প্রহেলিকা - পর্ব ৩৪ - আশফি শেহরীন চিত্রা - ধারাবাহিক গল্প


দুদিন হলো লন্ডন থেকে ফিরেছে জেহের আর ইনশিতা। দুইদিনে অনেক কিছুই চেঞ্জড। ইনশিতা নিচে যেতে চাইলে জেহের আগের মতো বাঁধা দেয় না। জেসমিন চৌধুরীর সাথে কথা বললেও রাগ করে না। শুধু ইনশিতাকে চোখে চোখে রাখছে। ইনশিতার মহানন্দে দিন কাটাচ্ছে। খেয়াল খুশি মতো যা ইচ্ছা করতে পারছে, তবে অবশ্য জেহেরের অপছন্দের কিছু করছে না। এই দুইদিনে এসব চেঞ্জ হলেও জেহেরের নিচে আসাটা চেঞ্জ করতে পারল না। সে আগের মতো উপরেই ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ করে। সাথে ইনশিতাকেও করতে হয়। ইনশিতা চাইতো জেহের সকলের সাথে মিলেমিশে থাক। জেহের সময় লাগবে বলে সময় পার করছে। অথচ সেই সময়টা এখনো আসছে না। ইনশিতা জোর করতে চাইলে জেহের বলে, 'তুমি এত কিছু করছো আমি তোমায় বাঁধা দিয়েছি?' তারপর আর কিছু বলতে পারে না ইনশিতা। 

আজ ইনশিতা পণ নিয়েছে জেহেরকে নিচে খাওয়াবেই। রাতে জেহের যখন ল্যাপটপে ব্যস্ত ইনশিতা এসে পাশে দাঁড়ায়। 

-“চলুন।”

জেহের ল্যাপটপে চোখ রেখেই জিজ্ঞেস করে, 

-“কোথায়?”

-“খেতে চলুন।”

-“মেইড নিয়ে আসবে।”

-“এখানে না, নিচে খেতে চলুন।”

জেহের প্রকাশভঙ্গী আগের ন্যায় রেখেই বলল, 

-“রোজ! তোমাকে একটা কথা কতবার বলতে হবে?”

ইনশিতা এবার রেগে গিয়ে ল্যাপটপ বন্ধ করে দিল। ভ্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে তাকায় জেহের। 

-“সবাই মিলে একসাথে খেলে সমস্যা কোথায়? মুখ কি ক্ষয় হয়ে যাবে নাকি? চলুন, আজ সবাই মিলে খাব। অনেক মজা হবে। চলুন চলুন।”

-“নো নিড।”

ইনশিতা মুখটাকে মুহুর্তেই কাঁদো কাঁদো বানিয়ে ফেলল। 

-“তার মানে আপনার কাছে আমার ইচ্ছার কোনো মূল্য নেই?”

-“সেটা কখন বললাম?”

-“না বললেও বুঝে গেছি। আপনি যদি সত্যি ইচ্ছার মূল্য দিতেন তাহলে ঠিকই আমার কথাটা রাখতেন। জানি তো, আমি সব জানি, এখন পুরোনো হয়ে গেছি কিনা। তাই এখন আর দাম দিচ্ছেন না। যখন থাকব না তখন বুঝবেন।”

জেহের ‌উঠে দাঁড়াল। চোখে মুখে কাঠিন্যতা এনে বলল, 

-“থাকব না মানে কী? কোথায় যাবে তুমি? আর এসব কী ধরনের কথাবার্তা?"

ইনশিতা জিভ কাটল। মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। জেহের এই ধরনের কথা একেবারেই পছন্দ করে না। আর সেটাই আজ বলে ফেলল ইনশিতা। 

-“ম-মানে, আসলে, কীভাবে যে বলে ফেললাম, মানে...”

তোতলাতে থাকল সে। কী বলবে ভেবে পায় না। জেহের ইনশিতার খুব কাছাকাছি এগিয়ে এসে ঠোঁট চেপে ধরল। হিসহিসিয়ে বলল, 

-“এই ধরনের কথা যদি আর কোনোদিনও শুনেছি তাহলে...”

কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ল্যাপটপ নিয়ে ডিভানে বসে পড়ল সে। ইনশিতা নিজের কপাল নিজেই চাপড়ায়। ভেবেছিল নিজে রাগ করে জেহেরকে ব্ল্যাকমেইল করবে, অথচ হয়েছে উল্টো। ইনশিতা অনেক আকুতি মিনতি করল। জেহের শুনল না। রাগ করে ইনশিতা রুম থেকে চলে যেতে নিলে মেইড আসে খাবার দিতে। 

-“আপনার স্যারকেই খাবার দিন, আমি খাব না। আমার জন্য যেগুলো এনেছেন সেগুলো রেখে আসুন।”

জেহের তীক্ষ্ণ নজরে চেয়ে বলে, 

-“দুজনের জন্যই খাবার সাজাও।”

রাগী কন্ঠে ইনশিতা বলে, 

-“বলছিনা খাব না।”

জেহের মেইডকে ইশারা দেয় খাবার রেখে চলে যেতে। 

-“এসো।”

-“না।”

জেহের হাত ধরে টেনে কোলে বসালেও ইনশিতা মুখ খুলল না। সে কিছুতেই খাবে না। মেজাজ খারাপ হলো জেহেরের। 

-“খাচ্ছ না কেন?”

-“নিচে গেলে খাব।”

-“বলেছি না নিচে যাব না।”

-“তাহলে আমিও খাব না।”

শেষমেষ বাধ্য হয়েই জেহেরকে নিচে যেতে হয়। জেসমিন চৌধুরী বেজায় খুশি হলেন। জেহের গম্ভীর মুখে চেয়ারে বসল। ইনশিতা খুশিতে গদগদ। জেহের তাকাল রোজের দিকে। রোজের হাসি দেখতে তার ভালো লাগে। খাওয়ার মাঝে জেসমিন আফজালকে উদ্দেশ্য করে বলে,

-“হ্যাঁ গো! জিহাদ আর জেবা আসবে কবে? ওরা থাকলে ফ্যামিলি ফুল হয়ে যেত? কবে আসবে কিছু বলেছে?”

আফজাল খাওয়া রেখে ইনশিতার দিকে তাকাল। ইনশিতা ঢোক গিলল। জেহের না কোনো কাণ্ড ঘটায়। জিহাদ আর জেবার নাম শুনেই জেহেরের পিত্তি জ্বলে উঠল। গ্লাসটা জোরে ধাক্কা দিয়ে উঁচু কন্ঠে বলে, 

-“রাস্কেলদের কথা উঠছে কেন এখানে?”

-“জেহের? ওরা তোমার সিবলিংস।”

-“সিবলিংস মাই ফুট! যারা আমাকে মারতে চেয়েছে তাদের প্রতি এত দরদ উথলে পড়ছে কেন আপনার? নাকি আমাকে মারার প্ল্যানের সাথে আপনিও জড়িত?”

ইনশিতা জামা খামচে ধরে আছে। এখন তো মা সব জেনে যাবে। জেসমিন চৌধুরী অবাক হলেন। 

-“কীসের মারার কথা বলছো? আর কীসের প্ল্যান?”

জেহের উত্তর দিলো না। রাগে গজগজ করতে করতে প্লেট ছুঁড়ে উঠে গেল। ইনশিতার গলা দিয়ে খাবার নামছে না। আফজাল চোখের ইশারায় ইনশিতাকেও উঠে যেতে বললেন। ইনশিতা তাই করল। জেসমিন চৌধুরী উত্তেজিত হয়ে বললেন, 

-“এই, কী বলছে জেহের? ওকে মারার কথা, কীসব প্ল্যান? কী হলো? চুপ করে আছ যে? বলো না।”

আফজাল দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। জেসমিনকে শেষ পর্যন্ত সব বলতেই হবে। 

জেসমিন চৌধুরী সব শুনে থমকে গেলেন। আসলেই কী তার ছেলেমেয়েরা এতটা জঘন্য? আফজাল বললেন, 

-“জেবার খোঁজ চলছে। আর জিহাদ জেলে।”

-“আমাকে এতটা দিন জানাওনি কেন?”

-“তুমি কষ্ট পাবে বলেই জানানো হয়নি।”

-“এখন কী আমি কষ্ট কম পাচ্ছি?”

আফজাল নিরুত্তর। 

.

.

জেহের বারান্দায় দাঁড়িয়ে। ইনশিতা কাঁচের দেয়ালের এপাশে। জেহের যে পরিমাণ রেগে আছে তাতে তার সামনে যেতে ভয় লাগছে তার। ইনশিতা গেল না। সোফায় বসে থাকে। কিন্তু অস্থির মন মানতে চায় না। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যায় জেহের নিকট। মৃদু স্বরে জেহেরকে ডাকে। জেহের মূর্তির মতোই দাঁড়িয়ে থাকে। জেহেরের কাঁধে হাত রেখে জেহেরকে তার দিকে ফেরায় ইনশিতা। জেহেরের গম্ভীর মুখে কেমন শোকের ছায়া। মায়া লাগে ইনশিতার। বারান্দার সোফায় জেহেরকে বসিয়ে নিজেও বসে পড়ে। 

-“মা এতদিন এসব কিছুই জানত না তাই ওদের ব্যাপারে বলেছে। এটা স্বাভাবিক।”

-....

-“এভাবে চুপ থাকবেন না। কিছু বলুন না।”

-....

ইনশিতাও খানিকক্ষণ নীরব। জেহের নিজে থেকেই দাঁতে দাঁত পিষে বলল, 

-“এই জন্যই ওনাকে আমি মা মানতে চাইনি। সবসময় খালি জিহাদ আর জেবা।”

-“উনি তো আর জানতেন না তাই না? এখন যখন জেনেছেন তখন তো আর ওদের মেনেও নিবে না। আর আপনি দূরে দূরে থাকছেন কেন? এখন আপনি ছাড়া আর কে আছে মায়ের বলুন? আপনিও যদি মুখ ফিরিয়ে নেন তাহলে মা কোথায় যাবে? জেহের, বাচ্চামো করবেন না। আপনার মায়ের মৃত্যুর জন্য উনি দোষী না সেটা আমি আগেও বুঝিয়েছি। কেন মেনে নিতে পারছেন না?”

জেহের উঠে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে ইনশিতার কানে একটা কথাই ভেসে আসে, 

-“মেনে নেব। খুব শীঘ্রই।”

-“কোথায় যাচ্ছেন? জেহের?”

ইনশিতা জেহেরকে কোথাও দেখল না। ইনশিতার উপর রাগ করে বাড়ি থেকে বের হলো কিনা? নিচে চলে যায় ইনশিতা। ড্রয়িংরুমে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে লনে চলে যায়। আবার রুমে এসে খাটে গড়াগড়ি খায়। দশটা বেজে গেছে এখনো জেহেরের খবর নেই? তখনই টুং করে ইনশিতার মোবাইলে মেসেজ আসে। যেটাতে জেহের তাকে স্টাডির পাশের রুমটায় যেতে বলেছে। খানিকটা অবাক হয় ইনশিতা। ওখানে যেতে বলছে কেন? আর জেহের ওখানে কী করছে? 

ভাবতে ভাবতে স্টাডির পাশের রুমে চলে এলো। এই রুমটায় সে কখনো আসেনি। এমনকি বাড়ির এই সাইডটাও ভালোভাবে ঘোরা হয়নি। অনেক বড় বাড়ি তাও! ইনশিতা রুমে ঢুকেই দেখে চারিদিক অন্ধকার। ভয় পায় সে। মোবাইলটাও রেখে এসেছে। সেই ক্ষণেই একটা ছোট্ট বাতি জ্বলে উঠে। আলো খুবই ক্ষীণ। ক্ষীণ আলোয় পুরো রুমটা দেখতে না পেলেও দেখতে পায় একটা শাড়ি আর চিরকুট। শাড়ি হাতে চিরকুটে চোখ বুলায় সে। 'শাড়িটা পরে নাও দ্রুত। আর হ্যাঁ, যেখানে আছো সেখানেই চেঞ্জ করবে। আমি নেই যে দেখব।' 

ইনশিতার বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়। শাড়ি পরবে কেন এই সময়ে? তবুও, জেহের যখন বলেছে তখন তো পরতেই হবে। চোখ বুলায় চারপাশটায়। না, চারিদিক অন্ধকার। চেঞ্জ করলে সমস্যা হবে না। মৃদু আলোর মাঝেই ইনশিতা শাড়িটা পরে নেয়। শাড়িটা খুবই সুন্দর। পাতলা ফিনফিনের ব্ল্যাক শাড়ি। আয়না না পাওয়ায় বেশ সময় নিয়ে শাড়ি পরে সে। আঁচলটা যখন তুলল তখন হঠাৎ আলো জ্বলে উঠল। চমকায় ইনশিতা। রুমে চোখ বুলায় সে। পুরো রুমটায় কালো গোলাপ দিয়ে মোড়ানো। অ্যাশ রঙা বেডশীটের উপরে কালো পাপড়ি ছড়িয়ে। রুমের কোণায় কোণায় টবে রাখা গোলাপ। উপরে গোল্ডেন ফেইরি লাইট আলো ছড়াচ্ছে। পুরো রুমটা চোখ ধাঁধানো সুন্দর। মোহনীয় লাগছে খুব। 

-“হেই মাই বিউটিফুল লেডি!”

পুরুষালী কন্ঠের আওয়াজ পেয়ে চকিতে পেছনে তাকায় ইনশিতা। দেখে তারই পেছনের সোফায় আয়েশী ভঙ্গিতে বসে আছে জেহের। জেহেরকে দেখেই কয়েকটা হার্টবিট মিস করে সে। কালো প্যান্ট আর শার্টে মারাত্মক লাগছে জেহেরকে। স্বভাবসুলভ ভাবে উপরের বোতাম কয়েকটা খোলা। কালো রঙে জেহের ফর্সা শরীর যেন আরো বেশি ফর্সা দেখাচ্ছে। শার্টটা একদম ফিট করা। সিল্কি চুল কপালে ছড়িয়ে আছে। বুদ্ধিদীপ্ত নীল চোখ জোড়া জ্বলজ্বল করছে। ঠোঁটে মন ভুলানো হাসি। 

জেহেরকে গভীর ভাবে এই প্রথম পর্যবেক্ষণে করছে সে। ইনশিতার হুট করেই গরম লাগতে শুরু করল। কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে যেন। মাথা ঝিমঝিম করছে। বারবার ঢোক গিলছে। বড় বড় শ্বাস ফেলছে সে। এত গরম লাগছে কেন? এসি কী চলছে না?

জেহের ধীরে পায়ে ইনশিতার কাছে এসে দাঁড়ায়। ইনশিতা যেন তার নিজের মধ্যে নেই। হারিয়ে গেছে জেহেরের মাঝে। জেহের ইনশিতার চুলগুলো কপালের থেকে সরিয়ে আলতো ছোঁয়া দেয়। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে কিছু একটা বলে। তাতেই যেন ঘোর কাটে ইনশিতার। চোখ মুখ কুঁচকে বলে, 

-“ছিঃ কী অসভ্য আপনি!”

জেহের ঠোঁট কামড়ে হাসে। মনে মনে বলে,‘আর কিছুক্ষণ পর অসভ্য কেন, ফাজিল বেয়াদব বলতেও বাদ রাখবে না।’

-“তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।”

ইনশিতা উৎফুল্লের সহিত বলে, 

-“কী?”

-“এখন না, কালকে বলব।”

-“ধুর!”

ইনশিতার হঠাৎ কিছু মনে পড়ল এমনভাবে বলল, 

-“এই এই এই, আমি যে চেঞ্জ করছিলাম আপনি কোথায় ছিলেন? চেঞ্জ করার পরপরই তো আপনাকে সোফায় দেখতে পাই।”

-“তোমার প্রশ্নের মধ্যেই উত্তর লুকিয়ে।”

কটমট করে ইনশিতা। মৃদু আলোয় সে যেভাবে চেঞ্জ করেছিল সবটা দেখেছে জেহের! 

-“শুধু অসভ্য না, আপনি হলেন গ্রেট লুচু। লজ্জা করে না মিথ্যা বলতে? ছিঃ ছিঃ ছিঃ! আপনি কিনা আমার চেঞ্জ করা দেখলেন? ছিঃ!”

ইনশিতা রাগ আর লজ্জায় দুহাতে মুখ ঢাকে। জেহের ইনশিতার হাত সরিয়ে অস্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করে, 

-“একটু পর তো সবটা দেখে ফেলব।”

ইনশিতা বুঝতে না পেরে বলল, 

-“কী বললেন?”

-“তোমাকে আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে। অ্যাবসোল্যুটলি চার্মিং।”

নিমিষেই সব রাগ উড়ে গিয়ে দখল করে নিল এক রাশ লজ্জা। ইনশিতার মাথায় এবার আসলো এসব কেন সাজানো হলো। তাতে যেন লজ্জারা আরো জেঁকে ধরে। জেহের খানিকটা হেসে ইনশিতাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল। 

-“দেখো তো, ডেকোরেশনটা কেমন হয়েছে?”

ইনশিতার কাছে সুন্দর লাগলেও মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের করতে পারল না। 

-“এখনি এত লজ্জা? আর একটু পর লজ্জারা কোথায় যায় দেখি।”

ইনশিতা লজ্জিত ভঙ্গিতে হেসে জেহেরের বুকে কিল দিলো। জেহের ইনশিতাকে নিজের দিকে ফিরায়। দুহাতে ইনশিতার গাল আলতো করে ধরে। 

-“তাকাও আমার দিকে।”

ইনশিতা খিঁচে চোখ বন্ধ করে রয়। জেহের জোর করে না। রক্তিম আভাযুক্ত রোজের দিকে চেয়ে থাকে নিষ্পলক। জেহের ইনশিতার কানের কাছে ঠোঁট ঠেকিয়ে মৃদু আওয়াজে বলে, 

-“রোজ, আজ আমাদের ভালোবাসা প্রগাঢ় করার সময় হয়ে এসেছে। নতুন রূপে রাঙাতে হবে আমাদের ভালোবাসাকে।”

একটু থেমে বলল, 

-“মাই লাভ, মে আই?”

ইনশিতা জেহেরের শার্ট শক্ত করে খামচে বুকে মাথা ঠেকাল। জেহের পেয়ে গেছে তার উত্তর। বিজয়ের হাসি হাসল সে। এতটাদিন পর তার ভালোবাসাকে আজ নিজের করে পাবে। এই অনুভূতি বোঝানো সম্ভব না। শুধু মনের গহীন হতে অনুভব করতে হয়। ইনশিতাকে কোলে নিয়ে নেয় জেহের। 

রাত্রি বাড়তে থাকে, বাড়ে নিস্তব্ধতা। সাথে বাড়ে দুটো আত্মার, দুটো শরীরের, দুটো মনের নিবিড় আলিঙ্গন। দুজন দুজনার শরীরের ভাঁজে খুঁজে নেয় নতুন অধ্যায়। দেহে বয়ে যায় ভালোবাসার জোয়ার। শুরু হয় অন্য জগতে পাড়ি দেওয়া। যে জগতে নেই রাগ, হিংসা আর না কোনো তৃতীয় ব্যক্তি। আছে শুধু ভালোবাসা, ভালোবাসা এবং শুধুই ভালোবাসা। 
.
.
.
চলবে..............................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন