রুপন্তি নেমে যেতেই নিবিড় আস্তে আস্তে দুই সিঁড়ি নামতেই কুয়াশার বড় ভাবী আসিফাকে উঠে আসতে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে, ভাবী আপনি?
-ভাইয়া আপনি কী এখন ভার্সিটিতে যাবেন?
-জ্বি,আসলে ছুটি নেই।এমনিতেই কুয়াশার বিয়ের জন্য দুইদিন ছুটি নিয়ে ছিলাম।কেনো আপনি কিছু বলবেন?
-আস্তে কথা বলুন কেউ শুনতে পাবে।আপনি ছাদে আসুন।আপনার সাথে আমার অনেক কথা আছে।
কথাটা বলেই আসিফা ছাদে উঠে পায়চারি করতে লাগলো।নিবিড় আস্তে আস্তে গিয়ে ছাদের সিঁড়ির রুমের দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে, জ্বি বলুন।
-ভাইয়া আমি আপনার ছাত্রী, আর আপনি আমায় আপনি বলছেন আমার খুব লজ্জা লাগে।
-নো প্রবলেম, এখন আপনি আমার বড় ভাবী। কী বলবেন প্লিজ তাড়াতাড়ি বলেন।আমার তাড়া আছে।
আসিফা এগিয়ে এসে, ভাইয়া সেদিন আংকেল আমার শ্বশুররের জন্য স্টক করে নি। করেছে আমার স্বামীর কারণে।
নিবিড় চোখমুখ কুঁচকে, মানে?
মানে আংকেল যখন আমাদের বাসায় গেলেন বাবার সাথে কথা বলার জন্য তখন বাবা তো বাসায়ও ছিলো না।আংকেল যখন বিয়ের কথা বলেছেন তখন আপনার ভাই হঠাৎ রেগে গেলেন।তখন আমরা কিছু বুজতে পারলাম না ড্রইংরুমে কি চলছিলো। আসার আগেই দেখি আপনার ভাই আংকেলকে থাপ্পড় দিয়ে ফেলেছে।কিন্তু কি কারণে হয়েছে আমরা আজও জানি না।
আসিফা শান্ত গলায় কথাগুলো বলছে আর নিবিড় চোখ বন্ধ করে আছে।
-ভাইয়া আপনি বাবার কারণে হয়তো কুয়াশাকে নিয়ে যাননি। কিন্তু ভুল করছে আমার স্বামী। আর সেই শাস্তি পাচ্ছে কুয়াশা। ভাইয়া প্লিজ আপনি যদি কুয়াশার পাশে না থাকেন তাহলে কাউকেই সে পাশে পাবে না।
নিবিড় হাত উঠিয়ে আসিফাকে থামিয়ে,ওর পাশে দাঁড়ানোর এখন অনেক মানুষ আছে।আমার মতো নগন্য একজন মানুষ না দাঁড়ালেও চলবে।কথাটা বলেই নিবিড় তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলো।কিন্তু দেওয়ালের ও পাশে জুয়েল দাঁড়িয়ে ছিলো নিবিড় একটুও খেয়াল করে নি। নিবিড় নেমে যেতেই জুয়েল এসে আসিফার গালে থাপ্পড় দিয়ে, ঘরের শত্রু বিভীষণ! নিবিড়ের সাথে তোর কিসের এতো লটরপটর?
আসিফা গালে হাত দিয়ে,ছিঃতুমি এতো নোংরা কথা কীভাবে বলো ভাইয়ার নামে? ভাইয়ার মতো হতে তোমাকে চৌদ্দো বার জন্ম নিতে হবে।
জুয়েল ক্রোধ গলায় বললো, এই তুই চুপ করবি? ওর মতো রাস্তার ছেলের সাথে আমি আমার বোনের বিয়ে দিবো? এইটা তুই ভাবলি কী করে?
-উনি যদি রাস্তার ছেলে হয় তাহলে আমি বলবো তুমি অন্ধকার গলিতে জন্ম নিয়েছো।উনার ব্যাপারে যদি তুমি আর একটাও বাজে কথা বলেছো আমি ভুলে যাবো তুমি আমার স্বামী।
কথাটা বলতেই জুয়েল আসিফার চুলের মুঠো ধরে, চল নিচে চল।আজ তোকে বুজিয়ে দিবো আমি কতটা খারাপ।চল!
কুয়াশা গম্ভীর হয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে বাহিরের দিকে তাকিয়ে।
পুরোনো স্মৃতিগুলো তাকে চাবুকের মতো আঘাত করছে।চোখ বন্ধ করতেই ভাবনার গভীরে ডুব দিলো।
নিবিড় ছাদে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে কুয়াশা কখন আসবে।একঘন্টা পর এসে কুয়াশা হাঁপাতে হাঁপাতে বললো তুমি এখনো দাঁড়িয়ে থাকবে ভাবতেই পারিনি।
আমি কী তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি নাকি? এমনিই ভালো লাগছে ছাদের দাঁড়িয়ে থাকতে।
-তাহলে আইসক্রিম নিয়ে কেনো? হুম!
-আমি কী খেতে পারি না?
-তুমি একটা আজিব লোক।এখন আইসক্রিম তো গলে গেছে।
-হুম এইটা তোর খেতে হবে না।কাল নতুন করে নিয়ে আসবো।কিন্তু তুই এতো হাঁপাচ্ছিস কেন?
ভাইয়ারা এখনো ঘুমায়নি।তবুও চোখ ফাঁকি দিয়ে আসছি।
কথাটা শুনেই নিবিড় অট্র হাসি দিয়ে, আচ্ছা আমি কী তোর প্রেমিক নাকি? তোকে পালিয়ে আসতে হবে কেনো?
-কম কিসের?
-মানে?
-কিছু না।এখন আমাকে এইটা বলো তুমি কাল আমাকে না দেখে জানলে কী করে আমার চোখের কাজল লেপ্টে গেছে? নিশ্চয়ই তুমি আমাকে চুরি করে দেখেছো?
-তোকে চুরি করে দেখবো কেনো? আমি তো তোকে আয়নায় দেখেছি।তুই যখন চা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলি তখন সামনের আয়নায় তোকে খুব স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে।
-তুমি সত্যিই চোর।
-তোর ভাইয়ের তো বিয়ে আমাকে দাওয়াত দিবি না?
-দাওয়াত কেনো দিবো তোমাকে? আর মেয়েতো তোমার ছাত্রী। তুমিই তো বাবাকে মেয়েটার কথা বলেছো। বাবা সব দায়িত্ব তোমাকেই দিয়েছে।উল্টো এখন তোমার আমাকে দাওয়াত দেওয়া উচিত।
-ওকে মহারানী, আপনার কথা অনিবার্য পালন করবো।
এইবার যান,কেউ দেখলে খারাপ কিছু ভাবতে পারে।
-আচ্ছা তুমি আমার জন্য কতদিন এইভাবে ছাদে আইসক্রিম নিয়ে আসবে?
-যতদিন তোর বিয়ে না হয়।
কুয়াশা কথাটা শুনেই মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
নিবিড় বুঝতে পেরে আরে পাগলী মন খারাপের কী আছে? ভাগ্যে থাকলে তুই হয়তো এই বাড়িতেই থাকবি।
কুয়াশা মাথা উঠিয়ে, আমি বুঝতেই পারি না তোমার কথা।মাঝে মঝে মনে হয় তুমি আমার অনেক দূরের আবার মনে হয় সন্নিকটে। কেনো এমন ভয় দেখাও।
-তোকে ক্ষেপাতে ভালো লাগে। এখন যা তো ভালো লাগছে না তোকে।
কুয়াশা হাসতে হাসতে নিচে নেমে গেলো।
নিবিড়দের বাড়িতে বিয়ের আমেজ।আত্মীয়স্বজন সবাই এসেছে।রাতে জুয়েলের গাঁয়ে হলুদ সব মেয়েরাই সেজেছে নিজেদের মতো করে।চৌদ্দো পনেরো মেয়েটাই একি রকম জামা পরেছে।নিবিড় কাজের বাহানা ধরে কুয়াশার বাসায় এসেছে, মেয়েগুলোর মাঝে কুয়াশাকে খুঁজে না দেখতে পেয়ে মনটা নিরাশ হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রান্নাঘরে গেলো, কাকী আর কোনো কাজ আছে? থাকলে আমায় বলবেন আমি বাসায় আছি।
শাহানাজ বেগম মুচকি হেসে, না বাবা, আপাতত লাগবে না।তুই তো আজ কয়েকদিন থেকে দায়িত্ব নিয়ে সব করেই দিচ্ছিস।
-তাহলে কাকী আমি আসি।
-কিছু খেয়ে যা নিবিড়?
-কাকী আমি বাহিরে থেকে খেয়ে আসছি গাঁয়ে হলুদের ফুল নিয়ে আসার সময়।এখন আর কিচ্ছু খাবো না।
কথাটা বলেই নিবিড় রান্নাঘরের দরজা থেকে সরে আসতেই একটা মেয়ের ধাক্কায় হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো।
নিবিড় নিচু হয়ে ফোন নিতেই, লুজ কারেক্টার একটা ছেলে,মেয়ে দেখলেই গাঁয়ে পড়তে আসে।সমস্যা কি আপনার?
নিবিড় ফোনটা নিয়ে,উপরে উঠে মেয়েটাকে কিছু বলবে তখনি কুয়াশা লাল রঙের সোনালী পাড়ের একটা শাড়ি পরে চুলগুলো ঠিক করতে করতে বেরিয়ে এলো।নিবিড় সেই দিকে বিস্ময়কর চোখে তাকিয়ে আছে।মনে যেনো বসন্তের ভোরের সূর্য উঠেছে দক্ষিণা হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে মনের সমস্ত লুকানো আবেগ।আজ যেনো নিজের কবি হতে ইচ্ছে করছে,
চুলগুলো এলোমেলো সেই এলোকেশী।
বসন্তে বাতাসের মতো ছুঁয়েছে আমারও মন।
কৃষ্ণচূড়ার লাল শাড়ি জড়িয়েছে গাঁয়ে।
তোমার সোনারও অঙ্গে মিশিয়েছি আমারও পরাণ।
এইদিকে মেয়েটা যা ইচ্ছে বলাবলি করে চলে গেলো।সেদিকে নিবিড়ের কোনো কুরুক্ষেপ নেই।
কুয়াশা সামনে এসে দাঁড়িয়ে, কী ব্যাপার? ওই মেয়েটা তোমায় যা ইচ্ছে বলে গেলো আর তুমি চুপ করে সব সয়ে নিলে?
নিবিড় তখনও তাকিয়ে আছে।
জুয়েল সাদা পাঞ্জাবি পরে রুম থেকে বেরিয়ে এলো গাঁয়ে হলুদের জন্য।হঠাৎই চোখ পড়লো দুজনের দিকে।
-কী হলো কিছু তো বলো?
-তোকে অপরুপ, সুহাসীনি , সুন্দর, দেখাচ্ছে।তোকে বলার মতো ভাষা যে আমার নেই।
কুয়াশা অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে, তোমার জ্বর হলো নাকি?
কথাগুলো শুনতে ভালো লাগলেও নিজেকে সামলাতে পারলো না কুয়াশা। যে মানুষটা তাকে কখনো প্রশংসা তো দূরের কথা কখনো বলেইনি কুয়াশা তোকে ভালো লাগছে সেই মানুষটা গুনে গুনে তাও আবার তিনটা বাক্য?
কুয়াশা মাথা এদিক সেদিক ঝাঁকিয়ে বলল, তুমি ঠিক আছো?
নিবিড় চমকে উঠে, এই তুই আমার সামনে শুরু করেছিসটা কী বলতো? আর সবাই পরেছে জামা তুই কোন দুঃখে শাড়ি পরলি? যা এইটা চেইঞ্জ কর তাড়াতাড়ি। দেখতে তো একদম পেত্নীর মতো দেখাচ্ছে তোকে।যা যা তাড়াতাড়ি চেইঞ্জ কর।
কুয়াশা নিচের ঠোঁট উল্টিয়ে,এই ছিলো ফাল্গুন মাস কখন যে হয়ে গেলো পৌষ মাস সেটাই তো বুঝতে পারলাম না।
নিবিড় হড়বড় করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো।
জুয়েল স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বললো,আমার ধারণাটাই ভুল।শুধু শুধু বাজে সন্দেহ করেছিলাম ওদের।
গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ করে সবার ঘুমানোর পালা। কিন্তু কুয়াশাদের বাসায় পর্যাপ্ত শোয়ার জায়গা না থাকার কারণে অনেকেই নিবিড়দের বাসায় এসেছে।কেউ প্লান করেছে ছাদে বসেই কাটিয়ে দিবে সারাটা রাত। নিবিড় এসে ছাদে আলোচনা গুলো শুনতেই মায়ের পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো।রহিমা বেগম ছেলেকে পিছনে দাঁড়াতে দেখে,কিরে এতোক্ষণ তো এলি না।এখন সব শেষ হওয়ার পর ছাদে কী?
-মা একটু ওইদিকে চলো আমার একটা কথা আছে।
-কি বলবি এইখানে বল না?
নিবিড় শান্ত গলায় বললো,প্লিজ!
রহিমা বেগম ছেলের আকুতি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, চল।আমার আবার ঘুমাতে যেতে হবে।
ছাদের একটা কোনায় দাঁড়িয়ে, তুমি যাওয়ার সময় কুয়াশাকে ছাদ থেকে নিয়ে যাও।
-কেনো?
-বিয়ে বাড়ি মা,এখানে নানান রকম মানুষ আসে।ও একটা মেয়ে হয়ে সারারাত ছাদে কাটিয়ে দিবে?
-আমাদের বাসায়ও তো ওদের অনেক আত্মীয়স্বজন ঘুমিয়েছে।
-মা আমার রুমটা তো খালি আছে।
মা অবাক হয়ে বললো,তোর সাথে?
- ধ্যাৎ, আমার সাথে কেনো?আমি ছাদের কোনো রকম কাটিয়ে দিতে পারবো।কিন্তু মা ও এখানে থাকলে আমাদের বরং মানসম্মানটাই কমবে।
-আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে।ও আমার সাথেই ঘুমাতে পারবে।তোর চিন্তা করতে হবে না।
নিবিড়ের যেনো স্বস্তি ফিরে এলো।
কিন্তু মায়ের চোখ যেনো ফাঁকি দিতে পারলো না।
মা মিটমিট করে হেসে বলল, একটা সত্যি কথা বলবি?
-কী?
-তুই কী কুয়াশাকে পছন্দ করিস?
-মা প্লিজ এইসব কী বলো তুমি?
-মায়ের চোখ বলে কথা।ফাঁকি দেওয়া সম্ভব না।
নিবিড় লজ্জা পেয়ে কিছু না বলেই ঘাড়ে হাত দিয়ে কচলাতে কচলাতে নিচে নেমে গেলো।
ভোর রাতের আগেই কুয়াশা এলো শোয়ার জন্য।
কুয়াশার কথার শব্দ শুনে নিবিড় এসে নিজের রুমের দরজায় দাঁড়ালো। কুয়াশাকে দেখে নিজের রুমে এসে খাটে বসলো।
কুয়াশা এসে নিবিড়ের মায়ের সাথে শুয়ে,জেঠি মা, জেঠু কোথায় ঘুমিয়েছে?
-জানি না।ঠিক ম্যানেজ করে নিবে।তুই শুয়ে পড়।
রহিমা বেগম আর কিছু না বলে শুয়ে পড়লেন।কখন যে ঘুমিয়ে গেলেন টের পেলেন না।কিন্তু কুয়াশার চোখে ঘুম নেই।এতোক্ষণ যেনো জেঠি মাকেই পাহারা দিয়েছে।কুয়াশা শোয়া থেকে উঠেই চুপিচুপি নিবিড়ের রুমের সামনে গেলো।দরজা খোলা দেখেই আস্তে করে রুমে ঢুকেই দরজা মুখোমুখি লাগিয়ে দিয়ে খাটের কাছে এসে জোরে নিশ্বাস ফেললো।
নিবিড় গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে, সেইদিকে কুয়াশার চোখ পড়লো।
কুয়াশা অপলক চোখে তাকিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে
এসে নিবিড়ের পাশে বসলো।নিবিড়কে খালি গাঁয়ে দেখে কুয়াশা মিটমিট করে হাসতে হাসতে আরও কাছে এগিয়ে এলো।এই প্রথম কুয়াশা নিবিড়কে খালি গাঁয়ে দেখেছে।কুয়াশার ইচ্ছে করছে বুকটাতে একটা চিমটি কাটে দিতে।কিন্তু নিবিড় যদি বকা দেয় সেই ভেবে নিজেকে সংযত করলো।
কুয়াশা আবার উঠে সোজা হয়ে বসে একটা হাত আস্তে আস্তে নিবিড়ের মুখের কাছে নিলো।ডান গালটা স্পর্শ করতেই নিবিড় চোখ খুলে কুয়াশার দিকে খানিকটা সময় তাকিয়ে থাকলো।স্বপ্ন নাকি সত্যি সেটাই বুঝতে পারছে না।কুয়াশার মুখটা পুরোটাই স্পষ্ট হতেই নিবিড় হড়বড় করে উঠে বসে,তুই?এখানে কী করছিস?
-কাকে আশা করেছিলে তুমি এইখানে?
-ফাইজলামি করিস না।তুই এখান থেকে যা।কেউ দেখতে পেলে বুজতে পারছিস কী হবে?
প্লিজ যা।
-আমি একটু থাকি না।
-কেনো থাকবি তুই? আমি কী তোর বর লাগি?
যা বলছি না হলে কানের নিচে একটা দিয়ে সব দাত ফেলে দিবো।
-কানের নিচে দিলে দাত পড়বে না। কান ফেঁটে যাবে।
-হু, অনেক বুজিয়েছিস। তোর পায়ের ধরি এইবার যা।
-আগে ধরো।
-মানে?
-তুমিই তো বললে পায়ে ধরবে।
নিবিড় এইবার চোখেমুখে রাগ ফুটিয়ে গম্ভীর গলায় বললো, তুই এইবার যাবি?
নাকি আমি তোকে,,,,
কুয়াশা মন খারাপ করে,যাচ্ছি তো।বকার কী আছে?
কুয়াশা মন খারাপ করে দাঁড়াতেই নিবিড় হাত ধরে টানতেই কুয়াশা নিবিড়ের গাঁয়ে এসে পড়লো।কুয়াশা নিজেকে না সামলিয়ে তাকিয়ে আছে নিবিড়ের চোখে।যে চোখে তার রোজ হারাতে ইচ্ছে করে।নিবিড় কিছু বলতে যাবে কিন্তু কুয়াশা আঙ্গুল দিয়ে নিবিড়ের ঠোঁট চেপে ধরে চুপ করিয়ে দিলো।নিবিড় কুয়াশার এমন আচরণে হতভম্ব হয়ে আছে।কী বলবে? কুয়াশা কী করতে চাইছে? ও ছোট তাই বলে কী আমিও,,,,,কুয়াশার এগিয়ে আসার দিকে তাকিয়ে আছে নিবিড়।কুয়াশা যতটা এগিয়ে আসছে নিবিড়ের বুকের ভেতর ততটাই কেঁপে কেঁপে উঠছে।কুয়াশা যে তাকে ভালোবাসে নিবিড় আগে থেকেই জানে।কিন্তু নিবিড় চায় না পরিবারের অমতে কিছু হোক।জুয়েল ভাইয়ার বিয়ের জন্য এতোদিন নিবিড় কাউকে কিছু বলেনি কিন্তু কুয়াশা যা করছে এইভাবে নিজের কাছে নিজেকে ছোটো করা ছাড়া আর কিছু না।নিবিড় আর চুপ করে না থেকেই কুয়াশাকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে যাবে এর আগেই নিবিড়ের মা এসে দরজা খুলে হতবাক হয়ে আছে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে চোখ বড় বড় করে।