বিশাল রেসোর্টটা গাছপালা দিয়ে আবৃত। রাস্তাগুলো সবুজ ঘাস দ্বারা বিস্তৃত। জায়গাটা সম্পূর্ণ কোলাহলমুক্ত এবং পুরোপুরি জনশূন্য। সবাই যখন ঘুরে-ঘুরে পুরো রেসোর্ট দেখে ফেললো,তখন দুপুরের তপ্তময় সূর্যটা মধ্যগগণে ঠাঁই নিলো। দুপুরের খাবার তৈরিতে ম্যানেজার এসে মেনু নিয়ে গেলো, সেই সঙ্গে গোসলের জন্য সবকিছু দেখিয়ে গেলো। রেসোর্টের ভেতর আটটা কটেজ, প্রতিটি কটেজে দুটো করে রুম আছে। মাঝখানে খোলা সবুজ মাঠ, ডানদিকে সারিবদ্ধ তিনটা কটেজ রয়েছে। ছেলেরা আলাদা ভাবে থাকার জন্য দূরের তিনটা কটেজ পছন্দ করলো। মেয়েরা নিজেদের জন্য অপজিট দিকের পাচঁটা কটেজে চলে গেলো। সবাই নিজেদের রুম গুছিয়ে আলমারিতে কাপড় তুলে গোসলের জন্য বের হলো। মাঠের মাঝখানে দুইপক্ষ উপস্থিত হলে সৌভিক সবার আগে চন্ঞ্চল মুখে বললো,
- তোমরা সাঁতার জানো? চলো পানিতে নামি।
সৌভিকের উত্তেজনায় পানি ঢেলে বাধা দিয়ে বললো মাহতিম,
- একদম না। আজকে জার্নি করেছিস, আজকেই পানিতে নামার কথা উঠাবি না।গোসল সেরে সবাই রুমে যেয়ে রেস্ট নিবি। এটলিস্ট কাল পানিতে নামার চিন্তা করবি।
মাহতিমের কথার উপর কেউ স্পর্ধা দেখাতে পারলো না। এখানে বাথরুম সংখ্যা মাত্র দুইটা, তাও দুটো বাথরুম একসাথে সেট করা। কাজেই বাথরমের জন্য ভোগান্তিতে একটু হলেও পরতে হলো। সবাই লাইন ধরে গোসলের জন্য সিরিয়াল লাগিয়ে বসলো। সেই সিরিয়াল মোতাবেক মাহতিমের সিরিয়াল লাস্টে এসে ঠেকলো। মাহতিম খুবই শান্ত মুখে বলে দেয় গোসল নিয়ে তাড়াহুড়ো নেই। কাজেই ঠিকঠাক মতো সবাই যেনো গোসল সেরে নেয়। রুমে এসে বিছানার উপর ক্লান্ত দেহ রাখলো মাহতিম। চোখদুটো বন্ধ করে কপালের উপর কবজি তুলে রাখলো। পিলপিল করে সময় চলে যেতেই গোসলের জন্য মাহদি ওকে ডাকতে এলো। মাহতিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় দেখে মাহদি না ডেকেই বাইরে চলে গেলো। বাইরে গিয়ে সাবিরকে বললো, মাহতিম এখন ঘুমাচ্ছে, কেউ যেনো এখন ভাইয়াকে না ডাকে।
তেজীময় সূর্য তেজ হারিয়ে পশ্চিম আকাশে হেলতে লাগলো। চারদিকের তাপদাহ অনেকখানি কমে গেলো। গোলাপী রঙের স্নিগ্ধ পর্দায় পুরো নীল আকাশ ঢেকে গেলো। পাখির কলরবে মুখর হলো রেসোর্টের পরিবেশ, গাছগুলোতে প্রচুর পাখি ডানা ঝাপটানি দিচ্ছে। বিকেলের আযানটা শেষ হতেই সৌভিক-নীতি-শানাজরা নদীতীরে ঘুরতে গেছে। মাহদি নিজমনে ঘুমন্ত মাহতিমের পাশে সিওসি খেলছে। অনেকক্ষনণ পর মাহতিমের ঘুমের রেশ পাতলা হলো। চোখের উপর থেকে হাত সরিয়ে ধীরে-ধীরে চোখের পাতা খুললো, ছোট-ছোট চোখে চারপাশে তাকাতেই আধো অন্ধকারে জানালার পাশে মাহদিকে দেখতে পেলো। সেই ঘুম জড়ানো শান্ত কন্ঠে মাহতিম ওর উদ্দেশ্যে বললো,
- তুই আমার রুমে কি করছিস?
মাহদি পেছন থেকে কন্ঠ শুনে তড়িৎ গতিতে মাথা ঘুরালো। ও পেছনে ঘুরতেই মাহতিম দুহাতের তালুতে ভর দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলো। মাহদির হাতে নিজের মোবাইল ফোনটা দেখে আবার প্রশ্ন ছুঁড়ে বললো,
- তুই ওদের সাথে ঘুরতে যাসনি?
মাহদি ড্যাবড্যাব করে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলো। মাহতিমের দিকে সম্পূর্ণ ঘুরে সিওসি খেলা স্টপ করে ফোনটা ওর দিকে এগিয়ে দিলো। স্বাভাবিক সুরে প্রসন্ন ভঙ্গিতে বললো,
- তুমি একা রুমে থাকবে দেখে আমি ওদের সাথে যাইনি। ধরো মোবাইল ধরো। ব্যালেন্স নেই, টাকা ভরে ফোনটা আবার দুইমিনিটের জন্য দিও।
ভ্রুঁ উঁচিয়ে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালো মাহতিম। ফোনের ব্যালেন্স শেষ করে আবার গেম খেলার জন্য হুকুম করছে। কিন্তু সেই কথাটা দূরে ঠেলে বর্তমানে ওর উদার অবস্থা দেখে বিষ্মিত হলো। দুই চক্ষু দিয়ে ওর আপাদমস্তক বুলিয়ে কৌতুহল গলায় বললো,
- তোর ভেতরে এতো দরদ আসলো কিভাবে?
মাহদি ওর হাতটা টেনে ঘাঁয়ের জায়গাটা দেখিয়ে বললো,
- তুমি হাতের জন্য খাবার খেতে পারো না ভাইয়া। তাই খাইয়ে দেওয়ার জন্য বসে আছি। তোমাকে খাইয়ে দিয়ে আমি ওদের কাছে চলে যাবো।
মাহতিম নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেলো। এইটুকুনি মাহদি ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছে, কখন ভাইকে খাইয়ে দিবে সেটার জন্য ঘুরাও বন্ধ রেখেছে। মাহতিম কিছু বললো না, ছোট্ট একটা নিশ্বাস ছেড়ে বিছানা থেকে নামতে লাগলো। ফ্লোরে দুপা ফেলে দাঁড়িয়ে যেতেই মাহদির উদ্দেশ্যে বললো,
- তুই ওদের কাছে যা। আমার হাতে কোনো ব্যথা নেই। তাছাড়া এখনো আমি গোসল করিনি। আমি এই মূহুর্তে খাবো না। তুই ওদের কাছে যেয়ে ঘুরাঘুরি কর, যা।
মাহদি অটলভাবে বলে উঠলো,
- আমি যাবো না। তুমি গোসল করো, আমি মেহনূর আপুর কাছে যাচ্ছি। তোমার গোসল শেষ হলেই ম্যানেজার বেটাকে খাবার আনতে বলে দিবো।
মাহতিম ভ্রুঁ কুঁচকানো অবস্থায় মৃদ্যু হাসলো। সেই হাসিতে গোসলের জন্য কাপড় নিয়ে বেরিয়ে গেলো। এদিকে সৌভিকরা নদীরের পাড়ে বসে গোল আড্ডা বসিয়েছে। সুরাইয়াকে নিয়ে শানাজ-সাবা অন্যদিকে বসেছে। এটা নিয়ে প্রথমে দ্বিমত যুদ্ধ চললেও পরে নীতির কথায় দুই দল আলাদা হয়ে বসেছে। এই সুযোগে ফারিন মিলে কটেজের জন্য প্ল্যান বানানোর প্রস্তাব দিলো। সামির এবার নিচু সুরে সবার উদ্দেশ্যে বললো,
- এবারের প্ল্যান কিন্তু ক্রিটিক্যাল হবে। সবাই একটু বেশি সর্তক থাকবে। মাহতিম ভাইয়ের কান যে খরগোশের মতো সজাগ, আর বিড়াল মতো তীক্ষ্ম, এটা সবাই জানো। ভাইয়ের চোখে ধূলো দেওয়াটা চাট্টিখানি ব্যাপার না। যে করেই হোক, মেহনূরকে এবার ভাইয়ের দিকে ঠেলতে হবে। ভাইয়ের অবস্থা দেখে যা বুঝলাম, সে মোটামুটি লাইনে এসে গেছে। এখন শুধু পল্ট্রি-মুরগির ভেতর কাঁপন ধরিয়ে দিলেই কাজ ফি-নি-শ। এটার জন্য, মেহনূরকে এখন ধাক্কা মেরেই ভাইয়ের কাছে পাঠাতে হবে।
কথার মাঝখানে দাঁড়ি বসিয়ে নীতি প্রশ্ন করে বসলো,
- মাহতিম ভাইকে দুচোখে দেখতে পারেনা মেহনূর। একটাবার চিন্তা কর, মাহতিম ভাইয়ের বডি দেখে সামিকের এক্স পযর্ন্ত বেহায়া হয়ে গেছিলো। কতোদিন ভাইয়ের পিছে ঘুরঘুর করেছে অথচ পাত্তা পায়নি। আর এদিকে সামনা-সামনি ওপেন চেষ্ট দেখার পরও মেহনূরের মধ্যে ফিলিংস আসেনি।
নীতির কথার যুক্তি টেনে তৌফ খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো,
- মেয়েদের পটানোর জন্য লুইচ্চা মার্কা কাণ্ড করতে হইবো। আমি খালি আশ্চর্য হই, এই শা-লা মাহতিম চুতুমরানি এতো ভদ্র সাইজা আছে কেন? শা-লা তো একনাম্বার খাচ্চর। আড্ডায় থাকলে কি দুষ্টু মার্কা কথা বলতো, লজ্জায় আমি নিজেই উইঠা যাইতাম। ওই বান্দা সুন্দরীখানায় একেবারে সাধু সাইজা গেছে, এগ্লা ভাবতেও বুকটা ব্যথা করতাছে ভাই।
তৌফের কথায় চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা নাড়ালো সৌভিক। অন্যমনস্ক সুরে ভাবুক স্টাইলে বললো,
- মাহতিম তো চরম অসভ্য, কিন্তু ওইরকম উগ্র অসভ্যতামি ও করেনা। এখানে যেই রূপ দেখতেছি এটা আসলেই মানা যায় না। ও কি ট্রাম কার্ড ফেললো নাকি? আমি আসলেই বুঝতে পারছি না। মাহতিম যদি চালাকি করে সিরিয়াসলি সেটা ধরা-বুঝার বাইরে! কোনো সুযোগই সেটা টের পাওয়ার।
হঠাৎ সৌভিকের পিঠে দুম করে কিল মারলো সিয়াম। ভ্রুঁদুটো মারাত্মক কুঁচকে বিরক্ত মুখে বললো,
- কাঠের খড়ম দিয়া যদি তোদের ঘিলুটা পারাইতে পারতাম! তোরা কি এইখানে চুলের প্ল্যানিং করতে বসছোস? মাহতিম কি করতাছে, কি করবো ওগ্লা ভাইবা কাজ আছে? মেইন পয়েন্টে আইসা প্ল্যান বানাইতে পারোস না? শালা খবিশের দল!
সিয়ামের কথা শুনে এবার সবাই ভ্রুঁ কুঁচকে তাকালো। মনে-মনে সবাঈ ক্ষুদ্ধ হয়ে গেলেও সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়ে তৌফ মুখ খুললো,
- আমার প্লাস্টিকের জুতা যদি তোর মেইন পয়েন্টে মারি, জানোস তো কি হইবো? এক্কেবারে গলাকাটা মুরগীর মতো দাপাইতে থাকবি!
সিয়াম সাথে-সাথে বাম ভ্রুঁ উঁচু করে তীক্ষ্ম সুরে বললো,
- বল দিয়া ক্রিকেটের স্ট্যাম্প ফালাইতে পারেনা, হাবলাকান্ত আইসে মেইন পয়েন্টের টার্গেট শিখাইতে! ওরে বা*, মুখটা খারাপ করাইস না। তুইযে পিনিক উঠলে কি করোস, ওইটা আর বাচ্চাগুলার সামনে বললাম না। এখন মাহতিমের হিসাব ধর, ওর ক্যালকুলেশন মিলা।
সিয়ামের কথায় ফুঁসে উঠলেও সৌভিক তৌফকে থামতে বললো। তৌফ চুপ করে প্রীতির দিকে তাকিয়ে জিহবাটা আলতো ভিজিয়ে নিলো। শুষ্ক কন্ঠে ঢোক গিলে স্বাভাবিক সুরে বললো,
- আজকের দিনটা ড্রপ যাক। আপাতত কিছু করিস না। ও একটু এডজাস্ট করুক, কাল দুপুর থেকে কাহিনী শুরু করলে বেস্ট হয়। আমার মাথায় সলিড বুদ্ধি এসেছে, রাতে সবার সাথে আলাপষকরতে বসবো। ঠিক এগারোটার দিকে আমার কটেজের ভেতর চলে আসবি। ঠিকাছে?
তৌফের কথার উপর নিজের বাক্য জুড়ে ফারিন চৈতন্য ভঙ্গিতে বললো,
- তোমাদের কাছে একটা রিকুয়েস্ট, ভাইয়ার কাছে সুরাইয়ার ব্যাপারটা জানতে দিও না। ভাইয়া জানলে হিতাহিত কাহিনী ঘটতে পারে। আপাতত এটা স্কিপ করো, আর শানাজ আপুদের বলে দাও তারাও যেনো ভাইয়ার কাছে গোপন করে।
সবাই একসঙ্গে মাথা দুলিয়ে ' হ্যাঁ ' জানালো। এরপর অন্য ব্যাপার নিয়ে আলোচনা চলতে থাকলো। এদিকে শানাজ কড়া করে সুরাইয়াকে শালীনতা বুঝিয়ে দিচ্ছে, কিভাবে তিনটা দিন সবার সাথে ভালোভাবে কাটাবে অক্ষরে-অক্ষরে শিখিয়ে দিচ্ছে। শেফালী ওকে যা-যা আবোলতাবোল বুঝিয়েছে, সবকিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছে। কিন্তু মনে-মনে সুরাইয়া খুবই বিরক্ত হচ্ছে। এসব অহেতুক কথা শুনার চাইতে কটেজে ফিরে শুতে ইচ্ছে করছে। শানাজের কথায় প্রচণ্ড অধৈর্য্য হয়ে শেষমেশ সুরাইয়া অভিনয় করে বললো,
- বুবু আমার মাথা টলছে। আমি একটু ঘুমাতে যাই? তোমরা ওদের সাথে আড্ডা দিতে থাকো, আমি কটেজে ফিরে যাই। ওখানে মেহনূর তো আছে, তাই চিন্তা করতে এসো না। আমি গেলাম হ্যাঁ?
শানাজের কোনো উত্তর না শুনেই ছুটে গেলো সুরাইয়া। ওর কটেজটা সাবার সাথে দ্বিতীয় রুমটায় ফিক্সড করা। সুরাইয়া সেখানে পৌঁছতেই আবার শয়তানি বুদ্ধির জন্য ছেলেদের কটেজের দিকে তাকালো। ফাজলামি করার জন্য দাঁত বের হাসি দিতেই পা টিপে-টিপে ছেলেদের কটেজের দিকে গেলো। ইচ্ছে করে সবার রুমে ঢু মেরে মাহতিমের কটেজ খুঁজতে লাগলো। কিন্তু প্রথম কটেজের প্রথম রুম যে মাহতিমের ছিলো, সেটা একটুও ধরতে পারলো না সুরাইয়া। শেষদিক থেকে চেক দিতে-দিতে মাহতিমের কটেজে চলে আসলো, ওর রুমের দিকে চুপি দিতেই অন্ধকার আবিষ্কার করলো। রুমে যেটুকু আলো দেখা যাচ্ছিলো, সেটুকু অবশ্যই স্পষ্ট দেখার জন্য যথেষ্ট না। তাছাড়া সূর্যের আলো পশ্চিমে হেলে পরেছে, তাই চারদিকে অন্ধকার আচ্ছন্ন করেছে। সুরাইয়া মাহতিমকে একাকী দেখার জন্য মিটিমিটি হাসি দিয়ে কোমরের কাছে দুইহাত বেধেঁ ভেতরে পা দিলো। অন্ধকার রুমে আরেকটু ঢুকে চারিদিকে সরুচোখে দেখতে লাগলো। কিন্তু তখনই পেছন থেকে রুমের দরজা আটকানোর শব্দ হলো। সুরাইয়া চমকে গিয়ে যেই পেছনে ঘুরে তাকালো ততক্ষণে ও অন্ধকার রুমে বন্দি হয়ে গেলো! বিকট চিৎকার দিয়ে অন্ধকারকে ভয় পেয়ে হাউমাউ করে কাদঁতে লাগলো সুরাইয়া। রেসোর্টের রুমগুলো এতো শক্ত ও মজবুত, সেখান থেকে একটা আওয়াজও অপরপ্রান্তে গেলো না। দরজা থাবাতে-থাবাতে সুরাইয়া আরো চিল্লিয়ে কাঁদতে থাকলো। ওই মূহুর্তেই দরজার বাইরে মাহতিম দাঁড়িয়েছিলো। পকেটে দুহাত গুঁজে নিষ্ঠুর ভঙ্গিতে প্রতিটা চিৎকার শুনতে লাগলো। কিছুক্ষণ ক্ষোভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে ঘাড়ের ব্যায়াম হিসেবে অদ্ভুত কাজ করলো। মাথাটা ধীরগতিতে একবার ডানে, আরেকবার বামে কাত করলো। সেদিন এভাবেই একটা মেয়েকে রুমে আঁটকে দিয়েছিলো, এভাবেই ওই মেয়েটা দরজা খুলার জন্য অনুনয় করেছিলো, বারবার জঘন্য স্পর্শের কবলে পরে নিজেকে অসহায় ভেবেছিলো। প্রতিটা অশ্রুফোঁটা ঝরঝর করে দুগাল বেয়ে ভিজে যাচ্ছিলো। সে ছাড়া পেয়ে নিস্তেজ শরীর নিয়ে সত্য গোপন করে ফেললো। সেই জঘন্য সত্য আপন দাদাভাইও জানতে পারলোনা, নিজের নাড়ী ছেড়া মায়েরও দুকানে শোনার সুযোগ হলোনা । আজ একইভাবে মূখ্য অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। কিছুটা অন্য কায়দায়, কিছুটা অন্য ভঙ্গিতে। আর সেই দৃশ্যের মতো আজ কিছুটা স্থান চেন্ঞ্জ হয়েছে। সেদিন সুরাইয়া বাইরে দাড়িয়ে উপভোগ করেছে। আজ সেই জায়গায় মাহতিম দাঁড়িয়ে তৃপ্তির শ্বাস টানছে। তরুণের কাছ থেকে প্রতিটা স্বীকারোক্তি পুনরায় স্মরণ করছে, সেই দগ্ধ-পীড়িত বুকের যন্ত্রটা আজও বেকাবু স্পিডেই চলছে। আজ সুরাইয়ার জায়গায় অন্য কোনো ছেলে হলে ব্রেনে দুটো বু-লে-ট ঢুকিয়ে দিতো নি-র্ঘা-ত! এখনো হিসাব বাকি। মাহদির ভাষ্যমতে আরেকটা হিসাব নেওয়া এখনো বাকি।
.
.
.
চলবে............................