প্রত্যেক বারের মত এবারও পাহাড়ে এসে একটা বাংলোয় আশ্রয় নিয়েছে মাহিব। পাহাড়ের গন্ধ ছাড়া আজকাল আর কিছুই ভালো লাগে না ওর। বাইরে রোদে বসে বই পড়ছিলো আর মাঝেমাঝে চোখ তুলে পাহাড়ের দিকে তাকাচ্ছিলো। পাহাড়ের উপর মেঘের উড়াউড়ি দেখতে বেশ ভালো লাগে। কখন যেন একটা ছোট্ট ছেলে এসে পাশে বসেছে খেয়ালই করেনি মাহিব।
ছেলেটার মুখে অজস্র মায়া এসে ভর করেছে। চোখ দুটো টানা টানা, ঘন পাপড়ি। ছেলেটা চোখ পিটপিট করছিলো বারবার৷ মাহিব হেসে বললো, 'কি গো বাবু, নাম কি তোমার?'
ছেলেটা হাসিমুখে উত্তর দিলো, 'অমি।'
- 'বাহ, সুন্দর নাম তো৷ এখানে একা একা কি করছো?'
- 'একা কোথায়? এই তো আপনি আমার সাথে আছেন।'
- 'তুমি তো অনেক চালাক।'
ছেলেটা চোখ পিটপিট করে বললো, 'তাহলে আপনি কি বোকা?'
মাহিব হেসে ফেললো। ছেলেটাও মাহিবের দেখে হো হো করে হাসতে লাগলো।
মাহিব বললো, ‘এখানে কার সাথে এসেছো?'
- 'আপনার সাথে।'
- 'আমার সাথে!'
- ‘হ্যাঁ। ওই যে দূরে ঘরটা দেখছেন ওখানে আমরা থাকি। ওখান থেকে দেখলাম আপনি একা বসে আছেন। তাই আসলাম। একা একা আপনার ভয় করে না?'
মাহিব হেসে বললো, 'না ভয় করে না।'
- 'কেন করে না?'
- 'আমি তো বড় হয়েছি। তাই।'
- 'আমিও তো বড় হয়েছি। আমার কেন ভয় করে?'
- ‘তোমার বুঝি ভয় করে?'
- 'খুব করে।'
মাহিব ছেলেটাকে টেনে নিয়ে নিজের কোলে বসালো। গাল টেনে আদর করে দিয়ে বললো, ‘তোমার বাবা মা বুঝি এখানে বেড়াতে এসেছেন?'
- 'না। এটা আমাদের বাড়ি। আমার আব্বু নেই।'
মাহিব আফসোস করে বললো, 'ইস। মায়ের সাথে থাকো বুঝি?'
- 'হ্যাঁ। আমার আম্মু আমার আমাকে অনেক ভালোবাসে।'
- 'খুব ভালো কথা। চকোলেট খাবে?'
- 'না।'
- 'কেন?'
অমি কোনো কথা বললো না। মাহিব ওকে কোলে নিয়ে ঘরে চলে গেলো। ছেলেটা এত মিষ্টি হয়েছে যে দেখলেই কোলে নিয়ে আদর করতে ইচ্ছে করে। মাহিবের সারাক্ষণ ইচ্ছে করছে ওকে কোলে বসিয়ে রাখতে। পরক্ষণে মনে পড়ে গেলো নিজের সন্তানের কথা। আজ যদি অংশীকে সে সময়মত ঘরে নিয়ে আসতো, ওদেরও একটা এরকম সন্তান থাকতো। যাকে আদর করতে পারতো, ভালোবাসতে পারতো। কেন যে সেদিন বাচ্চাকে নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছিলো। প্রীতম বলেছে অংশীর বাচ্চা হয়েছে আর বাচ্চাটা অংশীর সাথেই আছে। কিন্তু বাচ্চাটা ছেলে নাকি মেয়ে তা মাহিবের জানা হয়নি। মাহিব অমিকে কোলে নিয়ে এসবই ভাবছে।
গল্প করতে করতে এক পর্যায়ে দুজনের মাঝে খুব ভাব হয়ে গেলো। অমিকে খাবার খাওয়ালো মাহিব। কিছুটা সময় একসাথে কাটিয়ে অমি নিজের ঘরে ফিরে গেলো।
অমিকে দেখার পর থেকে আজ রাতে ঘুমাতে আরো কষ্ট হলো মাহিবের। নিজের অনাগত সন্তানের কথা বারবার মনে পড়ছে। ভুলগুলো শুধুই ভুল ছিল না, সেগুলো ছিলো মাহিবের অন্যায়। তৃষ্ণায় বুক ফেটে যেতে চায়। অংশীকে মনে পড়ে বারবার। এ এক নিদারুণ কষ্ট। যার কোনো সীমানা নেই।
পরেরদিন অমি আবারও এলো মাহিবের ঘরে। দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে উঁকি মারছিলো ঘরের দিকে। মাহিব অমিকে দেখে হেসে বললো, 'এসো বাবু।'
মাহিব ওর সিনেমার পোস্টার দেখছিলো। এটা সেই সিনেমা যা অংশীদের গ্রামে শুট করা হয়েছিলো। অমি কাছে এসে জানতে চাইলো, 'এটা কি?'
- 'এটা পোস্টার। আমি ছবি বানাই, তার পোস্টার।'
অমি পোস্টারটা হাতে নিয়ে বসে রইলো। আজও গল্প চললো দুজনাতে। ছোট্ট বাচ্চাটিকে দেখলেই মাহিবের বুকটা আনচান করে। নিজের সন্তানের কথা মনে পড়ে যায়। একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসে থাকার সাধ জাগে। মাহিব জানে না অংশী কোথায়, তার সন্তান কোথায়!
অমি আজ চলে যাওয়ার সময় পোস্টারটা সাথে নিয়ে চলে যায়। ওর মা ঘরে কাজ করছিলো। অমিকে দেখে জিজ্ঞেস করলো, 'কই ছিলি?'
- ‘একটা আংকেলের সাথে গল্প করতে গিয়েছিলাম মা। এই দ্যাখো আমি কি এনেছি।'
অনেক উল্লাস নিয়ে অমি পোস্টারটা মেলে ধরলো মায়ের সামনে। পোস্টারে চোখ পড়তেই তীব্র বেগে বুকের ভেতর ঢেউ আছড়ে পড়লো অংশীর। সমস্ত শিরা উপশিরায় রক্ত উছলে উঠতে লাগলো। শিরদাড়া বেয়ে একটা শীতল রক্তের ঢেউ বয়ে গেলো। কাঁপতে কাঁপতে পোস্টারটা হাতে নিলো অংশী।
সিনেমার পরিচালকের জায়গায় "মাহিব আহসান" নামটা দেখে বুকের ভেতরটা জ্বলে উঠলো। এত বছরের জমিয়ে রাখা রাগ ও ঘৃণাটা কবে যে ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয়েছিলো অংশী জানে না। কেমন কেমন লাগছে যেন! মাহিবকে দেখার জন্য, মাহিবের ভালোবাসা পাবার জন্য অংশী বুকের ভেতর অনন্ত তৃষ্ণা বয়ে নিয়ে চলছিলো। মাহিব সত্যি আছে এই বাংলোয়! বুকটা চিনচিন করে উঠলো।
স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারলো না অংশী। ভাগ্য কি তবে আবারও মাহিবের সামনে নিয়ে এলো ওকে? অংশী তো ধরেই নিয়েছিলো আর কোনোদিনো দুজনের দেখা হবে না। মাহিবকে দেখার জন্য অন্তর জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে। তবুও মনের ভেতর একটা পুরনো যন্ত্রণা উঁকি দিচ্ছে। মাহিব যদি আবারও অপমান করে! অবহেলায়, তাচ্ছিল্যে যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়। এত বছর পর সে কষ্টটা সইতে পারবে না অংশী। ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে। তারচেয়ে বরং ওকে দর্শন না দেয়াটাই ভালো।
আজ থেকে কয়েক বছর আগে অংশীর একজন লোকের সাথে পরিচয় হয়। তার পাহাড়প্রীতি শুনে অংশী মুখ ফুটে বলে ফেলেছিলো, আমি পাহাড়ে জন্মেছি, পাহাড়েই বড় হয়েছি। পাহাড়েই আবার ফিরে যেতে চাই। কথায় কথায় এক পর্যায়ে অংশী জানতে পারে লোকটার পাহাড়ে একটি বাংলো আছে। সেই বাংলো পরিচালনা ও দেখাশোনার জন্য উনি একজন লোক খুঁজছেন। অংশী নিজে থেকে সেই দায়িত্ব নেয়। তারপর চলে আসে পাহাড়ে। মাস শেষে যে বেতন পায় তাই দিয়ে ওর একলা সংসার চলে যায়। সারাদিন পাহাড়ে ছুটে বেড়ায়, অমিকে নিয়ে বনে বাদাড়ে ঘুরে, ফলমূল সংগ্রহ করে। অবসরে ঘরে বসে শাড়ি বুনে, সে শাড়ি আবার বাজারে বিক্রি করে। এভাবেই দূর পাহাড়ে একাকী চলছিলো অংশীর জীবন। সন্ন্যাসীর মত এ জীবনে না আছে কারো ভালোবাসা, না আছে কারো ভালোবাসা প্রাপ্তির আশা। শহরের নিষ্ঠুরতা অংশীকে সবসময়ই পীড়ন করে। তাই শহরে থাকার ইচ্ছেটাও মরে গেছে ওর। একলা একা পাহাড়ে ছোট্ট ছেলেটিকে নিয়েই ওর সময় কাটে। আবারও কখনো মাহিবের সাথে দেখা হবে এ আশা ভুলেও জাগে নি মনে।
অংশী স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। অমি অংশীর আঁচল টেনে ধরে বললো, 'কি হলো মা? দেখো।'
অংশী কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, 'লোকটার সাথে কি আর কেউ আছে বাবা?'
অমি দুদিকে মাথা নাড়লো। অংশী অমিকে বুকে জাপটে ধরে শুয়ে পড়লো বিছানায়। এত বছর বুকের ভেতর চাপিয়ে রাখা যন্ত্রণাগুলো সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মত জেগে উঠতে লাগলো। অংশী বুকের উপর খামচে ধরে জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলতে লাগলো। মাহিবকে দেখার জন্য যে আকুতি, তাকে আটকে রাখা ওর পক্ষে দুঃসাধ্য। তবুও সয়ে যাচ্ছে। চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে টপটপ করে।
সারা রাত দু চোখের পাতা এক হলো না অংশীর৷ অমি সকালে ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে গেছে। নিশ্চিত মাহিবের কাছে গেছে ও। অংশী ঘরের মেঝেতে শাড়ি বুনতে বসে গেলো। আজ কাজে হাত উঠছে না। মন আনচান করছে। এভাবে কতক্ষণ যন্ত্রণা সহ্য করা যায়?
অংশী জানালায় মাথা রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো। বিশাল দিগন্ত জুড়ে নীলের মিশ্রণ। চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। বুকের ভেতরটা কেমন যেন করছে৷ মানছে না কিছুতেই। জোর করে নিজেকে আটকে রাখা যে কি যাতনার। সে সয়েছে কেবল সে- ই জানে। অপলক দৃষ্টিতে চেনা পাহাড়গুলোর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো অংশী।
এমন সময় দরজা ঠেলে কে যেন প্রবেশ করলো। দরজার দিকে তাকাতেই হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড় হলো অংশীর। মাহিব অমিকে কোলে নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে!
মাহিবের সমস্ত শরীর ঝনঝন করে উঠলো। জানালা দিয়ে আসা আলতো আলোয় অতি পরিচিত সব’চে আপন অংশীর মুখ দেখে অনেক্ষণ নিশ্বাস নিতে পারলো না ও। চোখের পলক থমকে গেছে কিছুক্ষণের জন্য। এই সন্তান তবে মাহিবের নিজের! অংশী এখানে এভাবে!
সবকিছু স্বপ্নের মত মনে হতে লাগলো মাহিবের। অমিকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে কাঁপা কাঁপা পায়ে এগিয়ে এলো অংশীর দিকে। অংশী জানালা ধরে পিছিয়ে গেছে। চেহারা নীল হয়ে উঠেছে অংশীর।
মাহিব অংশীর একদম কাছে গিয়ে ফোঁস করে নিশ্বাস ফেললো। ঘনঘন জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে সমানে দুহাত দিয়ে চোখ কচলাতে লাগলো। অংশী অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অশ্রুপাত করলো।
মাহিব আস্তে আস্তে অংশীর আরো কাছে এসে দাঁড়ালো। আর্দ্র কণ্ঠে বললো, 'অংশী…'
মাহিবের মুখে নিজের নাম শুনে কলিজার ভেতরটা নড়েচড়ে উঠলো যেন। অংশী কোনোমত মুখ ফিরিয়ে মাহিবের দিকে তাকালো। মাহিব বললো, 'অংশী, তুমি!'
অংশী মাথা নিচু করে ফেললো। গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল। কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এসেছে ওর৷ মাহিব কিছু বুঝে ওঠার আগে আচমকা বুকের ভেতর চেপে ধরলো অংশীকে। অংশীর মাথাটা একহাতে বুকের উপর শক্ত করে ধরে ক্রমাগত রোদন করতে লাগলো। অংশী দুহাত দিয়ে মাহিবকে আঁকড়ে ধরতেও পারছে না। শিরশির করে শরীরে একটা কিছু বয়ে যাচ্ছে ওর। চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জলের ধারা।
মাহিব অংশীর মুখ দুহাতে ধরে নিজের মুখের সামনে তুলে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো, 'আমি তোমাকে ভালোবাসি অংশী। আমি তোমাকে.. তুমি যে আমার কি আমি তোমাকে বোঝাতে পারবো না। আমার নিজেকে পাগল পাগল লাগছে। এটা স্বপ্ন নয়ত? অংশী, কি বললে বুঝবে তুমি? কিভাবে বোঝাবো তোমাকে? আমার উপর অনেক রাগ তাইনা?'
আচমকা মেঝেতে বসে অংশীর পা চেপে ধরতে যাচ্ছিল মাহিব। লোকটা এমন পাগলের মত আচরণ করছে যে অংশী আর স্থির হয়ে থাকতে পারলো না। হাত দিয়ে মাহিবের হাত ধরে ওকে টেনে তুলে বললো, 'এমন করছেন কেন আপনি?'
- 'আমাকে ক্ষমা করো অংশী। জানি আমাকে মাফ করতে পারছো না। তবুও করতে হবে। ক্ষমা না করলে আমার.. আমি শেষ হয়ে যাবো এভাবে। প্লিজ অংশী আমাকে ক্ষমা করো।'
অংশী মাহিবের হাত চেপে ধরে বললো, 'এমন করবেন না। আমার আপনার উপর কোনো রাগ নেই।'
- 'কেন রাগ নেই? আমাকে মারো। আমাকে মেরে ফেলো। আমি তোমার সাথে যে অন্যায় করেছি তার শাস্তি আমাকে দাও, দাও প্লিজ দাও।'
অংশী নির্বাক ভঙ্গিতে চেয়ে রইলো। মাহিবের এ কি পরিবর্তন! এ কি হয়েছে চেহারার হাল। আগের মাহিব আর এখনকার মাহিবের মাঝে আকাশসম ব্যবধান। তবে কি শুধরে গেছে মাহিব!
মাহিব বললো, 'এই কয়েকটা বছর আমি তোমাকে পাগলের মত খুঁজেছি। আমি কেবল তোমার জন্যই বেঁচে আছি অংশী। আমি তোমাকে ছাড়া আর বাঁচতে চাইনি। কোথায় না খুঁজেছি বলো? পাহাড়ে আছো শুনে পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করছি তোমার কথা। অংশী, আমি বুঝাতে পারবো না অংশী।'
মাহিব মেঝেতে বসে পড়লো। আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন লোকটাকে নিতান্তই অসহায় দেখাচ্ছে আজ। অংশী ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো মাহিবের দিকে। মাহিবের চোখের নিচে কালো দাগ, অবিশ্রান্ত শরীর। উশকো খুশকো চুল। এ কেমন পরিবর্তন!
মাহিব মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে মেঝেতে। ছটফট করছে অস্থিরতায়। অংশী আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না। মেঝেতে বসে মাহিবের মাথাটা ধরলো দুহাতে। তারপর বুকের ভেতর চেপে ধরলো। এতদিন প্রতীক্ষার পর বহু আকাঙ্খিত অংশীর স্পর্শ পেয়ে যেন প্রাণ ফিরে পেলো মাহিব। ও অংশীকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। কেঁদে ফেললো অংশী নিজেও।
দুজনকে এভাবে জড়াজড়ি করে কাঁদতে দেখে স্তব্ধ অমিও কান্না করে দিলো। এতক্ষণে ওদের হুশ হলো অমি'র কথা।
অংশী বললো, 'অমি, তোমার ছেলে।'
মাহিব অমি'কে বুকে টেনে নিয়ে বললো, 'বাবা আমার। তুই আমারই সন্তান। আমার!
অমি কিছুই বুঝতে পারছে না। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে শুধু। অংশী অমি'র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো, 'বাবা, উনি তোর আব্বু। ও হারিয়ে গিয়েছিলো।'
অমি কি বুঝলো কে জানে। মাহিবের কোলে বসে মাহিবকে দুহাতে আঁকড়ে ধরে রইলো। একহাতে চেপে ধরলো অংশীর হাত। অনন্ত তৃষ্ণার পর প্রতিক্ষীত অমৃত সুধা পানের মত হৃদয়টা ভরে উঠলো সুখে, অনন্ত সুখে!
—(সমাপ্ত)—