"কি হল আসমা! আমার কথার উত্তর দিচ্ছোনা কেন?"
আসমা ভিষন চিন্তার মধ্য পড়ে গেল। আপা বার বার বলেছে সাদের সামনে যেন মিথ্যা কথা বলা না হয়। তাহলে এখন কি বলবে?
মাহাদ সাদকে ইশারা করে নিজের কাছে ডাকলো....
সাদও বাবার ডাকে সাড়া দিয়ে ওর মার কাছ থেকে বাবার কাছে চলে আসলো। মাহাদ ওর পায়ের জুতো জোড়া খুলে খালি পায়ে নিঃশব্দে সাদকে কোলে নিয়ে বাহিরে চলে গেল। সাথে গোলাবও অনুসরন করলো। এমনকি ঐ অচেনা কুকুরটাও চুপচাপ মাহাদের পিছু নিল।
সাদ বাহিরে চলে যেতেই আসমা বলল," আপা, ভাইজান কোথা হতে আসবেন। উনি কিভাবে জানবে আমরা এখানে আছি। ওনার তো জানার কথা নয়। গোলাব সাদ কে দেখে ওমন করছে।"
তিতির আর কিছু বলল না। চোখের পানি মুছে হাতরে হাতরে কিচেনে চলে গেল। সাথে আসমাও গেল।
আপা আমায় বলেন, কি করবেন? আমি সাহার্য্য করি।
দরকার নাই আসমা, তুমি গিয়ে ফ্রেস হয়ে নাও। আমি আস্তে আস্তে সব করে নিব।
আসমা সেখানে আর একমুহুত্ত্বও দেরী না করে বাসার বাহিরে চলে আসলো। এসে দেখলো, মাহাদ সাদকে কোলে নিয়ে আছে আর গোলাব মাহাদকে জ্বালিয়েই চলছে ওর কোলের মধ্য ঢোকার জন্য। সাথে ওদের নতুন কুকুরটাও গোলাবের সাথে যোগ দিয়েছে।
আসমা কাছে এসে বলল," ভাইজান, এখানে তো গরম! ভিতরে চলেন।"
" মাহাদ সাদের দিকে চেয়ে বলল," বাবা দেখতো তোমার মা কি করছে? মাকে আমার কথা বলোনা। যদি বল তাহলে আমি তোমায় ছেড়ে চলে যাব এখুনি।"
" গোলাব ভাইয়া চলেন, মার কাছে যাব বলে সাদ চলে গেল। সাথে নতুন কুকুরটাও চলে গেল। কিন্তু গোলাবকে এক পাও নড়াতে পারলোনা। "
সাদ চলে যেতেই মাহাদ মাথা নিচু করেই বলল, "আসমা তুমি তোমার আপার বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পেরেছ কিন্তু আমার বিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারোনি।"
আসমা কথা বলতে পারছেনা। মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। এমন সময় ড. ওয়াহিদ ইব্রাহীম বাসায় আসলো। তাকে দেখে মাহাদ বলল," তুমি ভিতরে যাও আসমা। সাদ যেন আমার কথা তিতিরকে না বলে সেটা একটু দেখ।"
আসমা চলে যেতেই ড. ওয়াহিদ মাহাদের কাছে এসে বলল," আপনাকে খুব কাছ থেকে আমার দেখার সাধ ছিল। আল্লাহ্ সেই সাধ পুরুন করেছে। আপনি অনেক সৌভাগ্যশীল এমন একটা বিবি পেয়েছেন।"
মাহাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল," আমার স্ত্রীকে কোথায় পেয়েছেন?"
আসুন আমার সাথে বলে ড. ওয়াহিদ মাহাদকে তার রুমে নিয়ে গেলেন। মাহাদকে বসতে বলে তিনি বলতে শুরু করলেন।
আমি সেদিন বাংলাদেশে আমার একটা জরুরি কাজের জন্য এসেছিলাম । সোজা লাহোর থেকে বাংলাদেশে আসছিলাম। শীতের রাত ছিল। প্রকৃতির ডাকে আমি ড্রাইভারকে থামতে বলি। ড্রাইভার রাস্তার একপাশে দাড়াতেই আমি ডোর খুলে নেমে পড়লাম। সাথে আমার কুকুরটিও আমার সাথে নামলো। টর্চ লাইটটা জ্বালিয়ে একটু রাস্তা থেকে নিচে নামতেই আমার কুকুরটি হঠাৎ করে সামনের দিকে ছুটতে লাগলো। আমি দ্রুত আমার কাজ সেরে কুকুরের পিছু পিছু ছুটতে লাগলাম। দুরে থেকে অন্য একটি কুকুরের আর্তনাদ ভরা চিৎকার শুনতে পেলাম। কাছে গিয়ে দেখলাম একটা কুকুর মানে গোলাব আহত অবস্থায় পড়ে থেকে গঙ্গিয়েই চলছে। ব্যাপারটা আমার ভালো লাগলোনা। আশে পাশে লাইট জ্বালিয়ে দেখলাম এটা একটা শশ্মান ঘাট। আমারও একটু ভয় লাগতে শুরু করলো। কারন শশ্মান ঘাট ভালো জায়গা নয়। হঠাৎ পিছন থেকে ড্রাইভার ডেকে উঠলো। আমি সাহস পেলাম।
গোলাবের একটু দুরে আসমা পড়েছিল। আমি জলদি সেখানে গিয়ে নার্ভ চেক করে দেখলাম ও বেঁচে আছে। হাতের পানির বোতল থেকে কয়েকবার পানি ছিটিয়ে দিতেই ওর ঙ্গান ফিরলো। ও চোখ মেলেই ওঠার চেষ্টা করলো। আমি তাকে সাহার্য্য করতেই ও আমার হাত থেকে লাইটা কেড়ে নিয়েই আপা আপা বলে চিৎকার দিতে দিতে লাগলো আর কাউকে খুঁজতে লাগলো। আমরা আমাদের বিশ্ময়ের সীমার শেষ প্রান্তে পৌছে গেলাম।
তারপর কিছু দুরে আরো একটা মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখলাম। আসমা সেখানে বসে তিতির, আই মিন আপকা বিবিকে ঝাঁকিয়েই চলছে। আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখলাম ওনাকে ঝাকানোর ফলে আরো ব্লিডিং হচ্ছিল। আমি আসমাকে নিষেধ করছি বার বার তাকে নড়াতে কিন্তু আসমা আমার কথা শুনতে নারাজ।
আপা আপনি কেন এত রাতে সব কিছু না বুঝে বের হতে গেলেন। পাগলের মত আচরন করছিল মেয়েটা। অবশেষে আমি রেগে গিয়ে আসমাকে একটা থাপ্পড় বসিয়ে বললাম, shut up......
আমি তিতিরকে ভালো করে ওখানেই চেক করে দেখলাম এখনো তার ভিতর আশার প্রানটা বেঁচে আছে। ওখান থেকে ওনাকে নিয়ে আমার যেই বাসায় ওঠার কথা ছিল সেখানে নিয়ে এলাম। মানে এই বাসায়। হসপিটালে নিতে চাইলে আসমা হাত জোড় করে বার বার নিষেধ করলো। তাই বাধ্য হয়ে বাসায় আনলাম।
এখানে এক নিঃসন্তান দম্পতী থাকতো এবং সেই স্যারও একজন নামকরা ডাক্তার। বাংলাদেশি তবে নিউজিল্যান্ডের এক হসপিটালে দায়িত্বরত ছিলেন। ছুটি কাটাতে দেশে এসেছেন।
আমি তখন ডাক্তারি পেশায় একদম নতুন। কিন্তু স্যার ওকে ভালোকরে পর্যবেক্ষন করে বললেন ওর অবস্থা খুবিই খারাপ। ওকে এখুনি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।
সাথে সাথে আসমা প্রতিবাদ জানিয়ে বলল," দয়া করে আপাকে আর বাহিরে নিয়ে যাবেননা। আপার উপর হামলা হয়েছে। ওরা যদি বুঝতে পারে আপা এখনো জিবিত তাহলে আপা ফিনিশ। আপনারা একটু বোঝার চেষ্টা করেন।
এরকম অনেক কেস স্যারের কাছে এসেছে। তাই গোপনে কি করে চিকিৎসা করতে হয় তা স্যারের ভালোভাবে জানা আছে।
স্যার তিকিরকে চেকাপ করে দেখলো এর আগেও তার বড় ধরনের এক্সিডেন্ট হয়েছিল। সেদিন আমরা আমাদের মত কাজ করতে লাগলাম। রাত কাটতেই ওর অবস্থা আরো খারাপ হতে লাগল। জিবন প্রদ্বীপ ক্ষীন হয়ে আসতে লাগলো। প্রচন্ড খারাপ লাগছিলো। সে ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে এগিয়ে চলছে। অবশেষে স্যার ডিসশন নিল তাকে খুব দ্রুত নিউজিল্যান্ডে নিয়ে যাবেন।
স্যার পরেরদিনই মেডিকেল রির্পোট দেখিয়ে অতি জরুরি ভিত্তিতে নিউজিল্যান্ডে তিতিরকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। স্যার যেহেতু ওখানকার স্থায়ী বাসিন্দা তাই তিনি তিতিরকে এমারজেন্সিতে ভিসার ব্যবস্থা করে ওকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের পথে উড়াল দিল। কিন্তু আমি যেতে পারলামনা। আরো ২৫ দিন পর আমি আমার কাজ গুলো গুছিয়ে নিয়ে গোলাব আর আসমাকে নিয়ে এই দেশ ত্যাগ করতে সক্ষম হই। আপনার নিউজ গুলো তখন টিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছিল কিন্তু আমি তখন তিতিরের নাম জানতামনা বা আপনার যে স্ত্রী সেটাও জানতামনা। আসমাও আমাকে কিছু বলেনি।
আমার মনটা ছটপট করছিল সে এখন কতটা সুস্থ আছে। যখন তাকে আমি দেখলাম তখন সে সম্পূর্ন কমায় ছিল। সঠিক চিকিৎসার দেরী হওয়াতে সে কমায় চলে যায়। আমি স্যারের কাছে জানতে পারলাম সে সন্তান সম্ভাবনা। ২ মাসের প্রেগন্যান্ট ছিল। স্যার সহ আরো ডাক্তারগন তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছেন যেন পেসেন্টের কিছুটা উন্নতি হয়।
আসমা বার বার বলছিল যে ভাবেই হোক তার আপার সন্তানের যেন কোন ক্ষতি না হয়। আপার অনেক কষ্টের ফল এই সন্তান। এই একমাত্র সন্তানই তার বাঁচার অবলম্বন।
যে যার মত চেষ্টা চালাতে লাগলো বাচ্চা আর মা যেন সুস্থ থাকে। সব ডাক্তাররা এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিল। এতদিনের অভিঙ্গতার পরীক্ষার তাদের সামনে এল।
আমি আমার মত চেষ্টা চালিয়ে গেলাম। আমি যেটা সব থেকে বেশি করেছি তা হল, সব সময় ওর কাছে বসে সুরা রহমান পাঠ করতাম। আমার বিশ্বাস ছিল আল্লাহ্ অবশ্যই এর উত্তম প্রতিদান দিবেন। দিনরাত এক করে সুরা রহমান পাঠ করে তাকে ফু দিতাম। সব থেকে করুন দৃশ্য ছিল গোলাবের আর্তনাদ। ওকে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে এমন কোনদিন নেই ও তিতিরের পাশে থাকতোনা। দিনরাত হয় তিতিরের কাছে থাকতো না হয় ওর কেবিনের বাহিরে থাকত। কোন কুকুর এত করুন ভাবে কাঁদতো সেটা আমি সেদিন প্রথম দেখেছি। তিতিরের পায়ের তালু, হাত, গাল জ্বীভ দিয়ে চাটতো আর চোখের পানি ফেলত। যা ডাক্তারদের আরো আকৃষ্ট করে আসলেই কুকুরের মত প্রভূ ভক্ত কোন প্রানী আর হয়না।
আপনার স্ত্রীর নিথর দেহটা দেখলে হয়ত আপনি স্বাভাবিক থাকতে পারতেন না। স্যার এবং স্যারের স্ত্রী সব থেকে বেশি পরিচর্যা নিয়েছেন তিতিরের। স্যারের স্ত্রীও একজন গাইনী ডক্টর ছিলেন। তারপর দিন যায় মাস যায় সবাই সবার মত সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যায়। আল্লাহর দয়া এবং সম্পূর্ন মেডিসিনের উপর বাচ্চা এবং মায়ের পরিচর্যা নেওয়া হচ্ছিল।
তারপর যখন ওর প্রেগন্সসি ৯ মাসে পড়ে তখন আমরা বিচলিত হয়ে যাই। কারন তিতিরের কোন সেন্স ছিলনা। এখন তার উপর যদি কোন সার্জারি করা হয় তাহলে তাকে বাঁচানো আর সম্ভব নয়। যে যার মত করে উপরওয়ালার কাছে দোয়া করতে লাগল।
আল্লাহ্ হয়ত সেদিন এতগুলো মানুষ আর গোলাবের কথা শুনেছিল। তিতিরের প্রসব ব্যাথায় সে কমা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়। তার নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আমাদের কাছে আমরা সাদ কে পাই। এটা উপরওয়ালার অনুগ্রহ, কিছু ডাক্তারদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল, উন্নত প্রযুক্তির দুনিয়ার সাফল্য আর একটা মায়ের স্বপ্ন পুরুনের দিন ছিল।
সাদের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলনা। সে খুব দুর্বল হয়ে জন্মেছিল। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষন রাখা হয়। আরও একটা বছর সম্পূর্ন নিয়মের মাধ্যমে সাদকে রাখা হয়।
আমি কোন দিনও দেখিনাই কোন মা তার শিশুবাচ্চাকে জন্মের পর থেকেই নামাযে শামিল করায়। সাদ জন্মের পর থেকে প্রতি ওয়াক্ত হয় স্যার, না হয় আমি, না হয় তার মায়ের সাথে নামাযের ওয়াক্তে জায়নামাযের বিছানায় কাটিয়েছে। তিতির অত্যান্ত যত্ন সহকারে সাদকে ইসলামী দিক্ষায় মানুষ করতে শুরু করে।
সবই সঠিক ছিল কিন্তু এত বড় দুর্ঘনার জন্য সে তার দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে সম্পূর্ন ভাবে। তাকে উন্নত চিকিৎসা করার জন্য চেষ্টা করা হয় কিন্তু তার একটাই কথা, তার জিবনে যখন তার হ্যাসব্যান্ড নেই তখন তিনি পৃথিবীর আলোও উপভোগ করতে চান না।
স্যার ততদিনে তার মৃত মেয়ের জায়গা তিতিরকে দিয়েছে। সাদকে পেয়ে স্যারের কষ্টময় জিবন সুখে ভরে উঠেছিল। তিনি আর তিতিরকে বাংলাদেশে না পাঠিয়ে নিজের কাছে রাখেন। কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাই, যেই স্ত্রী তার স্বামীকে না দেখার জন্য চোখের আলো পর্যন্ত ফিরে চান না সেই মেয়ে কেন তার স্বামীর কাছে ফিরতে চাইলো না। সারা জিবন বাচ্চাকে বুকে আগলে রেখে জিবন কাটানোর ডিসিশন নিল। এই প্রশ্নের জবাব একমাত্র তিনিই দিতে পারবেন।
আমি আসমাকে বিবাহ করেছি শুধুমাত্র তার সততায় মুগ্ধ হয়ে। যে তার আপার সঙ্গে ছায়ার মত থাকত। নিজের ছোট বোনও এমন করে থাকতোনা তার সাথে।
আমি সেই দিনের কথা এখনো ভুলিনাই, যখন আমি তিতিরে ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তাকে প্রপোজাল করি,
"আপনি যখন স্বামীর কাছে ফিরতে চান না তাহলে আপনি যদি অনুমতি দিতেন তাহলে আমিই আপনাকে বিবাহ করতে চাই।"
কিন্তু তিতির সেদিন আমার কথায় খুব অপমানিত ও রাগান্বিত হয়ে বলল," এখানে যদি আমার হ্যাসব্যান্ড থাকত তাহলে এখুনি আপনার জ্বীভ টেনে ছিড়ে ফেলত। আমি আমার হ্যাসব্যান্ড থেকে দুরে আছি মানে এই নয় যে তাকে আমি ভুলে গেছি বা তার কোন অপমান সহ্য করবো। তিনি আমাকে যা দিয়েছেন তার ঋন আমি কোন দিনই শোধ করতে পারবোনা। এখন সে যদি এসে আমার বাচ্চাটাকে এখুনি আমার কাছ থেকে সারা জিবনের জন্য নিয়ে চলে যায় তাহলে আমি হাঁসি মুখে এখুনি আমার ছেলেকে দিয়ে দিতে বার্ধ্য ।"
তিতিরের কথা শুনে আমি রেগে গিয়ে বললাম,
"Was it not I who helped you?"
" অবশ্যই আমি আপনার সাহার্য্যর কথা ভুলবনা। কিন্তু তাই বলে আপনি রক্ষক হয়ে আমাকে ভক্ষন করতে চান!"
yes, It doesn't matter to me because I went you.......
I love you Titir..... আপনি কি মনে করলেন না করলেন সেটা আমার যায় আসেনা। আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি। সাদের সম্পূর্ন দায়িত্ব আমি নিতে চাই। প্রয়োজনে জোড় করে হলেও আমি আপনাকে চাই।
"Dr. Oyahid, "Bad habits should be nipped in the bud."
"Hey Titir! We should not lose our temper over tritles."
" will you keep quiet.....!"
ওকে চুপ করলাম, কিন্তু আমি যা বলেছি তাই করেও দেখাব।
এভাবে আরো কয়েকমাস চলে গেল। এর ভিতর আমি পাকিস্তানে ফিরে গেলাম। তখন আমার বড় বোনের স্বামী মারা গিয়েছিল। তাকে আমাদের বাসায় রাখা হয়েছিল। আমি সেবার দেখেছিলাম তার স্বামীর প্রতি ভালোবাসা। তখন আমি তিতিরের কষ্টগুলো বুঝতে পারলাম। আমার ভুল ভেঙ্গে গেল। আমি তার কিছুদিন পর নিউজিল্যান্ডে ফিরে গিয়ে ওর কাছে মাফ চাইলাম। আমি নিজে থেকেই তার কাছে আসমাকে চাইলাম। আসমার জিবন কাহিনী আমি তিতিরের কাছ থেকেই শুনেছিলাম। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আসমার বাঁকি জিবনটা হাঁসিখুশিতে ভরিয়ে দিব। কিন্তু এতে আসমা বাধ সাধল। সে তিতিরকে ছাড়া কোথাও একপাও নড়বেনা। কারন তিতিরের সমস্ত দায়িত্ব তার উপর রয়েছে।
কিন্তু তিতির তাকে বুঝিয়ে রাজি করালো। অবশেষে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। বিয়ে কিছুদিন পর আমি আসমাকে নিয়ে পাকিস্তানে যাই। তারপর শুনি স্যার বা তিতির ওখানে কেউই নেই। কেন তারা আবার নিজেকে গোপন করল আমার জানা ছিলোনা। আসমা যেন সব পেয়েও কিছুই পেলনা। তিতিরকে হারিয়ে আসমা পাগলের মত আচরন করতে লাগলো। আমি আমার পরিবারের অমতে একজন বাঙ্গালী নারীকে বিয়ে করছিলাম তাই তারা আমাদের বিয়ে মানতে নারাজ ছিল। পরে অবশ্যই মেনে নিয়েছিল।
১৫ দিন হল আমরা বাংলাদেশে এসেছি। তিতির আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছিল তাই তাকে আবার খুঁজে পেয়েছি। এখানে এসে দেখি, সাদ সব সময় বাসায় থাকতো তাই ওকে নিয়ে সেদিন হসপিটালে মানে আমার কর্মস্থলে গিয়েছিলাম। অনেক প্লান করেছিলাম ওকে নিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করবো। কিন্তু সাদ আল্লাহর সাহার্য্য নিয়ে ঠিকি ওর বাবাকে খুঁজে নিয়েছে। তিতির কিন্তু আপনার পরিচয় সাদের কাছে গোপন করেনি। বরং সাদ যদি চায় আপনাকে তিতির সাথে সাথে ওকে আপনার কাছে পাঠিয়ে দিত। এতকিছু বলে ওয়াহিদ থেমে গেল।
তারপর আবার বলতে লাগলো, " আপনি কি মনে করবেন আমি জানিনা কিন্তু আমি সত্যি কথা বলতেই সব সময় পছন্দ করি। আমি আপনার স্ত্রীকে শ্রদ্ধা করি এবং এখনো ভালোবাসি। ওর স্থান আসমা আমার কাছ থেকে কখনো পাবেনা।"
Stop..... ওখানেই মুখে লাগাম দেন। এই কথার জন্য আপনার ঐ জিহ্বা এখুনি টেনে ছিড়ে ফেলাতাম যদি না আপনার হাত দ্বারা আমার স্ত্রী-সন্তান হেফাযতের করার সিদ্ধান্ত আল্লাহ্ সুবহানাতালা না নিত। জিবনে আমি আর তিতির অনেক পরীক্ষা দিয়েছি। ওকে কে কি বুঝাইছে তা জানিনা কিন্তু আমি একবার ওকে ওর নাম ধর ডাকলে ও যদি তা শুনতে পায় তাহলে ও যেখানেই থাকুকনা কেন ছুটে আসবে আমার কাছে।
I have full faith in him....
"আপনার এই আস্থায় হয়ত তিতির তার কঠিন পথগুলো পাড়ি দিতে পেরেছে। That is a good girl.
I wish you Success in your work."
"Congratulations on your wedding Mr. Oyahid. May good for tune al ways smile upon you."
" শুকরিয়া জনাব।"
মাহাদের এই লোকটাকে অসহ্য লাগছে। নিজের স্ত্রীর প্রসংসা অন্য কারো কাছ থেকে শুনতে প্রচন্ড বোরিং লাগছে। মাহাদ তাকে শুকরিয়া জানিয়ে রুম থেকে বের হল। সব ঠিক আছে কিন্তু ওয়াহিদ যাকে স্যার স্যার বলে এত ডাকছে সেই স্যারটা কে?
মাহাদ আবার ডাইনিং রুমে এসে দেখে তিতির সাদকে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে। মাহাদের ইচ্ছে করছে সাদের সাথে সেও শামিল হতে কিন্তু প্রতিটা কাজের সঠিক সময় আছে। দুরে আসমা দাড়িয়ে আছে। মাহাদ জুতা জোড়া নিয়ে আসমাকে ইশারা করে বাহিরে চলে গেল।
আসমা দ্রুত চলে আসলো মাহাদের কাছে।
" আসমা, কাল তিতিরকে রেডী করে রেখ। আমি ওকে এখান থেকে নিয়ে যাবো। ওকে কি বলতে হবে আশা করি তোমায় শিখে দিতে হবেনা।"
"ভাইজান, আপনি কি এখনো আমার উপর রাগ করে আছেন?"
রাগ থাকাটা স্বাভাবিক আসমা। তবে তোমার জন্য আমি সব থেকে সেরা উপহার তৈরি করে রেখেছি। ঠিক সময়ে সেটা তুমি পাবে। তিতিরের খেয়াল রেখ। আমি আসছি বলে মাহাদ সেখান থেকে বের হতেই অজান্তে এক জনের সাথে বেশ জোড়েই ধাক্কা খেল।
লোকটি সপিং ব্যাগ নিয়ে পড়ে গেলেন।
স্যরি স্যার বলে মাহাদ তার দিকে তাকাতেই চমকে উঠলো। আলীম আঙ্কেল.....?
দুরে তার স্ত্রী ড. ফাহমিদাও মাহাদকে দেখে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে। ৩ জনের চোখেই বিশ্ময়ের সীমা পার হয়ে গেল।
মাহাদকে দেখে ড. আলীম ক্রোধে ফেটে পড়ল। তুমি আমার বাসায়? তোমার সাহস কিভাবে হয় আমার বাসায় ঢোকা? আমার মেয়েকে কেড়ে নিয়েও তোমার শান্তি হয়নি? আবার কেন এসেছ এখানে?
মাহাদ চুপ করে রইল তারপর বলল," রিয়ার যথেষ্ট বুদ্ধি ছিল তাই সে জেনে শুনেই এমন ডিসিশন নিয়েছিল। সেখানে আমার হাত ছিলনা। কিন্তু তবুও আপনার কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।"
"তোমাকে আমি কোনদিনই ক্ষমা করবোনা। তুমি আমাদের জিবনটাই তছনছ করে দিয়েছ। তোমার কোন ক্ষমা নেই। আলীম সাহেবের চোখ ভরে আসলো।
তুমি এক্ষুনি আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাও। যদি আর একবার আমার সীমানায় তোমায় দেখি তাহলে পুলিশে ইনফর্ম করবো।"
আমিতো আবার আসবই। সেটা আপনার ভালো লাগুক আর না লাগুক। কাল আমি আমার স্ত্রী আর সন্তানকে এখান থেকে নিয়েই তবে যাব।
আমার জিবন থাকতে আমি তোমাকে এখান থেকে তিতিরকে নিয়ে যেতে দিব না। তুমি সাদকে নিয়ে যেতে পারো কিন্তু আমার হুকুম ছাড়া তিতির একপাও নড়াবেনা। তুমি চেষ্টা করে দেখতে পারো।
আপনি আমাকে আটকাবেন! এই মাহাদকে আটকাবেন? আমাকে আটকিয়ে দেখান। আমিও দেখতে চাই আপনার কত ক্ষমতা আছে আমার স্ত্রীর কাছ থেকে আমাকে আলাদা করতে।
এখন বুঝছি কেন তিতির আমার সাথে এতদিন যোগাযোগ করেনি। নিশ্চয় আপনি আমার পরিচয় জানার পর তিতির কে এমন কিছু উল্টা-পাল্টা বুঝিয়েছেন যার জন্য তিতির আমার কাছে ফিরতে চায়না।
তিতির তোমার কাছে ফিরতে চায়না সেটা ওর ডিসিশন। আমি যদি এখুনি ওর কাছে গিয়ে বলি, এখানে মাহাদ এসেছিল তাহলে ও এখানে এক মুহুত্ত্বের জন্যও থাকবেনা। তাই অযথা আগ বাড়িয়ে নিজের বিপদ ডেকে এনোনা।
মাহাদ একটু স্মিত হেঁসে বলল," তিতির যাতে ভুল ডিসিশন না নিয়ে আবার আমার কাছ থেকে পালিয়ে না যেতে পারে তার সম্পূর্ন দায়িত্ব যে আপনাকেই নিতে হবে আঙ্কেল!"
অসম্ভব, আমি কখনো চাইবোনা তিতির তোমার কাছে ফিরুক। আমরা মা-বাবা রিয়ার জন্য যতটা কষ্ট পেয়ে এসেছি তার প্রতিটা কষ্ট তোমাকে উপভোগ করতে হবে। আমি যতটা রিয়ার জন্য চোখের পানি ফেলেছি তার মূল্য আমি তিতিরকে দিয়ে শোধ তুলব। আমি জানি তিতির তোমার কাছে কি তাই তিতিরই আমার কাছে তোমার জন্য মুক্ষম চ্যাল হিসেবে কাজ করবে।
মাহাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওর ফোনটা বের করে একটা পিক ড. আলীমকে দেখিয়ে বলল," একে চান আপনি?"
ধ্যাত, আমিও পাগলের মত কথা বলছি। নিজের রক্তকে কে না চায় যেমন আমি আমার স্ত্রী-সন্তানকে পাগলের মত চাচ্ছি এখন। হয়তোবা আল্লাহ্ সুবহানাতালা চায় আমার হাত দ্বারা আপনার জিবন পরিপূর্ন হক যেমনটা আপনার হাত দ্বারা আমার হতে চলেছে।
মাহাদ হনহনিয়ে গাড়ীর কাছে গিয়ে বাসা থেকে গাড়ী নিয়ে বের হয়ে গেল।
ড. আলীম মাহাদের কথা স্তব্ধ হয়ে গেল। বুকে একটু চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করছে। শরীরটাও একটু কাঁপছে। মিসেস আলীম এসে স্বামীকে ধরে নিয়ে বাসায় গেল। সে জানেনা তার সাথে আগামীকাল কি ঘটছে।
♦♦♦♦
মাহাদ রেজওয়ানের রুমে বসে আছে। দীর্ঘ সময় পর মাহাদ রেজওয়ান কে দেখতে এসেছে। মৌ সামনে দাড়িয়ে কাঁদছে। সাত বছরের রাতিশা ওর বাবার পাশে বসে আছে। মৌ কে এক গ্লাস পানি আনতে বললো। মৌ রাতিশাকে নিয়ে চলে গেল।
ওরা চলে যেতেই মাহাদ রেজওয়ানের হাতটা ধরে একটা কিস করে বলল," ভাই, একসাথে আমরা কত থেকেছি কত খেলাধুলা করেছি। কিন্তু হিংসা আমাদের মধ্য বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিছে। তুইও যেমন তিলে তিলে কষ্ট পাচ্ছিস আমিও তেমন পেয়ে এসেছি। ইনশাল্লাহ্ এক দেড় মাসে তোকে আবার তোর আগের জিবনে ফিরে নিয়ে যাব।"
মাহাদ পল্লবকে বাসায় ডাকলো। তারপর পল্লব এসে রেজওয়ানকে ভালোভাবে চেকাপ করলো। পল্লব সবাইকে আসার আলো দেখিয়ে বলল," রেজওয়ান ইনশাল্লাহ্ ঠিক হয়ে যাবে।"
রেজওয়ান কথা বলতে পারলোনা কিন্তু চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ে গেল। আজ মাহাদ রেজওয়ান কে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দিয়ে মেডিসিন খাওয়ায়ে ওর ভালো হওয়ার পথে শুভ উদ্ভোদন করল।
বাসার সবাই আজ খুব খুশি। আজ মাহাদ নিজ ইচ্ছায় পা দিয়েছে এই বাসায়। লাবীবার খুশি দেখে কে। নিজে রান্না করে মাহাদকে খাবার খাওয়াতে ব্যস্ত সে। পুরো পরিবার খুশি আজ।
এই খুশির মুহুত্বে মাহাদ বলেই ফেললো তিতির আসছে এখানে শ্রীঘ্রই। ওর চোখের সমস্যা বলে সব খুলে বলল। শুধু সাদের কথা গোপন করল মাহাদ।
সাথে সাথে বাতাসি বলল," আগে বাজা ছিল এহন আবার কানা।"
মাহাদ এমন কথা শুনে ফস করে বলে উঠলো," তোমার মত মানুষের কবরের ঠান্ডা মাটি বুকে না পড়া পর্যন্ত তোমরা ঠিক হবানা।"
" তুই অ্যারে এতবড় কতা কইতে পারলি।!
" পারলি কি! বলেইতো ফেললাম। এখনো সময় আছে ভালো পথে আসো।"
" মাহাদ তুই ওখানে একা থাকিস। আমাদের খুব ভয় হয়। এখানে চলে আয়না বাবা!"
"মা তুমি মিছে মিছে কেন ভয় পাচ্ছো বলতো! মাহাদের জন্য বডিগার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাবার জন্য যেমন আছে তেমনি ওর জন্যও।"
"ঐ তুই দেশের কোন মিনিষ্টার আইছোস যার লায় তোর এত্ত বডিগার্ড আছে।"
মাহাদ বাতাসীর কথায় কিছু বলল না। কিন্তু ফুয়াদ বলল," ওর ফ্যামিলি এবং ওর নিজের উপর আগে হামলা হয়েছে তার উপর ওর অবস্থান এখন আরো অনেক উঁচুতে তাই সরকারকেই ওর নিরাপত্তা দিতে হবে। তাই ওর পিছে বডিগার্ড থাকে দাদী। তুমি ওসব বুঝবানা। তোমার বুঝ শুধু এই বাসার উপরই।"
এই তোরা কিন্তু অ্যারে অপমান করতাছোস! অ্যার কি মান সোলেমান নাই নাকি? তগো এই হাত দিয়া মানুষ করচি। তগো নানা-নানীও দেহে নাই। অ্যাই মানুষ করচি অ্যাই।
লাবীবা ফস করে বলে উঠল," আম্মা মিথ্যা কথা বলবেন না কিন্তু! আমাকে বাবার বাসায় যেতে দিয়েছেন কখনো? কেঁদে মরে গেছি তাও আপনার দয়া হয়নি। আমাকে এখানেই থাকতে হয়েছে।"
এবার ফুয়াদ আর মাহাদ একসাথে বাতাসির দিকে তাকিয়ে রইল। ঐ মুখ নিয়ে তুমি বাহাদুরি করো? তোমাকে তো শূলে চড়ানো উচিত। কথাগুলো বলে ফুয়াদ ওর বাবার দিকে চাইল।
ঐ কামু তুই বাঁইচা থাকতে তোর পুত অ্যারে অপমান করে তুই কিচু কবি না? দুনিয়ার অর্কমা পুত অ্যার পেটে রাকছি।
ঐ অর্কমার পুত্রের জন্য তোমার জিবন এখনো খুঁশিতে ভরে আছে। তানাহলে তোমার এতে দিনে কপাল পুড়ে যেত। সবার মাঝে কথাগুলো বলে ফেলল মাহাদ।
অনেক হাঁসি ঠাট্টার মাঝে মাহাদের সময় কাটলো। অনেকদিন পর নিজের রুমে ঘুমাল মাহাদ।
পরেরদিন সকাল ১১ টার দিকে মাহাদ তিতিরের কাছে গেল। হাতে আর একটা কাজ আছে, আসমার একটা ব্যবস্থা করা।
মাহাদ বাসায় গিয়েই দেখল, আসমা মাহাদের জন্য অপেক্ষা করছে। মাহাদ গিয়ে আগে ড. আলীমের সাথে দেখা করল। তিনি রুমে সুয়ে ছিলেন। পাশে সাদকে নিয়ে মিসেস ফাহমিদাও রয়েছেন।
মাহাদকে দেখে সাদ দৌড়ে কাছে এল। মাহাদ সাদকে বুকে নিতেই সাদ বলল," আসসালামু আলাইকুম বাবা।!
ওয়ালাইকুম আসসালাম বাবা বলে মাহাদ সাদের কপালে একটা চুমা খেতেই সাদ বলল," এখানে বাবা বলে হাত দিয়ে দেখাল।"
মাহাদ সেখানেও চুমা খেল। সাদ আবার বলল," বাবা এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।"
মাহাদও খুশিতে ততগুলো জায়গাতে চুমা খেয়ে বলল, হয়েছে বাবা?
" জ্বী বলতেই মাহাদ আরো কয়েকটা কিস করে দরজার বাহিরে এসে ছেড়ে দিল। যাও গোলাব ভাইয়ার সাথে খেলা করো বাবা।"
সাদ চলে যেতেই মিসেস ফাহমিদা এসে বলল," মাহাদ তুমি আমাদের যাই বোঝাওনা কেন তিতির তোমার কাছে ফিরছেনা। আর আমি সেটা হতেও দিবনা। তিতির নিজে ডিসিশন নিয়েছে তোমার কাছে ফিরবেনা। তাই তুমি হাজার চেষ্টা করলেও ও ফিরবেনা।"
আপনাদের নিজের সন্তান কি চাইনা? আসমার ব্যাপারে তাদের সব খুলে বললো মাহাদ। এমনকি তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করতে বলল।
কিন্তু কোন কথায় শুনতে নারাজ আলীম সাহেব। সাথে মিসেস আলীমও। আলীম সাহেব বলল," ৩ দিন পর আমাদের ফ্লাইট। আমরা নিউজিল্যান্ডে ফিরে যাচ্ছি। যদি তুমি চাও তাহলে সাদকে নিতে পারো কিন্তু তিতির ফিরছেনা।"
আঙ্কেল আমাকে বাধ্য করাবেন না আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে। পাগলা হাতিকে ক্ষেপিয়ে তুললে কিন্তু সব কিছু পিষে ফেলে দিবে।
অহ্ তাই বলে আলীম সাহেব জোড়ে জোড়ে তিতিরকে ডাকতে লাগলো। তিতির আমার রুমে আসতো?
আঙ্কেল এমন কিছু করেন না যেটাতে আমার ধৈর্য্যর বাঁধ ভেঙ্গে যায়। আমি তখন আর ছোট বড়র মাঝে বাঁচ-বিচার করবোনা। আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না প্লিজ। আমি আপনাকে যথেষ্ট সম্মান করি।
দেখি তুমি কি করতে পারো বলে আলীম সাহেব এবার চিৎকার করে ডাকল তিতিরকে। কিছুক্ষন পর তিতির এসে ঠিক মাহাদের পাশেই দাড়ালো...........
"মাহাদের বুকে তিতির নামক স্মৃতিময় অন্ধকার ঘরে, ১০৯টি দীর্ঘশ্বাসের মধ্যে ৯৯ নাম্বারে শুধু তিতির মিশে ছিল, বাঁকিগুলো ছিল শুধু মাহাদের চোখের জল আর কষ্টময় তৃষ্ণার্ত দুঃখ........"