বর্ণের ঠোটের কোনে বাকা হাসি , হাতে কফির মগ , কানে ব্লু টুথ ,, বর্ণ আর কের চিৎকার শুনে হাসছে ৷
"" বর্ণ কখনো বিশ্বাসঘাতক কে ক্ষমা করে না আর কে ৷ তৈরি হো আমি আসছি তোর মৃত্যদূত হয়ে """
বক্সের সাথে ছোটট্ট একটা মাইক্রচিপ লাগিয়ে দিয়েছিলো বর্ণ ৷ সেই টার সাহায্যে বর্ণ আর কের কথা তার রাগ ভয় সব টাই বুজতে পারছে বর্ণ ৷
"" আমার সাথে যখন খেলতে নেমেছিস আর কে তখন এই বর্ণ তোর সাথে খেলবে ৷ তুই শুধু দেখতে থাক ৷ আমি কে ? এটা জানার জন্য তোর রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে ৷"" কথা গুলো বলতে বলতে বর্ণ হাসতে লাগলো....
.
.
.
ছন্দ দম মেরে সোফার এক কোনে বসে আছে৷ কিছুক্ষণ আগে সাব্বির আহাম্মেদ আর কাব্য বাড়িতে এসে ছন্দ কে বকেছে কারন ছন্দ মোরের দোকানে গিয়েছিলো আর একটুর জন্য আর কের লোকেরা দেখেনি শুধু মাত্র কাব্যের জন্য ৷ মোরের সামনে থেকে হাত ধরে টানতে টানতে ছন্দ কে সোফায় ছুড়ে মারে প্রচুর বকা দিতে থাকে৷ ছন্দ চুপ করে বসে শুনলো কারন টা হলো বাবা ভাইয়ের কথা অমান্য করে বাইরে গিয়েছিলো৷ কিন্তু কথা ছিলো শুধুমাত্র কলেজে যাবে না কিন্তু বাড়ির বাইরে যে পা রাখতে পারবে না এটা জানতো না৷
"" আম্মু তোমার মেয়ে যেন বাড়ি থেকে এক পাও যেন না বের হয় ৷""(কাব্য)
"" হবে না বার কিন্তু তুই এমন ব্যবহার করছিস কেন ওর সাথে দেখছিস ভয়ে মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে৷""(কিয়ারা বেগম)
"" সেটা তুমি দেখো বাট যা বলেছি তার অন্যথা হলে ওর পা ভেঙে ফেলবো আমি বলে দিলাম"" কিয়ারা বেগম কে কিছু না বলতে দিয়ে গট গট করে হেটে উপরে চলে গেল৷
৩৩!!
ছন্দ এখনো বুঝে উঠতে পারছে না এমন ব্যবহারের আসল কারন তবুও চুপ চাপ তার ভাবির জন্য রান্না করা বিরয়ানি প্লেটে সাজিয়ে মুন্নির হাতে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়৷
দেখতে দেখতে তিনটে দিন চলে যায়৷ এই তিন দিনে ছন্দ বাড়ির বাইরে পা রাখেনি ৷ বরং বাড়িতে থেকে তার ভাবিকে সঙ্গ দিয়েছে ৷ কিয়ারা বেগম এখন নিশ্চিন্ত তার এক মাত্র মেয়ের মুখে হাসি দেখে সে দিন কাব্য বকার পর ছন্দ রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আর খুলে না ৷ কাব্য এসে ছন্দের মান ভাঙিয়ে বুঝিয়ে গুছিয়ে কিছু মিথ্যে বলে ছন্দ কে বুঝিয়ে দেয়৷ অবুজ বালিকার মতো ছন্দ কাব্যের কথা বিশ্বাস করে নেয় ৷ তবে লাস্ট দু দিন ছন্দ খুব হাসি খুশি থাকছে না এর কারন সাব্বির আহাম্মেদ জানে আর না কিয়ারা বেগম আর না কাব্য ৷ কাব্য আর তার বাবা অফিসে চলে যাওয়ার পর ছন্দ তার ভাবির রুমে চলে যায়৷
"" ভাবি আসবো?"
"" তোমার পারমিশনের কোন প্রয়োজন নেই ছন্দ রানি ৷ আমার রুমে ঢুকতে গেলে তুমি কখনো পারমিশন চাইবে না বুজলে""
"" ওকে , এখন বলো কি খাবে? ""
"" উমম আইসক্রিম খাবো ""
"" আচ্ছা ওয়েট করো আমি নিচে গিয়ে ফ্রিজ থেকে আমার আইসক্রিম গুলো নিয়ে আসি ৷তারপর এক সাথে খাবো দুজনে ""
"" আচ্ছা নিয়ে এসো""
ছন্দ নিচে যেতে রুনা ফোন বের করে তার কাজিন নিলয় কে কল করে কিন্তু প্রতিবার কল এক মহিলা বন্ধ বলে জানাচ্ছে ৷ গত তিনটা দিন ধরে রুনা তার কাজিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে কিন্তু কোন ভাবে পারছে না ৷
"" আল্লাহ জানে নিলয় ভাইয়ের আবার কোন বিপদ হলো না তো আমার জন্য? কে জানে ? আল্লাহ যেন আমার ভাই কে সুস্থ বিপদ মুক্ত রাখে৷"" কথা গুলো বলতে বলতে রুনা ফোনের ডায়াল লিস্ট থেকে নিলয়ের নাম্বার ডিলিট করে দিয়ে পাশে রেখে দেয়৷
"" ভাবি এই নেও তোমার আইসক্রিম ""
"" হুম"" আনমনে ..
" ভাবি তোমাকে অন্য মনুস্ক কেন লাগছে ? শরীল খারাপ করছে ? আম্মু কে ডাকবো?""
"" নাহ ছন্দ রানি আমি একদম ঠিক আছি আম্মা কে টাকতে হবে না৷""
"" আচ্ছা"" ছন্দ আর তার ভাবি রুনা দুজনে আইসক্রিম খেতে খেতে গল্প করতে থাকে৷ দরজার বাইরে থেকে কেউ একজন ছন্দ আর তার ভাবি কে গল্প করতে দেখে আসতে আসতে সরে যায় দরজার পাশ থেকে.....
.
.
.
.
"" ভাই এই কফি আমি বসের সামনে নিয়ে যেতে পারবো না""
"" কেন কি হয়েছে?""(কাব্য)
"" ভাই আমার মনে হয় লোকটা পাগল সে দিন ওই ভয়ঙ্কর লাশ টা দেখার পর থেকে বস পাগল হয়ে গেছে নাহলে কেউ রাতে না ঘুমিয়ে বির বির করে পাইচারি করে আর কফি খায়৷ ""
"" তো এতে সমস্যা কি?""
"" সমস্যা টা হলো বস প্রচুর খিট খিট করে ৷ আর ওই লাশের কাটা মাথা তার রুমের মধ্যে সাজিয়ে রেখেছে৷ ""
কথাটা শোনা মাত্র কাব্যের পুরো শরীলের শিউরে উঠলো ...
"" কিহ কি বলছিস ?""
"" হ্যা ভাই সত্যি, আমি তো ভেবে নিয়েছি আমি আর ওনার রুমের আসে পাশেও যাবো না""
"" ওকে ওটা আমার হাতে দেও ৷ কফি টা আমি বস কে দিয়ে দিবো""
"" বাচালেন স্যার..""
ট্রে টা কাব্যের হাতে দিয়ে লোকটা ভ্যানিস হয়ে গেল মুহূর্তে ৷ কাব্য আর কের রুমের বাইরে দারিয়ে নক করে ...
"" কামিং...."(আরকে)
কাব্য রুমের ভিতরে ঢুকতে একটা ভোটকা পঁচা দূর্গন্ধ নাকে আসে ৷ কাব্যের মনে হচ্ছে অন্য প্রাশনের ভাত বেরিয়ে আসবে ৷ কাব্য নাকে রুমাল দিয়ে চেপে ধরে আর কের কাছে যায়৷
"" বস আপনার কফি ..""
"" হুম,"" কফিটা নিয়ে আর কে বলতে লাগলো..
"" খোজ পেয়েছিস কে মিলন আর আমার ছোট ভাই কে মেরেছে?""
"" না বস খুনি কোন প্রকার ক্লু রেখে যাই নি ৷ আর কোন ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট পেয়েছি""
আর কফিটা না খেয়ে ছুড়ে মারে ফ্লোরে সাথে সাথে মখ ভেঙে দু টুকরো হয়ে যায়৷
"" বস শান্ত হোন , খুনি কে তো আমরা ধরবোই আর কঠিন শাস্তি পাবে ৷ কিন্তু আপনি কেন নিজের কেয়ার করছেন না ৷ ঘুমুচ্ছেন না কেন?""
"" কারন আমার ঘুম সত্যি হারাম করে দিয়েছে ওই চির কুট টা ৷ যতোখন না ওই চিরকুট লেখার মালিক কে খুজে পাচ্ছি ততোখন আমার চোখে ঘুম ধরা দিবে না কাব্য""
"" স্যার আপনি.. বাকিটা বলার আগে আর কে বলে উঠলো "" লিভ মি এলোন ""
"" ওকে স্যার "" কাব্য দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে এসে দম নিতে থাকে ৷এতোক্ষন রুমটার ভিতর শ্বাস আটকে ছিলো ৷ এতো বিশ্রি বাজে গন্ধ যে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো কাব্যের কিন্তু আরকে কে দেখে মনে হচ্ছে না তার কোন প্রব্লেম হচ্ছে ৷ এটা দেখে কাব্য বেশ অবাক হয়ে যায়৷
"" বস নির্ঘাত পাগল হয়ে গেছে আ'ম শিওর৷ যাই আব্বু কে কথা গুলো জানিয়ে আসি"" (কাব্য)
.
.
.
.
রান্না ঘরের শিল পাটায় মাঝারি সাইজের একটা ছুড়ি ঘশে চলেছে ছন্দ৷ মুন্নি অনেকবার বারন করা সত্যেও ছন্দ ছুড়িতে ধার দিয়ে চলছে ৷ ছন্দের ভাষ্য মতে ছুড়িতে কোন ধার নেই তাই তাকে ধার দিতে হবে৷ পনেরো মিনিট পর ছন্দ ছুড়িটা দেখছে ৷ দেখছে বলা হলে ভূল হবে ছন্দ ছুড়িটা ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখছে ৷ আর এদিকে মুন্নি বেচারি ছন্দের এই সব কান্ড দারিয়ে দারিয়ে দেখছে ৷ কি বলবে বুজতে পারছে না ৷ ছন্দ ছুড়ির ধার পরীক্ষা করার জন্য সামনে মুরগি দেখতে পেল৷ সকালে তার ভাই চার টে মুরগি নিয়ে এসেছে ৷ এখনো জবাই করা হয়নি ৷ ছন্দ কিছু না বলে হুট করে একটা মুরগির গলায় ছুড়ি চালিয়ে দেয়৷ সাথে সাথে রক্তে ভিজে যায় ছন্দ মুন্নি দুজনে৷ মুন্নির হাত পা কাঁপছে ছন্দের হাব ভাব দেখে ৷
"" আল্লাহ গো এক বার সবাই বাসায় আহোক আমি তাগোরে বইলা দিমু হেগো মাইয়ারে ভূতে ধরছে৷"" (মনে মনে)
"" মুন্নি খবরদার আজকের এই দৃশ্য গুলো যদি আব্বু আম্মু বা ভাইয়ের কানে যায় তাহলে এই মুরগির যে অবস্তা করেছি তোর ও সেই একি অবস্তা করবো "" শান্ত চোখে মুন্নির দিকে তাকিয়ে বললো ছন্দ... মুন্নি আর কিছু বলতে পারলো না তার আগে অঙ্গান হয়ে পরে গেল৷ মুন্নি কে অঙ্গান হতে দেখে ছন্দ হাসতে লাগলো....
৩৪!!
বর্ণ ফোনে ছন্দের হাতে ছুড়ি আর রক্তে ভিজে থাকতে দেখে ঘাবড়ে যায়৷ এটা ভেবে যে ছন্দে কোথাও কেটে গেছে কিনা ৷ কিন্তু ছন্দ কে এভাবে শান্ত দেখতে পেয়ে বর্ণ ভয় পেয়ে যায় দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরে ছন্দের কাছে আসার জন্য ৷ বিকেলে কিয়ারা বেগম তার স্বামী আর ছেলে বউমা কে নিয়ে এক আত্নিয়ের বাড়িতে চলে গেছে ৷ ছন্দের শরীল ভালো লাগছে না বলে মুন্নির সাথে বাড়িতে থেকে গেছে ৷ পুরো বাড়িতে মুন্নি আর ছন্দ ছাড়া কেউ নেই ৷ এটা বর্ণ খুব ভালো করে জানে তাই কেউ দেখার রিক্স ও নেই বিধায় অন্ধকারে বেলকনি দিয়ে ভিতরে ঢুকে বর্ণ .. ভিতরে ঢুকে বর্ণ ছন্দ কে টাওয়েল পড়ে ভিজে চুলে বের হতে দেখে বর্ণের হৃদস্পন্দন যেন বেরে যায় ৷ সাথে সাথ চোখ নামিয়ে ফেলে বর্ণ ৷ ছন্দ গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে ভেজা চুল গুলো অন্য একটা তোয়ালে দিয়ে মুচতে লাগলো ৷ হঠাৎ করে বেলকনির দরজার দিকে চোখ পড়তে ছন্দ ঘাবড়ে যায়৷ টেবিলের উপর থেকে ছুড়িটা হাতে নিয়ে এগিয়ে যায় বেলকনির দরজার দিকে ৷ বেলকনিতে অন্ধকার থাকায় ছন্দ বর্ণের মুখ দেখতে পায় না ৷ কিন্তু বর্ণ ঠিকি ছন্দ কে দেখতে পায় ৷ ছন্দ ছুড়ি চালিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে বর্ণ ছন্দের হাত ধরে পিছুনে মুরে ফেলে ছন্দের ভেজা কাধে চুমু খায় বর্ণ ৷ সাথে সাথে কেপেঁ ওঠে ছন্দ ৷ স্পর্শ পেয়ে ছন্দ বুজতে পারে এই মানুষ টা আর কেউ না বর্ণ ৷ কারন গতো তিনদিনে রাতে এই মানুষটা এসে তার কপালে স্পর্শ করে যায়৷ জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকে৷ আর আজও সেই এসেছে ৷ অথচ তার বিন্দু মাত্র ভয় লাগছে না মানুষটিকে উলটো মনে হচ্ছে দুনিয়ার সব থেকে সুরক্ষিত জায়গায় আছে সে ৷ ছন্দের মনে হচ্ছে সে দিনের সেই ভয়ঙ্কর ঠান্ডা মাথার খুনির সাথে এই মানুষটার আকাশ পাতাল তফাৎ ৷ কেন যেন ছন্দের এই বর্ণ নামক লোকটাকে একদমি ভয় লাগছে না৷
বর্ণ হঠাৎ ছন্দের কাঁধ থেকে ঠোট ছুইয়ে দিতে দিতে গলায় নেমে আসে ৷ ছন্দের হাত থেকে ছুড়িটা পড়ে যায়৷ বর্ণের স্পর্শে প্রচন্ড রকমের শরীল কাপছে ছন্দের মুখ থেকে একটা শব্দ বের হচ্ছে না ৷ বরং মনে হচ্ছে এখুনি সে মরে যাবে ৷ ছন্দের ভাবনার মাঝে বর্ণ ছন্দ কে কোলে তুলে নেয়৷ কোলে নিয়ে ছন্দের ঠোটজোড়া দখল করে নেয় বর্ণ ৷ ছন্দ না চাইতেও বর্ণের সাথে তাল মিলিয়ে চুমু খেতে থাকে যেন এ এক ভালোবাসার প্রতিযোগিতা চলছে ৷ কিছুক্ষন পর বর্ণ ছন্দের ঠোট জোড়া ছেড়ে দিয়ে ছন্দের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ বর্ণ কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ছন্দ লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়৷ বর্ণ দুষ্টুমির হাসি ছন্দের লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া গালে আস্তের করে কামড় দিয়ে বসে বর্ণ ৷ ছন্দ বর্ণের কোল থেকে নামার চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্ত কোন মতে বর্ণের সাথে পারছে না ৷ বর্ণ একটু হেটে ছন্দ কে ওয়াশরুমে দার করিয়ে বর্ণ ছন্দের কার্বাড থেকে ড্রেস নিয়ে ছন্দের হাতে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়৷
ছন্দ বর্ণ কে দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারেনি ৷ বর্ণের যায়গায় অন্য কেউ হলে আজ ওর ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করতো কিন্তু বর্ণ তা করেনি ৷ ভাবতেই ছন্দের হৃদয়ে শীতল হওয়া বসে গেল৷ ছন্দ মুচকি হেসে ড্রেস পরে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে বর্ণ কে রুমে কোথাও দেখতে না পেয়ে ছন্দের মন খারাপ হয়ে যায় এটা ভেবে যে বর্ণ তাকে না বলে চলে গেছে৷
ছন্দ ফ্লোরে পরে থাকা ছুড়িটা তুলে স্বযত্নে কাপড় পেচিয়ে কার্বাডে তুলে রেখে ৷ পিছুনে ফিরে বর্ণ কে দেখে ছন্দ চমকে যায়৷ ছন্দ ভেবেছিলো বর্ণ চলে গেছে কিন্তু বর্ণ যে যায়নি এটা ছন্দ জানতো না৷
"" আ,,আপনি যান নি?""
"" আমার টিয়াপাখিকে একা রেখে যেতে ইচ্ছে করছে না মাই লাভ.."" বর্ণের ঠোটের কোনে দুষ্টুমির হাসি ছন্দের চোখ এরায় নি৷
"" আপনি চলে যান আম্মু ভাইয়া আপনাকে দেখে ফেললে সমস্যা হবে""
"" আমাকে কি বোকা পেয়েছো টিয়াপাখি, আমি খুব ভালো করেই জানি বাড়িতে তুমি আর কাজের মেয়েটি ছাড়া আর কেউ নেই""
"" এ্যা আপনি সব জানেন! কি করে?"" অবাক হয়ে জানতে চাইলো ছন্দ.....
"" সিগরেট টিয়াপাখি ""
বর্ণ টেবিলের উপর থেকে খাবারের প্লেট নিয়ে ছন্দের সামনে দারায়...
"" এখানে বসো .."" ছন্দ বাধ্য মেয়ের মতো চুপ করে চেয়ারে বসে ৷ বর্ণ পাশের চেয়ারে বসে নিজের হাতে ছন্দ কে খাবার খাইয়ে দিতে লাগলো ৷ ছন্দ চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে ৷ অর্ধেক খাওয়া শেষ হতে ৷ বর্ণ বলে ওঠে "" এবার আমাকে খাইয়ে দেও টিয়াপাখি ৷ ভিষন খিদে পেয়েছে আমার"" কথাটা শুনে ছন্দের বেশ খারাপ লাগলো ৷
"" কিন্তু খাবার তো এটো হয়ে গেছে ৷ আমি আপনার জন্য খাবার নিয়ে আসছি"" ছন্দ উঠতে নিলে বর্ণ ছন্দের হাত টেনে ধরে রাঙানিত চোখে তাকিয়ে বলতে লাগলো "" তোমাকে এতো ভাবতে আমি বলেনি টিয়াপাখি ৷ আমি তোমার এটো খাবার-ই আমি খাবো আর তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে এন্ড রাইট নাও ছন্দ এবার বেশ ভয় পেল ৷ চুপচাপ দ্রুত খাবার মাখিয়ে খাইয়ে দিতে লাগলো৷ বর্ণকে দেখে বুঝা যাচ্ছে খুব তৃপ্তি সহকারে খাবারটা খাচ্ছে বর্ণ৷ খাবার খাওয়া শেষ হতে বর্ণ ছন্দের ওরনায় মুখ মুছে নিয়ে ছন্দের বিছানায় শুয়ে পড়ে৷ ছন্দ বর্ণকে কিছু বলার সাহস পেল না৷ তাই চুপ করে দারিয়ে আছে৷
"" টিয়াপাখি এভাবে দারিয়ে না থেকে চুল গুলো টেনে দেও ৷ খুব ঘুম পাচ্ছে আমার ." চোখ বন্ধ করে কথা গুলো বললো বর্ণ...
ছন্দ দরজা ভালো করে লক করে বর্ণের পাশে বসে ছন্দ বর্ণের চুল গুলো টেনে দিতে লাগলো৷ বর্ণ ছন্দের হাতের স্পর্শ পেয়ে ছন্দের কোলে মাথা রেখে কোমড় জরিয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে৷
রাত নয়টায় কিয়ারা বেগম এসে দরজায় কড়া নারে ৷ ছন্দের ঘুম ভেঙে যায় তার মায়ের গলা পেয়ে ৷ ছন্দ বিছানার দিকে তাকিয়ে বর্ণ কে না দেখতে পেয়ে বুজতে পারে বর্ণ চলে গেছে৷
"" ইসস কখন যে ঘুমিয়ে পরেছিলাম ধ্যাত ৷"" ছন্দ উঠতে যাবে তখনি খেয়াল করে ওর গায় ছাদর ৷ ছন্দ হেসে ফেলে ৷
"" পাগল একটা..""
ছন্দ পাশের সাইড টেবিলে তাকিয়ে দেখে একটা চিরকুট ৷ ছন্দ চিরকুট টা হাতে নিয়ে পরতে লাগলো....
** টিয়াপাখি একটা ইমপটেন্ট কাজের জন্য আমাকে যেতে হলো৷ তোমার ওই সুন্দর ঘুমটা ভাঙাতে ইচ্ছে করছিলো না ৷ তাই ঘুম থেকে জাগায় নি ৷ চিন্তা করো না আমি অলয়েজ তোমার সাথে আছি৷ রাতে খেয়ে নিবে আমি পরে আবার আসবো টিয়াপাখি ৷
❤️ I LOVE YOU TIYAPAKHI❤️
________________________________
ছন্দ চিরকুট টা বালিশের নিচে লুকিয়ে রেখে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়৷
"" কি বেপার ছন্দ এতোক্ষন কেন লাগলো দরজা খুলতে ?"" রাগি গলায় বললো কিয়ারা বেগম..
"" আম্মু আমি ঘুমিছিলাম তো তাই একটু দেরি হলো ""
কিয়ারা বেগম রুমে ঢুকে ছন্দ কে বলল"" চোখ মুখে পানি দিয়ে আসো ঝটপট আমি এখানে আছি"" ছন্দ মাথা নেরে দ্রুত ওয়াশরুমে ঢুকে চোখে মুখে পানি দিয়ে আসে ৷ কিয়ারা বেগম ছন্দ কে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে ছন্দের চুল গুলো চিরনি দিয়ে চোখে কাজল আর ঠোটের লিপস্টিক লাগিয়ে দেয়...
"" ব্যাস এতেই আমার মেয়েটাকে ভিষন সুন্দর লাগছে ৷ ""
"" আম্মু আমাকে সাজালে কেন?""
"" নিচে গেলে দেখতে পাবি চল আমার সাথে..""
কিয়ারা বেগম ছন্দের ওরনা মাথায় ঠিক করে দিয়ে ছন্দ কে নিয়ে নিচে চলে যায় ৷ ছন্দ এখনো বুঝে উঠতে পারছে না কিয়ারা বেগম কি করতে চাইছে৷
ছন্দ নিচে ড্রইংরুমে এসে সামনে বসে থাকা মানুষ টাকে দেখে ছন্দ চমকে ওঠে ৷ সামনে থাকা মানুষটার ঠোঁটের কোনে বাকা হাসি.........