বেলাকে নিয়ে বসে ছিলো বিভান দেয়ালের সাথে লেগে।বেলার কান্না কিছুতেই কমছেনা।বরং বেড়ে চলছে।বারবার দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছিলো।বিভান অনেক কষ্টে আটকে রেখেছে।বিভান বেলার দিকে তাকায়।ওর বুকে মাথা রেখে বেলা কেঁদেই চলছে।বিভান বেলার কপালে চুমু দিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনই বিভানের ফোন বেজে উঠে।বিভান ফোন হাতে নিয়ে দেখে মার্কেটের ম্যানেজার।চটজলদি কল রিসিভ করে বিভান।ততক্ষনে বেলা ও মাথা উঠিয়ে বলল,
''কে? পূর্নাকে পেয়েছে?"
বিভান বেলাকে চুপ করতে ইশারা করে।কিন্তু বেলা বারবার শুনার চেষ্টা করছে।অপরপাশ থেকে ম্যানেজার বলছে,
''মিঃ বিভান আপনি কই?"
''আমি বাসায়।আসলে আমার স্ত্রী খুব ভেঙ্গে পড়েছে কিন্তু কেন?"
''আসলে সবাই চলে যাওয়ার পর আমি কন্ট্রোল রুমে চলে এসেছিলাম সিসিটিভি ফুটেজ চেক করার জন্য।"
বিভান কথাটা শুনে সোজা হয়ে বসে।বলতে লাগলো,
আমার মেয়েকে পেয়েছেন?"
''পাইনি তবে অদ্ভুত কিছু দেখলাম।আমার মনে হচ্ছে আপনার মেয়ে কিডন্যাপ হয়েছে।"
বিভান কিছুটা চমকে উঠা গলায় বলল,
''কি বলেন?"
''জি। আপনাকে ফুটেজের কিছু অংশ ইমেইল করে দিচ্ছি।"
বিভান কিছু না বলে কল কেঁটে দেয়।বুক অনেক ভার হয়ে আসছে।ওর মেয়ে কই?কোথায় আছে কে নিয়ে গেলো কে জানে?বেলা বিভানকে ঝাঁকিয়ে ক্রন্দন জড়িত কন্ঠে বলতে লাগলো,
''কি বলল ওনি?পূর্না কই?"
বিভান বেলার দিকে না তাকিয়ে বলল,
''বেলা পূর্না কোথায় জানিনা।তবে ওনি বলল এটা কিডন্যাপ কেস হতে পারে।ওনি একটা ভিডিও পাঠাবে সেটার ওপর ভিত্তি কাজ করতে হবে।"
বেলা আবার ও কেঁদে উঠে।ওদের চারবছরের বাচ্চাকে কে নিয়ে গেলো।বিভানের ফোনে ইমেইল আসে।সেটা ছেড়ে বিভান ভিডিও টা দেখতে থাকে।অনেক মানুষ যাচ্ছে আসছে হঠাৎ তাদের মাঝে কেউ একজন ঢুকলো।লোকটার মাথায় টুুপি। কালো ফতুয়া টাইপ একটা জামা আর আর প্যান্ট।লোকটি ঢুকার কিছুক্ষন পর বস্তায় কিছু একটা চেঁপে কাঁধে নিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো কোন গার্ড ছিলো না সেই মুহূর্তে।বিভান বেশ অবাক হয়।তাহলেকি এর মধ্যেই ওদের মেয়ে কে নিয়ল গিয়েছিলো ওরা সেটা খেয়াল করেনি।বেলা কম্পিত কন্ঠে বলতে লাগলো,
''এই বস্তায় কি বিভান।এই ভিডিও কেন দেখছেন?"
বিভান দীর্ঘশ্বাস ফেলে ম্লান কন্ঠে বলল,
''বেলা এখানে আমাদের পূর্না ও থাকতে পারে।তবে আমি শিওর না।অবাক লাগছে কোন গার্ড নেই কেন?এতো বড় শপিংমল কিন্তু কোন গার্ড নেই।"
''আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন ওরা ছিলো।"
বিভান ফোন অফ করে বেলার দিকে তাকায়। বেলার চোখ মুছে বলল,
''তুমি ঘুমাও।অনেক রাত হয়েছে।কাল সকালে আমি থানায় যাবো।আমাদের মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে হবে তাইনা?আর মার্কেট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ও বিচার দিবো।এদের দূর্বলতার কারনে পূর্না আমাদের সাথে নেই।"
বেলা পূনরায় কাঁদতে লাগে।বিভান জানে একমাত্র পূর্না আসলেই এই কান্নার সমাপ্তি ঘটবে।বিভান তো নিজেও ভালো নেই।মেয়েটা তো ওর ও ছিলো।নিজেই তো নিয়ে এসেছিলো মেয়েটাকে।একটা দিন আগে ও মেয়েটা ওদের সাথে ছিলো।ওদের ঘর আলোকিত করে রেখেছিলো।আজ পূর্না নেই ওদের সাথে।কোথায় আছে তাও জানেনা ওরা।ওদের ঘরটা আবার ও শূন্যতায় ভরে গেছে।পূর্নতার মায়া ভরে কন্ঠের বাবা ডাক কানে আসতেই মনটা প্রচন্ড বেদনায় ভরে যাচ্ছে।শুধু দোয়া করছে মেয়েটাকে যেন খুব জলদি পেয়ে যায়।
সেদিন রাতে বেলাকে অনেক কষ্ট করে ঘুম পাড়ায় বিভান।নিজেও আজ বেলাকে জড়িয়ে ধরে শুয়েছিলো।বিভান জানে বেলা ঘুমোতে পারবেনা কারন বেলা যতোবারই চোখবুজবে পূর্নার কন্ঠে মা ডাক শুনতে পাবে।পূর্নার মিষ্টি আদুরে চেহারা ভেসে উঠবে বেলার চোখের সামনে।এদিকে বেলা ঘুমানোর চেষ্টা করে ও চোখ লাগাতে পারছেনা।হঠাৎ মনে হতে থাকে পূর্নাকে দেখতে পেয়েছে।শেষ যে কালো ফ্রকটা কিনেছিলো সেটা পরে আছে আর হাতে বড় টেডিবিয়ারটা।পূর্না লাফিয়ে লাফিয়ে বলছে,
'' মা মা!!!দেকো আমাল নতুন দামা আল পুতুল।কেমন লাগতে?"
বেলা উঠে বসে।পূর্না এখন ও লাফাচ্ছে আর হাসছে।বেলা দুহাত বাড়িয়ে বলল,
''আয় পূর্না কোলে আয়।মা আয় আমার কাছে।"
হঠাৎ বেলাকে অবাক করে দিয়ে পূর্না দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।বেলা ও দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।পূর্না দৌড়াতে দৌড়াতে বারান্দায় দাঁড়ায়।বেলা বলল,
''কিরে আম্মু কই যাস?"
বেলা খেয়াল করলো পূর্না কাঁদছে।বেলা পূর্নার দিকে এগুতে এগুতে বলল,
''কাঁদছিস কেন আম্মু।কোলে আয় মায়ের। "
''ওলা আমাকে আততে দেয়না তোমাদেল কাতে।আমাকে কত্ত দিত্তে।"
বেলা কেঁদে ফেলে।বলতে লাগলো,
''কে কষ্ট দেয় মা?"
''কত্ত অত্তে মা।"
বেলা দৌড়ে পূর্নাকে কোলে নিতে যাবে তখনই বেলা হঠাৎ পড়ে গেলো আর পূর্নাকে কে যেন ফেলে দিলো বাহিরে।বেলা জোরে চিৎকার করে পূর্না কে ডাকলো।হঠাৎ বেলার চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙ্গে বিভানের। পাশে বেলাকে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে বিভান।কই গেলো বেলা?বিভান চশমা পরে বেরিয়ে আসে রুম থেকে।এরুম ওরুম করে খুঁজতে থাকে বেলাকে।হঠাৎ চোখ পড়লো ড্রয়িংরুমের দিকে বিভান সেখানে দৌড়ে এসে দেখলো বারন্দার সামনে বেলা বসে আছে।ওর দৃষ্টি সামনে শিকের দিকে। বিভান এসে বেলার পিছে বসে ওর কাঁধে হাত রাখতেই বেলা চমকে উঠে বিভানের দিকে তাকায় পিছন ফিরে।বেলা কেঁদে বলতে লাগলো,
''পূর্না ছিলো এখানে কে যেন এখান থেকে বাহিরে ফেলে দিলো।বিভান ওরা আমার মেয়েকে কষ্ট দিচ্ছে। নিয়ে আসুন আমার মেয়েকে।"
কথা গুলো বলে বেলা কাঁদতে থাকে।বিভান ওকে জড়িয়ে ধরে বলল,
''নিয়ে আসবো বেলা। খুব জলদি নিয়ে আসবো।"
→→→→→→→সাইমন দাদির ঘরের সামনে পৌছেই দেখতে পায় দাদি বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে ওর জন্য অপেক্ষারত অবস্থায়।সাইমন গ্লাসের বাহিরে দাদিকে দেখে বিস্ময়মিশ্রিত হাসি দিয়ে গাড়ি পার্ক করে।গাড়ি থেকে বেরিয়ে দাদির কাছে দাঁড়িয়ে বলল,
''তুমি বাহিরে কেন?ঘুমাওনি কেন এখনো?"
দাদি সাইমন কে জড়িয়ে ধরে বললেন,
''আমার কলিজার টুকরা আসতেছে শুনে কি ঘুম আসবে দাদুভাই?"
সাইমন দাদিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
''দাদি তোমাকে আমি খুব মিস করছি এতোদিন।"
দাদি সাইমনের সামনে এসে ওর গালে আর চুমু খেলেন।সাইমন নিজের পেটে হাত বুলিয়ে বলল,
''দাদি খুব খিদে পেয়েছে।"
দাদি সাইমনের হাত ধরে বলল,
''চল ভিতরে। তোর পছন্দের সব রেঁধেছি আজ।"
সাইমন হেসে দাদির সাথে ভিতরে প্রবেশ করে।ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে সাইমন।মিতুল টেবিলে ওর জন্য খাবার রেডি করছিলো।সাইমন চেয়ারে এসে বসে।মিতুল ওর প্লেটে খাবার বাড়ছিলো।সাইমন খেতে শুরু করে।হঠাৎ ভাইয়ের কথা ভেবে মনটা ভীষন খারাপ হয়ে যায়।দাদি সাইমনকে না খেতে দেখে বলল,
''কিরে খাচ্ছিস না কেন?ভালো লাগেনি?"
''না দাদি তেমন কিছুনা।তোমার অবাক লাগছেনা গ্রাম থেকে সোজা এখানে কেন এলাম?"
দাদি অবাক হয়ে বললেন,
''আমি খেয়াল করিনি।কি হয়েছে?সব ঠিক আছে তো?"
সাইমন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
''ভাইয়া আমাদের বাসা ভাড়া দিয়ে বনশ্রী চলে গেছে।"
দাদি প্রচন্ড অবাক হন।এমন কিভাবে করলো সিয়াম? কারন বাড়িটা দুই ভাইয়ের নামে।সিয়াম ওকে না জানিয়ে কিভাবে করলো?দাদি বললেন,
''সিয়াম তোকে না জানিয়ে কিভাবে করলো?"
পাশ থেকে মিতুল খোঁচা মেরে বলল,
''সিয়াম ভাইয়ার কিছু করতে হয়না দাদু।ঐ ডাইনি মহিলাই সব করে।"
মিতুলের দিকে তাকিয়ে দাদু রেগে বললেন,
''চুপ।"
সিয়াম বলল,
''দাদু মিতুল ভুল বলেনি।তুমি ঐ মহিলাকে চিনো না।".
দাদি মন খারাপ করে বসে রইলেন।সাইমন একটু খেয়ে উঠে রুমে চলে যায়।রুমে এসে সিগারেট ধরিয়ে শুয়ে পড়ে সাইমন।ফোন বের করে সাঁঝের নম্বরে কল দেয়।কয়েকবার রিং হওয়ার পর কল রিসিভ হতেই সাইমন বলল,
''সাঁঝ কই তুমি?"
''আপু বাথরুমে আমি লাবনী আপুর ছোট বোন।"
সাইমন কান থেকে ফোন কিছুক্ষনের জন্য সরিয়ে ভাবতে থাকে কি হলো? তারপর ফোন কানে রেখে বলল,
''ভালো আছো?"
''আমি তো ভালো আছি কিন্তু আপনাকে তো চিনলাম না।"
''আমি তোমার আপুর ভার্সিটিতে পড়ি তোমার আপুর সাথে।আসলে পড়াশুনার ব্যাপারে কথা ছিলো।"
''ওহ আচ্ছা।আপু বের হলে আপনাকে কল দিতে বলবো।"
''ওকে থ্যাংক ইউ।"
সাইমন কল কেঁটে হাফ ছাড়ে।একটুর জন্য ধরা খেলোনা।কিন্তু অনেকটা সময় পেরুনোর পর ও সাঁঝের কল এলোনা।সাইমন আবার ও কল দিতেই ফোন কেঁটে গেলো।
হঠাৎ দরজায় নক পড়ে।অপর পাশ থেকে দাদি বলল,
''সাইমন!! "
সাইমন উঠে বসে সিগারেট ফেলে বলল,
''জি দাদু আসো।"
ভিতরে এসে দাদি সাইমনের পাশে বসেন।সাইমন ম্লান হেসে বলল,
''এখনো ঘুমাও নি?"
''তোর মন খারাপ আমার কি ঘুম হবে?"
''দাদি ঐদিন সাঁঝকে এনেছিলাম মনে আছে?"
''হ্যারে কেন কি হলো?"
''ও আমার সাথে অনেক অভিমান করেছে।কথাও বলছেনা।"
দাদি ভ্রু কুঁচকালেন। বিস্ময়কর কন্ঠে জিজ্ঞেস করেন,
''কি করেছিলি?"
সাইমন সম্পূর্ণ খুলে বলতেই দাদুি বললেন,
''শোন দাদুভাই ও ওর ভাইকে খুব ভালোবাসে।যে ভাইয়ের ওপর তার পুরো পরিবারটা নির্ভর।সেই ভাইকে নিয়ে কিছু বললে কষ্ট পাওয়ারই কথা।"
সাইমন দাদির হাত জড়িয়ে বলল,
''দাদি আমি করবো বলো তো?আমার ভালো লাগছেনা।"
''আচ্ছা এখন ঘুমা।কাল সকালে ভাবা যাবে।"
সাইমন ম্লান হেসে বলল,
''কি করবে?"
''সেটা সকালে দেখা যাবে।"
→→→→→→→→→পরদিন সকালে মোকতাহার খান পৌছে যান ইমতিয়াজদের বাসায়।ইমতিয়াজের বড় মামা ওনি।ভাগনী ভাগীনাকে ভীষন ভালবাসেন।সব ভাগনী ভাগীনারা ওনার জন্য পাগল।ইদ্রিকে তো ভীষন ভালবাসেন ওনি।ইদ্রি ঘুমাচ্ছিলো।রানু খালা ওর রুমে এসে ওকে হালকা ধাক্কা দিতে দিতে বললেন,
''ছোট মামুনি উডো দেহ কে আইছে?"
ইদ্রি ঘুমের ঘোরে বিরক্তি নিয়ে বলল,
''জ্বালিিওনা ঘুম আসছে আমার।"
''আরে উডো।সিরাজগঞ্জ যাইবানা?তোমার বড় মামু আইছে।"
এতক্ষন ঘুমাতে চাইলেও আর ঘুমিয়ে থাকতে পারেনি ইদ্রি।ঘুম থেকে উঠে লাফিয়ে বসলো ও।হেসে বলল,
''সত্যি?"
রানু খালা হেসে বললেন,
''দেহ মাইয়ার কান্ড।মামুর কথা কইতেই জব্বর খুশি।"
ইদ্রি হেসে ফেললো।গায়ে উড়না জড়িয়েই দৌড়ে নিচে নামছিলো হঠাৎ পা থেমে যায় ইদ্রির।হাসি মুখে মলিনতার ছোঁয়া লেগে যায় ফের।ধীর পায়ে হেঁটে মামাকে জড়িয়ে ধরে ইদ্রি।বড় মামার সাথে ওঅনেক কিছু শেয়ার করতো।বলা যায় মামা ওর বেস্টফ্রেন্ড। মামাকে জড়িয়ে ধরতেই কান্না চলে আসে ইদ্রির।খুব কষ্টে নিজেকে সামলে নেয় ও।মোকতাহার খান ভাগনীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলেন,
''কিরে আম্মু মন খারাপ?"
ইদ্রি সামনে এসে নিজেকে সামলে বলল,
''না মামা তোমাকে দেখে ইমোশনাল হয়ে গেলাম।এতো ভালো লাগছে তোমাকে দেখে।"
''তোকে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।"
ইদ্রি হেসে বলল,
''মামা আমি ফ্রেশ হয়ে এসে ইচ্ছেমতো গল্প করবো।"
''ওকে যা।"
ইদ্রি দৌড়ে রুমে চলে আসে।দরজা আটকে কান্না করতে থাকে।আয়নার সামনে এসে নিজের চেহারাটা দেখতে থাকে।ইদ্রি দেখলো আয়নার সামনে নিশাদ দাঁড়িয়ে আছে।ওর কল্পনার সেই সাদা পাঞ্জাবী পরে আছে,মুখে মন ভোলানো হাসি।আজ একদম রাজকুমার লাগছে নিশাদকে।ইদ্রি আয়নার অনেকটা কাছে এগিয়ে এলো।ঠিক ততোটাই কাছে নিশাদ।ইদ্রি নিশাদের গাল স্পর্শ করে বলল,
''আমাকে মন দিয়ে দেখুন আমি সুন্দর।"
নিশাদ মুখে ম্লান হাসি রেখে বলল,
''তুমি খুব সুন্দর ইদ্রি।আমি ও তোমাকে খুব ভালবাসি।শুধু পারছিনা আপন করে নিতে কারন আমি অসহায়।"
ইদ্রি কেঁদে বলল,
''একবার কাছে টেনে নিন।যেভাবে চাইবেন সেভাবেই পাবেন।"
ইদ্রির ঠোঁটজোড়ায় নিশাদ ঠোঁট ছোঁয়ায়।
!!!!
বিভানের ফোন বাজছে।অফিসে আজ একটু কাজ এসেছিলো। নয়তো আসতো না।কারন বেলা খুব ভেঙ্গে পড়েছে।আজ দুদিন হয়ে গেলো মেয়োটা নেই।বিভানের পুরো দুনিয়টা হাহাকার করছে।পূর্নার না অনুপস্থিতি বেলার আহাজারি বিভানের পুরো পৃথিবীটাকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে বারবার।কাজে মন বসাতে পারছেনা বিভান।বারবার পূর্নার বাবা ডাকটা কানে বাজছে।ওরা কই রেখেছে মেয়েটাকে কে জানে?কারা নিয়ে গেলো মেয়েটাকে?কেন নিয়ে গেলো?কিসের এতো শত্রুতামী।হঠাৎ বিভানের মনে হলো বন্দনা আখতারের কথা।তবে ওনার জানার কথা নয় পূর্না ওদের মেয়ে।আর সেদিন তো একজন পূরুষ কে দেখেছিলো বিভান।তবে সে যেই হোকনা কেন?পূর্নাকে নিয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছে।তাকে বিভান কখনো ছাড়বেনা।চোখে রাজ্যের ঘুম ভর করেছে বিভানের।হঠাৎ মনে হলো ফোনটা বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে ভোঁতা এক শব্দ করে।বিভান ফোন নিয়ে দেখলো থানা থেকে কল এসেছে।ফোন ডিসিভ করে কানে রাখলো বিভান।অপরপাশ থেকে ইনস্পেক্টর বলছেন,
''অনেকসময় ধরে কল করছি আপনাকে।"
''আ'ম সরি আসলে অফিসে তো।"
''ইটস ওকে মিঃ বিভান।আপনার মেয়ের একটা পরিষ্কার বড় ছবি পাঠান আমাদের। "
বিভান ভ্রু কুঁচকায় থানার দায়িত্বরত ইন্সপেক্টরের কথায়।বুকটা কেমন যেন করে উঠে।ছবি দিয়েছিলো ও তবে সেটা ওদের দুজনের সাথে।পুলিশ কেন আবার ছবি চাচ্ছে?বিভানের মাথা ভার হতে শুরু করে।ভীত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
''সব ঠিক আছে?"
''এখনো বলতে পারছিনা মিঃ বিভান।আজ রাজস্থানের উদ্দেশ্যে কিছু বাচ্চা পাচার করা হবে ইন্ডিয়ার অন্যান্য জায়গা থেকে।শুনেছিলাম চাইল্ড ট্রাফিকিং এর ওরা বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছে।আমরা ধারনা করছি সেখানে আপনার মেয়ে থাকতে পারে। আজ রাত সাড়ে তিনটায় পাচার কাজ শুরু হবে।আমরা সেখানে চলে যাবো আগেই।তাই বলছিলাম পরিষ্কার ছবি থাকলে দেন দেরি হবার আগে।"
বিভান আর অপেক্ষা করতে পারেনা।দ্রুত পূর্নার পরিষ্কার ছবি পাঠিয়ে দেয় ওদের কাছে।ইনস্পেকটর আবার ও বললেন,
''আমরা আপনাকে জানাবো।ফোনটা পাশে রাখবেন চার্জ ও রাখবেন।"
''জি।"
কম্পিত কন্ঠে জবাব দেয় বিভান।কল কেঁটে যায়।ফোন রেখে চিন্তায় পড়ে যায় বিভান।ওর মেয়ে সেখানে থাকলে রাজস্থানে পাচার করে দেয়া হবে।ওর পূর্না মা টা অনেক দূরে চলে যাবে।সেটা হতে দেয়া যায় না।বিভান কাজ করতে চায় কিন্তু বুকটা এত বেশি অস্থির হয়ে উঠেছে যে এখন আর কাজ করতে পারছেনা।মেয়েটাকে যতক্ষন পর্যন্ত না দেখছে ততক্ষন বিভানের শান্তি নেই।ল্যাপটপ থেকে হাত সরিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে থাকে বিভান।চোখ বুজে নেয়।আজ আর যাইহোক কাজ হবেনা এখানে।আর রয়েছে বেলার চিন্তা যা ওকে শান্তি দিচ্ছেনা।এসময়টাতে ওদের একে অপরকে দরকার।বিভান ল্যাপটপ বন্ধ করে উঠে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।এদিকে বেলা যোহরের নামাজ আদায় করছিলো।মোনাজাত ধরেই কেঁদে ফেলে।আসলে অশ্রুই এখন বড় সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে।কিছুদিনের জন্য পুরো দুনিয়াটা ওর হাতে।ছিলো একটা রাতেই সব হারিয়ে গেছে।নামাজ শেষ করে উঠে দাঁড়ায় বেলা।পাকঘরে আসে তরকারির চুলা অফ করতে।দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে বেলার বুকচিরে।ও যখন রান্না করতো মেয়েটা ওর পাশে দাড়িয়ে থাকতো কোলে উঠার জেদ করতো।বেলা না করে দিতো।আর আজ কেউ জেদ করছেনা কেউ বলছে মা কোলে নাও।বেলার চোখজোড়া আবার ও ভরে আসে।ডুকরে কেঁদে উঠে তরকারির চুলা অফ করে বেলা বেরিয়ে আসে।ড্রয়িংরুমে এসে হাঁটতে থাকে।ঘরটা শূন্য লাগছে খুব।লোকটাও অফিসে।একা লাগছে বেলার।হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজে ঘোর কাঁটে ওর।দরজা খুলে দিলো দৌড়ে হয়ত ভেবেছিলো পূর্না।বিভান বেলার চোখজোড়া দেখে কিছু বলতে পারেনা।বেলা বিভানের পিছনে মেয়েকে খুঁজতে খুঁজতে ক্রন্দন স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
''ও আসেনি?"
বিভান বেলাকে বুকে টেনে জড়িয়ে বলল,
''বেলা আমি জানি তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তেমনি আমার ও ভীষন কষ্ট হচ্ছে বেলা।আমি ও পূর্নাকে খুব মিস করছি।বেলা তুমি ধৈর্য ধরো।মেয়েকে পেয়ে যাবো।চেষ্টা করছিতো আমি।"
বেলা কেঁদে ফেলে আবার। বলতে থাকে,
''দুদিন হয়ে গেলো।বাচ্চাটা কি খেলো না খেলো জানিনা।কিভাবে আছে মেয়েটা?কেমন আছে?কতো কষ্ট হচ্ছে।কালকের ঘটনাটার পর থেকে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।ভয় লাগছে আমার বাচ্চাটা ঠিক আছে তো?"
বিভান আর কিছু বলতে পারেনা।বেলাকে শক্ত করে জড়িয়ে বলল,
''আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন কেউ না থাকলে ও।"
রাতদুটো বেলা বিভান কারোর চোখে ঘুম নেই।বিভান আজ বারবার ফোনটা চার্জ করছিলো খেয়াল করে কিছু জিজ্ঞেস করেনি বেলা।বিভান এখন আবার ও চার্জ করেছে।ফোন এখন ও শতভাগ চার্জ আছে জেনে ও।বেলা নিজের দূর্বল হাত বিভানের বুকে ছুঁইয়ে বলল,
''কি হলো?আজ এতো বার ফোন চার্জ করছেন?সব ঠিক আছে?"
বিভান চায় না বেলা কে আগেই সব জানাতে।কারন সেখানে পূর্না আছে কিনা বিভান নিশ্চিত নয়।আর বেলা এমনিতেই দূর্বল হয়ে পড়েছে,কষ্ট পাচ্ছে।এখন এসব না জানানো ভালো।বিভান কিছু না বলে বেলাকে জড়িয়ে বলল,
''কিছুনা তুমি ঘুমাও।"
বেলা চোখ বুজে নিয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করে।কিন্তু বিভান সজাগ ফোনটাকে হাতে নিয়ে চোখ বুজে।
→→→→→→→সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায় সাইমন।মিতুল অনেক বার ডেকে গেছিলো ওকে।সাইমন বারবার না করার পরও মিতুল ডাকছিলো।একপর্যায়ে সাইমন নিজে উঠে দরজা লাগিয়ে আবার ঘুম দেয়।মাথার ভিতর সাঁঝের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।মেয়েটা এতো কঠোর কিভাবে হয়?সেদিনের পর থেকে ওর কল আর মেসেজের রিপ্লাই দেয়নি।আজ দুপুরে বেরিয়ে ওর কলেজে যাবে।তারপর বুঝিয়ে দেবে ওর সাথে কথা না বলার ফলাফল।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে চুল মুছে কাপড় পাল্টে নেয় সাইমন।চুল আঁচড়ে নিচে চলে আসে ও।মিতুল কে দেখে রেগে বলল,
''দাদি কই?"
মিতুল খোঁচা মেরে বলল,
''কই আর তার আদরের নাতি বেলা বারোটা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছে রেগে আছে।সকালের নাস্তা ও করেনি।"
সাইমন রেগে যায়।বড় ভাইয়ের সাথে এভাবে কেমন করে কথা বলে মেয়েটা?সাইমন উঠে দাড়িয়ে বলল,
''সুন্দর করে কথা বল।আর খায়নি মানে?তুই খেতে বলিসনি?"
''শখ ছিলো তোর সাথে খাবে।তাই তো এতো ডাকছিলাম।তুই তো যে ঘুম দিলি।"
সাইমন কিছু না বলে হনহন করে সিড়ি বেয়ে দাদির রুমের দিকে যেতে শুরু করে।কিছুটা কাছে আসতেই শুনতে পেলো দাদি কার সাথে যেন খুব হেসে কথা বলছে।সাইমন অনেকটা অবাক হয় ভেবে যে দাদি রুমে একা নন আরেকজন ও আছে।কন্ঠ টা অপরিচিত নয়। কিছুটা সাঁঝের কন্ঠের মতো লাগে।কিন্তু সাঁঝের এখানে আসার কথা নয়।কারন ওর কলেজ আছে।আর ও তো সাইমনের ওপর রাগ।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে দাদির দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
''দাদু আসবো?"
ভিতর থেকে দাদি বললেন,
''আয় ভিতরে।"
সাইমন দরজা খুলে প্রচন্ড অবাক হয়।কি বলবে বুঝতে পারছেনা।দরজার কাছে দাঁড়িয়ে সামনে বসে থাকা দাদি আর লাল শাড়ীতে আচ্ছাদিত সাঁঝকে দেখে চমকে উঠে সাইমন।দাদি হেসে সাইমনকে বলতে লাগলেন,
''দেখতো নাত বৌকে বৌ সাজে কেমন লাগছে?"
সাইমন কিছু বলছেনা।সকল ভাষা হারিয়ে ফেলেছে ও।সাঁঝ দাদির দিকে হেসে সাইমনের দিকে তাকিয়ে চোখ রাঙ্গালো।সাইমন হেঁটে হেঁটে ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
''দাদি এসব কি?"
দাদি উঠে সাইমনকে সাঁঝের পাশে বসিয়ে বললেন,
''আয় বস একসাথে দেখি তোদের।"
সাঁঝ কিছুটা অপ্রস্তুত বোধ করছে।দাদির কথায় এসে গেছে তবে ওনার সামনে ভীষন লজ্জা লাগছে।দাদি ওদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,
''মাশাল্লাহ খুব সুন্দর লাগছে দুজনকে।"
সাঁঝ হেসে কিছু বলার জন্য উঠতে গেলে দাদি ওকে ঠেঁলে বসিয়ে দিয়ে বললেন,
''তোদের অবশ্যই অনেক কথা জমা আছে।তোরা কথা বল আমি নাস্তা পাঠিয়ে দেই।"
বলেই বেরিয়ে গেলেন ওনি।সাঁঝ সাইমন একে অপরকে আড়চোখে দেখতে যেয়ে একে অপরের চোখে ধরা পড়ে গেলো।সাঁঝ লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নেয়।বুকটা ভীষন তোলপাড় শুরু করেছে।সাইমন একপলক সাঁঝকে দেখে সামনে তাকিয়ে বলল,
''সাঁঝ আ'ম সরি।জানিনা সেদিন রেগে কি বলেছিলাম।আমি ওগুলো মন থেকে বলিনি।তুমি জানো তোমাকে ভীষন ভালবাসি।তোমার সাথে কথা না বলে কতোটা কষ্ট হয়েছিলো চিন্তা করতে পারবেনা।"
সাঁঝ সাইমনকে থামিয়ে বলল,
''প্লিজ আপনার দাদির মন রাখতে এসেছিলাম।আমি চাইনি ওনি কষ্ট পাক।ওনার মন রাখতে শাড়ী ও পরেছি।তবে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।"
সাইমন ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে বলল,
''প্লিজ সাঁঝ এই ছোট্ট ব্যাপারটাকে আর বড় করোনা।কেন এটাকে টেনে আমাদের সম্পর্ককে আরো কমপ্লিকেট করছো?বলেছি তার জন্য সরি বলছি কিন্তু শুধু শুধু ব্যাপারটাকে বড় করছো।বড় আমার ও আছে আমি তো এভাবে রিয়্যাক্ট করবোনা।"
সাঁঝ কেঁদে দিয়ে বলল,
''আমার বড় ভাই আপনার বড় ভাই এক না।আমার বড় আমাদের বাবার মতো।জানেন কতোটা কষ্ট করেছে এই পরিবারের জন্য।আদনান ভাইয়ের জব কিছুদিন আগে হয়েছে।আব্বার রিটায়ার্ড হওয়ার পর থেকে ভাইয়া সংসারের হাল ধরেছে।একদিকে পড়াশুনা আরেকদিকে পার্ট টাইম জব টিউশানি।আপনাদের সাথে মিলবেনা আমাদের।আপনাদের নিজেদের সব আছে আমাদের নেই।কিন্তু ভাই কখনো অভাব বুঝতে দেয়নি।আমি আমার ভাইকে খুব ভালবাসি।সেটা বুঝবেননা আপনি।"
কথা গুলো বলে কাঁদতে থাকে সাঁঝ।সাইমন কিছু বলডে পারেনা।বুঝতে পারছে এদের জীবনে ভাইয়ের অবদান অনেক।সাইমন ওকে ধরতে গেলে সাঁঝ উঠে দৌড়ে বারান্দায় চলে আসে।সাইমন ওর পিছু পিছু চলে আসে।সাঁঝ বারান্দার শিকে মাথা রেখে কাঁদছে।সাইমন ওর মাথায় হাত রেখে বলল,
''সাঁঝ কখনো নিজেকে ছোট মনে করোনা।নিজের সবটা দিয়ে ভালো রাখার চেষ্টা করবো।বড় ভাইয়া আমার ও ভাই।আমি বুঝতে পেরেছি তোমরা ওনাকে খুব ভালবাসো।আর আমি তার ছোট বোনটাকে খুব ভালবাসি।এর জন্য যা দরকার করতে পারবো আমি।প্লিজ রাগ করে থেকোনা কষ্ট হচ্ছে আমার।"
সাঁঝ একটু সরে এসে সাইমনকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে।সাইমন ও ওকে জড়িয়ে ধরে বলল,
''জানো তোমাকে আমার বৌ লাগছে।দাদিকে তোমার বাসায় পাঠাই?আমি তো তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছিনা সাঁঝ।তোমার ঘ্রানে প্রতিমুহূর্তে মাতাল হয়ে যাই আমি।"
''ইস বাজে বকবেননা।"
সাইমন হেসে ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
→→→→→→→এদিকে সেদিন সন্ধ্যায় ভূবনের গাড়িতে ইমতিয়াজ নিশাদ,কল্যান তীর্থ,ফারহান সিরাজগঞ্জের পথে রওনা হয়েছে।তীর্থ বড় একটা প্যাকেট বের করে সেখান থেকে কি যেন বের করছিলো।ফারহান ড্রাইভিংসিটের পাশের টায় বসে আছে।প্যাকেটের খচখচ শব্দে ভ্রু কুঁচকে বলল,
''তীর্থ কি করছিস তুই?"
প্যাকেটের শব্দ থামিয়ে তীর্থ বলল,
''কই কিছুনা। কেন?"
ফারহান সামনের গ্লাসটাকে তীর্থের দিকে ফিরিয়ে বলল,
''এই শালা মীরজাফর একা একা কি গিলছিস?"
ফারহানের কথায় সবাই পিছে তাকিয়ে তীর্থের দিকে তাকায়।ইমতিয়াজ আর কল্যান একটু দাঁড়িয়ে তীর্থের হাত থেকে চিপসের প্যাকেট গুলো ছিনিয়ে নিতে থাকে।কল্যান হেসে বলল,
''শালা আসলেই মীরজাফর।সবসময় কিপ্টামি করিস।"
তীর্থ বলল,
''শুন নিজের মেয়ের গুলো ও চুরি করে এনেছি তোদের পেট ভরানোর জন্য।আর তোরা এভাবে বললি?"
ভূবন নিঃশব্দে হাসছে।কল্যান ড্রাইভিং সিটের পিছে লাথি মেরে বলল,
''শালা বৌকে না ভেবে গাড়ি চালানোয় মন দে।"
ভূবন চমকে উঠে নিজেকে সামলিয়ে বলল,
''কই বৌকে ভাবছি?বেশি বুঝিস। "
ইমতিয়াজ হেসে বলল,
''এমনেও দুদিন বৌ পেয়ে যাবি।বন্ধু হারিয়ে গেলে পাবিনা।"
হঠাৎ তীর্থ বলল,
''তোরা এতো কথা বলছিস নিশাদ চুপ কেন?"
তীর্থের কথায় বাকিরা নিশাদের দিকে তাকায়।ও চুপ করে বসে আছে।ওর দৃষ্টি জানালার বাহিরে।
ইমতিয়াজ ওকে হালকা ঝাঁকিয়ে বলল,
''ঠিক আছিস?"
নিশাদ শ্বাস ফেলে বলল,
''ইদ্রি কেমন আছে রে?"
ইমতিয়াজ অনেকটা অবাক হয়।বাকিরা কিছু বলেনি। হয়ত শুনতে পায়নি।কারন নিশাদ বেশ ধীর স্বরে বলেছিলো।ইমতিয়াজ কিছুটা অবাক হয়ে বলল,
''আগের মতোই কিন্তু কি হলো তোর?হঠাৎ ওর কথা এভাবে জিজ্ঞেস করলি?"
ইমতিয়াজের কথায় নিশাদের ঘোর কাঁটে।তবে খুব জলদি নিজেকে সামলে বলল,
''বলেছিলিনা ওর একটু প্রবলে হয়েছিলো।"
ইমতিয়াজ গভীর নিশ্বাস ছেড়ে বলল,
''হুম তবে বলল বান্ধুবীদের সাথে সমস্যা।এতো সিরিয়াস কিছু নয়।নে চিপস খা।"
নিশাদ ম্লান হেসে প্যাকেট থেকে দুটো চিপস নিয়ে মুখে পুরে দিলো।