সাইকো ইজ ব্যাক - অন্তিম পর্ব ১২ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


সাইকোর হাতে গরম করা দুটো শিক যা টকটকে লাল হয়ে আছে,,আমি তা দেখে চিৎকার দেই।।এসব ভাবলেশহীন ভাবে বলতে লাগে,,
-----ন্যাকামি করছিস কেন চুপ করে বস।।  আর এটা সাইন কর।।
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,,
-----এটা কি??
-----তোর ডানা কাটার ব্যবস্থা করেছি।।সাইন কর!!
নয়তো এই গরম লোহা তোর চোখে ঢুকিয়ে দিব।। আর তুই সারাজীবন অন্ধ হয়ে থাকবে।। আর পালাবার  চেষ্টা করতে পারবি না।।
ইউসুফ এর কথা শুনে আমি ঢোক গিলতে লাগলাম।। কি সাংঘাতিক কথাবার্তা।।আমি ভয়ে ভয়ে সাইন করে দেই।। আর তারপর ইউসুফ ভাইয়া আমাকে কোলে তুলে নেন।।আর সেই রুম থেকে বের হয়ে যান।।এই দেড় বছরে উনি অনেক পরিবর্তন হয়েছে।।চুল গুলো বড়  করেছেন,, মুখের দাড়ি গুলোও বড় করেছেন সব মিলিয়ে যে খুব সুন্দর লাগচ্ছে তাকে।।আমি তার মুখে তাকিয়ে থেকে নিজের শারীরিক ব্যথা সব ভুলে গেলাম।। কিছুক্ষণ আগে এতো অত্যাচার নিমিষেই ভ্যানিশ হয়ে গেল।। আমি উনার দিক তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে যায় সব।।ধীরে ধীরে জ্ঞান হাড়াই।।

যখন জ্ঞান ফিড়ে তখন নিজেকে খাঁচায় আবিষ্কার করি।।সাথে উঠে বসি,,চোখের ভুল ভেবে।। কিন্তু না সত্যিই আমি খাঁচায় বন্দী।। ইউসুফ সত্যই তার কথা রাখলেন আমায় খাঁচায় বন্ধ করে দিলেন।।খাঁচার রড ধরে নিচে বসে পড়ি,,আমি।।একদিন কথার মাঝে বলে ছিলাম,,
-----আপনার বাবুইপাখি কিন্তু সত্যই একদিন উড়াল দিবে!!
সেদিন তিনি আমার গাল চেঁপে ধরে বলেছিলেন,,
-----পাখির ডানা কেঁটে খাঁচায় বন্দী করে রাখবো।। ঠিক তাই হলো।।ভেবে মৃদু হাসলাম।।আর ডুব দিলাম অতীতে।।
__________________________________________________
তিন বছর আগে,,
দিন গুলো ভালই কাঁটছিল আমার,, 
ইউসুফ ভাইয়ার লাভিং কেয়ারিং,,
প্রতি মুহুর্তে ভালবাসি বাবুইপাখি বলা,,
দিনের শুরুতে আর রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে সবার অগোচরে চুমু খাওয়া,, 
নানান রকম খুনসুটি তো আছেই,,
কিন্তু রাগটা যেন তার নাকের ডগায় সব সময় থাকে তার!!

বেলকনির কার্নিশ ঘেঁষে বসে আছি ফ্লোরে,,
পড়ন্ত বিকেলে,  আকাশের সেই লাল আভা, তার সাথে মাতাল হাওয়া,  তার সাথে ভালবাসার মানুষটির কথা ভেবে লজ্জা পাওয়া,, সব কিছুর অনুভুতিটি খুব সুন্দর।।সত্যি আপনি যাকে মন প্রান দিয়ে চাইবেন, ভালবাসবেন,, তাকে প্রতিটি মুহুর্তে আপনি অনুভব করবেন।।

আজ ১ মাস হয়েছে,,ইউসুফ ভাইয়া আর আমার নতুন পথ চলার।।এ এক মাসে অনেক কিছু বদলে গেছে,, মানুষ বদলেছে,, তাদের ব্যবহার বদলেছে,,শুধু সব কিছুর মাঝে বেরেছে ইউসুফ ভাইয়ার ভালবাসা।।এখন শুধু দোয়া করি।।যেন আমাদের ভালবাসা না কমে, কারও নজর যেন না লাগে।।

সন্ধ্যার আযান দিচ্ছে বাহিরে,,
কি মিষ্টি এ সুর।।যার কোনো তুলনা হয় না।।যা অতুলনীয়।। আযান শুনে ঘরে চলে আসলাম,, ওয়াশরুমে গিয়ে অজু করে নিলাম।। নামাজ পড়ে নানু মার ঘরে পা বাড়ালাম।।

নানু মা শরীর এখন আরো খারাপের দিক তিনি বিছানা নিয়ে নিয়েছেন।।খুব মিস করি সে দিন গুলো,, নানুমার আমাকে জোড় করে মাথায় তেল দেয়া,,খাইয়ে দেয়া,, ঘুমুতে না পাড়লে গল্প শুনানো,,ককনো আমার সাথে খেলা করা,, কখনো কাপড় দিয়ে পুতুল বানিয়ে দেয়া,, নামাজ পড়া শিখানো,,
বাহির থেকে এসে তাকে জড়িয়ে ধরা।।সব কিছু খুব মিস করি।।

ঘরে আসতেই অনবরত ফোনটি বাঁজতে লাগলো।।রিসিভ করার আগেই কেটে গেল।।ফোনটা হাতে নিতেই দেখতে পেলাম হোয়াটসঅ্যাপে অনেক গুলা মেসেজ ছবি ভিডিও একটি আননোন নাম্বার থেকে পাঠানো হয়েছে।।ফোন স্ত্রুল করতেই আমার চোখ ছানাবড়া।। আমার হাত পা কাঁপতে লাগলো কিছু মুহুর্তে।। তখন আবার ফোনটি বেঁজে উঠলো আমার সেই আননোন নাম্বার,,  কাঁপাকাঁপা হাতে ফোনটি রিসেভ করতেই চোখ দিয়ে অধর ধারা বইতে লাগলো।।
------কেমন আছো? 
-----আপনি!!কাঁপা কন্ঠে বললাম।।
-----ভয় পাচ্ছো?
আমি চুপ।।
-----নাকি পুরোনো স্মৃতি মনে করে কাঁদছো।।
------কোনোটিই না।।বুঝলেন রিয়ন?
-----বাট আমার তো মনে পরে তোমার সাথে কাঁটানো সময় গুলো।।তাইতো পিক তুলে রেখিছিলাম।।আর ভাবলাম তুমিও মিস করছো তাই!! তোমাকেও পাঠালাম।।আচ্ছা এই গুলো পিক যদি আমি ইউসুফকে পাঠাই!! মন্দ হবে না বলো!!
----আপনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছেন??
----তেমন কিছুই?
-----আমি ভয় পাইনা!!
----তাই নাকি!! ওকে!!  দেন আমি ইউসুফের সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করে দিই।। তুমি তো আবার পরিচিত ফিগার।।বলে হাসতে লাগলো।।
এদিকে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে।।এই পিক গুলো যে অপ্রত্যাশিত ছিল আমার জন্য।। কারণ,, এখানে এমন অনেক পিক আছে,, যেগুলোতে বুঝা যাচ্ছে,, তার সাথে আমি কোনো ঘনিষ্ঠ কাজে লিপ্ত।। এখানে সব কিছুই সেদিন হঠাৎ ঘটেছিল।। অ্যাক্সিডেন্ট ভেবে ভুলে গিয়েছিলাম।। এগুলোর সাজানো যে ষড়যন্ত্র বুঝতে পারিনি।।
-----কি হলো! বেবী? আগে তো জারজ না চাইছিলে এখন ক্যারেক্টারেলস হলো কেমন হবে??হুম!! 
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি।। তাউ নিজেকে সামলে বলতে লাগি,,
-----কি চান আপনি??
-----গুড কোশ্চেন।। মিট করো আমার সাথে??অ্যাড্রেস  সেন্ড করছি।।বলেই কল কেঁটে দিল।।
তখনি একটি মেসেজ আসে।।আর আমি বের হয়ে যাই।।সেটাই যেন ছিল আমার করা ভুল।।

পার্কের একটি বেঞ্চে বসে আছি।। সন্ধ্যার সময় তাই আশেপাশে মানুষ না নাই বললেই চলে।। আমার ভয় করছে খুব।।না জানি কি হতে চলেছে আবার আমার লাইফে।।তখনি একটি গাড়ি এসে থামে আমার সামনে।।গাড়ির জানালা খুলে ভিতরে আসতে বলে সে।।আমি তখন আমতা আমতা করে বলি,,
----যা বলার এখানেই বলেন!!
-----গাড়িতে উঠো!
-----বললামতো যা বলার এখানে বলেন!!
-----ঠিক আছে,, আমি তোমার মামা-মামী,  আর ইউসুফের ফোনে এসব পাঠিয়ে দিচ্ছি।।
এ কথা মুনার পর আমি দেড়ি না করে গাড়িতে উঠে বসি।।তখন সাথে সাথে রিয়ান আমাকে বলে,,
-----আমাকে বিয়ে কর।। প্রবলেম সলভ।।
আমি তার কথায় চমকে যাই।। আর বলতে লাগি,,।.
----কি যাতা বলছেন!! আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে!!
----আইনো।।বাট!! এ বিয়ে হবে না।।হয়তো আমাকে বিয়ে কর নয়তো আমি সব লিক করে দিব।।
-----যা ইচ্ছা করেন,,! আমি আপনাকে বিয়ে করবো না!! বলে বের হয়ে চলে আসি।।কিন্তু তখনি রিয়ান আমার হাত ধরে বলতে লাগে,,
----ওকে দেন তুমি যা চাও তাই হবে।।বলে সে আমাকে তার কাছে নিয়ে আসে!! আর কিছু বুঝে উঠার আগেই,,  সে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেলে।।আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে শরিয়ে দেই।।তখন আমার শরীর কাঁপা শুরু হয়ে গেছে অলরেডি।। গাড়ি থেকে নামতেই মুখো মুখি হই মামীর।।আর তিনি আমাকে কসে থাপড় মেরে দেন।।আর তখন রিয়ান গাড়ি থেকে নেমে মামীকে বলতে লাগেন,,
-----আন্টি আপনি ওর গায় হাত তুলেলেন কেন??
-----এখানে তোমরা নষ্টামি করবে আর আমি চুপ থাকবো ভেবেছো।। ভাগীস তোর পিছু নিয়েছিলাম নয় তা জানতামি না কিছু।।ইউসুফের জেদের কাছে হার মেনে বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।। কিন্তু তুই!!মা যেমন তুই তার থেকে খারাপ।।কেমনে পাড়িস তুই হুমম।।আর এই তুমি!!  তুমি জানো না ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে!! তাহলে কেন ওর সাথে সম্পর্ক রাখছো??
----আন্টি ও আমাকে ডেকেছে আমি তো আসি নি।।
এবার মামী আমাকে আরেক চড় মারলেন।।আমি কিছু বলতে চাইলাম তিনি আমাকে বলতেই দিলেন না।।তিনি আমাকে টেনে হিচড়ে বাসায় নিয়ে আসলেন।। তখন মাত্র ইউসুফ বাসায় এসে হাজির হয়েছে।।হলে সবাই উপস্তিত।।
মামী ইউসুফের কাছে গিয়ে বলতে লাগেন,,
-----খুবতো বড় মুখ করে বলেছিলে,, কুহু ভাল মেয়ে।। বার বার বলেছিলাম রক্তের ধারা কেউ ছেড়ে দেয় না।। পঁচা রক্ত যে পঁচা হয় তা নিজে দেখে নেও বলে তিনি তখন গাড়িতে রিয়ান আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিল।।তা আন্টি তুলে ছিল।।আর তাই ইউসুফ দেখে তার মাথায় ধক করে আগুন জলে উঠে,, ইউসুফ তেড়ে এসে আমাকে মেরে বসে।।সেখানে উপস্থিত  নানুমা এসব দেখে সইতে পারেন না সাথে সাথে স্টোক করেন।।সব কিছু এত জলধি হয়ে গেছে যে বুঝার বাহিরে।। নানু মাকে হসপিটালে নিয়া হয়।।আর ততখনে অনেক দেড়ি হয়ে গেছে।।ডাক্তার জানায় নানু মা আর নেই।।পুরো পরিবারে তখন শোকের ছায়া।।সব দোষ এসে পড়ে আমার ঘরে।।সেদিন নানুমার কাফন দাফনের পর ইউসুফ কোথায় যেন হাড়িয়ে যায়।।এসবের মাঝে নানান কথা বার্তা,,  আর রিয়ানের অত্যাচার আর সইতে পারছিলাম না।।সে দিন সাহস করে বিষের বোতল নিয়ে বসে ছিিলাম রুমে।।আর ইউসুফের বলা লাস্ট কথা মাথায় ঘুরছিল যে,,
----তুই আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে,,  আমাকেই ভেঙ্গে দিলি রে!! আমি তো তোকে কম ভালবাসি কেন করলি আমার সাথে এমন।। এখন থেকে এর শাস্তি তুই পাবি।। বলেই সে চলে যায়।।তার পর থেকে ৭ দিন তার কোনো খবর ছিল না।।সেদিন আমি চিৎকার করে বলেছিলাম আমি নির্দোষ।। কিন্তু আমার কথা কেউ বিশ্বাস করেনি।।
৭ দিন পর একদিন আমার ঘরে মামী আসেন।।
আর বলতে লাগেন,,
---- তোর মা,  তোর বাবার সংসার তছনছ করে ছিল আর তুই আমার করে দিয়েছিস।।বলে তিনি খুব কাঁদেন।।তার কান্না অনেক কষ্ট দিচ্ছিল আমাকে।।আমি তার কাছে বসে বলে ছিলাম,,
-----আন্টি মা!! বিশ্বাস করো আমি কিছু করি নি সেদিন।।
তখন আমি আমাকে আরো কিছু পিক দেখালেন যেগুলো রিয়ান আমাকে দিয়েছিল।।আমি এগুলো দেখে চুপ হয়ে যাই।। কিছু যে বলার ছিল না আমার কি বলব আর আমি।।তখন তিনি বলতে লাগেন,,
-----আর কিছু বলার আছে?জানি কিছু বলতেও পারবে না আর।।তারপর তিনি চলে গেলেন আর বলে গেলেন,,ইউসুফ আর ফিরবে না।।আমরাও চলে যাবো আবার।। এখন তুমি করবে ভেবে দেখো।।আমি সেদিন শুধু চুপ হয়ে শুনেছি।।তার মানে ইউসুফ ও আমাকে ভুল বুঝলো!! নিজের মনকে অনেক বুঝেয়েছি সেদিন।।সত্যিই আমার এখন কেউ নেই।। আর এবাসায় না আছে থাকার রাইট।।সেদিনের পর দুদিন ঘর বন্ধী থাকি।। নিজের সাথে যুদ্ধ করে সব কিছু গুছিয়ে নেই।।আর তখন চোখ যায় আমার মা সেই বক্সটার দিক।।কখনো খোলার সাহস করে দেখিনি আমি।।কিন্তু আজ করছি।।সেখানে একটি চিঠি আর তার সাথে  নাম্বার, আর ব্যাংকের কিছু ডকুমেন্ট ছিল। হয়তো আমার মা জানতো তার মেয়ের জীবনে এমন কোনো দিন আসবে।।তাই এ ব্যবস্থা করে গেছেন।।সেই চিঠিতে লিখা ছিল,,
-----কুহু আমাকে ক্ষমা করে দিস!! আমি মা হয়ে তোর জন্য কিছু করতে পাড়িনি।।আর এখানে একটি নাম্বার আছে যদি কখনো বিপদে পড়িস এ নাম্বারে কল করিস।।আর পাড়লে আমাকে ক্ষমা করে দিস।।

আমি চিঠিটা বুকে জরিয়ে ধরে অনেক কেঁদেছিলাম।।তার পর সেই নাম্বারের কন্ট্রাক্ট করি।।মহিলাটি ফোন রিসিভ করে বললেন উনি আমার মার খুব ক্লোজড ফ্রেন্ড।। আর উনার সাথে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে দেশের বাহিরে চলে আসি।।এভাবে কেঁটে যায় দেড় বছর।।দেশের বাহিরে এসে,,  এখানে কাঁজও পেয়ে গেলাম।।সেই আন্টির হেল্পে।।ধীরে ধীরে নিজের জীবন গুছিয়ে নিচ্ছিলাম তখনি হাজির হয় আবার ইউসুফ আর তুলে নিয়ে আসে এখানে যার খাঁচায় আমি বন্ধী।।
অতীত ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে যাই যানি না।।
__________________________________________________
ঘারের উপর গরম নিশ্বাস,, আর গরম কিছু তরল পদার্থ পড়াতে ঘুমটা ভেঙ্গে যায় আমার।।তাকিয়ে দেখি ইউসুফ।।তার চোখে পানি।।ইউসুফ কাঁদছে।।আমি তার চোখের পানি মুছে বলতে লাগি,,
----কাঁদছেন কেন!
----অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে আমি সরি বাবুইপাখি।।সেদিন আমার চলে যাওয়া ঠিক হয়নি।।আমিতো আমার রাগ ঠান্ডা করতে চেয়েছিলাম,, তাই দূরে ছিলাম।। নয়তো তোমার ক্ষতি করে বসতাম।।কেন তুমি আমাকে রেখে পালিয়ে গেল বল?
----ভাইয়া আমি আপনার যোগ্য না।।আপনি ভাল মেয়ে ডিজার্ভ করেন।।আমার মতো পরিচয়হীন, ক্যারেকটারলেস মেয়ে নয়।।
----মারবো এক চড়!! ফালতু কথা বলিস!! কে বলেছে তোর পরিচয় নেই?? আজ থেকে তুই আমার পরিচয়ে বাঁচবি,, আমার বউ হয়ে।। উনার কথায় চোখে জল চলে আসে আমার।। আমি উনাকে ঝাঁপটে ধরি।।আর তিনি আমার ঘারে মুখ গুজে গভীর চুমু এঁকে দেয়।।আর আমরা দুজনে দুজনাতে হাড়িয়ে যাই।।
__________________________________________________
পাঁচ বছর পর,,
ইউসুফ আমার পায় আলতা পড়িয়ে দিচ্ছে।।আমি আজ পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।। আমাদের ঘরে আলোকিত করতে ছোট একটি বেবীর আগমন ঘটতে চলেছে।।

সেদিন আন্টির কথা গুলো সব চেঁপে গেছিলাম আমি।। আন্টি বলে ছিলেন আমি রিয়ানের সাথে পালিয়েছি।।যা ইউসুফ সহ্য করতে না পেরে আমাকে সেদিন মেরে ছিল।।রিয়ানকেও কেলিয়ে আবার হসপিটালে পাঠিয়েছিল।।বেচারা এখনো কোমায় আছেন।।আর ইউসুফের জেদের কাছে হাড় মেনে আমাদের বিয়ে মেনে নেন তারা।।কিন্তু আন্টি এখনো কথা বলে না আমার সাথে।। আর আমার বাবাও আর যোগাযোগ করেন নি,, এহসান ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গেছে।। তিন বছরের বেবী আছ।। তানহাও তার মন মতো কাউকে খুজেঁ পেয়েছে।।
সবাই সবার মতো করে নিজের লাইফ গুছিয়ে নিয়েছেন।।সাথে আমরাও।। একে ওপরের সাথে ভাল আছি।।চোখের পলকে দিন গুলো কিভাবে চলে যায়।। বুঝাই যায় না।।
-----বাবুইপাখি একটু হাসো।।
আমি দাঁত দেখিয়ে বলি,,
----ইইই
তিনি হাসতে হাসতে সেভাবেই পিক তুলে নেয়।।আর বলতে লাগে,,
বেষ্ট পিক ওফ দ্যা ইয়ার।।
ইটি বাবু হওয়ার পর দেখাবো।।
-----এই না না,,  প্লিজ ডিলিট করেন।।
-----উম করবো এক শর্তে!
-----কি???
----আমাকে চুমু খাও।। তাহলে করে দিব।।
----না! 
----ওকে তাহলে আপলোড করে দেই এফবিতে হুম,,!!
----না না করবো করবো।।
----ওকে তো কর?? বলে তিনি তার মুখ আমার দিকে এগিয়ে দিলেন,,
----চোখ বন্ধ করেন!!
-----ওকে! এখনো লজ্জা লাগে,,!! বাচ্চার মা করে ফেলেছি তার পরও।।
----ইসসস!!
----আচ্ছা,, আচ্ছা।।এটা কি দিলা??  গালে কেন ঠোঁটে দবা।। মাথা নাড়িয়ে লাভ নেই।।আমি নিলে কিন্তু পুরোটাই নিবো।। কিছু মানবো না।।
আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম।।আর উনি টুপ করে চুমু খেয়ে বসলেন আমাকে।।আর ডুবে গেলাম আমরা আবার ভালবাসার সাগরে!!!



                                       ***(সমাপ্ত)***

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন