপদে পরো,এই শ্বশুরবাড়ি তোমাকে দেখবে না তখন।সেই একাই থাকতে হবে তোমাকে।আমি দেখেছি তো আমি....

রুদমিলা থেমে গেলেন।বড় করে নিঃশ্বাস ফেলে বললেন-
-- আমি চাইনা তোমার জীবন কঠিন হোক।একটা কোম্পানি এমপ্লয় নিলেও বায়োডাটায় সব ইনফরমেশন চেক করে নেয়।আর এখানে তোমার বিয়ে হচ্ছে।একটু বুঝে শুনে স্টেপ নাও।

ভিনা সায় দিলো মাথা নাড়িয়ে ।
এরপর রুদমিলা এক কঠিন প্রশ্ন করে বসলেন।

-- ভিনা,ডু ইউ হ্যাভ এনি আনওয়ান্টেড পাস্ট?
ভিনা শব্দে কোনো উত্তর দিলো না।রুদমিলা বুঝে গেলেন সবই।এরপর ইচ্ছা করেই কথা বাড়ালেন না।
রাতের খাবার খেয়ে রুদমিলার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে আগালো।শুভাকাঙ্ক্ষী সবাই এই বিয়েতে অমত করছে।কিন্তু জীবনের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী তো তার বাবা সোহেল,সে কি কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে?সন্তান হিসেবে তাও একটু জোর গলায় দ্বিমত করতে পারতো হয়ত।কিন্তু মাহভিনের দায়িত্ব নিয়ে নেয়ার জন্য এখন ভিনার এখানে কিছুই বলার মুখ নেই।আর কতই বা বোঝা হবে।সবকিছুর পর ও একটা কিন্তু রয়ে যায়।ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বারবার বলছে কোথাও একটা সমস্যা রয়েছে।এ বিয়েতে পুরোপুরি মন সায় দিচ্ছে না।হয়ত এই সন্দেহের জন্যই ভিনা অনেক কষ্টে নানা অজুহাতে বায়োডাটা সংগ্রহ করে পরদিনই রুদমিলাকে পাঠিয়ে দিলো।

____________

পৃথিবীটা অনেক ছোট।যত দিন যাচ্ছে,ভিনার এই উপলব্ধি তত তীব্র হচ্ছে।আসলে পৃথিবী ছোট নাকি জীবনের পরিধিই ছোট সেটা নিয়ে সংশয় আছে।কারণ জীবনের পরিধিই আমাদের পৃথিবী।আসলে অল্প কিছু মানুষ নিয়ে আমাদের জীবন।বাকী সব মানুষ সেই অল্প সংখ্যক মানুষের সাথে আমাদের সম্পর্কের সমীকরণ নির্ধারণ করে,সেটাকে প্রভাবিত করে। সাইফুল হক নোমান নামের এই ভদ্রলোক নির্ধারক শ্রেণির মানুষের একজন।ভিনার লিটারেচার ক্লাবের এক্সকিউটিভ জিনিয়ার চাচাতো ভাই উনি।তার কথা টানার কারণ হলো,তিনি আইবিএ তে পড়াশোনা করেছেন। যাবিরের সাথে ভিনার সম্পর্ক তীব্র অনুভূতি এবং আবেগে ঘেরা থাকলেও যোগাযোগ নগণ্য ছিলো।হয়ত দুইজনের জীবন খুব একটা সুন্দর সুখময় ছিলোনা দেখেই পরিবার বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে কখনো কথা হয়নি।যাবিরের স্বভাব ভিনার মতই ছিলো।ইন্ট্রোভার্ট থাকায় বন্ধুবান্ধব একদম ছিলো না বললেই চলে।পিতৃহীন এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় উল্লেখযোগ্য আত্মীয় স্বজন ও ছিলো না।নিজের পারিবারিক অবস্থা যাবিরের পীড়াদায়ক জায়গার একটি ছিলো। একি চিত্র ছিলো ভিনার ক্ষেত্রেও।বন্ধুহীন অস্বাভাবিক পারিবারিক জীবন নিয়ে চলা দুইটি মানুষ নিজেদের আলাদা জগৎ তৈরি করে নিয়েছিলো।ভিনার আজও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়,এমন মানুষ কীভাবে এত কঠিন সময়ে হাত ছেড়ে দিলো,তাও প্রতারণা করে! 

নাদিমের সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পরই ভিনা যাবিরকে খুঁজে বের করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। যাবিরের একমাত্র বন্ধু যাকে ভিনা চিনতো,সে হলো তানভির।নওমির সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর ভিনার রুচি হয়নি তানভিরের সাথে যোগাযোগ করার।এর জন্য ভিনা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নিতে লাগলো।পরিচিত,অল্প পরিচিত সবার কাছেই ইন্ডিরেক্টলি জিজ্ঞেস করতো আইবিএ তে পড়াশোনা করেছে এমন কাউকে চিনে কিনা।এভাবেই জিনিয়ার চাচাতো ভাই সাইফুলের খোঁজ পাওয়া।সাইফুল যাবিরের দুই ব্যাচ সিনিয়র। বর্তমানে ভালো জায়গায় চাকরি করছেন।প্রথম দুইদিন ভিনা ক্যারিয়ার বিষয়ক আলোচনাই করে গেলো।তৃতীয় দিন কথা প্রসঙ্গে যাবিরের কথা তুললো।ভিনা ধরেই নিয়েছিলো সাইফুল হয়ত যাবিরের ব্যাপারে কিছুই জানবে না।কারণ পরিচিতদের থেকে আইবিএ তে পড়া যাদের সাথেই কথা বলেছে,কেউই কিছু বলতে পারেনি।কিন্তু ভিনাকে ভুল প্রমাণ করে সাইফুল ইতিবাচক উত্তর দিলেন।শুধু তাইনা,কথা বলে ভিনা বুঝতে পেরেছে সে যাবিরের ব্যাপারে অনেক কিছুই জানেন।কিন্তু অতিরিক্ত প্রশ্ন করতে গেলে নিজের অতীত টেনে আনা লাগবে,তাই তৃতীয় দিনে আলাপ সংক্ষিপ্ত রাখলো।নিজেকে প্রস্তুত করে এরপর একদিন যাবিরের ব্যাপারে আবার জিজ্ঞেস করলো। কারণ হিসেবে বললো,নিজের কাজিনের বন্ধু ছিলো।কয়েকবার দেখা হয়েছিলো,ভালো সম্পর্ক হয়েছিলো।এরপর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়,তাই খোঁজ নেয়া।ভাগ্য ভালো,সাইফুল কথা বিশ্বাস করেছেন।ব্যস্ত থাকায় চতুর্থ দিন সাইফুলের দিক থেকেই কথোপকথন শেষ হয়েছে।আজ তিনদিন পর ভিনা আবার নক দিলো।আজকে নিশ্চিত কিছু জানা যাবে।সাইফুল রিপ্লাই দিলেন-

-- আমাকে রাতের দিকে অডিও কল দাও।আমি এখন বাইরে আছি।
-- ঠিকাছে ভাইয়া।কোনো সমস্যা নেই।

ভিনা চাপা উত্তেজনা অপেক্ষা করলো নিয়ে রাত পর্যন্ত ।শেষে সাড়ে নয়টায় ফোন দিলো তাকে।
কথা হলো প্রায় বত্রিশ মিনিটের মতো।ফোন রেখে ভিনা মূর্তির মতো বসে রইলো কিছুক্ষণ। যেখানে জট খোলার কথা,যাবিরের খোঁজ পাওয়ার কথা সেখানে জট লেগে গেছে আরো।প্রশ্নের উত্তরের পরিবর্তে আরো প্রশ্ন যুক্ত হয়ে গেছে।

যাবির সাইফুলের জুনিয়র ছিলো,ছোট ভাই হিসেবে সাইফুল যাবিরকে অনেক স্নেহ করতো।যাবিরের স্ট্রাগলের কারণেই মূলত যাবিরের প্রতি তার এত টান ছিলো।এই কম্পিটিশনে ভলান্টারি করার সময় তার আর যাবিরের পরিচয়। দায়িত্বশীল এবং পরিশ্রমী এমন মানুষ সাইফুল জীবনে কমই দেখেছিলেন।এভাবেই যাবিরের সাথে ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিলো তার।যাবির প্রায়ই ফিনানশিয়াল ক্রাইসিসের ভেতর দিয়ে যেতো।অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খরচ একেক মাসে একেকরকম থাকতো।যখন টানাটানি তে পরতো,তখন টিউশনির সংখ্যা বাড়িয়ে নিতো,পার্ট টাইম কোচিং এ ক্লাস করতো। সাইফুল যখনই বুঝতে পারতেন,সাহায্য করতে চাইতেন।কিন্তু যাবিরের আত্মসম্মানবোধ অনেক প্রখর ছিলো। কারো কাছ থেকে অনুগ্রহ নেয়া পছন্দ করতো না।চাপা স্বভাবের হওয়ায় নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যাবির কখনোই খোলাসা করে বলেনি।কিন্তু এতটুকু জানতে পেরেছিলেন,মায়ের চিকিৎসার জন্য পরিচিত আত্মীয় থেকে সাহায্য নিতে হতো।যাবিরের স্বপ্ন ছিলো এই হাত পাতা থেকে মুক্তি পাওয়া।সবসময় চাপে থাকার কারণে গতানুগতিক ভার্সিটির ছেলে মেয়েদের মতো ওর জীবন ছিলো না,ঘোরাফেরা আড্ডা দেয়া এগুলো কিছুই করতে দেখেনি সাইফুল।আর ক্যারেক্টর ও অনেক ভালো ছিলো,নিজের বোনের জন্য একবার ভেবেছিলেন যাবিরের কথা।প্রস্তাব ও দিয়েছেন।তখন জানতে পেরেছেন প্রেমিকা আছে যাবিরের।এরপর নিজের গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ হওয়ার পর যোগাযোগ কমে যায়। এরপর যখন কথা বলতে গিয়েছিলেন,আর খুঁজে পাননি।পরে অনেক কষ্টে জানতে পেরেছিলেন,যাবির গ্র‍্যাজুয়েশন কম্পলিট করেনি।এমনকি যাবিরের মা মারা যাওয়ার পর কলোনির বাসাও ছেড়ে দিতে হয়েছে।মেয়েঘটিত কারণে দীর্ঘদিন জেলেও ছিলো।বিয়ের নামে প্রতারণা এবং শারীরিক নির্যাতনের মামলা ছিলো।নারী নির্যাতনের মামলা আনবেইলেবেল,তাই জামিন হয়নি।যার সাথে প্রেম ছিলো,সেই নাকি মামলা করেছে।এমনকি ঐ মেয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অন্য মেয়ের জন্য নাকি খরচ করতো।মেয়ের দাবী টাকা পয়সার জন্যই যাবির প্রেমের নাটক করেছিলো।পরে এর বড় মাশুল গুণতে হয়েছে ওকে।জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে নাকি জানা নেই।আর যদি পেয়েও থাকে,কোথায় আছে সেটা জানা সম্ভব না।সবশেষে সাইফুল এটাই বলেছেন,একমাত্র যাবির ছাড়া সত্যি কেউ জানেনা।তবে এটা নিশ্চিত যে যাবির দুইজন মেয়ের সাথে সম্পর্কে ছিলো।কাদের সাথে ছিলো এটা তিনি জানেন না।
কিন্তু ভিনা জানে।আর জানে দেখেই ভেতরটা চুরমার হয়ে যায়।
.
.
.
চলবে.......................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp