আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আপনিময় তুমি - পর্ব ০৯ - আরিয়ানা জাবিন মেহের - ধারাবাহিক গল্প


ইহান: হুমম ভালো থাকবেন.... আর আপনার মনের মত কাউকে নিয়ে সংসার বাধবেন। যাকে আপনার হাসবেন্ড হিসেবে মেনে নিতে সমস্যা না হয়... So misss. Sorry misss. Ex ihan.... ভালো থাকবেন......

বলে ইহান মোবাইল টিপতে টিপতে বেড়িয়ে গেল ইহান চলে যেতেই আনহা মেঝেতে বসে পড়ল। নিজেকে কেমন জানি লাগছে আনহার কাছে। কোনো অনুভুতি পাচ্ছে না আনহা। কি ঘটে গেল আনহার জিবনে। সত্যি কি ইহান ওকে ছেড়ে দিল........

আনহা: সত্যি কি তোর লাইফে আমার আর কোনো জায়গা নেই ইহান। আমি নাহয় তোকে ভালোবাসি বলতে পারিনি কিন্তু তুই তো আমাকে ভালোবাসতি। এখন এতটাই বিরক্তির কারন হলাম তোর কাছে যে আমাকে এই ঘরে থাকতে দিতে তোর কষ্ট হচ্ছে।৷।

এভাবেই একভাবে বসে থেকে আনহা সারাটাদিন পার করে দেয়.....


ড্রাইভার ইহানের কাছে ফোন দেয়........

ইহান: ম্যাম কি চলে গিয়েছে.....

ড্রাইভার: না স্যার তাইত আপনারে ফোন দিলাম। আনহা মেডাম তো এখনো নিচে নামে নাই। ওইযে আপনি যাইতে বলছিলেন। আমি সকাল থেকে ওনার জন্য অপেক্ষা করছি কয়েকবার ডাকছিও কিন্তু ওনি নিচে নামেন নাই.......

ইহান: ওনাকে ডাক। যদি না আসে তখন আমাকে বলো.......

ড্রাইভার: আচ্ছা স্যার.......


তারপর ড্রাইভার রুমে গিয়ে দেখে আনহা মেঝেতে একভাবে বসে আছে............

ড্রাইভার: মেডাম....

আনহা:......

ড্রাইভার: ও মেডাম.....

আনহা এবার ড্রাইভারের দিকে তাকায়....

ড্রাইভার: স্যার আপনাকে বাসায় দিয়াইতে বলছে। আমি সেই সক্কাল থাইকা আপনার জন্য দাড়াই আছি আপনি কি যাবেন না???

আনহা:........

ড্রাইভার: না গেলে স্যাররে বইলা দিমু আপনি যাইবেন না।

আনহা:......

ড্রাইভার: মেম কিছু তো কন নাইলে আমার চাকরি চইলা যাইব। স্যার আপনারে আপনার বাড়িতে দিয়াতে বলছে........

কিন্তু আনহা কোনো রিসপন্স করল না। ওকে কিছু বলতে না দেখে ড্রাইভার ইহানকে কল দিল.......

ইহান: হ্যা বলো.....

ড্রাইভার: মেম তো কিছুই বলল না। যাইব কিনা জিজ্ঞেস করতে চোক্ষের পানি পরতে দেখলাম। মনে হয় যাইতে চায় না।

ইহান: ওকে আমি আসছি... 😡😡😡 [ প্রচন্ড রেগে ইহান গাড়ি নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেল ]


খুব দ্রুত বাসায় এসে ইহান নিজের রুমে গেল। রুমে গিয়ে ইহানের মেজাজটা আরো খারাপ হয়ে গেল। সকালে ইহান আনহাকে যে অবস্থায় রেখে গিয়েছিল আনহা সেই জায়গায় সেইভাবেই বসে আছে.......

ইহান শব্দ করে রুমে ঢোকার কারনে আনহা বুঝতে পেরে ওর দিকে তাকায়....

আনহা: ইহান.....

ইহান ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আনহাকে খুব জোরে টেনে তুলে ওকে দেয়ালে ছুড়ে মারে। যার কারনে দেয়ালের সাথে বাড়ি খেয়ে প্রচন্ড ব্যাথা পায় আনহা। ব্যাথায় কুকড়ে উঠে....... সেদিকে ইহান কোনো খেয়াল না দিয়েই আনহাকে খুব শক্ত করে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে নেয়.....

আনহা: কি করছিস লাগছে আমার.....

[ ইহানকে ছাড়াতে ছাড়াতে কিন্তু ইহানের শক্তির কাছে পরাজিত হয়। বরং ইহান আনহাকে আরো জোরে চেপে ধরে দেয়ালের সাথে............

ইহান: আপনি এখনো এখানে কি করছেন😡😡😡

আনহা: ছাড় তুই আমাকে আমার লাগছে....

ইহান: সেটা আমার দেখার বিষয় না Miss.Ex Ihan Ahmad......[ দাতে দাত চেপে আনহার অনেকটা কাছে গিয়ে ]

আনহা: আমি বুঝতে পারিনি আমার এখানে থাকাতে তোর এতটা প্রব্লেম হতে পারে। যদি জানতাম তাহলে চলে যেতাম.... [ ইহানকে ধাক্কা দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করল ]

কথাটা শুনে ইহানের রাগটা আরো বেড়ে গেল।

ইহান: হুমম সমস্যা বলেই তো আপনাকে সেই সকালে চলে যেতে বলেছি যাতে আপনার এই মুখটা আমাকে দেখতে না হয়।।।।

আনহা: সেটা বুঝতেই পারছি। আর এটাও যে আমার কত বড় ভুল হয়েছে..... আমার সকালে চলে যাওয়া উচিত ছিল.......

ইহান: বুঝতে যখন পেরেছেন তখন আমার মুখ না দেখে চলে যান। আপনার জন্য আপনার ভালোবাসার মানুষ অপেক্ষা করছে। আপনার দেরি হলে তাদের কষ্ট হবে। তার কাছে তো আপনাকে যেতে হবে। তা সে কি একজন ই.....

আনহা: ইহান..... মুখ সামলে কথা বল.....

ইহান: আওয়াজ নিচে মিস আনহা.... ভুলে যাবেন না আপনার সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। আর এটা আমার বাড়ি। ভদ্রতার খাতিরে এখনো আপনি আমার সামনে দারিয়ে আছেন.........

আনহা: এটাকে ভদ্রতা বলছিস....

ইহান: অসভ্যতা আপনি এখনো দেখেনি। আর আমি আপনার সাথে যে ভদ্রতা করছি আপনি সেটুকু ডিজাভ করেন না।😡😡😡 নাহলে এতক্ষনে আপনি.......

আনহা: চুপ কর ইহান..... আমাকে যেতে দে। মাফ চাইছি তোর কাছে ভুল হয়ে গেছে আমার চলে যাচ্ছি...... [ কান্না করে দিয়ে ]

ইহান: এই ন্যাকা কান্না আমাকে আর দেখিয়ে লাভ নেই আনহা। ভোলাতে পারবেন না। [ আনহার চোখের পানি আঙুল দিয়ে নিয়ে ]

আনহা: আমি কোনোদিন না তোকে ভোলানোর চেষ্টা করেছি আর না কোনোদিন করার প্রয়োজন হবে........

ইহান: এখনো এতটা attitude... কিভাবে পারেন আপনি??? এতকিছুর পরও শুধুমাত্র নিজের জেদটা বজায় রাখার জন্য আপনি.... আপনার কাছে একটা মেয়ে হয়ে সংসার করার মত কিছুই নেই। যেটা আছে সেটা হচ্ছে useless কতগুলো ego & attitude..... যা নিয়ে আর যাই হোক সংসার করা যায় না।

আনহা:.......

ইহান: বেবি মিসক্যারেজ হওয়ার পরও আমি ভেবেছিলাম আপনাকে আর আমাদের সম্পর্ককে একটা সুযোগ দিব কিন্তু ভুল ছিলাম কারন বিগত ৩ মাসে আমার সাথে থাকার মত কোনো উৎসাহ আপনার মাঝে দেখিনি.......

আনহা ইহানের কথা শুনে ওর দিকে তাকায়.....

ইহান: yes miss anha.... কিন্তু আপনার মুখে একটা বারের জন্য শুনলাম না আপনি আমার সাথে থাকতে চান। এই ইহান আহমেদ জন্য মরে যাবে না। আপনার চেয়ে হাজার গুন বেটার কাউকে আমি ডিভাজ করি......

আনহা: আমি তোকে বলিনি আমার সাথে থাকতে তাহলে.….

কথাটা শুনেই ইহান আনহার গাল চেপে ধরে।

ইহান: তাইত ডির্বোস দিয়েছি আপনাকে। কারন আপনি আমার সাথে এখনো থাকতে চান না।।।

আনহা: ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি। এভাবে আমার সাথে মিসবিহেভ না করে আমাকে যেতেদে.....

ইহান: ভদ্র ভাবেই সকালে যেতে বলেছিলাম কিন্তু আপনার ভালো লাগেনি এতে আমার কি করার আছে......

আনহা: আর পারছি না আমি লাগছে আমার..... যেতে দে......

তারপর ইহান আনহাকে ছেড়ে দেয়.......

ইহান: ওকে তাহলে যান....

আনহা আর কিছু না বলেই চোখ মুছতে মুছতে বেড়িয়ে যেতে নেয়। তখনি ইহান আনহার হাতটা ধরে...... আর আনহা ইহানের দিকে ফিরে তাকায়..... ইহান নিচের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে.....

আনহা:........ [ জিজ্ঞাসুর দৃষ্টিতে ইহানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ]

এভাবে কিছুক্ষন থাকার পর ইহান আনহাকে নিজের মধ্যে টেনে আনে.... খুব বাজে ভাবেই আনহাকে টাচ করে।

ইহান: আচ্ছা যাবার আগে একটা সত্যি কথা বলুন তো। আপনার কি একবারের জন্য মনে হয়না যে আপনি আমার সাথে থাকতে চান। আমার সাথে সংসার করতে চান...... যদিও এই কথাটা উত্তরটা আমার জন্য মেটার করে না। শুধু জানার ইচ্ছে ছিল আপনি কি ভাবেন। আর কেমন মেয়েকেই আমি ভালোবেসেছিলাম....... যার নিজের সম্পর্কের জন্য কোনো মায়াই হয়নি৷৷

আনহা:.....

ইহান: সে যাই হোক.... এখন আপনি চাইলেও আমি আপনার সাথে থাকব না।।। তবে আপনার জন্য একটা গুড নিউজ আছে.....

আনহা:...... [ জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে ইহানের দিকে তাকায়...... ]

ইহান: আমিও কিছুক্ষন আগেই জেনেছি....

আনহা: কিহহহ....

তারপর ইহান একটু মুচকি হেশে আনহার কানের কাছে যায়। তারপর বলে.....

ইহান: আপনার লাভার যার জন্য আপনি আমাকে ছেড়ে যেতে চেয়েছেন তার কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে..... [ মুচকি হেশে আনহার চুল সরিয়ে ]

আনহা অবাক হয়ে ইহানের দিকে তাকায়....

ইহান: আমাকে এভাবে দেখে লাভ নেই। আমি এবার কিছুই করিনি। ইনফ্যাক্ট আমি নিজেও শকড। আমার বউ মানে এক্স বউ যাকে পাওয়ার জন্য এতকিছু করল সে কিনা বিয়ে করতে যাচ্ছে। তা কেমন লাগছে আপনার। নিশ্চয়ই খুব ভালো.....

আনহা:.......

ইহান: আর কাকে বিয়ে করছে জানেন?? আচ্ছা শুনুন ওর অফিসের কলিগ সুন্দরী মারিয়াকে.... যার ধারে কাছেও জাননা আপনি.....

আনহা:.......[ মাথা নিচু করে ]

ইহান: আর এমনিতেও যে মেয়ের মিসক্যারেজ হয়েছে। ডির্বোস হয়েছে তাকে কেই বা নিজের স্ত্রী হিসেবে চাইবে। তাছাড়া বয়স তো কম নয়.... তা এখন কি করবেন??

আনহা:......

ইহান: আগে জানলে আপনাকে ডির্বোস দিতাম না। কারন এখন তো আপনার যাওয়ার জায়গায় নেই... কারন আদ্র তো আপনাকে বিয়ে করবে না।

আনহা: আমায় নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।

ইহান: কেন নতুন কেউ আছে নাকি.....

আনহা: আর কতভাবে অপমান করবি তুই আমাকে। এবার তো রেহাই দে...

ইহান: [ রেহাই তো আপনি মৃত্যুতে পাবেন । এটা তো কেবল শুরু আপনাকে যে আরো অনেকিছু দেখতে হবে তবেই আমার শান্তি। ভেবেছিলাম এমনি ছেড়ে দেব কিন্তু আপনার এই ইগো বাধ্য করল আপনার পাপ্তিটা আপনাকে বুঝিয়ে দিতে ]

আনহা: আমি চলে গেলে সব সমস্যা মিটে যাবে তোর.... আমার জন্য কাউকে ভাবতে হবে না।

ইহান: হুমম যাওয়ার আগে এই রুমে আপনার যা যা আছে সবকিছু নিয়ে যাবেন। একটা সুতো যেন পরে না থাকে.......

আনহা: ঠিক আছে....

ইহান: আরেকটা কথা এর পর আমার কাছে আসার বৃথা চেষ্টা করবেন না। কারন আপনার ফ্যামিলিও তো একটা ডির্বোসিকে ঘরে রেখে দেবে না......

আনহা: ভয় পাস না। আমি ফিরব না তোর লাইফে... যদি কোথায় যাওয়ার জায়গা না থাকে তবে নিজেকে শেষ করে দেব তবুও এখানে আসব না। তুই নিঃচিন্তে থাক...

ইহান: আমি এসে যেন আপনাকে না পাই। আমি আপনার বাসায় ফোন করে বলছি আপনি যাচ্ছেন.....

আনহা:......

[ তারপর ইহান চলে যায়। আর আনহা একটা একটা করে নিজের সমস্ত কিছু নিয়ে ইহানের রুম আর ওর লাইফ থেকে যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে আসে। আসার আগে ভালোভাবে নিজের সংসারটাকে একবার দেখে নেয়..... কিন্তু মায়াটায় না জড়াতে চাইলেও যেন কাটিয়ে উঠতে পারছে না আনহা। তবুও সবটা ফেলে চলে আসে......

ড্রাইভার ওকে ওর বাড়ি পৌঁছে দিয়ে চলে যায়....... আনহা বাসায় ঢোকার সময় কিছু শুনতে পায়.... বুঝতে বাকি থাকে না এটা ওর বাবার গলা.......

বাবা: ওই মেয়ে যেন কোনোভাবেই এই বাড়িতে না আসে। তাহলে কিন্তু আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।

মা: ও আমাদের একমাত্র সন্তান তাছাড়া ও যাবেই বা কোথায়..... [ কাদতে কাদতে ]

বাবা: কোথায় যাবে তা জানিনা। কিন্তু যে মেয়ে বিয়ের পর আরেক ছেলের জন্য নিজের স্বামীকে ছেড়ে দেয় নিজের বাচ্চাকে মারতে চায়। সেই মেয়ে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো.।।।।

কথাটা শুনে আনহার বুকে মোচর দেয়।

বাবা: ও যেখানে খুশি যাক কিন্তু এখানে যেন না আসে.......

মা: চুপ করো তুমি আগে ওকে আসতে দেও.।।। তাছাড়া আনহার কথাও তো শোনা উচিত.....

বাবা: কি শুনব বলত... ইহান ছেলেটা এতটাই ভালো ও এখন পর্যন্ত আনহার নামে কিছু বলে নি। কিন্তু আমি যা শোনার শুনেছি তাও আবার হাসপাতালে.....

মা: যাই হোক ওকে আগে আসতে দেও...

বাবা: ও আসার আগে যেন আল্লাহ আমাকে নিয়ে নেয়...... আমাকে যেন ওই মেয়ের মুখ দেখতে না হয়....

আর শুনতে পারল না আনহা। ও চলে আসে ওখান থেকে।

আনহা: আর কোন মুখে যাব আমি ওখানে। আমি চাইনা বাবা তোমাদের কিছু হোক ভুল যখন আমার তার মাসুল ও আমি দেব। নিজ হাতে যখন সবটা শেষ করিছি তখন তার দায় ও আমি নিজেই নেব। এই জিবনের বোঝা আর কাউকে বহন করতে হবে না।


আনহা পথের মাঝ বরাবর হাটতে থাকে। প্রায় অনেক রাত হয়ে এসেছে..... আর আনহা নিজের জীবনের সমীকরণটা মেলাতে থাকে। কোথায় যেন মিলতে গিয়েও মিলছে না।

আনহা: কি অদ্ভুত মানুষের জীবন। পাওয়া জিনিসের চাওয়াটাও যেন পুরন হয় না। সবটা যেন নিজে থেকে খেলে নিজে এসে চলে যায়.... ইহানকে হারিয়ে আজ সবটা হারিয়ে ফেললাম।

আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে আনহা...... চোখটা বন্ধ করতে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে.....

আনহা: কোথায় যাব আমি??? সবটাই তো ছেড়ে এসেছি। ইহান, বেবি আর সাথে আমার বাবা মাও। যা একসময় আমার ছিল আজ কয়েকদিনের মধ্যে সবকিছু হারিয়ে গেল।

কিছুক্ষন নিজের মনে ভাবে আনহা......

আনহা: আচ্ছা দোষ কি সবটা আমার ছিল। এতে কি অন্য কারো কোনো দোষ ছিল না। যার শাস্তি আমাকে একা পেতে হচ্ছে। কোথায় যাব আমি??? এভাবে আর যাই হোক একা একটা মেয়ে বেচে থাকতে পারে না। তাছাড়া ইহান ঠিকি বলেছে একটা ডির্বোসি মেয়েকে কখনো সমাজ মেনে নেয় না। আর আমি এভাবে থাকলে এই সমাজের কিছু লোক আমাকে ভালো থাকতে দেবে না........ এখন কি করব আমি???

....... কিছুই ভেবে পায় না আনহা....

আনহা: আমি কি ইহানের কাছে ফেরত যাব। ইহান এতকিছুর পরও কি মেনে নেবে আমাকে। তাছাড়া ও তো বলে দিয়েছে ও আমার মুখ দেখতে চায় না। তাহলে কোন মুখে যাব আমি ওর কাছে। আমি গেলে কি ও আমাকে ফিরিয়ে দেবে.......

[ তখনি ইহানের তখনকার বলা কথা মনে পরে ]

আনহা: আমি কারো জিবনের বোঝা হয়ে কখনো থাকিনি। আর কোনোদিন থাকতে চাই না। নিজের বোঝা কাউকে দেওয়ার চেয়ে এই শরীরটাকে বোঝা থেকে মুক্তি দিয়ে দেব আমি..... আমি আমার কথা রাখব ইহান তোর কাছে হয়তো আর আমার ফেরা হবে না..... [ দুচোখের পানি ঝরতে থাকে.... ]

তারপর আনহা নিজের আশেপাশে খেয়াল না করেই রাস্তার মাঝ দিয়ে হাটতে থাকে। অনেক রাত হওয়ার কারনে তেমন গাড়ি নেই। আর যা চলছে তা প্রচন্ড গতিতে.....

আনহা আপন মনে হাটছে রাস্তার মাঝ দিয়ে তখনি রাস্তায় আনহার পিছন থেকে বিশাল এক ট্রাক গাড়ি আসতে থাকে.... কিন্তু আনহার ওদিকে খেয়াল থাকে না। রাতের কারনে ট্রাক ড্রাইভার আনহারকে দেখতে পায় না। হঠাৎ আনহা নিজের পিছনে প্রচন্ড আলোর ঝলকানি দেখতে পায়........

কিছু বুঝে উঠার আগেই আনহার কাছে সবটা ঝাপসা হয়ে আসে...... কিছু একটার সাথে প্রচন্ড গতিকে ধাক্কা খেয়ে আনহা সেখানেই লুটিয়ে পড়ল..... মুহুর্তের মধ্যে চোখটা বন্ধ হয়ে গেল আনহার আর কিছু বলতে পারল না......

শুধু বড় কয়েকটা দীর্ঘ শ্বাস পরে থাকল আনহার..............


আনহা টিপ টিপ করে চোখের পাতা খোলার চেষ্টা করে। মাথায় ভিষণ যন্ত্রনা করছে আনহার। মাথায় হাত দিতেই বুঝতে পারে মাথায় ব্যান্ডেজ করা। মাথাটা চেপে ধীরে ধীরে উঠে বসার চেষ্টা করে। তারপর বোঝার চেষ্টা করে ও কোথায়। কালকে রাতের কথা যতদুর মনে পরছে তাতে আনহা রাস্তায় ছিল। হঠাৎ একটা আলোর ঝলকানি সামনে দেখে আর প্রচন্ড গতিতে ধাক্কা খায় কোনো কিছুর সাথে তারপর আর কিছু মনে নেই ওর.....

কিন্তু কোথাও আছে..... আর ও এখানে কিভাবে এলো। তখনি আনহার নজর নিজের কাপরের দিকে যায়। গত রাতে অন্য কিছু পরে ছিল ও। কিন্তু আজ ওর পরনে অন্য কাপর। বুঝতে পারে কেউ তার কাপর বদলেছে। কিন্তু কে ভেবেই আনহার বুকের ভিতর একটা মোচর দেয়। আনহা চারপাশটা দেখে বোঝার চেষ্টা করে৷

চারপাশে তাকিয়ে কলিজা কেপে উঠে আনহার। কোথায় আছে সেটা বুঝতে একটুও বেগ পেতে হয় না ওকে। এইটা তো ওর খুব চেনা জায়গা.....

আনহা: আমি ইহানের বাড়িতে...... [ অবাক হয়ে ]

হুমম ও ইহানের রুমে ওর বেডেই শুয়ে আছে..... কিন্তু ও এখানে কিভাবে আসল.....তবে কি কাল ইহানই ওকে নিয়ে এসেছে৷ কিন্তু ইহান আনবে কেন??? কিছুই বুঝতে পারছে না আনহা.........

আনহা পাশের টেবিলের দিকে তাকাতেই ইহানকে দেখতে পায়। ইহান টেবিলের উপর মাথা নিচু করে রয়েছে। ইহান হাতে একটা গ্লাস ধরে আছে। দেখে বুঝাই যাচ্ছে ইহান ড্রিংক করে ওভাবেই ঘুমিয়ে গেছে। ইহানকে এভাবে ঘুমাতে দেখে আনহা অনেক কষ্টে বিছানা থেকে নামে। কিন্তু শরীরে প্রচন্ড ব্যাথার কারনে ওর খুব কষ্ট হয়। নিজেকে সামলাতে পারে না যার কারনে ও মাটিতে পরে যেতে নেয় ঠিক তখনি ইহান এসে ওকে ধরে।

ইহান আনহাকে ধরার সাথে সাথে আনহা ইহানের থেকে নিজেকে ছাড়াতে চায়। এটা দেখে ইহান আনহাকে কোলে তুলে নেয়.....

ইহান: বাহহ খুব ভালো দারাতে পারছেন না অথচ আমার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন....

[ আনহাকে কোলে তুলে মুচকি হাসি দিয়ে। আর আনহা ইহানের শার্ট খামচে আছে যদি পরে যায়। কিন্তু আনহা ইহানের দিকে তাকাতে পারছে না। ও ইহানকে ছাড়াতে পারবে না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখে পানি ঝরাতে থাকে.... ]

ইহান: বাহহ কাল আমি আপনার ড্রেস চেঞ্জ করেছি বলে এখন কি আমার ড্রেস খামচে ছিড়বেন.... [ চোখ টিপ মেরে ] আচ্ছা সমস্যা নেই আমার লজ্জা করবে না।

আনহা ইহানের এমন কথায় রেগে যায়..

ইহান: দেখুন ড্রেস চেঞ্জ নিয়ে কিছু বলবেন না কারন আমি কিন্তু এর আগেও কাজটা করেছি.. [ কিছুটা মজা করে ]

আনহা:........

ইহান: কিহল....???

ইহান দেখে আনহার চোখ দিয়ে টপটপ পানি গড়িয়ে পড়ছে.......

ইহান: কাদছেন কেন???

আনহা:..... [ মাথা নিচু করে ]

ইহান আনহার কোনো উত্তর না পেয়ে ওকে আলত করে বিছানায় রাখে। তারপর ওর পাশে খুব কাছে গিয়ে বসে... আর এটা দেখে আনহা গুটিশুটি মেরে বসে....

ইহান আনহার হাতটা ধরতে আনহা হাতটা ছাড়িয়ে নিতে চায়। কিন্তু ইহান ওর হাত টেনে পাশে থাকা মলমটা ওর হাতে লাগিয়ে দিয়ে বলে.....

ইহান: এখনি চোখের পানি ফেলার কিহল তারজন্য এক্সট্রা টাইম পাবেন আপনি। তখন যতপারেন কেদে নিবেন....... [ বুড়ো আঙুল দিয়ে আনহার চোখের পানি মুছে..... ]

এইটা দেখে আনহা করুন চোখে ওর দিকে তাকায়........

ইহান: আচ্ছা একটা কথা বলুন তো মরার এত কি তারা ছিল যে ট্রাকের তলে পরতে হলো.... অন্য উপায় তো ছিল। আমাকে বললেই পারতেন আপনি মরতে চান ব্যবস্থা করে দিতাম.......

আনহা:.......

ইহান: আপনি জানেন আপনাকে বাচাতে গিয়ে আরেকটু হলে আমি মরতাম.......

আনহা: কে বলেছিল আমাকে বাচাতে.... [ অভিমানী কন্ঠে ]

এইটা শুনে ইহান খুব মজা পায়। নিচের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসে......

ইহান: হাজার হলেও আপনি ইহান আহমেদের এক্স ওয়াইফ বলে কথা। এভাবে রাস্তায় ট্রাকের নিচে পরে মরাটা আপনাকে মানায় না। একটু আমার সন্মানের কথা ভেবে স্ট্যান্ডার্ড কোনো উপায় পেলেন না....

এইটা শুনে আনহা বেশ অবাক হয়ে ইহানের দিকে তাকায়..... মরার আবার স্ট্যান্ডার্ড হয়.....

ইহান: এভাবে তাকাবেন না কেমন জানি নেশা লাগে.....

আনহা:..... [ অন্যদিকে মুখটা ঘুড়িয়ে নিল ]

ইহান আনহার মুখটা নিজের দিকে ঘুড়িয়ে নিল তারপর বলল.....

ইহান: কি বিশ্বাস হলো না। জানেন কাল রাতে আপনাকে এনে আমি অনেক ড্রিংস করেছি কিন্তু নেশা হয়নি। কিন্তু অবাক করা বিষয় যখন আমি আপনার কাছে এসে আপনার মুখটা দেখেছি অদ্ভুত এক নেশা গ্রাস করেছে আমাকে..... আর আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা সেই নেশার ঘোর আমার এখনো কাটেনি বরং ক্ষনে ক্ষনে তা ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে.... [ আনহার মুখের কাছে গিয়ে গালে স্লাইড করে ] নেশাক্ত হয়ে গেছি আপনাতে।

[ আনহা ইহানকে এভাবে দেখে ওকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দেয় ]

আনহা: এখানে কেন এনেছিস আমাকে.....

ইহান উঠে দাঁড়ায়....

ইহান: শুনতে চান.....

আনহা: হুমম.... [ নিজের ঠোঁট কামরে কান্না আটকিয়ে ]

ইহান: আপনাকে মারতে.... [ আনহার মুখের দিকে ঝুকে বাকা হেশে ]

আনহা: মানে.....[ অবাক হয়ে ]

ইহান: ওইযে বললাম এক্স মিসেস. ইহানের জন্য মরার একটা স্ট্যান্ডার্ড কিছু দরকার... আর সে রকম ভাবে মারতে......[ আনহাকে চোখ টিপ মেরে ]

ইহান যা বলছে তা আনহার মাথার কয়েক মিটার উপর দিয়ে যাচ্ছে...

আনহা: ইহান তুই... [ উত্তেজিত হয়ে চোখের পানি ছেড়ে ]

ইহান: হুসসস... কোনো কথা না। এখন একটু রেস্ট নিন..... [ আনহার ঠোঁটে আঙুল ছুইয়ে ]

আনহা লম্বা লম্বা নিশ্বাস নিচ্ছে। ওর কষ্ট হচ্ছে শ্বাস টেনে তুলতে.....

ইহান: শুয়ে পরুন। নাইলে আমায় প্রেসার পরবে আপনার মাথায় ব্যান্ডেজ....

আনহা: আমি থাকব না এখানে...... [ বিছানা থেকে নামতে নামতে ]

এইটা দেখে ইহান একটু বিরক্ত হয়.... ধাক্কা দিয়ে আনহাকে বেডে ফেলে আনহার দুহাত বেডের সাথে চেপে ধরে....

আনহা: ছাড় আমাকে.....

ইহান: একবার ছেড়ে দিয়ে যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। মাথা ফাটিয়ে কি হাল করেছেন নিজের.... আরে আজব আমি আপনাকে বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে বলছি না ট্রাকের নিচে আসতে বলছি..... পাগল আমি আপনাকে মরতে দি। আর আপনি এখন আত্নহত্যা করলে আপনাকে ডির্বোস দিয়ে মৃত্যুর প্ররোচনায় পুলিশ আমাকে জেলে পরুক। আমাকে দেখে এতটা বোকা মনে হয়.... [ তাচ্ছিল্যের সুরে মুচকি হেসে ] এবার ছাড়ার কথা বললে ঠেং ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখব.... তখন আমাকে ছাড়া ঘর কেন ওয়াসরুমেও যেতে পারবেন না......

আনহা: আমি থাকব না এখানে.....

ইহান: কোথায় যাবেন??? আদ্র তো মেনে নিবে না। আর আপনার বাবা আমি যা বলব তাই শুনবে। You know that..... [ আনহার কানে কাছে গিয়ে ] যা বলব সত্যি মিথ্যা সবটা বিশ্বাস করে নেবে....

আনহা: কেন এনেছিস আমাকে??? আমার উপর কোনো অধিকার তোর এখন নেই। তুই নিজেই আমাকে ডির্বোস দিয়ে দিয়েছিস....এবার মুক্তি দে....

ইহান: আগেও বলেছি এখনও বলছি আপনার উপর সবচেয়ে বেশি অধিকার আমার.... আমি তো আমার থেকে মুক্ত করে দিতে চেয়েছিলাম... কিন্তু আপনি দুনিয়া থেকে মুক্তি নিতে চাইবেন কে জানত....... আর তাই আপনি আর এইটা পাবেন না..... সুযোগ একবারই আসে....

আনহা: তাহলে ডির্বোসের পর আমি তোর সাথে কেন থাকব...

ইহান: ডির্বোস.... [ বাকা হেশে ] হুমম তা ডির্বোসের আগে যেভাবে ছিলেন সেভাবে।

আনহা: মানে....

ইহান: ডির্বোসের আগেই বা আমার বউ ছিলেন কই....

আনহা: এসবের সত্যি কি মানে হয় ইহান....

ইহান: জানিনা....

আনহা: কেন জানবি না তোকে জানতে হবে। কেন এনেছিস আমাকে এখানে.....

এইটা শুনে রেগে গিয়ে ইহান আনহাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়৷ আনহা কষ্ট পাবে জেনেও.....

ইহান: আপনার কি মনে হয় এত সহজে আমি আপনাকে ছেড়ে দেব। আপনাকে কাল বাবার বাড়ি পাঠিয়ে জাস্ট এটা বুঝাতে চেয়েছিলাম এই ইহান ছাড়া আপনার আর কোনো যাওয়ার জায়গা নেই... আর ইহানের হাত থেকে বাচার একমাত্র পথ মৃত্যু। কিন্তু আপনি এত তাড়াতাড়ি সেটা নিতে চাইবেন আমি ভাবিনি.... আর এই ইহানের সবটা সহ্য না করে আমি যে আপনাকে মরতে দেব না আনহা.... আপনাকে যে আমার সবকিছু সহ্য করতে হবে.......

আনহা: তাহলে ডির্বোস দিয়েছিস কেন???

এবার ইহান আনহাকে ছেড়ে খুব জোরেই হাসে......

ইহান: আমি আপনাকে ডির্বোস দিয়েছি। আপনার হাতে ডির্বোস লেটার টাও সত্যি কিন্তু আমি খুব ভালো করেই জানি আপনি তাতে সাইন তো দুরে খুলেও দেখেননি। তাই সিমপল ভাবে আমার সাথে এখনো আপনার ডির্বোস হয়নি আপনি লিগেলি আমার বউ.... একমাত্র আদরের ছোট.... ধুর কি বলি আমার কি বড় বউ আছে.. মানে আদরের পিচ্চি একটা বোকা বউ..... 😁😁😁

আনহা আর কোনো কথা না বলে শুয়ে পড়ল ওপাশ ফিরে।।। আর ইহান আনহার দিকে তাকাল....

ইহান: আপনাকে কয়েকঘন্টা নিজের চোখে দুরে রেখেছি তাতে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল.... আর যদি কাল রাতে আপনার কিছু হয়ে যেত কি নিয়ে বাচতাম আমি। কাল যখন ট্রাকে আপনাকে ধাক্কা মারতে গিয়েছিল আমি তখনি বুঝতে পারছি আনহা ছাড়া ইহানের জিবনের কোনো মুল্য নেই.... ইহান অচল..... কাল আপনার কিছু হলে..

কাল রাতের কথা ভাবতেই সিউরে উঠে ইহান........

কাল যখন আনহা ড্রাইভারের সাথে গিয়েছিল ইহানো নিজের গাড়ি চালিয়ে আনহার গাড়িকে ফলো করে। কারন ও খুব ভালো করেই জানত ওর বাবা মা ওকে মেনে নিবে না। এটা আগের দিন ওনাদের সাথে কথা বলে বুঝতে পেরেছিল ইহান... ও জাস্ট আনহাকে সত্যিটা রিয়ালাইজ করাতে চেয়েছিল।

যদিও ইহান খুব ভালো করেই জানত বাড়িতে কিছু শোনার পর আনহা ওইখানে থাকবে না। আর না নিজের আত্নসন্মান ভুলে ইহানের কাছে ধরা দেবে..... কিন্তু এটা জানত না যে আনহা নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মত এমন একটা স্টেপ নেবে।।। এটা ইহানের কল্পনার বাইরে ছিল। ও শুধু দেখতে চেয়েছে এসবের পর আনহা করে কি........

কিন্তু যখন ইহান দেখল আনহা সেই ট্রাকের নিচে চলে যাচ্ছে। কিছুক্ষনের জন্য ইহানের পুরো দুনিয়াই শেষ হয়ে গিয়েছিল.......

ট্রাকে ধাক্কা লাগার আগেই ইহান আনহাকে ধাক্কা দিয়ে ওপাশে ফেলে দেয় যার কারনে আনহা কিছু একটার সাথে বাড়ি খায়.... কিন্তু ঘটনাটা এতটাই দ্রুত ঘটে আনহা কিছু বোঝার আগেই ও সেন্সলেস হয়ে যায়। আর ইহান আনহাকে কোলে তুলে নিজের বাড়িতে আনে.... তারপর আনহাকে ঠিক ভাবে শুইয়ে মেডিসিন দিয়ে ও ড্রিংক করে।।।। কিন্তু ড্রিংকটা ওর কাছে ততটাও নেশাক্ত নয় যতটা আনহা....

পুরোটা রাত ইহানের ড্রিংক আর আনহাকে দেখেই কেটে যায়.......


ইহান: [ আপনি এটা ভাবলেন কি করে আনহা ইহানের জমিয়ে রাখা শৈশবের ভালোবাসা মাত্র কয়েকদিনে শেষ হয়ে যাবে। আপনার নেশা আমার মাথায় চড়ে আছে এটা আমি কিভাবে নামাব। এতদিনের পাগলামি যদি আমার শেষ হয়ে যেত বা অন্য কারো উপর আসক্ত না শুধু মন আসত তবে আমি আপনাকে ছেড়ে দিতাম। কিন্তু তা হয়নি আর হবেই বা কি করে আনহা.... আমার পাগলামোর """#আপনিময়💓তুমি""""" যে শুধুই আপনি.........যা চাইলেও আমি বদলাতে পারব না........ ]

কথাগুলো ভাবতে ভাবতে মুচকি হাশে ইহান........

ইহান: এতোদিনে আপনার সাথে সংসার করে এটা তো বুঝেই গেছি আপনি বয়সে অনেক বড় হলেও আপনার রাগ, অভিমান,জেদ কোনো ৫ বছরের বাচ্চার চেয়ে কম না..... যাক বয়সে বড় হলেও আমি পিচ্চি বউ পেয়েছি.......... এতটা পিচ্চি হয়তো কেউ পাবে না.........আর কি চাই [ মনে মনে মুচকি হাসে ]

তাই বলে এটা ভুলে যাবেন আনহা আপনাকে কোনো মাসুল দিতে হবে না। শাস্তি আপনাকে পেতেই হবে..... যা আপনি কল্পানাও করতে পারবেন না। কিন্তু সেটা আপনাকে ছেড়ে দিয়ে নয়। আমি আপনাকে কষ্ট দিতে গিয়ে নিজের ভালোবাসা নিজের #আপনিকে হারাতে পারব না........ আর বাকি আগে আপনি সুস্থ হন তারপর এক এক করে শোধ তুলব আমি.......


তারপর ইহান ব্রেকফাস্ট রেডি করে আনহার জন্য নিয়ে আসে... আনহা ঘুমিয়ে আছে.... ইহান আস্তে করে আনহাকে ডাকে.......

ইহান: আনহা খেয়ে নিন.....

আনহা: আমি খাব না....

ইহান: খাবেন না মানে..... [ প্রচন্ড রেগে ]

আনহা: আরে আজব তো আমি মুখ ধুইয়ে, ব্রাশ ও করিনি। তাই ফ্রেশ না হওয়া পর্যন্ত আমি খেতে পারব না..... আমি আমি বিছানা থেকে উঠতে পারছি না......এখন কেউ তো আমাকে কোলে নিয়ে যাবে না। যত্তসব😡😡😡

ইহান: এই ব্যাপার আগে বলবেন তো..... [ বলেই আনহাকে কোলে তুলে নেয় ]

আনহা: কি হচ্ছেটা কি???

ইহান: এরকম একজন হাসবেন্ড থাকতে আপনি কোলে উঠার মানুষ পাননা। সবাই শুনলে কি ভাববে....

তারপর ইহান ওকে ফ্রেশ করিয়ে এনে নিজ হাতে ব্রেকফাস্ট করায়। তারপর আনহাকে মেডিসিন দিয়ে বাইরে চলে যায়...

ইহান: ও আরেকটা কথা আজকে হয়ত বাবা মা আসতে পারে... সিউর না তবে যদি আসে। তাই বলে রাখলাম.......

এটা বলে ইহান বাইরে যেতে ধরে তখনি একটা ঘটে অন্য কাহিনী..... যা দেখে আনহার চোখ কপালে.........
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।