আজ বিদায় দিলাম আমার ছোট্র খেলার সাথী কুয়াশাকে।বিদায় দিলাম তিল তিল করে গড়ে তোলা নিজের ভেতরের স্বত্বাকে।বিদায় দিলাম না বলতে পারা ভালোবাসার মানুষটিকে।বিদায় দিলাম যত্নে করে রাখা কাঁচের স্বচ্ছ ফুলদানিটাকে।হ্যাঁ তোর বিয়ে ছিলো।বিদায় দিয়েছিলাম আমি।নিজের কষ্টগুলোকে মাটি চাপা দিয়ে বিদায় দিলাম তোকে।
ভালোবাসলেই যে পেতে হবে তার তো কোনো মানে নেই।ভালোবাসা যখন শুধু শরীরের নয় দুটো আত্মার মিলন তখন তোকে আটকে রাখার অধিকার আমার নেই।কথাগুলো ভাবতে ভাবতে নিবিড় সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে নিজের ফ্ল্যাটের দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল দিতেই, রুপন্তি এসে দরজা খুলে দিয়ে, ভাইয়া তোর এখন আসার সময় হলো?
নিবিড় মুখ গম্ভীর করে,কেনো কী হয়েছে?
মা তোর জন্য টেনশন করছে।আর তুই কিনা বাহিরে বাহিরে।
নিবিড় কিছু না বলে, সোজা মায়ের রুমে গিয়ে, মা তুমি রাতে খেয়েছো?
নিবিড়ের কথা শুনে নিবিড়ের মা রহিমা বেগম উঠে এসে,আমার কথা তোকে ভাবতে হবে না। কাল থেকে তো পানি ছাড়া কিছুই খাচ্ছিস না। এখন সামান্য কিছু খেয়ে নে।
-'মা আমার ক্ষিদে নেই।
শিশিরে মা ঘরের থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে খাবার নিতে নিতে, 'খাবি না কেন? যে মেয়ে তোর কথা ভেবেনি তুই কেন ভাববি? ভালোবাসা এক তড়পা হয় না।দুজনকেই ভালোবাসতে হয়ে। নিবিড় মায়ের পিছন পিছন এসে দাঁড়িয়ে রইলো।
মা নিবিড়ের সামনে এসে ভাতের লোকমা তুলে, 'হা কর!
-'মা আমি খাবো না। প্লিজ আজকের দিনটা আমায় ছেড়ে দাও।
-'আমি মরলে তুই শান্তি পাবি তাই না?
-'মা তুমি এসব কী বলছো?
- 'হ্যাঁ ঠিকি তো বলছি। না হলে ওই মেয়েটার জন্য আমাদের কেনো কষ্ট দিচ্ছিস? নিজেও খাচ্ছিস না।
নিবিড় মায়ের হাতের লোকমাটা নিজে টেনে মুখে দিয়ে,'এবার ঠিক আছে?
রহিমা বেগম ছলছল চোখে তাকিয়ে কিছু না বলেই ছেলেকে খাইয়ে শেষ করলেন।
নিবিড় ডাইনিং টেবিলের সামনে গিয়ে পানির গ্লাসটা নিয়ে বসে পানি খেয়ে আবার নিজের রুমে গিয়ে দরজাটা আটকে দিলো।
নিরব স্থির হয়ে খাটের কিনারায় বসে পড়লো।
শরীরটা ভালো লাগছে না। খাটের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো,,,,
সাত বছরের কুয়াশা আর নিবিড় চৌদ্দ বছরের। হোস্টেলে থেকেই পড়ালেখা করেছে নিবিড়।নিবিড়ে বাবার সরকারি চাকরির কারণে বাবা পরিবার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হতো।কিন্তু নিবিড় কখনো কোথাও যায়নি।চাচাতো বোন কুয়াশাই তার জীবনের ভাবনার রাজকন্যা।
বাড়ি আসলেই ছোট্ট কুয়াশার সাথে ঝগড়া, রাতবেরাতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া,কুয়াশার সব আবদার যেনো নিবিড়কে ঘিরেই। ছুটির সময়গুলো নিবিড় কুয়াশার সাথেই কাটাতো।আস্তেআস্তে দুজনেই বড় হতে লাগলো।নিবিড়ের এখন আর বাড়ি আসা হয় না।একটা সময় স্কুল কলেজে ভার্সিটি শেষ করলো নিবিড়। ঢাকায় একটা বাসায় দুই বন্ধু মিলেই থাকে।মাঝখানে কেটে গেলো অনেকটা বছর। কুয়াশার সাথে নবম শ্রেণিতে থাকার সময় দেখা হয়েছিলো আর দেখা হয়নি।আমি চলে এলাম ঢাকায় আর বাবা পরিবার নিয়ে চলে গেলো রাজশাহী। চট্টগ্রামের সেই বিশাল ছয়তলা বাড়িটিতে শুধু কুয়াশারাই থাকতো আর ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়েছে।কিন্তু বাবা বাড়িতে যাওয়ার পর কুয়াশারা দোতলায় আর বাবা তিনতলায় থাকতো।
বাবা চট্টগ্রামে যাওয়ার পর এই প্রথম বাড়ি যাচ্ছি।কুয়াশাকে দেখবো।কেমন হয়েছে মেয়েটা? নিশ্চয়ই আগের মতো আমার সাথে ঝগড়া করবে না।বলবে না ভাইয়া আমায় আইসক্রিম নিয়ে দিবি?আমার নামে কী এখনো মায়ের কাছে নালিশ করবে? ব্যাগ গুছাতে গুছাতে নিবিড় কথাগুলো ভাবছে আর হাসছে।
সকাল ছয়টা বাস থেকে নেমেই রিকশা নিয়ে সোজা নিজেদের বাড়িতে চলে গেলো নিবিড়। বাবা আগেই বলেছে তারা তিনতলায় থাকে। কিন্তু নিবিড় ফোনে কথা বলতে বলতে ভুলেই দোতলার পূর্বপাশের ফ্ল্যাটের কলিংবেল চেপে পিছনে ফিরে গেলো।
কিছুক্ষণ পর দরজা খুলতেই নিবিড় ফোন রেখে পিছনে ফিরে রীতিমতো চমকে উঠলো।এতো সুন্দর পরীর মতো একটা মেয়ে, মাথায় ওড়না দিয়ে ঘোমটা দেওয়া,নিচের দিকে তাকিয়ে একটা হাত অন্য হাতের সাথে কচলানো সবমিলিয়ে নিবিড় নিজের অজান্তেই বলে ফেললো,মাশাল্লাহ আল্লাহ সৃষ্টি সেরা মানবী।
কথাটা বলতেই কুয়াশা নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে, আসসালামু আলাইকুম!
নিবিড় দৃষ্টিহীন চোখেই বললো,ওয়া আলাইকুমুস্ সালাম।
-আপনি কী কাউকে খুঁজছেন?
-স্যরি আমি মনে হয় ভুল জায়গায় এসে গেছি।এইটা তিন তলা নয় তাই না?
কুয়াশা মুচকি হেসে আঙ্গুল দিয়ে উপরে ইশারা করলো।
নিবিড় কপালের ঘাম মুছে,ও হ্যাঁ হ্যাঁ।
নিবিড় আর দাঁড়িয়ে না থেকে দৌড়ে উপরে গেলো।
কুয়াশা দরজা আটকিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে খাটের উপর শুয়ে, ভাইয়া তুমি আমাকে চিনতে পারোনি? আমি যে তোমার ছোট্ট কুয়াশা। যার অন্যায় আবদার গুলো তুমি খুব সহজে মেনে নিতে।কুয়াশা বালিশের নিচ থেকে নিবিড়ের ছবিটা বের করে, তুমি ছবির থেকেও বেশি সুন্দর এবং স্মার্ট। আমার কল্পনায় যে নিবিড়কে আমি এঁকে ছিলাম তুমি তার থেকেও,,,,,
কুয়াশা আর ভাবতে পারলো না।দরজার ঠকঠক শব্দে কুয়াশার ভাবনার ছেঁদ পড়লো।
দরজা খুলে,
মা তুমি?
-হুম আমি।গোসল সেরে নামাজ পড়ে খেতে আয়।জোহরের আজান কী তোর কানে যায়নি?
কথাটা শুনে নম্রমুখে মাথা নিচু করে কুয়াশা উপর নিচ মাথা নাড়লো।
কুয়াশার মা শাহানাজ বেগম হাতের তসবিহটা খাটের পাশে বক্সের উপরে রেখে,তুই জীবনেও বড় হবি না?
খাটের অবস্থা করছোস কী।তুই গোসল সেরে আয় আমি গুছিয়ে নিই।
কুয়াশা কথাটা শুনেই চমকে উঠে দৌড়ে গিয়ে মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে,মা, মা, শুনো!
-তোর আবার কী হলো?
-মায়ের হাত থেকে কাঁথা নিয়ে,মা আমি আছি না।তুমি গিয়ে কুরআন পড়ো।আমি এইগুলো সব গুছিয়ে নিচ্ছি।
শাহানাজ বেগম মুচকি হেসে,আচ্ছা ঠিক আছে।
তাহলে আমি যাই তুই তাড়াতাড়ি আয়।তোর বাবা অফিস থেকে এসে দেখলে আমার খবরই আছে।
শাহানাজ বেগম,দেখতে যতটা সুশ্রী, কথাবার্তায়ও ততটাই মাধুর্য মর্যাদা সম্পূর্ণ। সবসময় নামাজ, তসবিহ আর কুরআন। এইগুলোকে নিজের জীবনে অবলম্বন মনে করেন।অবশ্য সব মুসলমানের উচিত নিজেকে নামে মুসলিম না সেজে পরিপূর্ণ মুসলিম হয়ে দুনিয়ায় মায়া ত্যাগ করে আখেরাতের কথা চিন্তা করার।
কুয়াশা নিবিড়ের ছবিটা তাড়াতাড়ি করে সরিয়ে নিলো।খাট না গুছিয়েই গোসল করতে চলে গেলো।
নিবিড় এখনো দরজা সামনে দাঁড়িয়ে। রহিমা বেগম ফোনে কথা বলার কারণে কলিংবেলের শব্দটাও যেনো কান থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বোনের সাথে কথা শেষ করে ফোন রাখতেই কলিং বেলের শব্দ শুনে দৌড়ে গেলো দরজা খুলতে।
নিবিড়কে দেখেই হতভম্ব হয়ে,চেঁচিয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে, নিবিড়!
আনন্দের অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে গাল বেয়ে। নিবিড় মুচকি হেসে,আরে মা! তুমি দেখি সেই আগের মতোই রয়ে গেছো।এমন ভাব করছো যেনো একযুগ পর দেখা।
নিবিড়কে ছেড়ে চোখ মুছতে মুছতে, ভালো কথা শিখেছিস কিন্তু ভুলে যাস না আমি তোর মা।মায়েরা ছেলেমেয়েদের যখনই কাছে পাক না কেনো তাদের অনুভূতি একই থাকে।
নিবিড় আবারও মুচকি হেসে মাকে পা ছুঁয়ে সালাম করতেই রহিমা বেগম চমকে উঠে আরে করছিস কী? সালাম পা ছুঁয়ে করতে হয় না,মুখে করলেই হয়।
-মা,,,,সবাইকে পা ছুয়ে করা যায় না ঠিক।কিন্তু যে মা-বাবা কষ্ট করে বড় করেছে তাদের সালাম দিলে কিচ্ছু হয় না।আচ্ছা মা রুপন্তি কোথায়?
-ও তো কলেজে।একটু পরেই এসে পড়বে তুই ফ্রেশ হয়ে নে।আমি খাবার দিচ্ছি।
নিবিড় রুমে এসে কুয়াশার মুখটা যেন বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।হঠাৎই মনে আসলো এই কুয়াশা ছাড়া কেউ হতে পারে না।দৌড়ে দরজা খুলে মাকে দেখে, থমকে গিয়ে নিরাশ হয়ে বললো,মা! দোতলায় পূর্ব পাশের ফ্ল্যাটে তো ছোটো চাচা থাকে তাই না?
-হু,,
-কুয়াশা দেখতে কী গোলগাল চেহারা, টানাটানা চোখ,র্ফসা, চোখে নিচে কাজল,কফি কালারের ওড়নায় মাথায়,হাত দুটো কাচুমাচু করে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি হাসির আড়ালে।
ছেলের কথা শুনে রহিমা বেগম হাতের প্লেটটা টেবিলেই রেখে পিছনে ফিরে ছেলের দিকে তাকিয়ে দেখে সে অন্যমনস্ক হয়ে কথাগুলো বলেছে।তবে রহিমা বেগমের বুজতে বাকী নেই ছেলে কুয়াশাকে দেখেই মনে ঝড়ে আভাস বইছে।
নিবিড়ের সামনে দাঁড়িয়ে গালে আলতো করে ছুঁয়ে,ফ্রেশ হয়ে আয়।খাবার বেড়ে রেখেছি।
নিবিড় মায়ের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠে, কিছু না বলেই লজ্জিত মুখে হাসি ফুটিয়ে, মাথা চুলকাতে চুলকাতে নিজের ঘরে গেলো।
কুয়াশা গোসল সেরে এসে নামাজ পড়ে আবারও চোখে কাজল দিলো।এটুকুতেই একটা ছেলে তার প্রেমে পড়ার জন্য যথেষ্ট। তবুও ঠোঁটে হালকা লিপস্টিকের ছোঁয়া লাগিয়েছে।
গুনগুন করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে ডাইনিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে, মা তুমি বসো।আমি নিজে নিয়েই খেতে পারবো।
-কোথাও যাচ্ছিস নাকি?
-কেনো মা?
-ঠোঁটে লিপস্টিক তাই জিজ্ঞেস করলাম।
-ধুর,, কোথাও না।
আজমল হোসেন মা মেয়ের কথার মাঝখানে এসে চেয়ার টেনে বসে,আমার মায়ের কী হয়েছে?
কুয়াশা শান্ত গলায় বললো,কিছু না বাবা!
-শুনলাম নিবিড় এসেছে।
শাহানাজ বেগম আজমল সাহেবের দিকে তাকিয়ে,কখন এলো ছেলেটা? আমার সাথে তো দেখা করলো না?
কুয়াশা ভাতের প্লেট নিজের দিকে টেনে নিয়ে,মা ভাইয়া একটু আগে আসছে।ভুল করে হয়তো আমাদের বাসায় চলে এসেছিলো।আমাকে দেখে চিনতে পারিনি।হন্তদন্ত হয়ে ছুটে নিজের বাসায় গেলো।
শাহানাজ বেগম একগাল হাসি দিয়ে, চিনবে কি করে তোকে সে ছোটো বেলা দেখেছে সে।এখন তো না চেনারই কথা।
আজমল হোসেনও মাথা নেড়ে, ঠিকি বলেছো,আমাদের সেদিনের কুয়াশা আজ নিজের হাতেও খেতে শিখে গেছে কথাটা বলেই অট্র হাসি দিয়ে আবার খাওয়াই মনোযোগ দিলেন।
নিবিড় ফ্রেশ হয়ে এসেই রুপন্তিকে দেখে, কিরে কলেজ কেমন চলছে?
-ভালো।ভাইয়া তুই কখন এলি?
-একটু আগে।
নিবিড় চেয়ার টেনে খেতে বসে,কিরে তুই খাবি না?
-তুই শুরু কর আমি এখনি আসছি।
নিবিড় খাওয়াদাওয়া শেষ করে নিজের রুমে গিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে শুয়ে পড়লো।
কিছুক্ষণ যেতেই নিবিড় কারো কথার শব্দ শুনে উঠে বসলো।
-জেঠী মা, আজ যে নিবিড় ভাইয়া আসবে তুমি আমাকে কিছু বলোনি কেনো?
রহিমা বেগম মুচকি হেসে কুয়াশার সামনে এগিয়ে, আরে পাগলী আমিও তো জানতাম না নিবিড় আজ আসবে।ওকে দেখে আমিও খুব অবাক হয়েছি।কিন্তু তুই কী করে জানলি নিবিড় এসেছে।
-হু,,জানি জানি।তোমার ছেলে ভুল করে আমায় দর্শন দিয়ে এসেছে।
-ওমা তাই?কখন,,,,রে?
কুয়াশা কিছু বলতে যাওয়ার আগেই নিবিড় এসে,কিরে ভোরের কুয়াশা কেমন আছিস?
কথাটা বলতেই কুয়াশা পিছনে ঘুরে মুচকি হেসে নিচের দিয়ে তাকিয়ে, জ্বি ভালো।
নিবিড় একদম কুয়াশার সামনে এগিয়ে এসে, কিরে তুই কবে থেকে আমাকে আপনি করে বলিস?
কুয়াশা লজ্জা পেয়ে আস্তে আস্তে নিবিড়ের দিকে মুখ তুলে আসলে অনেক বছর পর দেখেছি তো,,,,
কুয়াশার নিবিড়ের চোখের দিকে তাকাতেই পারছে না।এই চোখে কতটা নেশা কুয়াশা ছাড়া কেই বা বলতে পারে।আজ কতটা বছর অপেক্ষার পর তোমাকে দেখা।মনে কতো স্বপ্ন এঁকেছি তোমায় নিয়ে।নিবিড় কুয়াশার অন্যমনস্ক দেখে মাথার পিছনে টোকা দিতেই কুয়াশা হড়বড় করে চমকে নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আছে।
-কিরে কী এতো ভাবছিস বল তো?
-কই কিছু না।আচ্ছা আমি এখন আসি।
নিবিড় মায়ের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে, চলে যাবি? কিন্তু জিজ্ঞেস করলি না তো আমি তোকে চিনলাম কী করে?
-কী করে চিনলে?
-বাহ্ তুই তো অনেক ফাস্ট একবার বলতেই তুমি? যাক ভালো তবে বেশি হওয়া ভালো না।
কুয়াশা রহিমা বেগমকে পিছন থেকে জড়িয়ে দেখেছো জেঠী মা তোমার ছেলে কতটা খারাপ?
নিবিড় পকেটে হাত গুজে ছোটো বেলা থেকে ওই একটাই শিখেছিস মায়ের কাছে আমার নামে নালিশ দেওয়া।তোর জামাই তোকে কিছু বললে ওমনিই গিয়ে ওর মায়ের কাছে নালিশ দিস, ঠিক আছে?
কুয়াশা জিহ্বা দিয়ে ভেংচি কেটে, হ্যাঁ তোমাকে বলেছে।
-আচ্ছা তোরা থামবি? সেই কখন থেকে ঝগড়া শুরু করলি তোরা? নিবিড় যা তো,, তোর চাচা বাসায় আছে কিনা দেখ? গিয়ে সালাম করে দেখা করে আয় তোর কাকীমাকেও আসার সময় বলবি আমি ডেকেছি।
-আচ্ছা মা।
-কুয়াশা তুই আমার সাথে আয়।আমরা আজ কিছু পিঠা বানাবো।শীত এসেছে নতুন করে তেমন কোনো পিঠা বানানো হয়নি।চল তো আজ বানাবো।রুপন্তি তোর বাবাকে ফোন দিয়ে বল সন্ধ্যায় যেনো তাড়াতাড়ি ফিরে আসে।
কথাগুলো বলে রহিমা বেগম রান্নাঘরে যাচ্ছেন আর সাথে কুয়াশা। কুয়াশা পিছনে ফিরে নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।