সাইকো ইজ ব্যাক - পর্ব ১১ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


চোখ থেকে অনর্গল পানি পড়ছে,,মনে মনে আল্লাহ ডাকচ্ছি।।সে যেন.....ভাল থাকেন,  তার কোনো ক্ষতি না হয়।।আমি দৌড়ে বের হতেই ড্রাইভার চাচার সাথে দেখা তিনি আমাকে দেখে বলতে লাগেন,,
------কি হয়ছে মা কান্দেন কেন? 
------চাচা,  ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে।। সেখানে যাচ্ছি।।
------ওগো বুঝবাম পারছি! আপনি গাড়িতে বহেন আমি নিয়া যাইতাসি।।
আমি সম্মতি জানিয়ে গাড়িতে বসে পরলাম।। তখন কেউ একজন ভাইয়ার নাম্বার থেকে কল করে বলেছেন তিনি এক্সিডেন্ট করেছেন।। আর গুরুতরভাবে আহত।। গাড়ি চলছে,,  আমি এদিকে কাঁদতে কাঁদতে শেষ।।এত ঘৃণার মাঝে,  সেই তো একজন যে আমাকে ভালবাসে,, তার কিছু হলে যে আমি অচল হয়ে পরবো।।এদিকে আমি কাঁদতে কাঁদতে শেষ।।কোনো হুশ নেই আমার।।গাড়ি কই যাচ্ছে তাও জানি না।।শুধু চোখ বন্ধ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাচ্ছি।।

একটি জায়গায় এসে গাড়ি থেমে যায়।।আমি বের হই,,  দেখি এটি একটি কোনো নদীর পাড়।। আমি গাড়ি থেকে নামতেই চাচা বললেন,,
-----মা আপনের গন্তব্য সামনে।। এখান থেকে একাই যাইতে হবে আপনার।।
আমি উনার কথা কিছু বুঝলাম না।।মাথায় শুধু ঘুরছে আমার সাইকো ঠিক আছে তো।।আমি আর কিছু না ভেবে দৌড়ে সামনে গেলাম।।কিছুটা যেতে সামনের ব্যাক্তিটাকে দেখে হাটু গেড়ে বালি বসে পরলাম।। দু হাতে মুখ ধরে কাঁদতে লাগলাম।।ইউসুফ অক্ষত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে সামনে।।আমাকে ওখানে বসে পড়তে দেখে তিনি দৌড়ে এসে আমার সামনে বসে পড়লেন,,  আর বলতে লাগলেন,,,

----কি হয়েছে বাবুইপাখি??
আমি তার কথা না শুনে তাকে কিল ঘুশি দিতে লাগলাম।।আর কান্নার বেগ যেন আরো বেরে গেল।।
-----আপনি খুব খারাপ,,সব সময় এমন করেন,, কেন করলের এমন,, কত ভয়ে পেয়েছি আমি জানেন?? থাকবো না আর আমি।।
বলে উঠে যেতে নিলাম তিনি আমাকে টেনে তার বুকের মাঝে নিয়ে শক্ত করে জগিয়ে ধরে বললেন,,
-----বাবুইপাখি,, আমি ঠিক আছি,,  কিছু হয়নি আমার দেখ।।আর কেঁদো না প্লিজ?? আচ্ছা আম সরি,, কানে ধরছি এবার।। বলে ইউসুফ কুহুকে ছেড়ে কানে ধরলো।।

আমি দুহাত বুকে গুজে দাড়িয়ে আছি,,  অন্যদিক মুখ করে,, আর যাই হোক আমি ওর সাথে কথা বলবো না।। এটা কেমন কাজ করলেন তিনি।।তখন আমার মনে হচ্ছিল আমার কলিজাটা কেউ চিরে বের করে ফেলছে।।মুখ অন্য দিকে ঘুড়িয়ে রেখেছি।।তখনি তিনি বলতে লাগেন,,

-----এখন রাগ করে থাকলে সত্যই মরে যাবো কিন্তু।।
উনার কথা শুনে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠি উনি বলতে লাগেন,, 
----আরে পাগলি আবার কাঁদে  কেন??
----আপনি এমন কেন করলে?? আমার কাছেতো হাতে গোনা ২/৪ টা মানুষ ছাড়া আপন বলতে কেউ নেই।।আর আপনি আমার সাথে এমন করলেন।।
----আচ্ছা বাবুইপাখি আমি সরি।। এত গুলো,, দু হাত দেখিয়ে,, আবার বলল,  না এত গুলা।।
-----আমি হেসে দেই।।
আর উনি আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।। আমি তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি।।তার বুকে যে শান্তি লাগছে বলার বাহিরে।।এ মানুষটিকে যে না চাইতেও ভাল বেসে ফেলেছি আমি।।আর কিছুতে হাড়াতে চাই না তাকে।।তার সাথে বাঁচার লোভ জাগচ্ছে দিন দিন খুব করে।।জানি তিনি মাঝে মাঝে সাইকো রূপ ধারণ করেন।। তাতে কি?? আমি মানিয়ে নিতে পারবো সব তার জন্য।।

-----বাবুইপাখি??
------হুম!!
------বলেছিলাম না তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে?
------হুমম।।
-----আসো!!  বলে তিনি আমাকে হাতে ধরে কাউকে কল করে এগিয়ে গেলেন,, তখন ২ টা লেডি বডিগার্ড যাদের আমার জন্য রাখা হয় তারা আসেন,,
----বাবুইপাখি তাদের সাথে যাও।।আর হে ওরা যা যেমন ভাবে বলে তা শুনবে।। না হলে!!!
-----না হলে!!  মারবেন?? চোখ পিট পিট করে বললাম।।
তিনি হেসে বললেন,,
----না কষ্ট পাবো।।

ঘন্টাখানিক পর,,,

আমাকে তারা প্রিন্সেস এর মত প্রিন্সেস সাজিয়ে দিয়েছে,, সিনড্রেলার মত একটি গাউন ড্রেস পরানো হয়েছেন নীল কালারের।। যার ঘের অনেক।।ড্রেসটির ম্যাগি হাতা।। খুব সুন্দর করে চুল গুলো খোপা করে দিয়ে কিছুটা ছেড়ে দিয়েছে।। মাথায় ডায়মন্ডের ক্রাউন পড়ানো হয়েছে।। সাথে কানে ডায়মন্ডের ছোট টপ, আর গলায় লকেট।। সব মিলিয়ে নিজেকে রূপকথার রাজকন্যা মনে হচ্ছে।।

সাজার পর তারা আমাকে নিয়ে সেই নদীর পারে আসলেন,,এটা নদীর পাড়ের কোনো রেসোর্ট।। এখানে খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করা,  ছোট একটা টেবিলের পাশর রাউন্ড করে লাইটিং করা।।আর বালিতে নানা রকমের আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।। তারা আমাকে কিছু দূর রেখে চলে যায়।।আমি ধীরে পায়ে এগিয়ে যাই সামনের দিক।।সামনে দিকে যেতেই ইউসুফকে দেখতে পাই।।তাকে দেখে মনে ধক করে উঠে,, উনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে,, নীল কালারের সুট পরেছেন তিনি।।কোর্টের এক পাশে সুন্দর ব্রোজ লাগানো।।মাথার চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা।।সব মিলিয়ে আরেক দফা ক্রাশ খেলাম।। সত্যই মানুষ এত সুন্দর কেমনে হয়?? তার চোখ গুলো যে আমাকে ঘায়েল করে প্রতি বার।।তার চাহনীতে আমাকে পাওয়ার কত নেশা বুঝা যায়।।

ইউসুফ তার বাবুইপাখিকে দেখে থমকে গেছে।।বুকের ভিতর চিনচিন করে ব্যথা অনুভব করছে।।সে যে এই পিচ্চি মেয়েটিকে মনে গহীন থেকে ভালবেসে ফেলেছে!! আচ্ছা ভালবাসার মানুষের কি নজর লাগে?? তাহলে হয় ইউসুফে নজরটা লেগে যাবে।।এসব ভেবে ইউসুফ কুহুর দিক পা বাড়ায়।।
কুহু তার গাউন ধরে ছোট কদমে হেটে আসচ্ছে।।যা দূর থেকে বারবি ডল বলে মনে হচ্ছে।।ইউসুফ কুহুর কাছে দাড়িয়ে অনেকক্ষণ যাবৎ।। কিন্তু কিছু বলছো না।। শুধু তার বাবুই পাখির মুখটা বিচরণ করে যাচ্ছে।। তার পর হুট করেই কুহুর চোখের নিচ থেকে কাজল নিয়ে কুহুর কানের পিছনে লাগিযে দিল।। আর বলল,,
-----এখন আর কারো নজর লাগবে না।। আমারো না!!
আমি হেসে দিলাম।।
-----আপনাকে এসব কে বলছে??
-----মম মাঝে মাঝে আমার সাথে এমন করেন।।
----ও হো এক মিনিট।। বলে আবার আমার চোখে কাছ থেকে কাজল নিয়ে ইউসুফের কানে দিয়ে বললাম,, এবার আপনারও লাগবে না নজর।।
দুজনেই হেসে দিলাম।।
তখনি ইউসুফ তার হাত আমার দিক বাড়িয়ে দিল আর বলল,,
----মে আই!!
----হুম বলে হাত বাড়িয়ে দিলাম।।
তিনি আমাকে নিয়ে সেই টেবিলের কাছে গেলে।।দূর থেকে না যত সুন্দর লাগছিল কাছ থেকে আরো বেশি সুন্দর লাগচ্ছে,, তার সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড এ স্লো মোশন সং চলছে।।ইউসুফ আমাকে সেখানে নিয়ে এসে একপাশে দাড়ালো।।  আমি একটু এগিয়ে গিয়ে সব কিছু দেখছি।।এ যে কোনো স্বপ্নের চেয়ে কম নয়।।আচ্ছা এত সব সইবে তো আমার কঁপালে।। এসব ভাবচ্ছি তখনি গিটার বেজে উঠে,,
আর আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি,, ইউসুফ একটি চেয়ারে বসে হাতে তার গিটার।।আমি তার দিকে তাকাতেই উনি মুচকি হেসে গাইতে লাগলেন,,
----Bahot pyaar karte hain tumko sanam

Kasam chaahe le lo khuda kee kasam

ইউসুফ নীচে তাকিয়ে গান শুরে করে ২ লাইন গাওয়ার পর,,  আবার আমার দিক তাকিয়ে গাইতে লাগেন।।আমি চেয়ারে বসে টেবিলের উপর এক হাত দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি।।

Hamaaree gajal hain,

tasawwur tumhaara

Tumhaare bina

abb naa jina ganwaara

Tumhe yu hee chaahenge

jab tak hain dam

 উনি চেয়ার থেকে উঠে এসে,, আমার সামনে হাত রাখে।।আমি তার হাতের উপর হাত রাখতেই, তিনি আমাকে সামনে নিয়ে গেলেন।।আর এক হাত আমার কোমরে আরেক হাত আর হাতে রেখে ডান্স করতে লাগলেন।।আমিও তার সাথে তাল মিলাতে লাগলাম।।

Saagar kee baaho

me mauje hain jitanee

Hamko bhee tumse

mohabbat hain utanee

Ke yeh bekararee naa

abb hogee kam

 

Bahot pyaar karte hain tumko sanam

Kasam chaahe le lo khuda kee kasam

 

Hamaaree gajal hain,

tasawwur tumhaara

Tumhaare bina

abb naa jina ganwaara

Tumhe yu hee chaahenge

jab tak hain dam

 

Saagar kee baaho

me mauje hain jitanee

Hamko bhee tumse

mohabbat hain utanee

Ke yeh bekararee naa

abb hogee kam

গানের শেষে তিনি আমার সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়লেন।। আর আমার সামনে একটি বক্স থেকে একটি রিং বের করে বলতে লাগেন,,
----বাবুইপাখি,,তোমার মনের কোনে আমার জায়গা দিবে কি?? আমার বিছানার বামপাশের জায়গাটা নিবে কি?? আমার ছোট রাজ্যের রাজকন্যা হবে কি?? তোমার ওই বিশাল মনের কোনে ছোট জায়গা পাবো কি?? শ্রাবণের বৃষ্টিতে ভিজতে আমার সঙ্গী হবে কি??মন খারাপের সাথি হবে কি??জীবনের চলার সাথী হিসেবে আমাকে নেবে কি?? রাতের আঁধারে ঘুরতে যাওয়ার সাথী হবে কি?? আমার যে সব কিছুতেই তোমাকে চাই??জীবন মরণ, হাশর, জান্নাত, দুঃখ, কষ্ট, সুখ, হাসি কান্না,,  প্রতিটি মুহুর্তে আমার তোমাকে চাই।।আমার হাতে হাত ধরবে কি??বলে ইউসুফ রিংটা এগিয়ে দিল।।
আমি উনার প্রপোজ করা দেখে প্রথমে শকড খেলাম,, কিন্তু পরে হাসি লাগচ্ছে,,সাথে বুক ফেঁটে কান্না আসচ্ছে,, এ যে দুঃখের কান্না নয়।।এ ডে আমার সুখের কান্না।। আমি তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম সে আমাকে রিং পড়িয়ে দিলেন।।আর আমি তাকে ঝাপটে ধরলাম।।আজ কান্না যেন থামচ্ছে না।।আজ যে আনন্দ টুকু পাচ্ছি,,  এটা যে আমি রিয়ানের প্রপোজ করার সময় পায় নি।।তাহলে কি আমি সত্যিই আমার ভালবাসা পেয়ে গেছি।।

আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরতেই সাথে সাথে আকাশে আতশবাজি ফুটতে লাগল।। চারিদিক রংবেরঙের আলো উঠতে লাগলো।। তার সাথে অনে ফানুস।। আমি ইউসুফকে ছেড়ে পিছনে ঘুড়ে দেখছি তখনি।।ইউসুফ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।।আর আমার কাঁধে তার ঠোঁট ধারা গভীর স্পর্শ করে।।সাথে সাথে আমার শরীরে কেমন কম্পন সৃষ্টি হয়।।আমি ইউসুফের হাতে উপর হাত রাখি।।কিছুক্ষণ পর সেখান তার থুতনি দিয়ে আমার কানের কাছে ফিস ফিস করে বলতে লাগে,,
-----হ্যাপি বার্থডে বাবুইপাখি।।মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দা ডে।। বলেই আমার গালে শব্দ করে চুমু খেলেন।।আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেছি।।তার দিকে তাকানোর সামর্থ্য আমার নাই।।তার সাথে আমার চোখে পানি।।আজ পর্যন্ত কেউ আমার বার্থডে এভাবে করে নি।।কখনো ভাবিনি এমন ও সময় আমার জন্য আছে।।আমি নিঃশব্দে কেঁদে দিলাম।। ইউসুফ হয়তো বুঝতে পারছে।।সে আমাকে তার দিকে ফিরিয়ে তার কঁপালের সাথে আমার কঁপাল ঠেকিয়ে একদম মৃদুস্বরে নেশা লাগানো কন্ঠে বলতে লাগেন,,,
------হোয়াই আর ইউ ক্রইং বাবুইপাখি!! তোমার কান্না যে ঠিক এই জায়গায় (বাম পাশে হাত দিয়ে দেখিয়ে) লাগে।।আমি তোমাকে ভালবাসি বাবুইপাখি খুব।।আই লাভ ইউ।।
-----লাভ ইউ টু!! বলে জড়িয়ে ধরলাম।।আমার জন্য এত কিছু কেউ কখনো করে নি।।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,,এত সুন্দর একটি মুহুর্থ করার জন্য।। 
----ধন্যবাদ আমার চাই না।। আমার রিটার্ন গিফ্ট চাই।।
-----আমার কাছেতো এখন কিছু নেই।।বলে মাথা নিচু করে ফেললাম।।
তিনি তার হাতের আঙ্গুল দিয়ে আমার থুঁতনির নিচে  দিয়ে আমার মুখটা উঁচু করে বলতে লাগেন,, 
----তুমিকি জানো আমার লাইফের সবচেয়ে বড় গিফ্ট তুমি।। আর রইল রিটার্ন গিফ্ট আমি নিয়ে নিচ্ছি।।বলেই তিনি আমার ঠোঁট তার ঠোঁটের ভাঁজে আবদ্ধ করে নিলেন।। সাথে সাথে চোখ বড় হয়ে গেল।।এমন কিছু সাইকো করবে ভাবিনি।।কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয় তিনি।। আর কাউকে কল দেন।। সাথে সাথে একজন কেক নিয়ে হাজির।।কেক রেখে তিনি চলে যান।।ইউসুফ আর আমি মিলে কেক কাঁটলাম।। আমি তাকে খাইয়ে দিলাম সে আমাকে খাইয়ে দিল।।অনেক গুলো  পিক তুললাম।। আরো কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে খালি পায়ে দুজন দুজনে হাত ধরে হাটতে লাগলাম।।গন্তব্য হীন ভাবে নদীর পার ধরে হাঁটে যেতে লাগলাম আমরা।।রাতের চাঁদের আলোতে দুজন দুজনাতে হাড়িয়ে যেতে লাগলাম।।

—————

দেড় বছর পর,,,
বন্দুক তাক করে রেখেছে ইউসুফ কুহুর মাথার উপর।।মুখে তার ভয়ানক হাসি।।কুহুর সামনে চেয়ারের উপর এক পা রেখে কুহুর মাথা বরাবর বন্দুক ধরে রেখেছে,,বন্দুকের টিগারে তার এক আঙ্গুল।।যা দেখে বার বার কেঁপে উঠছে কুহু।।

কুহু ইউসুফের সকমনে হাটু গেরে বসে,,আর তার দু হাত পিছনে শক্ত করে বাঁধা।।মুখে তার কসটেপ দেয়া।।সে কিছু বলতে পারছেনা।।শুধু চোখ দিয়ে বন্যা বয়ে যাচ্ছে।।

-----কেমন আছো বেবী??বলে বাঁকা হাসলো ইউসুফ।।

আমি শুধু উম উম করে যাচ্ছি।।হটাৎ করে ইউসুফকে দেখে আমার ভয়ে আত্না বের হয়ে যাচ্ছে।।

----উপস!  তুমি কথা কিভাবে বলবে??  আমি তো তোমার মুখ বন্ধ করে রেখেছি।।এক মিনিট খুলে দিচ্ছি।।

বলে জোড়ে টান মারলো কসটেপ।।যার জন্য ব্যথায় আপনা আপনি বের হয়ে গেল মুখ থেকে আহ্ শব্দ টি।।

-----ভাইয়া প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন!!মুখ খুলতেই বলে উঠলাম।।

তিনি সাথে সাথে আমার গাল চেপে ধরলেন।।আর বলতে লাগলেন,,

-----ছেড়ে দিব?? হুম!! দিবো ছেড়ে তার আগে আমার হিসাব-নিকাশটা করে নেই।।এই দেড় বছরের প্রতিটি মুহুর্তের, প্রতিটি সেকেন্ডের, প্রতিটি ঘন্টার,, প্রতিটি দিনের,  প্রতিটি মাসের,,প্রতিটি বছরের হিসাব নিয়েই তাররপর তোকে ছাড়বো।।
খুব শক না তোর পালাবার,, আমাকে ছেড়ে যাবার।। আজ সব শক আমি তো মিটাবো।।বলেই তিনি আমার গাল চেপে ওঠালেন।। এবং তার বরাবর দাড় করালেন।।

----বাহ্ তুইতো আগে থেকে অনেক সুন্দর হয়েছিস।।ভাল বডি বানিয়েছিস।।ছোট ছোট কাপড় পরতে শুরু করেছিস।। সব মিলিয়ে তোকে সেই হট লাগচ্ছেরে।।বলে ঠোঁট কামড়ে ধরলো তার নিজের।।
তারপর আবার বলল,,
----মনে হচ্ছে আজই তোর মাঝে ডুব দেই বলে।।অট্টহাসি দিতে লাগলো।।আমার ভয়ে যে মুখ দিয়ে কথাই বেড় হচ্ছেনা।।তার উপর তার এমন কথা কান লাল হয়ে যাচ্ছে আমার।।

তখনি তিনি আমার সামনে এসে হিসহিসিয়ে বলতে লাগেন,,,
-----ভয় করছে হুম?? বলে তিনি তার বাম হাত দিয়ে আমার পিছনের চুলের মুঠি ধরে টান দিলেন জোড়ে।।

আমি সইতে না পরে বলতে লাগি কাঁদতে কাঁদতে,,
---- ভাইয়া ভাইয়া প্লিজ,, আমার লাগচ্ছে।।

তিনি এবার আরো জোড়ে ধরে বলতে লাগেন,
-----বাবুইপাখি আমিতো লাগার জন্যই ধরেছি।।তোকে আদর করবো বলে তো ধরি নি?? বলেছিলাম না।।আমাকে ছেড়ে কখনো যাস না। তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।।বলেছিলাম না।।

----ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দেন।।

----ক্ষমা আমার ডিকশনারিতে নেই।।যেটা আছে সেটা শাস্তি।।তুই জানিস তোকে কতটা খুঁজেছি! পাগলা কুত্তা হয়ে গেছিলাম তোর জন্য।।আমার ফিলিংসের কোনো দাম নেই না?? চিৎকার করে বলতে লাগেন তিনি।।

তার এমন চিৎকারে চোখ বন্ধ করে নেই শক্ত করে।।

তিনি আবার বলতে লাগেন,,
----বলেছিলাম বার বার এমন কিছু করিস না যে আমার আসল রূপ টা তোকে দেখানো লাগে।।বলেই তিনি আমাকে কষে চড় মারলেন।। 

আর আমি ছিটকে নিচে  পড়ে গেলাম।।তাতেও যেন তার রাগ কমছে না তিনি টেবিলের উপর উপর থেকে একটি লাঠি নিয়ে আমার সামনে বসে পরলেন।।আর আমাকে টেনে তুলে বিচানায় ফেলে দিলেন।।

তারপর আমার পা ধরে টান মেরে তার সামনে তুললেন।। আমি বুঝতে পারছি না ভাইয়া কি করতে চাইছেন।।তখনি তিনি আমার পায়ের তালাতে 
জোরে জোরে বাড়ি দিতে লাগলেন বেত দিয়ে।।
আমি পা সরাতে চাইছি কিন্তু পারছি না।।

ব্যথায় চিৎকার করে যাচ্ছি এতে যেন ভাইয়া আরো জোড়ে দিতে লাগলেন।।আমি পা সরানোর জন্য মুচড়া মুচড়ি করছি।।হাত টা বাঁধা তার জন্য কিছু করতেও পারছিন।।আমার চিৎকার এই ঘরে চার দেয়ালের মাঝে হাড়িয়ে যাচ্ছে।।

----খু্ব শখ না তোর পালাবার আমার থেকে।।সব শখ মেটাবো এবার।। এসেব বলে তিনি আরো জোড়ে মারতে লাগলেন।।

আমি জোড়ে চিৎকার করে বলে যাচ্চি,,
----ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিন।। আমি আর কখনো এমন করবো না।। ভাইয়া..!!

মনে হয় না আমার কথা গুলো তার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে।। এভাবে কিছুক্ষণ পর তিনি আমাকে ছেড়ে দেন।।আর বেত ফালিয়ে আমার সামনে আসেন।।আমি শুধু চোখের জল ফালছি।।ব্যথায় মুখ দিয়ে কোনো শব্দ যেন বের হচ্ছেনা।। তখন ইউসুফ আমার গালে আলতো করে স্লাইড করতে করতে বললেন,,
-----বাবুইপাখি  কষ্ট হচ্ছে খুব তাইনা।।আমারো যে হয়ে ছিল।।খুব কষ্ট হয়েছেল ঠিক এ জায়গায়(বুকের বা পাশে দিকে আঙ্গুল দিয়ে)।
আমি অনেক কষ্ট বলতে চেষ্টা করলাম,,
----ভাইয়া আমাকে আর মেরো না।। আমি আর করবো না এমন কখনো।।আমকে ছেড়ে দেও।।
তিনি শুধু আমার কথা শুনে হাসলেন।।তার এই হাসির মাঝে কোনো মায়া দয়া নেই।।তার এই মুখে হিংস্রতা ফুঁটে উঠেছে।। তিনি বলতে লাগলেন,,
----তোকে এতো তাড়াতাড়ি তো ছাড়ছি না।।তোর শাস্তি এখন মাত্র শুরু।।হিসহিসেয় বলে উঠে গেলেন।।

আর কাউকে কল করে বললেন,,
----হুম।। গরম করেছিসতো?? 
----
----গুড যব।।নিয়ে আয় ভিতরে।।
বলে ফোন কেটে দিলেন।।
আর তিনি আমার কাছে এসে বলতে লাগলেন,,
----বলেছিলাম আমাকে সাইকো রূপে দ্বিতীয়বার দেখাবো না।। বাট তুইতো কাঁঠালের আঠা।। তোকে ভালো করার জন্য আমাকে সাইকো হতেই হচ্ছে।। নাউ #psycho_is_back.. 😎

সাইকোর কথা শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।।তখনি কেউ দড়জায় নক করে।।আর ইউসুফ সেখানে যায়।।আর হাত বাড়িয়ে কিছু নিয়ে এসে টেবিলের উপর রাখে।।সামনের জিনিসটি দেখে নিজে শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বললাম,,,
-----নাহহহহহ।।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন