অচেনা অতিথি - পর্ব ১৪ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


-" মাহাদ নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারেনা। তিতিরকে একটু উপরে জাগিয়ে তুলে নিজেই ওর ঠোটের স্বাধ নিতে লাগল। তারপর পাগলের মত কয়েকটা কিস♥ করতেই থেমে গেল মাহাদ। নিজে যে কতবড় ভুলের দিকে পা বাড়াচ্ছে সেটা আর বুঝতে বাঁকি রইল না মাহাদের। 
তিতির ছাড়ো বলেই মাহাদ তিতিরকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে জানালার কাছে চলে গেল।"

-" তিতির নিজেও খুব ভাল করে বুঝতে পারছিল খুব খারাপ  কিছু একটা হতে চলছিল। প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেল। বুকের ভিতর যে হাতুরি পিটা শব্দ এতক্ষন হচ্ছিল সেটা যেন বেড়েই চললো।"

ঃ-" এভাবে আমার রুমে আসা তোমার ঠিক হয়নি তিতির! রুমে চলে যাও এখুনি। মাহাদ এখনো তোমার জন্য নিরাপদ না। "

ঃ-" তিতির বাধ্য হয়েই কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেল।"

-" তিতির চলে গেলে মাহাদ ওয়াশরুমে চলে গেল। তারপর এসে শুয়ে পড়ল।  মাহাদ এখনো জানেনা আরো কিছু ঘটতে চলেছে ওর সাথে।
১৫ মিনিটের মধ্য মাহাদ প্রায় ঘুমিয়েই গেছে এমন সময় আবার তিতির মাহাদের রুমে এসে দরজাটা ভাল করে বন্ধ করে দিয়ে সোজা মাহাদের উপর এ্যাট্রাক্ট করলো।
কম্বলের নিচে গিয়ে মাহাদকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে সুয়ে পড়ল।"

ঃ-" তুমি আবার আসছো তিতির! আমার এসব পছন্দ না। তুমি রুম থেকে এখুনি বের হবা। কথাগুলো বলেই মাহাদ ঝট করে উঠে বসল।"

ঃ-" তিতির পিটপিট করে মাহাদের দিকে তাকিয়ে আছে আর জায়গা খুঁজছে কেমনে মাহাদের বুকে ঢোকা যায়। "

ঃ-" এই তুমি কি করতে চাচ্ছো! ওমন করে আমার দিকে তাকিয়ে  কি খুঁজার চেষ্টা করছো! এক্ষুনি রুম থেকে চলে যাও। বাড়াবাড়ি করো না শেষে রেগে যাবো। যেটা তোমার জন্য ক্ষতিকর হবে।"

ঃ-" আমার ঘুম আসছে না।  আর আপনি মজা করে ঘুমাবেন সেটা চলবেনা। হয় আমার সাথে জেগে থাকবেন না হয় আমি আপনার সাথে ঘুমাবো বলে কাছে আসতেই মাহাদ ঠাশশশ্ করে একটা চড় মাড়ে তিতিরের গালে।"

ঃ-" এবার রেজাল্ট পাইছো আমি কি জিনিস? বার বার বলছি এমন কাজ করোনা তবুও কানে কথা যায়না!   যাও রুমে.......... 
এরকম কাজ যেন ২য় বার করতে না দেখি।"

ঃ-" তিতিরের এতটা খারাপ লাগল যে ওখান থেকে মুহুত্ত্বেই বের হয়ে নিজের রুমে চলে আসল গালে হাত দিয়ে।
রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়েই কাঁদতে লাগল। আমিতো খারাপ কিছু করতাম না শুধু একটু গল্পই করতাম। সেটাও তার সইলো না।"

♦♦♦♦♦♦

-" অন্ধকার রুমে মাহাদ মাথাটা নিচু করে বসে আছে।মাহাদ খুব ভাল করেই জানে ; তিতির আর ওর ব্যাপারটা যদি একবার স্বপ্নেও টের পায় রেজওয়ান তাহলে আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিতিরের ক্ষতি করতে ২য় বার আর ভাববেনা রেজওয়ান।  এমনি ইদানিং তিতিরের পাগলামো বেড়েই চলেছে তাই যতটা ওর কাছ থেকে নিজেকে দুরে রাখা যায় ততটাই মঙ্গল তিতিরের জন্য।
আমার জন্য না জানি তিতির কোন বিপদে পড়ে।"

-" পরেরদিন সকালে বাতাসি বিবি চা, মুড়ি আর বিক্সিট খাচ্ছে। চায়ে চুমুক দিয়েই সাবিনারে বলল-" তুইও এক কাপ চা নিয়ে আমার সাথে বসতে পারিস। খাবি চা???"

-" না দাদী আন্নে খান। আন্নের খাওয়ার ভিতরও একটা জমিদারনী জমিদারনী ভাব আছে। দেখতে বড়ই ভাল লাগে।"

-" সর মাইয়া লজ্জা দেস ক্যান? তই তোর দাদাও এই কথা কইতো।  আর ভিতর একখান সৌখিনতা সৌখিনতা ভাব আছে। আহারে মানুষটা যদি আজ বাঁইচা থাকতো তাইলে একলগে চা খাওন যাইতো।"

-" উম বুড়ি চা খাইবো। মরা সোয়ামীরে কথা শুনাইতে ছাড়ে না তার জন্য আবার আফসোস। বুড়ির সখ আর গেল না। বুড়াডা মইরা বাঁইচা গেছে তা না হলে বুড়ি যে কি করত আল্লাহ্ ভাল জানে। সাবিনা মনে মনে কথাগুলো বলে রুম থেকে বাহির হয়ে গেল। বুড়ির প্যাঁচাল শুনলে তার হবেনা ম্যালা কাজ পরে আছে।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

-" কাল রাতে রুমকি অনেক কান্নাকাটি করছে ওর মায়ের কাছে।  যেভাবে হোক মাহাদ কে ওর লাইফে চায়। ও মাহাদকে খুব ভালবাসে। প্রয়োজন হলে ও নিজেই কামরান মামার সাথে কথা বলবে। তাতে যা হয় হোক। সারা জিবন মাহাদের দাসী হয়ে থাকতেও রুমকি রাজী আছে তবুও মাহাদ ওর চাই।

একমাত্র মেয়ের কান্নার কাছে হার মেনে বাধ্য হয়েই আজ সকালে ডাইনিং টেবিলে খাবার সাজাতে গিয়ে  কথাটা লাবীবার কাছে তোলে রুপালী। দেখ লাবীবা তুই যদি একটু সবাইকে বুঝাস তাহলে কাজ সহজেই হয়ে যাবে। মেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারছিনা। কাল দুপুর থেকে মেয়ে আমার না খেয়ে আছে। কিছুতেই খাওয়াতে পারছিনা। তুই একটু মাহাদকে বলনা। বাঁকিটা আমি সামলিয়ে নিব।"

-" লাবীবা সহ ওখানে তিতিরও উপস্থিত ছিল। তিতির ভার্সিটিতে যাবে কিছুক্ষন পর তাই লাবীবা ওকে এখানে ডেকে আনছে কিছু খাওয়ার জন্য। গতদিন না খেয়ে গিয়েছিল মেয়েটা তাই আজ আগেই লাবীবা সব রেডী করেই ওকে খেতে দিয়েছে।  অতিথী আপ্যায়ন সে ভাল করেই করতে জানে।"

-" রুপালীর কথাগুলো শুনে তিতিরের গলায় পরোটা আটকে গেল। কোন মতে পানি খেয়েই বলল -" খালাম্মা আমার খাওয়া হয়ে গেছে।"

-" তিতির আর একটু খাও বাবা। এতটুকু কেউ খায়? না খেলে পড়বা কিভাবে! আপা ও লজ্জা পাচ্ছে মনে হয় এভাবে একা খেতে। চলেন তার থেকে মায়ের কাছে গিয়ে এ ব্যাপারে তার সাথে পরামর্শ করি।"

-" লাবীবা আর রুপালী চলে যেতেই তিতিরের চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। গলাটা ভারী হয়ে গেল। খাবার আর মুখে তুলতে পারল না। খাবারটা ওভাবে রেখেই হাত ধুয়ে বের হয়ে চলে গেল।"

♦♦♦♦♦♦♦♦♦

-" লাবীবা নিজেও চাচ্ছিলনা মাহাদের সাথে রুমকির বিয়ে হোক। কারন এমন ছন্নছাড়া মেয়েকে কেউ জানতেও ছেলের সাথে বিয়ে দিবেনা।  মুখের উপর কিছু বলতে পারবেনা বিধায় শাশুড়ি মায়ের কাছে নিয়ে আসল। শাশুড়ীর উপর পুরো বিস্বাস আছে।  আর যাই হোক বিয়েটা হতে দিবেনা কিছুতেই বাতাসি।

লাবীবার কথায় ঠিক হল।  কথাটা শুনেই বাতাসির মাথায় যেন বাঁজ পড়ল।
ওর বাপ একটা ইবলিস শয়তান আর তার রক্ত মাহাদের বউ হবে! আর আমি বেঁচে থাকতে তা হতে দিব সেটা ও ভাবলো ক্যামনে। এই কন্ঠে জিবন থাকতেও আমি এই বিয়ে হতে দিব না। আত্বীয়র সাথে কিসের বিয়ে!
বাতাসি গলার আওয়াজ আর রুমের ভিতরই সীমাবদ্ধ রইলো না। রুম ছেড়ে বাহিরেও কথা বের হল।"

-" ও আল্লাহ্ গো দাদী দেহি আবার ঝগড়া লাগছে। ঝগড়াটা আরো বেশি হওয়া দরকার বলেই সাবিনা এক দৌড় দিয়ে প্রথমে রুমকিকে খবর দিল। এতেই কাম হবো। বোমা ফাটলো বলে। বজ্জাত রুমকি আমারে দিয়া পা টিপে নেস তাইনা। আজ বাতাসিরে দিয়ে তোকে আচ্ছা মত ধুয়ে নিব। তারপর কামরান সহ রেজওয়ানের রুমে গিয়ে বার্তা পৌছালো সাবিনা। আহা কতদিন পর রুমকি বনাম বাতাসির ঝগড়া শুনবো। এত্ত খুঁশি আমি কই রাখমু। "

-" রুমকি রাগের চোটে বাতাসির রুমে এসেই বলল-" নানী এত চিল্লাচ্ছো কেন? কি এমন হইছে তার জন্য বাসা মাথায় তুলছো!"

-" খবিসের বাচ্চা ইবলিস.......!  তোর বাপ আমার মাইডারে কোনদিন শান্তি দেয়নি আবার তুই অশান্তি শুরু করছোস আমার বাড়িতে থাইকা! 
ভাইয়ের কামায়ের উপর ঠাং তুলে খাস তোর আবার কি কান্ডঙ্গান হবে। "

-" বুড়ি চুপ থাকবা! কথা কিন্তু বেশি বলে ফেলছো। ভাল হবে না কিন্তু। মা তোমার বজ্জাত ইতর মাকে কিন্তু থামতে বলো না হলে কিন্তু ওরে আজ মেরেই ফেলবো।(রুমকি)

-" তুই আমারে মারবি!  ঐ বাড়ানির বাচ্চা বাপটার মতই হইছোস! আর কতকাল মারে জ্বালাবি। তুই ভাবছোস আমি তোর মায়ের লাহান! যা কইবি তাই শুনবো?
দরজার সামনে রেজওয়ান কে দেখেই বাতাসি বলল-" এতদিন ধরে কষ্ট করে এত উপরে উঠছোস সেখানে তোরে টেনে নিচে নামাতে তোর এই নিমোখারাম বোনই যথেষ্ট। "
তোরে ভাসাবো রেজওয়ান তোরে ভাসাবো এই মাইয়া। দেখছিস মুরব্বিদের সাথে ক্যামনে কথা কয় শয়তানের বাচ্চা।"

-" এই গুলো দেখার জন্য আমি কাল থেকে খাবার খাইনি! ইতর বুড়ি শয়তানের পাজি সারাদিন বাসায় থেকে শুধু মানুষকে অত্যাচার করবা! বাসার সবাই তোমায় মানতে পারে কিন্তু এই রুমকি মানবেনা বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেল।
সোজা বাতাসির রুম থেকে বের হয়ে ডাইনিং টেবিলে এসে খাবার খেতে লাগল রুমকি। এত কষ্টকরে না খেয়ে সব প্লান করলাম আর বুড়ি সব ভেস্তে দিল। মরার বুড়ি যদি মরতো তাহলে ইন্ডিয়া থেকে বাজি আর পটকা এনে ফুটিয়ে আনন্দ করতাম।"

♦♦♦♦♦♦♦

-" বাতাসির রুমে এখন রেজওয়ান ছাড়া কেউ নেই। কারন বাতাসি রেজওয়ান কে কিছু কথা বলবে তাই ওকে ডেকে কাছে বসিয়েছে।
শোন ভাই মাইয়াডারে বিয়া দে। তাছাড়া তোর মানসম্মান কিচ্ছু রাখবোনা। দেখছিস কি রকম করছে।"

ঃ-" নানী রুমকি তো ছোট মানুষ,  এই বয়সে বিয়ে দেওয়া কি ঠিক?"

ঃ-" মাহাদ কে তো ঠিকিই বিয়া করবার চাচ্ছে বজ্জাতটা আর সেই বেলায়! তোর বোন যে খচ্চর। মাহাদ এগুলো সহ্য করবেনা কিন্তু! পিটোন খেয়ে মানুষ হয়ে যাবে। শেষে চোখে আর সহ্য হবেনা। তার থেকে ভাল কোন পাত্র দেখে বিয়া দিয়ে দে। এমনি ঠিক হয়ে যাবে।"

ঃ-" আচ্ছা নানী আমি বিষয়টা ভাবি। দেখি কি করা যায়।"

ঃ-" বোনের প্রেমে অন্ধ হইয়া ভুল পথে হাঁটিস না। ও তো আমার মাইয়ার বেটি হয় তাইনা! আমি কি ওর খারাপ চাই? 
তুই কত ভদ্র আর ও ঠিক তোর খবিস্ বাপটার মত হইছে। 
যা এহান থেকে এখন। আমার যা কইবার মন চাইছে তাই কইছি।"

ঃ-" রেজওয়ান বাতাসির রুম থেকে বের হয়ে গেল আর বাতাসি মনের সুখে পান ছেঁচতে বসে গেল। কাম হইছে, যা বোঝানোর দরকার বুঝাইছি। বদজ্জাত বেটি বলে কিনা মাহাদরে বিয়া করবো। তোর বিয়ার স্বাধ পানিতে মিশাইয়া তোরেই গিলামু। বাতাসিরে চিনতে তুই ভুল করছোস।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

-" এতকিছু যে বাসায় হয়ে যাচ্ছে তা মাহাদের এখনো কানে আসেনি। দুপুর ১২ টার পর ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে নাস্তার টেবিলে বসতেই সাবিনা নাস্তা দিয়েই বলল-" ভাইজান একটা খবর আছে শোনবেন?"

ঃ-" কি হইছে বলে ভ্রু কুঁচকে সাবিনার দিকে তাকাতেই লাবীবা এসে জোড়ে সোড়ে একটা ধমক দেয় সাবিনাকে। এই মানুষের কাছে কথা লাগানো ছাড়া তুই কিছুই বুঝিস না তাই না?"

ঃ-" লাবীবার ধমক খেয়েই সটকে গেল ওখান থেকে সাবিনা। 
লাবীবা মাহাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল-" তেমন কিছু না। তুই তো জানিস তোর দাদী ঝগড়া নিয়েই থাকে। "

ঃ-" মাথায় হাত বুলালে কিভাবে খাই মা! সুখ নিব না খাবো! "

ঃ-" আচ্ছা খা বলে লাবীবা দুরে গিয়ে বসে পড়ল। ছেলে খাচ্ছে আর সে বসে বসে তার খাওয়া দেখছে।

-" মাহাদ খাওয়া কমপ্লিট করে রুমে এসেই দেখল বাতাসি খাটে আরামছে বসে আছে আর গুন গুন করে গান গাইছে।

বাতাসি বিবি কি মতলবে আমার রুমে আসছো হুম?

ঃ-" সোয়ামী♥ আজ যা গরম, ঘরে তিষ্টিবা পারছিনা। মনে হয় সূর্য নতুন ব্যাটারি তুলছে তাই এত সূর্য ব্যাটার তেজ। খুব গরম লাগছে। তোমার ঘরে এসির বাতাস খাইতে এলাম।"

ঃ-" এত আজব আজব কথা কই থেকে পাও? সূর্য আবার ব্যাটারিও তোলে!
ব্যাটারি যখন তুলেছে তাহলে তুমি গিয়ে ব্যাটারি খুলে দাও তাহলেই তো সব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। "

ঃ-" তুমি আমারে একটুও ভালবাসোনা সোয়ামী♥। শুধু বকুনি দাও।"

ঃ-" বাতাসি মেইন পয়েন্টে আসো।  কি বলতে আসছো সেটাই বল। অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা আমার একদম পছন্দ না।"

ঃ-" তোর বিয়ার কথা কইতে আইছিলাম। আমার এত  ঠেহা পড়নি তোর সাথে ঘুটুর ঘুটুর করা।"

ঃ-" বাহ্ এর মধ্যই ভোল পাল্টে ফেললা বাতাসি! তোমার একটা কথা জানা উচিত বাতাসি। আমাদের বাসায় যে তিতির নামে মেয়েটা থাকেনা! ওরে আমার খুব পছন্দ। ভাবছি ওকেই বিয়ে করবো। তুমি একটু যাচাই করে নিও তো! তোমার সিদ্ধান্তেই সব হবে।"

ঃ-" বাতাসি মুখ ভার করে বলল-" শেষ পর্যন্ত আমার সতীন ঘরে নিয়েই আইলি? কাজটা ভালো করোস নাই মাহাদ।
মাহাদ রেডী হচ্ছিল দেখে বাতাসি আবার বলল-" কই যাস?"

ঃ-" তোমার সতিনের লগে প্রেম করতে যাই। সে ভারর্সিটিতে গেছে তাই ওখানেই তো যেতে হবে।মাহাদ বাতাসির একদম কাছে এসে বলল-" বরের সেবা না করলে তো বর পরনারীর দিকে তাকাবেই।"

ঃ-" তোর বাপরে কি কইতে হবো কথাটা! ফুয়াদ তো এর ফলাফল পাইছে। তুই ও কি একই রকম কাজ করতে চাইতাছোস!"

ঃ-" তোমার ছেলেরে তো এবার আমি টাইট দিব। তোমার ভোলাভালা পোলার ব্যান্ড যদি না বাজিয়ে ছাড়ছি তাহলে আমিও বাতাসির নাতী না বুঝলা! মাহাদ রুম থেকে বের হয়ে গেল।

বাতাসির চিন্তা আরো বেরে গেল। নাহ্ দেখছি ঐ ছুড়িরে আর এই বাড়ীত রাখা যাবেনা।"

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

-" দিনটা ওমন করেই কেটে গেল। মাহাদের সামনে আর যায়নি তিতির। রাতে বসে অংক করছে তিতির। লগের  অংকগুলো মিলাতেই পারছেনা। এই অংকগুলো খুব সহজ লাগে কিন্তু জানা জিনিস আর মনে পড়ছেনা। হয়ত অনেক টেনশনে আছে তাই মাথায় ঢুকছেনা।
খাতার পৃষ্ঠার  পর পৃষ্ঠা নষ্ট করে ফেলছে তবুও উত্তর মিলাইতে পারছেনা।।"

-" বাতাসির এই সময় তিতিরের রুমে আগমন। দেখে মনে হচ্ছে কখন যেন বোমা বাষ্ট হবে। "

-" তিতির বাতাসিকে দেখেই ভয় পেয়ে গেল। এই মহিলার উপর কোন বিস্বাস নাই। কখন যে কি অবস্থা করবে সেটা বলায় মুশকিল। দাদী কিছু বলবেন?"

-" বলার জন্যই আইছি। কিন্তু এখানে নয়।  চল ছাদে যামু।"

-" এই বয়সে বাতাসি সিড়ি ভেঙ্গে ছাদে উঠবে! বেশ খটকা লাগল তিতিরের।
দাদী ছাদে আপনি উঠতে পারবেন! এখানেই না হয় কথা গুলো বলেন!"

-" ঐ মাইয়া আমি কি তোর হুকুমের গোলাম! তাই  তোর হুকুমে আমাকে চলতে হবে! তুই বলার কে? বসে থেকে খেয়ে খেয়ে গতরে ত্যাল ধরাইছোস? ওঠ........"

-" কথা গুলো অনেক কষ্টে হজম করলো তিতির। সত্যিই তো সে বসে বসে অন্যর ঘাড়ের উপর খাচ্ছে । নিজের বাবাটাও আর খোঁজ নেয়না সেখানে এরা তবুও অনেক ভাল রাখছে তিতিরকে। কিন্তু ঐ যে একটা কথা আছে নিজের মানুষেরা হাজার কথা শোনালেও একটু পড়ে সব ঠিক হয়ে যায় কিন্তু পরের মানুষ একটা কথা শুনালে সেটা শরীরে সুচ হয়ে ঢোকে আর ফাল হলে বের হয়।
তিতির বই আর খাতাটা বন্ধ করে বাতাসির সাথে ছাদে চলে গেল।"

ঃ-" কয়জনরে নিজের রুপ দিয়া ভুলাইছোস?"

ঃ-" বাতাসির এমন কথা শোনার একদমই প্রস্তুত ছিলনা তিতির। দাদী কি হইছে! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা।"

ঃ-" শুনেছি বাপ-মায়ের ঘরে জায়গা হয়নি এখন এখানে এসে চাঁন্দের দিকে হাত বাড়াস ফকিন্নির বাচ্চা। তোরে এই বাসাতে রাখাটায় ভুল হয়ে গেছে। কোন সাহসে তুই আমার নাতীর দিকে চোখ তুলে তাকাস। তোর ঐ চোখদিয়েই আমি গুলি খেলমু। তোর বাপ মা তোরে কেমন শিক্ষা দিছে! যার খাবি তারই গলায় ছুড়ি বসাবি?"

ঃ-" তিতির চুপ করে দাড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে। চোখ উপচে পানি পড়েই যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু চোখের পানি থামাতে পারছেনা। শেষে বিষম উঠে কাঁশতে লাগল।"

ঃ-" বাতাসির কথা থেমে নেই। মনে হয় তোর মা খারাপ তাই তুই এত খারাপ। আল্লাহ্ ভাল জানে কোন খারাপের পেটে তোর জন্ম। 
একদম আমার সামনে নাটক করবিনা। নাটকের মাইয়া কোথাকার। তোর দেখছি জাত পাতও নাই।"

ঃ-" দাদী আমি ভুল করছি আমাকে গালি দেন কিন্তু আমার মরা মা তুলে গালি দিয়েন না দয়া করে। আমার খুব কষ্ট হয়তো বলে তিতির কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।"

ঃ-" এই চুপ! বড়লোক দেখছোস তাইনা! তোদের মত ফক্কিনির বাচ্চারা আর কি করতে পারে। মৌ একদিন বলছিল তোর মা গলায় দড়ি দিয়া মরছে। গলাদড়া জাত তুই এই ঘরের বৌ হবি?"

ঃ-" তিতির ফক্কিনির বাচ্চা আর তুমি মনে হয় জমিদারের বাচ্চা বাতাসি! কথা গুলো বলেই মাহাদ পিছন থেকে বাতাসির সামনে এসে দাড়াল।"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন