রংধনু - পর্ব ২০ - তাবাসসুম রিয়ানা - ধারাবাহিক গল্প


ধানমন্ডির একটা ক্যাফেতে এসে বসে সাঁঝ আর সাইমন।সাঁঝ আর সাইমনের সামনে একটা মেন্যু কার্ড রাখা।সাইমন বলল,

''দেখুন কি খাবেন।"

সাঁঝ কিছুটা লজ্জা পেলো।লোকটার সাথে খেতে চলে এসেছে। চেনা নেই জানা নেই।কিভাবে চলে এলো?ধ্যাত!!!অস্বস্তির স্পষ্ট চিত্র সাঁঝের চেহারায় ফুঁটে উঠেছে।সাইমন সেটা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে।তাই একটু হেসে মেন্যু কার্ড হাতে নিয়ে পাশের ওয়েটারটাকে জোরে ডেকে বলল,

''দুটো কোল্ডকফি।একটা সুগারফ্রি হবে।"

সাঁঝ লোকটাকে একবার দেখে নেয়।লোকটা কি বলবে কে জানে?ঘরে ও যেতে হবে।একবার ঘড়ি চেক করে নেয় সাঁঝ।কফির অর্ডার দিয়ে সাইমন সাঁঝের দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো।তারপর বলল,

''তো একটু কথা বলা যাক আপনার সাথে কফি আসা পর্যন্ত। "

সাঁঝ একটু হাসলো।তারপর গলা পরিষ্কার করে বলল,

''কি যেন বলতেন নীলক্ষেতে বলছিলেন।"

একটু নড়েচড়ে বসলো সাইমন।তারপর আশেপাশে চোখঘুরিয়ে বলল,

''ওয়েল ব্যাপারটা কিভাবে নিবেন জানিনা কিন্তু একটু কথা বলতে চেয়েছিলাম আপনার সাথে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর নয়।"

সাঁঝ এবার কেমন একটু অস্বস্তি বোধ করলো।লোকটা ওর সাথে এমনি কথা বলতে চায় কেন?সাঁঝ এত বছরে কোন ছেলের সাথে এভাবে বসে কথা বলেনি কখনো।জীবনের পুরো সময় কেঁটেছিলো গার্লস স্কুল,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে।তাই ছেলেদের সাথে তেমন উঠা বসা হয়নি।এ প্রথম কোন অচেনা পুরুষের সাথে ক্যাফেতে বসে আছে।সাইমন সাঁঝের ঘর্মাক্ত মুখ আর ভীত চাহনি দেখে বলল, 

''আপনি বিব্রত বোধ করছেন আমার সাথে?"
''না আমি ঠিক আছি।"

ভীত চাহনি কাঁটানোর ব্যার্থ চেষ্টা।সাইমন বলল,

''তাহলে চলুন আপনার পরিবার সম্পর্কে জেনেই।কে কে আছেন?
''আমার বাবা মা।আর আমার তিন ভাই আর আমরা চার বোন।"
''ওয়াও। সাতজন? "
''জি। "
''প্রিটি গুড।ভাই বোন বেশি থাকা ভালো।"
''তারা আশীর্বাদ স্বরুপ।আপনি বড় ভাইয়াকে দেখেছেন আমার জানামতে।"
''দেখেছিলাম।ওনি কি করেন?"
''ভাইয়া একটা প্রাইভেট কোম্পানীর মালিকের এ্যাসিস্টেন্টের এ্যাসিস্টেন্ট।"
''ওহ।আপনার বাবা কি করেন?"
''আব্বা অবসর প্রাপ্ত। সরকারী চাকরী করতেন।"

সাইমনের উৎসাহের রেশ কাঁটছেইনা।ও বলে ফেলল,

''পুরো পরিবার সম্পর্কে ছোট্ট করে বলুন।"
''ঠিক আছে।আমার বড় আপা বেলা।ইন্ডিয়া থাকেন ওনার হাজবেন্ডের সাথে।ভাইয়া বিজনেস ম্যান।আর বড় ভাইয়ার কথা বললাম। আম্মা গৃহিনী।মেজ ভাই আদনান এমবিএ করেছে দুবছর আগে।জব খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছেনা।তবে কিছুদিন আগে দুটো কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলো।একটাতে বলেছে একমাস ট্রেনিং করাবে ওরা।আর এর পর আমি।মাস্টার্স করছি উইমেন্স ফেডারেশন থেকে।
আর আমার ছোট বোন হুমায়রা।ও ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে।এবার ফাইনাল দিবে।তারপর আরেক ভাই আছে কুঞ্জন। ও ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হলো।আর সবার ছোট লাবনী।ও ম্যাট্রিক দিবে এবার।"

সাইমন গ্লাসের পানি শেষ করে বলল,

''খুব ভালো লাগলো শুনে।এবার আমা
র ফেমেলির কথা বলি।আমার বাবা নেই।আই মিন মারা গেছেন বাবা।আমার মা আমাকে সাতমাসের সময় রেখে চলে যান......."

সাঁঝ একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

''আন্টি কই?"
''মারা গেছেন ওনি।আমরা দুভাই। আমি ছোট। আমার বড় ভাই সিয়াম।ওনি মেরিড। সতের বছরের একটা মেয়ে আছে।ও সুইজারল্যান্ডে থাকে।আমরা দুভাই আমার বাবার বিজনেস দেখা শুনা করছি।"
''ওহ।ভালো।"
''হুম তবে আপনার পরিবারের কথা শুনে বড্ড বিয়ে করতে ইচ্ছে হচ্ছে।ওখানে জামাই হলে অনেক আদর পাওয়া যাবে তাইনা?"

সাঁঝ বেশ অবাক হলো পাশপাশি লজ্জা পেয়ে বলল,

''জি?"
''মজা করছিলাম।আপনি খুব লজ্জা পান।আজকেই এমন দেখলাম।এর আগে যত বার দেখেছিলাম তখন কিন্তু এমন টা মনে হয়নি।"

সাঁঝ কিছু বলতে পারেনি।মাথা নিচু করে নিয়েছিলো সে সময়টাতে।লোকটার মুখে বিয়ের কথা শুনে বেশ অবাক লাগে ওর?লোকটাকি সত্যিই মজা করছে?কফি শেষ করে দুজনে উঠে দাঁড়ায়।সাঁঝ ব্যাগ নিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছিকো।সাইমন ডেকে উঠে, 

''শুনুন।"

সাঁঝ থেমে যায়।পিছনে ফিরে বলল,

''জি!!"
''কিছু মনে না করলে একটা জিনিস চাইবো।"
''জি বলুন।"
''আপনি একা একা যাতায়ত করেন।একটা মেয়ে মানুষ এভাবে চলা খুব রিস্ক।আমি কি কি আপনার টেম্পোরারি ড্রাইভার হতে পারি?"
''না বাসে কোন সমস্যা হয়না আমার।"
''আপনি বললেন আর আমি বিশ্বাস ও করলাম।তাইনা?বললেন একটা লোককে চড় দিলেন আর আপনার কোন সমস্যাই হয়না?"
''আসলে সত্যি আমি ঠিক আছি।লাগবেনা আমার।"
''দেখুন আমি জানি কতোটা ঠিক আছেন আপনি।অহরহ খুন খারাবির কথা শুনছেন তো।বাসে অনেক ক্রাইম হচ্ছে।এভাবে যাওয়া আশা ঠিক নয়।"
''আসলে কি বলবো?আমি আপনার সাথে কিভাবে?"
আপনার প্রবলেম হলো অপরিচিত পুরুষের সাথে কি করে যাতায়ত করবেন তাই তো?যদি এ অপরিচিত লোকটা আপনার বন্ধু হয়ে যায় তাহলে তো কোন সমস্যা নেই তাই না?"
''কিন্তু আপনার অফিস?"
''সেটা আমার চিন্তা।অন্তত ঘরে পৌছে দিতে পারি তাইনা?"

এদিকে বেলা কাজ সেড়ে রুমে আসে।চুল গুলো হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাসে শুকিয়ে নিতে নিতে ওর কানে এলো জুলির কিছু কথা।জুলি কাকে যেন বলছিলো, 

'"বিভান নাকি একটা বাঙ্গালী মেয়েকে বিয়ে করার নাম করে ওর সাথে শোয় তের বছর যাবৎ।বাঙ্গালী মেয়ে তো খুব বেশি লোভী ওরা।বিদেশী বড় লোক ছেলে পেয়েছে বলেই ড্যাং ড্যাং করে চলে এসেছে।আমি বলি বোন তোমাদের দেশে ছেলে মানুষের অভাব পড়েছে?শুধু শুধু আমাদের ভাত মেরে খেতে গেলে কেন?"

বেলা আর সহ্য করতে পারেনি।দরজা খুলে জুলির সামনে এসে দাঁড়ায়।মেয়েটা অবাক হওয়ার ভান করে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল,

''ওহ মাই গড!!তুমি এখানে?সব শুনে ফেলেছো?"
''আমার রুমের সামনে এসে জোরে জোরে বললে তো শুনবোই তাইনা?আর শুনো বাঙ্গালী মেয়েরা আর যাই হোকনা কেন নিজের সংসার টাকে বেঁধে রাখতে জানে আর কিছু মানুষের কুনজর থেকে বাঁচাতে ও পারে।"

বলে মুচকি হেসে মাথায় ঘোমটা টেনে রুমে ঢুকে গেলো বেলা।বিপত্তি দেখা গেলো আধঘন্টা পরই।রুমের দরজায় ঘন ঘন নকের শব্দ শুনে বেলা শোয়া থেকে উঠে দরজা খুলে দিতেই ওর গালে সজোরে চড় বসে গেলো।বেলা ফ্লোরে পড়তে গিয়ে আলমারি ধরে সামনো তাকায়।বন্দনা আখতার বললেন,

''এত বড় স্পর্ধা আমার ভাতিজিকে কথা শুনাস তুই।"

বেলা নিজেকে সামলে পিছনে জুলিকে দেখতে পায়।মেয়েটা হাসছে।বেলা বলল,

''আমি ভুল কিছু বলিনি।ওনার কিছু বুঝতে ভুল হয়েছিলো সেটাই শুধরে দিলাম।"
বন্দনা আখতার গলার স্বর উঁচিয়ে বললেন,

''এ বাসায় আছিস আমার ছেলের কারনে নাহলে কবে তোকে লাথি মেরে বের করে দিতাম।শুধু আমার ছেলের জন্য পারিনা।"

বেলা কিছু বলতে গেলে পিছনে তাকিয়ে বিভান কে দেখে থেমে গেলো।তারপর মুখে হাসি টেনে এনে বলল,

''মা এ দেখেন আপনার ছেলে ও চলে এলো।ওনার জন্য কাল একটা বিশেষ দিন।আপনি নিশ্চয়ই ভালো কিছু চিন্তা করে রেখেছেন।"

ছেলের কথা শুনে থমকে যান বন্দনা আখতার।নিজেকে সামলে পিছনে ফিরে বললেন,

''এতো জলদি এসেছিস আব্বু?"

বিভান ভ্রু কুঁচকে ওদের দেখছে।মায়ের ডাকে ওর চেহারায় কোন প্রভাব পড়েনি।ও কিছুটা অবাক হয়ে বলল,

''বেলা কি হয়েছে?"

বেলা চুপ হয়ে যায়।লোকটার বাবা কাছে নেই তার।বাবার সাথে তার যোগাযোগ ও নেই।মায়ের কথা জানলে তাহলে খুব কষ্ট পাবেন।কিন্তু কষ্ট দিতে পারবেনা বেলা।তাই এতটা বছর চুপ ছিলো ও।বেলা বলল,

''বিভান সারপ্রাইজটা থাকতে দিননা।মা আপনি গিয়ে রেস্ট করুন।"

বন্দনা আখতার জুলিকে নিয়ে বেরিয়ে যান।বেলা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বিভান ওর কাছে এসে বলল,

''মা কিসের জন্য চিৎকার করছিলো?"
''না বিভান তেমন কিছুনা।আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন।"
''বেলা কিছু জিজ্ঞেস করছি আমি।বলো।"
''সত্যি কিছুইনা।"

বিভান এবার সরে এলো।তারপর রাগ কন্ঠে বলল,

''ভালো।মায়ের থেকে জেনে আসি ব্যাপারটা।"

বলে দরজা খুলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো বিভান।নিচে সোফায় বসে টিভি দেখছেন বন্দনা।বিভান এসে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলল, 

''কথা আছে।"

বন্দনা আখতার টিভি বন্ধ করে বললেন,

''বল।"
''মা তোমার ভাতিজির জন্য আমার বেলাকে যদি কিছু শুনতে হয় তাহলে একদম সহ্য করবোনা।"
''তোর বৌ কে চিনিস না তুই।ও কি করে তুই চলে যাওয়ার পর চিন্তা ও করতে পারবিনা।"

রেগে উঠে দাঁড়ান বন্দনা আখতার।বিভান বলল,

''মা আমি ওকে খুব ভাল করে জানি।এটা ও জানি এখনো ওকে মেনে নিতে পারোনি তুমি।তাই বলে তোমার ভাতিজির জন্য কিছু বলতে পারোনা ওকে।"
''আমার ভাতিজি ভাতিজি করছিস কেন?শোন তোর বৌ কোন ধোয়া তুলসি পাতা নয়।জুলিকে বলছিলো ও নাকি তোদের ওপর কুনজর দেয়।তোদের সংসার ভাঙ্গতে চায়।"
''খারাপ কিছু বলেনি মা।জুলির চরিত্র আমার খুব ভাল করে জানা আছে।আর তোমার ভাতিজির জন্য জব দেখেছি আমি।ওরা ওকে নতুন বাসা দেবে।আমি চাইনা ওর কারনে ঘরে অশান্তি হোক।"

কথা গুলো বলে বিভান উপরে চলে যায়।বন্দনা আখতার চিন্তায় পড়ে যান।বিভান রুমে এসে দেখলো বেলা খাটে বসে আছে।বিভান গোসলের জন্য জামা কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। বেলার নিচে নামতে ভয় করছে।কারন মা ওকে পেলে খুব শোনাবেন।কিন্তু বেলা আর নিতে পারেনা।আর কতো সহ্য করবে?তেরটা বছর যাবৎ সহ্য করেই আসছে।সামনে আরো সহ্য করতে হবে।কিছুক্ষন পর বিভান বেরিয়ে আসে।তারপর চুল শুকিয়ে বেলার সামনে এসে বসে।বেলার গাল লাল হয়ে আছে।বিভান কিছু বলতে পারেনা।এটা মারের চিহ্ন বুঝা হয়ে গেছে ওর।বিভান বেলার হাত আলতো করে ছুঁয়ে বলল,

''বেলা কষ্ট পেওনা প্লিজ।সব ঠিক হয়ে যাবে।জুলি শীঘ্রই বেরিয়ে যাবে।আমাদের মাঝে আসবেনা ও।
বিশ্বাস করোনা আমাকে?"

বিভানের লজ্জা পাচ্ছে।কারন বেলাকে আঘাত পেতে হয়েছে ওর অনুপস্থিতিতে।বেলার সাথে তেরটা বছর থেকে বিভান বুঝে গেছে বেলা কেমন?
বেলা কিছু বলতে পারেনা।বুক ফেঁটে যাচ্ছে ওর।বিভানের বুকে মাথা রেখে কেঁদে ফেলে ও।কান্না জড়িত কন্ঠে বলতে লাগলো,

''আপনি সাথে থাকলে সব সহ্য করবো বিভান।বিশ্বাস করি আপনাকে খুব বিশ্বাস করি।আমি কষ্ট পাইনি।মা মুরব্বি মানুষ।ওনিই ভালবাসবেন ওনিই শাসন করবেন তাইনা?"

বিভান বেলা কে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।বেলার খালি পিঠে ওর আঙ্গুল গুলো বিচরন করছে।আর বিভান বেলা অশ্রুসিক্ত অধরযুগলে মেতে আছে।শুষে নিচ্ছে সকল কষ্টের ধারা।এদিকে নিশাদ ইদ্রি কে পড়াতে এসেছে।ইদ্রি আজ টকটকে লাল গাউন পরেছে।তবে মুখে একদম সাজ নেই।চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে।ভীষন মোহনীয় সুগন্ধ ভেসে আসছে যা নিশাদের নাকে লাগে।মেয়েটাকে খুব বেশি সুন্দর লাগছে।না চেয়ে ও নিশাদ মেয়েটাকে মনযোগ দিয়ে দেখলো।ইদ্রি মুচকি হেসে বলল,

''মুগ্ধ হয়ে গেলেন তাইনা মিঃ ইঞ্জিনিয়ার?"
''একদম না।তোমাকে সুন্দর লাগছে।তবে মুগ্ধ হবো কেন?"
''একটু ভালো করে কথা বলতে পারেননা?সবসময় আমার সাথে রেগে কথা বলেন।"
''দেখো আমি তোমাকে কম্পিউটার শিখাতে এসেছি তারমানে তোমার শিক্ষক আমি।শিক্ষকের সাথে শিষ্য হয়ে থাকো।তোমার বড় ভাইয়ের মতো আমি তাই তোমাকে বলছি।এখানে কষ্ট পেয়ে বোকামি করোনা।"

ইদ্রির মন টা খারাপ হলে ও দুষ্টু হেসে বলল,

''বড় ভাই তো নন তাই না?"
''হুম।তো?"
''ফ্রেন্ড হতে পারি আমরা পড়ার বাহিরে।"

দীর্ঘশ্বাস ফেললো নিশাদ।তারপর বলল,

''হতে পারি।"
''তাহলে আপনি মাঝে মাঝে আপনার থেকে কিছু সময় বের করে ঘুরতে নিয়ে যাবেন আমাকে।"
''দেখো ইদ্রি আমার জব আছে।খুব রাত করে ঘরে ফিরতে হয়।এর মাঝে ও তোমাকে কম্পিউটার শিখাতে আসি।প্লিজ এমন রিকোয়েস্ট করোনা।"

ইদ্রির মন খুব খারাপ হয়।তারপর ও বলল,

''তাহলে আমার জাদুঘরে যাওয়া?"

নিশাদ কি যেন ভাবলো তারপর বলল, 

''কাল ছুটি আছে আমার।তবে বিকেলে কিছু কাজ আছে।সকালে যাবে?"

ইদ্রি মুখ মুহূর্তে হাসিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো।খুশি হয়ে বলল,

''অবশ্যই যাবো।"

নিশাদ একটু হাসলো যা ইদ্রির কাছে স্বপ্নের মতো ছিলো।
এদিকে আদনান কে যেতে হবে চিটাগাং।সেখানে ওদের একমাসের ট্রেনিং হবে।সেখান থেকে ওদের জানিয়ে দেয়া হবে সিলেকশানের কথা।সবাই কে আলাদা আলাদা যেতে হবে।তাই আদনান বাসের টিকিট করিয়ে নেয়।পরদিন দুপুরে বাস ছাড়বে।

!!!!

ইমতিয়াজের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে নিশাদ।মেয়েটা এখনো এলোনা।নিশাদ হাতের ঘড়ি চেক করে উপরো তাকায়।রাস্তার দিকে মুখ করা ইদ্রির রুম।নিশাদ নিজেকে কন্ট্রোল করতে চাইছে।রাগ হওয়া একদম চলবেনা।তবে রাগ লাগছে ওর।কেন এতো দেরি করছে মেয়েটা?হঠাৎ ইদ্রির দেখা পাওয়া গেলো।একবারের জন্য যেন হার্ট মিস করে নিশাদ।হৃদকম্পন অনেকাংশে বেড়ে গেছে।ইদ্রিকে আজ একদম বাবু লাগছেনা।মনে হচ্ছে সুন্দরী কোন যুবতী। নিশাদ সোজা হয়ে দাঁড়ায়।ইদ্রি হেঁটে হেঁটে বিভানের সামনে এসে দাঁড়ায়।নিশাদ কিছু বলতে পারছেনা।ইদ্রিকে দেখছে।নীল শাড়ীতে কি এক মোহনীয়তায় ভরে গেছে ইদ্রি।ওর সৌন্দর্য অনেকাংশে বেড়ে গেছে।ইদ্রি কাতানের নীল শাড়ী পরেছে।হাতে বড় একটা ব্যাগ।নিশাদের তাকানোয় ইদ্রি কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল,

''কেমন লাগছে?"
''ভালো।"

বলে যেন হাফ ছাড়ে নিশাদ।তবে মনে হয়নি ইদ্রি খুশি।কারন ও হয়ত আরো বেশি কিছু আশা করেছিলো নিশাদের থেকে।ইদ্রি বলল,

''শুধু ভালো?"
''একটা বললেই হলো ইদ্রি আর তুমি আমার ছাত্রী,,,,,,",

পুরো কথাটা শেষ করতে পারেনি নিশাদ।ইদ্রি ওর দুঠোঁটের মাঝে নিজের ডান হাত আলতো করে রেখে বলল, 

''না আপনি আমার টিচার না ভাইয়ার বন্ধু।আপনি এখন আমার ফ্রেন্ড।আর আমি ও আপনার ছাত্রী নই।"

নিশাদ ইদ্রির হাত নিজের মুখ থেকে সরিয়ে অস্ফুটস্বরে বলল,

''জি।"

ইদ্রি একটু হাসলো।নিশাদ বলল,

''কিভাবে যাবে?গাড়িতে?"
''না।"
''তো?"

ভ্রু কুঁচায় নিশাদ।ইদ্রি হেসে বলল, 

''অবশ্যই রিক্সা।আজ নো গাড়ি অনলি রিক্সা।"
''বসতে পারবে তো?"
''কেন পারবোনা?বসার জন্য স্পেশাল কিছু লাগে নাকি?"
''না সেটা না কখনো উঠোনি তুমি।যদি পড়ে যাও!!!"
''পড়বো কেন? আপনি আছেননা।ধরে ফেলবেন।"

ইদ্রির আচমকা এমন কথায় নিশাদ লজ্জা পেয়ে যায়।ইদ্রি ও কিছুসময়ের জন্য চুপ।দুজনের মাঝে তীব্র নীরবতা।নিশাদ আড় চোখে ইদ্রিকে দেখে।মেয়েটার হাতে বেশ বড় একটি ব্যাগ।নিশাদ সেটি হাতে নিয়ে বলল,

''তুমি কি আর কোথা ও যাবে?"

ইদ্রি এবার একটু স্বাভাবিক হয়ে বলল,

''না কেন?"
''এতো বড় ব্যাগ।কোথাও গিয়ে থাকবে?"
''আরে না।এগুলো আমাদের লাঞ্চ।আমি রান্না করেছি।"
''বাহিরে খেতে পারতাম আমরা।আর কাজ ও আছে আমার।"
''বাহিরে পরে খেয়েন আজ আমরা হাতের রান্না খেয়ে দেখবেন।কাজ তো বিকেলে।"
''ওকে।"

নিশাদ এবার কি যেন ভেবে বলল,

''তোমার বাবা মা জানেন?কিছু মনে করেননি ওনারা?"
''না তো।কি মনে করবে?"
''ওহ।তাহলে চলো রিক্সা ঠিক করি।"

নিশাদ একটা রিক্সা ঠিক করে শাহবাগের জন্য।দুজনে উঠে বসে।ইদ্রি কেমন করে যেন বসলো। মনে হচ্ছে পড়ে যেতে পারে।নিশাদ বলল,

''ট্যাক্সি নেই?"
''না এভাবেই যাবো।"
''পড়ে যাবে তো।"
''আপনি আমার পিছনে হাত রাখতে পারেন।তাহলে কিছু হবেনা আমার।"

নিশাদ কি বলবে কি করবে বুঝতে পারছেনা।ওর খুব আনইজি লাগছে।তারপর ও কোনরকম মেয়েটার পিছনে হাত রেখে রিক্সা ধরে শক্ত করে।ইদ্রি একটু হেসে নিশাদের দিকে তাকায়।নিশাদ ইদ্রির দিকে তাকাচ্ছেইনা।ইদ্রি নিশাদের দিকে এগিয়ে এলো একটু।নিশাদ একদম শক্ত হয়ে আছে।ইদ্রি বলল,

''কিছু বলুন। এভাবে চুপচাপ ভালো লাগছেনা।"

নিশাদ বলে উঠে,

''কি বলবো?"
''কিছু একটা। "
''আসলে ইদ্রি আমি আননেসেসারি কথা বলতে পারিনা।"

ইদ্রি একটু ম্লান হাসে।তারপর বলল,

''আচ্ছা আমিই বলি।"
''হুম।"
''সিডনি তে আমি যে হোস্টেলে ছিলাম আমার জানালার সামনে একটা ক্রিসমাস ট্রি ছিলো।এটা পুরোনো ছিলো।গায়ে কোন লাইট জড়ানো ছিলোনা।পরিত্যাক্ত গাছ আর কি।আমি মাঝে মধ্যেই রাতে জানালার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বাহিরের পরিবেশটা দেখতাম।একদিন সেখানে দাঁড়িয়ে গাছটার দিকে চেয়েছিলাম তারপর খেয়াল করলাম গাছটার পিছে দুটো চোখ আমাকে দেখছে।আমি বুঝতে পারছিলাম না কি সেটা?"

নিশাদ এতক্ষন কাহিনী শুনে ইদ্রির পানে চায়।মেয়েটার মুখে কাহিনী ভালোই লাগছে।নিশাদ জিজ্ঞেস করে,

''কি ছিলো?"
''বলছি।সেটা হঠাৎ নড়ে উঠায় আমি লাফিয়ে উঠতো চেয়েছিলাম ভয়ে।তারপর সেটা সামনে আসতে কি বলবো নিজেকে জানিনা আমি।"

নিশাদের মুখে একটু হাসি।ও জিজ্ঞেস করলো,

''কেন কি বলবে?"
''বেকুব ছিলাম ।কারন ওটা একটা বিড়ালের বাচ্চা ছিলো।"

বলে ইদ্রি নিজে হেসে দিলো।নিশাদের মুখে হালকা হাসি লেপ্টে আছে।পুরোটা রিক্সায় ইদ্রি অনেক কথা বলছিলো।সব কথাই ছিলে দুষ্টুমিতে ভরা।নিশাদের ভালোই লাগছিলো কথা গুলো শুনতে।প্রানোচ্ছল একটা মেয়ে ইদ্রি।ওকে দেখে কেউ বলবোনা তেইশ বছর বয়সী কোন মেয়ে।বলবে ওর বয়স পনের ষোল বছর।একদম চঞ্চল।জাদুঘরে পৌছে দুজনে ভিতরে প্রবেশ করলো।ইদ্রির চোখে উৎসাহের শেষ নেই।এদিকে ফোনটায় একবার তাকায় হুমায়রা।হৃদয় আহমেদ ছেলেটা ওকে মেসেজ করবে।বেশ সুন্দর করে কথা বলতে পারে ছেলেটা।মেসেজ করে ওকে জিজ্ঞেস করে খেয়েছে কিনা?ও কেমন আছে।খুব খেয়াল রাখে।হুমায়রার ও ভালো লাগে মেসেজ করতে।সময়টা কিভাবে যে পার হয়ে যায় বুঝতে পারেনা। তবে ছেলেটা এখনো ওর ফ্রেন্ড লিস্টে ঝুলে আছে।
এক্সেপ্ট করতে কেমন যেন ভয় ও লাগে।নাস্তা সেড়ে ফোন নিয়ে বসে হুমায়রা।বইয়ের নিচে ফোন রেখে পড়ছিলো ও।আব্বা আর আম্মা কয়েকবার দেখে গেছিলো তবে তারা বুঝতে পারেনি।হঠাৎ মেসেজ এলো হৃদয় আহমেদ থেকে।সে লিখেছে, 

''নীলাঞ্জনা কি করছেন?"

হুমায়রা একটু হেসে মেসেজ দিলো,

''আমার একটা নাম আছে।নীলাঞ্জনা বলে ডাকেন কেন?"
''ভালো লাগে।আর তুমি তো আমরা নীলাঞ্জনাই তাইনা?"
''আপনার নীলাঞ্জনা মানে কি হুম?"
''কিছুনা ম্যাম।তো কি করছিলেন?"
''পড়ছিলাম।আপনি?"
''আপনাকে ভাবছিলাম।তা এভানে পড়াশুনা করছেন?"
''কোন ভাবে?"
''এই যে আমাকে মেসেজ করে।"
হুমায়রা একটু হেসে কিছু লিখতে গেলে লাবনী এসে বলল,

''কি করছিস আপু?পড়া বাদ দিয়ে ফোন চালাচ্ছিস?"
''শশ চুপ।যা এখান থেকে।"
''চলে যেতে বললে গিয়ে মাকে বলে দিবো।সাঁঝ আপি বলছে এখানে তোর পাশে বসতে।"

হুমায়রা কিছু বললনা।হৃদয় আহমেদ নামের ছেলেটাকে মেসেজ করে বলল,

''পরে নক করছি।পড়া শেষ করে নিই।"
''ওকে।"

হুমায়রা ফোন বন্ধ করতে লাবনী দুষ্টু হেসে বলল,

''কে সে হৃদয়?"
''তুই মেসেজ দেখছিলি?"

রেগে যায় হুমায়রা।লাবনী কিটকিটিয়ে হেসে বলল,

''হুম দেখতে হবেনা?আমার বোন কার সাথে প্রেম করে খবর রাখতে হবেনা?"

হুমায়রা লাবনীর কান টেনে রেগে বলল,

''একদম বাজে কথা বলবিনা।কিসের প্রেম হ্যা?কারোর সাথে কথা বললে প্রেম হয় তাইনা?"

লাবনী নিজের কান ছাড়াতে বলল,

''ছাড় নাহলে ভাইয়া বিকেলে আসলে বলে দিবো।"

হুমায়রা ছেড়ে দেয় নিশাদের কথা শুনে।লাবনী উঠে দৌড়ে বেরিয়ে যায়।
হুমায়রা ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে পড়ায় মন দেয়।এদিকে বেলার ভেতরটা কেমন অস্বস্তিতে ভরে আছে।লোকটা জুলিকে ওর নতুন অফিসে নিয়ে গেছে কাজ বুঝায় দেয়ার জন্য।ভয় বিভানকে নিয়ে নয় জুলিকে নিয়ে।বন্দনা আখতার সকাল থেকে বিভাকে বলছিলেন অন্তত জুলিকে ওর নতুন অফিসে নিয়ে যেতে।সব বুঝিয়ে দিতে।বিভান প্রথমত রাজি ছিলোনা। কিন্তু বেলা ওকে বলেছিলো,

''জুলিকে নিয়ে চলে যান আপনি।ও কাজ বুঝলে ওর জবটা হবে।তখন ও চলে যেতে পারবে দ্রুত।"

বিভান তবুও রাজি ছিলোনা।জুলির কর্মকান্ড একদম ভালো লাগেনা ওর।মেয়েটা কখন কি করে বলা যায়না।কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিভানকে রাজি হতে হলো বেলার কথা মেনে।অন্তত জবটা হয়ে গেলে বিদায় হবে মেয়েটা। জুলিকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।জুলি বিভানের পাশাপাশি হাঁটতে থাকে।বিভানের অজান্তেই জুলি ওর হাত ধরার চেষ্টা করতেই বিভান ওকে ধমকে বলল,

''নিজের লিমিটে থাকো।তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি শুধু তোমার সুবিধার জন্য।এর সুযোগ নিতে যেওনা।"

জুলির মাথা নিচু করে রাখে।তবে রাগে গা ফেঁটে যাচ্ছে ওর।বিভান ওকে নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।বেলা নিজের রুমে বসে আছে।ও চাইছে বিভান যেন দ্রুত ফিরে ওর কাছে আসে।বেলা বলেছে তো বিভানকে যেতে কিন্তু নিজের 
ভেতর তীব্র ভয় কাজ করছে। লোকটা কে ভীষন বিশ্বাস করে কিন্তু জুলিকে না।জুলি বিভানের গায়ের সাথে ধাক্কা খেতে চায় বারবার ওকে স্পর্শ করা চেষ্টা করে যা বেলার একেবারেই ভালো লাগেনা। বিভান যতক্ষন আসছিলোনা বেলার গলা শুকিয়ে আসছিলো গা কাঁপছিলো ওর।দম বন্ধ হবার উপক্রম।দুপুর একটা বিভান ঘরে এসেই পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বেলাকে।বেলা এবার প্রান ফিরে পেলো যেন।বেলার কাঁধে ঘাড়ে অজস্র ভালবাসর পরশ দিতে থাকলো বিভান।বেলা কিছু বলতে পারছেনা।কথা বলার শক্তিটুকুও যেন হারিয়ে ফেলেছে।এদিকে আদনান চিটাগাং পৌছে ওদের অফিসের একটা শাখায় চলে আসে।পাশেই স্টাফদের থাকার ব্যাবস্থা হয়েছে।আদনানের রুমে আরো চারজন থাকবে।খাট একটা।আর ফ্লোরে ঘুমানোর জন্য তোশক আর বালিশ আছে।
আদনান পুরো ঘরটায় চোখ বুলায়।নিচে শোয়ার অভ্যাস কখনোই হয়নি।তবে এবার মনে হচ্ছে হবে।আদনান কাপড় চোপড় নিয়ে গোসলে গিয়ে দেখলো কমোডে একদম ময়লা।সামলাতে পারেনা ও।গা গুলিয়ে আসে ওর।যে বা যারা করেছে একটু ফ্লাশ করে দিলে পারতো।আর থাকতে পারেনা আদনান। ভড়ভড় করে বমি করে নিজের গা ভাসিয়ে দিলো ও। এদিকে জাদুঘর থেকে বেরিয়ে আসে নিশাদ আর ইদ্রি।দুজনের খুব খিদে পেয়েছে।নিশাদ আর ইদ্রি দুজনে হাত ধুয়ে একটা বেঞ্চে বসে।ইদ্রি দুটো ওয়ানটাইম প্লেট বের করে সেখানে খিচুড়ী বেড়ে নেয়।মুরগী দিয়ে খিচুড়ী রেঁধেছে ও।ইদ্রি খিচুড়ীর ওপর সিদ্ধ ডিম দিয়ে বলল,

''খেয়ে দেখুন।"

নিশাদ মাথা ঝাঁকিয়ে একলোকমা মুখে তুলে।বেশ মজা হয়েছে।নিশাদের খুব ভাল লাগলো।খিচুরী ওর এমনিতেই বেশ প্রিয়।নিশাদ বলল,

''বেশ ভালো হয়েছে।তুমি রেঁধেছো?"
''জি অবশ্যই।"
''ওহ।"

ইদ্রি হেসে বলল,

''একটু আঁচার দেই।আরো বেশি ভালো লাগবে।"

নিশাদ না করতে পারেনা।আঁচার তেমন পছন্দনা তবে খিচুড়ীর সাথে জমে।নিশাদ বলল,

''একটু দিও।"

ইদ্রি হেসে অল্প একটু আমের আঁচার নিশাদের প্লেটে দিয়ে বলল,

''দেখুন এবার।"

নিশাদ এবার একটু আঁচার নিয়ে খিচুরী মুখে দিয়ে বলল,

''আঁচারটা ভালো হয়েছে।"

খাওয়া শেষে দুজনে উঠে যায়।ইদ্রি সব ঠিক করে বেরিয়ে আসে।নিশাদ ওকে বাসায় পৌছে দিয়ে নিজে কাজে চলে যাবে।বাসার সামনে এসে রিক্সা থামতেই ইদ্রি নেমে নিশাদের দিকে তাকায়।আজ বেশ ভালো কেঁটে ছিলো সময়টা একসাথে।নিশাদ ইদ্রির তাকানো উপেক্ষা করে বলল,

''কাল আসবো।সব দেখে রেখো যা যা করতে বলেছিলাম।"
''জি।"

বলেই ইদ্রি সামনে হেঁটে চলে যেতে থাকে।রিদ্ধিকে পড়িয়ে নিচে আসে সাঁঝ ভেবেছিলো লোকটা হয়ত ভুলে যাবে ওকে বাসায় দিয়ে আসার কথা।তবে ভালো হবে।ও কে লোকটার যে ওকে দিয়ে আসবে বাসায়।কয়েকদিনের পরিচয়ে লোকটার ওপর কোন আশা করাটা নিরর্থক হবে।
কিন্তু ভুল ভাঙ্গলো ওর।গেট থেকে বেরুতেই দেখলো রুদ গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ওর দিকে চেয়ে একটু হাসে।সাঁঝ সেখানে দাঁড়িয়ে যায়।কি করবে ও?লোকটা যে ওর দিকে এগিয়ে আসছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন