মন বাড়িয়ে ছুঁই - পর্ব ০৫ - ফাবিয়াহ্ মমো - ধারাবাহিক গল্প


সন্ধ্যা থেকেই বাড়ির অবস্থা থমথমে।ডাক্তারের ঔষুধে জ্বর কমেনা মেহনূরের। জ্বরতপ্ত অবস্থার জন্য লাল হয়ে গেছে শরীর। চেহারার অবস্থাও বেশ বির্বণ। একদিনের মধ্যে শরীরের সব সুস্থতা যেনো হারিয়ে গেছে ওর। সকাল থেকেই পেটে কিছু পরেনি মেহনূরের। মা ও বড়মা খাবারের জন্য প্রচুর জোড়াজুড়ি করেছে, কিন্তু জ্বরাক্রান্ত মেহনূর কিচ্ছু মুখে তুলেনি। হান্নান শেখ আদরের নাতনীকে এ অবস্থায় দেখতে পারছিলেন না, বুকটা হাহাকার করে ছটফট করছিলো উনার। ডাক্তারকে এ পযর্ন্ত চারবার ডেকে ফেলেছেন তিনি, কিন্তু প্রতিবারই মোস্তফা ডাক্তার বিরক্ত গলায় বলেছেন সকাল পযর্ন্ত অপেক্ষা করতে, যদি অবস্থা আরো খারাপ হয় তাহলে দ্রুত শহরে ট্রান্সফার করতে হবে। এদিকে মারজাও জোর করে বৃদ্ধ হান্নানকে কিছু খাওয়াতে পারলেন না, নিরুপায় হয়ে বসে আছেন বাবামশাইয়ের সাথে। শানাজ, সাবা ও সুরাইয়া মেহনূরের পাশে বসে আছে। শানাজ ওর মাথার কাছে বসে একের-পর-এক তপ্ত কাপড় পানিতে চুবিয়ে কপালে পট্টি করছে। এদিকে সুরাইয়ার হাতে এখন শানাজের ফোন, সুরাইয়া একমনে সেটা নিয়ে বাংলা নাটক দেখছে। সাবা বিরস মুখে বসে থাকতেই হঠাৎ শানাজের পানে তাকিয়ে বলে, 

  - বুবু, ওকে কবিরাজ বাড়ি নিয়ে গেলে হয়না? ডাক্তারের টোটকায় তো জ্বরই কমছেনা। এমন করে চলতে থাকলে ও যে কঙ্কাল হয়ে যাবে জানোতো?

শানাজ কথাটা শুনেই চিন্তায় ডুব দিলো। জ্বরাক্রান্ত মেহনূরের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবলো। ভাবতেই চট করে সাবার দিকে তাকিয়ে কঠোর গলায় বললো, 

  - কবিরাজ বাড়িতে সবাই গেলেও মেহনূর যাবেনা। তুই কি জানিস না, ওর যে বাইরে হওয়া নিষেধ? মেজো মা শুনলে কি অবস্থা করবে এখনই ভুলে গেলি? মেজো মা যদি একবার শুনে মেহনূরকে বাইরে পাঠানোর ফন্দি করা হচ্ছে, তাহলে তোর পিঠের ছাল তুলে দিবে সাবা। 

শানাজের ক্যাটক্যাট কথায় চুপ হয়ে গেলো সাবা। ফোন থেকে মুখ তুলে সরু চোখে তাকালো সুরাইয়া। সুরাইয়ার ওমন দৃষ্টি দেখে শানাজ চুপচাপ নিজের কাজে মগ্ন হলো, কিন্তু সুরাইয়া চুপ রইলো না। নিজের মায়ের নামে ওমন কথা কস্মিনকালেও সহ্য করতে পারেনা সুরাইয়া। তাই ফোনটা বিছানায় রেখে সজাগ দৃষ্টিতে শানাজের দিকে তাকালো, গমগমে গলায় বললো, 

  - শানুবুবু, আমার মা এমন কি করেছে যার কারনে মেহনূরের ব্যাপার নিয়ে উনাকে কটাক্ষ করছো? 

শানাজ ভিজা তোয়ালে চিপড়ে মেহনূরের তপ্ত গালটা মুছতেই বললো, 

  - তোর মা যে ভালো জাতের মানুষ তাই বলতে বাধ্য হই। আর শোন, এখানে বসে তর্ক করবিনা। ও অসুস্থ। এই মূহুর্তে একটা শব্দও উচ্চারণ করবিনা। যা বলার বাইরে যেয়ে বলবি, আপাতত চুপ থাক। 

শানাজের শক্ত আচরণ সুরাইয়ার ছোট থেকেই অপছন্দ। শানাজ সবার সাথে হাসিখুশি আচরণ করলেও সুরাইয়ার সাথে রণমূর্তি ধারণ করে ক্যাটক্যাট উত্তর দেয়। সুরাইয়া আর বসলো না মেহনূরের পাশে, একপ্রকার ক্ষোভ দেখিয়ে রুম থেকে চলে গেলো। যাওয়ার সময় সাবাকেও টেনেটুনে সঙ্গে নিলে গেলো। শানাজ সব ঘটনা এমনভাবে অগ্রাহ্য করলো যেনো এখানে কিছু হয়নি। ওর মতো অসভ্য বোনকে শানাজ এমনেও হজম করতে পারেনা। প্রায় দুইঘন্টা মেহনূরের সেবায় শ্রম দিলো শানাজ, কিন্তু ফলপ্রসু হিসেবে কিছুই হলো না ওর। মাথায় হাত দিলে এখনো আগুনের মতো গরম। গতকাল এমন কি হয়েছে সেটাই কোনোভাবে মিলাতে পারছেনা শানাজ। বিছানার হেডসাইডে পিঠ লাগিয়ে বসলে হঠাৎ মেহনূর ঘোরের মধ্যে প্রলাপ বকতে থাকে। সবগুলো কথাই জড়িয়ে যাচ্ছে, সেই সঙ্গে এলোমেলো প্রতিটা কথা। শানাজ কপাল কুঁচকে বিড়বিড় করা মেহনূরের কাছে কান রাখলো। অস্ফুট সুরে মেহনূর বলছে, 

  - বাড়ি থেকে বিদায় করো, তাড়িয়ে দাও, দাদাভাই চলে যেতে বলো। 

শানাজ আশ্চর্য হতে গিয়ে নিজেকে শান্ত করে। মনকে সান্ত্বনা দেয় হয়তো জ্বরের ঘোরের হাবিজাবি বকছে। কিন্তু মেহনূর যখন একই কথা অজস্র উচ্চারণ করছে, তখন বাধ্য হয়ে ওর দুই বাহু ধরে কৌতুহল কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, 

  - মেহনূর, তুই কি শুনতে পাচ্ছিস? তুই এগুলো কি বলছিস? মেহনূর, তাকা না। জবাব দে। মেহনূর?

জ্বরের জন্য তিল পরিমাণ চোখ খুলার শক্তি পেলোনা মেহনূর। যতোবার খুলতে যায় ততোবারই নেত্রপল্লব বন্ধ হয়ে আসে ওর। শানাজ অনেকবার চেষ্টা করে শেষে হার মানলো। আরেকবার কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বরটা একটু যেনো কমেছে। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়তেই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হলো। শানাজ চকিত ভঙ্গিতে দরজার দিকে তাকালে নীতি ও প্রীতিকে দেখতে পেলো। দুজন অনুমতির জন্য অপেক্ষা না করে নিঃশব্দে রুমের ভেতর ঢুকলো। রুমে তখন সোলারের বাতি জ্বলছিলো, সিলিং ফ্যান বন্ধ। নীতি মৃদ্যু গলায় শানাজকে প্রশ্ন করলো, 

  - মেহনূরের অবস্থা কেমন? জ্বর কমেছে? 

শানাজ মলিন মুখে মেহনূরের দিকে দৃষ্টি দিয়ে হতাশার নিশ্বাস ছাড়ে। শেষে নীতির দিকে মুখ ফিরিয়ে ক্লান্ত গলায় বলে, 

  - একটু কমেছে, বেশি কমেনি। ও যে কেনো এতো অসুস্থ হয়ে গেলো বুঝতে পারছিনা। বৃষ্টির পানিতে ভিজলেও ওর জ্বর আসেনা, সেখানে কোনো কারন ছাড়াই জ্বর আসলো। 

নীতি তৎক্ষণাৎ শানাজের মুখ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। প্রীতির দিকে দৃষ্টি রেখে ঘন করে ঢোক গিললো। এখানে প্রীতির অবস্থাও ভীতু-ভীতু। নীতি ওকে ইশারায় শান্ত, স্বাভাবিক থাকতে বললো। প্রীতি সেটায় সায় বুঝিয়ে মাথা ' হ্যাঁ ' সূচকে দুলিয়ে ফেললো।নীতি কিছুক্ষণ চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতেই হঠাৎ কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে বললো, 

  - শানাজ, যদি কিছু মনে না করো একটা রিকুয়েস্ট করি? 

শানাজ প্রশ্ন শুনে কৌতুহলে বশীভুত হলো। হেডসাইড থেকে পিঠ সরিয়ে বিষ্ময়দৃষ্টিতে বললো, 

  - মনে করার তো কিছু নেই। কিন্তু কিসের রিকুয়েস্ট?

নীতি এবার ঠোঁট ভিজিয়ে শুষ্ক গলায় বললো, 
  - না মানে, আমার মেহনূরকে খুব ভালো লাগে। মিষ্টি একটা মেয়ে। ওর আজ এই অবস্থা দেখে ঘুমাতে ইচ্ছে করছেনা। তাই ভাবলাম একটু যদি বসে থাকি? শানাজ আমরা তো চলেই যাবো, আর মাত্র তো কয়টা দিন। প্লিজ একটু থাকতে দিবে? 

শানাজ কিছুক্ষণ নিরব থেকে নীতিকে থাকার অনুমতি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। নীতি শানাজের জায়গায় বসে ঘুমন্ত মেহনূরের কপালে হাত বুলিয়ে দেয়। প্রীতি এসে বিছানায় বসলে মেহনূরের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ নয়নে বলে, 

  - আপু, মেহু না অনেক সুন্দর। মেয়েটাকে দেখলে শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে। আমি একটা মেয়ে হয়ে যদি ওর রূপের প্রশংসা করি, তাহলে একবার চিন্তা করো ভাইয়ার কি অবস্থা হচ্ছে? আমার মন বলছে ভাইয়া ওর সিচুয়েশন শুনে ডেসপারেট ফিল করছে। কিন্তু সেটা আমাদের সামনে প্রকাশ করছেনা। 

মেহনূরের মাথায় আলতো হাতে বুলিয়ে দিতেই বুকভর্তি নিশ্বাস ছাড়লো নীতি। মাহতিম যে নিজেই অস্থির হয়ে বসে আছে সেটা নীতি স্বচক্ষে দেখেছে। নীতি যে বাধ্য হয়ে ভাইয়ের ধমক খেয়ে মেহনূরকে দেখার জন্য এসেছে, সেটা আর খুলে বলেনি কাউকে। একপর্যায়ে ঘুমে হাই তুলতে লাগলো প্রীতি। আড়াই বছরের ছোট বোনকে রুমে যেয়ে ঘুমাতে বললো নীতি। নীতির কথায় আজ্ঞা মেনে প্রীতি ঘুমাতে চলে গেলে সে রুমের আরেকটি বিছানায় যেয়ে বসে। মেহনূরের রুমে দুইটা কাঠের বিছানা, একটা জানালার কাছে, আরেকটা রুমের মাঝখানে। মেহনূর কাথামুড়ি দিয়ে জানালার কাছে শুয়ে আছে। নীতি ভেজানো জানালাটা খুলে দিয়ে সোলারের লাইট বন্ধ করে দিলো। দ্বিতীয় বিছানায় চুপচাপ ঘুমহীন চোখে শুয়ে পরলো। আজ কোনোভাবেই ঘুমানো যাবেনা, ঘুমালে মাহতিম ওকে আস্তো রাখবেনা। নীতির ইচ্ছে করছে চোখের মধ্যে মরিচ ডলে দিতে, কিন্তু সাহসে একদম কুলাচ্ছে না। 

চারপাশ যতো নিরব হচ্ছিলো প্রকৃতির ভূতুড়ে আওয়াজ ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। দূরে কোথাও 'ঘেউ ঘেউ' করে কুকুর ডাকছে, ঝিঁঝিপোকার শব্দতরঙ্গ অদ্ভুতভাবে শোনা যাচ্ছে, মৃদ্যু বাতাসের দমকায় গাছের ডালপালা পৈশাচিক ভঙ্গিতে ভয় দেখাচ্ছে। মাটিতে লুকিয়ে থাকা শত শত নাম না-জানা পোকাগুলো বিশ্রী-বিকট শব্দ করছে। বাইরে এখন ভরা জোৎস্নার রাত, দ্বিগ্বিদিক রূপার আলোয় প্রকৃতি যেনো ঝলমল করছে। বুকের ভেতর তোলপাড় করা যন্ত্রটা মারাত্মক যন্ত্রণা দিচ্ছে। কোনোভাবেই শুয়ে-বসে-দাড়িয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছেনা মাহতিমের জন্য। একপলকের দৃষ্টির জন্য অসহ্য লাগছে সবকিছু। ডাক্তারের কথাগুলো শোনার পর ইচ্ছে হচ্ছিলো জিপ স্টার্ট দিয়ে শহরের মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে আসতে, কিন্তু ' লোকে কি ভাববে ' এটা চিন্তা করে আর আগায়নি সে। মাহতিম রুমের ভেতর পায়চারি বন্ধ করে খোলা জানালার কাছে গিয়ে দাড়ালো। ট্রাউজারের পকেট থেকে মোবাইল বের করে সময়টা একবার দেখলো। রাত দুইটা আটত্রিশ বাজে এখন। জানালার বাঁ দিকে বাঁহাত হেলান দিয়ে ডানহাতে ফোনটা পকেটে পুড়লো। ডার্ক ব্রাউন রঙের টিশার্টটা ক্রমেই গরমের জন্য অসহন ঠেকতে লাগলো। নিজেকে শান্ত করতেই নিশ্বাস ছাড়ার জন্য ঠোঁট চোখা করে চোখ বন্ধ করলো। আয়নার পানে তাকিয়ে থাকা ভয়ার্ত দুই চোখ, কাঁপুনিতে থরথর করে উঠা রক্তিম-লাল ঠোঁট, কুচি গুঁজার জন্য পেটের কাছ থেকে শাড়ি উঠানো, আঙ্গুলের কবল থেকে একে-একে কুচি ছেড়ে দেওয়ার মূহুর্ত, সবই মনের দৃশ্যপটে স্পষ্টরূপে দেখতে পাচ্ছিলো। যদি আর কয়েক সেকেন্ড ওখানে দাড়িয়ে থাকতো, তাহলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা বড্ড কষ্টসাধ্য হতো। ওই দৃশ্য দেখলে মাথা অটোমেটিক কাজ করা বন্ধ করে দিতো। মাহতিম জানালা থেকে হাত সরিয়ে আকাশের দিকে তাকালো। ওমনেই নিজেকে শক্ত করে দরজার ছিটকিনি খুলে ফেললো। খুবই সাবধানে রুমের বাইরে পা ফেলে আশেপাশে তীক্ষ্মদৃষ্টি দিয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে লাগলো। একধাপে তিন সিড়ি করে উঠতেই চুপচাপ মেহনূরের রুমের কাছে আসলো। আবারও ডানে ও বামে সর্তক দৃষ্টিতে তাকালো। বিপদমুক্ত অবস্থা বুঝতেই চট করে ভেতরে ঢুকে রুমের দরজা আটকে দিলো। কিন্তু লাইটহীন রুমে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না। মাহতিম আন্দাজের উপর ভিত্তি করে হাত এগিয়ে লাইট জ্বালালো। ওমনেই যে দৃশ্য দেখলো, তাতে প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়ে ঠোঁট কুঁচকে দ্বিতীয় বিছানায় কাছে আসলো। নীতি পাহারা দেওয়া বাদ দিয়ে আরামসে ঘুমাচ্ছে, এই দৃশ্য দেখে ঠাস-ঠাস করে গাল বাজিয়ে মারতে ইচ্ছে করছে। রাগের মাথায় শূন্যে হাতও উঠালো মাহতিম, কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে ডাকলো, 

  - নীতির বাচ্চা উঠ্! 

নীতি ঘুমের রেশে ডানপাশ থেকে বাঁপাশ ফিরে শুলো। মাহতিম ওর অবস্থা দেখে আরো দুধাপ চটে উঠলো। ক্রোধের বশে ঠিকই ঘুমন্ত নীতির গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারলো মাহতিম। অনেকটা ভয় ও বিষ্ময় নিয়ে হুড়মুড় করে উঠলো নীতি। গালে হাত দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে মাহতিম দাড়িয়ে আছে। ভয়ে-ভয়ে দুটো ঢোক গিলে গাল থেকে হাত নামিয়ে তোতলানো সুরে বলে, 

  - ভা-ভা-ই-য়া, এই মা-মাত্রই শু-য়েছি। 

মাহতিম ক্রুদ্ধসুরে বলে উঠে, 

  - তা তো দেখতেই পাচ্ছি। তোকে আমি ঘুমানোর জন্য পাঠিয়েছি? কি বলেছিশাম মনে নেই? 

নীতি আর উত্তরের জন্য মুখ খুললো না। চোখ নিচু করে বিষণ্ন মুখে বসে থাকলে মাহতিম গলা নামিয়ে স্বর নিচু করে ওকে বাইরে যেতে বলে। নীতি প্রথমে আশ্চর্য হয়ে যায় এ কথা শুনে, পরক্ষনে মাহতিমের রাগান্বিত অবস্থা ভেবে কিছু বলেনা সে। রুমের বাইরে গিয়ে দরজা চাপিয়ে পাহাড়া দিতে থাকে। মাহতিম বুঝতে পারলো এই প্রথম সে ইচ্ছাপূর্বক মেহনূরের রুমে এসেছে। যেখানে মেহনূর অচেতন হয়ে পরে আছে। পিছু ফিরে তাকালেই সে মেহনূরকে দেখতে পাবে। কিন্তু কেমন এক জড়তা যেনো মনের অলিন্দে ছুটাছুটি করছে। মন যেনো বলছে, একবার তাকালে নিস্তার নেই মাহতিম, মস্তিষ্ক যেনো বলছে, এখানে না এসে যাবে কই? মাহতিম দুই চেতনার টানাপোড়নে কিছুক্ষন স্তম্ভিত হয়ে দাড়িয়ে রইলো। মুখ উঁচু করে সোলার লাইটটা দেখে কি যেনো চিন্তা করলো, সেই মূহুর্ত্তেই সুইচ বোর্ডের কাছে গিয়ে লাইটটা নিভিয়ে দিলো। দরজার বাইরে পাহাড়া দিতে গিয়ে সুইচের শব্দে চমকে উঠলো নীতি। সাথেসাথে আশ্চর্য দৃষ্টিতে পেছনে ফিরে তাকালো। দরজার নিচ দিয়ে আলো আসছেনা কেনো? এতোক্ষন যে আলোটা ছিলো সেটা কোথায় গেলো?মাহতিম কি সত্যিই লাইট নিভিয়ে দিলো? কেনো নিভালো? নীতি অন্তত এটুকু জানে মাহতিম খারাপ চরিত্রের ব্যক্তি না। কিন্তু আজকের সমীকরণ সে কিছুতেই মিলাতেনা পারছেনা। একচুলও না। 
.
.
.
চলবে...........................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন