আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আপনিময় তুমি - পর্ব ০৫ - আরিয়ানা জাবিন মেহের - ধারাবাহিক গল্প


ইহান: ওকে আনহা.... কাল আপনার সাথে দেখা হবে আমার.... কিন্তু..... [ বাকা হেশে আনহার ওড়নাটায় চুমো খেয়ে ]

পরের দিন ক্লাস শেষে আনহা ইহানকে পরাতে গেল লাইব্রেরিতে..... আনহা ইহানকে একটা ম্যাথ বুঝিয়ে সেটা দেখতে দিল। আর ইহান ও সেটা বেশ কিছুক্ষন নিয়ে দেখতে লাগল। এভাবে অনেকক্ষন যাবার পর আনহার বেশ অলসেমি লাগে। ঘুমে চোখ বুজে আসে। ইহান নিজের মত ম্যাথ করতে ব্যাস্ত..... তাই আনহার মাথাটা টেবিলে রাখল এভাবে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে গেল নিজেও জানতে পারল না।


ইহান ম্যাথ শেষ করে যেইনা আনহাকে ডাক দিতে গেল.... তখন দেখল আনহা ঘুমিয়ে গেছে এটা দেখে ইহান একটু মুচকি হাসে.... তখনি আনহার ফোনের স্কীনে আবার আদ্র নামটা লেখা উঠে..... এটা দেখে ইহানের মাথাটা আবার গরম হয়ে গেল। ও খুব সাবধানে ফোনটা নিয়ে কল কেটে দিল তারপর মোবাইলটা বন্ধ করে আনহার পাশে গিয়ে বসে পড়ল.... তারপর নিজের গায়ের জ্যাকেট টা আনহার গায়ে জড়িয়ে দিল।

টেবিলে হাতের উপর মাথা দিয়ে খুব কাছ থেকে আনহাকে দেখতে থাকে। আনহার মুখে আসা চুল গুলো ফু দিয়ে উড়িয়ে দেয় ইহান। তারপর অপলক ভাবে দেখতে থাকে আনহাকে...........

ইহান: I love u Anha...... [ আনহার হাতের আঙুলে টাচ করে ]


বিকেল ৫টা দিকে আনহার ঘুম ভাঙে...... আনহা আলসেমি ঝাড়তে বড় সরো একটা হাই তোলে..... ইহান সামনে বসে বই দেখছিল আর চিপস খাচ্ছিল...... আনহাকে উঠতে দেখে.....

ইহান: Good Afternoon miss... তা ঘুম ভালো হইছে.... [ মুচকি হেশে ]

আনহা: অনেক ভালো হইছে...

[ আবার টেবিলে মাথা রাখে। কিছুক্ষন পর ওর খেয়াল হয় ওর সাথে কেউ কথা বলল। উঠে সামনে তাকাতেই দেখে ইহান..... ]

আনহা: তুই এখানে কি করছিস.... 😲😲😲

[ এইটা দেখে ইহান আনহার সামনে তুরি বাজায়।

ইহান: মিস অর্নি.... আপনি নিজের বাসায় নন লাইব্রেরিতে। আর আপনি এখানে আমাকে পরাতে এসেছেন আর না পরিয়ে ঘুমুচ্ছেন.... [ এক পিচ চিপস মুখে দিয়ে ]

ইহানের কথায় আনহা বেশ লজ্জা পেল। কারন ও ইচ্ছে করে না ঘুমালেও একজন স্টুডেন্ট এর সামনে ঘুমিয়ে গেছে....

আনহা: সরি আমি বুঝতে পারিনি। [ মাথা নিচু করে ]

ইহান: its ok..... [ গম্ভীর গলায় ]

তখনি আনহার চোখ যায় মোবাইলের দিকে। হাতে নিতেই দেখে মোবাইলটা অফ। দ্রুত মোবাইল অন করতেই দেখে আদ্রের প্রায় ৫৭ টা মিসকল.... সময়ের দিকে তাকাতেই চোখ কপালে তারমানে ৫ বাজে। যেখানে ১ টায় ওর ক্লাস শেষ হয়েছে....

আনহা: ৫ টা বেজে গেছে আর তুই আমাকে একটা বার ডাক দিতে পারলি না😡😡😡 আমি না হয় ঘুমিয়ে গেছি তুই তো জেগে ছিলি তাই না..... 😡😡😡

ইহান খুব শান্তভাবে আনহার দিকে তাকায়......

ইহান: এখানে আমি আপনার কাছে পরতে আসি আপনাকে ঘুম থেকে জাগাতে না [ বেশ মুড নিয়ে ]

আনহা: তোর সাথে কথা বলাই বেকার..... [ বলে চলে যেতে নেয়। তখনি ইহান আনহার হাত ধরে আবার চেয়ারে বসিয়ে দেয়....

ইহান: ঘুমিয়েছেন তাই ডাকিনি। কিন্তু এখন যখন ঘুম ভেঙেছে আমার পড়া কমপ্লিট করে দিয়ে যাবেন। কালকে আমার দরকার।

আনহা: এখন শীতকালের সময় একটু পর সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আমি বাসায় যেতে পারব না। তাছাড়া তুই তো জানিস আজকে একটা পার্টি আছে....

ইহান: আমাকে এসব বলে কোনো লাভ নেই মিস আনহা.....

আনহা ডাক শুনে আনহা ইহানের দিকে তাকায়... অনেকদিন পর আনহা নামটা শুনল.....

ইহান: কি হল বসুন...

আনহা আর কিছু বলতে পারল না। বুঝতেই পারছে অংক না বুঝিয়ে আজ ইহান ওকে ছাড়বে না। তারপর আনহা ওকে পরাতে পরাতে প্রায় সাড়ে ৬ টা বেজে যায়। আনহা দ্রুত পরিয়ে বেড়িয়ে আসে। চারদিক অন্ধকার হয়ে গেছে। এসময় এদিকটায় কোনো রিক্সা পাওয়া যায় না। এখন কিভাবে যাবে বুঝতে পারছে না। আর রাস্তাটাও খুব নিরব......

আনহা ভয়ে ভয়ে হাটতে থাকে। তখনি কিছু একটার শব্দে কেপে উঠে ও... প্রচন্ড ভয় লাগছে এই অন্ধকারে। কিছুদুর হাটতেই আরেকটা শব্দে আনহার কলিজা কেপে উঠে... দেখে একটা কালো বিড়াল রাস্তার পাশে ডাকছে এইটা দেখে আনহার কলিজার পানি শুকিয়ে যায়.... আনহা কিছু না ভেবেই দৌড় দেয়.... আর কিছুর সাথে বেধে মুখ থুবড়ে পরে যেতে নেয় আর নিজের চোখ বন্ধ করে নেয়... ঠিক তখনি কেউ আনহার হাতটা ধরে নেয়... আনহা কিছুক্ষন পর চোখ খুলে ইহানকে দেখতে পায়.... ইহান শান্তভাবে ওর হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে.... আনহা ওর দিকে তাকাতেই ইহান আনহাকে নিজের দিকে টেনে নেয়। যার কারনে ও ইহানের বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে আনহা নিজের নাকে ব্যাথা পায়.....

আনহা: [ ইসস... কি অবস্থা সেইত ব্যাথা পেলাম.... মনে মনে নাকে হাত ]

ইহান: এখানেই এভাবে থাকার ইচ্ছে আছে নাকি যাবেন....

আনহা:......

ইহান: আপনি থাকলে থাকতে পারেন আমার ইচ্ছে নেই.....

আনহা আর কিছু বলতে পারল না। ইহানের পিছনে হাটা শুরু করল...

আনহা: আজ তুই গাড়ি আনিসনি.....

ইহান: না... ড্রাইভার ছুটি নিয়েছে....

আনহা: তুই ড্রাইভ করতে পারিস না। 🤔🤔

এইটা শুনে ইহান থেমে ভ্রু কুচকে আনহার দিকে তাকায়.....

ইহান: আচ্ছা আমাকে দেখে আপনার মনে হয় আমাকে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেবে

আনহা: আসলে...

ইহান: থাক আর বলতে হবে না.... [ হাটুন ]

আনহা: [ এই টুকু বয়েসে এতটা পার্রসোনালিটি পায় কই এই পিচ্চি। বয়সের সাথে খুব বেশি বেমান লাগে। সবাই যেখানে নানা কাজে ব্যস্ত সে তখন নিজের জগতে বিভোর..... ]

ইহান: চলুন....

আনহা: কিভাবে যাব। এতদুর হেটে যেতে পারব.... এখানে তো আর কিছু নেই....

ইহান: আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে যদি আপনার আপত্তি না থাকে....

আনহা: কি..??

ইহান: আজকে ভার্রসিটিতে আমি সাইকেল নিয়ে এসেছিলাম। মন চাইছিল তাই.... এখন আপনি যদি চান তবে আমার সাথে সাইকেলে যেতে পারবেন......

আনহা: সেটা এখন বলছিস....😡😡😡 আগে বললে কি হত....

ইহান: হুমম... এখন বললাম তো... সে যাই হোক চলুন... সাইকেল মাঠে আছে.....

আনহা: আবার মাঠে😭😭😭

তারপর ওরা মাঠে যায়.... 

ইহান: একটা সমস্যা আছে.....

আনহা: আবার কি???

ইহান: আমার সাইকেলে পিছনে সিট নেই তাই সামনে বসতে হবে.।।।।

আনহা: মানে.....

ইহান: কিছু করার নেই.....

ওকে সমস্যা নাই.... তারপর ইহান সাইকেল চালায় আর আনহা ইহানের সামনে বসে....

আনহা: ইসসস কত মজা তাই নারে। ছোটবেলায় কত ট্রাই করেছিলাম সাইকেল চালানোর জন্য কিন্তু পারিনি। সে যাই হোক তুই তো পেরেছিস তাতেই খুশি.... 😁😁😁

ইহান: [ আমি জানি আনহা আপনার অনেক শখ সাইকেল চালানোর তবে চিন্তা করবেন না। আপনি চালাতে পারেনি তো কি হয়েছে আমি তো আছি আমি আপনাকে নিয়ে ঘুরব ]

তারপর আনহাকে নিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়। পুরো রাস্তা আনহা বকবক করছিল আর ইহান খুব মন দিয়ে ইহানের কথা গুলো শুনছিল...... বাড়িতে নামিয়ে দিলে আনহা ভিতরে চলে যেতে নেয় তখনি আবার ফিরে ইহানের দিকে তাকায়.....

আনহা: ইহান....

ইহান: হুমম....

আনহা: গুড নাইট কাল দেখা হবে..... [ মিষ্টি হেসে ভিতরে চলে যায় ]

ইহান: সরি আনহা কাল নয়। আজ রাতেই আপনার সাথে আমার দেখা হবে.......


বাড়িতে ডুকতেই আনহার মোবাইলে অন্তির কল আসে.....

অন্তি: ওই তুই কি আজ পার্টিতে আসবি না নাকি.... 😡😡😡

আনহা: আরে আসব তো... রাগছিস কেন???

অন্তি: ছিলি কই তুই তোকে না পেয়ে আদ্রদা আমাকে পাগল করে ফেলেছে....

আনহা: এই যা তোর সাথে পরে কথা বলছি আর আমি আসছি......

অন্তি: কিন্তু.....

আনহা: আমি আসছি....... এখন বায় [ বলেই ফোন কেটে দেয় ]

তখনি ফোনে আদ্র কল দেয়......

আনহা: হ্যালো....

আদ্র: সমস্যা কি তোমার.... [ বলেই হাজার কথা শুনাতে শুরু করে আর আনহা খালি হুমম হমম করে ]

আনহা: হয়েছে...

আদ্র: তুমি... 😡😡😡

আনহা: এখন রাখি.... পার্টিতে আসছি বায়.... [ বলেই কেটে দেয় ]


তারপর আনহা ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয়। কালো একটা গ্রাউন পরে তার সাথে স্টোনের ইয়াররিং ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক...... আর চোখে গাঢ় কাজল দিয়ে চুল গুলো ছেড়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে একটা মুচকি হাসি দিল....

আনহা: মি. আদ্র দেখি আজকে আপনি আমাকে কি বলেন???


তারপর আনহা অন্তির সাথে পার্টিতে যায়। কিন্তু পার্টিটা কে বা কেন দিয়েছে ও জানে না। ভার্রসিটির কেউ দিয়েছে কিন্তু কে তা জানে না। এখানে সবাই ভার্রসিটির স্টুডেন্ট........

আনহা গিয়ে আদ্রের সামনে দাড়াতেই আদ্রের চোখ কপালে...... কিছু বলার ভাষাই যেন হাড়িয়েছে.....

অন্তি: এভাবে দেখলে আমার ফ্রেন্ডের নজর লাগবে....

আদ্র: চাঁদ যদি সামনে থাকে দেখতে তো হবেই...

অন্তি: তারজন্য ব্যবস্তা আছে.... [ একটা মাক্স এনে আনহাকে পরিয়ে দেয় আর নিজেও একটা পরে নেয়। ] এবার আর চাদে কারো নজর পরবে না। আর হ্যা আপনিও পরে নিন.....

আদ্র: ওকে.... [ নিজেও একটা মাক্স পরে নেয় ]

[ কারন এটা একটা মাক্স পার্টি। সবার মুখে মাক্স লাগানো ]


মাক্স পরার কারনে আদ্রের কাছে সবটা গুলিয়ে গেল। কারন অনেকেই এক রকম ড্রেস পরে এসেছে। আদ্র আনহাকে খুজছে আর আনহা জুস বারে বসে মোবাইলে ইহানের ছবি দেখছে। খুব মিস করছে ওকে......

সবাই ডান্স ফ্লোরে ডান্স করছে.... আনহা ওদের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেশে আবার মোবাইলে ইহানের সাথে ওর ছোটবেলার ছবি গুলো দেখতে থাকে......

আনহা: আচ্ছা এখানে সবাই আছে.... তুই তো আমাদের ভার্রসিটির তাহলে তুই আসিস না কেন??? আমিও না তুই তো ছোট.... পিচ্চি আমার......... নাকে উপর এখনো কত রাগ....[ বলেই মুচকি হাসে ]

তখনি লাইট নিভে আলো জলা- নেভার খেলা শুরু হয়..... হঠাৎ আনহার চোখ যায় দরজার দিকে..... দেখে খুব লম্বা একজন। কমপ্লিট ব্লাক সুট...... কালো শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত ফোল্ড করা আর শার্টের উপরের ২টা বোতাম খোলার কারনে ফর্সা বুকটা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মুখে মাক্স থাকার কারনে চেহারা দেখা গেল না। কিন্তু ছেলেটার হাটার স্টাইল আর ওর লুকে যে কেউ অ্যাটাকটেড হবে। ছেলেটা খুব ধীর পায়ে সামনে এগোতে থাকে। আনহার কেন জানি মনে হতে লাগল ছেলেটা ওর দিকেই আসছে.... কিন্তু মনে ভুল মনে করে আনহা অন্য দিকে তাকায়.......

তখনি ছেলেটা এসে আনহার দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়...... আনহা বেশ অবাক হয়।

ছেলেটি: আমি কি ডান্স করতে পারি.... [ হাত বাড়িয়ে ]

আনহা: সরি.... কারন...

[ ছেলেটা আনহাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই হাত ধরে টেনে তোলে..... তারপর ডান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়......

আনহা: কি করছেন??? আমি বললাম তো....

তখনি ছেলেটা আনহার ঠোঁটে আঙুল দেয়....

ছেলেটা: হুসসস... আমার ব্লাক পিন্সেসকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো [ নেশাক্ত কন্ঠে ]

আনহা: মানে..... [ কন্ঠটা সেদিনকার স্টোর রুমে পাওয়া কন্ঠের মত ] দেখুন প্লিজ ছাড়ুন আমাকে...

বলে ছাড়িয়ে যেতে নেয়। কিন্তু ছেলেটা ওকে হ্যাচকা টানে নিজের মধ্যে টেনে নেয়..... আনহা গিয়ে ওর বুকের সাথে মিশে ওর শার্টটা আকড়ে ধরে। আর তা দেখে ছেলেটা আনহাকে জড়িয়ে ধরে। আনহা বুঝতে পেরে ওকে ছাড়ানোর জন্য ওর বুকে ভর দিতে নেয়। তখনি ওর বুকের বাম পাশের শার্টটা সরে যায়। আর ওর বুকে আনহা নিজের নাম দেখতে পায়। আনহার নজর ওর বুকের দিকে গেলেই আনহা ওকে ছাড়িয়ে যেতে চাইলেও পারে না.... আবার নিজের মধ্যে টেনে নেয় ওকে...... আনহার বুঝতে বাকি থাকে না এইটা সেই ছেলেটা যাকে ও মাঠে দেখেছিল।

আনহা: প্লিজ ছাড়ুন [ হাত ছাড়ানোর চেষ্টায় ]

ছেলেটি: এত তাড়া কিসের এখনো অনেকটা সময় বাকি আছে.... আর ছেড়ে দিলেই বা কি পালাতে পারবে কি আমাকে ছেড়ে [ বাকা হেশে ]

আনহা: মানে.... কে আপনি..... আমি ত আপনাকে চিনি না।

ছেলেটি: আচ্ছা দুনিয়ায় আমাদের কি সবাইকে চিনতে হয়....

আনহা: কিন্তু আপনি বার বার আমার সামনে আসেন কোনো কারন তো আছে নাকি....

ছেলেটি: আছে তো.......

আনহা: কি????

ছেলেটি: কিছু চাই আমার ....

আনহা: আমার কাছ থেকে.... [ অবাক হয়ে ]

ছেলেটি: হুমম তোমার কাছ থেকে.....

আনহা: আমার কাছে আপনার চাওয়ার কি থাকতে.... আর আমি বা আপনাকে কি দিতে পারি.....

ছেলেটি: যা চাই আমার সেটা তুমি দিতে পার। আর কারো কাছ থেকে চাইলেও আমি পাব না....

আনহা: কি.... এমন কি যা আমি ছাড়া কেউ দিতে পারবে না......

ছেলেটি: শুনতে চাও....

আনহা: হুমম.....

ছ্রলেটি: #আপনিময়💓তুমিকে..... [ কানের কাছে গিয়ে ]

আনহা: মানে......

ছেলেটি: তোমাকে চাই.... আর তোমাকে শুধু তুমি দিতে পারো অন্য কেউ না। তাই যা আমার চাই তা তোমার থেকেই চাই.....

আনহা ওকে ছাড়িয়ে বলে....

আনহা: কি যা তা বলছেন....

ও আবার আনহাকে নিজের সাথে শক্ত করে মিশিয়ে নিয়ে বলে......

ছেলেটি: যা তা নয়.... তুমি শুধু আমার। এখন যতই দুরে যেতে চাও কিন্তু একদিন তুমিকে আমি আমার করে দেখাব..... সেদিন তুমি আমার তুমি হবে.....

আনহা: কি সব বলছেন আপনার মাথায় সমস্যা আছে........ 😡😡😡

ছেলেটি: হুমম..... তাইত তুমি আমার crazy love
[ আমার #আপনিময়💓তুমি..... আমার crazy love ]

আনহা: দেখুন...... 😡😡😡


তারপর বেজে উঠে মিউজিক........

ZindaganikeLamhokoTereNaamKarDiya
KhudKo Teri He Khatir Badnaam KarDiya
Badnamiyaan MiliTanhahiyan Badii

Her Pal Ye DilYaadTujhe KartaRehtaHai
Her Pal TereSapne Ye Dekha Karta Hai
ManaTumneRaasteApneBadalLiye
Ye BecharaBeeteKal Mein He RehtaHai

AkhiriSaansKoBhiTereNaamKarDiya
AakhiriSaansKoBhiTereNaamKarDiya
KhudKo Teri He KhatirNakaamKarDiya

BadnamiyanMili
TanhahiyanBadii

Main Teri Aankho Mein
DekhtaHoonKhudKo
TumkoKyaDikhtaHai
MeriNazro Mein Kaho…

ছেলেটার হাত থেকে বার বার আনহা ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেও পারে না। একসময় এই আলোর খেলায় আনহা নিজেও সামিল হয়ে যায়.... নিজেও ছেলেটার সাথে নাচে তাল মিলায়।

নাচ শেষে ছেলেটা আনহার গালে একটা একটা কিস করে..... তখনি সব আলো একেবারের জন্য নিভে যায়..... আর আনহা নিজের ঠোঁটে কিছুর ছোয়া পায়........ বরফের মত জমে যায়। কারন এই ছোয়াটা ওর সত্যি অচেনা হয়। এটা বারং বার পেয়েছে আনহা........

ছেলেটা: আমার ব্লাক প্রিন্সেসকে তার প্রিন্স নিজের ভালোবাসা আর ভালোবাসার গিফট দিয়ে গেল......

[ তখনি গলায় কিছু পড়িয়ে দেওয়া মত কিছু ফিল করে আনহা ]

ছেলেটা: Happy Birthday to u my black Princess........ [ আনহার কপালে ঠোঁট বুলিয়ে ]

তখনি লাইট জলে উঠে....... আর আনহা বরফের মত দাঁড়িয়ে থাকে। এতক্ষন যা যা হয়েছে সবটা ওর মাথার উপর দিয়ে যায়....... আনহা গলায় হাত দিতেই দেখে ওর গলায় কিছু একটা আছে...... হাতে নিয়ে দেখতেই দেখে একটা ব্লাক ডায়মন্ডের পেনডেন...... আনহা বেশ অবাক হয়। কারন কাল ওর জন্মদিন এটা অন্যকারো জানার কথা নয় তবে। আর কে বা এমন গিফট দেবে....

আনহা ছেলেটাকে খুজতে থাকে। হঠাৎ ভিরের মাঝে আনহা ছেলেটাকে দেখতে পায়..... ছেলেটা দুরে দাড়িয়ে একটা ডিংস নিয়ে খেতে খেতে বাকা ঠোঁটে হাসছিল। আনহা খুব দ্রুত ছেলেটাকে ধরার জন্য যায়। কিন্তু আলো আধারের খেলার মাঝে এই ভিড়ে আনহা বার বার ওকে পেয়েও হাড়িয়ে ফেলে......

আনহা বার বার ওর কাছে ছুটে যায়। কিন্তু বার বার ধরা দিতে গিয়েও নিজেকে লুকিয়ে নেয় সে.... সে আনহার সাথে এক অন্যরকম লুকোচুরি খেলায় মেতেছে..... আর আনহা যেন একটা মরিচিকার পিছনে ছুটছে কিছুতেই তার নাগাল পাচ্ছে না.........


বর্তমান.........

আনহা: ইহান.... ইহান..... আরে ওই Donkey..... আরে ওই গাধা কোথায় চলে গেলি.... [ শেষ মেষ ইহানের গলাটাই চেপে ধরে ]

এবার ইহানের ধ্যান ভাঙে.....অতীত থেকে বর্তমানে আসে......

ইহান: পাগল হয়ে গেছেন আপনি....এভাবে কেউ ধরে.... [ বেশ ঝাঝালো কন্ঠে ]

আনহা: ওই ছাগলের গোষ্ঠী. গরুর বংশধর... 😡😡😡 কতক্ষন ধরে ডাকছি..... গাধার জাত....

ইহান: বলুন কি বলবেন...

আনহা: বলুন মানে তুই কি বাধ্য হয়ে শুনবি... 😲😲😲

ইহান: আচ্ছা আমি যদি না শুনি তবে আপনি কি আমাকে ছাড়বেন....

আনহা: না......

ইহান: তাহলে আর কি বলে ফেলুন...

আনহা: আসলে আমি বলতে চেয়েছি🤔🤔🤔 বলতে চেয়েছি.... কি বলতে চেয়েছি... কি জানি বলতে চেয়েছি🤔🤔🤔

ইহান: মনে পরছে না তাইত.....

আনহা: আসলে.....

ইহান: মনে করুন...

কিছুক্ষন পর.....

আনহা: মনে পরছে....

ইহান: বলেন.... [ হাই তুলে ]

আনহা: কি জানি....

ইহান: মনে করুন আমি একটু আসছি..... [ বলে চলে গেল ]

আনহা: যাহ কি বলতে গেলাম তাই তো ভুলে গিচি থুরি গেছি....... কিন্তু বলতে কি চাইছিলাম.... 🤔🤔🤔


তারপর প্রায় বিকেল গড়িয়ে যায়৷ একটু পর গোধুলি নামবে কিন্তু ইহানের আসার কোনো নাম নেই...... তখনি কলিং বেল বাজতে শুরু করে.... আনহা বেশ খুশি হয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খোলে। কিন্তু দরজা খুলতেই আনহার কলিজার পানি শুকিয়ে যায়..... কারন দরজার সামনে স্বয়ং দাঁড়িয়ে আছে.... মি. & মিসেস. আহমেদ ইহানের বাবা মা..... ছোট বেলা থেকেই এই মহিলাকে ভয় পায় আনহা। আর এখনো সেই.......

আনহা: আপনারা.....[ নিচু স্বরে ]

মা: এখন তোমার জন্য কি নিজের বাড়ি আসতে পারব না নাকি.....

আনহা: আসলে.....

মিসেস. আহমেদ: তোমার জন্য কি দরজার দাঁড়িয়ে থাকতে হবে😡 আর বাইরে থেকে কেউ আসলে ঘরে ঢুকতে বলতে হয়। এইটুকু ম্যানার কি নেই তোমার..... [ বেশ ঝাঝালো কন্ঠে ]

আনহা: ভিতরে আসুন.....

[ তারপর মি. & মিসেস আহমেদ ঘরে ঢুকে সোফায় বসেন..... আর আনহা গিয়ে ওনাদের নাস্তা আর পানি দেয়.......

মিসেস. আহমেদ: আমি ম্যানেজারের মুখে ইহানের বোকামির কথা শুনেছি..... ওর মত একটা ছেলে কিভাবে যে এরকম বোকার মত একটা কাজ করল তাই বুঝতে পারছি না.....

আনহা:......

এবার মিসেস আহমেদ আনহার দিকে তাকায়......

মিসেস. আহমেদ: ছেলেটাকে আর দোষ দিয়ে লাভ কি?? ছোটবেলা থেকেই তো এই মেয়েটা ওর মাথাটা খেয়েছ। আর বড় হয়ে কি জাদুটোনা করেছ যে নিজের থেকে ৫ বছরের বেশি একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে। সোসাইটিতে যখন সবটা জানা জানি হবে তখন আমাদের সন্মান কোথায় যাবে.....

বাবা: চেচামেচি না করে ঠান্ডা মাথায় দেখ ব্যাপার টা.......

মিসেস. আহমেদ: এই মেয়ে এদিকে এসো......

আনহা ওদের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়ায়।

মিসেস. আহমেদ: তোমার বিয়ে কেন ভেঙেছে???

আনহা:..... [ কি বলবে উওরটা আনহার নিজেরি অজানা.... ]

মিসেস. আহমেদ: কিহল.....

আনহা:........

মিসেস. আহমেদ: শুনেছি তোমার নাকি বিয়ে হচ্ছিল না। দুবছর যাবত ট্রাই করার পর একটা বিয়ে ঠিল হয়েছে সেটাও বিয়ের দিন তোমাকে বিয়ে করবে না বলে পালিয়েছে। তোমার বাবা আমার ছেলেকে ইমোশনালি ব্লাকমেইল করে তোমার সাথে বিয়ে দিয়েছে আমার ছেলেটার.... বাবার আর একার দোষ কোথায় মেয়ে ও তো এর সাথে জড়িত..... তোমরা প্লান করে এসব করেছ.....

আনহা এবার আর নিজেকে সামলাতে পারল না মাথা নিচু করে অচিরেই কেদে দিল....

মিসেস. আহমেদ: এসব ন্যাকা কান্না করে আমার ছেলেটাকে ফাসিয়েছ..... আচ্ছা কি চাই তোমার আমার ছেলের থেকে..... কি চাই টাকা প্রর্পাটি কি চাই....?? কি হল আমার ছেলেটাকে মুক্তি দেবে..... যাকে কেউ বিয়ে করেনি সেই বোঝা আমার ছেলের কাধে চাপাতে লজ্জা করল না.....

আনহা:.........

মিসেস. আহমেদ: যদি কেউ বিয়ে না করত তবে চিরকুমারী হয়ে থাকতে তাতেও লোক সমাজে কিছু সন্মান থাকত... নিজের চেয়ে ছোট একটা ছেলেকে বিয়ে করতে কি একটুও বিবেকে বাধল না......

আনহা দাড়িয়ে শুধু কেদেই যাচ্ছে.. ঠিকি তো বলেছে মিসেস. আহমেদ..... কিভাবে পারল ও ইহানকে বিয়ে করতে যতই ও বাধ্য হয়ে করুক অন্যায় তো ও করেছে.....

মিসেস আহমেদ: একদম ন্যাকা কান্না কাদবে না আমার সামনে.... যদি এতটাই ভালো হতে তাহলে ঠিকি বিয়ে হত। আর তোমার সাথে যার বিয়ে হয়েছে সে তোমাকে একা রেখে পালাত না।।।। হয়ত এমন কিছু জানতে পেরেছে যার কারনে কেউ তোমাকে বিয়ে করতে চাই নি.... আর এখন সেই পাপ আমার ছেলে ইহানের উপর দিয়ে কাটিয়ে দিতে চাইছ....

আনহা:........

মিসেস আহমেদ: আচ্ছা ইহানকে ফাসানোর জন্যই কি এত সব কিছু করেছিলে নাকি.... না মানে বংশীয় পরিবারের ছেলে rich, established & handsome তাই আমার ছেলেকে হাতছাড়া করতে চাওনি তুমি আর তোমার পরিবার মিলে আমার ছেলেটার মাথাটা খেয়েছ.....

আনহা:.....

মিসেস আহমেদ: নাহলে তোমার মত একটা মেয়েকে আমার ছেলে কেন বিয়ে করতে যাবে..... যার না আছে রুপ না আছে গুন... আর বংশ মর্যাদার কথা নাহয় নাই বললাম। কোনো দিক দিয়ে তুমি আমার ছেলের যোগ্য নয়.... আর সমাজ তো মেনে নিবেই না..... এমন অনেক পরিবার আছে যারা ইহানের জন্য বিয়ের সমন্ধ করতে চায় যাদের নখের যোগ্য ও তুমি না......

আনহা:..........

মিসেস আহমেদ: এসব জানার পর কিভাবে তুমি ওর সাথে থাকতে চাও। তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে লজ্জায় সুইসাইড করত কিন্তু তুমি নির্লজ্জ বেহায়ার মত দাঁড়িয়ে আছো.......

আনহা আর সহ্য করতে পারল না। ও দৌড়ে রুমে গিয়ে বিছানায় উপর পরে কাদত লাগল....

আনহা: কেন করলি তুই এসব ইহান.....??? আমি তো তোকে বিয়ে করতে চাইনি। এমনকি ছেড়ে যেতে চেয়েছি তোকে কিন্তু তুই তা হতে দিলি না..... কিন্তু এতে আমার দোষটা কোথায়....

কিছুক্ষন পর......

আনহা: নাহহহ আমি আর থাকব না এখনে.... [ তারপর সব কিছু গুছিয়ে নেয় আনহা। তারপর আনহার চোখ যায় নিজের ব্যাগের আদ্রের ছবির দিকে.... ] আমার লাইফটা তো এমন হওয়ার কথা ছিল না আদ্র। তবে কেন সেদিন চলে গিয়েছিলে শুধু নিজের কথা ভেবে.... একটা বার ও আমাকে বলার প্রয়োজন পরেনি তোমার...... [ বলেই আবার কেদে দেয় ]


প্রায় সন্ধ্যার পর রাতের দিকে ইহান বাড়ি ফেরে..... বাড়ি ফিরে নিজের বাবা মাকে দেখে বেশ খানিকটা অবাক হয় ইহান। কারন ওনাদের এখন আসার কথা না। আর ওনাদের মুড আর বাড়ির অবস্থা দেখে বুঝতে বাকি থাকে না কি হতে পারে.....

ওনারা দুজনেই সোফায় বসে আছে.... ইহান গিয়ে ওনাদের পাশে বসে.......

বাবা: তোমার থেকে আমরা এরকম কিছু আশা করে নি অয়ন.... আমরা সব সময় তোমার চাওয়া পাওয়ার মুল্য দিয়েছি যখন যা চেয়েছ তাই দিয়েছি। তোমার যদি নিজের পছন্দে বিয়ে করার ছিলে তাতে তোমার কি মনে হয় আমরা না করতাম........

ইহান:...... [ দুহাতের উপর থুতনি দিয়ে কথা শুনছে ]

বাবা: তোমার পছন্দে আমাদের পছন্দ। তুমি যেমন মেয়ে আনতে তাতেই আমরা খুশি থাকতাম কিন্তু তাই বলে তুমি নিজের থেকে বয়সে বড় একটা মেয়েকে বিয়ে করবে। তাও আবার ৫ বছরের বড় কোনো মেয়েকে.....

ইহান:.......

মা: ছোট বেলা থেকেই তুমি ম্যাচুরিটির সাথে সব কাছ করেছ। এমনকি তোমার কোনো কাজে আমরা ভুল ধরতে পারিনি। সবসময় ঠিক ভুল বিচার করে কাজ করেছ.... আর সেই তুমি কিভাবে এরকম একটা কাজ করলে......

ইহান: আনহাকে বিয়ে করা আপনাদের কাছে ভুল মনে হতে পারে কিন্তু আমার কাছে সেটা ভুল নয়। আমি জেনে বুঝেই ওনাকে বিয়ে করেছি.....

মা: ওই মেয়ে তোমাকে ইমোশনালি ফোর্স করেছে তাইনা....

ইহান: ভুল... ওনি আমাকে বিয়ে করতে চায়নি। বরং আমি নিজেই ওনার বাবার পায়ের কাছে পরেছিলাম ওনার মেয়ের হাত চাইতে৷ আর আমার দেওয়া চাপে আর ওর বাবার সন্মানের দিকে তাকিয়ে আনহা বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে এখানে আনহার কি দোষ.....

মা: তুমি কি বলতে চাইছো আনহা নিরাপরাধ তাহলে যে ছেলে ওকে বিয়ে করতে এসেছিল সে কেন বিয়ে করেনি???

ইহান: সে অন্য কাউকে পছন্দ করত তাই সে আনহাকে না বিয়ে করে অন্য কারো সাথে বিয়ে করেছে এখানে আনহার কি দোষ......

মা: তুমি বলতে চাইছো আনহা নিদোর্ষ???

ইহান: আমি বলছি না ও নির্দোষ.....

মা: কিভাবে সংসার করবে নিজের চেয়ে বয়সে বড় কোনো মেয়ের সাথে... ভেবে দেখেছ....

ইহান: আমি যা করি ভেবে চিনতে করি। আর এমনটা কোথায় বলা হয়েছে যে নিজের চেয়ে বড় কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে নেই।

মা: কিন্তু সমাজে....

ইহান: যদি সমাজের কথা বলেন তো আমি পুরো সমাজের সামনে আনহাকে স্ত্রীর অধিকার দিয়েছি...... আর এইটা সমাজ মেনে নিয়েছে......

মা: সিরিয়াসলি বলছ তো আনহার সাথে সংসার করতে পারবে....

ইহান: আপনি আপনার ছেলেকে চেনেন... আমি যা করি ভেবে চিনতে করি। আর ওনাকে বিয়েটা আমি আবেগে নয় ভেবে চিনতে করেছি।

মা: মেনে নিলাম... কিন্তু আমি বুঝলাম না তুমি অন্য ভাবেও ওকে সাহায্য করতে পারতে বিয়ে করতে কেন গেলে???

ইহান:......... [ কিছুক্ষন নিরব থাকে ]

মা: কিহল কিছু বলো.... এভাবে সাহায্য করার মানে কি???

ইহান: আমি ওনাকে সাহায্য করার জন্য বিয়ে করিনি। আর নাই বা দয়া বা করুনা করতে....

মা: তাহলে......

ইহান: ভালোবাসি তাই বিয়েটা করেছি.... [ ডিরেক্টলি বলে ইহান ]

ছেলের মুখের এমন কথা শুনে মি.&মিসেস. আহমেদ একে অপরের মুখের দিকে তাকায়.... আর ইহান মাথা নিচু করে বলে....

ইহান: একটু বেমানান হলেও এইটাই সত্যি আমি আনহাকে ভালোবেসে বিয়েটা করেছি। আর বিয়েতে আনহার কোনো দোষ নেই। আমি একরকম ফোর্স করি ওনাকে। নিজের দোষ ঢাকতে আমি আরেকজনের উপর তা চাপাতে পারি না। আপনাদের যদি ওনাকে নিয়ে সমস্যা হয় তবে আমি ওনাকে নিয়ে চলে যাব..... এখন আসি.....

মা আর বাবা কিছুক্ষন ভেবে নেয়....

মা: লাইফ তোমার কোনোদিন তোমায় কিছুর জন্য বাধা দেয়নি। যাতে তুমি সুখি তাতেই আমরা। এমনিতে আমাদের থাকা হয় না একসাথে তাই কোথাও যাওয়ার দরকার নেই.... তুমি যদি ওর সাথে ভালো থাক তাতেই হবে....

ইহান: ধন্যবাদ...... [ চলে আসে ]


ইহান ওর বাবা-মায়ের সাথ কথা বলে দ্রুত রুমে আসে। কারন ও খুব ভালো করে আনহার খবর। ও কারো কথা সহ্য করতে পারে না।

ইহান রুমে ঢুকতেই বড় রকমের শকড খায়। কারন আনহা মেঝেতে বসে পাগলের মত কাদছে আর নিজের চুল টেনে টেনে ছিড়ছে...... আনহার কোনো হুশ নেই। এটা দেখে ইহান দ্রুত গিয়ে বসা অবস্থায় আনহাকে বুকে জড়িয়ে নেয়। খুব শক্ত করে ধরে নিজের বাহু বন্ধনে আবদ্ধ করে....

ইহান: আনহা প্লিজ শান্ত হন....

আনহা ইচ্ছেমতো ইহানের বুকে কিল ঘুশি মার‍তে থাকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য কিন্তু ইহান ওকে ছাড়ার বদলে আরো শক্ত করে আকড়ে ধরে.....

আনহা: কেন করলি তুই এটা??? কেন বিয়ে করলি আমাকে... আমি আর কত সহ্য করব?? কে তোকে আমার উপর করুনা করতে বলেছিল???? [ অঝোরে কান্না করে ]

ইহান:..... [ ইহান চুপচাপ ভাবে দাঁড়িয়ে আনহাকে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে ]

আনহা: আমি কি তোকে বিয়ে করতে বলেছিলাম। বলেছিলাম নিজের জীবন টা নষ্ট করতে আমি তো তোকে বারন করেছিলাম কিন্তু তুই তো বাবাকে বলে বিয়েটা করেছিস। আর আমি বিয়ে করতে চাইনি বাধ্য হয়েই বিয়েটা করেছি.... এতে আমার দোষ কই........

ইহান: আপনার কোনো দোষ নেই আনহা। আপনি নিরাপরাধ....[ যা দোষ সব আমি করেছি। আপনাকে ভালোবেসে আর আপনাকে জোর করে বিয়ে করে। তাহলে আপনি কেন নিজেকে দোষী ভাববেন.... ]

তারপর আনহা ইহানকে ছাড়িয়ে নাক মুছতে মুছতে বলে.....

আনহা: আমি চলে যাব.... এমনি ছয় মাস পর ডির্বোস হবে আমাদের তারচেয়ে বরং এখনি আমি চলে যাই.... আর যাই হোক আমাকে অপমান সহ্য করতে হবে না.....

আনহার মুখে এমন কথা শুনে ইহান মুহূর্তে চুপসে যায়.... ও আবার আনহাকে বুকে টেনে নেয়.....

ইহান: আপনি কোনো অন্যায় করেনি আনহা। তাই আপনি কোথাও যাবেন না। আমি সব ঠিক করে দেব। সবটা ঠিক করে দেব। আমাকে শুধু কিছুটা সময় দিন.....[ আনহাকে শক্ত করে বুকে ধরে নিজেও কান্না করে দেয় ]

ইহানের কথা শুনে আনহা ভেজা চোখে ওর দিকে তাকায়.....

ইহান: হুমম আনহা কোথাও যেতে হবে না আপনাকে আমি সব ঠিক করে দেব। [ আনহার চোখ মুছিয়ে দিয়ে খাটে শুইয়ে আনহার মাথাটা নিজের কোলে রাখে তারপর ওর মাথায় বিলি কেটে দেয়৷ আর আনহা ইহানের পা জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে ]


সকালে ঘুম থেকে উঠে আনহা দেখে আনহা ইহানকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। আর ইহান ওকে বুকে জড়িয়ে আছে.... এইটা দেখে আনহা ইহানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতেই ইহান ঘুমের ঘোরে আনহাকে আবার জড়িয়ে ধরে..... আনহা ওকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেই ইহানের ঘুম ভেঙে যায়....

ইহান: কি হলো তোমার ঘুমের মধ্যেও লাফালাফি করতে হবে..... [ আনহাকে জড়িয়ে ধরে ]

আনহা: এই তুই গাজা টাজা খেয়েছিস😲😲

এইটা শুনে ইহানের ঘুম ভাঙে... মানে ও এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিল.....

ইহান: [ হায়রে আমারে ঘুমের মধ্যেও একটু স্বামী হয়ে তুমি ডাকতে দেয় না 😭😭😭 ]

আনহা: ওই তোর হইছে কি মুখটা এমন করছোস কেন😡😡😡

ইহান: সেইটা আপনি বুঝলে সমস্যাই মিটে যেত....

আনহা: মানে...😡😡😡

ইহান: কিছুনা.... 🤒🤒🤒

আনহা: এই পোলার মাথা পুরাই গেছে....


ইহান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে..... আনহা সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছে....

ইহান: এসব কি???

আনহা: আমি বাড়ি যাব...

কিছুক্ষন ভেবে.....

ইহান: আনহা রেডি হয়ে নিন....

আনহা: কেন???

ইহান: আপনাকে আজ আপনার বাড়িতে নিয়ে যাব.....

আনহা: সত্যি.... 😁😁😁

ইহান: হুমম....... [ আপনাকে কিছুদিনের জন্য নিজের স্পেস দেওয়া দরকার ]

তারপর ওরা রেডি হয়ে আনহার বাড়ি যায়। রাস্তায় আনহা ইহানকে গাড়ি থামাতে বলে....

আনহা: গাড়ি থামা.....

ইহান: কি হলো আপনার....

আনহা কিছু না বলে নেমে যায়.....

ইহান: কিহল....

আনহা: আইসক্রিম খাব...

ইহান: একদম না।😡😡😡

আনহা: তুই না করার কে রে😡😡😡

ইহান: দেখুন এই শীতের মধ্যে যদি আপনি আইসক্রিম খান কি হবে ভাবতে পারছেন.....

আনহা: যা হবার হবে আমি খাবই....

ইহান: কিন্তু......৷

আনহা ইহানের কোনো কথা না শুনে গুটিকয়েক আইসক্রিম খেলো ইহানের উপর রাগ করে। ইহান আর কিছু বলল না.....

ইহান: [ এই আইসক্রিম খাওয়া না আপনার কাল হয়ে দাঁড়ায়।...... মাথা নেড়ে ]

তারপর ওরা বাড়িতে গেল। বাড়িতে গিয়ে আনহা তো খুশিতে গদগদ.... ছাগলের ছানার মত ছুটোছুটি করতে থাকে। আর তা দেখে ইহান হাসে......

ইহান: এখন আমি আসি। অফিসে কিছু কাজ আছে..... ফিরতে রাত হবে.....

আনহা: না ফিরলেও সমস্যা নাই.....

এইটা শুনে ইহান কিছু বলল না। শুধু আনহার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়.....

আনহা: আমি বলতে চাইছি তুই আর এখানে এসে কি করবি। কিছুদিন পর তো আমি এমনিতেই এইখানে থাকব.....

ইহান: হমম... [ একটা শুকনো হাশি দিয়ে ]

আনহা: তোর আর আসতে হবে না। তুই বাসায় চলে যাস। আমি বাবাকে বলব তোর কাজ আছে.... আর এমনিতেও আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডির্বোসের জন্য আপ্লিকেশন করে দিব। তোর কষ্ট করতে হবে না।

ইহান:........

আনহা: কিরে তুই শুনছিস....

ইহান: আপনি এখানে ১ দিনের জন্য আছেন আনহা কাল আপনি আমার সাথে ফিরছেন। আর ডির্বোস আপনাকে আমি আমার বাড়ি থেকেই দেব....... এখন আসি.... আর হ্যা একটু গরম পানি খেয়ে নিন নাহলে গলা বসে ঠান্ডা লেগে যাবে....... [ চলে আসে ]

আনহা: ইহান..... [ কিন্তু চলে গেল আনহার কথা শোনার আর শক্তি রইল না ইহানের মনে.... ]


খুব দ্রুত ড্রাইভ করছে ইহান... আনহার কথা ইহানের কানে না বুকে গিয়ে বিধেছে.....বুকের ভিতর রক্ত ক্ষরন হচ্ছে..... ইহানের চোখের কোন দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে। এই প্রথম ইহান কাদছে নিজের অজান্তেই.....

ইহান: আপনি কি কোনদিন আমাকে বুঝবেন না আনহা। আমি সবার বিরুদ্ধে গিয়ে আপনাকে নিজের করে নিতে চেয়েছি কিন্তু আপনি কি করছেন।। আপনি কি কোনোদিন নিজের হাসবেন্ড এর জায়গা আমাকে দিতে পারবেন না।


রাতে আর ইহান বাড়ি ফেরে না। আনহাও ইহানের মোবাইলে কল দেয় না। কারন ইহান ওর কথায় কষ্ট পেয়েছে বুঝতে পেরেছে.....


,সকালে ইহানের ঘুম ভাঙে.. ও নিজের গাড়িতে শুয়ে ছিল...... ঘুম ভাঙে রিংটোনে... মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে আনহা কল দিয়েছে। মুহূর্তে একটা হাসির রেখা ফোটে..... কল ধরে....

ইহান: হ্যালো......

আনহা: হ্যাচ্চো........ 🤧🤧🤧🤧🤧 [ বিশাল এক হাচি ] আমার.... 🤧🤧🤧 অনেক🤧🤧🤧

ইহান: বুঝতে পেরেছি.... আগেই বলেছি এত আইসক্রিম খাবেন না.... কিন্তু আপনি...

আনহা: এখন কি করব তাই বল....🤧🤧🤧

ইহান: আমার ব্যাগে একটা শিশি আছে ওইখান থেকে এক চামচ ওষুধ খাবেন…...আর হ্যা বিকেলে দিকে নিতে আসব... আর হ্যা......

আনহা: আচ্ছা......🤧🤧🤧

ইহান: আরে শুনুন শুধু এক চামচ নাইলে.... [ টুট টুট ] যা কেটে দিল.........


আনহার যদিও যাওয়ার ইচ্ছে নেই। কিন্তু বাবার কথা ভেবে যেতে হবে। সারাদিন আনহার সাথে ইহানের কথা হয় না। ..... বিকেলের দিকে আনহার মোবাইলে একটা কল আসে। আনহা বেশ খুশি হয়েই মোবাইলের কাছে যায়। গিয়ে দেখে আননোন নাম্বার..... মোবাইলে কলটা ধরে....

আনহা: হ্যালো.......

ওইপাশে: কেমন আছো অর্নি.......

ওইপাশে থাকা লোকটার কথা শুনে আনহার বুকের ভিতর মোচর দিয়ে উঠে। এই কন্ঠোটা আনহার খুব পরিচিত...... মুহুর্তে আনহার দুনিয়া উলট পালট হয়ে যায়। কন্ঠোটা ভেঙে আসে কান্নায়.... ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করে দেয় আনহা। নিজের মুখে অস্পষ্ট ভাবে বলে উঠে....

আনহা: আদ্র.............. [ কান্না জড়িত কন্ঠে ]
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।