রংধনু - পর্ব ৩৫ - তাবাসসুম রিয়ানা - ধারাবাহিক গল্প


সেদিন সাঁঝ মিতুলের সাথে কাঁটিয়ে দেয় অনেকটা সময় কাঁটিয়ে দেয় লাঞ্চের পর ও।সাইমন বারবার সাঁঝ কে কল করছিলো।কিন্তু সাঁঝ ফোন ধরছে ও না।সাইমন না পেরে মিতুলের নম্বরে করতেই মিতুল ফোন রিসিভ করে বলে,
''ভাবি আমার সাথেই থাকবে।এত কল দিয়ে লাভ নেই।"
সাইমন রেগে গিয়ে বলে,
''এত পাকনামি না করে ওকে পাঠা।"
''বাহ বিয়েই হয়নি এখনই আমার ভাই এত অস্থির হয়ে যাচ্ছে।বিয়ের পর কি করবি ভাই?
সাইমন রেগে কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু মিতুল কল কেঁটে দিয়ে সাঁঝের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,
''দেখলে ভাবি কতো পাগল হচ্ছে?"
''অমন কিছুনা।"
কেমন কিছু বলো?ভাইয়া এখনই একটা মুহূর্ত ও তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারছেনা।বিয়ের পরতো চার পাঁচদিন দরজা খুলবেনা।"
সাঁঝ হেসে মিতুলের কান টেনে বলল,
''খুব বড় বড় কথা বলছো পাজি মেয়ে।বিয়ে দিতে হবে বুঝছি।"
''বিয়ের জন্য তো আমি দুপায়ে দাঁড়িয়ে আছি।কিন্তু কেউ তো দিচ্ছে ও না।"
''তোমার ভাইকে বলতে হবে।"
সাঁঝ আর মিতুলের কথার মাঝেই দাদি এলো রুমে।সাঁঝকে দেখে ওর হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে বলল,
''এটা আমার দোয়া আমার ছোট বৌ মনির জন্য।"
সাঁঝ টাকাটা নিতে কিছুটা লজ্জা বোধ করছিলো।সাঁঝ বলল,
''দাদু এমনিই দোয়া করে দিবেন।"
''দোয়াতো এমনই করি গো বৌমনি।সেটা বলতে হবেনা।টাকাটা রাখো তোমার কাছে।"
সাঁঝের সাথে কথা বলে ওর জবাবের অপেক্ষা না করে  দাদু মিতুল কে বললেন,
''মিতুল আয় তো আমার সাথে।সাঁঝ তুমি একটু বসো আমরা আসি।"
সাঁঝ মৃদু হেসে মাথা ঝাঁকায়।দাদু আর মিতুল বেরিয়ে যেতেই সাইমন রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।সাঁঝ খাট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে রেগে বলল,
''দরজা কেন লাগালেন?"
''তোমার সাথে কিছু প্রেমময় সময় কাঁটাবো বলে।"
কথাটা বলে সাইমন সাঁঝের দিকে এগিয়ে এলো।সাঁঝ একটু সরে বলল,
''একদম ঢং দেখাবেননা।আমাকে যেতে দিন।"
সাইমন সাঁঝের দিকে আরেকটু এগিয়ে এসে বলল,
''কেন?একটু রোম্যান্স করবা আর তুৃমি বলছো চলে যাবা?"
সাঁঝ একটু সরে গিয়ে রেগে বলল,
''বাজে কথা বলবেননা যেতে দিন।আপনার সাথে আর একটা মুহূর্ত ও আমার ভাল লাগছেনা।"
সাইমন ওর দিকে এগিয়ে এসে গলা জড়িয়ে বলল,
''কেন?"
''কেন মানে আপনি জানেননা?কি করেছেন আপনি?"
সাইমন ঠোঁট উল্টে বলল,
''কই কি করলাম?তুমিই বলে দাও।"
''তখন এমন ফাজলামি করার মানে কি ছিলো।আপনি বিয়ের ডিসিশান চেঞ্জ করবেন আবার মিতুলের পরিচয় ও দেননি আগে।এটা কেমন কথা বলেন?জানেন কতোটা ভয়ে ছিলাম।"
সাইমন হাসতে শুরু করলো।তারপর ওকে বুকে জড়িয়ে বলল,
''মজা করছিলাম।আচ্ছা সরি আর হবেনা এমনটা। "
''আপনি প্রায়ই এমন ভয় দেখান।"
''আর দেখাবোনা।"
সাঁঝ ম্লান হেসে সাইমনের পিঠ স্পর্শ করলো।সাইমনের বাহুডোরে অনেকটা সময় কেঁটে যায়।দুজনের মাঝেই অজানা ঝড়ের সৃষ্টি হচ্ছে।ভেতরে অদ্ভুত অনুভূতি।
সাঁঝ ধীরে সরে এসে ধীর কন্ঠে বলল, 
''আমি বাহিরে যাই।দাদু আর মিতুল আছে।"
সাইমন সাঁঝকে গভীর ভাবে দেখছে।আজ সাঁঝ থেকে চোখ ফেরাতে মন চাইছেনা।মেয়েটাকে আজ অন্যরকম সুন্দর লাগছে।সাঁঝ এমনিতেই অপরুপ কিন্তু আজ অন্য দিন থেকে বেশি সুন্দর লাগছে।সাঁঝ কথাটা বলেই সাইমন কে পার করে যাচ্ছিলো।সাইমন ওর হাত ধরে থামায়।তারপর বলতে লাগলো,
''সাঁঝ আজ তোমাকে অনেক কাছ থেকে দেখতে চাই প্লিজ যেওনা।"
সাঁঝ চমকে উঠে।লোকটা আজ এভাবে কেন বলছে।ওরা বেশ কয়েকবারই দেখা করেছিলো।কিন্তু আজ সে এভাবে কেন বলছে।সাঁঝ ও কেন তার সাথে আরো কিছু সময় কাঁটাতে চাইছে?সাঁঝ কিছু বললনা তবে সাইমনের দিকে ফিরেনি।সাইমনের সাঁঝের হাত সাঁঝের হাতের পাতা ছাড়িয়ে ওর কবিজ তারপর সাঁঝে বাহু স্পর্শ করে নিজের দিকে টেনে আনে।সাঁঝের নিশ্বাস যেন কিছু সময়ের জন্য আটকে যায়।সাইমন সাঁঝের কাছে চলে যায়।ওদের মাঝের দূরত্ব অনেকটা কমে যায়। সাঁঝ নিজের পিঠে সাইমনের বুকের স্পর্শ পাচ্ছে।সাঁঝ সোজা হয়ে দাঁড়ায়।সাইমনের হাত ততক্ষনে ওর কাঁধে পৌছে গেছে।সাঁঝ অনুভব করছে ওর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের অস্তিত্ব। সাঁঝকে সাইমন নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।সাঁঝ মাথা নিচু করে আছে।সাইমন মাথা নিচু করে সাঁঝের কাঁধে মুখ নামিয়ে আনে।সাঁঝের চোখের পাতা বারবার পড়ছে।ওর বুক ধুকপুক করছে।সাইমন ওর কাঁধে আলতো ঠোঁট ছুঁইয়ে একটু সরে এসে নিজের মুখ সাঁঝের অনেকটা কাছে এনে ওর কানে ফিসফিস করে বলল,
''সাঁঝ আজ তোমাকে অনেক ভালবাসতে চাই।দেবে আমায় সেই সুযোগ?"
সাঁঝের গলা কাঁপছে।কিছু বলতে গিয়ে ও পারছেনা।।আজ বড্ড অস্থির লাগছে ওর।লোকটার সেই ছোঁয়া ওকে অস্থিরতার চরম শিখরে পৌছে দিয়েছে।সাঁঝ পারছেনা সাইমন থেকে সরে আসতে।আসলে ও চাইছেইনা।সাইমন সাঁঝকে আরো অনেকটা কাছে টেনে বলল,
''দিবেনা?বলো।"
সাঁঝ বলছিলো, 
''স...সাইমন...প.. প প্লিজ............... 
সাইমন যেন কিছু শুনলোনা।ও আজ সাঁঝের চোখের গভীরে বন্দী।কোনভাবেই নিজেকে উঠাতে পারছেনা।সাঁঝের দুগাল ধরে সাইমন ওর মুখটাকে নিজের আরো কাছে নিয়ে আসে।সাঁঝের চোখ অনেকটা বড় হয়ে যায়।সাইমনের চোখজোড়া আজ ওর দিকে নিবদ্ধ।সাইমন এগিয়ে আসতে শুরু করলে সাঁঝ খিচে চোখ বন্ধ করে নেয়।সাইমনের মাতাল করা নিশ্বাস সাঁঝের ঠোঁটের ওপর পড়ছে।সাঁঝ বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে।ওদের ঠোঁটজোড়া এখন লাগো লাগো ঠিক তখনই দরজায় নক পড়ে।বাহির থেকে মিতুলের কন্ঠস্বর শুনা গেলো।মিতুল বলছিলো,
'' ভাবি ভাইয়া দাদু ডাকছে।"
সাঁঝ মিতুলের কথায় কেঁপে উঠে।ও ঘোর কাঁটিয়ে সরে আসে সাইমন থেকে।সাইমন রেগে বলতে থাকলো, 
''এদের ডাকার ও সময় কময় নেই।"
সাঁঝ সাইমনের লজ্জামাখা চাহনিতে একবার দেখেই দৌড়ে দরজা খুলে মিতুলের সাথে বেরিয়ে গেলো।সাইমন ফিসফিসিয়ে বলল,
''মিতুলের বাচ্চা একটা।"
........................বিভানের গাড়ি ওদের ফ্ল্যাটের সামনে এসে থামে।মেয়েটা আধো কন্ঠে বলল,
''মা কোতায়?"
বিভান ওর গাল স্পর্শ করে আদরীয় ভাবে হেসে বলল,
''এই যে মা আমরা চলে এসেছি।"
বাবুটার মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুঁটে উঠে।হেসে হেসেই বলতে লাগলো,
''মা কে দেকবো একন?"
''জি আম্মু।"
বাচ্চাটার মুখে হঠাৎ দুশ্চিন্তার ছাপ ফুঁটে উঠে।চিন্তিত গলায় বলল,
''মাকে দেকলে কি বলবো?"
''তোমার যা মন চায় আম্মু।আগে ভিতরে চলো তারপর বলো অনেক কথা।"
বিভান মেয়েটার গালে চুমু খেয়ে দরজা খুলে ওকে কোলে তুলে নেয়।আর কাপড়ের ব্যাগটা অপর হাতে নিয়ে বাসার দিকে পথ ধরে।এদিকে বেলা মাংস রান্না করেছিলো সন্ধ্যায়।তারপর চুলায় তাওয়া বসিয়ে রুটি ছেঁকতে শুরু করে।ও জানে লোকটার দেরি হয় ফিরতে।তবে পরে গরম করে দিলেই হবে।হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠে।বেলা একটু অবাক।তবে ভাবতে থাকে হয়ত দারোয়ান।বেলা চুলা বন্ধ করে গায়ের আঁচল ঠিক করে ড্রয়িংরুমে এসে দরজার কাছে দাঁড়ায়।ডোর হোলে তাকিয়ে বিভানকে দেখে অনেকটা অবাক হলে পরক্ষনেই ভাবে হয়ত আজ জলদিই এসেছে।বেলা ও বেশ খুশি।কারন এখন আর একা থাকতে হবেনা।বেলা দরজা খুলতে গিয়ে ছোট্ট একটা বাবুর কন্ঠ শুনে অবাক।বাচ্চাটা বলছে,
'মা কই?"
অপরপাশ থেকে বিভান বলছে, 
''একটু অপেক্ষা করো মা।তোমার মা দরজা খুলে দেবে।"
বেলার বুকটা হঠাৎ যেন ভারি হয়ে আসে।কেমন অদ্ভুত প্রশান্তি পাশাপাশি অজানা ভয়।বাবুটা কে?মা কাকে বলছে?বেলা দরজা খুলতে পারছেনা।ওর হাত যেন দরজার হাতলে শক্ত ভাবে আটকা পড়েছে।বিভান দেরি দেখে আবার ও কলিংবেল চাঁপে।তখনই বেলার ঘোর কাঁটে। ও দরজা খুলে দেয় তড়িঘড়ি করে।বিভানকে দেখে বেলা।লোকটার মুখে আজ পূর্নতার হাসি যেন।বেলা বিভান থেকে চোখসরিয়ে পাশের ছোট্টজানটাকে দেখে।বাবুটার মুখে উজ্জ্বল হাসি।গায়ে ধুলো বালি লেগে আছে।বাবুটা বিভানের হাত ধরে বলল,
''আমাল মা কই?"
বিভান বাবুটার দিকে ফিরে স্নেহ মাখা হাসি দিয়ে বলল,
''এই যে মা।"
বেলা কিছু বুঝতে পারছেনা।কি হচ্ছে?বিভান বাবুটাকে বলছে বেলা ওর মা।তাহলে কি এই বাবুটাকে বিভান নিয়ে এসেছে ওর অপূর্ণ সংসারটাকে পরিপূর্ণতা দিতে?বেলার চোখ জ্বালা করছে তবে বুকের গভীরে অদ্ভুত ভালো লাগাটাও কাজ করছে।বাবুটা বেলার দিকে তাকিয়ে বলল,
''আমাল মা তুমি?"
বেলা কিছু বলতে পারছেনা।ওর চোখজোড়ায় জমে থাকা পানি বাঁধা মানছেনা।দরজায় সাথে লেগে দাঁড়িয়ে বেলা কেঁদে ফেলে।বিভানের মুখে হাসি।ও জানে বেলা আজ অনেক খুশি মেয়েকে দেখে।বেলা কেঁদে বলল,
''ও আমাদের মেয়ে বিভান?"
বিভান হেসে বলল,
''মেয়েকে বুকে নিবেনা বেলা?"
বাচ্চাটা বিভানের হাত ছাড়িয়ে বেলাকে জড়িয়ে চিৎকার করে বলল,
''আমাল মা!"
বেলা বাবুটার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর গাল হাত পিঠ স্পর্শ করে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো,
''বিভান আমার মেয়ে ও। আমাদের মেয়ে ও।বিভান আমরা আজ পরিপূর্ণ তাইনা?"
বিভান দেখলো বেলার চোখে পানি কিন্তু মুখ ভরা হাসি।সেটার কারন অজানা নয়।
বাচ্চাটা বেলার কথা গুলো মেয়ের জন্য কিছুটা দূর্বোধ্য হলে ও ওর বুঝতে কষ্ট হয়নি এই মা ওকে পেয়ে কতোটা খুশি কতোটা পরিপূর্ন। বেলা মেয়েকে টেনে গালে অসংখ্য চুমু খেয়ে বুকে জড়িয়ে বলল,
''আমি তোমার মা আম্মু।আমি তোমার মা।"
বাবুটা দুহাতে বেলার গলা জড়িয়ে ধরে ওর গালে চুমু খেলো।বেলা আবার ওর গালে চুমু খেতে শুরু করে।বিভান এতোটা সময় হাসছিলো।মেয়েটা ওর জীবনের সুখ হয়ে দাঁড়ালো আজ।বিভান ভাবলো মেয়েটা হয়ত অনেকটা দিন না খেয়ে আছে।বিভান বলল,
''বেলা ওকে গোসল করে কিছু খাইয়ে দাও।আমি ও ফ্রেশ হচ্ছি।"
বেলা মেয়ে কে কোলে নিয়ে রুমে চলে আসে।বিভান ওয়াশরুমে ঢুকে গেছে এতক্ষনে।বেলা মেয়েকে খাটে দাঁড়িয়ে আবার ও অনেক গুলো চুমু খেলো ওর গালে।বাবুটা জিজ্ঞেস করলো,
''মা ওনি কে?আমাল কি অয়?"
বেলা কাঁদছে।তবে ওর মুখে হাসি।বেলা বলল,
''আম্মু ওনি তোমার বাবা হবে।বাবা ডেকো।"
বাবুটা আবার ও বেলা কে জড়িয়ে ধরে।বেলা বলল,
''আম্মু তোমাকে ফ্রেশ হতে হবে তাইনা?চলো গোসল করিয়ে দেই।তারপর খাইয়ে দেবো তোমাকে।"
বাবুটা আবার ও বেলার কোলে উঠে যায়।বেলা ব্যাগ থেকে একটা ফ্রক নিয়ে নেয় আর ওর গামছা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় মেয়েকে নিয়ে।বাথটাবের পানি ছেড়ে মেয়ের গায়ে সাবান মাখছিলো বেলা।বাবুটা খিলখিলিয়ে হাসছে। বেলার হঠাৎ খেয়াল হলো বিভান ওর সাথে কথা বলেছে।তখন মেয়ের দিকে এতটাই মনযোগ ছিলো যে বেলা এই ব্যাপারটা খেয়াল করতে পারেনি।বেলা মন খুশিতে ভরে যাচ্ছে।তাহলে কি ওদের মেয়ে ওদের শুধু ঘরই পরিপূর্ন করেনি ওদের ভালবাসা আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে?বাবুর প্রত্যেকটা হাসির শব্দ আর বিভানের বলা কথা গুলো বেলার প্রত্যেকটি শিরা উপশিরায় পৌছে এক উত্তাল তরঙ্গের সৃষ্টি করেছে।
.....................এদিকে আদনান অফিস থেকে ফিরে ডাইনিংটেবিলে বসেই জোরে বলল,
''আম্মা ভাত দাও তো।খুব খিদা লাগছে।"
জুলেখা বানু পাকঘরে ছিলেন ছেলের কথায় বেরিয়ে এসে বলেন,
''হারাদিনে কিছু খাস ন?"
''না আম্মা বাহিরের খাবার ভালো লাগেনা।জলদি দাও।"
জুলেখা বানু বললেন,
''একটু খাড়া।মাড় গাইল্লা লই।"
আদনানের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে।তারপর কিছু করার নেই।অপেক্ষা করতে হবে।ও উঠে নিশাদের রুমে এসে দেখলো নিশাদ শুয়ে চোখের ওপর হাত দিয়ে রেখেছে।আদনান পাশে এসে বসতেই নিশাদ চোখের ওপর থেকে হাত সরিয়ে একটু হেসে বলল,
''কিছু বলবি?"
''না ভাইয়া কিছুনা।কাল ফ্রি তুই?"
''কখন?"
ভ্রু কুঁচকায় নিশাদ।আদনান বলল,
''এই বিকেলের দিকে। "
''কেন?"
''একটু কথা ছিলো।সেটা এখন বলতে পারবোনা।কালএকটু সময় বের করেনিস অনেক দরকার।"
নিশাদ শ্বাস ছেড়ে বলল,
''ওকে।তা কাজ কেমন চলছে?"
''এই ভালোই।সবার ব্যাবহার ভালো।"
''তাহলে তো ভালোই।"
হালকা হাসলো নিশাদ।আদনান আর নিশাদ গল্প করতে শুরু করে।  হঠাৎ লাবনী এসে বলল,
''ভাইয়া খাইতে আসো।আম্মা ডাকে।"
আদনান হেসে বলল,
''যা বাবু আসতেছি।"
লাবনী ঠিক আছে বলে দৌড়ে চলে গেলো।

!!!!

মেয়েকে গোসল করিয়ে গামছা দিয়ে ভালো মতো জড়িয়ে দেয় বেলা।বাবুটা রীতিমতো কাঁপছে।বেলা ওর দিকে চিন্তার সাগরে ডুবে গেছে।আসলেই কি যা হচ্ছে সব সত্যি?বেলা সত্যি মা হতে পেরেছে ফুটফুটে ছোট্ট সোনা বাবুর।বেলা ওর চুল মুছে দিয়ে কোলে নিয়ে বেরিয়ে আসে।বাবু বেলার গলা জড়িয়ে ওর কাঁধে মাথা রেখে আছে।বেলা বলল,
''এখনো শীত লাগছে আম্মু?"
''না মা একন লাগেনা তীত।"
বেলা হেসে ফেললো।বাচ্চা আধোমুখের কথা গুলো নিমিষেই ওকে জানান দিচ্ছে ও মা হতে পেরেছে।এইছোট্ট সোনাবাচ্চাটা ওর মেয়ে।বেলা মেয়েকে কোলে নিয়ে রুমে এসে ওকে খাটে দাঁড় করিয়ে হাত গা চুল মুছে দিতে থাকে।বাচ্চাটার চুল খয়েরী বর্নের।গায়ের রং এতক্ষন বুঝতে পারছিলোনা ময়লার কারনে।এখন বুঝতে পারলো বেলা।বেশ ফর্সা তার মাঝে গোলাপী আভা আছে।চোখ জোড়া বেশ বড় আর অনেক সুন্দর।ততক্ষনে বিভান বেরিয়ে এসে বেলা আর মেয়েকে একসাথে দেখে বেশ খুশি।বাবুটা বিভানকে হাসলো তবে কিছু বলেনি।বিভান ও হেসে বেলাকে বলল,
''ওকে রেডি করিয়ে খাবার দাও।আমার খিদে পেয়েছে।"
বেলা পিছনে ফিরে বিভানের দিকে চেয়ে বলল,
''আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি আসছি।"
বিভান কিছুনা বলে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।বেলা মেয়েকে লাল একটি ফ্রক পরিয়ে ওর চুল গুলো দুটো ঝুঁটি করে দেয়।অনেকদিন যাবৎ চুল না কাঁটার কারনে বেশ বড় হয়েছে।বেলা মেয়ের চুল বেঁধে ওকে কোলে তুলে নিয়ে এসে নিচে নামিয়ে বলল,
''আম্মু তুমি বাবার কাছে যাও।আমি এক্ষুনি আসছি।"
মেয়ে বেলাকে জড়িয়ে বলল,
''আমি তোমাল তাতে তাকবো।"
''আমি খাবার গুলো নিয়ে এসে সবাই একসাথে খাবো।ঠিক আছে?যাও বাবার কাছে।"
''আমি তোমাল তাতেই তাকবো।"
''মামনি পাকঘরে গরম তো।তোমার ঠান্ডা লাগবে।বাবা একা বসে আছে না?যাও বাবার সাথে গল্প করো।"
''তুমি তাত্তালি তলে আসবে কিত্তু।"
বেলা নিচু হয়ে মেয়ের গালে চুমু খেয়ে বলল,
''ওকে মা।"
বাবু দৌড়ে ড্রয়িংরুমে চলে গেলো।বিভান বসে খবর দেখছিলো।মেয়েকে দেখে একটু হাসলো।বাবু দৌড়ে বিভানের কাছে এসে সোফায় বসতে চেষ্টা করছিলো।বিভান ওর দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলল,
''তুমি কি করতে চাইছো মা?"
''আমি তোপায় উব্বো।"
বিভান একটু হেসে মেয়েকে কোলে নিয়ে পাশে বসিয়ে দিলো।বাবু বিভানের হাতের আংটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।বিভান সেটা খেয়াল করে জানতে চাইলো,
''তোমার কি এটা পছন্দ হয়েছে মা?"
''হ্যা এতা তোমাকে কুব বালো লাদে।"
বিভান উজ্জ্বল হাসি দিয়ে বলল,
''তাই?"
''দি।বাবা আমাতে কোলে নাও না।"
বিভান চমকে উঠে মেয়ের দিকে তাকায়।না চাইতে ও চোখের কোনে অশ্রু জমা হয়।মেয়ে বলল,
''তোমলা কালি কান্না কলো কেন?"
বিভান ম্লান হেসে ওকে কোলে তুলে গালে চুমু খেয়ে বলল,
''এমনিই আম্মাজান।আমাকে আবার বাবা বলো তো।"
''তকন তুনতে পাওনি?"
''পেয়েছি তো।আবার বলো না।"
''বাবা।"
পাঁচ ছয়টা দাঁত বের করে হাসলো মেযে।বিভান ওকে বুকে জড়িয়ে নেয় পরম ভালবাসা আর যত্নে।বাবু ও বিভানের বুকের সাথে লেগে আছে।বেলা টেবিলে খাবার এনে ড্রয়িংরুমে এসে এমন দৃশ্য দেখে যেন ওর মন জুড়িয়ে গেলো।বেলা বুঝতে পারলো এত বছর পর বাচ্চা পেয়ে লোকটা কতো খুশি সেটা এ দৃশ্যই বুঝিয়ে দিয়েছে।বেলার চোখ ভিজে এলো।চোখ মুছে একটু সরে এসে বলল,
'বিভান বাবু কে নিয়ে খেতে আসেন।"
বেলার ডাকে বিভানের ঘোর কাঁটে। মেয়ের চুল বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
''চলো মা খেতে যাই।"
বাবুটা বিভানের বুকে মাথা রেখে বলতে থাকলো, 
''বাবা আমি তালাদিন কিত্তু কাইনি। তাক্কু আঙ্কেল কিত্তু কেতে দেয়নি। কুব মাসসে।"
বিভান মেয়েকে নিয়ে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল,
''তেমার টাক্কু আঙ্কেল কে সামনে পেলে মেরে ভর্তা বানিয়ে দেবো।"
বাবুটা হঠাৎ বিভানের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে খুশিতে।লাফাতে চেষ্টা করছিলো আর বলছিলো,
''ইয়ে বাবা মাব্বে!!! বাবা মাব্বে!!!!!"
বিভান ওকে থামিয়ে বলল,
''এখন চলো।"
মেয়েকে নিয়ে টেবিলে এসে বসে বিভান।বেলা বিভানের প্লেটে রুটি দিয়ে বলল,
''আপনি খান।ওকে আমার কাছে দিন।"
বিভান বেলার কথায় মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
''যাও মা।তোমার মায়ের কাছে যাও।"
তবে বিভানের কথাটা কেমন গম্ভীর শোনালো।বেলা বিভানের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দেখতে দেখতে মেয়েকে কোলে তুলে নেয়।তারপর ওকে খাইয়ে নিজে ও খেয়ে নেয়।
সেদিন রাতে বিভান বেলা আর মাঝে বাবু বিছানায় শুয়ে পড়ে।মেয়েটা এতোটাই টায়ার্ড ছিলো যে শোয়ার সাথে সাথেই ঘুমে তলিয়ে গেলো।বিভান অন্যদিকে ফিরে শুয়ে আছে। তবে ঘুমোয়নি।বেলা বিভানের দিকে তাকিয়েছিলো।হঠাৎ বিভানের পিঠে হাত রেখে বেলা বলল,
''শুনুন।"
''হুম।"
বিভান গম্ভীর স্বরে বলল।বেলা আরেকটু কাছে আসার চেষ্টা করে বলল,
''এদিকে ফিরুন প্লিজ।"
''বেলা ঘুম পাচ্ছে আমার ঘুমোতে দাও।"
বেলা কিছু বলতে পারলো না।বিভানের পিঠ জড়িয়ে বলল,
''এদিকে ফিরে ঘুমোন।"
''বেলা প্লিজ বিরক্ত না করে লাইট অফ করো।আমু ঘুমাবো।"
বেলা মুখ উঠিয়ে বিভানের পিঠে চুমু খেয়ে ধীরে বলল,
''আই লাভ ইউ বিভান।"
তারপর উঠে লাইট নিভিয়ে দিলো।তারপর বিভানকে জড়িয়েই শুয়ে থাকলো।
.......................সেদিন রাত একটা নিশাদ ইদ্রিকে কল দিলো।ইদ্রি কিছুটা ঘুমিয়েই পড়েছিলো।নিশাদের কলে ঘুম ভেঙ্গে যায় ওর।আধো চোখ খুলে হাতড়াতে হাতড়াতে ফোন পেয়ে সেটা চোখের সামনে এনে বেশ অবাক আর খুশি ও হয়।তারপর কল রিসিভ করতেই নিশাদ বলল,
''ঘুমিয়ে পড়েছিলে?"
''একটু।"
ঘুমন্ত মুখে মুচকি হাসে ইদ্রি।নিশাদ একটু হেসে বলল,
''কাল দশটায় রেডি থেকো।আমি আসবো।"
পুরো ঘুম উড়ে যায় ইদ্রির চোখ থেকে।চেঁচিয়ে বলল,
''সত্যি?"
''হুম।ওকে পরে কথা হবে ঘুমাও।"
''থ্যাংক ইউ মিঃ ইঞ্জিনিয়ার।"
''ওয়েলকাম। "
একটু শব্দ করে হাসে নিশাদ।তারপর ফোন টা সামনে নিয়ে আসে। মুখে হাসি লেগে থাকলো।পরদিন সকালে নাস্তা করে বেরিয়ে আসে নিশাদ।গন্তব্য ইমতিয়াজের বাসা।সেখানে পৌছে দেখে ইদ্রি দাঁড়ানো।আজ কালো শাড়ী পরেছে মেয়েটা।কালো লম্বা চুল গুলো কোমড়ের নিচ পর্যন্ত গেছে।আজ অনেক সেজেছে ইদ্রি।পরীর মতো লাগছে মেয়েটাকে।নিশাদ না চাইতেও মেয়েটাকে দেখতে থাকলো পলকহীন চাহনিতে।ইদ্রি নিশাদকে দেখে হেসে ওর দিকে এগিয়ে আসে।নিশাদ দাাঁড়িয়ে যায় ওকে আসতে দেখে।ইদ্রি কাছে এসে বলল,
''সুন্দর লাগছে পাঞ্জাবীতে।"
''থ্যাংক ইউ।তোমাকে ও ভালো লাগছে।"
''থ্যাংক ইউ।"
ইদ্রি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো।নিশাদ বলতে না দিয়ে বলল,
''চলো কোথায় যাবে। একটু জলদি করো।"
''ওকে।"
ওরা বেরিয়ে পড়ে।ইদ্রিদের গাড়িতে করে।ইদ্রি গাড়িতে ওর পাশে নিশাদ কে বারবার দেখছিলো।আজ ওদের যে কেউ দেখলে বলবে ওরা কাপল।হাজবেন্ড ওয়াইফ।ইসস কি ফিলিং যে হচ্ছে ইদ্রির।দুষ্টু হেসে ফেলে ইদ্রি নিজের অজান্তেই।
......................এদিকে আদনান সকাল থেকেই সবার সাথেই বিভিন্ন প্ল্যান করলো।অফিসে জয়েন করার সাথেই ওকে দশহাজার টাকা দেয়া হয়েছিলো।সেটা দিয়েই ভাইয়ের জন্মদিন সেলিব্রেট করবে ও।সাঁঝ আর হুমায়রাকে ঘর সাজানোর আর কেক আনার দায়িত্ব দেয়া হলো।কুঞ্জনের দায়িত্ব ভাইকে ওদের প্ল্যান থেকে দূরে রাখার।আর লাবনী ওর সাথে শপিং এ যাবে।আদনান লাবনীকে নিয়ে বেরিয়ো আসে।বেলা যে টাকা পাঠিয়েছিলো সেগুলো দিয়ে সবার জন্য শপিং করবে।আদনান লাবনী কে নিয়ে বেরিয়ে যায়।
.......................নিশাদ আর ইদ্রি একটা শাহবাগের একটা পার্কে চলে আসে।নিশাদ কিছুটা অবাক। পার্কে কেন এলো?তাও আবার ইদ্রির সাথে?নিশাদ জিজ্ঞেস করেই বসলো,
''আমরা এখানে এলাম কেন?"
ইদ্রি খানিকটা হেসে বলল,
''একটু হাঁটবো তাই।"
নিশাদ মুচকি হেসে বলল,
''চলো তাইলে।"
''হুম।"
ওরা পার্কের ভিতর ঢুকে হাঁটতে শুরু করে।অনেকটা সময় হাঁটার পর নিশাদ খেয়াল করলো ইদ্রির বয়সী অনেক গুলো মেয়ে ওদের দিকে হেঁটে আসছে।নিশাদ কিছু বুঝে উঠার আগেই ওরা বলে উঠলো,
''হ্যাপি বার্থডে ভাইয়া।"
নিশাদ কিছুটা অবাক হয়ে ইদ্রির দিকে তাকিয়ে বলল,
''ইদ্রি কি বলছে ওরা?"
ইদ্রি নিশাদের দিকে একটু হেসে বলল,
''কিছুনা।"
এদিকে মেয়েগুলো হেসে হেসে বলছিলো,
''কিরে ইদ্রি ভাইয়া কি জানেনা ওনার জন্মদিনের কথা আমরা জানি?"
ইদ্রি বলল,
''হইছে এখন চল গল্প করি।"
নিশাূের কেমন আনইজি লাগতে থাকে।এতোগুলো মেয়ের মাঝে ও।তারওপর মেয়েগুলো ওকে এভাবে ভাইয়া বলছে যেন।ওরা এসে একটা বেঞ্চে বসলো।নিশাদ এককোনায় ওর পাশে আর তার পাশে ওর বান্ধুবীরা।নিশাদ যতোবারই মেয়েগুলোকে দেখছিলো ওরা ও কেমন নজরে যেন ইদ্রি আর ওকে দেখছে।নিশাদ হঠাৎ ইদ্রি কে কি যেন বলতে যেতেই মেয়ে গুলো বলতে লাগলো, 
''আজ তো অন্তত আমাদের সাথে একটু গল্প করুননা।সবসময় তো ওর সাথেই কথা বলেন।"
বান্ধুবীদের কথা গুলো শুনে ইদ্রির কেমন য়েন ভয় হতে থাকে।ভেবেছিলো বাসায় গিয়ে মনের কথাটা জানিয়ে দেবে।কিন্তু ওনি এখন বুঝে গেলে তো সমস্যা।এ কি করলি ইদ্রি।আরেকটা মেয়ে বলল,
''ইদ্রি তোরা একসাথে দাঁড়া একটা কাপল ছবি তুলে দেই।"
এই কথা শুনে নিশাদ এবার বুঝতে পেলো কি হচ্ছে।সবাই ওকে কি ভাবছে।নিশাদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওরা ওদের একসাথে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলল,
''ভাইয়া ওকে ধরেন।"
নিশাদের অনেক রাগ লাগছে। তবে ওদের সামনে কিছু বলবেনা ও কারন এতে ইদ্রি অপমানিত বোধ করতে পারে।নিশাদ একহাত দিয়ে ইদ্রির কাঁধ জোরে চেঁপে ধরে।ইদ্রি অবাক হয় তবে কিছু বলতে পারেনা। বেশ ব্যাথা ও পাচ্ছে ও।ইদ্রির সাথে ছবি তোলার পরপরই নিশাদ দাঁতে দাঁত চেঁপে বলল,
''ইদ্রি আমার সাথে একটু আসো।কথা আছে।"
মেয়েগুলো হেসে বলতে লাগলো,
''ভাইয়া আমরা ও কি আসবো?"
''না আমরা একটু পার্সোনাল কথা বলবো।আফটার অল ইদ্রি আমার গার্লফ্রেন্ড রাইট?"
মেয়ে গুলো ওদের সম্মতি দিতেই নিশাদ জোরে ইদ্রির হাত ধরে এককোনায় নিয়ে এলো।ইদ্রি বুঝে গেলো নিশাদ অনেক রেগে গেছে।সেটা ওর কথা বলার ধরন আর ইদ্রিকে ধরার স্টাইলে বুঝতে পারলো।নিশাদ ইদ্রিকে দাঁড় করিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ আছে কিনা।সেখানে কেউ ছিলোনা।নিশাদ এবার রেগে কিছুটা চিৎকার করে বলল,
''কি হচ্ছিলো?"
ইদ্রি কেঁপে উঠে।ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,
''কই কি? "
নিশাদ ওর হাত চেঁপে বলল,
''কেন করলা এমন? কি মজা পেলে করে?এসব নোংরা খেলার মানে কি?"
ইদ্রির চোখে পানি চলে এলো।ও বলতে লাগলো,
''আমি বলছি। প্লিজ শান্ত হোন আগে।"
''শান্ত কেমন করে হই বলো?বলো কেন করলে এমন?"
চিৎকার করে উঠে নিশাদ।ইদ্রি আরো জোরে কেঁপে উঠে।তারপর কম্পিত কন্ঠে  বলল,
''আমি আপনাকে ভালবাসি।"
নিশাদ আর সহ্য করতে না পেরে জোরে চড় বসিয়ে দিয়ে বলল,
''আজ এখানে তোমার সাথে আমার শেষ দেখা।আর কখনো আমার সামনে আসবানা।বেয়াদব নির্লজ্জ মেয়ে কোথাকার।"
বলেই নিশাদ চলে যেতে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন