শূণ্যতায় আমি পরিপূর্ণ (পর্ব ০৩)


গাড়ি থেকে নেমেই হসপিটালের ভিতরে ঢুকে গেলো নিবিড়।বিয়ে বাড়ির মতো এখানেও মানুষের আনাগোনা। লাল বেনারসি শাড়িতে একা একটা জাগায় বসে আছে কুয়াশা। আশেপাশে কেউ বসে কেউ দাঁড়িয়ে। যে যার মতো করেই মন খারাপ করে আছে।তোসাবকে আইসিইউতে কাঁচের চার দেওয়ালের ভেতর বন্ধি করে রাখা মানুষটাকে উঁকিঝুঁকি মেরে দেখছে তার মা বোন ভাই আর বাবা।সাথে আছে কুয়াশার পরিবার আর নিবিড়ের মা।
নিবিড় আস্তে আস্তে এগিয়ে আসতেই আজমল হোসেন নিবিড়কে দেখে বুকে ঝাপটে নিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে, বাবা নিবিড়, এই কী হলো? আমার মেয়েটার এমন অবস্থা আমি নিজের চোখে দেখতে পারছি না বাবা! কোন  অন্যায় আমি করেছিলাম যার শাস্তি আমার মেয়েটা কে পেতে হলো?এতো অল্প বয়সে আমার মেয়েটা এতোবড় একটা শোকের মুখের পড়েছে।নিবিড় কথাগুলো শুনছে ঠিক কিন্তু ঘাড় ঘুরিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কুয়াশার দিকে।কুয়াশা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।নিবিড় আজমল হোসেন হাতটা কাঁধ থেকে সরিয়ে কুয়াশার কাছে গিয়ে  পাশের চেয়ারটায় বসলো।
নিবিড় শান্ত গলায় বললো, কুয়াশা! 
কুয়াশা নিবিড়ের কন্ঠটা কানে আসতেই কিছুটা সময় নিয়ে লাল টকটকে চোখে নিবিড়ের দিকে তাকালো।
বর্ষাকালের নদীতে যেমন পানি টইটম্বুর হয়ে থাকে ঠিক কুয়াশার চোখ দুটোও আজ টইটম্বুর হয়ে আছে।হালকা চোখের পাতা পড়লেই পানি গড়িয়ে পড়বে।কিন্তু কুয়াশা নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে ফ্যাসফ্যাসে শান্ত গলায় বললো,শান্তি লাগছে? অনেক আনন্দ লাগছে তোমার তাই না? খুব ভালো লাগছে তোমার আমাকে আজ এই অবস্থায় দেখেতে?
দেখো না এখনো কিন্তু আমি সাদা শাড়ি পরিনি।তুমি নিশ্চয়ই এইটাই দেখতে আসছো আমি সাদা শাড়ি পরেছি কিনা? ওই যে দেখো ওই মানুষটা এখনো বেঁচে আছে।তুমি হয়তো আমাকে মন থেকে কখনো ভালোবাসতে পারো নি। কিন্তু ওই কয়েকদিনের মানুষটা হয়তো আমায় একটু খানি হলেও ভালোবেসেছে।না হলে আমায় আরও কয়েকঘন্টা আগেই একা রেখে চলে যেতো।
নিবিড় ভারী গলায় বললো, কুয়াশা প্লিজ তুই পাগলামি করিস না।কেনো করছিস এইসব। আল্লাহর উপর ভরসা রাখ দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
কুয়াশা তাচ্ছিল্য গলায় বললো, ঠিক! হ্যাঁ নিশ্চয়ই ঠিক হবে।হতেই হবে।না হলে যে আমি তোমার কাছে হেরে যাবো।তুমি আমার ভালোবাসাকে উপেক্ষিত করে ওই মানুষটাকে বেছে নিতে বলেছো।তোমার পা দুটো জড়িয়ে যখন আমি কান্না করেছিলাম তুমি বলেছো আমি নাটক করি।বেশিদিনের ঘটনা নয় কাল রাতের ঘটনা। মনে আছে তোমার?  নাকি ভুলে গেছো?
-কুয়াশা প্লিজ, তুমি শান্ত হও। এখন এইগুলো বলার সময় নয়।
-তাহলে কখন সময়? বুজাও তুমি আমাকে।অবশ্য আমার মতো মেয়ে তোমার সাথে যায় না তা তুমি নিজেই বলেছো।সত্যিই তো এইসব বলে এখন লাভ কী।কিন্তু তুমি! হ্যাঁ তুমি আমার সামনে আর কখনো আসবে না।আজকের পর থেকে যেনো তোমার এই মুখ আমাকে দেখতে না হয়।আজ আমার নতুন চ্যালেঞ্জ তোমার সাথে, ওই মানুষটাকে সুস্থ করার।আমি আজ থেকে অন্য কুয়াশা যে কুয়াশা তোমাকে ভালোবাসে না।বুঝেছো তুমি কুয়াশা তোমাকে ভালোবাসে না।

তোসাবের মা এতোক্ষণ তাকিয়ে দেখছিলো কুয়াশা আর নিবিড়কে।নিবিড় কিছু বলতে যাবে তখনই তোসাবের মা এসে কুয়াশার ওপর পাশে বসে কাঁধে হালকা স্পর্শ করতেই কুয়াশা তোসাবের মায়ের দিকে ফিরে তাকালো।
তোসাবের মা গলাটা ঝেড়ে বললো,কাঁদিস না মা।আজ থেকে তুই আমার মেয়ে আর আমিই তোর মা।মেয়েরা সারাজীবন এক মায়ের কাছে থাকে না।জীবনের নিয়ম অনুযায়ী যে অন্য মায়ের কাছেও যেতে হয়।
দেখছিস না আমি কাঁদছি না। আমার ছেলে ঠিক ফিরে আসবে এইটা একজন মায়ের বিশ্বাস। 
কুয়াশা তোসাবের মায়ের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে আছে।তোসাবের মা একটু দম নিয়ে, তিন্নি এই তিন্নি এইদিকে আয়।
তিন্নি কাছে এগিয়ে আসতেই, তোর ভাবীকে নিয়ে যা।যা মা ও তোমার ছোটো বোনের মতো।আজ তুমি আর তোসাব একসাথেই আমার বাড়িটাকে পরিপূর্ণ করতে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস তোমাকে একা যেতে হচ্ছে।কথাটা বলেই তোসাবের মা চোখ মুছলেন আঁচল দিয়ে 
নিবিড় উঠে গিয়ে নিজের মায়ের সামনে দাঁড়াতেই, রহিমা বেগম ছেলেকে বুকে জড়িয়ে,কেউ না জানলেও আমি জানি তোর মনের ভিতর কতটা কষ্ট হচ্ছে।এখানের কেউ তোকে বুজবে না।যে মানুষটাকে তুই নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসিস সে মানুষটাও তোকে বুজবে না।তাহলে কেন শুধু শুধু নিজেকে এইভাবে কষ্ট দিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিস? 
নিবিড় মায়ের বুক থেকে মাথা উঠিয়ে, মা আমি তো চেয়েছি শুধু সবাই ভালো থাকতে। আমি ওকে ভালোবাসবো শুধু ওকে নিয়ে সুখে থাকবো এই চিন্তা কখনো আমি  করিনি মা।একটা মেয়েকে ভালোবাসার টানে ওর পরিবার থেকে আলাদা করা তো ঠিক না।তাই হয়তো আমি পারিনি ওকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করতে। ওরা কেনো আমার কাছে বিয়ে দিতে রাজি ছিলো না এটাই আমি বুজতে পারিনি মা।আচ্ছা মা তোমার নিবিড় কী এতোই খারাপ? আচ্ছা মা তুমিই বলো,আমার কিসের অভাব ছিলো? আমি যা বেতন পাই তাতে কী ওদের মেয়ের চলতো না?
কথাগুলো শুনে নিবিড়ের মা নিবিড়ের মুখে হাত দিয়ে, চুপ কর নিবিড় চুপ কর।কথাটা বলেই রহিমা বেগম চোখ মুখ লুকালেন শাড়ির আঁচলে।মনে মনে ভাবলেন ওরা কেন তোর কাছে মেয়ে দেয়নি বাবা তুই এখনো আসল ঘটনা জানিস না।যদি জানতি আজ তোকে আমার হারাতে হতো।আমি চাই না তোকে হারাতে বাবা।তুই আমার ছেলে শুধু আমারই ছেলে।নিবিড় দুই হাত দিয়ে নিজের মুখ মুছে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, মা দেখো কুয়াশা চলে যাচ্ছে।
আমি যাবো মা? 
রহিমা বেগম ফিরে তাকিয়ে, কোথায় যাবি?
- ওর শ্বশুর বাড়িতে দিয়ে আসার জন্য।
-না বাবা তুই এখন আমার সাথে বাসায় যাবি।অনেক তো হলো। আর কেন পিছনে ফিরে তাকাচ্ছিস?
ওই মেয়ের জন্য তোর বাবা আমাদের ছেড়ে সারাজীবনের জন্য চলে গেছে।শুধু মাত্র মানবতার কারণে আমি ওর বিয়েতে তোর কথানুযায়ী থেকেছি। শুধু তোর কথা রাখতে নিজের স্বামীর খুনিদের বাসায় গিয়েছি আজ হসপিটালও এসেছি।শুধু এইটা ভেবে আমার ছেলে আমাকে বলেছে, মা সব কিছু ভুলে নতুন করে শুরু করো।ইসলাম মুসলমানের রাগ স্বকৃীত দেয়নি।তুই আমায় এটাও বলেছিস অন্যায় যদি তারা সত্যিই করে থাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আল্লহ আছে।হঠাৎই নিবিড়ের দিকে বড় বড় চোখ করে,আচ্ছা নিবিড় আজ কুয়াশার শাস্তি কী তাই জন্যই হয়েছে?আজ কুয়াশার এই অবস্থা কী তাদের অন্যায়ের কোনো শাস্তি? 
নিবিড় মায়ের দিকে রাগন্বিত টকটকে লাল চোখে তাকিয়ে ঝাঁঝালো গলায় বললো,মা! বলেছি না সবসময় চুপ হয়ে থাকবে।এতো ভুল বাল কথা বলো কেনো?চলো বাসায় চলো।
নিবিড় মাকে নিজের বাহুডোরে নিয়ে এগিয়ে যেতেই হসপিটালের গেটের সামনেই কুয়াশাকে দেখে থমকে দাঁড়ালো।
মাকে গাড়িতে বসিয়ে কিছুটা সময় অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে কুয়াশার দিকে।
তিন্নি কুয়াশাকে গাড়িতে বসিয়ে নিবিড়ের সামনে এসে দাঁড়িয়ে, আপনাকে প্রথম দেখলাম কোনো জেঠাতো ভাই তার চাচাতো বোনের জন্য এতটা কষ্ট করে।কাল থেকে আমি আপনাকে যত দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি।আজ আপনি ওর জন্য কতটা কষ্ট পাচ্ছেন আমি তা নিজ চোখে দেখেছি।ওর নিজের যে দুই ভাই আছে তারাও মনে হয় এতোটা কষ্ট পাচ্ছে না।
নিবিড় নিজেকে সংযত করে, দেখুন মিস তিন্নি, ভুল ভাবছেন।ওকে আমি ছোটো বেলা থেকেই,,,,,,নিবিড় আর কিছু বলতে পারলো না।গলাটা আটকে গেলো জমে আসা কান্নায়।আর কথা না বাড়িয়েই তড়িৎ গতিতে এসে গাড়িতে বসে মাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
ঘন্টা খানেক পরেই কুয়াশা শ্বশুর বাড়ি এসে পৌঁছেছে। গাড়ি থেকে তিন্নি হাত ধরে নামিয়ে সদর দরজার সামনে দাঁড়াতেই তোসাবের ফুফু এসে হাত বাড়িয়ে বাঁধা দিয়ে দাঁড়ালেন।
তিন্নি আর কুয়াশা অবাক হয়ে তাকাতেই, ফুফু বললেন এই অপয়া মেয়েকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছিস কেন? 
তিন্নি ভয়ে ভয়ে বললো,ফুফু মা বলেছে।
-মা! তোর মায়ের কথা কী এই বাড়ি চলে নাকি আমার কথায়?
-তোমার কথায়।
-তাহলে তোর মা কোন সাহসে ওকে এই বাড়ির চৌকাঠ পার করাতে চায়?
-ফুফু ও কী এখন এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? এখন না হয় বাড়িতে ঢুকতে দাও পরে যা হবার হবে।
কথাটা শুনে ফুফু কিছুটা সময় চুপ করে হাতটা সরিয়ে কুয়াশা কে জায়গা করে দিলো।কুয়াশাকে নিয়ে তিন্নি কয়েক পা বাড়াতেই ফুফু আবার পিছন থেকে বললো,তোমার মতো মেয়েকে এই বাড়িতে রাখা সম্ভব নয়।তোমার জন্য আজ এই বাড়ির ছেলে মরতে বসেছে।কী কপাল গো তোমার। বিয়ের দিনে স্বামীকে খেতে বসেছো? কোন অমাবস্যার রাতে জন্মেছিলে তুমি? যার কারণে আমাদের বাড়ির ছেলে মৃত্যু শয্যায়?
কুয়াশা চোখ বন্ধ করে কথাগুলোকে এক কানে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করার চেষ্টা করছে।
তিন্নি কুয়াশার বাহুডোর টেনে,তুমি চলো ভাবী।
কুয়াশাকে এনে তোসাবের রুমে নিয়ে আসতেই কুয়াশা থমকে দাঁড়ালো।
তিন্নিও হাত ছেড়ে দিয়ে,তুমি বসো এইখানে আমি জামাকাপড় এনে দিচ্ছি।ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
তিন্নি জামাকাপড় এনে দিতেই কুয়াশা আস্তে করে হাতে নিতেই তিন্নি ওয়াশরুম দেখিয়ে দিলো।

নিবিড় মাকে নিয়ে বাসায় এসে মাকে ড্রইংরুমে রেখেই নিজের রুমে চলে গেলো।
কিছুটা সময় পেরিয়ে যেতেই ফজরের আজান কানে ভেসে আসতে লাগলো।
রহিমা বেগম আর রুপন্তি নামাজ আদায় করে রহিমা বেগম রুপন্তিকে বললো,দেখতো তোর ভাইয়া মসজিদে গেলো কিনা!
রুপন্তি গিয়ে খানিকটা পর ফিরে এসে বললো,মা ভাইয়া তো ঘরে নেই। হয়তো মসজিদেই গেলো।আচ্ছা মা কুয়াশা কী এখনো হসপিটাল? 
-নারে,,,ওর শ্বাশুড়ি মা ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু একটা কথা বুজলাম না,ও যাওয়ার সময় ওর বাবা মা কেউ কিছু বললো না এবং কী তার ভাইরাও না।
-বলবে কী করে মা,কম অন্যায় তো তারা মেয়ের সাথে করেনি।মাঝ থেকে আমাদের পরিবারটাকে তচনচ করে দিলো।আমাদের বাবাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিলো।ভাইয়াও তিলে তিলে কষ্ট পাচ্ছে।মা, আল্লাহ নিশ্চই সবার অন্যায় শাস্তি ওকে দিচ্ছেন।
-ছিঃ মা এইসব বলতে নেই।আমি রান্নাঘরে যাচ্ছি। ছেলেটা আবার ভার্সিটিতে যাবে।কিছুতো খেয়ে যাবে ছেলেটা। 

নিবিড় ভোরের ঝিকমিক রোদে আনমনে হয়ে হাঁটছে। কুয়াশার কথায় ভাবতে ভাবতে নিজেদের ছাদে এসে রেলিং এর হাতল ধরে দাঁড়িয়ে সামনের বিস্তৃত খোলা জায়গায়  যতটুকু চোখ যায় পলকহীনভাবে তাকিয়ে ছিলো।হঠাৎ চোখ ঝাপসা হয়ে আসতেই এক হাতে চোখ মুছে নজর পড়লো ছাদের এক কোনায় ফুলের বাগানটাতে, ধীরে পায়ে এগিয়ে গেলো বাগানের দিকে।এই বাগানে শুধু গোলাপের গাছ।কুয়াশা কৃষ্ণচূড়া আর গোলাপ খুব পছন্দ করতো।নিবিড় কাছে গিয়ে গোলাপের গাছ গুলো ছুঁয়ে ধরেই চোখ বন্ধ করতেই কানে ভেসে আসছে, এই তুমি আমার বাগানে কী করছো?
একি ফুলটাও ছেড়ে ফেললে? 
কথাটা বলেই কুয়াশা ন্যাকা স্বরে কাঁদতে কাঁদতে, আমি এখুনি জেঠুকে বলে তোমাকে বকা খাওয়াচ্ছি। কুয়াশা কিছু দূর যেতেই নিবিড় দৌড়ে  কুয়াশার হাত ধরে,আচ্ছা আমার ভুল হয়ে গেছে। সত্যি কী এইটা তোর বাগান? 
-আমার নয় তো কার,পেত্নীর? 
-আগে বলবি তো এইটা যে পেত্নীর। পেত্নী তাহলে বাগানও করতে পারে।
কথাটা বলেই নিবিড় হাসলো।
-কী,,,,তুমি আমাকে পেত্নী বললে?
কুয়াশা ন্যাকা কান্না জড়িত কন্ঠে বললো কথাটা।
-আমি কখন বললাম? তুই তো বললি।আচ্ছা ঠিক আছে  আমি যেহেতু একটা ফুল ছেড়েই ফেলেছি কাল তোকে অনেকগুলো ভালো দেখে গোলাপ গাছ এনে দিবো।
-সত্যি?
-হুম সত্যি।আর সেই গাছের ফুল তোর বিয়েতে কাজে লাগবে বুজেছিস।কথাটা বলেই নিবিড় মুচকি হাসলো। 
কুয়াশা লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে, আচ্ছা নিবিড় ভাইয়া,তোমার বিয়ের জন্য কেমন মেয়ে পছন্দ?  
নিবিড় বুজতে পেরেছে কুয়াশা কথাটা কেনো বললো,
নিবিড়ও মিটমিট করে হাসতে হাসতে বললো,ঠিক আমার মতো লম্বা, টানাটানা চোখ,আমার মতো দেখতে নাক।চুলগুলো কাঁধ পর্যন্ত, মোটাসোটা নাদুসনুদুস হলেই চলবে।আমার আবার চ্যাপা শুটকি মতো শুকনা মোটেও ভালো লাগে না।
নিবিড়ের কথা শুনে কুয়াশার নিমিষেই হাসি মুখটা মলিন হয়ে গেলো।মাথাটা উঠিয়ে রাগন্বিত স্বরে বললো, তুমি কী ঘরে বউ আনবে নাকি হাতী?আর কাঁধ পর্যন্ত চুল মানেটা কী তুমি কী ছেলে ঘরে আনতে চাইছো? নাক তোমার মতো হলে তো হাতীকেও হার মানাবে।আর চোখ নিয়ে টানাটানি করবে নাকি,হ্যাঁ?  কথা বলছো না কেনো, হুম?
বউ দেখতে হলে আমার মতো দেখবে বুজেছো? কোনো হাতী কিংবা ছেলে নয়।কুয়াশা কথাগুলো বলেই রেগেমেগে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলো।
আর নিবিড় কুয়াশার এমন অবস্থা দেখে হা হা হা করে হাসতে লাগলে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন