ডাক্তারের সাথে কথা বলে কুয়াশাকে বিশ মিনিট সময় দেওয়া হলো।হাসপাতালের পোষাক পরিয়ে আইসিইউর ভিতরে নিয়ে গেলেন ডাক্তার পিয়াস।
কুয়াশা আস্তে-আস্তে পা চালিয়ে এগিয়ে গেলো তোসাবের দিকে।তোসাবের পাশে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ডাক্তার পিয়াসের দিকে তাকিয়ে, উনার কী এখনো জ্ঞান ফিরেনি?
-না।আমরা যথাযথ চেষ্টা করছি।
-আমার উনার সাথে কিছু কথা ছিল।
পিয়াস তোসাবের ফাইলের থেকে চোখ সরিয়ে মুচকি হাসলো। আড় চোখে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে, নতুন বিয়ে? কয় দিন হয়েছে বিয়ে হয়েছে?
কুয়াশা সাবলীলভাবে বললো,দুই দিন।
কথাটা শুনেই চমকে উঠলো পিয়াস।হাতের ফাইল রেখে,আপনি এতোক্ষণ চুপ করে তাকিয়ে সময় পার করলেন কেনো? এখন তো সময় শেষ। এইবার বাহিরে চলুন।
কুয়াশা অসহায় গলায় বললো, কিন্তু আমার তো কথা বলা হয় নি।প্লিজ আমাকে একটু সময় দিন।
পিয়াস কিছুক্ষণ চুপ থেকে,ওকে। অনলি ফাইভ মিনিটস।
কুয়াশা উপর নিচ মাথা নাড়াল।
পিয়াস হাতের ইশারা করলো কথা বলতে আর নিজে অন্য কাজে মন দিল।
কুয়াশা তোসাবের একদম মাথার কাছে দাঁড়িয়ে, এই যে শুনছেন? বিয়ে মানে কী জানেন? সারাজীবন একে অপরেকে বয়ে নিয়ে যাওয়া।দুটো হাত যখন আরও দুটো হাতে সাথে মিলে তখন দুটোই হাত হয়। কারণ দুটো মানুষ তখন এক মন এক আত্মায় পরিনত। সত্যি কথা বলতে আমি আপনাকে ভালোবেসে কথাগুলো বলছি না।বলছি দায়িত্ব কর্তব্য থেকে।
এইটুকু বলতেই পিয়াস কাজ রেখে কুয়াশার কথায় মনযোগী হলো।
আমি একজনকে ভালোবাসতাম।এখন বাসি না তা কিন্তু নয়।কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ করেছি আমি আপনাকে সুস্থ করে তুলবো।এইটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ও আমাকে কখনো বুঝেনি।কিন্তু আপনি আমায় বুঝেছেন।ও আমায় তাড়িয়ে দিয়েছে আপনি আমায় গ্রহণ করেছেন।ও কাছে থেকেও আমায় বুঝেনি আপনি দূরের হয়েও নিজের কথা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।তাই আমি চাই আপনি সুস্থ হোন। হয়তো স্বামীর অধিকার আমি আপনাকে দিতে পারবো না কিন্তু তাই বলে দূরে সরিয়ে রাখবো তাও না।আমি যে চ্যালেঞ্জ করেছি। আপনাকে আমি আমার করে ওকে দেখিয়ে দিবো।এখন আপনি কবে ফিরে আসবেন আমি জানি না।তবে আপনাকে সবার কাছে ফিরে আসতেই হবে।খুব শীগ্রই ফিরতে হবে।আমার জন্য না হলেও আপনার মায়ের জন্য।আমি সেদিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন আপনি আমার হাত ধরে বলবেন আমি ফিরে এসেছি, তখন আমি আপনাকে বলবো পুরনো সব ভুলে আমি নতুন করে শুরু করেছি।আপনি পারবেন না আমাকে সব ভুলিয়ে আপনার করে নিতে? আমার যে আপনার উপর অগাধ বিশ্বাস জন্মেছে।সেই বিশ্বাসের কী কোনো মূল্য নেই?
পিয়াস মুগ্ধ হয়ে কুয়াশার কথাগুলো শুনছে।কথাগুলোতে আহামরি কিছু না থাকলেই এমন কিছু আছে যা পিয়াসকে ক্ষত-বিক্ষত করছে।
কেউ কাছে পেয়েও সম্মান জানে না।আবার কেউ হারিয়ে খুঁজে নিতে চায়।আজিব-তামশার দুনিয়া বড্ড নিষ্ঠুর। কেউ কারো কথা ভাবে না।কিন্তু এই মেয়েটা কতটা সরল মনে নিজের দোষগুলো স্বীকার করে নিল।পিয়াস হঠাৎ ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠলো, পাঁচ মিনিটের জায়গায় পনেরো মিনিট!কুয়াশার কথায় কখন যে হারিয়ে গেল টেরই পেলো না।
কুয়াশার দিকে তাকিয়ে, প্লিজ ম্যাডাম এইবার চলুন।
কুয়াশা বেরিয়ে এসে,করিডরে রাখা চেয়ারটায় বসে পড়লো।ভাবতে লাগলো, উনি কী সত্যিই আর সুস্থ হবে না? কিন্তু আমি যে নিবিড় ভাইয়ার কাছে হেরে যাব। তোসাবের মা এসে পাশে বসে,কিরে মা,দেখা হলো?
কুয়াশা ভেজা চোখে তাকিয়ে, মা আমি সত্যিই অলক্ষ্মণে অপয়া। না হলে আমার সাথেই বিয়ে হতে হতেই আপনার ছেলের আজ এই অবস্থা!
-মা এইসব বলতে নেই।কেউ অপয়া হয়ে জন্ম নেয় না।আল্লাহ সবাইকে ভালোবেসে বানিয়েছে। দুনিয়াতে সবাই সমান।আমার ছেলের জন্য এই বিপদ আগেই লেখা ছিল এতে তোমার কোনো দোষ নেই। ভাগ্যের লিখন কেউ কি খন্ডাতে পারে? পারে না।
কুয়াশা কিছু বললো না।চুপ করেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
নিবিড় কলেজ থেকে ফিরে এসে দোতলার দরজায় আসিফার সাথে দেখা।
নিবিড় কিছু না বলে উপরে উঠে যেতেই আসিফা বললো,আমার কথাগুলো একটু ভেবে দেখেছেন ভাইয়া?
নিবিড় আসিফার দিকে মুখ তুলে তাকাতেই চমকে উঠে, আপনার গালে কী হয়েছে? মনে হচ্ছে কেউ মেরেছে।
-ওইটা কিছু না।আপনি প্লিজ আমার কথাটা একটু রাখেন না।কুয়াশার পাশে একটু দাঁড়ান।
-ভেবে দেখবো।কিন্তু আপনার গালে কী হয়েছে বলবেন তো।
-আপনার সাথে সকালের কথাগুলো আপনার ভাই সব শুনে ফেলেছে। এইবার বুজতেই পারছেন আমার কী হতে পারে।
নিবিড় আর কিছু বললো না।চুপ করেই উপরের দিকে উঠে গেলো।
বাসায় এসে হাতের ফাইলটা খাটে ছুড়ে, দুই হাত দিয়ে নিজের চুলগুলোকে টানছে।
কেনো সে কুয়াশাকে ফিরিয়ে দিল।নিবিড় এমন কাজ করে না যার জন্য তাকে সারাজীবন আফসুস করতে হয়। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা এখানেই করেছে সেদিন কুয়াশাকে ফিরিয়ে দিয়ে।
নিবিড়ের মা চায়ের কাপ নিয়ে এসে,কিরে,,,কখন এলি?
নিবিড় কিছু না বলে খাটে বসলো।মা চায়ের কাপটা নিবিড়ের দিকে এগিয়ে দিয়ে,,তোর জন্য ভাবছি একটা মেয়ে দেখব।কথাটা শুনেই নিবিড় মায়ের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে আবার নিচের দিকে তাকালো।
-কুয়াশার তো বিয়ে হয়ে গেছে। আমার মনে হয় তুই একাকিত্ব বোধ করছিস।ঘরে বউ আসলে সব ভুলে নতুন করে শুরু করবি।
নিবিড় শান্ত গলায় বললো,মা কুয়াশার কি অবস্থা? কাকা কাকী ওকে দেখতে গেছে?
-জানি না।সকাল থেকে আমি নিচে যাই নি।এখন আমি কি বলছি তুই শুনেছিস?
-মা বাড়ির এই অবস্থায় আমার বিয়ের কথা তুমি কীভাবে ভাবতে পারো?
-ভাবতে হয় বুজেছিস!তারা যখন মেয়েটাকে বিয়ে দিয়েছে তখন তো আমাদের কথা ভানে নি। আমি তোর খালাকে বলেছি তোর জন্য মেয়ে দেখতে।
নিবিড় রাগন্বিত চোখে তাকাতেই,না মানে খুঁজে দেখতে তো দোষ নেই।ভালো পেলেই না হয়,,,
-যাও এখন। আমাকে একা থাকতে দাও।কেনো শুধু শুধু বকবক কর? যাও না প্লিজ!
নিবিড়ের মা কিছু না বলে চুপচাপ উঠে চলে গেলো।
নিবিড় খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো সেদিনের বাবার কথা।কী হয়েছিলো জুয়েলের সাথে? বাবাকে থাপ্পড় কেন মারল জুয়েল?নিশ্চয়ই এমন কিছু আছে যা আমি জানি না।কিন্তু তা কি হতে পারে? নিবিড় ভাবতে ভাবতে চোখ লেগে গেলো ঘুমে।
আঠারোটা দিন কুয়াশার কীভাবে কেটে গেলো তা শুধু কুয়াশাই জানে।ফুফু তো সারাদিন পিছনে লেগেই থাকে।ঠিক মতো খেতেও পারে না কুয়াশা। খেতে বসলেই নানাভাবে অপমানিত করে।তখন কুয়াশা না খেয়েই থাকতে হয়।আজ ফজরের নামাজ আদায় করে কুয়াশা জায়নামাজটা উঠাতে যাবে তখনি পাশের রুম থেকে চিৎকার আসতেই কুয়াশা দৌড়ে গেলো।ফুফু আর তিন্নি কান্না করছে ফুফু বিলাপ করে কাঁদছে।কী হয়েছে কুয়াশার মাথায় কিছুই আসছে না।
তিন্নির পাশে গিয়ে,কী হয়েছে তিন্নি আপু?
তিন্নি কুয়াশাকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,ভাইয়া আর নেই ভাবী।ভাইয়া আর নেই।
কুয়াশা কথাটা শুনেই স্তব্ধ নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।সব ভাষা যেন হারিয়ে গেছে তার মাঝ থেকে।গলাটা আটকে গেছে অজানা কান্নায়।
ফুফু কাঁদতে কাঁদতে বললো,তিন্নি এই মাইয়াটার কারনেই আজ আমাদের তোসাব আর নেই।আর তুই সেই মেয়েটাইকেই জড়িয়ে আছিস? ছাড় ওকে।
ও কি বুঝবে আমাদের যন্ত্রণা?
আস্তে আস্তে বাড়িতে সবাই এক এক করে আসতে লাগলো সব আত্মীয়স্বজনরা। এর মাঝে কুয়াশার পরিবারের লোকও চলে আসলো।নিবিড় বাড়ির সামনে পুরুষদের সবার সাথেই আছে।এখন শুধু তোসাবকে নিয়ে আসার অপেক্ষায়।সবাই অপেক্ষা করছে কখন লাশবাহী গাড়িটা আসবে আর সেখানে তোসাবকে দেখবে।
কুয়াশাকে তোসাবের রুমে নিয়ে আসা হয়েছে।রুপন্তি আর আসিফা দুপাশে দুজন বসে কুয়াশাকে কথা বলানোর চেষ্টা করছে।শাহানাজ বেগম আর আজমল হোসেন হাউমাউ করে কাঁদছে কুয়াশাকে জড়িয়ে।কুয়াশা কাউকে কিছু না বলেই রহিমা বেগমকে নিজের কাছে আসতে দেখে মাকে ছাড়িয়ে রহিমা বেগমকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে লাগলো।
নিবিড় সেই চিৎকার শুনে ঘরের ভিতরের দিকে তাকালো।কারণ এই চিৎকার যে অচেনা নয়।কুয়াশার এই চিৎকার যেনো নিবিড়ের বুক ফেটে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে দৌড়ে গিয়ে বলতে পাগলি তুই কাঁদছিস কেনো? আমি আছি তোর পাশে।সারাজীবন থাকবো।
কিন্তু তার অধিকার কী আমার আছে? নাহ্ আমার কোনো অধিকার নেই।
কুয়াশার কাঁপা কাঁপা কান্নার গলা ভেসে আসছে বাহিরে।আর প্রতিটি শব্দের ধ্বনি বাজছে নিবিরের বুকে তীরে গতিতে।
কুয়াশা রহিমা বেগমকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে, জেঠি মা আমি হেরে গেছি নিয়তির কাছে।হেরে গেছি অলক্ষ্মী আর অপয়ার কাছে।হেরে গেছি আমি তোমার ছেলের কাছেও জেঠি মা।
কুয়াশার কান্না যেনো পুরো বাড়িটা ভারি হয়ে গেছে।সবাই সবার মতো করে কাঁদছে।দুপুরের আগেই হসপিটাল থেকে নিয়ে আসা হলো তোসাবের লাশ।
কিছু মুরুব্বি মহিলা এসে সবাইকে সরে যেতে বললো কুয়াশার কাছ থেকে।আসিফা কড়া গলায় বললো,ওর কাছ থেকে কেনো সরবো আমরা? আপনারা সবাই পেয়েছেন কী বলেন তো।এই বাড়ির সবার কোনো মানুষত্ব বলতে কিচ্ছু নেই।সকাল থেকেই দেখছি মেয়েটাকে যে যেইরকম করে পাচ্ছেন গালিগালাজ করেই যাচ্ছেন।আল্লাহ মানুষকে নিয়ে গেলে দুনিয়ায় কারো ধরে রাখার ক্ষমতা আছে? না নেই।হয়তো আজ আমার ননদের সাথে বিয়ে হয়েছে বলে আপনারা তার দোষ দিয়ে যাচ্ছেন আজ যদি তার জাগায় অন্য কেউ থাকতো? সকাল থেকে আপনাদের অনেক সহ্য করেছি আর না।
মুরুব্বিরা আসিফার কথা শুনে ভড়কে গেলো।একজন শান্ত গলায় বললো,আমরা এখন এসেছি কাজে ওকে কিছু বলার জন্য নয়।রহিমা বেগম বললো,কি কাজ ওর কাছে?
-আসলে স্বামী মারা গেলে নাকফুল চুড়ি খুলে গোসল করিয়ে সাদা শাড়ি পরাতে হবে।কথাটা শুনেই রহিমা বেগম কুয়াশাকে জড়িয়ে চিৎকার দিয়ে, আল্লাহ তুমি আমার মেয়েটার উপর এতোটা নিষ্ঠুর হয়ে গেলে? কোন পাপের শাস্তি আমার মেয়েটা পাচ্ছে? ওর তো কোনো দোষ নেই?
শাহানাজ বেগম এসে রহিমা বেগমের কাঁধে হাত রেখে, ভাবী আমার ছেলের পাপের শাস্তি এইটা।ওকে ছেড়ে দিন। নিয়ে যান আপনারা।এইভাবে তো নিয়তি পাল্টানো যায় না।
কুয়াশাকে দাঁড় করিয়া শাহানাজ বেগম মুরুব্বিদের হাতে দিয়ে, নিয়ে যান আপনাদের বউ।যা ইচ্ছে করুন।খুলে দিন সবকিছু।মুছে দিন ওর জীবনের সব রঙ।
সত্যিই সবাই কুয়াশাকে নিয়ে গেলো।ঘন্টাখানেক পর কুয়াশাকে এনে তোসাবের মায়ের সামনে আনতেই তোসাবের মা চিৎকার দিয়ে, কেউ ওকে আমার সামনে থেকে সরিয়ে নে।পারছি না এইসব আমি দেখতে।ওকে দেখলে আমার কলিজায় লাগে।কেনো এনেছিস তোরা ওকে আমার সামনে?
তোসাবের মা কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে গেলো।
সবাইকে শেষ দেখা দেখিয়ে তোসাবকে নিয়ে যাওয়া হলো পারিবারিক কবরস্থানে।
বিকেল গড়িয়ে যেতেই আত্মীয়স্বজনরা বেশিরভাগই নিজেদের বাড়ি চলে গেলো। কুয়াশা নিজের রুমেই আছে। নিবিড় ফোনে ড্রইংরুমে সোফায় বসে কথা বলছে।জুয়েল এসে, বাবা আমাদের তো বাড়ি যেতে হবে।কতক্ষণ বসে থাকবে এইখানে?
আজমল হোসেন কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
-বাবা তুমি কথা বলছো না কেনো?
শাহানাজ বেগম বললেন, এই অবস্থায় মেয়েটাকে একা রেখে যাওয়াটা কী ঠিক হবে?
জুয়েল কথা না বাড়িয়ে, ঠিক আছে তোমরা থাকো।আমি তাহলে আজ চলে যাচ্ছি।কাল সকালে আসবো।
জুয়েল বিদায় নিয়ে চলে গেলো।রহিমা বেগম কুয়াশাকে উঠিয়ে, আমি যাচ্ছি মা,তুই ভালো থাকিস।
কুয়াশা কিছু বললো না চুপ করে আছে নিচের দিকে তাকিয়ে।
নিবিড় সামনে দরজায় দাঁড়িয়ে মা তোমার হলো? আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
কুয়াশা গলার আওয়াজটা শুনে দরজায় তাকিয়ে আছে ছলছল চোখে। নিবিড় ফিরে আছে অন্য দিকে।কুয়াশা উঠে দাঁড়িয়ে নিবিড়ের সামনে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই আবার থমকে গেলো।
নিজেকে সংযত করে আবার বসে,করুণ স্বরে বললো,জেঠি মা তুমি তোমার এই মেয়েটাকে আবার দেখতে আসবে তো?
কথাটা শুনেই রহিমা বেগম আবার কেঁদে ফেললেন।
-আসবো মা আসবো।আমি কালই আসবো।
নিবিড় একবারের জন্যও কুয়াশার দিকে তাকালো না।মাকে নিয়েই রুপন্তিকে রেখে চলে আসলো নিবিড়।