আদ্রিয়ান অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আরমানের মায়ের দিকে। ওর সামনে আজ ওরই ভালোবাসার মানুষের, আরও সহজ করে বললে হবু বউয়ের বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে? আর সেই প্রস্তাবটাও কি-না ওকেই দিচ্ছে। আদ্রিয়ান এখন হাসবে না-কি কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছেনা। আরমানের মা হেসে বলল,
" তুমি বুঝতে পারছতো কী বলছি?''
ওনার কথায় আদ্রিয়ানের হুস এল। আদ্রিয়ান একটু গলা ঝেড়ে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
" আপনি অনিমার কথা বলছেন? মানে ঐ পিচ্চি মেয়েটা?"
" হ্যাঁ তোমার ফুপাতো বোন, অনিমা।"
আদ্রিয়ান একটু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
" বিয়েতো হবেনা। মানে ফুপা এতো তাড়াতাড়ি ওর বিয়ে দেবেনা। ওর এখনও পড়াশোনা শেষ হয়নি।"
আরমানের মা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বললেন,
" ও এই ব্যাপার? সমস্যা কী? আমরা বিয়ের পরেও পড়াব। আমি কথা বলে নেব এই বিষয়ে।"
আদ্রিয়ানের মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে। দুনিয়াতে মেয়ের অভাব না-কি? ওর বউটাকেই পেল?তবুও একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,
" ওরতো এখনও বিয়ের বয়সই হয়নি। ও তো নাবালিকা। সবে সতেরো বছর হয়েছে।"
" কী? কিন্তু আমিতো জানি ও ওনার্স সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী। উনিশ বা বিশ তো হওয়ারই কথা বয়স।"
" আসলে অনেক ট্যালেন্টেড মেয়েতো! তাই আগে আগে ভর্তি করে দিয়েছে।"
" তাই বলে এতো আগে? কীভাবে সম্ভব? কিছুই তো মিলছেনা..যাই হোক এক বছরই তো কম। আমাদের কোন অাপত্তি নেই। তুমি তোমার ফুপি..ও ফুপির তো ফোন নেই চুরি হয়ে গেছে। আচ্ছা তোমার ফুপার নাম্বারটাই দাও। আমি কথা বলে নিচ্ছি।"
আদ্রিয়ান এবার মহা ঝামেলায় পরল। এই মহিলাতো পেছনই ছাড়ছেনা। আদ্রিয়ান মাথায় চট করে কিছু একটা এল। ও একটু ভেবে আরমানের মায়ের একটু কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
" আন্টি আসলে আপনাকে বলতে চাইনি আমি, আমাদের পারিবারিক ব্যাপারতো তাই। কিন্তু আপনি যখন এমন কিছু একটা ভেবেছেন তখন আমার জানানো উচিত। আর যাই হোক কাউকে ঠকানোতো যাবেনা তাইনা?"
আরমানের মা শোনার জন্যে উৎসাহি হয়ে একটু ঝুঁকে নিজেও আস্তে করে বললেন,
" কী এমন কথা?"
আদ্রিয়ান আরমানের মায়ের দিকে তাকিয়ে বাঁকা একটা হাসি দিল।
পরশু বিয়ে তাই আজ কাজের চাপটা অনেকটাই বেড়ে গেছে। সকাল থেকেই সবাই নানারকম কাছে ব্যস্ত। তবে অনিমা একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করছে সেটা হল আরমানের মা আজ আর ওকে সেভাবে দেখছে না। বরং ওর থেকে দূরে দূরেই থাকছে। মাঝেমাঝে যাও একটু তাকাচ্ছে তাও অদ্ভুতরকমভাবে। প্রথমে অবাক হলেও পরে অনিমা ভাবল যা খুশি করুন তাতে ওর কী? তবে আরমানও সকাল থেকে কেমন মুখ ভার করে আছে আর কিছুক্ষণ পরপরই অনিমার দিকে দেখছে। তবে আদ্রিয়ানের ব্যবহার আজ বেশ স্বাভাবিক। ও ভালোভাবেই সবার সাথে হেসে খেলে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু অনিমা জানে যতই স্বাভাবিক থাক ওর ওপর দিয়ে একটা ঝড় নিশ্চয়ই যাবে। ব্যস্ততার মাঝে সারাটাদিন কাটল ওদের আজ। দুপুরে খাওয়া শেষ করে সবাই একটু রিল্যাক্স করছে। অনিমা, জাবিন, রাইমা মিলে গল্প করছিল আর হাটছিল। হঠাৎ দাদি রাইমাকে ডাকল কেন জেনো। জাবিন ফোনে ব্যস্ত তাই অনিমা হাটছে আর বাগানটা দেখছে। বাগানটা বেশ সুন্দর। হঠাৎ ওর সামনে এসে আরমান দাঁড়াল। অনিমা অনেকটা চমকে গেল, পরে নিজেকে সামলে বলল,
" কিছু বলবেন?"
" অনি দেখ কাল থেকে মা কীসব বলছে। বলছে তোমার সাথে আমার বিয়ে হবেনা। উনি নাকি রাজি নন। অথচ ওনারই তোমাকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ ছিল। এরকম কেন করছে বুঝতে পারছিনা। আমিতো ঠিক করে নিয়েছি বিয়ে করলে তোমাকেই করব। কিন্তু হঠাৎ করেই আম্মু বেঁকে বসল। তুমি কী বুঝতে পারছ আমার সমস্যাটা?"
অনিমা বোকার মত না বোধক মাথা নাড়ল। ও আসলেই বোঝেনি কিছু। কী বলছে এই ছেলে? আরমান অনিমান অনিমার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বলল,
" আরে ইয়ার পছন্দ করি আমি তোমাকে। আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইউ। মা মানুক আর না মানুক দরকারে আমরা পালিয়ে বিয়ে করব। শুধু তুমি রাজি হয়ে যাও প্লিজ।"
অনিমাতো এবার সত্যিই বোকা বনে গেছে। কী বলছে এই ছেলে? অনিমা ইতস্তত করে বলল,
" দেখুন আমি.."
আরমান অনিমার দু বাহুর ওপর হাত রেখে বলল,
" প্লিজ রাজি হয়ে যাও। দরকারে আমরা আজই লুকিয়ে বিয়ে করব। তুমি রাজি তো?"
অনিমা দ্রুত নিজেকে ছাড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর ভাবছে এর এই পছন্দের চক্করে অনিমার কপালে কেন শনি নিয়ে আসছে? ঐ পাগলটা কোনভাবে দেখে ফেললে আরমানের কপালে কী আছে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা। ওর যা খুশি হোক তাতে অনিমার কিছু যায় আসেনা, ওরতো নিজের কথা ভেবে ভয় হচ্ছে। অনিমা কাঁপা গলায় কিছু বলতে যাবে তার আগেই কেউ বলে উঠল,
" অনি তোমাকে দাদি ডাকছে।"
অনিমা চমকে তাকাল। আদ্রিয়ান হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিয়ানের চোখে যে মারাত্মক রাগ আছে সেটা অনিমা ভালোই বুঝতে পারছে। অনিমা যেতে নিলেই আরমান বলে উঠল,
" আদ্রিয়ান, তুমি তোমার বোনকে একটু বোঝাও প্লিজ আর আমার বাবা মাকেও। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই এতে সমস্যা কী তুমিই বল? আমি কী ছেলে হিসেবে খারাপ? আর আমারতো মনে হয় অনিমার সাথে আমাকে বেশ মানায়।"
অনিমা মনে মনে যত দোয়া জানে সব পড়ছে। আজ ওকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। আর মনে মনে বলছে, 'আরে ভাই থাম, দয়া করে থাম। কার সামনে কী বলছিস?' আদ্রিয়ান আরমানের কথায় পাত্তা না দিয়ে অনিমার উদ্দেশ্য ঠান্ডা গলায় বলল,
" কী হল যাও?"
অনিমা একটা ঢোক গিলে মাথা নিচু করে চলে গেল। আদ্রিয়ান একপলক আরমানের দিকে তাকিয়ে ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে নিজেও চলে গেল।
_____________
রাত সাড়ে দশটা বাজে। জাবিন, রাইমা বাকি মেয়েরা সবাই গল্প করছে। কিন্তু অনিমার ক্লান্ত লাগছে তাই ও ওর রুমে চলে এলো। রুমটাতে ও আর জাবিন থাকে। কিন্তু জাবিন আজ অনেক দেরীতে আসবে, সবার সাথে গল্প করবে তাই। অনিমা রুমে এসে বেডে বসে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে না ফেলতেই দরজা লাগানোর আওয়াজে চমকে উঠল। তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। মুখে একটা শয়তানী হাসি ঝুলে আছে ঠিকই কিন্তু ভেতর ভেতর যে কী ভয়াবহ পরিমাণ রেগে আছে কেউ জানেনা। আদ্রিয়ানকে দেখে অনিমা ভয়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। এমনিতেই দাঁড়িয়ে গেল ও। আড্ডা আর কাজের জন্যে কিছুক্ষণের জন্যে ভুলেই গেছিল সেসব কথা। মনে থাকলে কখনই এভাবে একা একা থাকত না। ও কাঁপাকাঁপা গলায় বলল,
" আ্ আপনি এখানে কেন? আর দ্ দরজা বন্ধ করলেন কেন?"
আদ্রিয়ান মুখে সেই ডেবিল টাইপ হাসি ধরে রেখেই বলল,
" আদর করার সময় দরজা জানালা সব বন্ধ করে নিতে হয় জানপাখি। লোকে দেখে ফেললে পরে তুমিই লজ্জা পাবে।"
" ম্ মানে?"
" ওয়েট বেবী, ওয়েট। এতো তাড়া কীসের? সবটা বোঝাচ্ছি ধীরে ধীরে।"
আদ্রিয়ান পকেটে হাত ঢুকিয়ে সিটি বাজাতে বাজাতে বিছিনায় বসে অনিমাকে ভালোভাবে স্কান করে নিয়ে বলল,
" হুম.. রূপ ছিটকে ছিটকে পরছে। ছেলের পছন্দ হয়, ছেলের মায়ের পছন্দ হয়। সোজা বিয়ে করে ঘরে তুলতে চায়। বাহ!"
অনিমা একটু অবাক হল ছেলের মায়েরও পছন্দ মানে? আদ্রিয়ান মুখে হাসি রেখেই বলল,
" তোমার জন্যে আমার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে আরমানের মা, আরমানের জন্যে। তুমি কী বল? হ্যাঁ বলে দেব? ছেলের এতো ভালো চাকরি, দেখতেও ভালো। কেমন জেনো? হ্যাঁ বলিউড স্টার। এরপর আবার দুজনকে নাকি পাশাপাশি খুব ভালো মানায়। কি বল সম্বন্ধ পাকা করে ফেলি? এতো ভালো প্রস্তাব।"
অনিমা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। আদ্রিয়ান উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
" আচ্ছা এসব ছাড়ো। আমিতো এখানে প্রেম করতে এসছি তোমার সাথে, প্রেম করার সময় ওসব আউটসাইডারদের কথা না ভাবাই ভালো।"
কথাটা বলে আদ্রিয়ান অনিমার দিকে এগোতে লাগল। অনিমা একটা শুকনো ঢোক গিলে পেছাচ্ছে বেশ বুঝতে পারছে যে ওর কপালে আজ খুব দুঃখ আছে। সব দোষ ঐ মা আর ছেলের। নিজেরা উল্টোপাল্টা কাজ করে ওকে ফাঁসিয়ে দিল। আদ্রিয়ান বাঁকা হেসে বলল,
" তো বেবী, শুরু করি?"
অনিমা দ্রুত ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতে নিলে অাদ্রিয়ান ওর হাত টেনে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এল। ওর কোমর জড়িয়ে নিজের সাথে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে ধরল। আদ্রিয়ান কোমর এতো জোরে চেপে ধরেছে যে অনিমা প্রচন্ড ব্যাথা পাচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে এতক্ষণ বলা কথাগুলো শুনতে ফানি লাগলেও আদ্রিয়ান প্রচন্ড রেগেই বলেছে। আর এখনতো সীমাহীন রেগে আছে। ব্যাথায় কাঁদোকাঁদো মুখ করে আদ্রিয়ানের দিকে তাকাল অনিমা। নিজেকে ছাড়াতে চাইছে কিন্তু আদ্রিয়ানের শক্তির কাছে ওর শক্তি কিছুই না। আদ্রিয়ান আরেকটু চেপে ধরে বলল,
" এখন যেভাবে ছাড়ানোর চেষ্টা করছ সেভাবে আরমান যতবার ছুঁয়েছে ততবার ছাড়ানোর চেষ্টা করোনি কেন? তখন এতো জোর ছিল কোথায়? আর আমি ছুঁলেই শুধু অস্বস্তি হয় তাইনা?"
এরপর ঘাড় বাঁকা করে অনিমার গলার দিকে তাকিয়ে দেখল সেই পেন্ডেন্টটা এখনও পরে আছে অনিমা। আদ্রিয়ান ঠোঁটে আবার সেরকম হাসি ঝুলিয়ে বলল,
" বাহ! এখনও এটা খোলনি? এতো মায়া পরে গেছে?"
অনিমার এখন নিজেরই নিজের মাথা ফাটাতে ইচ্ছে করছে। এই পেন্ডেন্ট এর কথাতো ভুলেই গেছিল ও, খুলবে কীকরে? এসব ভাবনার মাঝেই জোরে ব্যথা পেয়ে 'আহ' করে উঠল অনিমা। হ্যাঁ আদ্রিয়ান পেন্ডেন্টটা একটানে খুলে নিয়েছে। অনেকটা ব্যথা পেয়েছে অনিমা। ও এবার কেঁদেই দিল। আদ্রিয়ান সাথেসাথেই ওকে দেয়ালের সাথে আটকে ধরে বলল,
" একদম কাঁদবেনা। উল্টোপাল্টা কাজ করার সময় মনে থাকেনা? অন্যকেউ তোমাকে ছোঁয়ার সাহস পাবে কেন? কেন ছোঁবে তোমাকে? তোমার গলায় এসব কেন পরিয়ে দেবে? হ্যাঁ?"
অনিমা মাথা নিচু করে কাঁদছে। দুই বাহু একেবারে শক্ত করে ধরে চেপে রেখেছে। তারওপর ঘাড়ের দিকটা জ্বলছে ওর। মনে মনে ইচ্ছেমতো আদ্রিয়ানকে বকছে ও। এরকম করে কেউ? এমন পাগল কেন লোকটা? আদ্রিয়ান খেয়াল করল অনিমার ঘাড়ের ওদিকটা লাল হয়ে গেছে। আদ্রিয়ান অনিমার গলায় হালকা আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করে ঝুঁকে ঠোঁট ছোঁয়ালো। হালকা কেঁপে উঠল অনিমা। মাথা তুলে অনিমার চোখ মুছে দিয়ে আদ্রিয়ান নরম স্বরে বলল,
" খুব লেগেছে না? এমন কাজ করো কেন হুম? তুমি জানো রেগে গেলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়।"
অনিমার রাগ লাগছে এবার ওর কোমর, হাত, গলা সব ব্যাথা বানিয়ে দিয়ে ন্যাকামো করছে। অনিমা আদ্রিয়ানকে ঠেলে সরিয়ে বলল,
" আমাকে অন্যকেউ ছুঁলে আপনার কী হ্যাঁ? আপনিও তো ছুঁলেন আমাকে সেইবেলা? আর তাছাড়াও যখন ঐ স্মৃতি যখন আপনার হাত জড়িয়ে রেস্টুরেন্টে বসে থাকে, বিয়ে বাড়িতে মেয়েগুলো আপনার গায়ে ঢলে পরে তখন কিছু না? আমায় কেউ ছুঁলেই দোষ?"
আদ্রিয়ান দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
" স্মৃতি আমার বন্ধু, আর ঐ মেয়েরা আদিবের বোন মানে আমারও বোন। আরমান তোমার কে হয় শুনি?"
অনিমা ভয় আর রাগের মিশ্র অনুভূতিতে কী বলছে নিজেই জানেনা তাই বলে ফেলল,
" হয়না তো কী হয়েছে হ্যাঁ? বানিয়ে নেব। এমনিতেও তো বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেই?"
আদ্রিয়ান অনিমাকে আবারও নিজের দিকে টেনে নিয়ে বলল,
" আরমানের বউ হওয়ার খুব শখ?"
" হবে না কেন? ছেলে হিসেবেতো ঠিকঠাকই আছে। আর যাই হোক আপনার মত এভাবে টর্চার করবেনা।"
আদ্রিয়ান অনিমাকে কপালের চুলগুলো সরাতে সরাতে বলল,
" আজ বলেছ বলেছ। কিন্তু ভুল করেও যদি আরেকবার মুখ দিয়ে এই কথা বেড় হয় একদম খুন করে ফেলব।"
অনিমা ভয় পেয়ে একটা ঢোক গিলল। আর কিছু বলল না। কারণ একে এখন আর ক্ষেপানো ঠিক হবেনা। না জানি কী করে বসে।
" কী মনে থাকবে?"
আদ্রিয়ানের থমকিতে অনিমা দ্রুত হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ল। আদ্রিয়ান মুচকি অনিমার কপালে চুমু দিয়ে কানের কাছে মুখ এনে বলল,
" গুড নাইট জানপাখি। হ্যাভ আ সুইট ড্রীম।"
বলে আদ্রিয়ান দরজা খুলে চলে এলো। অনিমা দ্রুত এক গ্লাস পানি নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিল। তখনই জাবিন এসে অবাক হয়ে দরজার দিকে একবার তাকিয়ে অনিমার দিকে তাকিয়ে বলল,
" ভাইয়া হঠাৎ এই রুমে কেন এসছিল?"
অনিমা মুখ মুছে ভীত কন্ঠে বলল,
" ডোস দিতে। এদিকের ডোস দেওয়া শেষ। ঐদিকে এবার কী করে খোদা জানে। আল্লাহ দেখ ছেলেটা যাতে প্রাণে বেঁচে যায়।"
জাবিন হাত উঠিয়ে বলল,
" আমিন।"
অনিমা তাকাতেই জাবিন ফিক করে হেসে দিল। কিন্তু অনিমারও হাসি পাচ্ছে এখন। ঐ ছেলের কপালে শিওর দুর্ভোগ আছে। কিন্তু মায়াও হচ্ছে বেচারার জন্যে।
সকালে চেঁচামেচি শুনে অনিমা আর জাবিন দুজনেরই ঘুম ভাঙল। এতো চেঁচামেচি শুনে ওরা উঠে দ্রুত বাইরে এলো। খেয়াল করে বুঝল আওয়াজ আরমানের রুম থেকেই আসছে। অনিমা আর জাবিন তাড়াতাড়ি সেই রুমে ঢুকে দুজনেই অবাক হয়ে গেল। অনিমা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে।
.
.
.
চলবে......................................