প্রেয়সী - পর্ব ০৫ - নাবিলা ইষ্ক - ধারাবাহিক গল্প


এই রেস্টুরেন্টের ছাঁদ'টা খুবই আকর্ষণীয়। মনোরঞ্জনের সঠিক স্থান। মুহুর্তে মন ফুরফুরে হওয়ার টনিক। রুবি আপুর জন্মদিনে আসা হয়েছিলো। সাধারণত রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারীর সাথে বড় চাচ্চুর ভালো সম্পর্ক। চাচ্চু মেয়রের পদ পাওয়ায়, বাড়িতে অনুষ্ঠান ধার্য্য করা হয়েছিলো। সেদিন স্বত্বাধিকারী বাড়ি আসেন, বউ আর মেয়ে নিয়ে। তারা দেখতে মাশাল্লাহ। সেদিনই তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়ে উঠে সকলের। আমাকে তো সেবা'র জন্মদিনের গিফট ও পাঠিয়েছেন। মা, মা ছাড়া একটা সেন্টেন্সও শেষ করেন না।
তাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান হলে, ইনভাইটেশন সহ সে চলে আসেন। 
এভাবে তার ব্যবহার খুবই ভদ্র। এইযে আপাতত সে বড় চাচ্চুর সাথে কথা বলছে। তো আবার ছোট চাচ্চুর সাথে। তন্ময় ভাইয়ের সাথেও যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলছে। 

খাওয়া শেষ হতেই রবিন ভাইকে ধীরে বললাম, 
--' ভাইয়া। চলো ছাঁদে যাই । '
ভাইয়া রাজি হলেন। সাথে রুবি আপু আর দীপ্তও আসলো। পূর্ববর্তীর তুলনায় এবার আরও আকর্ষণীয় ছাঁদটি। হরেকরকমের লাইটিংস দ্বারা ঝলমলে। বসার জন্য নানান ধরনের ডিজিটাল সিটিং বস্তু। উজ্জ্বলতম চাঁদের সম্পুর্ন অপরুপ দৃশ্য। ঘন্টার পর ঘন্টা এই চাঁদের দৃশ্যে, নিখোঁজ হওয়া যাবে। 
রুবি আপু ঝুলন্ত সোফায় বসে, সেলফোন আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। 
--' কয়েকটি ছবি তুল। সুন্দর ভাবে। '
 দু'তিন ভাবে তুলতেই, দীপ্ত বলল,
--' সবাই মিলে তুলি? '
যথাযথ সময় তন্ময় ভাই হাজির। সাথে তার সেই ভদ্রলোক বন্ধু। ভদ্রলোক এসে সবাইকে সালাম জানালেন। রবিন ভাইয়ের সাথে বেশ কথা বললেন। মনে হলো তারা পরিচিত। এবং তার নামও জানালেন, ইব্রাহিম হোসেন। 
আমি আঁড়চোখে তন্ময় ভাইয়ের দিক তাকালাম। সে কথা বলতে ব্যস্ত। এভাবে কখনও তাকে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। কারণ ইচ্ছেই জাগেনি। আমাকে এতটা জ্বালায় যে তাকে অসহ্য লাগে। তার ভালো দিক গুলো দেখেও যেমন দেখিনা। নিষ্ঠুরতার চুরান্ত সে। ভাবতে ভাবতে, চোখ গেলো রুবি আপুর উপর। তার পরিস্থিতি তেমন ঠিক লাগছেনা। অদ্ভুত ভাবে এতক্ষণের চঞ্চল মেয়েটি একদম শান্ত। আঁড়চোখে মাত্র আসা ভদ্রলোকটির দিক তাকাচ্ছেন। ভদ্রলোকও তাকাচ্ছেন। সন্দেহ হচ্ছে, তারা নিশ্চয়ই একে অপরকে জানেন। দুজনের চোখে চোখে কথা বলা, ধরা পড়ছে।
আমি আরও তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। গন্ডগোল তো রয়েছে এখানে।  
আমার গোয়েন্দাগিরি বন্ধ হলো দীপ্তর জন্য। বদমাইশটা সেই ভদ্রলোকের হাতে সেলফোন ধরিয়ে দিলেন, 
--' আমাদের একটা গ্রুপ ফোটো তুলে দিন প্লিজ। '
ভদ্রলোক হেসে ফেলল, 
--' শিয়র। '
দীপ্ত সামনে। আমি আর রুবি আপু দীপ্তর দু'পাশে। আমার পেছনে তন্ময় ভাই দাঁড়ালেন। রুবি আপুর পেছনে রবিন ভাই। রবিন ভাই রুবি আপুর কান টেনেও ছুবি তুললেন। অথচ, আমি ভয়ে এক ভাবেই দাঁড়িয়ে। বলতে ইচ্ছে হয়না, তাও না বলে উপায় নেই। সত্যি বলতে, আমি তন্ময় ভাইকে প্রচুর ভয় পাই। তার চোখে চোখ রেখে কখনও কথা বলেছি বলে মনে হয়না। সামনাসামনি খুবই সাহস দেখাই, কিন্তু আড়ালে আমি এক ভয়ংকর ভীতু। খেয়াল করলাম 
ভদ্রলোক, তন্ময় ভাইয়ের দিক তাকিয়ে ছবি তুলেই যাচ্ছেন। 
কেমন বৈচিত্রময়। ধুর, ভাবলাম আর তুলবো না। 
তখনই কোমরে স্পর্শ পেলাম। শ্বাস আটঁকে, আমি হতবাক চোখে তন্ময় ভাইয়ের দিক তাকালাম। সে যথাযথ পূর্ব হতেই আমার দিক তাকিয়ে। সরতে চাইলে সে শক্ত ভাবে ধরলেন। ভয়ে আশপাশে চোখ বুলালাম। রবিন ভাই, রুবি আপু, দীপ্ত ছবি তুলতে ব্যস্ত। আমার শরীর কাঁপছে। শ্বাস কিছুক্ষণের জন্য নিতেই ভুলে গিয়েছি মনে হলো। কপাল হতে ঘাম ছুটছে।
 রুবি আপু এদিকে আসতেই সে ছেড়ে দিলেন। এবং তার বন্ধুর দিক চলে গেলেন। আমার এমতাবস্থা দেখে রুবি আপু প্রশ্ন করলেন,
--' কী হয়েছে?' 
কোনোভাবে জবাব দিলাম,
--' কিছু না। ' 
আমার আর সাহস আসলো না একা দাঁড়ানোর। দ্রুত দীপ্তর কাছে চলে আসলাম। যতক্ষণ ছাঁদে ছিলাম, দীপ্তর হাত ধরে ঘুরেছি। একপর্যায়ে মনে আসলো, যাবার পথে কি আবারও তার সাথে যেতে হবে? না না। আমি গাড়িতে যাবো। এবার ভেবে রেখেছি দ্রুত গাড়িতে উঠে বসব। কারও কথা শুনবো না। 

আকাশ ধীরে ধীরে অন্ধকারে ছেয়ে যাচ্ছে। আলোকিত চাঁদ'টি লুকিয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি হবে নাকি? তখনই ছোট চাচ্চু আসলেন। এবং তাড়া লাগালেন, 
--' আকাশ ভালো না। বৃষ্টি হতে পারে। বাড়ি ফিরবো। '
যথাযথ সবাই নেমে গেলাম। যেকোনো মুহুর্তে বৃষ্টি হবে।
 এভাবে আমার বৃষ্টি অনেক পছন্দের। অন্যরকম পছন্দের অনুভূতি রয়েছে বৃষ্টিতে। ভাবলাম বাড়ি ফিরতে হবে দ্রুত। গোসল'টা বৃষ্টিতে করা যাবে তাহলে। 
গাড়িতে আগে উঠা হলোনা। কারণ, তন্ময় ভাই আগেই ওয়ার্নিং দিয়ে দিলেন, 
--' উঠবি না। '
গড়িতে বসে, দীপ্ত আমার দিক তাকিয়ে হেসেই চলেছে। এ এভাবে হাসছে কেন? রুবি আপু বললেন, 
--' অরু। রোমান্টিক ওয়েদার কিন্তু। অনুভব করতে করতে আয়। '
কীসব বেক্কল কথাবার্তা। রোমান্টিক ওয়েদার উপভোগ করতাম? তাও আবার জঙ্গলের সাথে? আমার উত্তরের পূর্বে দীপ্ত আবারও বলল,
--' ভাইয়া এটাকে বেঁচে দিয়ে আসবা। যত পাবা ফিফটি ফিফটি। '
তন্ময় ভাইয়ের জবাব নেই। অথচ, ওরা গাড়িতে বসে আমাকে নিয়ে মজা করছে। দিন কী আমার আসবে না? আসবে। 
বড় চাচ্চু যাবার আগে বলে গেলেন, 
--' দ্রুত আয়, বৃষ্টি হবে। '
গাড়ি চলে যাচ্ছে। আমি অসহায় চোখে তাকিয়ে রইলাম। কী হচ্ছে আমার সাথে? দীপ্ত বেশ হাত নাড়াচ্ছে। 
পরপর সেই ভদ্রলোকও চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। যাবার পথে বলে গেলেন,
--' আবার দেখা হবে। আসি। '
 বাহ। আচরণ তো ভালো। এখন লোকটা ভালো হলেই হচ্ছে। 

বাইক চলছে। এবার বাইকের গতি মাঝামাঝি। বেশিও না আবার কমও না। হালকা ঠান্ডা বাতাসে চুলগুলো দুলছে। আকাশ ডাকছে। সাথে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ৷ হলদে হেডলাইটের আলোয় বৃষ্টি এক অন্য রূপে রূপান্তরিত হয়েছে জেন। চারপাশ আবেদনময়ী বৈচিত্র্যে ঘিরে ফেলেছে। বৃষ্টির ফোঁটায় আশপাশের গাছগাছালি জীবন্ত হয়ে উঠেছে। আলোয় বৃষ্টির একেক ফোঁটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কেমন ধীরে শরীর ছুঁয়ে দিচ্ছে। আবার নিমিষেই শরীরে মিশে যাচ্ছে। 
আমি ধীরে এক হাত মেলে দিলাম। হাতের তালুতে বৃষ্টির ফোঁটা জমা হচ্ছে। সে কী সুন্দর দৃশ্য। সে কী অদ্ভুত সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্য সদা ছুঁতে ইচ্ছে হয়, প্রাণ ভরে দেখতে ইচ্ছে হয়। 
ছাতা হাতে মানুষজন চলে যাচ্ছে। গাড়ি চলাফেরা কমে আসছে। রাস্তা শুন্যে পরিনত হচ্ছে। হঠাৎ কয়েকজন দেখা যাচ্ছে, স্টলের পাশে ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে। 
 তন্ময় ভাইয়ের শার্ট অনেকাংশে ভিজে আছে। আমার তুলনায় সে বেশি ভিজেছে। বৃষ্টি ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে। শরীরে বৃষ্টির স্পর্শও তীব্র হচ্ছে। চোখ আদুরে ভাবে নিভে আসছে আমার। 
ঁক আরও কিছুটা যেতেই, এক বন্ধ হোটেলের সামনে বাইক থামালেন।
 ইশারা করলেন হোটেলের সামনে দাঁড়াতে। আমি যেতে নিয়েও থামলাম। তার সেলফোন, ওয়ালেট, ওয়াচ ভিজে যাচ্ছে। নষ্ট না হয়ে যাবে? আমার ব্যাগে রাখলে সুরক্ষিত থাকতো। সাহস সঞ্চয় করলাম, 
--' সেলফোন, ওয়ালেট ভিজে যাচ্ছে না? আমাকে দিতে পারেন। ব্যাগে রাখা যাবে। '
সে আমার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে, সত্যিই দিয়ে দিলেন। সে দিবে তার আসা আমি একদমই রাখিনি। সেলফোন ব্যাগে রাখতে রাখতে প্রশ্ন করলাম,
--' হ্যান্ড ওয়াচ? '
তার জবাব, 
--' ওয়াটারপ্রুফ। '
তাহলে আর কী। দ্রুত গিয়ে হোটেলের নিচে দাঁড়ালাম। ঠান্ডা লাগতে শুরু করেছে। কামিজ শরীরে মিশে আছে। আমি ওড়না মেলে পুরো শরীরে পেঁচিয়ে নিলাম। উফ। এই বৃষ্টির মাঝে সুন্দর এক ছবি তোলা যেতো। রুবি আপু থাকলে ভালো হতো। 
বাইক রেখে সেও এসে দাঁড়ালেন। দু'হাতে চুল ঠিক করলেন। এবং পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন৷ আমি চোখ ফিরিয়ে সামনে তাকালাম। 
রাস্তা নির্জন প্রায়। ছাতা হাতে কয়েকজন যাচ্ছে। আমি কিছুটা এগিয়ে হাত বৃষ্টি'তে দিলাম। হাতে বৃষ্টির পানি স্পর্শ করছে। একেকটা ফোঁটা এবার বরফ মনে হচ্ছে। কী সাংঘাতিক ঠান্ডা। 
 মন শীতে দিশেহারা হয়ে আছে। এই সময়ে হাতে কফি নিয়ে, বারান্দায় বসে থাকাটাও মজার। খেয়াল করলাম তন্ময় ভাই আমার দিক তাকিয়ে। আমি সাথে সাথে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। লজ্জায় গাল গরম হয়ে উঠছে এই ঠান্ডা'তেও। সাধারণত এই লজ্জাবোধ আমার আগে আসেনি। ইদানীং কেমন জেন হয়ে যাচ্ছি। 
তন্ময় ভাই একদম আমার পাশে দাঁড়িয়ে। মনেই হচ্ছে না সে বৃষ্টিতে আটকে। বরং সে খুবই সৌখিনতায় দাঁড়িয়ে। এদিকে আমি উশখুশ করছি। বাড়িতে ভিজতে পারলে, বেশি মজা হতো। রুবি আপু ভিজতো তারপর দীপ্ত। ইশ। 

সময় চলে যাচ্ছে। তাও বৃষ্টি থামার নাম নিচ্ছে না। ঠান্ডায় আমার হাঁচি উঠছে। তন্ময় ভাই আমার দিক তাকিয়ে। লাগাতার হাঁচি দেখে সে বললেন, 
--' ঠান্ডা লেগে যাবে। বৃষ্টি আপাতত থামবেনা। ভিজে যেতে পারবি? '
--' হু। '
 তারপর তীব্র বৃষ্টির মাঝে আবারও, বাইক চলতে শুরু 
করেছে ভেজা রাস্তায়৷ সাথে সাথে হালকা শুঁকানো শরীর, আবারও বৃষ্টির স্পর্শে ভিজে। ঠান্ডা বাতাস এবার শরীর কাঁপুনি দিচ্ছে। ভয়ানক শীতে, ঠোঁট রীতিমতো কাঁপছে। শরীর কাঁটা দিয়ে উঠেছে। অনেকক্ষণ যাবত ভেজা কাপড়ে ছিলাম বিদায়, এমন ভয়ানক শীত লাগছে। অথচ তন্ময় ভাইয়ের শরীর গরম। তার কাঁধে রাখা আমার হাত দুটো ঠান্ডা অনুভব পাচ্ছে না। তার কী শীত লাগছে না? তার ছোট ছোট চুল হতে পানি পড়ছে। শার্ট ভিজে চিপচিপে। শার্ট ভেদ করে তার শরীর দেখাচ্ছে। ফরসা শরীর। এহ। কী দেখছি। আস্তাগফিরুল্লাহ। কী ভাবছি। দ্রুত আবারও রাস্তায় তাকালাম। 
অনেক ঠান্ডা শীত, কিন্তু অনুভূতি গুলো খুবই নতুন। একদম বাজে অনুভূতি বলা যাবেনা। এটা জেন এক অজানা অনুভূতি। যা আগে কখনও উপভোগ করিনি। সম্পুর্ন ভিন্ন এবং অচেনা। 
 
বাড়িতে পৌঁছাতেই সকলের চেঁচামেচি। 
--' ভিজেছিস কেন? আশপাশে কি দাঁড়ানো যেতো না? 
জ্বর বাধলে কি অঘটনটাই না হবে। '
বড় মা এই আমাকে ধরছে তো এই তার ছেলেকে। তন্ময় ভাই ধপধপ পা ফেলে উপরে চলে গেলেন। বড় মা চেঁচাতে চেঁচাতে রান্নাঘরে যাচ্ছেন। নিশ্চয়ই এখন তার জাদুর চা'টা বানিয়ে ফেলবেন। যেটা খেলে নাকি জ্বর, ঠান্ডা, কাশি এবং মাথা ব্যাথা গায়ের হয়ে যায়। সত্যি বলতে এটা বড় মা'র ধারণা। আমার না। রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে ফেললাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, গোসল দিয়ে ঘুম দিব একটা। তখনও বাহিরে তীব্র দ্বারায় বৃষ্টি চলছে। আজ বৃষ্টি থামার নয়। 
গোসল সেরে বেরোতেই রিংটোনের শব্দ পাচ্ছি। হঠাৎ মনে আসলো তন্ময় ভাইয়ের, সেলফোন এবং ওয়ালেটের কথা। আমি দ্রুত ব্যাগ থেকে সেগুলো বের করলাম। সাহেবের ফোন বাজছে। ইশান নামের কলার। এটাই সেই ইশান যেটা আমাকে রাস্তায় পেলেই বলবে, 
--' আপু কী কাজে যাচ্ছেন? আমায় বলুন করে দি। '
তারপর এটার গোয়েন্দা সভাব তো আছেই। রাস্তায় পেলেই, যখন তখন ফোন সামনে এনে বলবে, 
--' ভাই কলে। কথা বলুন আপু। '
এতো মধুর হাসি দিয়ে বলবে, যেমন তার ভাই আমাকে মধুস্বর শোনাবে। অসহ্য।
কল আপনাআপনি কাঁটতেই চোখ গেলো, তার লকস্ক্রিনে। কিছুক্ষণের জন্য আমার চোখ দুটো ঝাপসা। এটা তো আজকের ছবিটি। যেখানে, আমি হতবাক চোখে তার দিক তাকিয়ে, আর সে আমার দিক। তার হাত আমার কোমরে সেটা স্পষ্ট দেখাচ্ছে। 
মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। এই ছবিটি নিশ্চয়ই ওই ভদ্রলোক তুলেছেন? কি লজ্জাজনক। এমন উদ্ভট ছবি সে এভাবে দিয়ে রেখেছে? কেউ দেখলে কি ভাববে। নাউজুবিল্লাহ। 
আমার চোখ আবারও ছবিটির দিক। তিনি এমন ছবি কেন রেখেছেন, তাও এভাবে? ভয়ে আমার গলা শুঁকিয়ে আসছে। বুক ধুকপুক করছে। 
ফোনটা দ্রুত বিদেয় করতে হবে। দীপ্ত'কে ডেকে ওর হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম, সেলফোন আর ওয়ালেট। উনার আশপাশ যাওয়া যাবেনা। কি অদ্ভুত। যদি বাড়ির কেউ দেখে ফেলে? কি হবে?
লজ্জায় আর ভয়ে আমি লাফ দিয়ে বিছানায়। বিছানায় শরীর ছুঁতেই ঘুমে চোখ বুঝে আসছে। আপাতত ঘুম বড্ড প্রয়োজন। 
.
.
.
চলবে..................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন