হাওয়াই মিঠাই |
রাতের খাবারের সময় সুইটি আরেকবার ডাকলাে মীরাকে। মীরা কোনাে কথাই বলল না। কিছুক্ষণ পর তাহিয়া ডাকলাে। কিন্তু মীরা জবাব দিল না। পরে খাবে বা খাবে না এমন কিছুও বলল না। একবার তাকালােও না তাদের দিকে। চুপচাপ বিছানায় শুয়ে আছে, চোখের কোলে অঝর শ্রাবণ। এই অবস্থায় বারবার ডাকতে তাদেরও অস্বস্তি লাগছিল। তাদের মনে হচ্ছিল মীরা যেন তাদের কথা শুনতেই পাচ্ছে না। মীরার এমন অবস্থা তারা আগে কখনাে দেখেনি। তাই বুঝে উঠতে পারছে না কি করা উচিৎ। একসময় সুইটি খেতে গেল। কিন্তু তাহিয়া খেতে পারলাে না। গ্রামে থাকতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তাে বলে তাহিয়ার সে অভ্যাস এখনাে যায়নি। এমন কত রাত গেছে যে, সে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। মীরা তাকে উঠিয়ে হেলান দিয়ে
বসিয়ে খাইয়ে দিয়েছে আর সে চোখ বন্ধ করেই ঘুমের ঘােরে খেয়েছে। সেই মানুষটাকে এভাবে রেখে তার গলা দিয়ে খাওয়া নামবে না।
সুইটি খেয়ে ফিরতেই তাহিয়া গিয়ে দরজায় দাঁড়ালাে। ইশারা দিয়ে বাইরে ডেকে নিয়ে গেল। করিডােরে দাঁড়িয়ে বলল,
"সুইটিপু, মীরাপুর মুখে রাফি নামটা আগে শুনেছ কখনাে?"
"না একেবারেই না। তাইতাে এতাে অবাক হচ্ছি।"
"তােমার কী মনে হয় রাফি কে হতে পারে?"
"ঠিক বুঝতে পারছি না।"
"এক্স বয়ফ্রেন্ড হতে পারে?"
"ধুর না। ওর সব বয়ফ্রেন্ডের কাহিনীই তাে জানি। এর মধ্যে রাফি নামের কেউ ছিল না। আর থাকলেও কোনাে বয়ফ্রেন্ডের জন্য মীরার মত মেয়ে এমন করে কাঁদবে না। অন্যকোনাে কাহিনী আছে।"
"মীরাপু তাে আর ইমােশনাল কোনাে মেয়ে না। তাই আমার খুব চিন্তা হচ্ছে আপু।"
"এক্সাক্টলি, আমার চিন্তার কারণও এটাই। আচ্ছা তুই ছেলেটাকে দেখেছিলি?"
"কত মানুষই তাে ওখানে ছিল। এখন মীরাপু যে কাকে দেখে ছুটছিল তাতাে বুঝতে পারিনি।"
"অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। স্বাভাবিক হলে মীরা নিজেই সব বলবে। তুই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।"
রাত তখন কত মীরা জানে না। তৌহিদ অনেকবার কল করায় সে ফোন বন্ধ করে রেখেছে। এতক্ষণ একটানা কান্না করার ফলে তার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা হয়েছে। বেডের পাশেই জানালা। সুইটি ও তাহিয়া ঘুমিয়ে পড়ার পর মীরা উঠে জানালার ধারে বসলাে। যতদূর চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। চার তলায় এই ঘরটাতে বাতাসের অভাব নেই। এই জানালা দিয়ে যখন বাইরে তাকায় শরীর ও মন উভয়ই প্রসন্ন হয়ে যায়। কিন্তু আজ সবকিছুই বিষন্ন লাগছে। বিছানার পাশে হঠাৎ একটা ছায়া দেখতে পেয়ে তাকালাে মীরা। তাহিয়া দাঁড়িয়ে আছে। মীরা বলল,
"ঘুমাসনি এখনাে?"
তাহিয়া বলল,
"তুমি এখন কেমন আছাে আপু?"
মীরা হাত বাড়িয়ে তাহিয়াকে কাছে এনে বসালাে। তারপর বলল,
"নয় বছর আগে একজন হারিয়ে গিয়েছিল। তারপরের অনেক বছর পর্যন্ত তাকে খুঁজেছি। তাকে খুঁজতে এই জাহাঙ্গীরনগর এসেছি, প্রথমবার চান্স না পেয়ে দ্বিতীয়বার আবার পরীক্ষা দিয়েছি। ভর্তি হয়েই ছেড়েছি, হলে উঠেছি। সাভার-ধামরাই সব তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। অথচ সে কিনা ঢাকায়! আজ দেখলাম কিন্তু পেলাম না। চোখের সামনে দিয়ে চলে গেল।"
মীরার চোখ বেয়ে আবার পানি পড়তে লাগলাে। তাহিয়া কী বলবে বা কী করবে বুঝতে পারলাে না। তবে এটুকু বুঝে গেছে রাফি সাধারন কেউ নয়। যেই হােক না কেন সে মীরার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ। মীরা বলল,
"চিন্তার কিছু নেই। আমি ঠিক আছি৷ এখন কথা বলতে ভালাে লাগছে না। পরে সব বলব।"
"ঠিক আছে আপু।"
মীরা তাহিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
"ঘুমিয়ে পড়।"
তাহিয়া নিজের বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাে। মীরা আবার তাকালাে বাইরে।
মীরার জীবনের সেই বিশেষ দিনটি এসেছিল। রাফির সাথে পরিচয় হওয়ার প্রায় ২ মাস পর। এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার পর স্কুলের ক্লাস বন্ধ হয়ে গেলেও স্কুল কোচিং চলছিল। সেজন্যই স্কুলে যেত মীরা। স্কুলে মােবাইল আনা নিষেধ ছিল, তাই মােবাইল বাসাতেই রেখে আসতে হতাে। স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে বাসায় ফেরা পর্যন্ত পুরাে সময়টা অস্থির লাগতাে তার। মাত্র দু মাসের পরিচয় অথচ মনে হতাে যেন অনেকদিনের চেনা এই মানুষটি। মীরার স্কুলের সময় আর রাফির ক্লাসের সময়টুকু বাদ দিয়ে বাকি যতটা সময় ছিল, দুজন ফোনে কথা বলতে থাকতাে। রাতে ইরা ঘুমাতে আসার পর থেকে চলতাে মেসেজিং। ইরা ঘুমিয়ে পড়লে মীরা বারান্দায় নাহয় বাথরুমে লুকিয়ে কথা বলতাে। ততদিনে তাদের সম্পর্ক আপনি থেকে তুমি তে চলে গিয়েছিল। রাফির মােবাইলের ব্যালেন্স শেষ হওয়া পর্যন্ত কথা চলতাে। এরপর আবার মীরা কল দিতাে। তাই তখন মীরা হেঁটে হেঁটে স্কুলে যেতে-আসতাে। রিক্সাভাড়া বাঁচিয়ে ফোনের কার্ড কিনতাে। যদিও রাফি ব্যাপারটা জানতাে না, জানলে হয়তাে খুব বকতাে। কিছু করার নেই মীরার। তার কথা যে শেষ হয়না! কথা বলার তৃষ্ণাও মেটেনা! কথা বলতে বলতে খেয়াল থাকে না রাত কখন শেষ হয়ে যায়। যেদিন রাফির মােবাইলে ব্যালেন্স বেশি থাকে সেদিন আযান দিলে দুজনের টনক নড়ে এবং তারা ঘুমুতে যায়। ঘুমিয়েও শান্তি নেই, স্বপ্নেও সে রাফিকে দেখে। তখনকারই একটি দিন। রাতে যখন কথা হচ্ছিলাে তখন মীরা জানতে চাইলাে,
"আচ্ছা রাফি তােমার জানতে ইচ্ছে করে না আমি দেখতে কেমন?"
"না, একেবারে দেখবাে বলেছি তাে।"
"আর যদি কখনাে আমাদের দেখা না হয়?"
"হবে মীরা। একদিন না একদিন আমাদের দেখা হবেই।"
"কবে?"
"ঠিক জানিনা। তুমি কি দেখা করতে চাও?"
"জানি না।"
"সরাসরি বলাে মীরা।"
মীরা একটু ভেবে বলল,
"উমমম, হ্যাঁ দেখা করতে চাই কিন্তু কিভাবে? আমাকে তাে একা বাসা থেকে বের হতে দেয় না।"
"কিন্তু স্কুলে তাে একাই যাও।"
"স্কুল বাঙ্ক করবাে?"
"না না তা বলিনি। যাওয়ার বা আসার পথে নাহয় দেখা করলাম ১০ মিনিটের জন্য।"
"মাত্র ১০ মিনিট! ১০ মিনিটে কি কথা বলব?"
"অত কথার কিইবা দরকার? কথা তাে ফোনে হচ্ছেই। তুমি কলেজে উঠে গেলে নিশ্চই বেশিক্ষণের জন্য দেখা করতে পারবে। আর তাে কয়টা দিন।"
"কিন্তু স্কুলের পথে তাে সবাই পরিচিত, বান্ধবীদের গার্জিয়ানরাও বসে থাকে, কেউ যদি দেখে আম্মুকে বলে দেয়?"
"তাহলে তাে তােমার জন্য সমস্যা। দেখা করতে চাইলেও নানান প্রতিবন্ধকতার কথা চিন্তা করে আর দেখা করা হতাে না তাদের। দেখতে দেখতে মীরার মডেল টেস্ট পরীক্ষা এসে গেলাে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগে মীরার বাবা মােবাইল নিয়ে নিলাে। একেবারে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে আবার ফেরত দেবে। হঠাৎ মােবাইলটা নিয়ে নেওয়ায় রাফিকে কিছু জানাতেও পারেনি সে। রাফি নিশ্চই বার বার কল করে ফোন বন্ধ পাচ্ছে! নিশ্চই অস্থির হয়ে পড়েছে! সারাটা রাত মীরা কাঁদলাে। এই প্রথম কোনাে ছেলের জন্য তার কান্না। শুধু কান্না কেন সব কিছুতেই রাফি প্রথম তার জীবনে!
ছাদের চিলেকোঠায় নতুন বিবাহিত এক দম্পতি থাকে। মেয়েটার নাম পুষ্প। পুষ্পকে মীরা ভাবী ডাকে। মােটামুটি ভাল সম্পর্ক। বিশ্বাস করা যায় বলেই মনে হয় তার। সকাল সকাল মীরা গিয়ে তার মােবাইলটা ধার চাইলাে। পুষ্প ফোনটা দিতেই সে রাফির নাম্বারে ডায়াল করলাে। কিছুক্ষণ পর ওপাশ থেকে রাফির গলা পাওয়া গেলাে,
"হ্যালাে।"
"আমি মীরা। একটু কলব্যাক করবে?"
রাফি স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল,
"এখনই করছি।"
কলব্যাক করেই রাফি জিজ্ঞেস করলাে,
"কী হয়েছিল? ধরা খেয়েছাে? ফোন নিয়ে নিয়েছে?"
"কী ধরা খাব?"
"না মানে এইযে দিন রাত আমার সাথে কথা বলাে।"
মীরা মন খারাপ করে বলল,
"না ধরা খাইনি, এক সপ্তাহ পর মডেল টেস্ট। তাই বাবা মােবাইলটা নিয়ে গেছে। বলেছে একেবারে এসএসসি পরীক্ষার পর দেবে।"
"তাও ভাল ধরা খাওনি। মােবাইল নিয়েছে, একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে।"
মীরা অবাক হয়ে বলল,
"কিভাবে ভাল হলাে? কথা বলব কী করে?"
"শােনাে মীরা, আমরা অনেক বেশি কথা বলতাম। সামনে তােমার পরীক্ষা, পড়াশুনা বাদ দিয়ে শুধু কথা বলাে আমার সাথে। এভাবে চলতে থাকলে ডাব্বা মারতে, আমার কথা তাে শুনতে চাও না। কিছু বললেই বলতে আমি নাকি কথা বলতে চাইনা।"
"চাও ই তাে না। এজন্য আমার মােবাইল নেয়ায় খুশি হয়েছো।"
হেসে ফেললাে রাফি। মীরা অভিমানী কন্ঠে বলল,
"হাসবে না তাে এভাবে।"
"আচ্ছা হাসব না, এবার বলাে তাে কার মােবাইল থেকে কল করেছাে?"
"ছাদের ঘরে পুষ্প ভাবী থাকে বলেছিলাম? ভাবীর মােবাইল এটা।"
"যদি বাসায় বলে দেয়?"
"বলবে না। ভাবী খুব ভালাে।"
"আচ্ছা।"
"আমি এখন ছাদে, এক্ষুনি চলে যেতে হবে। ভেজা কাপড় মেলার ছুতােয় এসেছি।"
"আবার কখন কথা হবে?"
"আমি সিওর না। তবে সুযােগ পেলেই এখানে এসে ফোন করব। বিকেলবেলা বাসার প্রায় সবাই ঘুমায়, তখন চেষ্টা করব।"
"প্রতিদিন অন্তত একবার কল দেয়ার চেষ্টা করাে। অন্যের ফোন থেকে কল করার দরকার নেই, মিসড কল দিও। আমি ব্যাক করব।"
"আচ্ছা। এখন যাই?"
"আচ্ছা। তার আগে আরেকটা কথা বলি, সেটা শুনে যাও।"
"আচ্ছা বলাে।"
"মীরা... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইউ!"
মীরা এমন কিছু শােনার জন্য মােটেই প্রস্তুত ছিল না। সে স্বপ্নেও ভাবেনি রাফি এমন কিছু বলবে! তার সমস্ত শরীর থরথর করে কাঁপছে, হৃদস্পন্দন যেন ঢােল তবলার আওয়াজ তুলেছে, গলা শুকিয়ে গেছে, কথা বের হচ্ছে না। রাফি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার বলল,
"মীরা শুনছাে?"
মীরা চুপ। রাফি আবার ডাকলাে,
"মীরা..."
মীরা কোনরকমে বলল,
"হুম।"
রাফি আবার বলল,
"কাল থেকে তােমার ফোন বন্ধ পেয়ে শুধু এই আফসােস করেছি যে কেন আমি কথাটা আগে বললাম না। জানিনা আবার কখন কথা হবে, তাই এক্ষুনি বলে দিলাম। আর আফসােস করতে চাই না।"
মীরা নিজের হৃদপিণ্ডের শব্দ নিজেই শুনতে পাচ্ছে। হাজারাে প্রশ্ন তার চোখের সামনে প্রজাপতির মত ক্রমশ উড়ছে। কী বলবে সে? কী বলা উচিৎ তার? সেও কি রাফিকে ভালােবাসে? যদি সেও রাফিকে ভালােবাসে তাহলেই কি প্রেম হয়ে যাবে? কিন্তু রাফি বলেছিল, ভালােবাসা আর প্রেম আলাদা। রাফি ভালােবাসে বলে আসলে কী বােঝালাে। শুধু ভালােবাসে নাকি প্রেমও করতে চায়? সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা ছেলের সাথে এভাবে প্রেম করাটা কি ঠিক হবে? তাকে চুপ থাকতে দেখে রাফি বলল,
"দেখাে মীরা আমি তােমার উত্তরটা জানি। তবু তুমি যদি না চাও তাহলে আমরা আর আগাবাে না। যেরকম বন্ধুর মত ছিলাম, সেরকমই থাকবাে। তুমি স্বাভাবিক হও।"
"তুমি আমার উত্তর জানাে?"
"হ্যাঁ জানি, তুমিও আমাকে ভালবেসে ফেলেছাে।"
মীরার শরীর ছেড়ে দিয়েছে। কী বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। মীরা বললাে,
"আমি নিজেই তাে জানিনা আমি তােমাকে ভালােবাসি কিনা।"
"সেটাও জানি মীরা।"
মীরা এবার আরাে অবাক হলাে। যেটা সে নিজে জানেনা সেটা রাফি কিভাবে জানলাে? রাফি বলল,
"হয়তাে কখনাে আমাকে দেখােনি, চেনােনা। জানােনা বলে আগাতে সাহস পাচ্ছাে না।"
মীরা বলল,
"তুমিও তাে আমাকে দেখােনি, চেনাে না, জানাে না।"
"দেখিনি তাতে কোন সমস্যা নেই, তুমি যেমনই হওনা কেন লম্বা বা খাটো, ফর্সা বা কালাে, মােটা বা শুকনা, আই ডােন্ট কেয়ার। তােমার সরলতার প্রেমে পড়েছি। তােমাকে দেখে প্রেমে পড়লে সুন্দর দরকার ছিল। না দেখে প্রেমে পড়েছি বলে ধরে নিয়েছি তুমি খুব একটা সুন্দর নও। তাই তােমাকে দেখে কষ্ট পাওয়ার চান্স নেই। আর সুন্দর হলে তাে কোনাে কথাই নেই। এরপর আসে চেনা-জানার কথা। চিনিনা জানিনা এ কথা ভুল। তােমাকে আমার জানা হয়ে গেছে, তুমি কোন পরিস্থিতিতে কী করবে কী বলবে, সব বলে দিতে পারব আমি। আর দেখা হলেই চেনা হয়ে যাবে।"
মীরা চুপ করে রইলাে। তারও সুন্দর অসুন্দর নিয়ে মাথাব্যথা নেই তবে রাফি খাটো হলে তাে ভীষণ সমস্যা। রাফিই আবার বলল,
"এত চিন্তায় পড়ার মতাে কিছু হয়নি। সময় নাও।"
"আচ্ছা।"
"এখন নিচে যাও। নিজের খেয়াল রেখাে।"
"আচ্ছা তুমিও।"
"খােদা হাফেজ।"
"হুম।"
"রাখাে।"
"তুমি রাখাে।"
"আমি কখনাে কল কাটি? তুমিই তাে সবসময় কাটো। সব গুলিয়ে ফেলেছাে নাকি?"
মীরা নিঃশ্বাস আটকে রেখে বলে ফেললাে,
"রাফি তুমি কি আমাকে শুধু ভালােই বাসাে নাকি প্রেমও করতে চাও?"
রাফি হাে হাে করে হেসে ফেলল। তারপর বলল,
"এজন্যই তােমাকে ভালােবাসি। এখন রাখাে।"
"উত্তর দিলে না?"
"দেব, সময় হলেই দেব।"
মীরা জেদ করল,
"এখনই সময় হয়েছে। আমি এখনই উত্তর চাই।"
"তুমি ভেবে বের করাে ভালােবাসা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি প্রেম? তুমি এই প্রশ্নের উত্তর যখন দেবে, তখনই আমি তােমার প্রশ্নের উত্তর দেব।"
"আমি আগে প্রশ্ন করেছি।"
"অস্বীকার করছি না। তবে আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তােমার প্রশ্নের উত্তর পেলে বুঝবে না।"
"আমি কালকের মধ্যেই তােমার প্রশ্নের উত্তর বের করে আবার ফোন করব।"
রাফি আবার হেসে ফেলল।
পর্ব ০৫ | পর্ব ০৭ |