পরাণ প্রিয়া - পর্ব ১১ - রাবেয়া সুলতানা - ধারাবাহিক গল্প


নিবিড় ড্রইংরুমে এসে তনুসাকে চিন্তিত হতে বসে থাকতে দেখে,কী ব্যাপার তনু তুমি কখন এলে?

তনুসা উঠে দাঁড়িয়ে নিবিড়ের দিকে রাগন্বিত চোখে তাকিয়ে আছে। 
নিবিড় তনুসার সামনাসামনি এসে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেট থেকে হাত বের করে তনুসার দুই কাঁধে হাত রেখে,কী হলো তনু মন খারাপ?

তনুসা নিবিড়ের হাত দুটো ঝাঁটকা মেরে ফেলে দিয়ে,
কী ভেবেছো তুমি? গাছের আগাও খাবে আবার তলায়ও কুঁড়াবে?
-জাস্ট শাটাপ তনু কী আজগুবি কথাবার্তা বলছো?
-আমি বলছি না তোমার বউ বলে গেলো।আমাকে নাকি তুমি ব্যবহার করে পরে পেলে দিবে।আমাকে নাকি পতিতাদের মতো জীবন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিবে।আরও অনেক কথায় বলে গেলো।তুমি নাকি আমাকে ওর জন্য খুনও করতে পারো।
-হোয়াট?
-হু আমি একদম মিথ্যা বলছি না।কেনো করছো তুমি এইসব?  তোমার বউতো এখন তোমার কাছে সব।তাহলে আমাকে কেনো ইউজ করছো?
নিবিড় গম্ভীরমুখে তনুসার দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে, প্রিয়তা সত্যিই ওকে এইসব বলেছে? আমি যতটুকু দেখেছি এইসব কথা মেয়েটা মোটেও বলার মতো না।
- ওকে তুনু,কুল ডাউন।বসো এইখানে।আমি প্রিয়তাকে বলে যথেষ্ট বকে দিবো।এখন বলো হঠাৎ না বলে বাসায় এসেছো কেনো?
-তোমাকে অফিস না দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিলো।তাই চলে আসলাম।তুমি তো বিয়ে করার পর থেকে আমার সাথে তেমন ফোনেও কথা বলো না।কি হয়েছে নিবিড় আমাকে তুমি বলো না।ওই মেয়েটার মাঝে কী এমন দেখতে পেলে যার জন্য তুমি আমাকেই ভুলে যাচ্ছো?জানি না ওই মেয়ের জন্য কখন বলো, তনু আমার কাছে আর এসো না।
-শাটাপ তনু, কী বকাবকা প্রশ্ন করছো তুমি।আমার এইসব ভালো লাগছে না।
কথাটা বলে নিবিড় নিজের  ঠোঁটে দাঁত কেটে, প্রিয়তা সকালে বললো না, আমি পিএ রাখি প্রেম করার জন্য।ওর মনে আরও খারাপ কিছু জাগার আগে তনুকে বাদ দিতে হবে অফিস থেকে।কিন্তু কীভাবে? 
আচ্ছা আমিই বা প্রিয়তা খারাপ ভাববে এই কথা ভাবছি কেনো? ওর যা ইচ্ছা ভাবুক তাতে আমার কী?
তবে নাহ্ প্রিয়তা খারাপও বলেনি।
হঠাৎ ফোন বাজিতেই নিবিড় রিসিভ করে, হ্যাঁ সাব্বির বলো?
তনু ওয়েট আমি আসছি।

প্রিয়তা বেগুনি রঙের একটা সেলোয়ার-কামিজ পরে চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বের হতেই, নিবিড় কথা বলতে বলতে চোখ পড়লো প্রিয়তার দিকে।
নিবিড়ের ওই পাশে সাব্বিরের বলা কথাগুলো যেনো কানেই আসছে না।পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রিয়তার দিকে।প্রিয়তা ওড়না ঠিক করতে করতে রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছে। 
তনুসার নিবিড়ের দিকে চোখ পড়তেই ভ্রু কুঁচকে নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে,বাহ্ আমি বললাম না,আমও খাবে আমের আঁঠী খাবে।
তনুসা উঠে গিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনি সালমা বেগম এসে,আরে তনুসা তুমি কখন এলে?
-এইতো আন্টি কিছুক্ষণ। কেমন আছেন আপনি?
-আমার মেয়ের যত্নে কি খারাপ থাকতে পারি?
তনুসা অনিচ্ছায়কৃত একটা হাসি দিয়ে, হু।

প্রিয়তা টেবিলে খাবার দিয়ে,মা আসো।নিবিড় আপনি আসুন খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।তনুসা আপনিও আসেন।কথাটা বলে মিটমিট করে হাসছে প্রিয়তা।

তনুসা একটু অবাক হয়ে,আচ্ছা মেয়ে তো।একটু আগে আমায় যা ইচ্ছা বলে গেলো আর এখন আবার আপনি বলে ডাকা হচ্ছে?সেয়ানাগিরি করা হচ্ছে আমার সাথে? দেখাচ্ছি মজা।স্বামী স্বামী করলে না, পরে ঠ্যালা বুজবা।

নিবিড় এসে খেতে বসে,জুহি আসেনি?
-না।
-কেনো? 
-চলে আসবে একটু পরে।আমি কলেজে ফোন দিয়েছি।
-কাকে ফোন দিয়েছো?
-ইশাক ভাই কে।ওনি বললেন কলেজ ছুটি হয়ে গেছে।তাঁর মানে ও পথেই আছে।
-তাহলে ইশাকের সাথে ভালোই কথাবার্তা হয়।
প্রিয়তা কাছে এসে প্লেটে ভাত দিতেই নিবিড় কানের কাছে বিড়বিড় করে,এতোই যেহেতু ওই লোকটার সাথে ভাব বিনিময় তাহলে আমার গলায় ঝুলে পড়লেন কেনো?ওই পিচকি ইঁদুরটাকেই বিয়ে করতে পারতেন।তাই না?
প্রিয়তা নিবিড়ের কানের কাছে ঝুঁকে,ফিসফিস করে বললো,মিস্টার নিবিড়!  আপনার কী জ্বলছে নাকি?কেমন পোঁড়া পোঁড়া গন্ধ পাচ্ছি। কিন্তু আপনার তো জ্বলার কথা নয়,কারণ আপনি আর আমি দেড় বছর পর এমনিই আলাদা থাকবো, তাই না?
নিবিড় কিছু বললো না।অল্প একটু খেয়ে,তনুসা! ড্রাইভারকে বলো তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিতে।তোমার সাথে আমার কিছু ইমপোর্টেন্স কথা আছে সেই গুলো ফোনে বলে দিবো।
কথাটা বলেই নিবিড় খাওয়ার মাঝ পথ থেকে উঠে যেতেই, সালমা বেগম বললো,আরে তুই খাওয়া শেষ না করেই চলে যাচ্ছিস? শরীর অসুস্থ নাকি?
-আমি ঠিক আছি।তোমরা খেয়ে নাও।

-আরে আপনি না খেয়ে চলে যাচ্ছেন কেনো? প্লিজ খেয়ে যান।
নিবিড় প্রিয়তার কথায় কোনো উওর না দিয়ে রুমে চলে গেলো।

নিবিড় পায়চারী করছে আর ভাবছে,প্রিয়তা আমার সামনে আসলে আমার এমন লাগে কেনো? আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।মনে হয় ও আমার আত্মার অস্তিত্বের সাথে মিশে যাচ্ছে।কিন্তু তনুসাকে দেখলে তো কখনো আমার এমন হয়নি। কখনো মনেই হয়নি ওকে আমার পেতেই হবে।সবসময় মেয়েটাকে দূরে সরিয়ে রাখতে ইচ্ছে করতো।কিন্তু প্রিয়তা! যতোই ওর থেকে দূরে থাকতে চাই পারি না।নিজেকে যেনো ওর মাঝেই হারাতে ইচ্ছে করে।মনে হয় ওর জন্মই শুধু আমার জন্য।ও যতক্ষণ আমার সামনে থাকে নিজেকে কিভাবে সংযত করে রাখি শুধু আমিই জানি।ওর চোখের দিকে তাকালে জনমভর চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।ওর চোখে যে মায়াবী নেশা আছে তা যে আমায় ঘায়েল করে নেয়।এইগুলো হয় কেনো আমার? কেনো ও সামনে থাকলে নিজেকে অসহায় লাগে? তাহলে কী আমি ওকে? না না এইটা কী করে হয়? আমি তনুকে ভালোবাসি, শুধুই তনুকে।

প্রিয়তা রুমে এসে দেখে নিবিড় ইজিচেয়ারে চিন্তায় মগ্ন হয়ে বসে আছে।প্রিয়তা সে দিকে খায়াল না দিয়ে নিজের জামা কাপড় গুলো আলমারিতে রাখার জন্য লাগেজ থেকে বের করে একটা একটা করে গুছিয়ে রাখতে লাগলো।নিবিড়কে আড় চোখে তাকিয়ে, কী ব্যাপার,হনুমানটা আমাকে কিছু বলছে না কেনো? আমি তো ওনার আলমারিতে নিজের জামা কাপড় রাখছি।তবুও কিছু বলছে না? নিশ্চয়ই বুজেছে এইখানে না রাখলে আমি কোথায় রাখবো।দেড় বছরই তো ব্যাপার। তাই ভেবে হয়তো কিছু বলছে না।

-আপনাকে একটা বলবো?
নিবিড় গাল থেকে হাত নামিয়ে প্রিয়তার দিকে তাকালো।
আপনার বোন নাদিয়া দেখতে কেমন? 
নিবিড় জিজ্ঞাসুক চোখে তাকাতেই, না মানে আপনি যদি না খুঁজেন তাহলে আমি মাকে মায়ের মেয়ে ফিয়ে দিবো।আমি খুঁজবো।
প্রিয়তা অসহায় গলায় বললো,আসলে মাকে মন খারাপ দেখলে আমার মোটেও ভালো লাগে না।জানেন? আমার মা আমাকে এতোটা ভালোবাসেননি, যতটা ভালোবাসা আমি আপনার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি।বোনেরা তো কখনো বোন বলে স্বীকার করতেই চাইতো না।কারণ আমার পরিচয় দিলে নাকি তাদের সম্মান থাকবে না।
নিবিড় গালে হাতে ভর দিয়ে আছে আর প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে আছে।
জানেন!  তাতে আমার কোনো আফসুস নেই।ওদের তো মানুষ করতে পেরেছি তাই না।মেজো বোনকে দশ লক্ষ টাকা জাফরকে দিয়ে বিয়ে দিয়েছি।সেজোটাকেও অনেক ভালো জায়গায় বিয়ে দিয়েছি।ওর শ্বাশুড়িও আপনার মায়ের মতো ভালো।আর ছোটো বোন ওর বিয়ের টাকাটাও মায়ের একাউন্টে রাখা আছে।
হয়তো তাঁরা কখনো বুজতেই পারলো না আমি তাদের কতোটা ভালোবাসি, কথাটা বলতেই প্রিয়তার চোখ থেকে পানি টপটপ করে গড়িয়ে পড়ছে।
নিবিড়ের ইচ্ছে করছে চোখগুলো মুছে দিতে।এই চোখে যে কান্না মানায় না, যে চোখে নিবিড় প্রতিনিয়ত নিজেকে হারায়।কিন্তু কি করে বুজাবো, কি বলবো প্রিয়তা তুমি কেঁদো না!তোমার কান্না যে আমার ভালো লাগে না।
প্রিয়তা চোখের পানি মুছে, ধূর,, আপনাকে কেনো এইসব বলছি আমি।আপনি মানুষের কষ্ট কী বুজবেন? অযথা আপনার সময় নষ্ট করছি আমি।
কথাটা বলে প্রিয়তা উঠে যেতেই নিবিড় করুণ স্বরে গাল থেকে হাত নামিয়ে বললো, প্রিয়তা!
প্রিয়তা থমকে দাঁড়িয়ে, পিছনে ফিরে,কিছু বলবেন?

নিবিড় অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে, নাহ্।যাওয়ার সময় দরজাটা আটকিয়ে যেও।

প্রিয়তা কিছু বললো না।নিবিড়ের কথা মতো দরজাটা আটকিয়ে জুহির রুমে গেলো।

নিবিড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে,তোমাকে অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করে প্রিয়তা।আমি যে নিজেকে নিজে উপলব্ধি করতে পারি আমার কিছু একটা হয়েছে।যেটা হয়েছে ওইটা যে তোমার মাঝেই আছে।

রিসাদ অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরেছে।ড্রইংরুমে বসে কাজের মেয়ে নিসাকে ডেকে পানি দিতে বললো।
নিসা রান্নাঘরে চা বানাচ্ছে দেখে নাদিয়া নিজেই নিয়ে এসে পানির গ্লাস হাতে দিতেই, নিসা কোথায়, তুমি নিয়ে আসলে?

ও চা বানিয়ে নিয়ে আসছে তাই আমি ভাবলাম তোমার জন্য পানি আমিই নিয়ে যাই।
-হু।
-অফিসে কী বেশি চাপ?
-মোটামুটি।পরের চাকরি বুজেই তো।সেখানে নিজের কোনো মতামত নেই।
-চিন্তা করছো কেনো, আল্লাহর রহমতে আমরা তো ভালোই আছি তাই না?
-হু,অধরা কোথায় ওকে তো দেখছি না।
-নিজের রুমেই খেলছে।সে কখন থেকে বাবা কখন আসবে বলে বলে আমার মাথা খারাপ করে দিচ্ছিলো।আচ্ছা তুমি আগে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।তারপর না হয় মেয়ের কাছে যেও। 
- ওকে তুমি নিসা কে চা নিয়ে আসতে বলো আমি আসছি।

রিসাদ উঠে গিয়ে ফ্রেশ হতে গেলো।নাদিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে, মুচকি হেসে উঠে নিজেই রান্নাঘরে গেলো।রিসাদ গরম গরম পাকড়া খেতে খুব পছন্দ করে।চায়ের সাথে কয়েকটা হলে মন্দ হয় না।

প্রিয়তা জুহির রুমে এসে,জুহি রিয়া আজ কলেজে এসেছে?
জুহি চুলের জোট ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বললো,এসেছে তো।আজ তো তুমি আমাদের ক্লাস পাওনি তাই হয়তো দেখোনি।
-ও আচ্ছা।
প্রিয়তা এগিয়ে এসে জুহির থেকে চিরুনি নিয়ে চুলগুলো আছড়িয়ে দিচ্ছে।
-ভাবী একটা কথা বলবো?
-তোমাকে আমি নিষেধ করেছি পাগলী?
-আচ্ছা তুমি কী ওদের সৎ বোন?
-পাগলী কি বলে এইসব?  
-আমি তোমার ননদ তবুও তুমি আমায় কতো ভালোবাসো আর ওরা তো তোমার নিজের বোন তাদেরকে তো আরও বেশি ভালোবেসেছো তাই না? 
কিন্তু তবুও তাঁরা তোমাকে সহ্য করতে পারে না।
জানো?  তুমি আমাদের বাড়ি আসার পর রিয়া আমার সাথে তেমন কথা বলে না।কিন্তু কেনো ভাবী?ওরা তোমায় কেনো এমন করে কষ্ট দেয়? আমার খুব খারাপ লাগে যখন দেখি তোমাকে কেউ কষ্ট দেয়।ইচ্ছা করে তাকে খুন করে ফেলি।

নিবির অফিসে একটা ফাইল খুঁজে পাচ্ছে না দেখে প্রিয়তাকে জিজ্ঞেস করতে গিয়ে জুহির দরজায় থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো প্রিয়তার কথা শুনে।
প্রিয়তা মুচকি হেসে, ধূর পাগলী,সবাই ভালোবাসার  মূল্য দিতে জানে না।আর যারা মূল্য দিতে জানে না তাঁরা কখনো কাউকে মন থেকে ভালোবাসেনি তাই।ভালোবাসা কয়েকটা ধাপের হয়।যেমন কেউ স্বার্থে, কেউ নিঃস্বার্থে,কেউ নিঃশব্দে, কেউ বিশ্বাসে,আবার কেউ কেউ অপমানকেও ভালোবাসা মনে করে।ভালোবাসা কখনো বয়স, সৌন্দর্য,ধনী, গরিব দেখে হয় না।একটা মানুষ যখন একটা মানুষকে ভালোবাসতে শুরু করে তখন তাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর ভাবনাগুলোই নিজের জগতে সৃষ্টি করে। সে মানুষটাকে ভালো রাখার জন্য পুরো দুনিয়ায় সাথে লড়তে পারে।যাদেরকে ভালোবাসা হয় তাদের ক্ষতি হোক সেই চিন্তা কখনো মাথায় আনতে নেই।থাকতে নেই কোনো হিংসা। 

জুহি প্রিয়তার দিকে ফিরে তাকে জড়িয়ে ধরে,সেজন্যই তো তুমি আমার ভালো ভাবী,আমিও কিন্তু তোমায় কম ভালোবাসি না বুজলে?
কথাটা বলতেই জুহি দরজার দিকে তাকিয়ে, ভাইয়া!
প্রিয়তাও পিছনে ফিরে নিবিড়কে গম্ভীরমুখে, কিছু বলবেন? 
-আমার কালো রঙের ফাইলটা কোথায়? 
-আলমারিতেই আছে।
-আপনি এসে খুঁজে দিন।আমি পাচ্ছি না।

প্রিয়তা জুহির হাতে চিরুনি দিয়ে,জুহি আগে খেয়ে নাও।আমি একটু পরেই আসছি।

প্রিয়তা রুমে আসতেই, নিবিড় পিছন থেকে ভারি গলায় বললো, ভালোসার সংজ্ঞা বৈশিষ্ট্য ভালোই দিতে পারেন।
-মানে?
-মানে আপনি বুজেননি? ওর ছোটো মাথায় আপনি এইসব কী আজেবাজে কথা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন?আপনি নিজে একজন শিক্ষিকা হয়ে এইসব বাজে কথা শেখাচ্ছেন? 
কথাটা বলে নিবিড় প্রিয়তার মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে,কথাগুলো আপনি ঠিকে বলেছেন।কিন্তু আপনাকে কেনো জানি রাগাতে খুব ইচ্ছে করছে।আপনি কখনো রাগেন না।আপনি রাগলে কেমন লাগে আজ দেখে ছাড়বো।
-দেখুন আপনি ভুল বুজছেন।আমি ওকে এমন কিছু বলেনি যেটা ওর খারাপ হবে।ও যেমন আপনার বোন তেমনি আমারও বোন।
প্রিয়তা কোমরে হাত দিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে আচ্ছা আপনি কী আমাকে এইখানে ফাইল খুঁজতে এনেছে নাকি ঝগড়া করতে?
-জাস্ট শাটাপ। ফাইল খুঁজে দিন।
প্রিয়তা বিরক্তিকর গলায়, দিচ্ছি, দিচ্ছি।
নিবিড় অন্যদিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে।

কেটে গেলো দুইটা দিন।প্রিয়তা কলেজে যাইনি।মোশারফ হোসেন গ্রামের বাড়ি থেকে এসেছেন সকাল সকাল।আসার সময় নিজের মাকে নিয়ে এসেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন