হঠাৎ তুমি এলে - পর্ব ২০ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


-তোমার সাহস হলো কি করে আবার এই বাড়িতে আসার? কি দেখতে এসেছ প্রজ্ঞা? কি দেখতে এসেছ? তোমার ছেড়ে যাওয়া বাড়িটা আগের মতো আছে কিনা সেটা দেখতে এসেছ? নাকি নতুন কেউ এসে সেই জায়গাটা দখল করেছে কিনা সেটা চেক করতে এসেছ? ডোন্ট ইউ ওয়ারি প্রজ্ঞা। তুমি নতুন করে, নতুন কারো সাথে সবটা নতুন করে শুরু করেছ যখন এবার আমিও করবো। এতো বছর তো জানা ছিল তুমিও নিজের জীবনে এতোটা এগিয়ে গেছ, এবার আমার নতুন করে জীবনে শুরু করতে তো কোনো বাধা রইলো না আর তাই না? সো তোমার নতুন জীবনে শান্তিতে থাকো, আমাকেও আমার মতো শান্তিতে থাকতে দাও।

শুভ্রার আলিশান অফিস থেকে ছুটে রাস্তায় বেরিয়ে আসার সময়েই আরেকটু হলেই কালো রঙের গাড়িটা প্রায় ধাক্কাই দিয়েছিল প্রজ্ঞাকে। হামিদ সাহেব ছুটে এসে প্রজ্ঞার হাত টেনে পিছনের দিকে টেনে নিতেই গাড়িটা শাঁ করে প্রজ্ঞার সামনে দিয়ে চলে গেল। আশপাশে একটা জটলা মতো পাকিয়ে গেছে ততক্ষণে। সবাই কিছুক্ষণ এতো কেয়ারলেসভাবে চলার জন্য প্রজ্ঞাকে লেকচার দিলেও প্রজ্ঞা সেসব নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাচ্ছে না। ওর মাথায় তখনও চলছে ধূসরের কাছে কিভাবে নিজের নির্দোষিতার প্রমাণ দিবে। ভিড় করে ঘিরে থাকা মানুষগুলোর কথার খোঁচা গায়ে না মেখে আবার রাস্তার দিকে পা বাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে থামতে হলো প্রজ্ঞাকে। হামিদ নামের সদাহাস্য লোকটা প্রজ্ঞার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পথ আটকে দাঁড়াতেই প্রজ্ঞা হামিদ সাহেবের মুখের দিকে তাকিয়ে বেশ অবাকই হলো। লোকটার হাসিটা ঠোঁটের কোণ থেকে হারিয়ে গিয়ে সেখানে বিন্দু বিন্দু করে জমা হয়েছে রাজ্যের ভয়, আতঙ্ক। কিন্তু লোকটা কাকে ভয় পাচ্ছে সেটাই বুঝতে পারছে না প্রজ্ঞা। হামিদ সাহেব রাস্তার ডানে বামে ভালো করে দেখে প্রজ্ঞার হাতটা ধরে টেনে জায়গাটা থেকে বেরিয়ে এসে সামনে থেকে আসা একটা সিএনজিতে উঠিয়ে দিয়ে নিজে সিএনজির বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেই আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিল। হামিদ সাহেবের এমন কাজে বিস্ময়ের চোটে কোনো রিএক্ট করতেই ভুলে গেছে বেচারি। ব্যস্ত শহরের হাজার শোড়গোলের মধ্যেও হামিদ সাহেবের কথাগুলো কানে এসে ধাক্কা খেল প্রজ্ঞার। 

-ওদের লোকজন আমাদের অনেক আগে থেকেই ফলো করছে ম্যাডাম। কাল আপনাকে ওই কালো গাড়িটা থেকে নামতে দেখেই আমার কেমন সন্দেহ লেগেছিল। এখন দেখলেন তো ওই গাড়িটা অফিস কম্পাউন্ডেই আরেকটু হলেই কিভাবে আপনাকে এক্সিডেন্ট করে চলে যেত? কেউ বুঝতেও পারতো না এটা যে একটা প্রি-প্ল্যানড এক্সিডেন্ট ছিল।

হামিদ সাহেবের কথাগুলো শুনে রীতিমতো শকড হয়ে হা করেই লোকটার দিকে তাকিয়ে রইলো প্রজ্ঞা। ভদ্রলোক কি বলছে সেটাও যেন মেয়েটা বুঝতে পারছে না। ব্যস্ত রাস্তার হাজার গাড়ির শব্দও কানে না পৌঁছে কেমন একটা ঝাঁ ঝাঁ শব্দ হচ্ছে মাথার ভিতরে। শুভ্রা ওকে ধূসরের কাছে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিবে এটা ভাবাটাই আসলে ভুল ছিল প্রজ্ঞার। প্রজ্ঞার ভাবনার তারটা কেটে গেল হামিদ সাহেবের হাতের ঝাঁকানোয়।

-ওই লোকগুলো আপনার কোনো ক্ষতি করে দেয়ার আগে আপনি প্রত্যুষা মামনিকে নিয়ে ডাক্তার সাহেবের কাছে ফিরে যান ম্যাডাম। আমি দেখি এ দিকটা কিভাবে ম্যানেজ করা যায়। মালিক পক্ষের কেউ না থাকলে ওরা জায়গাটা দখল করতে পারলেও বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না। 

-হামিদ সাহেব?! আপনি বাড়ি ফিরে যান। আমি জরুরি একটা কাজে যাচ্ছি। আপনার এখন প্রত্যুষা, অদিতি আর লতা ভাবির পাশে থাকা প্রয়োজন। আমি এদিকটা সামলে নিতে পারবো। চলুন ভাই। একটু দেখবেন যেন কেউ আমাদের ফলো করতে না পারে-----।

-কিন্তু ম্যাডাম? ওরা আপনার কোনো ক্ষতি করে ফেললে আমি ডাক্তার সাহেবকে কি জবাব দিব? প্রজ্ঞা ম্যাম?

হামিদ সাহেবের কথাগুলো শেষ হওয়ার আগেই প্রজ্ঞার কথায় সিএনজি অটোরিকশা চালক গাড়ি ছুটিয়েছে। হামিদ সাহেবের চিন্তিত মুখটা পিছন থেকে রাজ্যের আতঙ্ক নিয়ে সেখানে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে আছে। সেখান থেকে প্রজ্ঞা সোজা চলে এসেছিল ধূসরের বাড়িতে। পাঁচটা বছর পর বাড়িটায় পা দিতেই যেন একটা দমকা হাওয়া সমস্ত স্বত্তাটা কাঁপিয়ে দিয়ে গেল প্রজ্ঞার। বাড়িটাকে দেখে মনে হচ্ছে পাঁচ বছর আগে ঠিক যেভাবে বাড়িটা ছেড়ে গেছিল প্রজ্ঞা, বাড়িটা ঠিক যেন সেভাবেই রয়ে গেছে। একটুও যেন বদলায় নি বাড়ির একটুকু একটা অংশও। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে প্রজ্ঞা একটা একটা জিনিস হাতে ছুঁয়ে দেখছিল এমন সময়ই মেয়েটার বাম হাতটা কেউ পিছন থেকে টেনে ধরে কথাগুলো বলে। হাতের স্পর্শ আর কথা দুটোই যে ধূসরের সেটা বুঝতে দেরি হয়নি প্রজ্ঞার। তাই ধূসরের অপমানগুলো গায়ে না মেখেই ধূসরের দিকে ফিরে এক পা এগিয়ে আসার চেষ্টা করতেই ধূসর নিজের বাম হাতটা উঁচু করে প্রজ্ঞাকে সামনে আসতে বাঁধা দিল।

-নতুন করে তোমার আর কোনো নাটক দেখার মতো সাহস বা মনের জোর কোনোটাই অবশিষ্ট নেই আমার। তুমি নিজের জীবনে ভালো থেকো, এটাই প্রার্থনা করি। নাউ ক্যান ইউ প্লিজ গেট আউট? আমার জীবন থেকে, এই বাড়িটা থেকে এতোটা দূরে যাও যেন তোমার আর তোমার মেয়ের মুখটা আমাকে কখনো দেখতে না হয়। এই দয়া টুকু করতে পারবে প্লিজ প্রজ্ঞা? প্লিজ?

-ধূসর? প্লিজ আমার কথাটা বিশ্বাস করো? আমি তোমাকে এক সেকেন্ডের জন্যও ধোঁকা দিই নি। তোমাকে ফেলে আমি সত্যিই যাই নি ওইদিন। বিশ্বাস করো সেদিন এক্সিডেন্টটা আসলে এক্সিডেন্টও ছিল না। শুভ্রা প্ল্যান করে তোমাকে------। ডাক্তাররা আমাকে মিথ্যে বলেছে যে তোমার অপারেশনের জন্য বিশ পঁচিশ লাখ টাকা লাগবে। ওই পুরো ঘটনাটা শুভ্রার সাজানো নাটক ছিল ধূসর। আমি বুঝতে পারি নি কিভাবে ওদের পাতা ফাঁদে পড়ে আমি বোকার মতো------।

-বোকার মতো কি প্রজ্ঞা? বোকার মতো ডিভোর্স লেটারে সাইন করে দিয়ে পালিয়ে গেছিলে? কি ভেবেছিলে? ডিভোর্স দিয়ে দিলে আইনতভাবেই আমার ভাগের সম্পত্তির ৫০% তো পেয়েই যাবে। এমনিতে তো আমি মরে গেলেও একটা কানা কড়িও আমার বাবার থেকে পেতে না, এটাই ভেবেছিলে তো তুমি?

-ধূসর? কি বলছ এসব? তুমিও শুভ্রার কথাটাই বিশ্বাস করেছ শেষ পর্যন্ত? জানো ওইদিন মাও ওর কথা বিশ্বাস করে আমাকে হসপিটাল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। তুমি মাকে একবার জিজ্ঞেস করো, আমি সত্যি বলছি কি না-----।

-আমার কাউকেই জিজ্ঞেস করার কিছু নেই। ইউ জাস্ট গেট আউট----। যার নামে ফেইক এতোগুলো এলিগেশন দিলে সেই শুভ্রাই সেদিন মায়ের একটা কলে আমার অপারেশনের জন্য পঁচিশ লাখ টাকা নিয়ে অতো রাতে হসপিটালে এসে হাজির হয়েছিল। আর ওর জন্যই আজ আমার সামনে দাঁড়িয়ে তুমি কথাগুলো বলতে পারছ প্রজ্ঞা। গলা উঁচিয়ে তার দিকেই আঙুল তুলতে পারছ, যার জন্য আজ পাঁচটা বছর আমি সুস্থ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছি।

-সব সব সব মিথ্যে। সব ওই শুভ্রার সাজানো নাটক। তুমিও ওর সাজানো নাটকগুলো সত্যি মনে করে বিশ্বাস করে নিয়েছ ধূসর? আমি কি করে তোমাকে বুঝাই? আহহহহহ। বিশ্বাস করো ওই শুভ্রাই সব করেছে। তোমার এক্সিডেন্ট করিয়েছে, তোমার কাছ থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, আজও তোমার কাছে ভালো হওয়ার নাটক করে চলেছে------।

-এনাফ ইজ এনাফ প্রজ্ঞা। যথেষ্ট বলে ফেলেছ তুমি। তোমার মুখ থেকে শুভ্রার নামে আর একটা বাজে কথাও আমি শুনতে চাই না। ওর নামে যদি আর একটাও বাজে কথা বলো তুমি তাহলে আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না বলে দিলাম।

ধূসরের এমন অদ্ভুত ব্যবহার আর শুভ্রার জন্য এমন অন্ধ ভরসা দেখে প্রজ্ঞা ব্যাপারটা হজম করতে পারলো না। এক পা এগিয়ে এসে ধূসরের হাতটা ধরার চেষ্টা করতেই ধূসর ঝাড়া দিয়ে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল।

-কেন এমন করছ ধূসর? আমার মুখেও যে মেয়েটার নাম তুমি সহ্য করতে পারতে না, সেই তুমিই কিনা ওই মেয়েটার হয়েই আজ সাফাই গাইছ? কেন ধূসর? কেন?

-কজ শুভ্রা তোমার মতো ধোঁকাবাজ নয় প্রজ্ঞা। ও আমাকে ভালোবেসেছে, শুধু আমাকেই ভালোবেসেছে। আমার হাজার অপমান, অসম্মান করা স্বত্ত্বেও শুধু আমাকেই পেতে চেয়েছে। এর বেশি তো কিছুই ওই মেয়েটা কখনো চায় নি। কিছু পাবে না জেনেও এই পাঁচটা বছর আমার পাশে ছায়ার মতো হয়ে ছিল। আমার বিপদে, কষ্টে, হতাশায় আমার ঢাল হয়ে সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল, যতবার ভেঙ্গে পড়েছি ততবার বন্ধু হয়ে শান্তনার জন্য কাঁধ বাড়িয়ে দিয়েছে আমার কষ্টের ভাগিদার হতে। সেই মেয়েটাকেই অবিশ্বাস করি কি করে বলো তো? আর কার কথায় অবিশ্বাস করবো বলো তো? তোমার? যে আমাকে বিপদের দিনে একা ফেলে জাস্ট পালিয়ে গেছে। তার কথায়?

-আমি তোমাকে ফেলে পালিয়ে যাই নি ধূসর। সেদিন হসপিটাল থেকে বের হওয়ার পরই একটা এক্সিডেন্ট ঘটে। যে বয়স্ক ডাক্তারের গাড়ির সামনে আমি সেন্সলেস হয়ে যাই, উনিই আমাকে নিজের সাথে নিয়ে যায়। বিশ্বাস করো প্লিজ? আমি তোমার কাছে কিভাবে পৌঁছাবো সেটাই ভাবছিলাম তখনও। কতোগুলো ঘন্টা পর যখন সেন্স আসে তখন অন্য কোনো শহরে আমি। সেখানেই জানতে পারি তোমার ভালোবাসার অংশের অস্তিত্বের কথা। 

-এনাফ ইজ এনাফ প্রজ্ঞা। অনেক গল্প শুনিয়েছ এতোক্ষণ ধরে। আর নয়। এতো নাটক না করে সোজাসুজি বলে দাও কি জন্য এসেছ আবার? কি চাইতে এসেছ? টাকা? কত টাকা লাগবে বলো? নো নো ওয়েট--আমি একটা ব্ল্যাঙ্ক চেক এ সাইন করে দিচ্ছি। তুমি তোমার পছন্দ মতো এমাউন্ট ফিলআপ করে নিও। ডোন্ট ওয়ারি। ব্যাংক থেকে কোনো ঝামেলা ছাড়াই টাকাটা উইথড্র করে নিতে পারবে তুমি। যে কাজটা গতবার করতে পারো নি, এবার সেটা হবে না। এই নাও চেকটা ধরো? এন্ড লিভ প্লিজ?

-ধূসর?

-প্লিজ টেইক ইট, এন্ড লিভ প্রজ্ঞা।

ধূসর রীতিমতো জোর করে প্রজ্ঞার হাতে নিজের সাইন করা ব্ল্যাঙ্ক চেকটা ধরিয়ে দিলেও প্রজ্ঞা শুধু ফ্যালফ্যাল করে ধূসরের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। রাগ করে ধূসরের দেয়া চেকটা শত শত খন্ড করে টুকরো টুকরো করে ফেলে দিতে পারছে না ধূসরের চোখের দিকে তাকিয়ে। কেন জানি প্রজ্ঞার বারবার মনে হচ্ছে ধূসর ইচ্ছে করেই কথাগুলো বলছে যাতে প্রজ্ঞা কষ্ট পায়। ধূসরের চোখ আর মুখের ভঙ্গির সাথে ওর বলা একটা কথারও কোথাও যেন মিলই খুঁজে পাচ্ছে না মেয়েটা। প্রজ্ঞার কথাগুলো ভাবার ফাঁকেই প্রজ্ঞার মোবাইলটা শব্দ করে বেজে উঠতেই প্রজ্ঞা চমকে উঠে কলটা রিসিভ করতেই ধূসর প্রায় ছোঁ মেরে মোবাইলটা নিয়ে ফ্লোরে আছাড় মেরে টুকরো টুকরো করে ফেললো। ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটেছে যে প্রজ্ঞা এক কথায় স্তব্ধ হয়ে ধূসরের দিকে তাকিয়ে রইলো কয়েক মূহুর্ত। ধূসর এবারে প্রজ্ঞার একটা হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে এসে প্রজ্ঞাকে বাড়ির বাইরে বের করে দিল। সরাসরি প্রজ্ঞার চোখে চোখ রেখে কয়েকটা কথা বলেই প্রজ্ঞার মুখের উপরেই দরজাটা শব্দ করে বন্ধ করে দিল ধূসর। আর কথাগুলো মাথার মধ্যে টেপরেকর্ডারের মতো বাজতে বাজতেই প্রজ্ঞা কেমন একটা ঘোরের মধ্যেই রাস্তার দিকে পা বাড়িয়েছে। মেয়েটার কানে তখনও বেজে চলেছে ধূসরের কথাগুলো। আর তখনও প্রজ্ঞার হাতে শক্ত করে আঁকড়ে ধরা আছে ধূসরের জোর করে ধরিয়ে দেয়া ব্লাঙ্ক চেক টা। 

-নিজের মেয়েকে নিয়ে এতোটা দূরে চলে যাও যেখানে কেউ তোমাদের খুঁজে পাবে না প্রজ্ঞা। এতোটা দূরে চলে যাও যেখানে তোমার স্বপ্নের স্বপ্ন ঘেরা কুটির থাকবে আর তোমার মেয়ে থাকবে, আর কেউ না। আমার লাইফে, আমার বাড়িতে ফিরে আসার ভুলটা ভুলেও আর করবে না কখনো। বাকিরা ছেড়ে দিলেও আমি কিন্তু তোমাকে মরে গেলেও ক্ষমা করবো না কোনোদিন। কোনোদিন না।
.
.
.
চলবে..................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন