অনিমা অসহায় দৃষ্টিতে জাবিনের দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকাল। আরমান ওয়াসরুমের ফ্লোরে পরে আছে, মনে হচ্ছে প্রচন্ড ব্যাথা পেয়েছে। আদিব আর আরেকটা ছেলে মিলে ওকে তোলার চেষ্টা করছে। আরমান সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে যাচ্ছিল। শুধু হাতমুখ ধোবে তাই দরজা লক করেনি। কিন্তু একটু এগোতেই স্লিপ করে পরে গেছে। আর পরেছেও ভুলভাবে যার ফলে অনেকটা বেশিই ব্যাথা পেয়েছে। আরমানের চিৎকারেই সবাই ছুটে এসছে। ওকে তুলে আনতে আদিব একটা ছেলেকে নিয়ে গেছে। আরমানের মা সহ সবাই মোটামুটি অস্হির হয়ে গেছে আরমানের এরকম অবস্থায়। আরমান ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। এমনিতেই রেগে থাকলেও অনিমার এবার একটু মায়া হচ্ছে বেচারার ওপর। এটাও বুঝতে পারছে যে আদ্রিয়ানই কিছু একটা করেছে। ওরা সবাই ধরাধরি করে আরমানকে খাটে বসাতে চাইল কিন্তু আরমান ব্যাথায় চিৎকার করছে। ওরা বুঝলো যে আরমানের হয়ত কোথাও ফ্রাকচার হয়েছে বা কোন সমস্যা হয়েছে তাই কাছের হাসপাতালে নিয়ে গেল ওকে। আরমানের সাথে আরমানের বাবা আর আরও আদিবের আরও দুজন কাজিন গেছে। কিছুক্ষণ পর আরমানের মাও পার্স নিয়ে ছুটলেন। তাই পেছন পেছন আদিবও গেছে। আরমানকে নিয়ে যাওয়ার পর সবাই কিছুক্ষণ আপসোস করে কাজে লেগে পরল। কাল বিয়ে তাই এখন বসে থাকলে চলবে না। পরে না হয় আবার খবর নিয়ে নেবে। অনিমা ভাবছে এতো কিছু হয়ে গেল অথচ আদ্রিয়ান কেন এলোনা? নিচে সবাই মিলে বসে তরকারি, মসলা, পেয়াজ সব কাটছে রান্না জন্যে। অনিমা, জাবিন, রাইমা ওরা সবাই সোফায় বসে আছে। অনিমা দাঁত দিয়ে নখ কাটছে আর আশেপাশে তাকিয়ে আদ্রিয়ানকে খুঁজছে। রাইমা বলল,
" ইশ! কী হয়ে গেল না? আমার দুদিন ধরেই কেমন মনে হচ্ছিল একটা কিছু হবেই। দেখ? হয়ে গেল!"
জাবিন একটু বিরক্তি নিয়ে বলল,
" দূর তেমন কিছুই তো হলোনা। আমিতো ভেবেছিলাম আরও মারাত্মক কোন অবস্থা হবে। কিন্তু হলো কই?"
অনিমা অবাক হয়ে বলল,
" এটা তোমার কম হচ্ছে?"
" না, তা না কিন্তু হ্যাঁ এক্সপেক্টেশন আরও বেশিই ছিল। ভেবেছিলাম তিন চার মাসের মধ্যে উঠতে পারবেনা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।"
অনিমা অবাক হতে গিয়েও হলোনা, শুধু একটা হতাশ নিশ্বাস ত্যাগ করল। যেমন ভাই আর তেমন বোনই তো হবে। এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই এমন সময় আদ্রিয়ান চোখ ডলতে ডলতে বেড়িয়ে এলো, চারপাশে চোখ বুলিয়ে লম্বা হাই তুলে বলল,
" সব এতো চুপচাপ কেন? কিছু কী হয়েছে?"
আদিবের মা আফসোসের সুরে বললেন,
" আর বলিস না আদ্রি। আরমানটা সকাল সকাল ওয়াসরুম থেকে পরে ভীষণ ব্যাথা পেয়েছে। হাসপাতালেও নিতে হল।"
আদ্রিয়ান অবাক চেহারা করে বলল,
" কী বলছ? আমাকে একবার ডাকবে তো? এখন ভালো আছে তো? মানে বেশি কিছুই হয়নি তো?"
" পায়ে কী যেন হয়েছে বলল। আর হাতের কনুইয়ের হাড়ে ফ্রাকচার হয়ে গেছে।"
" ওহ, সো স্যাড। আমিতো কিছু টেরই পাইনি। অনেক রাত করে ঘুমিয়েছি তো।"
কথাটা বলে আদ্রিয়ান ওখান থেকে সরে এসে সোফায় বসল। অনিমা চোখ ছোট ছোট করে দেখছে আদ্রিয়ানকে। ও খুব ভালো করেই জানে যে আদ্রিয়ান সবটাই জানে। কিন্তু শেয়ানাগিরী করে সবার সামনে ভালো হচ্ছে। আশিস অনেকগুলো চেয়ার একত্র করে দুহাতে ধরে আনছিল। আদ্রিয়ানের কথা শুনে আশিস বলল,
" হ্যাঁ সেই! এতো খাটাখাটনির পর ঘুম তো বেশি আসবেই।"
বলতে বলতে চেয়ার নিয়ে আশিস চলে গেল। তখন নাহিদ আর অভ্র দুজনেই এল। অভ্র আর জাবিনের চোখাচোখি হল কয়েক সেকেন্ডের জন্যে। অভ্র চোখ সরিয়ে বসে পরল। নাহিদ এসে আদ্রিয়ানের বসা সোফাটার হ্যান্ডেলের ওপর বসে আদ্রিয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
" তো ভাই এতো পরিশ্রমের পর ঘুম ভালো হয়েছে তো।"
আদ্রিয়ান হেসে ঘাড়ে হাত দিয়ে একটু আড়মোড়া ভেঙ্গে বলল,
" সলিড হয়েছে!"
কথাটা বলে অনিমার দিকে তাকিয়ে দুষ্টু একটা হাসি দিল আদ্রিয়ান। অনিমা ভ্রু কুচকে ফেলল। এই ছেলেটা যে কোন লেভেলের পাগল সেটা আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে অনিমা এখন। নাহিদ বলল,
" হ্যাঁ সলিড তো হবেই তাইনা। মনে জ্বালাই বড় জ্বালা। সেটা মিটে গেলেই সব শান্তি।"
জাবিন একটু চিন্তা করে বলল,
" কিন্তু ভাইয়া! আই হ্যাভ এ খুব গভীর প্রশ্ন। তুই ওনাকে ওয়াশরুমে ফেললি কীকরে?"
আদ্রিয়ান একটু হাসল। নাহিদ বলল,
" আমি বলছি, আমি বলছি। ইনি একা করেননি। আমাদের সবাইকে ক্রাইম পার্টনার বানিয়ে ছেড়েছে। বুঝলে না?"
জাবিন মাথা নাড়ল। নাহিদ হেসে বলল,
" আদ্রিয়ান অারমানের ওয়াশরুমের টাইলসে সুন্দর করে সাবান আর ওয়েল মেখে একেবারে পিচ্ছিল করে দিয়ে এসছিল। আমরাও হেল্প করেছি।"
রাইমা বলল,
" কিন্তু তোমরা ঢুকলে কীকরে?
অভ্র বলল,
" আসলে ব্যালকনির দরজা খোলা ছিল। আমি আর আশিস ভাই মই ধরেছি, স্যার আর নাহিদ ভাই ভেতরে গেছিল, আর আদিব ভাই পাহারা দিয়েছিল।"
জাবিন হেসে দিয়ে দিয়ে বলল,
" ওয়াও! কিন্তু, পরে তো কেউ কিছু পায়নি বাথরুমে?"
" পাবে কীকরে? সবাই যখন আরমানকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল তখন আমি আর নাহিদ ভাই ক্লিন করে দিয়েছি। এইজন্যই তো ওকে তুলতে শুধুই আদিব আর আরেকটা ছেলেকে নিয়েছিল। ছেলেটাও সব জানত। পা টিপে টিপে গেছিল যাতে ওখানে পা পরলেও স্লিপ না করে।"
" বাহ! তালিয়া, তালিয়া।"
নাহিদ আর অভ্র কলার ঠিক করে একটু ভাব নিল। অনিমা হতাশ দৃষ্টিতে তাকাল এদের দিকে। সত্যিই সবগুলোরই তার ছেড়া। কিন্তু আদ্রিয়ানের ভয়ে আর কিছু বলল না। অভ্র নাহিদের দিকে তাকিয়ে বলল,
" তো নাহিদ ভাই! আপনার কী খবর? মানে আমাদের ভাবী কোথায়? আমাদেরও তো দেখাবেন না-কি?"
আদ্রিয়ান বলল,
" হ্যাঁ একদমই তাই! তনয়ার কথা তো ভুলেই গেছিলাম কবে আসছে দেশে?"
নাহিদ মাথা চুলকে বলল,
'' কেন এক্সট্রা প্যারা দিচ্ছিস ভাই? এখন দেখ কত স্বাধীন আছি। মহারানি এলেই আমায় ইন্ডিপেন্ডেন্সির রফাদফা করে দেবে। ওসব ছাড় এটা বল যে ভাবীকে সত্যি সত্যি ভাবী কবে বানাচ্ছিস? আই মিন এখনতো লাইসেন্স ছাড়াই ভাবী ডাকতে হচ্ছে। এবারতো বল লাইসেন্স কবে করছিস?"
আদ্রিয়ান অনিমার দিকে তাকিয়ে একটুখানি হেসে বলল,
" সেটাতো বলেই দিয়েছি। সয়ম্বরা যেদিন বরমালা পরাবে।"
আদ্রিয়ান কথাটা শুনে অনিমা হালকা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলল। আদ্রিয়ানের কথা শুনে রাইমা, জাবিন, নাহিদ অভ্র একসাথে বলে উঠল,
" ওগো সয়ম্বরা, এবারতো বরমালা পরিয়ে দাও।"
অনিমা আর ওখানে বসে থাকতে পারল না। লজ্জা পেয়ে ওখান থেকে উঠে চলে গেল। ও এমনিতেই এবিষয়ে ভীষণ লাজুক। তারওপর ওরা সবাই বারবার ইচ্ছে করেই ওকে এভাবে অস্বস্তিতে ফেলে।
____________
রঞ্জিত চৌধুরী আর কবির শেখ কেবিনে বসে কাজ করছিলেন তখন ওখানে রিক এলো, আসলে কালকে আদিবের বিয়েতে ও যাবে সেটা বলার জন্যেই এসছে। রিক নক করে বলল,
" ড্যাড আসব?"
রঞ্জিত চৌধুরী না তাকিয়েই বললেন,
" হ্যাঁ এসো!"
রিক ভেতরে এসে বলল,
" ড্যাড আমি.."
রিকের কথা শেষ হওয়ার আগেই রঞ্জিত চৌধুরী মাথা উঠিয়ে বললেন,
" কালকে তোমাকে দক্ষিণ গ্রামের সাইডের গোডাউনটায় যেতে হবে। আর ওখানকার লোকেদের সাথে দেখাও করবে। ইলেকশন সামনে তাই একটু সিনসিয়ার হও।"
" কিন্তু বাবা আমি কাল আদিবের বিয়েতে যাবো ভাবছিলাম।"
" আদ্রিয়ানের বন্ধু আদিব?"
" হ্যাঁ।"
" ও আদ্রিয়ানের বন্ধু! তোমার বন্ধুতো নয়, তাই ওখানে যাওয়ার তেমন কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু গ্রামের ওখানে যেতে হবে।"
" কিন্তু.."
" আমার শর্ত ভুলে গেছ?"
রিক রঞ্জিত চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে বলল,
" আর কিছু?"
" না, এখন যেতে পারো।"
রিক হনহনে পায়ে বেড়িয়ে গেল। কবির শেখ মুখ দিয়ে 'চাহ' টাইপ শব্দ করে উঠে গেলেন রিকের পেছন পেছন। এরপর রিককে বোঝালেন যে রঞ্জিত চৌধুরী যেটা বলছে আপাতত সেটা করাই ঠিক হবে। কিছু যুক্তি দিয়েও দেখিয়ে রিককে বোঝাতে সক্ষম হলেন। রিক প্রথমে আদ্রিয়াকে ফোন করে বলল যে ও যাবেনা। আদ্রিয়ান তেমন রিঅ্যাক্ট করে নি। শুধু বলেছে, 'আসলে ভালো লাগত, বাট ঠিকাছে।' তবে প্রমিস করিয়ে নিয়েছে যে খুব শীঘ্রই ওর এখানকার বাড়িতে আসতে হবে। রিকও প্রমিস করেছে তাড়াতাড়ি যাবে। এরপর স্নিগ্ধাকে ফোন করে জানিয়েছে ও যাবেনা তাই কোন প্রস্তুতির দরকার নেই। স্নিগ্ধা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেছে শুধু। ছোটবেলা থেকেই সবসময় সব আনন্দ, উৎসব, খেলাধুলা, বন্ধুবান্ধব থেকে দূরেই রাখত রিকের বাবা ওকে। রিক না শৈশবের অজ্ঞানতার আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছে, না কৈশোরের উচ্ছলতা উপভোগ করতে পেরেছে। তাই হয়তো যৌবনে ও এতোটা উগ্র আর বদমেজাজি।
____________
আরমানকে দুপুরের পরে নিয়ে আসা হয়েছে বাড়িতে। বেচারা এখনও হাটতে পারছেনা। হাতে ব্যান্ডেজও আছে। ওর মাথা থেকে আপাতত অনিমার চিন্তা সরে গেছে। সে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। ওকে রুমে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাই গিয়েই দেখে এসছে ওকে। অনিমাও গিয়ে একবার দেখে এসছে। আরমানের অবস্থা দেখে একটু মায়া হচ্ছিলো ওর কিন্তু বেশি মায়া দেখাতে যায়নি। তাহলে ছেলেটা যেটুকু সুস্থ আছে পরে তাও আর থাকবে না। সারাদিনের কাজে আদ্রিয়ানও ব্যস্ত তাই অনিমার সাথে তেমন কথা বা দেখা হয়নি।
সন্ধ্যার আগ দিয়ে তীব্র, স্নেহা আর অরুমিতাও এলো। আসলে ওরা কালকে আসতে চেয়েছিল কিন্তু আদিবের জোড়াজুড়িতে আজকেই আসতে হলো। অনিমা ওদেরকে পেয়ে আরও খুশি হয়ে গেছে। যদিও জাবিন রাইমা ওদের সাথেও ও ফ্রি কিন্তু ওদের সাথে অনিমা একটু বেশিই এটাচড। ওরা বসে আড্ডা দিচ্ছে তার মাঝে স্নেহা বলল,
" কতকিছু মিস করলাম ইয়ার। আমিতো দুদিন আগেই আসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এই গবেটটার জন্যে পারিনি।"
তীব্র হালকা ধমকে বলল,
" চুপ কর। তোর কোন কালের আত্মীয়র বাড়ি এটা? একদিন আগে এসছি এটাই অনেক। গাধা মেয়ে একটা।"
" আমি গাধা?"
" গাধাই তো?"
" তাহলে এই গাধার সাথে প্রেম করিস কেন শুনি?"
" ফেঁসে গেছি তাই!"
স্নেহা রেগে বলল,
" আচ্ছা তাই? ফাইন! দেন ব্রেকআপ।"
তীব্রও বিরক্তি নিয়ে বলল,
" হ্যাঁ ব্রেকআপ।"
অনিমা আর অরুমিতা একটুও বিচলিত না হয়ে আরামে চানাচুর চিবোচ্ছে। এতে ওরা এখন অভ্যস্ত। এদের সপ্তাহে চারবার ব্রেকআপ হয়, আটবার প্যাচআপ হয়। এ নতুন কিছুই না।
অনেকে ঝাকঝমকভাবে হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আজ। অনিমা সুন্দর করে হলুদ রঙের শাড়ি পরে হালকা করে সেজেছে। কৃত্রিম ফুলের হালকা কিছু গহনা পরে চুল ছেড়ে দিয়ে করিডর দিয়ে দ্রুত যাচ্ছে এমনিতেই লেট হয়ে গেছে তাই। সবাই অনেক আগেই চলে গেছে ওপরে। হঠাৎ করেই কেউ হাত টেনে ওকে রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। অনিমা তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান মুচকি হাসছে। হলুদ পাঞ্জাবী পরেছে, লাল ওড়নার মত কিছু একটা গলায় ঝুলিয়ে রাখা আছে, চুলগুলোও কপালে পরেছে খানিকটা, মুখে সেই সুন্দর হাসি। অনিমা রেগে বলল,
" সবসময় এভাবে হুটহাট টেনে নেওয়া আর দরজা বন্ধ করা কী আপনার জন্মগত দোষ?"
আদ্রিয়ান অনিমাকে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে বলল,
" উমহুম, প্রেমগত দোষ!"
" ছাড়ুন দেরী হচ্ছে।"
" হোক দেরী। আমি বেশি ইম্পর্টেন্ট নাকি হলুদের প্রোগ্রাম?"
অনিমা মুখ বাঁকিয়ে বলল,
" হলুদের প্রোগ্রাম।"
আদ্রিয়ান ওকে আরেকটু কাছে টেনে বলল,
" তাই না?"
" তাইতো! আপনিতো একটা পাগল। আরমানের সাথে এটা না করলেও হত।"
আদ্রিয়ান এবার একটু চেপে ধরে রাগীভাবে বলল,
" কেন মায়া হচ্ছে ওর জন্যে?"
অনিমা কিছু বলল না। যদি বলে 'হ্যাঁ' তাহলে আর রক্ষা থাকবেনা।
" ও তোমাকে পছন্দ করেছে সেটা বিগ ডিল না। করতেই পারে। বাট তোমার গায়ে হাত দেওয়া, পেন্ডেন্ট পরিয়ে দেওয়া ওর উচিৎ হয়নি। ইউ নো আই কান্ট টলারেট। তাই ওর শাস্তিটা অর্ধেক আমি দিয়েছি অর্ধেক ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। আমি শুধু পরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। অল্প ব্যাথাও পেতে পারত, কিন্তু এতো বাজেভাবে পরেছে সেটা ওর কপালের দোষ। আমি কী করতে পারি?"
অনিমা শুধু বোকার মত তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। কত সহজে নিজের সব দোষ ভাগ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিল। বাহ! ভাগ্যও হয়ত আদ্রিয়ানকে মনে মনে বকছে অনিমার মত।
" আচ্ছা যদি এরপর আবার আমার পেছনে পরে তো?"
" পরবে না, শিওর থাকো।"
" কেন?"
আদ্রিয়ান ফিসফিসে আওয়াজে বলল,
" সিকরেট!"
অনিমা মুখ গোমড়া করে নিল। এতো সিকরেট কেন এই ছেলের মধ্যে? পরে কিছু একটা ভেবে একটু কৌতুহলী হয়ে বলল,
" আরমানের মায়ের মাথা থেকে বিয়ের ভুত কীকরে নামল? মানে কী করেছেন আপনি?"
" ওটাও সিকরেট।"
অনিমা করুণ স্বরে বলল,
" বলুন না।"
আদ্রিয়ান আড়াআড়ি স্টাইলে ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,
" বলতেই হবে?"
অনিমা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ল। আদ্রিয়ান অনিমার দিকে একটু ঝুকে বলল,
" বলেছি যে তুমি এক বিশাল বড় মাফিয়ার হবু বউ। লোকটা ভীষণ ভয়ংকর, কিন্তু সে তোমাকে পাগলের মত ভালোবাসে। আর তোমার দিকে যে চোখ তুলে তাকায় তাকে সোজা ওপরে পাঠিয়ে দেয়। একবার একজনের চোখও তুলে নিয়েছে। শুধু তাই না কোন ছেলের মাও যদি এমন চিন্তা করে তাকেও... বুঝতেই পারছ। তার নজর সবসময় তোমার ওপর থাকে। সো আরমানের লাইফ ইজ ইন রিস্ক। ব্যাস! এটুকু শুনেই মহিলার হাওয়া ফুস...লাইক বালুন ইউ নো।"
অনিমা হেসে দিয়ে বলল,
" আপনি সত্যিই একটা পাগল!"
" হতে পারি।"
" হয়েছে এবার ছাড়ুন।"
অনিমা ছাড়াতে নিলেই আদ্রিয়ান অনিমাকে একদম নিজের কাছে এনে গালে আলতো করে হলুদ লাগিয়ে দিল। অনিমা আদ্রিয়ানের আলতো স্পর্শে আগেই চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। আদ্রিয়ান অনিমার কপালে কপাল লাগিয়ে ফলল,
" ওপরে সবাই সবাইকে হলুদ লাগাবে। কিন্তু তোমার ওপর প্রথম অধিকার আমার। আমার অধিকার আমি বুঝে নিতে জানি মায়াবিনী, তাই প্রথম হলুদ আমিই তোমাকে ছোঁয়ালাম।"
.
.
.
চলবে........................................