রাত তিনটা বাজে। বাইরে থেকে আসা মৃদু বাতাসে রুমের পর্দাগুলো হালকা নড়ছে। মোমবাতিগুলো সব নিভে গেছে। তবুও বারান্দা দিয়ে আসা পূর্ণ চাঁদের উজ্জ্বল আলোয় গোটা রুম হালকা আলোকিত হয়ে আছে। আদ্রিয়ানের উন্মুক্ত বুকে মাথা রেখে পরম শান্তিতে চোখ বন্ধ করে রেখেছে অনিমা। কিন্তু ঘুমায়নি এখনো। যদিও চোখে হালকা ঘুম এসেছে এতক্ষণে। কিন্তু আপাতত ও এখন আদ্রিয়ানের শরীর থেকে আসা মাতাল করা ঘ্রাণে হারিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর অনিমার চুলে আঙুল বুলাতে বুলাতে আদ্রিয়ান বলল,
" কী ব্যাপার ঘুমাবে না? সকাল সাতটার মধ্যে কিন্তু আমাদের আবার বাড়ি পৌঁছাতে হবে।"
অনিমা কিছুই বলল না শুধু আদ্রিয়ানকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। ওর ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলে আছে হালকা। আদ্রিয়ান অনিমার মাথায় একটা চুমু দিয়ে আরও শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে ফেলল। আজ ওর শান্তির ঘুম হবে, পরম শান্তির।
________
সকাল আটটার দিকে রিক আর স্নিগ্ধা আবরার মেনশনে ফিরলো। দুজনেই বেশ চুপচাপ হয়ে আছে। সারাপথ কেউ কারো সাথে কথাও বলেনি। অজানা এক কারণে দুজনের মধ্যেই সংকোচবোধ হচ্ছিল। রিক-স্নিগ্ধা সারারাত সেই ফার্মহাউজেই ছিল। স্নিগ্ধা রিককে ভালোবাসার কথাটা বলার পর রিক কিছুক্ষণ চুপ ছিল। এরপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছিল,
" আমি আগেই কিছুটা অনুমান করেছিলাম। কিন্তু ভেবেছিলাম আমার মনের ভুল। দেখ স্নিগ্ধু নীলপরী আমার অনেকটা জুড়ে ছিল, এখনো আছে। ভবিষ্যতের কথা জানিনা। ও এখন অন্যকারো, আমার ভাইয়ের বউ। ও আমার ভাগ্যে ছিলোনা। আমার কষ্ট হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তারমানে এই নয় যে আমি চিরকাল দেবদাস হয়ে জীবন পার করে দেব। আমি মুভ অন করব। অবশ্যই করব। কিন্তু আমার একটু সময় চাই রে। এখনই আমি কিছু ভাবতে পারব না। তবে একটা কথা দিতে পারি, যেদিন আর যখনই হোক না কেন আমার বউ তুই-ই হবি। সেটা তুই আমাকে ভালোবাসি না বললেও আমি ঠিক করে নিতাম। আর রইল আমার ভালোবাসার কথা। দ্বিতীয়বার ভালোবাসা যদি সত্যিই সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে আমার দ্বিতীয় এবং শেষ ভালোবাসাও তুই-ই হবি।"
স্নিগ্ধা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল রিকের কথাগুলো। চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরেছিল ওর। এ ছাড়া আর কিছুই তো প্রয়োজন নেই ওর। এর চেয়ে বেশি কী চাই? কারো জীবনের প্রথম ভালোবাসা হতে পারা সৌভাগ্যের, কিন্তু কারো জীবনের শেষ ভালোবাসা হয়ে উঠতে পারা পরম সৌভাগ্যের। এমন ভাগ্য কজনের হয়? রিক যদি ওকে এইটুকু দিতে পারে তাতেই ও খুশি।
করিডর দিয়ে হেঁটে ওরা দুজনেই নিজেদের রুমের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। কিন্তু আদ্রিয়ানের রুমের সামনেটা পাস করতে গিয়ে ওরা দুজনেই থেমে গেল। ভ্রু কুঁচকে গেলো দুজনেরই। অবাক হয়ে একে ওপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে আবার দরজার দিকে তাকাল। নাহিদ, আদিব, আশিস, তীব্র, জাবিন, অরুমিতা, স্নেহা, তনয়া সব এখনো অনি-আদ্রিয়ানের রুমের সামনে পড়ে আছে। একেকজন একপ্রকার মরার মত করেই ঘুমাচ্ছে। স্নিগ্ধা অবাক হয়ে বলল,
" কেসটা কী হল বলোতো?"
রিক হাত ভাজ করে বলল,
" রাতে ওদের দুজনকে ডিসটার্ব করার প্লান করছিল মনে হয়। আদ্রিয়ানকে আমি যতদূর চিনি ওদের প্লানের আগা টু গোড়া গোটাটাই ফ্লপ হয়েছে। তাই এখানেই ঘুমিয়ে পরেছে সব।"
বলে ফিক করে হেসে ফেলল। স্নিগ্ধা কোমরে হাত রেখে বলল,
" অদ্ভুত! এরা কী কোনদিনও মানুষ হবেনা না-কি? কী সব আজগুবি বুদ্ধি। চল ওঠাই সবগুলোকে।''
এরমধ্যেই অনিমা দরজা খুলল। নাহিদ আর আশিস পুরো দরজার সাথে হেলান দিয়েই ঘুমিয়ে ছিল। অনিমা দরজাটা খোলায় দুজনেই পেছন দিকে পরে গেছে। আচমকা এভাবে পরে যাওয়াতে দুজনেই হুড়মুড়িয়ে উঠে বসল। রিক আর স্নিগ্ধা দুজনেই হেসে ফেলল ওদের কান্ড দেখে। আর অনিমা পুরোপুরি বোকা বনে গেল। সকাল সকাল এরা রুমের দরজার কাছে বসে কী করছে? নাহিদ আর আশিস বোকা বোকা চোখে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে। রিক আর স্নিগ্ধার হাসির আওয়াজ শুনে আদিব, তীব্র, জাবিন, অরুমিতা, তনয়া, স্নেহা সব উঠে পরল। সবগুলোই চারপাশে একবার তাকিয়ে বোঝার চেষ্টায় ছিল যে, কী হল? কিছুক্ষণের মধ্যেই সবটা মনে পড়তেই গোলগোল চোখে অনিমার দিকে তাকিয়ে আছে অনিমা এখনো চোখ ছোটছোট করে দেখছে ওদের। এরমধ্যেই আদ্রিয়ান উঠে এলো। পরনে একটা সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি আর জিন্স। চোখ কচলাতে কচলাতে দরজার কাছে এসে লম্বা একটা হাই তুলে, কপালে পরা এলোমেলো চুলগুলো নেড়ে ফ্লোরে বসে থাকা বাকিদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল। তারপর দরজায় একহাত রেখে বলল,
" সকাল সকাল সব আমার রুমের সামনে ফ্লোরে বসে আছিস কোন দুঃখে? ধর্মঘট করার প্লান করছিলি নাকি?"
ওরা সবাই দ্রুত উঠে দাঁড়ালো। আদিব চোখ কচলে একটু ভালোভাবে তাকিয়ে বলল,
" ওই শালা! তুই চিটিং করে ভেতরে ঢুকলি কেন?"
আদ্রিয়ান নাকে আঙুল ঘষে বলল,
" ভাষা ঠিক কর। আমার রুমে আমি কীভাবে ঢুকবো সেটা টোটালি আমার ব্যাপার! তাইনা?"
নাহিদ বলল,
" বাট কানে কী তুলা গুজে নিয়েছিলি? নাকি টেম্পোরারি শুনতে পাওয়ার ফিচারস্ আনস্টল করে দিয়েছিলি?"
অরুমিতা বলল,
" সেটাই! মনে হচ্ছিলো এরা এই দুনিয়াতেই নেই।"
জাবিনও বলল,
" একদমই। হচ্ছিল টা কী ওখানে?"
অনিমা এবার বুঝতে পারছে কাল রাতে আদ্রিয়ান কেন এসব বলছিল। সত্যিই কী দুষ্টু পরিকল্পনা ছিল এদের। কাল এখানে থাকলেতো অনিমা বারবার লজ্জা পেয়ে পেয়ে মরেই যেত। তবে ওর বরটার মাথায়ও কম বুদ্ধি নেই। মানতেই হবে। দেখতে হবেতো বরটা কার! এসব ভেবে আপন মনেই হাসল অনিমা। আদ্রিয়ান বলল,
" সবগুলো গাধার দল! বাসর রাতে যা হয় সেটাই হচ্ছিল। সিম্পল! আমার কথা ছাড়। তোদের কথা বল। আমার রুমের সামনে ফ্লোরে এভাবে পড়ে ছিলি কেন? পাহারা দিচ্ছিলি বুঝি? এই না হলে বন্ধু! বন্ধুর বাসর ঘরের সামনে বসে সারারাত বসে মশা মারতে মারতে পাহারা দিচ্ছিল। যাতে কেউ ডিসটার্ব করতে না পারে। বাহ! এই কাজের পুরস্কার হিসেবে আজ আমাদের বাড়িতে তোদের খাওয়া ফ্রি করে দিলাম যা।"
ওরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। এটা কোন কথা হল? ওরাতো এমনিতেই ইনভাইটেড। ওদের এত অবাক চাহনীকে পাত্তা না দিয়ে আদ্রিয়ান বলল,
" জানপাখি, জামা বের করে দাও তো। আমিও শাওয়ার নেব। তেরে জেস্যা ইয়ার কাহা, কাহা এইসা ইয়ারানা?"
গুনগুনিয়ে গাইতে গাইতে আদ্রিয়ান ভেতরে চলে গেল। অনিমা একবার হতাশ চাহনী দিয়ে নাহিদ ওদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে ভেতরে চলে গেল। ওরা এখনো বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে। রিকের দিকে ওদের চোখ পড়তেই রিক মেকি হেসে বলল,
" আরও মশা মারো বসে বসে।"
বলে চলে গেল নিজের রুমের দিকে। স্নিগ্ধাও হাসতে হাসতে চলে গেল। আর বাকিরা এখনো থ মেরে আছে। কী হল ব্যাপারটা? ওরা এখনো এই রহস্যই উদ্ঘাটন করতে পারছে না যে সারারাত এদের এতোভাবে জ্বালানোর চেষ্টা করেও কোন লাভ হলোনা কেন?
_________
আবরার মেনশনে আজ লোকজনের ভীর অনেক বেশি। প্রথমত একটা বিয়ে বাড়ি। দ্বিতীয়ত একজন সেলিব্রিটির রিসিপশন। তাই মিডিয়ার লোক, বিভিন্ন সিঙ্গার, এক্টর, ডিরেক্টর অনেকেরই আসার কথা। অনেকে এসেও গেছে। সকলেই এইমুহূর্তে কাজে ভীষণ ব্যস্ত। অনিমাকে আজও আবার সাজতে হচ্ছে। আজ একটু বেশিই বিরক্ত হচ্ছে অনিমা। এই তিনদিনে কতবার সাজতে হয়েছে ওকে হিসেব নেই। একেক রিচুয়ালসের জন্যে একেকরকম সাজ। মাথা ধরে যাচ্ছে ওর একপ্রকার। স্নিগ্ধা, অরুমিতা, স্নেহা, জাবিন, তনয়া পাঁচজনেই অনিমার রুমে বসে আছে। স্নিগ্ধা আর অরুমিতা সাজাচ্ছে। বাকিরা সাহায্য করছে। তখনই আশিস এলো রুমে। স্বর্ণের চুড়িগুলো দিতেই এসছিল ও। কিন্তু এগুলো দিয়ে যাওয়ার সময় অরুমিতার দিকে কয়েকপলক স্হির দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছিল। অপরদিকে আশিসকে দেখেই অরুমিতার হাসিখুশি মুখ কালো হয়ে গেছে। যেটা অনিমা খুব ভালোভাবে খেয়াল করেছে। আশিস চলে যেতেই অনিমা বলল,
" কী ব্যাপার বলত? আমি কয়েকমাস যাবতই খেয়াল করছি যে তোদের মধ্যে কিছু একটা চলছে। প্রথম থেকেই তোরা একে ওপরের প্রতি কেমন একটা বিহেভ করছিস। আগে থেকেই চিনতিস তোরা একে ওপরকে?"
ওরাও উৎসুক চোখে তাকালো অরুমিতার দিকে। অরুমিতা কিছু বলার আগেই অনিমা বলল,
" দেখ তুই কথা ঘোরাবিনা একদম! আমি আগেই তোকে জিজ্ঞেস করতাম। কিন্তু করিনি। ভেবেছিলাম তুই নিজেই বলবি। কিন্তু বলিস নি। এবার জিজ্ঞেস করছি, তাই সরাসরি বলে দে।"
অরুমিতা কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সবটা বলল ওদের। কলেজ লাইফে অশিসের প্রথম মেসেজ। অরুমিতার রিপ্লে করা। কথা বলতে বলতে একে ওপরের প্রতি দুর্বল হয়ে পরা। ওদের ছয়মাসে চলতে থাকা সম্পর্ক সবটাই বলল। অনিমা অবাক হয়ে বলল,
'' সম্পর্কটা ভাঙলো কীকরে?"
অরুমিতা মলিন হেসে বলল,
" ও নিজেই ভেঙ্গে দিয়েছে। হঠাৎ একদিন ফোন করে বলল ওর পক্ষে এই সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না। কেন? কী কারণে? কিচ্ছু বলেনি। শুধু বলেছে ও এই সম্পর্ক রাখতে পারবে না।''
স্নিগ্ধাও অবাক হয়ে বলল,
" শুধুশুধুই এভাবে 'না' করে দিল?"
অরুমিতা বলল,
" না, কারণ ছিল। সেটা পরে জেনেছিলাম। ওর প্রেমা নামের একটা মেয়ের সাথে আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। আমার সাথে সম্পর্কে জড়ানোর আগে থেকেই। ঠকাচ্ছিল আমাকে ও। ভালোই বাসেনি কোনদিন আমায়। আমিই বোকা ছিলাম যে ওকে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবেসেছি।"
স্নেহা আগে থেকেই জানতো সব তাই কোন প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু সবাই বেশ অবাক হয়ে গেছে কারণ আশিস এমন করেছে ওরা ভাবতেই পারছেনা। তনয়া বলল,
" তাহলে এখন উনি কী চায়?"
অরুমিতা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
" কী জানি! এখন হঠাৎ ওনার আমার প্রতি ভালোবাসা আবার উতলে উঠেছে মনে হচ্ছে। বারবার ফোন করা, দেখা করতে চাওয়া, মেসেজ করা, এসবই চলছে কয়েকমাস যাবত। কিন্তু আমি কখনও ওনাকে ক্ষমা করতে পারবোনা, আর না ওনার কাছে ফিরব।"
বলে অরুমিতা চোখের কোণে জমা জলটা মুছে ফেলল। অনিমা কিছু বলবে তার আগেই মিসেস রিমা এসে তাড়া দিল ওদের সাজিয়ে নিচে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। ওরা সবাই একে ওপরের দিকে তাকিয়ে একটা শ্বাস ফেলল। এসব নিয়ে পরেও আলোচনা করা যাবে।
_________
নিমন্ত্রিত অতিথিরা সব চলে এসছে। অনিমাকেও সাজিয়ে নিচে নিয়ে আসা হয়েছে। অনিমা নীলের মধ্যে অ্যাশ রঙের ডিজাইন করা একটা শাড়ি পরেছে আজ। সাইড সিঁথি করে খোপা করে ফুলের গাজরা লাগিয়েছে চুলে। আদ্রিয়ানও অ্যাশ কালার একটা পাঞ্জাবী পরেছে যার বোতাম আর কলারের বর্ডার নীল রঙের। চুলগুলো বরাবরেই মতই কপালে পরে আছে। অনিমাকে নিচে নামতে দেখে আদ্রিয়ান অনিমার দিকে তাকিয়ে বুকের বা পাশে হাত দিয়ে ঘাড় হালকা বাঁকা করল। অনিমা ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই আদ্রিয়ান চোখ টিপ মেরে দিল। অনিমা আদ্রিয়ানের এমন কাজে লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে ফেলল। লোকটা এমন কেন?
অনিমা নিচে নামার পরেই একটা মেয়ে এসে হালকা করে জড়িয়ে ধরল ওকে। অনিমা প্রথমে অবাক হলেই পরে তাকিয়ে দেখল এটা গায়িকা স্মৃতি। স্মৃতি হেসে বলল,
" তুমিই অনিমা তাইতো?"
অনিমা মুচকি হেসে বলল,
" জি আপু, ভালো আছেন?"
স্মৃতিও উচ্ছসিত কন্ঠৈ বলল,
" একদম। এডি তোমার কথা অনেক বলেছে। সরি হ্যাঁ, আমার জন্যে তোমাদের মধ্যে মিসআন্ডারস্টন্ডিং হয়েছিল। চড় মেরে দিয়েছিলে এডিকে? ভাবা যায়!"
অনিমা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলল। কী কান্ডটাই না করেছিল ও। ছিঃ। স্মৃতি অনিমার কাঁধে হাত রেখে বলল,
" এমন স্বামীকে অবিশ্বাস করতে নেই ডার্লিং। মরে যাবে, তবুও অন্যকোন মেয়েকে নিয়ে কখনও কিছু ভাববে না। আমি জানি, সেটা তুমিও জানো। খুব লাকি তুমি, যে এরকম একটা আদ্রিয়ান পেয়েছো।"
অনিমা মুচকি হাসল শুধু। সবাই নানারকম কাজে ব্যস্ত। হঠাৎ জাবিনের চোখ পরল অভ্রর দিকে। অভ্র ফোনে কথা বলতে বলতে ওপরের দিকে যাচ্ছে। জাবিন কয়েকদিন যাবতই খেয়াল করছে যে অভ্র ওকে বেশিই এড়িয়ে চলে। বিশেষ করে জাবিনের ভালোবাসি কথাটা বলার পর থেকে। জাবিন কিছু একটা ভেবে অভ্রর পেছন পেছন গেল।
অভ্র ছাদে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল ফোনে। কথা বলা শেষ করে পেছন ঘুরে তাকিয়ে দেখে জাবিন দাঁড়িয়ে আছে। অভ্র পাত্তা না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু জাবিন আটকে নিল। ভ্রু কুঁচকে বলল,
" সমস্যা কী তোমার? ইগনোর করছো কেন আমাকে?"
অভ্র স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল,
" তোমার সাথে রেগুলার কথা বলার মত সম্পর্ক মনে হয় আমার নেই। আমি তোমার বড় ভাই এর পিএ, তোমার না।"
জাবিন মুচকি হেসে বলল,
" রেগুলার কথা বলার সম্পর্কই তো তৈরী করতে চাইছি। কিন্তু তুমিতো এখনো উত্তরই দিলে না।"
অভ্র আবার চলে যেতে নিলেই জাবিন অভ্রর কলার ধরে বলল,
" একদম না। আজ চলে যাওয়ার চেষ্টাও করবে না। আগে আমার উত্তর দিয়ে তবে যাবে। না হলে ছাড়বোনা।"
" জাবিন ছাড়ো!"
" বললাম না। আগে আমার উত্তর চাই।"
অভ্র এবার একটু রেগে গেল। দু হাত দিয়ে জাবিনের কাছ থেকে কলারটা ছাড়িয়ে বলল,
" আমার উত্তর হল 'না'। আমাদের মধ্যে এমন কোন সম্পর্ক হতে পারে না। কারণ আমি কমিটেড। আমার গার্লফ্রেন্ড আছে।"
.
.
.
চলবে........................................