"" মুন আর জিজু আগামিকাল রেডি থেকো , কাল থেকে তোমরা দুজনে আমার সাথে অফিসে যাবে ৷ ""
"" কিন্তু....""(মুন)
"" কোন কিন্তু নয় মুন আর শোন কাল একজনের মুখো মুখি হবি সো গেট রেডি ফর টুমোরো কারন কাল ধামাকা হবে কারো কারো হুস উরে যাবে তোদের দেখে....."" কথাটা বলে রহস্যময় হাসি দিলো ফারিহা.....
পরের দিন সকালে ফারিহা মুন আয়ান আবিদ নাস্তা করে নিয়ে ফারিহা মুন আর আবিদ কে রেডি হতে বলে৷ মুন বোরকা পরে আসলে ফারিহা মুন কে থামিয়ে দিয়ে বলে"" মুন বেবি আমাদের অফিসের কিছু রুলস আছে তোকে সেই রুলস অনুযায়ী চলতে হবে ৷ তবে হ্যা শালীনতা রেখে ৷ ওকে তুই আমার সাথে আয়.."""
ফারিহা মুনকে নিজের রুমে নিয়ে এসে কাবার্ড খুলে দেয় মুনের সামনে..."" এখান থেকে কোন ড্রেস চুজ কর মুন ৷ তোর আর আমার ড্রেসের সাইজ একই তাই তোর পড়তে প্রব্লেম হবে না ৷""
"" ওকে বাট তুই চুজ করে দে ফারিহা ""
"" ওকে "
ফারিহা মুন কে অফওয়াইট কালার একটা গাউন বের করে দেয় ৷ সাথে মেচিং হিজাব ৷ মুন গাউন আর হিজাব টা পরে আসে তারপর ফারিহা মুন কে হালকা সাজিয়ে দেয় ৷ ফারিহার গোল্ডের রিচ ওয়াচ টা মুনের হাতে পরিয়ে দেয়৷
"" এই ফারিহা কি করছিস ? তোর এতো দামি রিচ ওয়াচ আমাকে কেন পড়ালি?""
"" কারন এটা আজ থেকে তোর ৷ ধরে নে এটা আমার থেকে আমার বেস্টুকে উপহার দিলাম""
"" তাই আর যখন তন্নি শুনবে তুই আমাকে এতো ভালোবাসিস তখন তো ও জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাবে৷"
"" হিহিহি ও ওমনি ওকে নিয়ে ভাবতে হবে না ৷ ওর সাথে কথা হয়েছে ঢাকা থেকে খুব তারাতারি আসছে এখানে""
"" বাহ তাহলে তো খুব ভালো হবে""
"" হুম , এখন চল অফিসে যেতে হবে ৷ আমিতো রেডি বাট তোকে রেডি করতে গিয়ে লেট হয়ে গেল ৷""
"" হুম চল""
ফারিহা মুন সিড়ি দিয়ে নেমে আসার সময় আবিদ মুন কে দেখে চোখ ফিরাতে পারে না ৷ অফ ওয়াইড কালার গাউন তার উপর ছোট ছোট স্টোনের কাজ ৷ চোখে কাজল ঠোটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক হাতে ঘড়ি সব মিলিয়ে অসম্ভব মিষ্টি দেখতে লাগছে মুন কে ৷
"" জিজু আর কতোক্ষন এভাবে হ্যা করে তাকিয়ে থাকবেন?""(ফারিহা)
"" অনন্তকাল সালিকা ""
""কিহ"""
ফারিহার চিৎকার শুনে আবিদের ধ্যান ভাঙে ৷ বেশ লজ্জা পায় দুজনে ৷ ফারিহা ওদের দুজন কে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ৷ আর আয়ান চলে যায় নিজের অফিসে ৷
সবার আগে অফিসে এসে রিদ তার কাজে লেগে পড়লো ৷ ফারিহা প্রত্যেকটা দিন এক গাদা করে ফাইল রিদ কে চেক করতে দেয় ৷ রিদ যথাস যথাসম্ভব চেষ্টা করে কাজ গুলো কম্পিলিট করার কিন্তু তা কোন ভাবে সম্ভব হয় না কেননা তিন দিনের কাজ কোন মানুষের পক্ষে এক দিনে করা সম্ভব নয় ৷ আর রিদের বেলায় ও তাই ৷ আর পুরস্কার স্বরুপ বস অর্থাৎ ফারিহার কাছে বকা খেতে হয় ৷ তাই রিদ এখন সকাল সকাল অফিসে এসে কাজে লেগে পরে ৷
একে একে অফিসের সব স্টাফ এসে কাজে লেগে যায় ৷ তখনি ফারিহা মুন আর আবিদ কে নিয়ে অফিসে ঢুকে ৷ সবাই ফারিহা কে দেখে গুড মরনিং জানায় ৷ আর অবাক চোখে ফারিহার সাথে অচেনা মানুষদের দেখে অবাক হয় ৷ ফারিহা কেবিনে গিয়ে ম্যানেজার কে কেবিনে আসতে বলে ৷
"" মে আই কামিং ম্যাম ?"" (ম্যানেজার)
"" ইয়েস .."
"" ডেকেছেন ম্যাম?""
"" আঙ্কেল আবার ম্যাম বলছেন?"" খানিকটা রেগে বললো ফারিহা..
"" স্যরি মামুনি আর ভূল হবে না ৷ ""
"" হু , আঙ্কেল পরিচয় করিয়ে দি ৷ এই হচ্ছে আবিদ আর ও মুন ওরা আজ থেকে এই কোম্পানিতে জব করবে ৷ আব্বু আপনাকে নিশ্চয় সবটা জানিয়ে দিয়েছে?""
"" জ্বি মামুনি বড় স্যার আমাকে ফোন করে সবটা জানিয়েছে ৷ আমি আগে থেকে ওনাদের কেবিন রেডি করে রেখেছি৷ ""
"" আঙ্কেল আমি কিছুদিন জন্য অফিসে আসবো আসবো না ৷ ততোদিন মুন আমার পজিশনে থাকবে আর আমি যখন আসবো তখন ওকে অন্য কেবিনে শিফট করে দিবেন ওকে?""
"" ওক মামুনি""
"" আপনি বাইরে গিয়ে সকাল স্টাফ দের এক জায়গায় হতে বলুন আমি আজ ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো""
"" ওকে মামুনি""
ফারিহার কথা মতো ম্যানেজার সকল কে ডেকে এক যায়গায় হতে বলে তখনি ফারিহা কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে মুন আর আবিদ ...
রিদ হঠাৎ মুন কে দেখে যেন আকাশ থেকে পড়লো চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে মুন কে দেখে তাও এই রুপে ৷ রিদের চোখ যেন মুনের উপর থেকে নরছে না ৷ ফারিহা আবিদ দুজনে তা খেয়াল করলো কিন্তু কিছু বললো না ৷
"" সবাই কে এখানে এক সাথে ডাকার কারন টা হলো এরা , পরিচয় করিয়ে দি এই হচ্ছে মৃন্ময়ী ইয়াসমিন মুন আর উনার নাম আমিনুল ইসলাম আবিদ ৷ আজ থেকে দুজনে আপনাদের সাথে একি অফিসে কাজ করবে ৷ বুজতে পেরেছেন আমি কি বলেছি""
"" ইয়েস ম্যাম "" সবাই এক সাথে বলে উঠলো শুধু রিদ বাদে কারন রিদ এখনো তার হুসে ফেরেনি৷
"" গ্রেট তাহলে যে যার কাজে যান আর মিস্টার রিদ কিছুক্ষন পর আমার কেবিনে আসবেন৷ ""
কথাটা বলে ফারিহা চলে গেল ৷ আর মুন আবিদ দুজনে রিদ কে না দেখার ভান করে ফারিহার পিছু পিছু চলে গেল ৷ ওরা যেতে রিদ চেয়ারে ধুপ করে বসে পড়ে ৷ দু-চোখ পানিতে টলমল করছে ৷ হয়তো মুন কে হারিয়ে ফেলায় কারনে তার চোখে বৃষ্টি নেমেছে ৷
রিদের বুকের ভিতর প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছে ৷ চোখ বর বার ঝাপসা হয়ে আসছে ৷ হয়তো এটাই নিয়তি ৷
রিদ চোখে মুখে পানি দিয়ে ফারিহার কেবিনের বাইরে দারিয়ে নক করে ৷
"" কামিং""
ফারিহার পারমিশন পেয়ে রিদ ভিতরে ঢুকে দেখে মুন তাদের বসের চেয়ারে বসে আছে ৷ রিদ কিছুটা অসস্থি হচ্ছে কারন সামনে তার এক্স ওয়াইফ আর তার বতর্মান স্বামী কে দেখে রিদের মটেও ভালো লাগছে না ৷ রিদের ইচ্ছে করছে আবিদ নামক আপদ টাকে এখুনি খুন করে দিতে ৷ কিন্তু এটা অসম্ভব ৷
"" মিস্টার রিদ আপনাকে যে কারনে ডাকা , আজ থেকে মুন আপনাদের নতুন বস আমি কিছুদিন ছুটিতে থাকবো তবে মাঝে মাঝে অফিসে এসে আপনাদের কাজ দেখে যাবো ৷ আর জিজু (আবিদ) উনি একাউন্টিং ডিপার্টমেন্ট দেখবে ৷ ""
"" ওকে ম্যাম"" ঠান্ডা গলায় বললো রিদ...
"" ওকে এখন আপনি আমাদের জন্য কফি পাঠিয়ে দিন৷""(ফারিহা)
"" সিওর ম্যাম""
রিদ এক ঝলক মুনের দিকে তাকিয়ে কেবিনের বাইরে চলে গেল৷ রিদ আজ মুনের চোখে মুখে কোন ভয় বা অসস্থি দেখেনি যেটা ওর ভিতর প্রকাশ পাচ্ছিলো৷ রিদ বাইরে এসে তিন কাঁপ কফি বানিয়ে বসের কেবিনে দিয়ে নিজের ডেক্সে চলে আছে৷ কিছুতেই কাজে মন দিতে পারছে না রিদ বার বার রিদের চোখের সামনে ভেষে উঠছে মুন আবিদ কে জরিয়ে ধরে আছে ৷ আবিদ মুন কে ছুয়ে দিচ্ছে ৷ রিদের কল্পনায় ৷ রিদ বির বির করে বলে উঠলো .....
"" মুন আমার বউ শুধু আমার ওর উপর শুধু আমার অধিকার আর কারো না""
.
.
.
.
_______ " এখনো সাইন করো নি কেন রিয়ানা? আমার কাছে অনন্ত সময় নেই তোমাকে দেওয়ার ""(রায়হান আহাম্মেদ )
" রিদের বাপ তুমি সত্যি ডিভোর্স চাও আমার কাছে?""(রিয়ানা বেগম)
"" হ্যা চাই এমন নিচু প্রকৃতির মহিলার সাথে আমি আর থাকতে চাই না ৷ ""
রিয়ানা বেগম গতকাল থেকে একভাবে ফ্লোরে বসে আছে ৷ কেঁদে যাচ্ছে ৷ কিন্তু তাতে রায়হান আহাম্মেদ এর বিশেষ কিছু যায় আসে বলে মনে হচ্ছে না তিনি প্রিয়ন্তির বিয়ে নিয়ে ব্যাস্ত ছেলে পক্ষ যতো তারাতারি সম্ভব চায় মেয়ে কে বউ করে নিয়ে যেতে ৷ এতে প্রিয়ন্তির কোন আপত্তি নেই ৷ আর না রিদের ৷ রিদ সে দিন-ই প্রিয়ন্তিকে মন থেকে মুক্ত করে দিয়েছে ৷ রিদ প্রিয়ন্তির সাথে কথা বলে শিওর হয়ে নেয় যে প্রিয়ন্তি প্রেগনেন্ট না ৷ প্রেগনেন্সির কথাটা পুরোটাই মিথ্যে ছিলো৷ রিদ এবার আর রেগে যাইনি প্রিয়ন্তির উপর বরং চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে যায় ৷
রায়হান আহাম্মেদ আলমারি থেকে টাকা বের করতে করতে রিয়ানা বেগমের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন"" রিয়ানা সময় নষ্ট করো না ৷ দ্রুত সাইন টা করে দেও ৷ কেন বুজতে পারছো না আমি আর তোমার সাথে থাকতে চাই না ""
"" দোষটা কি আমার রিদের বাপ?"" কাতর চোখে তাকিয়ে বললো রিয়ানা বেগম...
"" সব দোষ তোমার রিয়ানা ৷ না ছেলে কে মানুষ করতে পেরেছো আর না নিজে মানুষের মতো কোন কাজ করেছো৷ আমার জীবনের সব থেকে বড় ভূল কি জানো রিয়ানা তোমাকে বিয়ে করা৷ না তোমার রুপে মহোহিত হয়ে তোমায় বিয়ে করতাম৷ ""
কথাটা বলে রায়হান আহাম্মেদ রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ রিয়ানা বেগম ফ্লোরে বসে হাউ মাউ করে কাদঁতে লাগলো......
.
.
.
.
_______ "এই টাই তোর ধামাকা ফারিহা?""( মুন)
"" কেন তোর এই ধামাকা পছন্দ হয়নি?"" ব্রু কুচকে জ্বিগাসা করলো ফারিহা... তখনি আবিদ মুনের কোমর জরিয়ে ধরে ফারিহা কে বলে.." নো সালিকা ধামাকাটা আমাদের ভিষন পছন্দ হয়েছে৷ আমি তো চেয়েছিলাম ওই জানোয়ার টার সাথে আমার দেখা হোক ৷ ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত আমি শান্তি পাবো না ৷""
"" ওহো চিল জিজু চিল এখন তোমরা এই অফিসে জব করবে ৷ আর তোমাকে বিশেষ কিছু করতে হবে না কারন রিদ যখনি তোমাদের দুজন কে দেখবে তখন ও জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে বুজলে ""
"" একদম ""
আবিদ মুন কে জরিয়ে ধরে আছে এমন সময় রিদ পারর্মিশন না নিয়ে কেবিনে ঢুকে আবিদ আর মুনকে কাছা কাছি দেখে তৈলে বেগুলে জ্বলে উঠলো ৷ মুনের দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে রিদ মনে হয় এখনি দুজন কে ভষ্শ করে দিবে তখনি ফারিহা.........