৩১!!
দিহান কলের পরে কল করেই যাচ্ছে। তাই রাহাত কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে কলটা রিসিভ করে মোবাইলটা কানে ধরলো।
-স্যার? সরি স্যার--। তখন ওভাবে আপনাকে ইগনোর করে চলে এলাম---। সরি--।
-ইটস ওকে ভাই--। পারলে মাফ করে দিও--।
-স্যার---। ম্যাম কি এখনো খুব রেগে আছে? আমি কথা বলে দেখবো--।
-মায়াবতীটা আর নেই রে দিহান--।
-নেই মানে? ম্যাম! ম্যাম কোথায় স্যার?
-জানি না আমি। কিচ্ছু জানি না।
-স্যার? উনার ফ্যামেলি কিছু বলছে না? আপনি একটু সরি বলে দেখুন না?
-ওরা কেউ নেই দিহান--।
-স্যার কি বলছেন? গতকাল সন্ধ্যায় ও না ম্যামের বাসায় গেলেন? আজ সকালেই কি করে--!
-জানি না কিছু--। ওরা কোথায় কোন গ্রামে চলে গেছে--। বুঝতে পারছি না--।
-আজ সকালেই?
-হুম----।
-ম্যামের ভাবি--মানে নতুন বৌ সহ?
-হ্যাঁ দিহান--। সবাই সবাই--। সবাই চলে গেছে---।
-স্যার--? আপনি একটু রিল্যাক্স করুন--।
-মানে কি দিহান? আমি মায়াবতীকে খুঁজে পাচ্ছি না এদিকে-৷ আর তুমি আমাকে বলছো রিল্যাক্স করতে?
-স্যার? বি কুল প্লিজ--? আমার মনে হয় আমি জানি ম্যামরা কোথায় গেছে----।
-জানো! জানো মানে! কোথায়! কোথায় গেছে আমার মায়া?
-স্যার--। সবাই মিলে গেছে ইভেন নতুন ভাবিকে নিয়েও---। মে বি ম্যামের ভাই ভাবির জন্য হানিমুন প্ল্যানিং করেছে---।
-বাট সেটা কোথায় জানবো কি করে?
-স্যার? সবাই মিলে গেছে--। আমার ধারণা ম্যামদের গ্রামের বাড়িতে--।
-আর ইউ ক্রেজি? মিহান ভাইয়ার হানিমুনের জন্য ওদের গ্রামে কেন যাবে? দুনিয়াতে যাওয়ার জায়গার কি অভাব আছে দিহান?
-স্যার? ম্যামের ভাবির ব্যাপারেও খোঁজ খবর নিয়েছি-। দিয়া ম্যাডামও অনেক ভালো একটা মেয়ে--। সবার সাথে মিলে মিশে থাকতে চায়--। আর ছোটবেলা থেকেই নাকি শহরে মানুষ--। গ্রামে যাওয়ার ভিষণ শখ ছিল উনার---।
-দিহান?
-স্যার প্লিজ? এক শেষ চেষ্টা করে দেখুন না? হতে পারে মিহান স্যার আর দিয়া ম্যাম হানিমুনে বাইরে কোথাও গেছে-। কিন্তু মায়া ম্যাম আর উনার মা তো গ্রামের বাড়িতে যেতেই পারে--। পারে না?
-সেটাও ঠিক বলেছো----।
-------------------------------
-কিন্তু ওর গ্রামের বাড়ির ঠিকানা কোথায় পাবো আমি?
-হা হা হা----।
-দিহান? ইয়ার্কি হচ্ছে? আমি টেনশনে মরছি আর তুমি হাসছো?
-সরি স্যার---। আপনি ম্যাডামের টেনশনে সব ভুলে যাচ্ছেন কেন স্যার? আমি যদি আপনাকে ম্যামের বাসার ঠিকানা জোগাড় করে দিতে পারি তাহলে এখন ম্যামের গ্রামের বাড়ির ঠিকানাটাও জোগাড় করে দিতে পারবো--।
-সত্যি! সত্যি দিহান!
-জি স্যার---।
-প্লিজ প্লিজ---। মায়া কোথায় আছে একটু এ্যাড্রেসটা সেন্ট করো আমাকে প্লিজ?
-জি স্যার--। স্যার তবে একটা শর্ত আছে---।
-কি চাই তোমার বলো শুধু--। আমার সব কিছু দিয়ে হলেও মায়া কোথায় জানতে চাই--। ওকে যে আমার চাই রে ভাই--।
-স্যার--। এসব কিছু না--। লিজা আর আমার বিয়েটা আগামী মাসে হবে। আমাদের বিয়েতে অবশ্যই ম্যামকে নিয়ে আসবেন। প্রমিস করুন?
-অফকোর্স ইয়ার---। তোমরা দুজন না থাকলে---।
রাহাত কথাটা শেষ করতে পারলো না৷ গলাটা বন্ধ হয়ে আসছে ওর। এই দুটো মানুষকে সে কি বলে ধন্যবাদ জানাবে? লিজা আর দিহানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মতো ভাষা যে রাহাতের নেই।
-স্যার--। ম্যামের এ্যাড্রেস পাঠিয়ে দিয়েছি। ইনবক্স চেক করুন--।
-থ্যাংক ইউ দিহান---।
-স্যার--। আর প্রজেক্টের কাজটা?
-কাজটা শুরু করে দিও---। আমার না থাকলেও চলবে--। লিজা আর তুমি মিলে দেখো--। আর কিছু সমস্যা হলে জানিয়ো আমাকে---।
-ওকে স্যার--। শুভকামনা। আশা করি ম্যামের রাগ ভাঙিয়ে একেবারে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন।
-ইয়াপ----।
কলটা কেটে মেসেজ চেক করতেই গ্রামের ঠিকানাটা পেল রাহাত। বুকের ভিতরটা ঢিপঢিপ করছে। মেয়েটা এই ঠিকানায় আছে কিনা কে জানে! তবে নিজের সমস্ত কুচিন্তা মন থেকে বের করে ফেলে দিয়ে রাহাত ভাবার চেষ্টা করছে এই ঠিকানায় গেলেই সে তার মায়াবতীটাকে পাবে আবার। হাতের ঘড়িতে দেখলো প্রায় ১২ টা বাজতে চলেছে। গাড়িটা স্টার্ট দিবে এমন সময় খেয়াল করলো সামনেই একটা শাড়ির দোকান। দেখেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠেছে রাহাতের। কিছু কেনাকাটা করা যাক শ্বশুড়বাড়ির জন্য।
ঘুরে ঘুরে বেশ অনেকগুলো দোকান খুঁজে একেবারে গাড়ি ভর্তি করে কেনাকাটা করে গাড়িতে এসে বসলো। নিজেও ফরমাল ছেড়ে একটা জিন্স আর টি-শার্ট পড়ে নিয়ে রাহাত যখন গাড়ি চালানোয় মন দিয়েছে তখন চারটার কাছাকাছি বাজে। লুকিং গ্লাসে পিছনের সিটে চোখ পড়তেই হেসে ফেললো রাহাত। পুরো গাড়িটা অনেকগুলো বক্সে ভরে গেছে। মোবাইলের নেভিগেশনের দেয়া ডিরেকশনে গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবছে রাহাত।
"আমার থেকে দূরে পালিয়ে কোথায় যাবে মায়াবতী? যেখানেই পালাবে পিছুপিছু সেখানেই গিয়ে হাজির হবো। যত দূরে যেতে চাইবে ততই শক্ত করে আঁকড়ে ধরবো পরী। রাগ করে পালাতে চাইলে ভালোবাসা দিয়ে পূর্ণ করে সে রাগ ভাঙাবো। তবু তোমার থেকে এক সেকেন্ডও দূরে থাকতে পারবো না আর।"
৩২!!
বেশ স্পিডেই গাড়ি ছুটিয়ে সিলেট পৌঁছেছে রাহাত। নেভিগেশনে চন্দ্র গ্রাম নামে প্রত্যন্ত এই গ্রামটা খুঁজে পেতে বেশ ভালোই বেগ পেতে হয়েছে রাহাতকে। আর একেবারে আদিম যুগের গ্রাম বলা চলে। একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে যেখানে প্রায় সবটাতেই নগরায়নের ছোঁয়া লেগেছে, সেখানে কেমন করে যেন এই ছোট্ট গ্রামটা বাদ পড়ে গেছে। সিলেটের যত ভিতরের দিকে যাচ্ছে ততই নেটওয়ার্ক খারাপ হচ্ছে। তাই সিলেট পর্যন্ত ঠিকঠাকভাবে পৌঁছলেও চন্দ্রগ্রাম খুঁজে বের করতে রাহাতকে বেশ খানিকটা নাকানি চুবানি খেতে হলো। গ্রামের সীমানায় পৌঁছে তো আরো যাচ্ছে তাই অবস্থা। সময়টা সম্ভবত রাত ১০ টার একটু বেশিই হবে৷ কিন্তু গ্রামের কোন ঘর থেকে আলোর ছিটেফোঁটাও দেখতে পাচ্ছে না রাহাত। তার উপরে এতো সরু রাস্তা! গাড়ি সামনে নিতে প্রায় গাছ গাছালির উপরে তুলে দিচ্ছে টাইপের অনুভূতি হচ্ছে রাহাতের। তবে কেন যেন এই শহর থেকে এতো দূরের প্রত্যন্ত এলাকার অচেনা গ্রামটাতে এসেও রাহাতের বেশ লাগছে। এতো খুশির কারণটা রাহাত নিজেও ধরতে পারছে না।
মাথায় একটন পরিমাণের কনফিউশান নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল রাহাত। বেশ অনেকটা রাস্তা আগেই এক মুদি দোকানির কাছে মায়াদের বাড়ির হালকার উপরে ঝাপসা একটা নকশা পেয়েছিল। সেটা মাথায় রেখেই সামনে এগুচ্ছিল রাহাত। চারদিক শূন্যতায় খা খা করছে অথচ ছোট খাটো দোকানপাট গুলো ঠিকই এতো রাতেও খোলা! ভাবা যায়! রাহাত যে ঠিক কতোটা অবাক হয়েছে তা বলার মতো না। তার চাইতেও বেশি অবাক হয়েছিল যখন মায়া আর মিহানের নাম বলতেই দোকানি বলেছিলঃ- "হেডমাস্টার সাহেবের বাইত যাইবেন?" মায়ার বাবা মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এলাকার এক মাত্র স্কুলটার প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এই তথ্যটাও রাহাতের জানা ছিল না। আচ্ছা? মায়ার সম্পর্কে আর কি কি জানা নেই তার? মায়াদের হোম টাউন সিলেট! এটা দিহানের পাঠানো এ্যাড্রেসটা দেখার আগে ভুলেও কল্পনা করতে পারে নি রাহাত। নিজের ভালোবাসাতেই এখন খানিকটা সন্দেহ হচ্ছে রাহাতের। আবার এটাও মনে হচ্ছে ওর কাছ থেকে চলে গিয়ে আসলেই হয়তো মায়া ভালোই করেছে।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনের দিকে তাকাতেই দোকানির ডিরেকশন দেয়া মসজিদটা দেখতে পেল রাহাত। এটাও এই গ্রামের একমাত্র মসজিদ কিনা কে জানে! তবে মসজিদ পার করে বাম পাশে ঘুরিয়ে কিছুটা যেতেই একটা ছোটখাটো গেইট মতো দেখতে পেল রাহাত। গাড়িটা সেখানে পার্কিং করেই বাড়ির ভিতরে ঢুকে জাস্ট হা হয়ে গেল রাহাত। মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইটের আলোয় বেশ পুরানো একটা টিনের ঘর। কখনো হয়তো যত্ন করেই বানানো হয়েছিল ঘরটা। তবে অনেকদিনের অযত্নে অব্যবহারে টিনে মরিচা পড়েই হয়তো রাতের আঁধারিতে কালচে দেখাচ্ছে বাড়িটাকে। কি কারণে কে জানে রাহাতের গা টা একটু শিউরে উঠলো৷ কোনমতে কাঁপা কাঁপা পায়ে দরজায় গিয়ে কড়া নাড়লো রাহাত। মুদি দোকানি আরো একটা কাজের খবর দিয়েছে রাহাতকে। আর সেটা হলো মায়ারা পুরো পরিবার নতুন বৌ সহ আজ দুপুরেই বাড়ি এসেছে। ভাবতে ভাবতেই খুঁট করে দরজাটা শব্দ করে একটু ফাঁক হলো। দরজাটা খুলে দিতেই রাহাত দেখলো মিহান প্রায় হা করে রাহাতের দিকে তাকিয়ে আছে।
-আরে? রাহাত ভাই? আপনি! এতো রাতে!
-আসলেই ভাই দেরি হয়ে গেছে অনেকটাই---।
-আসুন আসুন--। ভেতরে আসুন--।
-জি----।
মায়া ছাড়া বাকি সবাই ছোট জায়গাটায় জড়ো হয়েছে। ডাইনিং কাম ড্রইং রুমের মতো করে সাজানো জায়গাটা। সবার সাথে চেয়ারে বসে পড়লো রাহাত।
-রাহাত? বাবা? তোমার নাকি অফিসে জরুরি কাজ আছে তাই আসো নি?
-না মা--। কাজ ছিল--। আসলে কাজটা দুপুরের মধ্যে শেষ হবে আমি জানতাম না--। আর আমি আসবো মায়া বলে নি আপনাদেরকে?
-কই না তো--। এই মেয়েটা কাজের কথাগুলোই বলে না---। বসো বাবা-। খেতে দিই--। মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে----। মিহান রাহাতের সাথে একটু যা বাবা---। ছেলেটা একটু ফ্রেশ হয়ে নিক----।
হাত মুখ ধুতে গিয়ে আরেকবার অবাক হতে হলো রাহাতকে। বাড়ির ভিতরে ওয়াশরুমের কোন ব্যবস্থা নেই। হাত মুখ ধুতে হলো পুকুরঘাটে গিয়ে। শান বাঁধানো ঘাট যদিও পুকুর পারে। আর বেশ খানিকটা দূরেই একটা টিনের ছাউনি নিয়ে টয়লেট। ফ্রেশ হয়ে এসে এতোক্ষণে রাহাতের খেয়াল হলো সকাল থেকেই সে যে না খেয়ে আছে ব্যাপারটা টেরই পায় নি। রাস্তায় এক কাপ চা খেয়েছে শুধু। টেবিলে ভাত আর মাছ তরকারি দেখে এতোক্ষণে খিদেটা যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তাড়াতাড়ি খাওয়া শুরু করলো রাহাত।
-বাবা কিছু মনে করো না--। তুমি আসবে জানলে ভালো মন্দ কিছু রাঁধতাম---।
-আরে না না মা--। সমস্যা নেই--। আপনার হাতের সব রান্নাই আমার জন্য অনেক স্পেশাল।
-মেয়েটা যদি একবারও বলতো---!
-মায়া কোথায় মা?
এতোক্ষণে দিয়া মুখ খুললো। বেশ অনেকক্ষণ ধরেই রাহাতকে দেখে জাস্ট অবাক হয়ে চুপ করে ছিল দিয়া। এতো রাতে উনি আসবেন সেটা দিয়ারও কল্পনার বাইরে ছিল।
-হি হি---। ভাইয়া মায়া আপু তো ঘুমিয়ে গেছে সেই কখন--। আমি তো আপনি এসেছেন দেখে ডেকে এলাম--। আপু টেরও পায় নি---।
রাহাত হালকা হেসে খাওয়ায় মন দিল। মনে হলো এই মাত্র যেন ওর বুকের উপর থেকে কেউ এক টন ওজনের একটা পাথর নামিয়ে নিয়েছে। খাওয়া শেষ করে হাত মুখ ধুয়ে মুছে একটু গল্প করলো রাহাত সবার সাথে। এতোটা জার্নি করে এসেছে তাই বেশিক্ষণ বসে থাকলো না। মিহান মায়ার রুমটা দেখিয়ে দিলে সেদিকেই গিয়ে রুমে ঢুকলো রাহাত। কাঠের ডাবল পার্টের একটা দরজা আছে৷ সেটা ভালো করে বন্ধ করে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে মায়াকে দেখতে পেল রাহাত। খাটের একপাশে গুটিসুটি মেরে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা। গায়ে পাতলা একটা কাঁথা জড়ানো।
গায়ের টিশার্টটা খুলে মায়ার পাশের খালি বালিশটায় শুয়ে পড়লো রাহাত। মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট বন্ধ করে মায়ার দিকে এগিয়ে এসে কাঁথার মধ্যেই ঢুকে বুকে জড়িয়ে নিলো। সারা দিনের এতো থকল পার করে এখন রাহাতের শান্তি লাগছে মায়াকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পেরে। অন্ধকার হাতিয়ে মায়ার কপালে আলতো করে একটা চুমো খেয়ে শক্ত করে বুকে চেপে ধরলো মায়াকে। মায়াও ঘুমের ঘোরে রাহাতের বুকের ভিতরে ঢুকে এলো। রাহাত হেসে মায়ার চুলে হাত বুলালো।
"ঘুম ভাঙলে মায়াবতীটার আমাকে দেখে কি রিএ্যাকশন হবে ভিষণ দেখতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু এতো টায়ার্ড লাগছে চোখও খুলে রাখতে পারছি না। উফফ-। এই মিষ্টি মায়াপরীটাকে বুকে নিলেই শান্তিতে চোখ জুড়িয়ে আসে কেন এতো? এই মায়াবতী? কাল থেকে একটা নতুন সূচনা করতে চাই তোমাকে নিয়ে--। পারমিশন দিবে আমার মায়াবতীটা?"
কথাটা বলে নিজেই হেসে ফেললো রাহাত। পাগলীটা তো ঘুমে কাদা হয়ে গেছে একেবারে। সকালে কি করবে কে জানে? রাহাত আলতো করে মায়ার কপালে আরেকবার ঠোঁট ছুঁইয়ে চোখ বুজলো। আর তার চোখ জুড়ে নেমে এলো রাজ্যের ঘুম।