অচেনা অতিথি - পর্ব ৩২ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


"কিহ্ বলেই মাহাদ ফোনটা কেটে দিয়ে দ্রুত নিচে নামলো........."

মাহাদ নিচে আসতেই তিতিরের রুমের সামনে ওর মা আর দাদীকে দেখতে পেল। 

মাহাদকে দেখে বাতাসি উচ্ছলিত হয়ে মাহাদকে জোড়ে ডাক দিল।

মাহাদ বিরক্ত হয়ে বাতাসির কাছে এসে বলল," ডাকছো কেন! কিছু বলবা?"

তোরে দিয়ায় তো কাজ হবে। বৌমা, মাইয়া বিয়ে হবেনা বলে কানতেছেনা! দেখো, মাহাদ ওরে ঠিকি বিয়ে বয়াইতে রাজি করাইবো। যা যা ভিতর যা। মাইয়াডারে রাজি করা। এমন পাত্র ওর কপালে জিবনেও আর আইবোনা। বৌমা চল। তিতিরের রুমে বাতাসি উঁকি মেরে বলল," রুপালি, তোর কাজ শেষ। বাহির হইয়া আয়। এমনি এখন মুরব্বির কথা হুনবো মাইয়া। "
বাতাসির খুঁশি দেখে কে! 

মাহাদ নিচে লক্ষ্য করে দেখলো, রেস্টুরেন্টের মালিক, ম্যানেজার আর দু'জন লোক বসে ওর বাবার সাথে কথা বলছে।

কামরান সাহেব বার বার বলছেন, ভাইসাহেব আমার দুইটাই ছেলে। আমার কোন মেয়ে নেই। আপনারা হয়ত ভুল তথ্য নিয়ে এখানে এসেছেন। 

ইতি মধ্য বাতাসি গিয়ে নিচে হাযির হয়ে বলল," তুই চুপ থাক। ওরা মনে হচ্ছে তিতিরের কথা কইছে। ওরা তিতিরকেই ওদের ওখানে দেখেছে। কথাগুলো বলে বাতাসি এসে কামরান সাহেবের পাশে বসলো।"

" আম্মাজান, আপনি কি বলেন! তিতির তো বোরখা পড়ে চলাফিরা করে। আর ও রেস্টুরেন্টে কেন যাবে? তাও ছেলে মানুষের সঙ্গে! ওনাদের হয়ত কোথাও ভুল হচ্ছে।"

" আরে বাপু চুপ করবি! আগে মাইয়াটা তেনারা দেখুক! তারপর সব বুঝা যাবে। আপনারা বইয়া আছেন ক্যান! নাস্তা-পানি নেন হাতে।"


পারিজার বাচ্চা পারিজা। তোর জন্য এতকিছু হয়ে গেল বলে মাহাদ রুমে ঢুকে দেখলো, তিতির শাড়ী পড়ে বসে কাঁদছে।

মাহাদ এসে খাটে বসে তিতিরকে দেখছে। রুমে মৌ ছিল। সেও বাহির হয়ে গেল। সাবিনা দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।

আমার জন্য তোমাকে কখনো শাড়ী পড়তে দেখিনি কিন্তু আজ পরপুরুষের জন্য ঠিকিই রং মেখে সং সেঁজে বসে আছো।

মাহাদের এমন কথা শুনে সাবিনা একবার তিতিরের দিকে তাকায় একবার মাহাদের দিকে তাকায়। এ্যাঁ ভাইজান কি কইলো? চোখের সাথে সাথে কানও খাইলাম নাকি! ফ্যাল ফ্যাল করে তিতিরের দিকে এবার চেয়ে রইলো সাবিনা। তারপর বলল," ভাইজান, আফা বিয়া করতে চায়না। ম্যালা পড়ালেহা করতে চায়। আফার বিয়া কি ভাঙ্গন যায়না?

" সাবিনা, তুই নিচে যা তো! কে কি বলছে সব আপডেট আমাকে পরে জানাবি।"

" সাবিনা ওর মনের মত কাজ পেয়েছে তাই এখানে সে এক মুহুত্বও দেরী না করে নিচে চলে গেল।"

এবার তিতির এসে মাহাদের পায়ের কাছে  ফ্লোরে বসে পড়লো। তারপর মাহাদের হাটুর উপর হাত দিয়ে তার উপর নিজের থিতি লাগিয়ে দিয়ে বলল," আমি শাড়ী পড়তে চাইনি। ফুফু জোড় করে আমাকে শাড়ী পড়িয়ে দিছে। আমি কি করবো এখন?"

" কি করবা আর! যাও,,,,,  পাত্র পক্ষের সামনে গিয়ে বসে পড়ো। বোরখা ছাড়া আরও বেশি বেশি বের হও। তুমি চাইলে আজ তোমাকে আরও বড় রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে পারি। কি হয়ে যাক তাহলে আর একবার রেস্টুরেন্টে যাওয়া!"

"স্যরি...., আমার ভূল হয়ে গেছে। আমি কখনো আর এমন কাজ করবোনা। প্লিজ কিছু একটা করেন।"

মাহাদ প্রচন্ড রেগে গিয়ে বলল," বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তুমি ভূল করবা আর তার জন্য আমাকে পস্তাতে হবে! নিজে যেমন প্যাঁচ লাগিয়েছ নিজেই সমাধান করো।"

" তিতির উঠে দাড়িয়ে বলল, "ওকে, আমি এখন আপনার সাথে প্রেমলীলা শুরু করবো দরজা খোলা রাখা অবস্থায় । বাসার সবার জানা দরকার। একজন বিবাহিত নারীকে তার বর থাকা অবস্থায় অন্য জায়গায় বিবাহ দেওয়া অন্যায়।"

তিতির শাড়ীর আচলটা বুক থেকে সরিয়ে ব্লাউজের  বোতামে হাত দিতেই মাহাদ বলল," তিতির, পাগলামি করার একটা লিমিট আছে। সব সময় কেনো পাগলামি করো!"

" আচ্ছা পাগলামি করলাম না। আমি গিয়ে ওদের সামনে দাড়াবো। তারপর কি হবে সেটা আমি জানিনা। বিশ্ব রের্কড হতে চলছে, বরের সামনে বউকে বিবাহ দেওয়া হচ্ছে আর বর তাহা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে। খুব মজার কৌতুক তাইনা!"

" যাও....., দরজা খোলা আছে তো! কথাগুলো বলে মাহাদ পারিজাকে কল দিল। তিতির ঠোট ফুলে, নাক টেনে একাকার করে মাহাদের পাশে এসে বসে মাহাদকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর চুপটি করে বসে রইলো।

মাহাদও তিতির কে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ওর কপালে কিস করতেই ফোনের ওপাশ থেকে পারিজার কন্ঠ ভেঁসে এলো।

" হ্যাঁ জান বল।"

" তোর জানের চৌদ্দ গোষ্ঠীরে আমি ব্রাশফায়ার করবো যদি আজ আমার বউকে ওদের সামনে দাড়াতে হয়!"

" কি বলিস মাহাদ! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা!"

" কিছু বুঝতে পারছিস না! ক্লাস সিক্সের ম্যার ভুলে গেছিস? আবার কি দিতে হবে? "

" পারিজা কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল, " আমি যে কাজগুলো করেছি সেটা তুই কি ভাবে বুঝতে পারলি?"

" তিতিরকে কেউ দেখেনি মুখ খোলা অবস্থায়। তাই তিতির যে এই বাসায় থাকে সেটা খুঁজে বের করা এত সহজ নয়। আর থাকলাম আমি! 
আমার কাছে কেউ খোঁজখবর নেয়নি। বাঁকি শুধু তুই! তোরে খুঁজে পাওয়া কঠিন নয়। তুই তো আবার টিকটক সেলিব্রেটি। এখন বল কেনো বাসার ঠিকানা দিছিস? "

" কি করবো বল! বাসায় এসে হাঙ্গামা করতো। আমার এত দিনের রিলেশন ব্রেকআপ করে দিতে হত। বাবা এমন পাত্র দেখে নিশ্চয় লুফে নিত। তখন আর অন্য দিকে যেতে দিত না। তাই বাধ্য হয়ে তোদের বাসার ঠিকানা দিছি। তুই তাও হ্যান্ডেল করতে পারবি আর আমি তো পারবো না।"

" বাহ্ বাহ্ তোর তো দেখছি বুদ্ধির তারিফ করতে হয়। এবার মনে হচ্ছে তুই বড় হয়ে গেছিস। তাহলে আমার ডিসিশনও শুনে রাখ,

লোকগুলো কে যদি এখুনি বাসা থেকে সরানোর ব্যবস্থা না করিস তাহলে মনে কর তোর বয়ফ্রেন্ড আজকের পর থেকে চিরদিনের জন্য তোর মুখ দেখা বন্ধ করে দিবে।  আর তুই তো জানিস আমি কি জিনিস! আমি বলিও যা করিও তা। ওরা এখনো তিতিরকে দেখেনি। আর কনফিশনের মধ্যও আছে। তাই যা করার তাই এখুনি কর।"

" ভাই বলছি, তুই এমন কাজ করিসনা। আমি দেখছি ব্যাপারটা বলে ঝট করে কলটা কেটে দিল পারিজা।

" এতে কি কাজ হবে! তিতির করুন মুখে মাহাদের মুখের দিকে চেয়ে বললো কথাগুলো। "

" হুম মনে হচ্ছে হবে। কারো দুর্বল জায়গায় আঘাত করলে সে শত ভাগ কাজ করে আর সাফল্যও পায়।"

♦♦♦♦

বাতাসি আসমাকে ডেকে বলল, "ঐ তিতিরের চ্যামচা! যা তিতিরকে লইয়া আয়।"

এমন সময় রেস্টুরেন্টের মালিকের কাছে কল এল। উনি একটু সময় চেয়ে নিয়ে দুরে গিয়ে কল রিসিভ করে কথা বলতে লাগলো। তারপর কল কেটে দিয়ে কাছে এসে বলল,
"চাচী আম্মা আর দরকার নাই মেয়েকে আনার। দুঃখিত, আমরা ভুল ইনফরমেশন পেয়ে এখানে আসছি। আপনাদের কষ্ট দেওয়ার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আমরা।"
কামরান সাহেবের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সবাই বাসা হতে চলে গেল।

বাতাসিকে তখন দেখার মত ছিল। আশা ভঙ্গ হওয়ার কারনে বাতাসি ক্ষেপে উঠে বলল, " বজ্জাদ ব্যাডারা, শুধু শুধু ফাও চা-নাস্তা আর মিষ্টি গিলে গেলি, সেটারতো দাম দিয়ে যাবি! হুদাই এত্তগুলা খাওন নষ্ট হইয়া গেল।"

আম্মাজান, কি বলেন! কাউকে খাওয়াই এভাবে কথা বলা ঠিক না। আর আপনি জানেন না সামনে তিতিরের পরীক্ষা! আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।

" বৌমা বলে একটা হাঁক ছাড়লো বাতাসি। তারপর বলল, " বেশি কথা কস কিয়ের লায়? আর মুখের উপর কথা! লাডি ধরন লাগবে? "

" উক্ত কথা শুনিয়া কামরান সাহেবের জিবন যায় আসা অবস্থায়। কোন মসিবতে পড়ল সে। নায্য কথা বলাটাও দায় তার আম্মাজানের কাছে।"


তিতির মাহাদের কাছ থেকে কিছুটা দুরে বসে আছে। কারন রুমে রুপালী ফুফু এসে মাহাদের সাথে কথা বলছে।
বুঝলি মাহাদ, পাত্র পক্ষের পরিবার খুবই ভালো। আমার রুমকির বিয়ে না হলে এমন পাত্রকে আমি কখনও হাত ছাড়াই করতাম না। তিতির খুব ভাগ্যবান যে তারা নিজেরাই যেচিয়ে এসেছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।


মাহাদ এবার তিতিরের মুখের দিকে চেয়ে দেখলো তিতিরের চোখে তখন পানি টলমল করছে। মাহাদের আর সহ্য হলো না। মাহাদ সেখান হতে উঠতেই সাবিনা দৌড়ে এসে বলল," আফা, কাঁন্দেন না ওরা চলে গেছে। বিয়া ভাঙ্গে গেছে। "


ইয়েস বলে মাহাদ দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে আসতেই পারিজার কল এল। 
মাহাদ কল রিসিভ করে বলল," তোকে যেন আমার বাসার আশ-পাশে না দেখি। আর যদি দেখি তাহলে তোর সখের চুলগুলো কেটে ট্যাকলু বানিয়ে দিব।"


মাহাদ, আসলেই তুই তোর দাদীর মতই অসভ্য। কথার সাইজ দু'জনের একই রকম। 


আমি কতটা অসভ্য আজ তোকে বুঝাতাম যদি তিতিরকে ওখানে যেত হত। যাইহোক, তোর বুদ্ধির অনেক উন্নতি ঘটেছে। ফোন রাখ। আমার অনেক কাজ আছে বলে কল কেটে দিল মাহাদ। তারপর সোজা বাতাসির রুমে চলে গেল। 


বাতাসি ঘাপটি মেরে বসে আছে। মাহাদ এসে লম্বা একটা হাই তুলে বলল," তাহলে বাতাসি, এবারও তোমার প্লান ফ্লপ হয়ে গেল! কি সুখেই না মিষ্টিগুলো মুখে পুরে দিয়েছিলা.....। এখন সেগুলো হজম করতে পারবে তো?


আই কারো লগে কথা কইতাম না। আমার ঠেহা পড়েনি কাউরে লইয়া মাতামাতি করা। তুই আমার ঘর থেকে বাহির হইয়া যা।


আমি তোমার কাছে নিশ্চয় ঘুমাতে আসিনি! তোমার প্লান ফ্লপ করার কথা জানাতে আসছি। খুব তো তখন ধেই ধেই করে নাচছিলা আর এখন তোমার নাচ শেষ হয়ে গেল! 
মাহাদ কথাগুলো বলে রুম থেকে বের হয়ে এল।

♦♦♦♦

ঘটনা গুলোর বেশ কিছু দিন পর,

তিতিরের এক্সাম চলছে। মাহাদ তিতিরের সাথে টোটালি কথা বলা অফ করে দিয়েছে। তিতিরও মাহাদের পিছু লাগার আর তেমন সময় পায়না এক্সামের কারনে।

এর মধ্য মাহাদ একটা হৃষ্টপুষ্ট কুকুর নিয়ে আসে ওর ফ্রেন্ডের বাসা থেকে। কুকুরটি বিদেশী কুকুর ছিল। পুরো শরীর ধবধবে সাদা। খুবই উন্নত জাতের কুকুর। যাহা বলিবে তাহাই শুনিবে। একদম ট্রেনিং প্রাপ্ত কুকুর। সমস্যা হল কুকুরের নাম নিয়ে। কুকুরের নাম "পিন্টু"।

বাতাসি বিবি ব্যাপক আপত্তি জানালো। বাতাসি খেঁকিয়ে উঠে মাহাদকে বলল," জিবনে এত জিনিস থাকতে তোর কুত্তা পছন্দ হইলো! আর ওরেই আর বাড়িতে আনতে হইব? তুই আর কুত্তা দু'জনেই বাড়িত থাইকা বাইর 'হ'।"


বাতাসি, ওকে একদম বিশ্রী নামে ডাকবানা কিন্তু! ওর একটা সুন্দর নাম আছে। পিন্টু কামিং বলে ডাকতেই পিন্টু দৌড়ে এসে মাহাদের কোলে ঝাঁপ দেয়। এ এক অদ্ভুদ ভালোবাসা তাদের মধ্য।


কুত্তারে কুত্তা বলে ডাকুম না তে কি কইয়া  ডাকমু? হাতি কইয়া ডাকুম? উমহ্ এই কুত্তা লইয়া আবার বিছানায় ঘুমায়। আর শোন কুত্তারে খবরদার পিন্টু বইলা ডাকবি না।


আমার বাসায় আসার আগেই ওর নাম পিন্টু রাখা হয়েছে। ওকে পিন্টু ছাড়া অন্য নামে ডাকলে ও আসবেনা। এসব বুঝবেনা তুমি। কুকুর কি জিনিস সেটা তার কুকুরের মালিকই শুধু জানে বলে মাহাদ ওখান থেকে চলে আসলে।


তার কয়েকদিন পর বাতাসি রুমে বসে আছে এমন সময় প্লেটে কয়েকটা কাটা আম নিয়ে সাবিনা হাযির হয়েছে বাতাসির রুমে।

" সাবিনা যা তো! এক কাপ রং চা লইয়া আয়। বাতাসি জিহ্বা চটকাইয়া বলল, "আম, মুড়ি আর টোষ্ট বিস্কুট দিয়ে চা খামু।"

" আচ্ছা বলে  সাবিনা চলে যেতেই কুকুর মশাই বাতাসির রুমে ঢুকে চুপ করে বসে পড়ল। "

" ঐ কুত্তা এডা তোর বাপের বাড়ি! তাই এইহানে আইছোস? যা কইছি যাহ্ বলে কয়েকবার তাড়ানোর চেষ্টা করলো বাতাসি কিন্তু পিন্টুর যাওয়ার কোন নাম নেই।

" এর মধ্য সাবিনা আবার রুমে ঢু মেরে বলল," দাদী, আর মনে হয় এইডা কুত্তার নানীর বাড়ী।"

" ঐ ছেরি বেশি কথা না কইয়া কাম কর। বাতাসি একধানে কুকুরের দিকে চেয়ে আছে। কুকুরও বাতাসির দিকে চেয়ে আছে। ঐ কুত্তা চাইয়া আছোস ক্যান! আর মত সুন্দরী মাইয়া বাপের জন্মে দেহস নাই!
শেষে বাতাসি নিজেই মাহাদের কথার পরখ করতে কুকুরকে পিন্টু বলে ডাক দিল।"

" পিন্টু ভাবলো বুড়ি তারে খাবারের জন্য ডাকছে তাই এক লাফে বাতাসির বিছানায় চড়ে গা গড়াগড়ি দিল। আর এতে আমের থালা ঠাস করে নিচে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে গেল। আমগুলোও ছিটকে পড়ে গেল।"

এবার বাতাসিরে পায় কে! অকথ্য ভাষায় কুকুরকে গালি দিতে লাগল। বাড়িতে এক মরা আনছে যারজন্য এত কিছু হইয়া যাইতাছে।
কুকুরও খাট থেকে নেমে গিয়ে নিরাপদে কিছুটা দুরে দাড়িয়ে ভুগ ভুগ করে ডাকতে লাগলো।

এমন সময় আসমা চা লইয়া এসেই দেখলো আমগুলো পড়ে আছে নিচে আর কুত্তা চিৎকার করছে।

সাবিনারে দেখে বুড়ি বাতাসি চিল্লায়া বলল," দেখছোস সাবিনা, হারামজাদি কুত্তার কত্ত সাহস?"

" দাদী হেই তো ব্যাটা ছাওয়াল কুত্তা। তারে হারামজাদি কইতেছেন ক্যান? কন হারামজাদা কুত্তা। কারন কুত্তা টা ব্যাটা ছাওয়াল ছিল তাই এমন করতাছে। দেন আই আবার আন্নেরে আম কাইটা দেই।"

বাতাসি বিবির কথা থামছেইনা।কি করা উচিত সেটাই ভাবতে পারছেনা বাতাসি বিবি।

এমন সময় মাহাদ রুমে আসতেই কুকুর দৌড়ে গিয়ে মাহাদকে ভুগ ভুগ করে সব জানালো। 

পিন্টু বাবা, খামাকা এই ছোটলোকের রুমে কেন এসেছ?

" মুখ সামলে কথা ক মাহাদ! আই ছোট লোক! তুই ছোড লোক, তোর ১৪ গোষ্ঠী ছোড লোক সাথে তোর কুত্তাও ছোডলোক।"

" পিন্টু তোমার থেকেও বড়লোক বাতাসি।"

ঐ তুই পিন্টুইল্যা ডাকা থামবি! ছোটকালে আর প্রিয় দোস্তর নাম পিন্টু ছিল। ওরে তুই পিন্টু কইয়া ডাকলে আর মনে হয় তুই আর দোস্তরে ডাকস।"

" অ.... এই বার আসল কথায় আসছো। তুমি কেন এমন করো। পি....ন্টু বলে মাহাদ একটা চিৎকার দিতেই পিন্টু মাহাদের ডাকে সাড়া দিয়ে শব্দ করে ডাকতে লাগল। বাতাসিকে পিন্টু তার ক্ষমতা দেখাতে ব্যস্ত।  এদিকে বাতাসি যতই জ্বলতেছে ততই মাহাদ পিন্টু বলে হাঁক ছাড়ছে। 

" কি কন দাদী!  আপনার দোস্তের নাম পিন্টু আছিলো! হেহেহে আন্নের দোস্ত বুঝি কুত্তা ছিল বলেই সাবিনা তার সব দাঁত বাহির করিয়া হাঁসিতে লাগিলো।"

এতে বাতাসি বিবি রাগে আগুন হইয়া গেল.......

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন