রংধনু - পর্ব ৩৪ - তাবাসসুম রিয়ানা - ধারাবাহিক গল্প


কুঞ্জন হেঁটে হেঁটে বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায়। ওকে তো এখানে আসতে বলা হয়েছিলো।কুঞ্জন এক কোনায় দাঁড়িয়ে ফোনটা চেক করে।ইরাজের কল দেখে কিছুটা ইতস্তত বোধ করতে থাকে। ফের কোন ভুল করতে যাচ্ছে না তো ও?কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ইরাজের কল কেঁটে গিয়ে রাসেলের কল এলো।কুঞ্জন কিছুটা সাহস যুগিয়ে ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরে।অপরপাশ থেকে রাসেল বলল,
''কিরে ইরাজের কল ধরিস না কেন?"
কুঞ্জন আশপাশ দেখতে দেখতে বলল,
''ফোন পকেটে ছিলো তাই।"
রাসেল একটু গলা পরিষ্কার করে বলল,
''আচ্ছা যাই হোক কই তুই?"
''বাজারে।তোরা কই?"
''একটু আগায়া আয়।ডেইলি সুপার শপটার সামনে চলে আয়।"
কুঞ্জন কিছুটা রেগে বলল,
''তোরা পাগল?এটার সামনেই আমার বাসা।বাবা ও বাসায়।"
''তো?"
''আমি বাসায় যাইতেছি তোরা ও যা।"
রাসেল হঠাৎ কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল,
''দাঁড়া ইরাজরে কইয়া নেই। "
কুঞ্জন ফোন কানে রেখে শুনতে থাকে ওদের কথা।কিছুসময় পর রাসেল বলল, 
''তুই দাঁড়া আমরা আসি।"
''ওকে।"
কল কেঁটে দিলো রাসেল।কুঞ্জন কিছুটা আড়াল করে নিলো নিজেকে।ওর ভীষন ভয় হচ্ছে।কাজ টা ভুল হচ্ছে না তো?ভাই শুনলে ভীষন রাগ করবে আর ওকে ও ছাড়বেনা।কিছুসময়ের মাঝেই রাসেল আর ইরাজকে আসতে দেখা গেলো।কুঞ্জন ওদের সামনে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে। কারন ও ভয় পাচ্ছে সেটা ওরা বুঝলে ঝামেলা। ইরাজ এসে হাত বাড়িয়ে বলল,
''কি খবর?"
কুঞ্জন হাত না মিলিয়ে বলল,
''কেন ডেকেছিস?"
ইরাজ ওর কাঁধে হাত রেখে বলল,
''মামা আগে হাত তো মিলা।"
''দেখ কেন ডেকেছিস সেটা বল।আমার যেতে হবে।"
ইরাজ ওর কাঁধে চাঁপড় দিয়ে বলল,
''আরে মামা চাইল্ড হুড বন্ধু আমরা।তার আগে ভাই লাগি।হাত মিলা। "
রাসেল অপরপাশ থেকে হেসে বলল,
''ঠিকই কইছে ইরাজ আমরা তো ভাই লাগি ভাই।নে আমাদের লগে হাত মিলা।"
কুঞ্জন নাকচ করে দিলো।তারপর ভ্রু কুঁচকে বলল,
''দেখ আমার যেতে হবে।আমি থাকবো না বেশিক্ষন।"
রাসেল ওর কাঁধে হাত রেখে বলল,
''আরে কুঞ্জু আমরা তোর খারাপ চাইনারে ভাই।আর তোরে কোন স্মোক করতে ও কমুনা।খালি চাই বন্ধুত্ব রাখতে।বুঝছোস?"
কুঞ্জন এবার অনিচ্ছাসত্ত্বেও ওদের সাথে হাত মিলিয়ে নিয়ে সরিয়ে বলল,
''বল কি চাস?"
ইরাজ বলল,
''শোন আমরা পাল্টায় গেছি।এখন আর খারাপ কাম করুম ও না তোরে ও টানুম না।তুই খালি আমাগোর লগে আবার ও মিশা শুরু কর।"
কুঞ্জন কিছুটা গম্ভীর কন্ঠে বলল,
''দেখ সেদিন সত্যিটা জানার পর ভাইয়া খুব মেরেছিলো।আমি আমার ভাইকে আমার পরিবারকে কষ্ট দিতে চাইনা। আমার ভাই অনেক কষ্ট করে টাকা কামায়।"
ইরাজ ওর পাশে এসে কাঁধ জড়িয়ে বলল,
''শোন আমরা খালি ভাই হইয়া থাকমু।"
''আমি চিন্তা করবো।ভাই জানতে পারলে অনেক রাগ করবে।"
রাসেল অপরপাশ থেকে বলল,
''দেখলি আমাগোরে এখনো বিশ্বাস করেনা।"
ইরাজ হেসে বলল,
''শোন কুঞ্জন কয়েকদিন মিশ খারাপ লাগলে চইলা যাইস।তোর ভাই জানবো ও না।"
কুঞ্জন ওদের থেকে সরে এসে বলল, 
''আমি জানাবো।"
বলেই ও সামনে হেঁটে যেতে থাকে।আর পিছনে ফিরে ও তাকায়নি।ঘরে যেতেই ইকরাম রাহমান বললেন,
''কিরে কই গেছিলি?"
কুঞ্জন পাশ ফিরে বাবাকে দেখে ঢোক গিলে বলল,
''ফোনের ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেছিলো আব্বা।সেটা ঢুকাইতে গেলাম।"
ইকরাম রাহামান মোটা গলায় ধমকে বললেন,
''সারাদিন পইড়া পইড়া কার লগে কথা কইস যে টাকা শেষ!!!"
কুঞ্জন কিছুটা কেঁপে উঠে ও নিজেকে সামলে বলল,
''আব্বা ইন্টারে পড়ি।নেটে অনেক সাজেশন নিতে হয়।হুদাই ধমকাবা না।"
বলেই কুঞ্জন রুমে যাচ্ছিলো। পিছন থেকে ইকরাম রাহমান চেঁচিয়ে বলছিলেন,
''শুয়োরের বাইচ্ছা আমরাও ফড়াশুনা কইরছি।শিখাইতে আবি না।"
কুঞ্জন রুমে এসে খাটে বসে পড়লো।জুলেখা বানু স্বামীকে চিল্লাতে দেখে বললেন,
''চিল্লাইতাছো কেন?"
ইকরাম রাহমান উঠে চিৎকার করে বললেন,
''তোর ছোড ফোলা আমারে ফড়াশুনা শিহায়।ফড়াশুনা কি খালি হেই কইচ্ছে?আমার বেলা নিশাদ করে নাই?"
বেলার কথা বলেই ইকরাম রাহমান চুপ হয়ে যান।জুলেখা বানু স্বামীর মুখে বড় মেয়ের নাম শুনে ভীষন খুশি আর অবাক হন।ওনি হেসে কিছু বলতে গেলে ইকরাম রাহমান বললেন,
''মানে আমার আদনান সাঁঝ করছেনা?"
জুলেখা বানুর চোখে পানি চলে আসে। স্বামীর কাছে এসে বললেন,
''তুমি এর আগে কি কইছিলা?"
''কিছু কই নাই।"
ইকরাম রাহমান অন্যদিকে তাকান।জুলেখা বানু বললেন,
''নিশাদের আগে কি কইছিলা?"
ইকরাম রাহমান রেগে বললেন,
''তোর ঐ মুখপোড়া মাইয়ার নাম নিবিনা।"
''তুমিই তো নিছিলা।"
ইকরাম রাহমান আর কিছু না বলে রেগে বেরিয়ে যান।জুলেখা বানু কেঁদে দৌড়ে কুঞ্জনের কাছে আসেন।মাকে কাঁদতে দেখে কুঞ্জন বলল, 
''আম্মা কান্দো কেন?"
জুলেখা বানু কাঁদো গলায় বললেন,
''তোর আব্বায় বেলার নাম লইছিলো মুখে।আমি জানি মুখে যা কউক মাইয়ারে খুব ভালোবাসে হেই।"
কুঞ্জন মায়ের চোখ মুছে দিয়ে বলল,
''আম্মা কাইন্দোনা।কিছু দিবা খিদা লাগছে।"
জুলেখা বানু অশ্রুসজল চোখে ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,
''ভাত হইলেই খায়া লইস।রুটি শেষ হইয়া গেছে।"
''আইচ্ছা।"
..............................বিভান নাস্তা করছিলো।বেলা আজ একটু আগেই চা এনে ঢেকে রেখেছে।বিভান একমনে খাচ্ছে।বেলা ওর খাওয়া দেখছিলো।হঠাৎ বেলা বলল,
''বাজারের লিস্ট করে রেখেছি। একটু আনিয়ে দিয়েন।"
বিভান খেয়েই যাচ্ছে।বেলা আবার ও বলল,
''আজ আর চায়ের অপেক্ষা করতে হবেনা।আগেই রেখে দিয়েছি।"
বিভানের থেকে কোন উত্তর নেই।বেলা হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছে বলল,
''আমি রোজা রেখেছি।আপনি কি খাবেন ডিনারে বলে দিয়েন।আমি রেডি রাখবো।"
বিভান খাওয়া শেষ করে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সেখানে চুমুক দিতে শুরু করে।বেলার দিকে আড়চোখে তাকায় ও।চোখজোড়া অসম্ভব রকমের ফুলে গেছে।চুল গুলো ও কেমন উষ্কখুষ্ক। বিভান বেলাকে এমন দেখেনি আগে।তবে বিভান নিজেকে শক্ত রাখতে চায়।কারন বেলা কে এতো সহজে মাফ করবেনা ও।বিভান উঠে দরজার কাছে এগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো।সেখানে জুতা মোজা সবই আছে।বেলা ভেজা চোখে বিভানকে দেখছে।লোকটা কি করতে চাইছে?বেলার দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ।কিছু লাগলে তো বলতে পারে।এমনটা না যে সে ফোনে কথা বলছে।চুপচাপ দাঁড়িয়েই আছে।বেলা কি মনে করে বাজারের লিস্ট এনে বিভানের দিকে ধরতেই বিভান ওর দিকে না  সেটা নিয়েই বেরিয়ে যায়।বেলা বুঝতে পারে বিভান এটার অপেক্ষায় ছিলো।বিভান নিচে এসে দারোয়ান কে লিস্ট ধরিয়ে বলল,
''ভাবিকে বলবে আমি আজ মাংস খাবো।গরু মাংস রাঁধতে বলো আলু দিয়ে।আর মাগরীবের আগে বাসায় কিছু নাস্তা পাঠিয়ে দেবে।পাশের ক্যাফে থেকে ওকে?"
কথা শেষ করে বিভান লোকটার হাতে টাকা ধরিয়ে বেরিয়ে গেলো।অফিসে পৌছে ল্যাপটপ সামনে নিয়ে বসে বিভান।একটা প্রজেক্টের ওপর কাজ করছে ও।প্রজেক্টটা ফাইনাল হলে ওর বিজনেস অন্যান্য দেশে ও বিস্তার করতে পারবে।এই প্রজেক্টটা ওর জন্য বেশ ইম্পর্ট্যান্ট। ওর অনেক প্ল্যান আছে।বেলার জন্য ও কিছু করবে ও।অন্তত পড়াশুনাকে কাজে লাগানোর ব্যাবস্থা।বিভান কাজে প্রচুর মনযোগ দেয় তখনই ওর মনযোগ কাঁটে ফোনে কল আসায়।বিভান কিছুটা বিরক্ত হয়ে ফোনটা নিয়ে মৃদু হেসে রিসিভ করে কানে রাখে।অপরপাশ থেকে কিরন বলল,
''কি হলো বিভান সাহেব একেবারে ভুলে গেলে?"
বিভান মুখে হাসি রেখে টাইপ করতে করতে বলল,
''ভুলিনি কিরন।কিছুটা ব্যাস্ত।তুমি বলো।কেমন আছো?"
''আলহামদুলিল্লাহ।বেলা কেমন আছে?আন্টি ভালো আছেন?"
বিভান কিছু থেমে গেলো।রাগ হতে থাকে ওর।এসময়ে ঐ মানুষটার কথা মনে করতে চায়না ও।বিভান বলল,
''অন্য কিছু বলার থাকলে বলতে পারো।"
''সব ঠিক আছে বিভান?"
''কিছুই ঠিক নেই কিরন।জানো ওনি কখনোই আমার মা ছিলেনই না।"
কিছুটা কর্কশ শোনা যায় বিভানের কন্ঠ।কিরন বলল,
''কি হলো বিভান?আমাকে বলতে পারো।কি হয়েছে।"
বিভান সিট থেকে উঠে জানালার সামনে দাঁড়ায়।চোখজোড়া ভিজে আসে ওর।শক্ত গলায় কিরনকে সব বলতে থাকে।একদম প্রথম থেকে।কিরন কি বলবে বুঝতে পারছিলনা।কথা গুলো ওর গা বেয়ে যতোটুকু যাচ্ছিলো পুরো শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছিলো।কথা গুলো বলে বিভান নিস্তব্ধ হয়ে যায়।কিরন কিছুটা আঁচ করতে পারে বিভান কাঁদছে।কিরন বলল,
''বিভান আমি বুঝতে পারছি তোমার কেমন লাগছে।আসলে আমি ও কি বলবো বুঝতেই পারছিনা।আসলে মা আদৌ এমন হয় কি না জানা নেই।তা বেলার সাথে সব ঠিক আছে তো?"
বিভান রেগে বলল,
''তোমার কি করে মনে হলো সব ঠিক থাকবে।বেলা তের বছর যাবৎ মিথ্যার ওপর মিথ্যা বলে আসছে।আমি তো বুঝতেই পারিনি।এই মহিলা নিজের বাচ্চা হারিয়ে ও চুপ ছিলো।তাহলে আমি এর সাথে কিভাবে সব ঠিক করবো বলো?"
বিভান বেশ চিৎকার করার মতোই কথা গুলো বলছিলো।কিরন কিছুটা অবাক হয় বিভানের কথায়।এভাবে কথা কেন বলছে ও?কিরন বলল,
''বিভান শুনো সে তোমার স্ত্রী তাকে তুমি তের বছর যাবৎ চেন তাইনা?ওনি হয়ত ভেবেই করেছিলো তাইনা?দেখ তোর বাবা শুধু আন্টিই ছিলেন।আর বাবা মা থেকে ও তাদের সাথে না থাকা কিংবা সম্পর্ক না থাকা কতোটা কষ্টের সেটা ভাবি ছাড়া ভালো কেউ বুঝবেনা। মানলাম ওনার বড় ভুল হয়েছে।ওনি তোমার থেকে কথা লুকিয়েছে।নিজে একা কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু ভুলে যেওনা ওনি ও হারিয়েছে।বাবু মরে যাওয়ার কষ্ট তুমি ও পাচ্ছো ওনি ও পাচ্ছে।বিভান ভাবি তোমার সাথে বিয়ে করে পরিবারের অমতে এসেছিলো তোমার ভরসায়।পালিয়ে আসার সিদ্ধান্ত কিন্তু সহজ নয়।তবে সেটা ওনি তোমার জন্যই করেছিলো। এখানে আছে তোমার ভরসায়।এতোদিনের মানসিক নির্যাতনের পর ও টিকে আছে তোমার ভরসায়।বিভান অন্তত কথা বলো।জানি আন্টির কথা জেনে তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে।আর হওয়াটা অস্বাভাবিক না।সেটা মানি আর ভাবির ওপর তোমার মনে অভিমান জমে আছে সেটাও জানি।এগুলো অস্বাভাবিক না বিভান।তবে ওনার সাথে কথা বলো।আস্তে আস্তে সব ঠিক করে নাও।কিন্তু কথা বন্ধ রেখোনা।এতে দুজনেরই কষ্ট।জানিনা কতোটুকু বুঝাতে পারলাম।তবে ভেবে দেখো।আর শুনো বিন্তী প্রেগন্যান্ট। ভাবি কে কল করেছিলো কিন্তু ওনার ফোন হয়ত কাছে নেই তাই ধরছিলোনা।বিন্তী এখনো কল দিচ্ছে তবে তুমি বাসায় গিয়ে বলে দিও।"
বিভান চুপচাপ কল কেঁটে ভাবনায় পড়ে যায়।
..........................সেদিন সাঁঝ সকালেই বেরিয়ে আসে কলেজের কথা বলে।আজ প্রথম মিথ্যা বলে বেরিয়েছে ও।রিক্সা নিয়ে উঠে বসে সাঁঝ।গন্তব্য ওর কলেজ।আজ নিজেকে খুব দোষী মনে হচ্ছে সাঁঝের।তবে লোকটাকে কথা দিয়েছিলো ও।সাইমন আর নিজের পরিবারের কথা ভাবতে ভাবতে সাঁঝ কলেজের সামনে চলে আসে।সাইমন বলেছিলো গেটের সামনে থাকবে।সাঁঝ ভাড়া চুঁকিয়ে হাঁটতে থাকে।গেটের থেকে ওর দূরত্ব যতোই কমতে লাগলো সাইমনের মনভুলানো হাসি মাখা মুখ আরো পরিষ্কার হতে থাকে।সাঁঝ এসে ওর সামনে দাঁড়ায়।সাইমন হাত বাড়িয়ে সাঁঝের হাত স্পর্শ করে নিজের কাছে নিতে নিতে বলল,
''কেমন আছো?"
সাঁঝ এতক্ষন ওদের হাতের দিকে তাকিয়েছিলো।সাইমনের কথায় ও মাথা তুলে তাকায়।আজ সে সাদা পাঞ্জাবী পরে এসেছে যেখানে ওর গায়ে লাল স্যালোয়ার কামিজ।সাঁঝ ম্লান হেসে বলল,
''এই তো।আপনি?"
''আমি ভালো।তোমার চেহারার বারোটা বেজে আছে কেন ম্যাম?"
সাঁঝের চুল ঠিক করতে করতে করতে বলছিলো সাইমন।সাঁঝ বলল,
''আসলে বাসায় মিথ্যে বলে বেরিয়েছি।তাই ভালো লাগছেনা।"
''বিয়ের আগে কয়টা দিন কট করো।এর পর আর মিথ্যে বলতে হবেনা।"
সাঁঝ চিন্তিত মুখে জিজ্ঞেস করে,
''জানাবেন কবে?"
''জানিয়ে দেবো সাঁঝ।আগে আরেকজনকে জানাতে হবে।সে অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট। সে না মানলে হয়ত আমাকে ডিসিশন পাল্টাতে হবে।"
সাঁঝ অবাক চোখে তাকিয়ে বলল,
''কে সে?আগে বলেননি কেন?আর কোন ডিসিশন পাল্টাবেন?কি বলছেন?"
''আমাদের বিয়ের ডিসিশান।"
''মানে?"
চিৎকার করে উঠে সাঁঝ। তবে সাইমন কিছু বলেনি তবে ওর মুখের দুষ্টু হাসি দেখে সাঁঝের গলা শুকিয়ে গেলো।

!!!!

সেদিন দুপুর পর্যন্ত সাঁঝ আর সাইমন গাড়ি দিয়ে অনেকটা সময় ঘুরলো।পুরো জার্নিতে সাইমন খুব গম্ভীর  ছিল।কথা তেমন বলছিলোনা।সাঁঝ যা বলছিলো শুধু ততোটুকুর উত্তর দিচ্ছিলো।সাঁঝের ভালো লাগছিলোনা।আজ ওকে দেখা করতে বলল।বের হওয়ার আগেই বা কি বলল ওকে বিয়ের ডিসিশান চেঞ্জ করবে?সাঁঝের বুকের একপাশ খালি হয়ে যায় কথাটা মনে হতেই।যদি ডিসিশান চেঞ্জ করতেই হতো এতো ভালবাসলো কেন আর কেন এতো কাছে আসলো?সাঁঝের বুক ধুকধুক করছে অজানা ভয় আর চিন্তায়।সাইমন গম্ভীর কন্ঠে বলল, 
''সাঁঝ আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভালবাসি।তুমি ও তো আমাকে ভালবাসো।তাহলে আমাদের জন্য কল্যানকর হবে এমন যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নিবে তাইনা?" 
সাঁঝ ভয়ার্ত চোখে সাইমনের দিকে তাকায়।তারপর চোখ সামনে ফিরিয়ে মাথা ঝাঁকায়।সাইমন আবার ও বলল, 
''শুনো যদি অজান্তে কষ্ট দিয়ে ও ফেলি প্লিজ মাফ করে দিও।" 
সাঁঝ এবার যেন আর পারছেনা নিতে।লোকটা এভাবে কেন বলছে?কি বুঝাতে চাইছে সে?আজ ওকে ডেকে কেন এসব কথা বলছে।ভীষন রাগ হচ্ছে ওর লোকটার ওপর। সাঁঝ হঠাৎ চিৎকার করে বলল, 
''গাড়ি থামান আমি এখানেই নামবো।" 
সাইমন গাড়ির গতি কিছুটা কমিয়ে আনে কিন্তু থামায়নি।গাড়ির চলন্ত অবস্থায় বলল, 
''হঠাৎ কি হলো?" 
''আমি বললাম গাড়ি থামান আমি নামবো।" 
সাঁঝ অভিমান আর রাগ জড়িত কন্ঠে বলতে থাকে।সাইমন গাড়ি থামিয়ে দিলো গাড়িটাকে এক কোনায় রেখে।সাঁঝ ভ্রু কুঁচকে তাকায়  ওর দিকে।সাইমন সাঁঝের দিকে তাকিয়ে হাত স্পর্শ করে বলল, 
''কি হলো?" 
''আমি যাবো।" 
সাঁঝের চোখজোড়ায় পানি টলটল করছে।কিন্তু মুখ শক্ত করে রেখেছে ও।কোনমতেই কাঁদবেনা ও।সাইমন ওর গাল ছুঁয়ে বলল, 
''এত জলদি ভরসা ছেড়ে দিলে চলবে?আগে আসো তো।তারপর কোন একটা ব্যাবস্থা করা যাবে।" 
সাঁঝ রেগে সোজা হয়ে বসে।সাইমন দুষ্টু হেসে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে।ঘন্টাখানেক পর বনানী পৌছে যায় ওরা।আরো দশমিনিট গাড়ি চালিয়ে একটা সাদা বাড়ির সামনে সাইমনের গাড়ি থামে।সাঁঝ চারপাশে তাকিয়ে সাইমনের দিকে অবাক চোখে চেয়ে বলল, 
''এটা কার বাড়ি?" 
সাইমন ওর দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে আনে  দরজার হাতলের দিকে।তারপর দরজা খুলতে খুলতে বলল, 
''সেটা ভিতরে গেলেই দেখবে।" 
সাঁঝ বেরিয়ে আসে সইমনের পিছুপিছু।সাইমন ওর হাত ধরে রেখেছে।ওরা এসে থামলো বাড়ির দরজার সামনে।সাইমন কলিংবেল টিপে ধরে। তখনই মধুর কন্ঠে চড়ুইপাখির ডাক শোনা যায়।সাঁঝের ভয় হচ্ছে।কার সাথে দেখা করতে এলো ওরা?সাইমনের মতিগতি ও বুঝা যাচ্ছেনা।সে তো ঠিকমতো কিছু বলছে ও না।হঠাৎ ভিতর থেকে হাতল ঘোরানোর শব্দ হলো।সাঁঝ অজান্তেই সাইমনের হাত আরো শক্ত করে ধরে ফেলে।সাইমন একবার ওর দিকে তাকিয়ে সামনে তাকিয়ে দরজার ওপারে দেখলো।একটা মেয়ে দরজা খুলেই চিৎকার করে বলল, 
''দাদি দেখেন কে আসছে?" 
সাইমন সাঁঝের হাত ছেড়ে মেয়েটাকে জড়িয়ে বলল, 
''কেমন আছো?" 
''ভালো তুমি তো কোন খবর নাওনা।" 
''এবার থেকে নেবো।দাদি কই?" 
''গোসলে গেছিলো।এখন বোধহয় বেরিয়েছে।ভেতরে আসছোনা কেন?আসো।" 
সাইমন ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে সাঁঝের দিকে তাকায়।সাঁঝ অর্থহীন চাহনিতে সাইমনের দিকে চেয়ে আছে।হচ্ছেটা কি?মেয়েটা ওনাকে জড়িয়ে ধরলো আর ওনি কিছু বললো ও না।সাইমন সাঁঝের দিকে চেয়ে বলল, 
''আসো ভেতরে।" 
সাঁঝ চুপচাপ ভেতরে চলে আসে।সাইমন ওকে সোফার কাছে এনে বলল, 
''এখানে বসো।আমি আসছি।" 
বলেই সাইমন চলে যাচ্ছিলো।সাঁঝ ওর হাত চেঁপে ধরতেই সাইমন পিছে ঘুরে বলল, 
''কি?" 
''মেয়েটাকে? " 
''পরে বলছি।" 
বলেই সাইমন ওপরে চলে গেলো।মেয়েটা সাঁঝের পাশে এসে বসে।তারপর বলতে থাকে, 
''তুমি কি হও ওর?" 
''কার?" 
''ঐ যে যার সাথে এলে?" 
সাঁঝ থমথমে কন্ঠে বলল, 
''ওর বান্ধুবী।" 
''ওহ।" 
মেয়েটার মুখে হালকা হাসি।মেয়েটা বেশ মিষ্টি।তবে সাঁঝের এই মুহূর্সাঁতে মেয়েটাকে খুব অসহ্য লাগছে।সাঁঝ জিজ্ঞেস করে, 
''আপনি? " 
মেয়েটি কিছু বলতে নিলে সাইমন কে সিড়ি বেয়ে নেমে আসতে দেখে সাঁঝ।সাইমন ওর দিকে এসে বলল, 
''চলো আমার সাথে।"
সাঁঝ উঠে দাঁড়িয়ে সাইমনের সাথে হাঁটতে শুরু করে।ওরা সিড়ি বেয়ে উঠে যেতে শুরু করে।সাঁঝ পিছনে ফিরে মেয়েটাকে আর দেখেওনি।ওরা দোতলার একটা কামরায় এসে থামে।দরজাটা হালকা ভিড়ানো।সাইমন দরজায় হালকা ধাক্কা দিতেই সেটা খুলে যায়।সাঁঝ বিছানায় এক বৃদ্ধাকে দেখতে পায়।ভদ্র মহিলা বেশ সুন্দরী।কেমন যেন মনে হলো মহিলার চেহারায় সাইমনের চেহারা ফুঁটে উঠছে।সাইমন একটু হেসে বলল,
''সাঁঝ আমার দাদি।সালাম দাও।"
সাঁঝ একটু হেসে সালাম দিতেই মহিলা ওর হাত টেনে বসিয়ে বলল,
''সাইমন তোর বর্ননা থেকে ও বেশি সুন্দর বৌমনি।কি মিষ্টি সাঁঝ দাদুমনি।" 
দাদুর মুখে বৌ শুনে সাঁঝ লজ্জায় মাথা নিচু করে।দাদি সাইমনকে জিজ্ঞেস করেন,
''কিরে মিতুলের সাথে ওকে পরিচয় করিয়ে দিলি?"
সাঁঝ মাথা উঠিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনই কে যেন বলল,
''ভাইয়া ভাবি কিন্তু খুব রেগে যাচ্ছিলো।একনতো অন্তত পরিচয়টা করিয়ে দে।"
সাঁঝ পিছনে তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখে অবাক।এতো সেই মেয়েটাই।সাইমন হেসে বলল,
''সাঁঝ ও আমার কাজিন মিতুল।"
সাঁঝ মিতুলের দিকে তাকিয়ে একটু সাইমনের দিকে তাকায় রেগে।মিতুল এসে সাঁঝের পাশে বসে বলল,
''কেমন আছো ভাবি?ভাইয়া তোমার কথা বলতে বলতে শেষ।আমার তো তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে।ইচ্ছে করছে এখনই ভাইয়ার বৌ বানিয়ে নিয়ে আসি।"
সাইমন নাক ফুলিয়ে বলল,
''কথা বললে পেট ভরবেনা।যা খাবার রেডি কর।"
মিতুল উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
''ভাবি চলো আমার সাথে।"
সাইমন রেগে কিছু বলতে যাবে কিন্তু তখনই দাদি বলল,
''ওরা গল্প করুকনা।আমি আসি তোর সাথে।"
সাঁঝ হেসে দাদিকে থামিয়ে বলল,
''দাদি আপনি কেন যাবেন?আমিই যাচ্ছি।চলো মিতুল।"
মিতুল সাঁঝের হাত ধরে বলল,
''চলো ভাবি।"
সাঁঝ রুম থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে সাইমনের দিকে রেগে তাকায়।যেন কাছে পেলেই খুন করে ফেলবে।
..........................সেদিন সন্ধ্যায় অফিস থেকে বেরিয়ে পড়ে বিভান।আজ একটু জলদিই বেরিয়েছে ও।কারনটা জানা নেই ওর।অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়ির পানে এগুতে থাকে বিভান।হঠাৎ ওর প্যান্টে টান পড়ে।বিভান পিছনে ফিরে দেখলো ছোট একটা হাত ওকে টানছে।বিভান ফোনের লাইট জ্বালিয়ে বাচ্চাটার দিকে ধরলো।ছোট একটা মেয়ে বাবু।গায়ে ময়লা ছেড়া গোলাপী একটা ফ্রক।বিভান অনুমান করতে চেষ্টা করলো বাবুটার বয়স।তিন বা চারের বেশি হবেনা।মেয়েটার হাতে দুটো গোলাপ ফুল।বাবুটা আধোমুখে বলছিলো,
''আততেল পুল নেবে?এততা পাত তাকা।"
বিভান মেয়েটার চেহারায় আলোর প্রতিফলন ঘটায়।বাবুটার চেহারা খুব মিষ্টি আর কথা গুলো যেন বিভানের শরীরের প্রত্যেকটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে বয়ে যেতে থাকে।বিভসন বাবুটার সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো,
''নাম কি মামনি?"
''দানিনা।"
মেয়েটার চেহারা হঠাৎ কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।বিভান বাবুটাকে ধরে বলল,
''তোমার বাবা মা কই?"
বাবুটা কেঁদে ফেলে।কাঁদতে কাঁদতে  বলল,
''তবাই বলে আমাল আম্মু তালা হয়ে গেছে আকাশেল।কে দেন আমাল আম্মুকে মেলে ফেলেতে।আমাল আব্বু কই দানিনা।"
বিভান বাবুটার চোখ মুছে বলল,
"আমার সাথে যাবে আম্মু আমার বাসায়?সেখানে তোমার আম্মু আছে।"
বাবুটার মুখে হাসি ফুঁটে উঠলো,
''সত্যি আমাল আম্মু আতে?"
''হ্যা আম্মু চলো।তোমার আম্মুর কাছে নিয়ে যাবো।"
বাবুটার চেহারায় হঠাৎ অজানা ভয় ফুঁটে উঠে।ভীত কন্ঠে জানতে চায়,
''তুমি আমাকে ঐ আন্তেলতাল মতো মালবে না তো?"
বিভান বাচ্চাটার কথায় অনেকটা চমকে গিয়ে বলল,
''কে মারতো মা?"
''তাক্কু আনতেল।খুব মালে আমাকে।পুল বেঁতা না অলেই মালে।"
বিভান বাবুটার দুটো হাত ধরে বলল,
''না মা মারবোনা।তুমি আমার সাথে চলো।আমার বাসায় যাবে।তোমাকে আমি আর তোমার মা খুব আদর করবো।চলো আমার সাথে।"
বাবুটা যেন কিছুটা ভরসা করতে পেলো।বিভানের সামনে দুটো হাত উঠিয়ে কোলে নেয়ার মতো করে। বিভান ওকে কোলে তুলে দ্রুত গাড়িতে বসে যায়। বাচ্চাটাকে পাশের সিটে বসিয়ে সিট বেল্ট বেঁধে বলল,
''তোমার ফুল গুলো মাকে গিফ্ট করে দিও।আর আমাকে বাবা ডেকো।"
মেয়েটা যেন বুঝতে পারছেনা লোকটাকে বাবা ডাকতে কেন বলছে?বাচ্চাটা হেসে বলল,
''মাতে দিবো এই পুল।"
বাবুটা পুরো গাড়িতে নিজের আধো কন্ঠে কথা বলতে থাকলো নিজের সাথে।বিভান ওর দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিলো।বাবুটা দেখতে খুব আদুরে।আর ওর কথা গুলো বিভানের খুব ভালো লাগছে।আসলে বাচ্চারা এমনই একদম মাসুম।ওরা তো ফেরেশতা।না জানি কে এই বাবুটার মতো আরো অনেক বাবুর সাথে অন্যায় করছে।
বিভানের গাড়িটা একটা শপিংমলের সামনে থামে। বাচ্চাটাকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে বিভান।তারপর কিছু জামা আর জুতো কিনে নিলো।বাচ্চাটার বয়স চার কোন একজন কাস্টমার বলেছিলো।মেয়েটা খুব খুশি ছিলো মার্কেটে।দৌড়াতে চাইছিলো।কিন্তু বিভান ওকে কোলে তুলে নিলো।কারন যেহেতু ওর নাম নেই সুতরাং হারিয়ে গেলে খুব সমস্যা হবে।শপিং শেষে বিভান মেয়েকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসে।বাবু জিজ্ঞেস করে,
''আমলা মায়েল কাতে দাবো ককন?"
''এখনই যাবো মা।"
.....................নিশাদ অফিস থেকে ফিরে ইমতিয়াজের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাসের হাতল ধরে নিজেকে দাঁড় করিয়ে রাখার চেষ্টায় থাকা নিশাদ পকেটে হাত চেঁপে নতুন ফোনটাকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে।ফোনটা ওর কাছে খুব বেশিই স্পেশাল কারনটা অজানা নয়।গাড়ি থামতে নিশাদ নেমে হাঁটতে থাকে।এখান থেকে পাঁচমিনিটের রাস্তা তারপরই ইমতিয়াজের বাসা।ইমতিয়াজদের ঘরে পৌছুতেই ইমতিয়াজ ওকে থামিয়ে বলল,
''কাল রাতে সারপ্রাইজ আছে।আমাদের ভার্সিটির সামনে অপেক্ষা করিস।"
''কিসের সারপ্রাইজ?কারন কি?"
''মানে কি রে?তোর জন্মদিন আর তুই ভুলেই গেলি।"
''ওহ মনেই ছিলোনা।কয়টায় যাবো?"
''ছয়টায় চলে আসিস আর কাল ইদ্রিকে পড়াতে হবেনা।"
নিশাদের বুকটা কেমন হালকা হয়ে গেলো। নিজেকে সামলে বলল, 
''জি আসবো।"
ইমতিয়াজ বলল, 
''যা ইদ্রি রুমে আছে।"
নিশাদ হেসে ইদ্রির রুমে চলে এলো।ইদ্রি নিশাদকে দেখে কেমন চমকে উঠে।তবে মুহূর্তে মুখে হাসি টেনে বলল, 
''আসুন।"
''মনে হলো ভয় পেলে?"
''না।"
নিশাদ চেয়ারে বসে বলল,
''তাহলে ভালো।"
ইদ্রি নিশাদের পাশে বসতেই নিশাদ বলল,
''পরশু একটা টেস্ট নিবো। দেখবো কতুটুকু শিখলা।"
''জি।"
নিশাদ কম্পিউটার শেখাতে শুরু করে।পড়া শেষে নিশাদ নাস্তা করছিলো।ইদ্রিকে দেখে  মনে হচ্ছিলো কি যেন বলার জন্য উতলা হচ্ছে।নিশাদ জিজ্ঞেস করলো,
''কিছু বলবে?"
''মানে কাল আমাকে একটু ঘুরাতে নিবেন?"
''পারবোনা।"
বলেই নিশাদ খাওয়ায় মন দেয়।ইদ্রি বলল,
''প্লিজ।কিছুদিন পর তো পড়া ও শেষ হবে।আপনি ও চলে যাবেন।তখন আমার বিরক্ত করা গুলো মিস করবেন।নিয়ে যাবেন প্লিজ প্লিজ।"
''ইদ্রি তুমি জেদ করছো কেন আমার সাথে?"
''প্লিজ প্লিজ!!!আর কখনো বলবো না সত্যি।"
নিশাদ গভীর নিশ্বাস ছেড়ে বলল,
''কথা দিতে পারছিনা।কিন্তু আমি চেষ্টা করবো।"
''ঠিক আছে।"
নিশাদ পানি খেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
''কই আসবো?"
''আমাদের বাসায়।"
''তোমার মা জানলে?"
''জানবেনা।আপনি টেনশন নিয়েন না।শুধু আমাকে নিয়ে ঘুরবেন।"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন