১১!!
-শফিক? কখন গেল মায়া?
-স্যার ম্যাম তো ৫ মিনিট হয় গেছে--।
রাহাত আর কিছু না বলেই ছুটে বেরিয়ে গেল৷ গাড়ি স্টার্ট দেয়ার আগে শফিকের দেয়া কাগজটা খুলে দেখলো মায়ার রেজিগনেশন লেটার। এতোক্ষণ মেয়েটা রুমে এটাই টাইপ করে প্রিন্ট করছিল! কথাটা মাথায় আসতেই রাহাতের চিবুকটা শক্ত হয়ে গেল। আর কপালের রগগুলোও একটু ফুলে উঠলো। মায়াটার যথেষ্ট বাড় বেড়েছে। কে কি বলেছে না বলেছে তাই জন্য এভাবে রেজিগনেশন দিবে? রাহাতের কোন মূল্য নেই ওর কাছে! ভাবতেই গাড়ি স্টার্ট দিলো। যত দ্রুত সম্ভব গাড়ি চালাতে লাগলো। বাসার পৌঁছার আগে এই মেয়েকে যে করেই হোক ওর আটকাতেই হবে। তারপর খবর নিবে এতো বাড়াবাড়ির।
রাহাত ড্রাইভ করছে আর আশেপাশে চোখ বুলিয়ে মায়াকে খুঁজছে। এতো তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাওয়ার তো কথা নয়। তাহলে! কোন বিপদ হলো না তো? ব্যাপারটা মাথায় আসতেই মায়াকে দেখতে পেল রাহাত। রাস্তার একপাশ দিয়ে মাথা নিচু করে হাঁটছে। স্বাভাবিক ভাবে থাকার চেষ্টা করছে প্রচন্ডভাবে। কিন্তু মেয়েটার চোখ মুখ বলে দিচ্ছে ভিতরে কতোটা ঝড় চলছে। মায়াকে দেখে যেন রাহাতের ধড়ে প্রাণ ফিরে এলো। স্পিড কমিয়ে গাড়িটা একেবারে মায়ার সামনে গিয়ে থামালো।
মায়া এক ধ্যানে হাঁটছিল। তাই রাহাতের গাড়িটা খেয়াল করে নি। একেবারে যেন দেখতেই পায় নি। রাহাত ব্যাপারটা খেয়াল করে মায়াকে দেখছে। সামনে যে একটা গাড়ি আছে সেটা যেন মায়া দেখছেই না। কয়েক পা এগোলেই ধাক্কা খাবে। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি গাড়ির হর্ন চেপে ধরে অনেকক্ষণ হর্নের আওয়াজ করলো। মায়াও একটু কেঁপে উঠে সামনে রাহাতের গাড়িটা দেখে ভ্যাবাচ্যাঁকা খেয়ে গেল। রাহাত একটু সামনে এগিয়ে এসে মায়ার দিকের দরজাটা খুলে দিল। মায়া শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাহাতের দিকে।
-কি হলো? উঠে এসো? এটাও বলে দিতে হবে?
-স্যার--। আপনি চলে যান--। আমি একাই যেতে পারবো---।
-গাড়িতে উঠতে বলেছি তোমাকে মায়াবতী---। ভালোয় ভালোয় বলছি আমাকে রাগিও না। আমার রাগটা পরে সামলাতে পারবে না--। তখন তুমি নিজেই বিপদে পড়বে----।
মায়া দু মিনিট রাহাতের দিকে তাকিয়ে রইলো। কোন এক্সপ্রেশন নেই চোখে মুখে। একটু পরেই মায়া দরজার কাছে এসে বন্ধ করার চেষ্টা করতেই রাহাত এগিয়ে এসে মায়ার হাত ধরে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। তারপর দরজা বন্ধ করেই লক করে দিলো যেন মায়া হুট করে বেরিয়ে যেতে না পারে। ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে মায়া অবাক হওয়ারও সময় পেল না। কি ঘটেছে বুঝতে পারার পর দরজাটা নিয়ে টানাটানি করেও খুলতে পারলো না বেচারি। ততক্ষণে রাহাতও চোখ মুখ শক্ত করে গাড়িতে স্পিড দিয়েছে।
-স্যার? কি করছেন কি? থামান গাড়ি--। আমি নামবো------।
-------------------------------
-এদিকে কোথায় যাচ্ছেন? আমার বাসা তো এদিকে না----। স্যার? গাড়ি থামান?
-------------------------------
-স্যার?
-আর একটা কথাও বলবা মায়া! তো আমি এমন কিছু করে বসবো যেটা তোমারও ভালো লাগবে না। আমারও ভালো লাগবে না--।
-কি করবেন কি? গাড়ি থেকে ফেলে দিবেন? ফেলেই দিন---। মরেই যাই--। সব শান্তি হোক---। আপনার শান্তি-আমারও শান্তি।
-মায়াবতী---? স্বেচ্ছায় চুপ না করলে তোমাকে কিভাবে চুপ করাতে হবে সেটা আমার ভালোই জানা আছে----।
-কি করবেন?
-দেখতে চাচ্ছো? আমি কি করবো তোমার সাথে?
মায়া রাহাতের কথা শুনে আর কিছু বলার সাহস পেল না। রাহাতও চুপচাপ ড্রাইভ করে একটা ফার্ম হাউজের সামনে গাড়ি থামালো। রাহাত নেমে এসে মায়ার হাত ধরে টানতে টানতে ফার্ম হাউজের ভিতরে নিয়ে গেল। একটা রুমের ভেতরে এনেই মায়াকে দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে চেপে ধরলো রাহাত।
-কি পেয়েছ কি তুমি? হ্যাঁ? যা ইচ্ছে তাই করবে তুমি? বেশি বাড়াবাড়ি করতে বারণ করেছিলাম না তোমাকে?
-স্যার? কি করছেন? ছাড়ুন লাগছে আমার---।
-লাগুক---। বেশি বেড়েছ না তুমি? কার থেকে পারমিশন নিয়ে রেজিগনেশন দিয়েছ তুমি? বলো?
-আমি জব করবো না---। পারমিশন কেন নিতে হবে আপনার কাছ থেকে? কে আপনি? আর আমিই বা কে আপনার? সামান্য একটা পি.এ ই তো আপনার--।
-মায়া--------?
-কি পেয়েছেন কি? যখন ইচ্ছে জোর করবেন? আমি কেন আপনার কথা মতো চলবো? চাকরির জন্য? করবো না আপনার চাকরি---। চাই না আপনার দয়া--। মানুষদের এতো আজেবাজে কথাও শুনতে পারব না----।
-কি বললা মায়াবতী? আরেকবার বলো?
-কি বললাম শুনতে পান নি? শুনুন তবে---। আবার শুনুন---। আমি আপনার দয়া চাই না---। আমাকে যেতে দিন---। সরুন----।
রাহাত নিজের রাগ সামলাতে না পেরে দেয়ালে জোরে একটা ঘুষি মারলো। মায়া আঁতকে উঠে রাহাতের দিকে তাকালো৷ চোখ টকটকে লাল হয়ে আছে ওর। রাহাত মায়াকে ধাক্কা দিতেই মায়া পাশে থাকা খাটের উপরে গিয়ে পড়লো।। রাহাত আবার এগিয়ে এসে মায়াকে বিছানার সাথেই চেপে ধরলো।
-কি বললি তুই? আমি তোকে দয়া দেখাচ্ছি? তোকে জোর করি? জোর করে যদি তোকে পেতেই হয়- তোকে এখনই জোর করে তোর এই এতো অহংকার-গরিমা সবটা কেড়ে নিতে পারি জানিস তুই? বাধা দেয়ার শক্তি আছে তোর? নাকি ক্ষমতা আছে?
মায়ার চোখের কোণা বেয়ে টুপটুপ করে বিন্দু বিন্দু জলেরা গড়িয়ে পড়ছে। রাহাতের এই রূপের সাথে ও পরিচিত নয়। সেই প্রথম দিন ছাড়া আর একটাবারের জন্যও মানুষটা ওকে ধমকানো তো দূরে থাক গলা চড়িয়ে কথা পর্যন্ত বলে নি। অথচ এখন? মায়াবতী ছাড়া যে মানুষটা ওকে কিছু বলে না সেই মানুষই আজ মায়াকে তুই তোকারি করে কথা বলছে। এমন কথা বলছে যাতে মায়ার কলিজা কেঁপে উঠছে। মানুষটার কোন রূপটা বিশ্বাস করবে মায়া ভেবে পাচ্ছে না। রাহাতকে দেখে রীতিমত ভয় করছে মায়ার৷
রাহাত মায়াকে ছেড়ে দিয়ে উঠে ফ্লোরে বসে "আআআআআআ" করে চিৎকার করলো। মায়া কেঁপে উঠে রাহাতকে দেখছে। এই মানুষটা হঠাৎ এমন পাগলামি করছে কেন কিছুই মাথায় আসছে না মায়ার। বেশ অনেকটা সময় পর রাহাত উঠে আস্তে আস্তে মায়ার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। মায়া ভয় পেয়ে খাট থেকে নামতেই রাহাতও মায়ার সামনে এসে দাঁড়ালো। রাগী ভাবটা এখন আর নেই রাহাতের চোখেমুখে। রাগের বদলে ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসিটা ঝুলে আছে আবার। মায়া ঢোক গিলে রাহাতকে দেখছে। আর রাহাতের পিছনের দরজাটার দিকে তাকাচ্ছে।
-তোমার সাথে রাতের পাগলামিগুলোতে মেতে উঠতে চাই----। হারিয়ে যেতে চাই অন্য এক সুখের সাগরে---। পারমিশন হবে প্লিজ?
রাহাতের কথা শুনে মায়া অজান্তেই দু পা পিছিয়ে গেল। আর পিছিয়েই দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে গেল। কি চাইছে রাহাত! এই কি ছিল তবে এতোদিনের এই ভালোমানুষির মুখোশটার আড়ালে? কার কি ক্ষতি করেছে মায়া যে এই দিনটা দেখতে হচ্ছে? রাহাতের চোখে চোখ রেখে মায়া এই কথাটাই ভাবার চেষ্টা করছে।
১২!!
রাহাত এক পা এক পা করে এগিয়ে আসছে দেখে মায়া একেবারে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালে আসলেই একেবারে পিঠ ঠেকে গেছে ওর। আর যাওয়ার জায়গাও নেই। কি করবে কার কাছে সাহায্য চাইবে কিছুই বুঝতে পারছে না। আধৌ সাহায্য করার মতো কেউ আছে কিনা সেটাই বেচারি জানে না। রাহাতও ভ্রু কুঁচকে মায়ার ভীত মুখটা দেখছে। ঘেমে মুখ একাকার। মুখের পাশের এলোমেলো ছোট্ট চুলগুলো মুখে লেপ্টে গেছে। দেখতে একেবারে ভীত মায়া হরিণীর মতো লাগছে মায়াকে। মায়ার এই রূপটাও রাহাতকে যেন আরো বেশি করে টানছে ওর দিকে।
-মায়া? ভয় পাচ্ছো কেন?
-না না না--স্যার---। ভ-ভ-ভয়-- পাব-পাবো কেন?
-ভয় না পেলে এভাবে তোঁতলাচ্ছো কেন? আজব তো?
-আপনি এভাবে--এভাবে সামনের দিকে--সামনের দিকে এগিয়ে আসছেন--আসছেন কেন?
-তুমি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছো তাই--। সামনে এসো?
-সামনে! সামনে তো-----?
-সামনে কি মায়াবতী?
-সামনে তো আপনি দেয়ালের মতো দাঁড়িয়ে আছেন---। সামনেও দেয়াল--। পিছনেও দেয়াল---।
-আমি দেয়াল?
-না না---। না মানে স্যার-----!
রাহাত আরো এগিয়ে এসে মায়ার দুপাশে দেয়ালে হাত দেখে মায়ার মুখের দিকে অপলকে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। মায়া প্রথমে ভয় পেয়ে চোখ বুজে ফেলেছিল। অনেকক্ষণ পরেও কিছু ঘটছে না বুঝতে পেরে চোখ মেলে তাকালো। চোখ মেলতেই রাহাতের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল। মানুষটা নেশা ধরানো চাহনিতে মায়াকে দেখছে৷ রাহাতের নেশা ধরানো দৃষ্টিতে হাজারো দুষ্টুমি মিশে আছে, সাথে হয়তো অনেক খানি ভালোবাসাও। তবে সেখানে কোন ললুপতা নেই। রাহাতের দৃষ্টি অন্য সবার মতো মায়ার শরীরের বিশেষ কোন অঙ্গ উৎসুক চোখে গিলছে না। কাজল টানা মায়াবী চোখে চোখ রেখে রাহাত মায়ার চোখের গভীরতা মাপায় ব্যস্ত।
ততক্ষণে মায়ারও ভয়টা কেটে গেছে। এই মানুষটা আর যাই হোক ওর কোন ক্ষতি করবে না সেটা মায়া বুঝতে পেরেছে। কিন্তু মানুষটা কি চাইছে সেটাই বুঝতে পারছে না বেচারি। তাই নিজেও হা করে তাকিয়ে আছে রাহাতের মুখের দিকে। রাহাতও সুযোগ পেয়ে শাড়ির মধ্যে দিয়েই মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে একেবারে নিজের কাছে টেনে নিল। মায়া এতোটা অবাক হলো যে নিজের বুকের ধুকপুকানিও কানে এসে বাজছে ওর। এই লোকের কাহিনী কিছুই বুঝতে পারছে না। আবারও নেশা ধরানো চোখে তাকিয়ে আছে। মায়াও সব ভুলে রাহাতকে দেখছে অবাক হয়ে৷ সাদা শার্টের হাতাদুটো আজও ফোল্ড করা। আর নেভি ব্লু প্যান্টের সাথে ম্যাচিং করে টাই ঝুলছে। খোঁচা দাঁড়িতে আর একটু সিল্কি চুলের নাচানাচিতে একেবারে অসম্ভব কিউট লাগছে মানুষটাকে। মানুষটা কেন এতোটা কাছে এসে ওর ভিতরে এভাবে ঝড় তুলছে সেটাই বুঝতে পারছে না মায়া।
এক হাতে মায়াকে কাছে টেনে অন্য হাতে মায়ার গালে হাত দিয়ে মুখটা তুলে ধরে দেখছে রাহাত।
-মায়াবতী?
-হুম?
-একটা পারমিশন চেয়েছিলাম---।
-মা-মানে?
-বুঝতে পারো নি?? মনে করিয়ে দিই আবার??
------------------------------
-তোমার সাথে রাতের পাগলামিতে মেতে উঠতে চাই। ভালোবাসার সাগরে হারাতে চাই-----। মিস মায়াবতী?
-কি-- কিসব বলছেন? স্যার?
-সত্যি বলছি---। তবে শুধু একটা রাত বা আজকের জন্য নয়--। জীবনের বাকি প্রত্যেকটা দিন-প্রত্যেকটা রাত তোমাকে চাই আমার। প্রতিদিন ভোরে ভোরে চোখ খুলে তোমার ঘুমন্ত মায়াবী মুখটা দেখে বুকে টেনে নিতে চাই। প্রতিদিন রাতে তোমাকে বুকে জাপটে ধরে সারাদিনের সমস্ত ক্লান্তি ভুলতে চাই--। তুমি বিপদে পড়ার আগে বুকে আগলে রাখতে চাই ভালোবেসে। তুমি ভয় পেলে আদরে সে ভয় ভাঙিয়ে দিতে চাই। কারণে অকারণে হুট করে জাপটে ধরে ঘাবড়ে দিতে চাই তোমাকে। তুমি রাগ করলে আমার উষ্ণ স্পর্শে তোমার সে রাগ আমি ভাঙাতে চাই। অভিমান করলে তোমার নিচের ঠোঁট আঁকড়ে অভিমানের বরফ গলাতে চাই---। তোমার সারাদিনের ক্লান্তির পর শরীরে আলতো পরশ বুলিয়ে সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দিতে চাই। অবসর ছুটির দিনগুলোতে ঘরের প্রতিটা পরতে পরতে তোমার আমার ভালোবাসার গল্প সাজাতে চাই। আর চাই যত মান অভিমানই হোক না কেন দিনশেষে তোমার ওই কাজল কালো চোখে ডুব দিয়ে তার গভীরতা মাপবো আমি। তুমি অবাক চোখে তখনো আজকের মতো আমাকে দেখবে। আজকের মতো লজ্জায় লাল হবে প্রতিদিন প্রতিটা রাতে। আমার ছেলেমানুষি পাগলামিগুলো সহ্য না হলে চুল টেনে ধরবে। বা আজকের মতো হাতটা খামচে ধরবে৷ সত্যি বলছি মায়াবতী-- তখনো খুব করে জ্বালাবো--। তবে একটুও বলবো না তোমার এই স্পর্শে কতোটা মাতালতা জাগে তোমাকে কাছে পাওয়ার-------।
-------------------------------
-মায়াবতী?
মায়া কথা বলার শক্তিটাও যেন হারিয়ে ফেলেছে। ঠোঁট দুটো কেঁপে কেঁপে উঠছে। লজ্জা পেয়ে সত্যি সত্যিই লাল হয়ে গেছে বেচারি। আর রাহাতের হাতটাও শক্ত করে খামচে ধরেছে। এই লোকটা এতো খারাপ কেন বুঝতে পারে না মায়া। এভাবে কথা বলে বুকের ভিতরে তুফান তোলার কোন মানে আছে?
-মায়া?
-হুম?
-ক্যান আই কিস ইউ?
মায়া একবার কেঁপে উঠে চোখ বুজে ফেললো। রাহাত হেসে মায়ার মুখটা তুলে ধরে অপলকে দেখলো কিছুক্ষণ। তারপর আলতো করে মায়ার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। মায়া কোনমতে চোখ খুলে রাহাতের দিকে তাকালো।
-বাকিটা অধিকার নিয়ে করবো মায়াবতী----। যেদিন তুমি লাজুক লাজুক মুখ করেও আমার কাছে নিজে থেকে ধরা দিবে---। এখন বলুন তো মিস মায়াবতী? মিসেস রাহাত মাহবুব চৌধুরী হতে কি রাজী আছেন? সারাজীবন এই পাগলাটে লোকটার পাগলাটে কাজকর্ম হজম করতে পারবেন তো? ভুল করলে ভালোবেসে শুধরে দিবেন তো? দিনশেষে মায়াবতী আমার হবেন তো আপনি?
-স্যার?
-কল মি রাহাত----মায়াবতী---।
-মানে!
-তুমি না চাইলে জোর করবো না---।
রাহাত মায়াকে নিজের হাতের বন্ধন থেকে ছেড়ে একটু সরে দাঁড়ালো।। মায়া এক পলক রাহাতের মুখের দিকে তাকিয়ে ছুট লাগালো। এই লোকের সামনে আর এক মিনিট থাকলেই হার্ট এ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনা আছে। দরজার কাছে এসেই কি মনে হতে রাহাতের দিকে একবার ফিরে তাকালো মায়া। রাহাত মুখটা কালো করে দাঁড়িয়ে আছে। মায়া মুখ টিপে একটু হাসলো।
-রেজিগনেশন যখন দিয়েছি তখন আপনার পি.এ র চাকরিটা করবো না আর-----।
-------------------------------
-আপনার বাবাকে বলবেন বাসায় এসে আমার মায়ের সাথে বাকি কথা বলে যেতে----।
কথাটা বলেই মায়া ছুটে বেরিয়ে গেল। রাহাতও অবাক চোখে মায়ার ছুটে পালিয়ে যাওয়া দেখলো। কি বলেছে সেটার মানে বুঝতেই তার কয়েক মিনিট লেগে গেল।